নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বিকাশ দাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিকাশ দাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

ছিলো না সায় : বিকাশ দাস



কবিতা আগে কোনদিন পড়িনি।
কবিতার সরোবরে  নাইতে এলে নন্দিনী
পুরুষের চোখ কতোটা ডুবলে জানবে,  লজ্জার স্বচ্ছতায়
নারীর সম্মতি। দৃষ্টির সায়। বুঝিনি। 
তুমি বয়স ছুঁয়ে লিখেছো কবিতা     ভালোবেসে নারীর স্বচ্ছতা 
আঙুলের স্পর্শের দাগে অনেক মেয়েলি শব্দ হয়েছিলো ধর্ষিতা  
মেয়েদের বুক ভারি হলেই যে সবাই নারী, জানি জানতে সে কথা। 
লজ্জার লাবণ্যতা 
অন্তর্বাসের পিঠের সুতো আগলা না করে।

তবু আধুনিক সভ্যতা 
কাঁখের লাজুক নগ্নভাঁজ শরীরের যুবতী কারু কাজ
স্বচ্ছতার আকর্ষণে ভেতরের আকর্ষী চেখে দেখার প্রবণতা  
দূর থেকে দু’চোখে মাখলে ধিক্কারে বলেছে এতো অসভ্যতা!  

কিছুটা বাজলো ঠোঁটের শিসে 
কিছুটা জিভ  খোয়ালো  বিষে  
কতোটা লিপ্সা কোন দেখার দর্শন,  বলবে যৌনতার ধর্ষণ? 
ফুলের তোড়ায় জড়িয়ে সৌজন্যতার ভাণ  
সুবিধাবাদিরা, নারী  খুবলে চোষার আনচান 
আছে, থাকবে যতোদিন নারী পুরুষ অসমান। 

আদালত আইন পড়বে আইন মেনে 
কথার ব্যকারণ পোশাকে আশাকে টেনে 
কতোটা স্বচ্ছতার দায়,  দৃষ্টির স্নান জেনেছে মানবকোষ অভিধান? 

অমলদার বাস্তবতা বিকাশ দাস (বিল্টু )




রক্তপ্রবাহ স্থিমিত;অলিন্দ -নিলয়ের সংঘাত, আড্রিনালিনের উর্ধ্বচাপ ;বিমূর্ত হয়ে জীবন দর্শন খুঁজি....

পাথরে -পাথরে ঠোকাঠুকিতে স্ফুলিঙ্গ হয় , এই স্ফুলিঙ্গই তো আগুনের জাত, হিসেব বোঝেনা  ;ভস্ম করে নিজেও স্থিমিত হয়....

হিংসা -বিদ্ধেশ , বিবেক -উপলব্ধি মানুষকে শেখায়- ভাবায়  ;মানুষে মানুষে সংঘাত হলে,প্রশ্ন থেকে যায়? বারুদ তো কৃত্রিম ;অকৃত্রিমতার দাবানল তো  দাউ দাউ করে......

উবাচ অমলদা।অলস দুপুরে সব সমীকরণের সমতা আনে, মাত্রা তুলে দিয়ে আলেয়ার ব্যাখ্যা দেয় -এই আলেয়ার রহস্যকে ভাবতে বলে, "সম্পর্ক "-"মাত্রিক" -কি'না?- জানতে চেয়ে কথার ইতি টানে......

স্তব্ধ দুপুরে ভাবতেই থাকি, সত্যিই বড়ই অদ্ভূত অমলদা !খুঁজে পেয়েছি সব উত্তর, রক্ত প্রবাহেরও মানে ;পাথর -মানুষের সম্পর্ক আর জীব -রসায়ন...

               

স্ট্রাজেডি বিকেলে স্টপ: বিকাশ দাস (বিল্টু )





একটি তরতাজা বিকেলে পেন্ডুলাম ঘড়ি টিক টিক আওয়াজে মনের স্রোতের লাভাকে আগ্নেয়গিরির লাভা করে বুনো মহিষের মতো চঞ্চল করে তোলে....

কভার পেজে তোমার ছবি, "ব্ল্যাক ডে "হয়ত আমারই, পুরানো মলাটটা বেঘোরে মারলো...

জামার পকেটে শিরশির হাওয়াতে উত্তপ্ত ধমনী ;
হার্ট বিট মেপে দেখি ডানহাত বামহাতের উপরে রেখে :72 প্লাস

বুক পকেটে রাখা তোমার দেওয়া শেষ বাটা পান আজ ঝিমিয়ে আছে;রস নেই।ঠিক আমার কিডনীর মতো, সেটাও তো নিকোটিনে ভরা ...

তবুও বাটাপান মুখে দিয়ে: হারিয়ে যাওয়া রোমন্থনকে ডেকে তুলি

সদ্য কেটে নেওয়া  বোরো ধান ক্ষেতের উপর তোমার নগ্ন পায়ের জলচাপ খুঁজি

কুড়িয়ে নেওয়া ধানের খোঁসা ছাড়িয়ে, মুখে নিয়ে দানা একাই হেঁটে চলি দিগন্তের পথে, কিছুটা অভ্যাসগত....

যেখানে মাছরাঙা ঠোঁটে মাছ নিয়ে আমার অপেক্ষায়..... তবুও কল্পনা হয়ত !

শেষ বিকেলের শেষ চিঠি তবুও ডাকে গেলোনা, চিঠি তো গাঁজার কলকেই হলো.... বা !!বা'রে !!

আজকাল বিকেল গুলো খুবই ভাবুক করে তোলে, বকবক করে ফেলি অনেকটা বেশিই মেকি হয়ে -

তবে মেকির আড়ালে বুক পকেটের ব্যথা জমাই থাক পেন্ডুলামের ঘড়ির কাছে

টিক টিক টিক... স্টপ.... ব্যাটারী নেই, অভিশপ্ত বিকেল তবুও রেহাই দিলো না......

এই বুঝি স্ট্রাজেডি... হা হা হা... !!!

              

শিরোনামহীন গল্প : বিকাশ দাস (বিল্টু )



রাত ঘুমিয়ে আছে,  তারারা ক্লান্ত ,
আর
চাঁদ মেঘের দেশে ---

আমি নির্জন রাতে একা গল্প লিখি ।
যোগ বিয়োগের প্রাপ্তি আর ভালোবাসার ।
তবে -
     কলম দিয়ে নয়,
নীরবে একা আঁধার রাতে  মনে মনে ।

  মন তো কত গল্প লিখে চলে ;
                             সব কি মনে থাকে?
হিসেব চলে..........

 আবার কিছু গল্প শেষ হয়েও শেষ হয়না ।
                                  যদি আরও কিছু হতো....

আমার  গল্পও  শেষ হলো না,
                                শিরোনাম পারিনি  দিতে।
ভাবছি রাত শেষ করবো বুঝি?
            তখনি বুঝি নতুন গল্প শুরু।

 শিরোনাম নতুন প্রভাতের আবছায়া  আলোতে ।
আর,
আমার মন  লিখে চলছে কত না জীবন কথা ।
তবুও _
যোগ বিয়োগ কিছুতেই হিসেবে  আসেনা  না ।
.
.

রাত শেষ, সকাল।
  ------ তবুও গল্প ফুরালো না ।

প্লাবন ভূমি : বিকাশ দাস (বিল্টু )



নীরবতা যখন বাঁধ ভাঙা উচ্ছাস হয়ে প্লাবিত হয় প্লাবন ভূমিতে

প্লাবন ভূমি যখন প্লাবনের জলে লবনের আস্তরনে
চাষ অযোগ্য

লাঙল চালিয়ে ফসল ফলানোর চেষ্টা
      বীজ বপন করতে ভয় লাগে -
অঙ্কুর কি হবে?
                না ভ্রূণ সুপ্ততেই বিনাশ....

প্লাবনের জল কবিতা হয় ;
  ভ্রূণ হয়, চারা গাছ হয়ে বাঁধ দেয় ।
প্লাবন আটকে যায় গাছের শিকড়ে ।

জল আর লবন হয়না !
এই তো কবিতায় শান্তি ,এই তো মনের সুখ ।

থাক না প্লাবন ;
                  জমি পলি হবেই হবে ।
ক্ষতি হউক না !হতে দাও ,
জল তো আছেই জীবনের বাঁচার রসদ হয়ে ।

গাছ আরও কিছু লাগাতে হবে নদীর ধারে ।
আসুক যত নোনা জল ,
সূর্য আছে তাপ আছে কবিতা আছে ।

ভয় নেই তাই  ।

ন্যাপকিন: বিকাশ দাস (বিল্টু)

(বিশ্ব নারী দিবসে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে)



ঋতুস্রাব, রক্তে লাল হওয়া সাদা ইউনিফর্ম
ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসা মেয়েটির লাগছে শরম ।
ন্যাপকিন চাই, কমনরুমে যাওয়া চাই -
দিদিমনির কড়া শাসনে কিভাবে তা পাই ?
রক্তের ছোপ ;মনের গলিতে আনে নিজের প্রতি ক্ষোভ ।
মেয়ে জন্ম পাপ, তবে কেন জন্ম দিল বেহায়া বাপ ?
লজ্জায় লাল হওয়া মেয়েটি ন্যাপকিন চায় ,
দোকানে অনেক লোক কি করে তবে তা পায়?
ছেলে ছোকরা আড্ডা মারে তা 'য়
ন্যাপকিনের কথা শুনে কতই না সুখ টানে সিগারেট ফুঁকায়  --
মেয়েটি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে, ভাবে কখন হবে লোক খালি ।
আর কত!আর কত খেলতেই হবে এ রকম চোরাবালি ?

কেন এত ন্যাপকিনের প্রতি জমা ওই ক্ষোভ ?
কি দাদা এভাবেই কি হচ্ছেনা আমাদের মনুrষত্ব লোপ ?
নেই কি সবার ঘরে দিদি বোন মা --
তবে কেন, কেন নাচে ন্যাপকিনের কথাতে ওই দুরাত্মা ।
বাঁকা চোখে তাকায় কেন তবে সবাই ,
জানিনা ঠিক, হয়ত এভাবেই হয় কত মেয়ের পড়া কামাই ।

কত কথা, নানান অশুচি, কত বিজ্ঞতা
মার গর্ভে ছিলাম সবাই, ভুলে গেছি কি তা?
রক্তের ওই লাল দাগ ভবিষৎরই সুপ্ত আশা
কু কথা গো নয়, দাও না গো একটু সহানুভূতি আর একটু ভালবাসা ।
হবে কেন আর চোখে, বাঁকা চোখে দেখা --
কেন ভুলে যাই সবই তো এ এক সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া ।

কোরো 'না গো আর এমন আচরণ --
এভাবেই কি করতে চাও মানুষের মনুষত্বের মরণ ?

মায়ের পরশ : বিকাশ দাস (বিল্টু )




রাত প্রায় একটা ছুঁয়েছে, চাঁদের আলো ক্ষীণ হয়ে মেঘের আনাগোনা চলছে ।ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে ।পূবের শ্মশান ঘাট থেকে শুধু আওয়াজ শোনা যাচ্ছে" হরি বোল, বল হরি ।"আর আজ কুকুর গুলিও খুব বেহায়া। হঠাৎ হঠাৎ চিৎকার জুড়ে দিচ্ছে ।এই সময় চয়নের গাড়ির শব্দ শোনা গেল ।গাড়ি বলতে একটা পুরানো বাইক, ওটাই বহু কষ্টে কিনেছে ।বাড়ির পাশের টার্নিং এর এখানে ঘোরাতে  গিয়ে পরে গেল। মা শব্দ শুনতে পেল ।বিড়বিড় করে মা বলা শুরু করলো", এ অমানুষ হয়ে গেল ।আমার হয়েছে যত জ্বালা !আজ হয়ত আবার গলায় ঢেলে এসেছে।"
চয়ন গাড়িটা তুলে আবার স্টার্ট দিয়ে বাড়ি আসলো ।চয়ন ভাবলো মা ঘুমিয়ে আছে ,তাই গাড়িটা তুলে ঘরে রাখা  ঢাকা খাবার খেতে বসলো ।
ভাত নিয়ে বসছে, হঠাৎ মার আগমন ।
"কিরে তুই আজও খেয়ে আসলি? আমি স্পর্ষ্ট শব্দ শুনতে পেলাম , দেখলি তো কেউ তোর কথা ভাবে? আর আমি তো মা.. আমি পারিনা ,আমি পারিনারে -আর এভাবে থাকতে ?ভগবানও এমন আমায় নেয়ও না !"
চয়ন চুপ হয়ে শুনছিলো ।মার মুখোমুখি কথা বলতে ভয় হচ্ছিল। আজ একটু বেশিই খাওয়া হয়েছিল তার ।
"ঠিক আছে খেয়ে শুয়ে পর ... আমি মরলে বুঝবি  ?"
চয়ন আর খেতে পারলো না ।একটু বমি বমি আসছে ।আবার বমি করলে মা আরও সন্দেহ করবে তাই পকেটে রাখা গুটকা টা খেয়ে বাথরুম গিয়ে সিগারেট টা ধরানোর চেষ্টা করলো ।কিন্তু নেশা এত টাই ছিল যে ধরাতে পারছিলো না ।বহু চেষ্টার পরে সিগারেট টা ধরিয়ে ভাবতে লাগলো আর বিড়বিড় করে বলতে লাগলো ,"মা ,মা'গো আমি কি আর সাধে খাই? আমি যে আর পারিনা ঠিক থাকতে -?
মা তখনও ঘুমায়নি।
" কিরে চয়ন !যা বাবা এখন শুয়ে পর আর কত? আর পারিনা ।"
মার উপস্থিতি টের পেয়ে সিগারেট টা জলে চুবিয়ে দেয় ।
হ্যা মা...
রাত প্রায় দু 'টা তবুও ঘুম আসছিলো না, শুধু
শ্মশানের কাছ থেকে আসা" হরিবোল  বল হরি  "কানে বিঁধছিলো। তখনি চয়ন হারিয়ে গেল অতীতে।
হ্যা তারও ঘর ছিল, সংসার ছিল, ফুলের মতো ফুটফুটে একটা ভালোবাসার বাগান ছিল ।সেই বাগানের সব থেকে সুন্দর ফুল ছিল গোলাপী ।সেখানে কত সুন্দর খেলা হতো ,হাসি হতো ,অভিনয় হতো আর ভালোবাসাও ছিল ।হঠাৎ একদিন ঝড় আসলো ।বাগান তছনছ হয়ে গেল ।গোলাপী গোলাপ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। চয়ন আর্তনাদ করলো --কে শোনে তার কথা ?এর পরদিন চয়ন ঠিক বুজতে পেরেছিলো গোলাপ তো কীট ময় !সেই কীট তাকে ধ্বংস করে দিল ।
গোলাপী মারা যায় ,সুইসাইড করলো ।আর পুরো দোষ পড়লো চয়নদের উপরে। চয়নকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় অথচ যে গোলাপী তার প্রাণ তার ভালোবাসা সেই কিনা আগুনে জ্বলসে যাচ্ছে পারছিলো তার অন্তিম সময়ে উপস্থিত থাকতে ।

সকালে মা আগেই উঠে সিদ্ধ ভাত রাঁধতে শুরু করলো। মা জানে ছেলের সারাদিন খাওয়া হয়নি ।,আর মা এটাও জানে চয়ন তো ওরকম নয় ও তো পাড়ার সব থেকে ভালো ছেলে ।কাউকে দোষ দিয়েও লাভ নেই ?সব ওর কপাল! নাহলে প্রাইমারী চাকরিটা হয়েও হলো না  !ভাইভাতে আউট! এর থেকে দুঃখ কি আর আছে ?
মা ভাত রেঁধে চয়ন কে ডাকতে লাগলো ।
"চয়ন। কি'রে চয়ন ?--ওঠ বাবা। তোর ডিউটি আছেনা?--কিরে ওঠ !"
হ্যা মা...
চয়ন নিজেকে ঠিক করে ভাবতে একটু সময় লাগলো ।ভুলেই গেল রাতে কি হয়েছিল ?একটু মনে হওয়ায় নিজের প্রতি লজ্জা হলো ।ইস! মা কি ভাববে?
চয়ন উঠে ব্রাশ করে স্নানটা সেরে নিল। ঘড়িতে তখন আট টা, সাড়ে আট টায় তার ডিউটি ।আর আধ ঘন্টা সময়। বলা বাহুল্য চয়ন একটা কোম্পানির সুপারভাইজার ।
"এই ভাত বাড়া আছে খেয়ে নে--"
ভাত খাওয়া শেষ হওয়ার পথে মা চয়ন কে বললো ,
"কিরে বাবা, এভাবে আর চলে? এখন নতুন করে ভাব ;লোকে জানলে কি হবে? আর তোর দাদারাও নানান কথা বলছে। এখন একটা সংসার কর। আমি মেয়ে দেখি ।অন্তত আমায় একটু রেহাই দে ।আর আমার পেটের ব্যথাটা ক'দিন থেকে খুব বেড়েছে ।কখন কি যে হয় !"
মা --মা !ওসব বলো না ,তুমি না থাকলে আমি.. তুমি তো জানোই দাদারা দাদাদের মতো কাজে ব্যস্ত ।

চয়ন যেতে যেতে তাই ভাবছিলো কি করবে ?না মার কথাই শুনবে --
আজ কাজেও মন বসছিলো না ।খুব উদাসীন লাগছিল তাকে। দুপুরে লাঞ্চ এর খাওয়া শেষ করে মনে পড়লো মার তো পেটের ব্যথা ,তাই বাজারের MD ক্লিনিক থেকে কয়েকটা গ্যাসের ট্যাবলেট নিল ।সামনে মাসে বেতন পেয়ে মার জন্য একটা ভালো ডাক্তার দেখাবে আর মাকে বলেই দিবে," মা আর তোমার কষ্ট করতে হবেনা ,আমি নতুন জীবন শুরু করব ।"
  এসব ভেবে কিছুটা হাসি আসলেও মনের ভিতরের চাপা কান্না দাও দাও করে জ্বলছিল ।অন্তর থেকে কেউ যেন বলে উঠছিলো আমায় ক্ষমা করে দিও ,শুধু মার জন্যই... প্লিজ আমি শুধু তোমাকেই---
ডিউটি শেষ হওয়ার পরে আজ আর চয়ন কিছু খেলো না, মাকে আজ বলেই দিবে সব কথা,নতুন জীবন কথা--
তাই একটু আগেই বাড়ি আসার চেষ্টা করলো ।কোম্পানি থেকে গাড়িতে কুড়ি মিনিট পথ।কিছুদূর আসার পরে ফোন টা বেজে উঠলো ।প্ৰথম বার তুললো না ।আরও বাজছিলো ,গাড়িটা থামিয়ে ফোনের স্ক্রিনে লেখা বৌদির নাম্বারে ফোন !কি ব্যাপার যে বৌদির সাথে দু বছর থেকে কথা বন্ধ তার ফোন? ভাবলো নতুন কোন মতলব নাকি? তবে পরক্ষনেই মনে হলো ফোনটা ধরা যাক ।
ওই পাশে দাদার গলা ।
"চয়ন !চয়ন! চয়ন !তুই তাড়াতাড়ি আয়। মা খুব সিরিয়াস ।"
চয়ন ফোনটা কেটে খুব স্পিডে গাড়িটা ছাড়লো ,না মা তোমার কিছু হবেনা আমি আছি তো--
কি ব্যাপার এত লোক !

"চয়ন বাবা এসেছিস।"
মা তোমার কিচ্ছু হবেনা ।বলো কি হয়েছে? আমি ডাক্তার ডাকছি। ওই ছোটদা ,ছোটদা!গাড়িকে ফোন কর। অ্যাম্বুলেন্স ডাক না!
" বাবা ওসব করিস না ।আমি হয়ত আর বাঁচবো না। তুই মানুষ হ ।আর বল আর সংসার করবি ।"
 মা আমি সব রাজি ।
গাড়িও আসলো তখন।
"চয়ন আমায় একটু জল দিবি ?"
বৌদি !বৌদি !একটু জল আনো --
বৌদির হাতের গ্লাসটা সজোরে নিয়ে মার মুখে জল দিল ।
"আমি তৃপ্তি ,শান্তি পেলাম ।অয়ন চয়নকে দেখিসরে --আর আমায় তোর বাবার পাশেই রাখিস ,নিজের ভূমিতে তৃপ্তি..... পা...বো.... "

মা- মা- মা --মা...
আকাশ গুমরে উঠলো বাতাস আর্তনাদ করে উঠলো বৃষ্টি ঝমঝমিয়ে পড়তে লাগলো ।মা চির ঘুমে--

রাত দু 'টার দিকে চয়ন শুধুই শুনছিলো সবাই জোরে জোরে বলছিলো ,"হরি বোল, বল হরি ---"

বিকাশ দাস







ইদানীং



ঘরে খিল দিয়ে
কার দিকে চেয়ে
নিজের মতো করে ছড়িয়ে আছো
নিশ্বাসের ভেতর
ভালোবাসা যতো ভরিয়ে আছো ।

তুমি চলে যাচ্ছিলে
আমায় আলগোছে
বেশ কয়েকটা আলতো চুমু দিয়ে অভিমানে
তোমার এলোচুল শাশ্বত আনন্দ হয় যেখানে 

আকাশের নীচে খোলা হাওয়া
অসহায় শরীরের বাগান প্রাণবন্ত
চুমুর দহন 
ঠোঁটের আতপতাত সর্বোত্তম
রমণ মরণ 
গুচ্ছগুচ্ছ ঘাসের ডগায় শিশির
রমনপ্রপাত হৃদয়লীন  
রোদের ঝলসানি
চন্দ্রমার মতো যৌবন শরীরে রমণী ।

অনেক দিনপর বৃষ্টি দেখলাম
তোমার জানলায় একলা শীত
হাত বাড়িয়ে ডাকছিলো তোমাকে
তখন
তুমি অন্য বৃষ্টির মেঝেতে শুয়ে
ঠোঁটের সব  পুরোনো রঙ ধুয়ে
আঁকছিলে তোমার  নিজের রঙের বিহ্বলতায় 
নিঃসঙ্কোচে
গৃহিণীর শরীর বদলে অন্যের বিষয়ী সুখীর ঈর্ষায়
তোমার ব্যক্তিগত সুখ 

আমার রাত্রি ব্যতিক্রম হাওয়ায়
আমার একলার সংবৃত বিছানায়  
আজও বেশ লাগে তোমার বিয়ের বেনারসি শাড়ি
সেই রঙ সেই গন্ধ সেই ঢঙ  সুতোর বুনোনভারি
যেন বাইশের যুবতী বয়স । ধারাল ছুরি উচ্ছ্বসিত ।
তোমার শরীরের সব খাঁজ শাড়ির প্রত্যেক ভাঁজে
দিনলিপির রোজনামচা প্রনয়সারা বিলোল লাজে 

ইদানীং
পৃথিবীর দুয়ার দিয়ে  
আকাশের দুয়ার  দিয়ে
তুলে রেখেছি
তোমার বেনারসি শাড়ি ফুলের ফাঁস সম্পর্কের আঁচ উৎসঙ্গের সারে 
খুব যত্নে দু ‘চারটে  ন্যাপথলিনের গুলি ছড়িয়ে আলমারির অন্ধকারে 
সুস্থ আমি তোমার দীর্ঘ সহবাসের ছায়ায় সৌকর্য ঢেলে আমার শরীরে 


বিকাশ দাস






দুষ্টুমি



তোমার নিঃশ্বাস আচম্বিত চুম্বনের গহনে
উড়িয়ে দিগন্তে    অন্তহীন রহস্য গোপনে
মোহের দরজা জানালা ভেঙে নিজের মনে
আলাপী আকাশ মেঘবরণ আমার শিহরণে 

তোমার সোহাগ মাখা বিলোল দুষ্টুমি
কবিতার মতো দৃষ্টি কাড়া স্বাধীন ভূমি
সৃষ্টি ছাড়া বৃষ্টি          প্রসন্ন মুখর সৃষ্টি
সঙ্গোপনে লুকানো ঝনৎকারে
উষ্ণ মধুর আলিঙ্গনে   তুষার-শীতল শরীর
নিরাময় 
উচ্ছিত সব কথার স্তব্ধতার  গভীরে হৃদয়
ঋতুময়