নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কাজী জুবেরী মোস্তাক






কবি পরিচিতিঃ
নামঃ  কাজী জুবেরী মোস্তাক
জন্মঃ ১৯৮৩ সালের ২১এ সেপ্টেম্বর ।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ বি,এ পাস  ।
পারিবারিক জীবনঃ পিতামাতা ও ছোট এক ভাই পিতা ছিলেন একজন সরকারী কর্মচারী ও একজন সংগীত শিক্ষক , মা পুরোপুরি গৃহিণী ৷
স্ত্রী এক পুত্র এবং এক কণ্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক জীবন  ।
পেশায় একজন সরকারী চাকুরীজীবি
সাহিত্য কর্মঃ ১৯৯৮ সাল থেকেই অনিয়মিত  ভাবে লেখালেখির  সাথে জড়িত ।
দৈনিক পত্রিকা , সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন এবং বিভিন্ন সাময়িকী ম্যাগাজিনে বিভিন্ন সময় কবিতা ও ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে ৷ এখন পর্যন্ত কোন একক বই প্রকাশিত হয়নি তবে বিভিন্ন সময়ে যৌথ কাব্যগ্রন্থেই লেখা প্রকাশ হয়েছে যেমনঃ
শতকের স্বপ্ন প্রাপ্তি
ভোরের পাখি
শততারা
হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু
বিশ্ব সাহিত্য ও কবিতা সম্ভার 


শখঃ পড়া ও লেখা, আড্ডা, ভ্রমণ ।

সাক্ষাৎকার 
***********



১:- আপনার কাছে কবিতা কি ? 
উত্তর :- কবিতা আমার কাছে একটা অস্ত্র যে অস্ত্র দিয়ে মানুষের রক্তে আগুন জ্বালানো সম্ভব, সম্ভব জলন্ত দাবানল নিভিয়ে ফেলা ৷

২:- আপনার প্রিয় কবি কে ? আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ? 
উত্তর:- আমার প্রিয় কবি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ৷
আমার বিবেক এবং দ্বায়বদ্ধতাই আমার অনুপ্রেরণা ৷

৩:- কেন লেখেন আপনি কবিতা ? 
উত্তর:- কবিতা লিখি জেগে ঘুমিয়ে থাকা মানুষ গুলোকে সজাগ করার জন্য ৷

৪:- আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্য গ্রন্থের  নাম (প্রকাশিত/ অপ্রকাশিত) 
উত্তর:- আমার প্রথম কবিতার নাম " শহীদ মিনারের গল্প "
কবিতাটা লেখার ৮ বছর পরে শতকের স্বপ্ন প্রাপ্তি নামক বইয়ে কবিতাটি স্থান পায় বইটি যৌথ ছিলো ৷

৫:- কবিতা/কবি সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ ? 
উত্তর:- কবি বা কবিতার সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক হওয়া উচিত অক্সিজেন এবং কার্বনডাই অক্সাইডের মতো কবি বা কবিতা ছাড়বে পাঠক গ্রহণ করবে আবার পাঠক ছাড়বে কবি বা কবিতা বেঁচে থাকবে ৷

৬:- ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যে জগতে কতখানি গুরুত্ব রাখে ? 
উত্তর:- মানুষ এখন আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হতে শিখেছে , প্রযুক্তির এই যুগে ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্য জগৎকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে বা করা শুরু করে দিয়েছে ৷ তবে হ্যাঁ ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা অনেক গ্রুপ আছে যেগুলো সাহিত্য জগৎকে কলঙ্কিত করতে পারে ৷

৭:-ছাপা ম্যাগজিন ও ব্লগ ম্যাগজিন বা ওয়েব ম্যাগজিনের মধ্যে কার বেশি গুরুত্ব ? এবং কেন ?
উত্তর:-তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে মানুষ ছাপা ম্যাগাজিন এর চাইতে ব্লগ বা ওয়েব ম্যাগাজিনের দিকে ঝুঁকছে ৷ আমি মনে করি প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ব্লগ বা ওয়েব ম্যাগাজিনের গুরুত্বটাই বেশি ৷

৮:-আজ কাল অনেক কবি জন্ম নিচ্ছে ,কেউ বা প্রেমে আঘাত খেয়ে ,কেউ বা ব্যর্থতায় আবার কেউ কবি হবে কবিতা লিখছে , কিন্তু যখন লেখা ছাপাতে চাইছে টাকার অভাবে বই করতে পারছে না ,বা করলেও বই বিক্রি হচ্ছে না , মানুষের এই বই বিমুক হওয়ার কারণ কি ? বইয়ের অভিমুখে আনতে গেলে কি করা উচিৎ বলে আপনার মনে হয় ?
উত্তর:- ভালো বই বা ভালো লেখার পাঠক নেই তা না পাঠক প্রচুর আছে ৷ তবে মূল সমস্যা হলো প্রত্যেকেই নিজেকে কবি বলে দাবি করি ঠিকই কিন্তু পাঠক কি চায় তা তারা জানেনা বা বোঝেনা ৷ একজন পাঠকের চাহিদা যদি কবি বা সাহিত্যিক বুঝতে পারে তবে অবশ্যই পাঠক বই পড়বে ৷
প্রকাশকরা এখন প্রতিভার মূল্যায়ন করেনা তারা চিন্তা করে একজন নতুন লেখকের বই কেনো একজন পাঠক পড়বে? যদি না পড়ে তার লগ্নিকৃত অর্থ জলে চলে যাবে ৷
একজন প্রকাশককে অবশ্যই আগে বিচারিকজ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে সঠিক পান্ডুলিপি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তবেই পাঠকের চাহিদা মাফিক লেখা পাঠক পড়তে পাড়বে এবং বই মুখি হবে ৷

৯:-উত্তরাধুনিক কবিতা বলতে কি বোঝেন ? অনেক জনই আজকাল কিছু কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে বলছে এটা উত্তরাধুনিক কবিতা , কিন্তু কবিতা পড়তে গেলে দাঁত ভাঙার উপক্রম কিংবা মাথার উপর দিয়ে চলে যায় সেক্ষত্রে আপনার কি মতামত ? 
উত্তর:-দাত ভাঙা গুটি কয়েক শব্দ জুড়ে দিলাম আর এটা উত্তরাধুনিক কবিতা হয়ে গেলো আমি অন্তত এটা মনে করিনা ৷

১০:- গদ্য কবিতা ও গদ্য-পদ্য কবিতা কি ? গদ্য কবিতায় কি ছন্দ বা নির্দিষ্ট তাল থাকার প্রয়োজন নেই ?
উত্তর:-গদ্য কবিতা নির্দিষ্ট বিষয়ের ভিত্তিতেই শুরু হয় এবং শেষ হয় ৷ তবে নির্দিষ্ট ছন্দ অবশ্যই থাকা প্রয়োজন ৷ আর গদ্য-পদ্য কবিতায় অবশ্যই তাল এবং ছন্দ জরুরী ৷







কিছু কবিতা 
************



সব তন্ত্রের একই মন্ত্র
*******************
 

কানের ঠিক কিছুটা উপরে একটা পিস্তল তাক করা ,
সামনে সাজানো রয়েছে বিশাল এক পেটোয়া বাহিনী ,
পিছনেও পড়ে আছে রাজ্যের তামাম রক্ষি বাহিনী ;
কারনতো একটাই জনতাকে ওদের মতো
করতে না পারা ৷

গণতন্ত্র নামক এক দিল্লিকা লাড্ডু ঝুলিয়ে রাখা সামনে ,
একনায়কতন্ত্রকেও বৈধতা দিয়ে;নাম তার অাজ গণতন্ত্র ,
স্বার্বভৌমত্ব ভেবে ছিনিয়ে নিয়ে দেখি সেও এক ষড়যন্ত্র ,
সব তন্ত্রেরই ঠিক একই মন্ত্র যা জনতার 
কাপর খোলে ৷

স্বৈরাতন্ত্রের নিয়মিত চলাচল আজকে আমার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে ,
স্বাধীনতা'তো হলো এক ট্রাম কার্ড তার জুয়ার টেবিলে বসে ,
সব তন্ত্রকেই দেখি দিনের শেষে স্বার্থতন্ত্রেই 
গিয়ে মিশে ,
বাম ঘরামী স্বভাব আমার সেতো শুধুই আপন দম্ভে ৷


মৃত্যুদন্ডের দাবি 
***************


আমি অমরত্ব নিতে আসিনি
আমি আমার মৃত্যুদন্ড নিতে এসেছি ,
আমি জানি এখনই আমাকে বন্দী করা হবে
শেকল পড়ানো হবে আমার উন্মুক্ত হাতে পায়ে ৷
আমি জানি আমি দেশদ্রোহী ,
তোমরা কতোটা দেশ দরদী বলবে ?
আমার টাকা চুরি করে গড়েছো অট্টালিকা
তাতেও আবার বসিয়েছো দেখি সিসি ক্যামেরা ৷
আমি জানি আমি সংখ্যালঘু ,
কারন বিদ্রোহী হয়ে জন্মায় খুব কম ,
আর যারা বিদ্রোহী লাশ থাকে তাদের ডোবা,নালায়
তাদের নিস্তব্ধ দেহতে শেয়াল শকুনেরাও মচ্ছোব চালায় ৷
আমি জানি আমি একা ,
কারন আমি কোন দুর্নীতিবাজ না ,
পেনশনের ফাইল আটকে হাত পেতে দিইনা
অথবা অন্যায়ের সাথে আমি আপোষহীন চলি তাই একা ৷
মধ্যরাতে আমার ছবি যাবে প্রেসে ,
আমার কন্ঠ রোধ করতে ক্রসফায়ার হবে ,
শিরোনামে থাকবে আমার মৃত্যু হয়েছে বন্দুক যুদ্ধে
আর পা চাটার দলেরা তখন চায়ে টোস্ট ভিজিয়ে খাবে ৷
আমি অধিকার চাইতে এসেছি ,
নির্যাতিত নিপীড়িতের কথা বলতে এসেছি ,
মনে রেখো আমাকে হত্যা করলেই সব শেষ হয়ে না !
১০মাস ১০দিন পরে আবারো অামার জন্ম হয় অন্য কোন গর্ভে ৷



আপন স্বার্থে দ্বন্দ
****************


অঘোষিত এক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি আজকে ,
প্রতিনিয়তই এক স্বার্থ যুদ্ধ চলছে পৃথিবীতে ,
ইরাক,প্যালেষ্টাইন আজও জ্বলছে সেই দ্বন্দে ,
কাশ্মীর আজও স্বার্থের দ্বন্দে রক্তা রক্তি খেলে ৷
তিব্বত আজও নিষিদ্ধ তাই অজানাই রয়ে গেছে
স্বার্থের দ্বন্দে আফগানীরা ঐ তালেবান হয়ে গেছে ,
সিরিয়াও তাই আপন গৃহেই আজও বন্দী পরে আছে ,
আর আই,এস,আই সেখানে করা পাহারায় বসে আছে ৷
শান্তির পতাকা হাতে স্বার্থপর ঐ ছুটছে দেশ বিদেশে ,
ধর্মের কথা বলে ঐ স্বার্থপরই আবার অধর্মের গান গাইছে ,
ওদের স্বার্থেই মানুষ আজ দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে
আপন স্বার্থে দেশে-দেশে সবাই যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে ৷
কখনোবা নিজের স্বার্থেই দ্বন্দে জড়িয়েছ তুমি আমাকে ,
আবার কখনো সে স্বার্থে যুদ্ধেই জড়িয়েছি আমি তোমাকে ৷
অস্ত্রের মুখে বিরোধীতা করবে বলো কার সাধ্য আছে?
তবুওতো কেউ না কেউ গর্জে উঠবে হয়তো সেটাও আপন স্বার্থে ৷




যেদিন তর্জনী উঠবে 
******************



আমার পক্ষেও একদিন তর্জনী উঠবে
রাস্তার মোড়েও সেদিন পিকেটিং হবে ,
ছাত্র জনতা মিলে রাজপথ দখল নিবে
ঝড়ো স্লোগানে চারিদিক মুখরিত হবে ৷

আমার পক্ষেও একদিন কেউ দাঁড়াবে
কাঁধে কাঁধ রেখে প্রতিবাদী হয়ে উঠবে ,
ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে পাশে দাঁড়াবে
ন্যায়ের পক্ষে বুকটা টান করে দাঁড়াবে ৷

আমার পক্ষেও একদিন ওরাই লিখবে
যে কলম আজকে ভয়ে পকেটে আছে ,
সংবাদপত্র সেদিন আবারো সরব হবে
টিভি রিপোর্টাররাও ছুটে চলে আসবে ৷

আমার জন্যও কোন মা সিজদায় রবে
আবার কোন মা ঠাকুর ঘরে পড়ে রবে ,
কেউ রোজা রবে ,কেউবা রাখি বাঁধবে
জয়ীও হবো ওদেরই দোয়া আশির্বাদে ৷

একদিন ওরা ঠিক সংগ্রামী হয়ে যাবে
দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি জ্বলে উঠবে ,
অন্যায়ের প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে
নিজের অধিকারও আদায় করে নিবে ৷




যাচ্ছি কিন্তু যাচ্ছিনা 
******************


তবে তাই হোক তোমাদেরই জয় হোক
আমার নাহয় ব্যারাকেই ফিরতে হোক
আমার জন্য দরকার নেই কোন শোক ৷

জয় হোক আজকে ওদেরই জয় হোক
যারা ভঙ্গুর সমাজে রক্তখেকো জোঁক
আমরা নাহয় হলাম আজ ছোটলোক ৷

বেঁচে থাকো তোমরা শতাব্দীর সমদিন
বিবেকের কাছেই থাক তোমাদের ঋণ
শতায়ু হোক তোমাদের বাঁচার এইদিন ৷

আজকে আমরা ব্যারাকে ফিরে যাবো
আমাদের যাই আছে জমা দিয়ে দেবো
দেশপ্রেম আর প্রতিজ্ঞাটা রেখে দেবো ৷

আজকের মতো হয়তোবা ফিরে যাবো
নতুন করে আবারও সব গুছিয়ে নেবো 
ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে স্বপ্নটা সাজাবো ৷




কিছুই অবশিষ্ট নেই 
*****************


এখানে আজ আর কিছুই চাওয়ার নেই 
এক সুশৃঙ্খল সমাজ চাইতে গিয়ে দেখি ! 
সে সমাজ উশৃঙ্খলতার আগুনে পুড়ছে
অথচ সমাজপতিরা আলু পোড়া খাচ্ছে ৷

এখানে আজ আর কিছুই পাওয়ার নাই 
সস্তায় আজ যা মেলে তা শুধুই উপদেশ ,
নয়তো নেতাজীদের মিথ্যে আশার বাণী
আর কৃত্তিমতায় ঝড়ানো চোখের পানি ৷

এখানে আজ স্বপ্ন দেখাই যেনো দুঃস্বপ্ন 
ইচ্ছাগুলো গলাটিপে হত্যা করছি রোজ ,
স্বপ্নবাজদের স্বপ্ন প্রতিদিন হয় নিখোঁজ 
আর ; সমাজপতিরা দেখায় মিছে দরদ ৷

এখানে আজ বেঁচে থাকাটাই বিলাসিতা 
আর মৃত্যু সেতো আজ একেবারেই সস্তা ,
জীবন সাজাতেই জীবন আজকে মরিয়া 
অথচ মৃত্যুকে রাখি বুকপকেটে ঢাকিয়া ৷

এখানে আজকে কেউই ইতিহাস ঘাঁটেনা
ক্ষমতা আর অর্থ দম্ভই যেনো মূল চেতনা
মগজেও লালন করে নোংড়া চিন্তা,ছলনা
অথচ ভাবটা তার ; সে ধোয়া তুলসিপাতা ৷




আমার চাওয়া 
*************




বুক সেল্ফে বন্দী পড়ে থাকা গণতন্ত্র আমার চাইনা ,
যে গণতন্ত্রর মুখোশে স্বৈরাতন্ত্রর বাস তাকে চাইনা ,
বুক ফুলিয়ে যে গণতন্ত্রে কথা বলা যায় তাকে চাই ৷

পর্দার আড়ালে বিদ্রোহী কবিতা আবৃতি করবোনা ,
জনমঞ্চে দাঁড়িয়ে পাঠ করতে চাই বিদ্রোহী কবিতা ,
আজকে আমি আমার বাকস্বাধীনতার মুক্তি চাই ৷

রাজনীতির পকেটে বন্দী গণতন্ত্রকে অামার চাইনা ,
হাতে-পায়ে শেকল জড়ানো কথিত গণতন্ত্র চাইনা ,
মুক্ত বিহঙ্গের মতো সতন্ত্র হয়ে উড়ার গণতন্ত্র চাই ৷

যে সংবিধান স্বাধীনতার মুক্তি দেয়না তাকে চাইনা ,
যে সংবিধান রাজনেতার হয় জনতার না তা চাইনা ,
আমার সংবিধানে আমার জন্য বলার ক্ষমতা চাই ৷

যে আইন দূর্বলের না হয়ে সবলের হয় তাকে চাইনা ,
ক্ষমতা অার টাকায় বিক্রি হওয়ার আইনও চাইনা ,
আমার আইন সেতো ভরসা ও আস্থার হওয়া চাই ৷

আমার দূর্বলতাকে পূঁজি করে দুর্নীতি হতে দেবোনা
আমার ন্যায্য হিস্যায় অনিয়ম হবে তাও মানবোনা
দুর্নীতিহীন অধিকারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়া চাই ৷






আমি যা চাই 
************



তোমাদের বাক্সবন্দী স্বাধীনতা আমি চাইনা
আমি শুধু মুক্ত হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে চাই ,
যে হাওয়ায় ভেসে বেড়াবে না বারুদের গন্ধ  
অাবার ; পঁচা লাশের গন্ধও নাকে লাগবেনা ৷

অবচেতন মনের চেতনাবাদ আমার চাইনা ,
আমিতো শুধুই আমার আগামী ফেরত চাই ,
অনেক হয়েছে এবার এ ব্যবসা বন্ধ করো
বিশ্বাস করো ধোঁকাবাজি আর সহ্য হয়না ৷

নীতিহীনদের নীতিকথা আর শুনতে চাইনা
ওদের গালগল্প , ভন্ডামি আর কত সইবো ? 
আমিতো শুধুই দূর্নীতিমুক্ত এক সমাজ চাই ,
নীতি আদর্শহীন ভাবে আমি বাঁচতে চাইনা ৷

আমি বাক প্রতিবন্ধী হয়েতো বাঁচতে চাইনা ,
আমিতো শুধু উচিত কথাগুলো বলতে চাই ,
আর চাই ; ন্যায্য পাওনা চাওয়ার ক্ষমতাকে
বলতে গেলে কণ্ঠ চেপে ধরবে তা মানবোনা ৷






পুরোনো শহরের স্মৃতি
********************




একদিন আমিও ছিলাম তোমার পুরোনো শহরে 
আমারও বসতভিটা ছিলো তোমার পুরোনো সে 
শহর জুড়ে ৷

ভালোবাসাময় এক যৌথ খামার ছিলো সেখানে ,
দুয়ার ছিলো ; ছিলো জানালা ভরা প্রিয় আকাশ 
আর তুমি ছিলে ৷

আমার অপেক্ষাতেই বন্দী থাকতে ভেতর দুয়ারে
কখন ফিরবো আর কড়া নাড়বো খামারের সেই 
বন্ধ দুয়ারে জোড়ে ৷

আজও স্বপ্ন দেখার স্বপ্নেরা আছে তোমার শহরে ,
শূন্যতা আর হতাশার যৌথ গ্রহণ চলছেই আজও
আমার শহর জুড়ে ৷

যে শহরে একদিন ছিলো ভালোবাসার মাদকতা
সে শহর আজকে ভালোবাসাহীন ; আছে শূন্যতা 
আর ব্যার্থতা ৷

তোমার শহরে আজ জানালা ভরা প্রিয় আকাশ ,
আর আমার শহরে আজও পাওয়া না পাওয়ার 
যন্ত্রনার বসবাস ৷

তোমার শহরে তুমি তোমার মতো ভালো থেকো ,
অামিও ভালো থাকার অভিনয়টা আমার মতো  
শিখে নেবো 





আমি তোমার দখলে 
*******************


যতোই সময় যাচ্ছে 
তোমার ওজন বেড়ে যাচ্ছে
তুমি জেকে বসছো এ অন্তরে ,
প্রতিনিয়ত তোমার বিস্তৃতি ঘটছে
তুমি দখল নিয়েছো এই অম্তরে ৷
যতোই সময় যাচ্ছে 
তোমার আনাগোনা বেড়ে যাচ্ছে
ছায়ার মতো থাকছো আমার পাশে ,
আর তোমার বসতি গড়ে উঠছে 
আমার এই ভাংগাচুরা অন্তর জুড়ে ৷
যতোই সময় যাচ্ছে
আমি হারিয়ে ফেলছি নিজেকে
তোমাকে দেখছি সারা সত্তা জুড়ে ,
নির্ভরশীল হচ্ছি তোমার উপরে
ঠিক পরজীবিদের মতো করে ৷
যতোই সময় যাচ্ছে
বেওয়ারিশ চর দখলের মতো করে
আমিও যাচ্ছি তোমার পূর্ণ দখলে ৷



সাক্ষাৎকারে : জ্যোতির্ময় রায়

গোপাল চন্দ্র সাহা





বিপ্রতীপ  
*******





চাঁদের এ'পিঠে গল্পের ইলসে গুড়ি জ্যোৎস্না 
অলিন্দের জাফরানি আলপনায় 
মৃদুল ছন্দ তল্লাশে, 
স্নিগ্ধ প্রত্যাশা জমিয়ে
রাত্রি কঙ্কণে কেটে যায় ঋতুর গমনাগমন
শুভক্ষণী প্রাঞ্জল অন্তরাগে

উৎসুক চাহনি থমকে যায় যেখানে 
চাঁদের ও'পিঠে
শূন্যতার বিক্ষিপ্ত ঝড়ে পেচিয়ে যায় সন্ধ্যাচারী
সেখানে এক খন্ড মেঘ আলেয়া ছায়ায় হাঁটে 
তাল রেখে নিরুদ্দেশে
আর ক্রমাগত পুড়ে যায় 

দুকুল ছাপিয়ে প্লাবিত কথারা ঘেমে ওঠে
ধমনীর গোলাপী অথবা বিবর্ণ কোলাজে

ধীরে ধীরে এ'পিঠ আর ও'পিঠ
দুই বিপ্রতীপ ডুবে যায় কোন একক প্রদর্শনে 
ঘন অমা-রস কল্লোলে  ।।

পলি ঘোষ




মন
****



মন এমনই এক আশ্চর্য অনুভূতি যা কিছু সবার সাথে শেয়ার করা যায় না! কিছু এমনই প্রতিচ্ছবি এঁকেছি আমার মনের অন্তরালে! যা কেবলই ছুঁয়ে যায় আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে অন্তরে অভিমানে কেঁদে যায় দূর হতে আর এক আশ্চর্য অনুভূতি আকুলতা বিশ্বাস অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় সদস্য হতে! জানি আমি সে কেবলই আমার একরাশ আন্তরিক অভিনন্দন আমার বন্ধু হবে!

অমৃত বাণী সোনাই যখনই দেখি মনটি উদাস হয়ে তাকিয়ে আছে অবাক নয়নে নয়ন মেলে! আজ সে বলে মনে মনে ভাবলাম আমার সারা জীবনের সঞ্চয় অনুভূতি সকল ইচ্ছা তোমারই চরণে নিবেদন করতে করতে আজ আমি এক আশ্চর্য লাবণি ক্লান্ত পথিক! যা কিছু নিরবে চোখের অশ্রু ঝরে যায় উত্তরার মত কিছু করে!

জানি মনের নাকি দুটো সন্তান !এক হলো কু মন আর অপরটি সু মন! যখন নাকি কু মন খুব আকুল হয়ে উঠে কোনো মানুষ খারাপ ব্যবহার করে! আর সু মনের জোরে মানুষ প্রতি দিন পবিত্র কিছু ভালো কাজ করতে ব্যাস্ত হয়ে ওঠে!

আমার মনে তো সব অপমান জ্বালা সহ্য করে ও কারো খারাপ করার চেষ্টা ও করি না! আমার মন তাই বলে উদ্ভুত ঈশ্বর বিচার!

আজ আমি ধন্য মনে মনে পেরে আনন্দিত হলাম নিজেকে নিজেই আবিস্কার করতে পেরে! এ এক আশ্চর্য অনুভূতি আমার জীবনে!

দীপান্বিতা বিশ্বাস



তামসী
******





মেকী শহরের মিথ্যে ভালোবাসা--
ইতস্তত ঘুরছে ট্রামলাইন ঘেরা রাস্তায়।
মুখ থুবড়ে পড়ে আছে কিছু মিথ্যে প্রতিস্তুতি,
নিয়ন আলো ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্ছে নোংরা গলির অন্ধকারে।
আবেগী নৌকারা বটবৃক্ষের তলায় স্থির দাঁড়িয়ে অবহেলার আস্তরণ মেখে,
গঙ্গার প্রতিটা ঢেউয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে শত অপেক্ষামান রংমশাল।
নীলকণ্ঠী পাখির বোবা কান্না চাতকের মতো চেয়ে আছে,
শ্মশানে এককোনে পড়ে থাকা নিথর দেহের দিকে।
কবিতা থেকে বেরিয়ে কিছু প্রেত খুঁজে চলেছে--
"বাঁচার ঠিকানা"।
ছাইরঙা গ্রিলে গ্রাস করেছে অন্ধকারের ছন্দবানী..
মাটি ফুঁড়ে ওঠা সবুজ অঙ্কুরকে গিলে খেয়েছে কিছু রাক্ষুসে শিকড়।
শ্যামলা মেঘের দোলদুলানি অনেকটা কমে গেছে চলমান ব্যস্ত জীবনে,
হলুদ কদমফুল গুলো শুকিয়ে গেছে বৃষ্টির অভাবে।
ভালোবাসার প্রতিটা ছটা কাঁপছে কামারের গরম হাতুড়ির অগ্নিস্ফুলিঙ্গে...
আর কিছু রুদ্ধশোক হাত পা বেঁধে পরে আছে রেললাইনের ইস্পাতে।।

বৈশাখী দাস



গল্প নয়
*******

গল্প তো সবারই থাকে।কারুর গল্পে গণনারা হাঁতড়ায় 'আগামী',জন্মতারিখের হরোস্কোপে।কারো আবার, চিতাভস্মের দহনে অশ্রুর আর্দ্রতা ঢালতে ঢালতেই এগোয় যাপনচিত্র।কেউ কেউ সুখ-দুঃখের সমান্তরালেই আঁকে গল্পের সঞ্চারপথ।কেউ, স্থিরচিত্রে থেমে থাকা প্রশ্বাসহীন মুহূর্তে রেখে যায় অসমাপ্ত গল্পের উত্তরাধিকার।গল্প তো সবারই থাকে।স্বপ্নসম্ভবা রাত্রিও জমায় আকাঙ্ক্ষিত ভোরের গল্প।গল্প কি শুধুই বাক্যবিনাসে,কল্পনায়,অলঙ্করনে?কলমের কৌলীন্যে,শব্দের অনুরণনে?ছুঁয়ে দেখো, নৈঃশব্দ্যেও লেগে থাকে কি নিবিড় গল্পের ঘ্রাণ!
   

বৈশাখী চ্যাটার্জী




পুজো এলে
**********



পুজো এলে -পুরনো উঠোনটায় একটা স্থলপদ্মের গাছ মনে পরে ।
ফ্রক পড়া একটা মেয়ে -ঝুড়িতে স্থলপদ্ম গুলো সাজিয়ে দুর্গা মণ্ডপে নিয়ে যেত পুজোর চারটে দিন ।
ষষ্ঠীর সকালটা কি দারুণ প্রত্যাশা নিয়ে আসত ।
মণ্ডপে তখন ব্যস্ততার চূড়ান্ত প্রস্তুতকরণ  ।

বাবা বলতেনা -'মা এসে গেছে ষষ্ঠী তলায়' । 
মেয়েটা কোথায় যে খুঁজবে সেই ষষ্ঠীতলা বুঝেই পেতনা ,
তবু অলীক স্বপ্ন সাজিয়ে নিয়ে দেখত কোন একটা গাছের তলায় মা দুর্গা দাঁড়িয়ে রয়েছে ছেলেমেয়েদের নিয়ে । পুলক লাগত মনে --!

শরৎকালীন সকালগুলো নদীর চর ধরে আজও আসে ।
ফ্রক পড়া মেয়েটা প্রবাহিনীর চরের ওপর  সাদা কাশফুলের পথে হাঁটতে হাঁটতে কখনো যেন বদলে গেলো ।
বদলে গেলো মহালয়ার ভোর ,
শরৎ আকাশ -
কাশফুল -
এমনকি দুর্গাপুজোর মন্ডপটাও  ।

পুরনো উঠোনটা এখন সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো ।
স্থলপদ্ম আর ফোটে না ।
মেয়েটাও আর এ পাড়ায় আসে না পুজোতে ।
তবে তার চোখ এখনও সাদা সাদা মেঘে,  সাদা কাশফুল খুঁজে বেড়ায় ।
উঁকি মেরে খুঁজে আনতে চায়-
সেই সকালটা -ঢাকের শব্দ , নদী থেকে ঘট তুলে আনা , কলাবউ এর স্নান ।

চণ্ডীপাঠের শব্দ ভেসে আসলে -!
রোমকূপে কেমন শিহরণ হয় ,
মনে পড়ে,  দূরে অনেক দূরে একটা ফ্রক পড়া মেয়ে ।
অমনি আনমনে কেঁদে ওঠে ভেতরটা ।
শারদ সকালগুলো এখন নতুন শহরে ভাসে ।
ফ্রক পড়া মেয়েটির মুখে , মনকেমনগুলো সাদা কাশফুল হয়ে এখনও দিব্যি হাসে  ।

                   

তুলি রায়





বেলা অবেলা কালবেলা
******************



যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে খেইগুলো
মাঝ দরিয়ার তরী
উড়ছে শুধু ছাই
চিত্রনাট্যের নাটকীয়তায়
প্রলাপ সংলাপগুলো
মাখছে বিসর্জনের মাটি
আবাহনের থেকে বিসর্জন অনেক সহজ ছিল
যবনিকার পরেও জেগে থাকে উপন্যাসের আলো
যতটা আঁধার
তার থেকেও তীব্রতর হয় মুহূর্তমগ্নকাল
কাল-আকালের লীলায়
বাঙ্ময় হয়ে থাকে
আমাদের যাবতীয় ধূসর বার্তালাপ


                                     

লগ্নজিতা রায়






টাকার সম্পর্ক
***********



কুঁড়েঘরে জন্মানো একবেলা না খেয়ে থাকা
ওই শিশুটাও মা'য়ের অর্থ বোঝে,
দিন পেরোলে মা'য়ের আঁচলে মাথা পাতে,
জ্বরের সময় বদ্যি লাগেনা,মা'ই যথেষ্ট

অপরদিকে ফ্ল্যাটবাড়ির ওই শিশুটা 'মা' বলতে
মাদার্স ডে তে কিংবা চিলড্রেন্স ডে তে
 উপহারের মধ্যে মা'য়ের সুখ খোঁজে;
স্কুল থেকে ফিরেই সে জানে তাকে টিউশনে যেতে হবে,
সামনের মাঠটা তার খেলার জন্য নয়
ওখানে তো বস্তিবাড়ির ছেলেরা খেলে;

আমরা দোষ এড়াই কাজের অযুহাতে,
টাকা দিয়ে শিশুর ভবিষ্যৎ গড়ি হোস্টেলের চারগন্ডির মাঝে,
এভাবেই তারা একদিন গড়ে ওঠে উচ্চশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ডাক্তার,
যেন ইতিহাসের চাকার মত
দায় এড়াতে তারাও একদিন আমাদের ঠিকানা খোঁজে
বৃদ্ধ কোনো আবাসনে ।।

অমিত কুমার দাস



তোমার কি ইচ্ছে হয়না সর্বনাশ করতে?
***********************************



প্রতিদিনের গল্পগুলো লেখা থাকে ডায়েরিতে,
কথাকার থাকেন নামে বেনামে।
তুলতুলে বালিশে খটখটে মাথায় সর্বনাশী চিন্তা,
ভালোলাগার পরশে আবারও মাথা হয় তুলতুলে।

ওই লোকটাকে দেখেছ?যিনি একগোছা ঢেঁকিশাক তুললেন?বাড়িতে স্মিতহাস্যে বলবেন 'কিনে আনলাম'।

সেই বাবাটাকে দেখেছ?যিনি কাঁধের ব্যথায় কুপোকাত হয়েও চিনিকলে কাজ করে চলেছেন?ছেলের জন্য হরলিক্স আনবেন বলে!

পৃথিবীর কতরুপ তাইনা?
এসব দেখে তোমার কি ইচ্ছে হয়না সর্বনাশ করতে?
আবার নতুন করে গড়তে?

চিরঞ্জিত সাহা




তৃষ্ণা
******




দেয়ালের স্রোতে ধোঁয়া টিকটিকি সাজে ,
আদিম আরশি হাসে শরীরের খাঁজে
প্রেমহীন যৌনতা কন্ডম যুগে ,
মিশছে রক্তে নেশা,বিষের হুজুগে ।
সূর্য দেবতা কুন্তীর যোনি চিরে
সাদরে কুলীন মধ্যমাদের ভিড়ে ,
আটকে পার্থ ঊর্বশীর ওই বুকে
বৃহন্নলা ঘুমপাড়ানি বন্দুকে ।
তবু বনলতা আসে ঘৃণ্য স্বভাবে
ক্লিওপ্যাট্রারা হাসে ভুলের হিসেবে ,
হস্তমৈথুনের ক্লান্ত দুপুরে
তোর স্মৃতিদের ভিড় কেন কারাগারে? ?

রিয়া ভট্টাচার্য






ধর্মের দোহাই

 

আমরা ধর্মের সওদা করি,
ধর্ম ধুয়ে খাই....
আচ্ছা বলো চণ্ডীচরণ;
মানুষ কোথা পাই!!
ধর্মের নামে মানুষ নিধন....
বলি - কুরবানী সার,
ঈশ্বরকে কি পেয়েছ খুঁজে?
জানি পাওনি, মিথ্যে কপচেছ বেদ - কোরান '
আসলে তোমরা মানুষ চিনতে চাওনি।
দম্ভে করেছ পুঁথির বিচার....
শিক্ষা চিবিয়ে হয়েছ তোতাপাখি, 
আদপে বিচার করেছ প্রথাগত ডিগ্রির '
ভুয়ো ঔদ্ধত্যে ছোঁওনি মাটি।
তোমরা যারা পশু মারো ' গা ফুলিয়ে বলো "মোরা জায়েজ খিদমতগার"... 
আসলে তোমরা ঈশ্বর দেখোনি ' তার হয়না রক্তের দরকার।
বেদ - পুরাণ বলে এসেছে ঈশ্বর সবার পিতা,
তবে বলো হে মূর্খ ধর্মধ্বজী বলির কিবা প্রয়োজনীয়তা?
কুরবানী করে উল্লাস করো, গরীবের নামে দোহাই...
বলো কগ্রাস অন্ন জুগিয়েছ তার মুখে;
মনুষ্যত্বের করো বড়াই!!
খাদ্যশৃঙখল মিথ্যা নয়,
নয় মিথ্যা খাদ্য - খাদক আস্ফালন....
তবে কেন যুক্ত করো তাকে ঈশ্বরের সাথে??
দোহাই দেওয়ার কিই বা প্রয়োজন!!
আমি অত ধর্ম বুঝিনা..... 
বলতে পারো বিধর্মী কোনো কাফের,
হিন্দু - মুসলিম মানিনা ভেদ ' তুলে ধরি শুধু স্পষ্ট ছবিখানা,
এবার নাহয় মানুষ হও ; তবেই পাবে প্রকৃত ঈশ্বরের ঠিকানা।।

সুষ্মিতা কর





সমাজ
******



ক্ষুরধার লেখনীর আজ ভীষণ অভাব
অভাবই এ যুগের দেশবাসীর স্বভাব।
সাড়ে তিন বছরের শিশুর দেহে ছুঁচের অস্তিত্ব;
ধর্ষনের পূর্বে যৌনাঙ্গের মুখ কেটে বড় করার কৃতিত্ব
বা কামদুনিতে পৈশাচিক যৌনতার প্রমাণ
বার বার স্মরণ করায় নির্ভয়ার যন্ত্রণা, নারীর অপমান।
কোথায় এ সব আজ বুদ্ধিজীবীদের লেখায়?
না কি ভাবনাগুলো এখনও সৃষ্টি হয়নি মাথায়?
কেউ কি বাক্ স্বাধীনতাকে সংবিধান থেকে মুছে ফেলল?
না কি সংবাদপত্রের পাতার সংখ্যা কমে গেল?
ভুল পৌরুষত্বের সুযোগ নেওয়া?
না কি লিঙ্গবৈষম্যকে প্রশয় দেওয়া?
প্রতিবাদ না করে চুপ করে যাওয়া
একেই কি বলে আগুনে জল সিঞ্চন করা?
এই সব ধারণা ত্রুটি দিয়ে গড়া
নিঃশ্বাসও নেয় না এ সব ছাড়া!
নিশ্চুপতা যখন ঘি হয়ে যাবে
এক চামচ ঘি-ই যজ্ঞকে পুনঃজীবন দেবে-
দাবানল ডেকে আনবে কলুষিত হওয়া লাজ
পুড়ে ছাই হয়ে যাবে তখনই বিভীষিকাময় সমাজ।

শুভম রায়




শরৎ
-------


আকাশে সূর্য ডুবল, 
ঘনিয়া নামল আঁধার ।
দূরে দূরে জঙ্গলে - 
মাঝে মাঝে জ্বলে 
ওঠে বাতি।
গ্রামের মাঝিরা নৌকা 
ঠেকায় পাড়ে।
সবুজ ঘাসের সাদা বাগান, 
দোলায় মাথা বায়ুর সাথে ।
শরতের ঠান্ডা বাতাস 
করে তোলে স্নিগ্ধ পরিবেশ ।
এই শরতেই আসবে, 
মোদের দুগ্গা মা ।
শরতের শুভেচ্ছা জানাই বাংলাবাসী কে ।


(ষষ্ঠ শ্রেণি ।
জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় ।)

শুভজিৎ কোলে






কেও প্রতিবাদ করব না
================


স্বার্থের রাজনীতি,
ধর্মীয় উস্কানি,
মানুষে মানুষে বিভেদ,
রক্তাক্ত পথ ঘাট,
অশিক্ষার অন্ধকারে,
দেশ ভাগের চক্রান্ত,
এসবই ঘরে বসে বসে
তুমি আমি দেখব।
তবুও কোনো প্রতিবাদ করব না।
তুমি আমাকে বলবে
দ্যাখো তুমি এসব ব্যাপার নিয়ে,
রাস্তা ঘাটে কনো আলোচনা করোনা।
আমিও তোমাকে বলব
শোনো কারোর কাছে তুমি এইসব
ব্যাপারে আলোচনা করোনা।
আক্রোশে ফেটে যাবে বুকের ভিতরটা,
তবুও কোনো প্রতিবাদ করবনা।
তোমার ভেজা ঠোঁটে,
আলত চুম্বন দিয়ে শুয়ে পড়ব
রাত ঘুমের আশায়।
ঘুম আসবে না।
তোমারও না আমারও না।
মাথার ভিতরটা
গোলতাল পাকাবে।
দুজনে দুজনকেই বলবো
কি হলো এখোনো ঘুমাওনি?
রাত হয়েছে এবার ঘুমিয়ে পড়।
পরের দিন রাস্তা ঘাটে নিস্তব্দ,
কেউ কোনো প্রতিবাদ করবে না।
তোমাকে কথা দিয়েছি,
তাই আমিও প্রতিবাদ করব না।
তুমিও কথা দিয়েছো আমাকে,
তাই তুমিও প্রতিবাদ করবে না।

রাজিত বন্দোপাধ্যায়







জীবনের চাপ    
*************

 
আবার এলো উমার আসার পালা
বেহায়া মনে ছমকাছমকি রে ,  
মনের খুলে খড়খড়িটা --  
একি বেশে চলে উমা অভিসারে !   
শিবের ত্রিনয়ন শক্তিহীন এখন      
পরকীয়ার পরম রসে --     
জেন তাতে আর না আছে   
কোন ক্লেশ মা উমার কাছে !!   
তোমরাই তো মা নরনারী তরে  
খুলেছো রুদ্ধ পরকীয়া দ্বার --     
আইনের বেড়ি ফেরি হল আজ   
বিচারকের করি জয় জয়কার ।  
তোমাদের উমা মাটির প্রলেপে  
যত রুদ্ধশ্বাসে সাজুক না কেন --   
যতই ঝলসাক হ্যালোজেনের আলোয়    
গহনা আর পরিপাটির তাপে ,     
সবকিছু আজ বদলে গিয়েছে যে ছাই    
তোমাদের নতুন জীবনের চাপে । 

তোহাদ্দেশ সেখ




পতিতার রাত
*************


       

পতিতার রাত প্রজাপতি হাসে না।
কামুক ইচ্ছেরা উঠ বস করে  
যোনিখোর টাকার ইশারায়।
অশ্রু বা বীর্যের পূর্ব মুহূর্ত গুলো 
লিখে রাখে পুরোনো চৌকাঠ।
কামের সর্বনাশা যদিও সুখের খোঁজে চোখ বুজে।
রাতের বা সর্বনাশার বা পুরোনো চৌকাঠের 
অদেখা থেকে যায় টাকার প্রয়োজনটা।

দোলন দাস মণ্ডল






লজ্জাব্রত
*********




ঠাকুমার ঝুলি হাঁটকালে এখন রূপকথা না,
বেরিয়ে আসে ভোর রাতের ধর্ষণের গল্প। 
   নাতনিদের চোখে অসহায়তা,
            কিছু নাতিদের চোখে লজ্জা 
                          কিছুর চোখে উল্লাস। 

              এ শহরকে আমি চিনি না। 
         জন্মাবধি যাকে আমি চিনে আসছি। 
পিছন ফিরে আমার শৈশবকে অলীক বলে মনে হয়। আঙুল ধরে বড়ো করে তোলা জল-হাওয়া-পথ- মাঠ-ঘাস-
         সবাইকে আজ ধর্ষকের মতো লাগে। 
         
       ... ওরা রাজপথ দিয়ে উলঙ্গ হাঁটে, 
আমরা শালীন পোশাকি রক্ষাকবচ বানানোর মিথ্যে চেষ্টায়.....!
তারপরও শ্বেতশুভ্র শাড়িতে ভয়ঙ্করতার  লাল! 
          দেখি,  চমকে উঠি...
আর বাড়ি ফিরে শিবরাত্রির ব্রত রেখে
   লিঙ্গের মাথায় ঢালি কামনার জল....। 
           

প্রনবেশ চক্রবর্তী




কাপুরুষ নাকি পুরুষ!! 
********************





 ও মেয়ে এক্কেবারেই নারী তো নোস তো তুই বড্ড ছোট্ট শিশু,
তোর আবার কি নারী দিবস, চকলেট দে রে দাশু।
তোর সঙ্গে করলে মজা তাতেও হবে ইস্যু?
চুপ কর তো মজা নিতে দে দেখাস নে তোর আঁশু!

ও মেয়ে তুই বেশ তো ছুঁড়ি, বেশ তো রাইকিশোরী,
তোরও আবার নারী দিবস মানতে যে না পারি! 
আয় না কাছে ঝোপের নীচে একটু আদর করি,
এই তো বয়েস কর না আয়েশ কান্না কি দরকারী?

ও মেয়ে তুই ভরযুবতী ঠিক আছে তুই নারী,
তা হলে তো নারী দিবস তোর জন্যেই ভারী!
নে মেনে নে শান্তমনে করিস না দরাদরি,
নাহলে কিন্তু ভালো হবে না করবো গা জোয়ারি!

ও মেয়ে তুই মাঝবয়েসী সুন্দরী, সংসারী?
নারী দিবস তোরও নাকি? যাঃ কি যে করি!
ছেলে মেয়ে আছে আবার থাক না, তোকেই ধরি,
আমরা পুরুষ অত্যাচারী চাই শুধু একটা নারী! 

ও মা, এটা কে, ঠাকুমা? সত্তর, আশির বুড়ী,
এরও আবার নারী দিবস কি দিন এলো মাইরি!
চল বুড়ীকে সবাই মিলে ধরে মজা করি,
সগ্গে যাবার আগে নাহয় হোক সে আবার নারী!

এই তো হলো নারী দিবস কারো কারো চোখে নারী,
সারা বছরে একটা দিন তো নাহয় একটু হারি! 
হারবো কেন? হোক না তা সে রোজ দিবসই নারী,
ভোগ করতে এসেছি যখন ত্যাগটা কি জরুরী?

আমরা তো আর চাইনি কোন সত্যি পুরুষ দিবস,
তাহলে সত্যি পুরুষই হতাম দিতাম প্রেমের পরশ,
আমরা হলাম কাপুরুষ বুঝলি? এক্কেরে কাপুরুষ!  
নারীতে বাঁধা নাড়ী মোদের মানবো না কোন বয়স!

একদিন হোক নারী দিবস নেই কোন আপত্তি,
বাকি সব দিন পুরুষ দিবস বুঝলি তো এই সত্যি?
না বুঝলেও কি করবি বল? করবি কিছু বিপত্তি? 
যত পারিস বল কাপুরুষ! তবু নারী মোদের সম্পত্তি! 


পারমিতা সাধুখাঁ







বিচিত্রতা
**********




জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে
জি.এস. টির দৌলতে l
চলছে জীবন সস্তাচালে
রেশন দোকান আছে ll

শ্রমের মূল্য ঘামের কাছে
টাকায় কিনে বেচে l
দিনমজুরের আবেগ মরে
খড়ের গাদায় গুঁজে ll

ভোটের নেশায় সমাজ ছোটে
নতুন সরকার গড়ে l
পুরানো চাল ভাতে বাড়ে
মুখ মুখোশের ঢালে ll

নতুন আলো আলেয়াতে
উলঙ্গ রাজার দেশ l
তবেদারি তোষামোদে
কাটছে জীবন বেশ ll

রবি মল্লিক





সৈনিক
*******



ইতিহাসের পাতা রক্তে রাঙ্গা
বিবিধ যুদ্ধে ভরা,
যাঁদের নাম লেখা রয়েছে
শুধুই কি ছিল তাঁরা?
শক, হুন, মুঘল, পাঠান
এলো আর কতো গেলো,
তাঁদের ধ্বজা তুলতে গিয়ে
নিভল সহস্র আলো৷
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সবই
সৈন্যের লাশের স্তূপ,
রক্তপিপাসু যুদ্ধক্ষেত্র
করবে যে কবে চুপ?
পাতা উল্টে শুধু যুদ্ধের
নায়কদের কথাই পাই,
রাজতন্ত্রের মূল কান্ডারি
সৈন্যরা কোথাও নাই!
সৈন্যরা সব রক্ত দিয়ে
রক্ষা করে সীমানা,
তাঁদের দুঃখ তাঁদের কষ্ট
আছে কী কারো জানা?
দেশের কাছে দশের কাছে
এটাই বলে যাই,
সন্মানের সাথে সৈন্যরা যেন
হৃদয়ে পায় ঠাঁই৷

রাণা চ্যাটার্জী




পর্দা ফাঁস
*********





বাড়ির অমতেই হোক আর অবশেষে ছেলের ভালোবাসায় সিলমোহর দিয়ে পাত্রী নির্বাচনে বিবাহের প্রস্তুতি শুরু করার পরই হবু শশুর মশাই ঢাক পেটাতে শুরু করলেন, "বৌমা দারুন বুদ্ধিমতী,কোনো এক কোচিং সেন্টারে রিসিপশনিস্ট পদে জব করেই নাকি আঠারো হাজার টাকা বেতন পান! " কথাটা  এখনকার  হলেও না হয়  বটে কিন্তু দশ বছর আগে কোন মফস্বল শহরের কোচিং সেন্টারের বেতন এত ! শুনে হেঁচকি উঠলেও বাড়িয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলাটা দারুন টেকনিক ,সবাই পারে না!
যেখানে সেই সময়ে সরকারি স্কুল টিচার এর মাইনে শুরু হতো আঠারো হাজারের  কিছু বেশি দিয়ে! কিন্তু তাতে কি?  উনার ঢাক পেটানোকে গ্রামের অনভিজ্ঞ মহল আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি বিস্ময় চোখে "তাই নাকি ,আরে বাহ" বলেই খুশি  সেখানে নীরব না থাকলে বদনাম জুটবে,হিংসা করছে বলে!

কিছু কিছু মানুষ এমন টা করে মানে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলে বেশ মজা পান ।ভাবখানা এমন,"কেমন চমকে দিলাম ,বোকা হাঁদার দল কিচ্ছু টেরও পেলো না! কিন্তু সে বা তিনি এটা বোঝেন না ,যে তার সাধের ফোলানো বেলুন, ফুটো হলেই চুপসে যাবে । যে টুকু হৃৎগৌরব এসেছে, সেটাও লোক হাসি  হয়ে গিয়ে পড়ে থাকবে রসকষহীন এড়িয়ে যাওয়া,বা গুরুজনদের বলা যায়না ,সামনে বলা উচিতও নয়, সেই অন্তঃসারশূন্য সমীহ টুকু।

বিয়ের পরে পরেই কোন এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম। নতুন জামাই পেয়ে বাড়ির কর্তা, সারাদিন যে কতবার, ফিরিস্তি দিলেন,রাজকীয় খাওয়া-দাওয়ার  আয়োজন করেছেন বলে। খাওয়া-দাওয়া ,মাংস নাকি প্রচুর পরিমানে,এলাহী ব্যাপার ! রাজকীয় বিয়ে বাড়ির পরিবেশে এসে পড়েছি ভেবে বেশ গর্বিত হচ্ছিলাম  কিন্তু ভুল ভাঙলো বাস্তবের ছবি কড়া নাড়াতে! · হলোটা কি তিন নম্বর ব্যাচ থেকে মাংসের টান!  চার নম্বর ব্যাচ থেকে মিষ্টির কমতি শুরু হলো! আমরা যখন ছয় নম্বর ব্যাচে খেতে বসলাম, গোটা কয়েক শুকনো কচুরি  ছাড়া কিছুই নেই !

এখানে আমি দোষের কথা বলছি না ,বিয়ে বাড়ির মত পবিত্র অনুষ্ঠানে এত লোককে খাইয়ে ভবিষ্যতের ভাঁড়ারে টান পড়ানোর কোনো মানেই হয় না ,কিন্তু তবু এই যে বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলা, বাস্তবের সঙ্গে এমন অসামঞ্জস্য এটা বোধহয় ঠিক নয়। 

কোন কোন বাবা-মাকে দেখি, বাইরের লোকের সামনে ছেলে-মেয়ের দারুণ প্রশংসা করেন। সাবাস ,বলে পিঠ চাপড়ে দেন আবার এটাও দেখি যত ভালোই পড়াশোনা করুক না কেন,অনেক বাবা মা বেশিরভাগই নিন্দা করে ,বকা ঝকাও। ওনাদের উদ্দেশ্য একটাই যে,সন্তান যেন শেখে ,আরো ভালো করে পড়াশোনা করে ,মানুষের মতো মানুষ হয়।

কোন এক কাক,ভাইপোর ওকালতি পড়তে যাবার খবর, যেভাবে গ্রামের লোকের সামনে দিয়েছিলেন , বেশ মজাই লাগছিল শুনে ,"বাপরে বাপ, পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিনা ভাগ্না হাইকোর্টের উকিল হয়ে গেছে !এমন বাড়িয়ে প্রচার  সিনেমার গতিকেও হার মানায়!

ছোটবেলা থেকে বাড়িতে অনেক পত্রপত্রিকা, সৌজন্য সংখ্যা আসার সুবাদে অনেক গল্প পড়তাম সে সব স্মৃতির অতলে তলিয়ে গেলেও একটা অবাক করা মজার গল্প পড়েছিলাম ।লেখকের নামটা ঠিক মনে নেই তবে গল্পের নাম ছিল," রুপার বর মাস্টার"। সংক্ষেপে বিষয়টা ছিল," গ্রামের এক সাধারণ মেয়ের হঠাৎ বিয়ের সম্বন্ধ আসে মাস্টার পাত্রের সাথে ! চাকরির এমন আকালে,ভালো পাত্র হাত ছাড়া কি করা যায় ! তাই মহা ধুমধামে বিয়ে হয়ে গেল রুপার।

অষ্টমঙ্গলায় বেড়াতে আসা জামাই কে ফুরসৎ পেয়ে,কেউ ইস্কুল টা কোথায় জানতে চাইতেই বিপত্তি। ঝোলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ার উপক্রম। জামাই ও অবাক,সে জানালো ,"স্কুল মানে?আমি তো ব্যান্ড পার্টির ব্যান্ড মাস্টার!!" এক্ষেত্রে অবশ্য বড় মিসান্ডারস্টান্ডিং ই দায়ী।ভালো পাত্র হাতের নাগালে চলে  যায় পাছে, নানা প্রশ্নে! আবার পাত্রপক্ষ জানিয়েছেও ভাসা, ভাসা যে পাত্র মাস্টার! তবু তথ্যের অভাবে এত বড় অঘটন ! 

কখনো দেখি পাড়ার কোন বাড়ির গার্জেন, পাড়ার অন্যান্যদের প্রতি  দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কথা ছোড়েন ! ভাবখানা এমন যেন,আমার ছেলে বা মেয়ে সোনার টুকরো আর বাকিরা দোষে ভরা!কিন্তু চোখ ,কান মাথা খেয়ে ,অধিক প্রশ্রয়ে সেই বাড়ির ছেলে বা মেয়ে, প্রেম-ভালোবাসা,প্রণয়ে জড়িয়ে অঘটন ঘটায় যখন ,মুখে কুলুপ এঁটে,খিল দিয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে দেন সেই বাড়ির অভিভাবক গণ। কোন সমালোচনা করে বলছি না,রোমিও দাপটে ধোঁকা খাওয়া সত্যি খারাপ কিন্তু তা বলে বাকিরা সব খারাপ, আমি ভালো আর আমার দুধে ভাতে থাকা সন্তানরা সেরা,কেবল, এটা ঠিক  নয়।

একবার  বন্ধুর পিসির বাড়ির ছোটখাটো  বারোয়ারি পুজোতে গিয়ে বেশ অভিজ্ঞতা হয়েছিল।সামান্য আয়োজনের দু চারটে দোকান আসা মেলায় কোনো এক মধ্য বয়সী আধিকারিক জামাই ঘুরে ফিরে দেখছিলেন। কেউ কুশল কামনা করলেই ,তাদের ঘুরে ফিরে উত্তর দিচ্ছিলেন যে,ওনার ছেলে এবার,মাধ্যমিকের রেসাল্ট বেরুলে মেধা তালিকায় প্রথম না হলেও পাঁচের মধ্যে থাকবেন।

এতবার করে উনি ফাটা  ক্যাসেট বাজাচ্ছিলেন ছেলের কি বলবো!গ্রামের সাদা সিধে সরল মুখের মানুষ গুলো চমকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন ওনাকে।এরই মাঝে ওনার ছেলেটি ,সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাবার কাছ থেকে কুড়ি টাকা নিয়ে জিলাবি কিনে,  পিছন দিক দিয়ে একাই খেতে খেতে চলে গেল ! একা যে খেতে নেই ,ভাগ করে খেতে হয় কে শেখাবে ওকে? এটা ওকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। একা খেয়ে খেয়ে আর  পিঠ চাপড়ানো প্রশংসা দেখেই বড় হয়ে ওঠা তার।

এই বিষয়ের উপর যত আলোকপাত করব,তার শেষ নেই।মানুষের চরিত্রের নানা দিক নগ্ন ভাবে ফুটে উঠতেই থাকবে । ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ জমানায় নিত্যনতুন অ্যাপের দৌলতে , সবাই এমন ঝাঁ-চকচকে নিজেদের ছবি আপলোড করে,বেশ দারুন লাগে। কিন্তু সে বা তিনির সঙ্গে বাস্তবের ছবির  মিল থাকাটাও জরুরি।তবেই না আমার আমিতে আমার বাস! জানিনা বাপু এতে, মনের কনফিডেন্স ঠিক কতটা বাড়ে বরং মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষনে  এটা এক প্রকার হতাশা, ফুরিয়ে যাবার বহিঃপ্রকাশকেই ইঙ্গিত করে।

এইভাবে কখনো কেমন পর্দাফাঁসের বিষয় প্রকাশ্যে,গোপনে,মনের গহনে বেআব্রু হয়ে যায়।আজ  মানুষের কিছু চেনা প্রকৃতির,এক ঝলক ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম ।এখানেই শেষ নয় আসলে এই আলোচনার সত্যিই কোন শেষ নেই।

কার্তিক ঢক্






মালিনী 
******

  

কে তুমি বাজাও শাঁখ
সন্ধ্যারতি শেষে। 
সুগন্ধি জ্বেলে দাও
উন্মুক্ত দ্বারে --

এতোটা নমনীয়তা 
কি করে রেখেছো ধরে
বুকের ভিতর ! 

ইঁট-কাঠ পাথরের স্তুপ --
পায়ের যন্ত্রণা ভুলে
কি ভাবে রেখেছো তুলে দুই হাতে
সবুজ ঘাসের ঘর --
অপরূপ সৌন্দর্য্য তার...

চন্দন বাসুলী





                 রক্তাক্ত অন্তর্বাস 





 উন্নয়নের খাম খেয়ালী হওয়ায় জঙ্গলে রাজপথে ,
 প্রাসাদে বস্তিতে উড়ে বেড়াচ্ছে রক্তাক্ত অন্তর্বাস ;
 ডিজের শব্দে চাপা পড়ছে ধর্ষিতার তীব্র আর্তনাদ ,
 ক্ষিপ্র কাম দণ্ডের প্রবল আঘাতে ছিন্নবিন্ন 
 সহস্র শান্ত গোলাপের কোঁকড়ানো পাপড়ি ।

ডান বাম , উত্তর দক্ষিণ দাবি করে আমাদের বলে 
তখন মহামন্ত্রী নিলাম চালায় বয়সের বিচারে ;
শোক মিছিলে পায়ে পা মিলিয়ে রাস্তায় নামে বুদ্ধিজীবর দল ,
অবশেষে ভাষণ শুনে মুগ্ধ হয়
এই বাংলার আপামর মূর্খ  জনসাধারণ !