নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সুনীতি দেবনাথ


অজানা 
******

এই যে নিরালম্ব অবস্থান কতদিন কতকাল
এই যে অস্তিত্বের হাহাকার হয়তো চিরন্তন।
আমার তোমার যাপনের কাল স্বস্তিহীন শুধু
স্বর্ণলতিকার মতন সোহাগী শোভন হলেও
পরজীবী হবার যন্ত্রণার অবসান নেই কোনদিন।

ওপারে সমুদ্র উথাল পাথাল বেলাভূমি তপ্ত বালুময়
কখন উঠবে প্রলয় ঝড় সেও তো অজানা,
বন্দরে কি ফেলবে নোঙর অচেনা জলযান?
অলৌকিক স্বপ্নের যাত্রা শেষ হবে কি নতুন কোন
পারাপারহীন আলোকের ইশারায় অন্য উপকূলে?


কা জ রী ব সু



শীত 
****


তুমুল রঙে প্রলেপ ছিল।ভুল ভাঙানোর ভিত।
এবং ছিল অস্তরাগের রঙ লাগানো শীত।

মুঠোয় ছিল লুকিয়ে রাখা উথালপাথাল ভয়।
হাতের পাতায় আখরজাত শঙ্খ এবং জয়।

অনেক কিছুর ভিতর ছিল ঘুম ভাঙানোর সুর
নীললোহিত আর চলতে থাকা দিকশূন্যপুর...

তোমার হাতে আগুন যখন শীত পোড়ে উদ্দাম
পুড়তে থাকে নিকষকালো অতল মধ্যযাম..

যে ঘুম থাকে মধ্যযামে,ভাঙতে ভাঙতে যেই
নিত্য সকাল,অর্ঘ্যকমল আলোর প্রাচুর্যেই...

তেমন ঘুমের ভাঙচুরে এক বয়সকালীন শীত
জটিল করে,যখন তোমার দু চোখ পথিকৃৎ...

পিয়ালী বসু ঘোষ



পরিপূরক...
*******




ইচ্ছের ভিতর থাকে আরও কিছু কৌতুহলী ইচ্ছে
তীব্রভাবে আছড়ে পড়বে বলেই
ঘনিষ্ঠ ঢেউ গুলো সরে যায় দূরে
সমব্যথী মেঘগুলো কাছাকাছি এলে
প্রকৃতিও শান্ত হয়

নিরাপদ পাঠশালায় নয়ছয় হয় সব প্রতিশোধ
ভুল করে বাড়িয়ে ফেলি আবারও তৃষ্ণার্ত জিভের ডগা
তোমার ঠোঁটের কাছে গিয়ে ফিরে আসে
আমার সব মৃত্যুগন্ধী নেশা
ঝরে পড়া রাত শিশির জানে মাটিই তার প্রত্যাশা !!

ঈশিতা দাস




হয়তো বা ...
********



আজ হয়েছি বন্ধি
তোমার উষ্ণতা জড়িত রাতের গভীরতায় ।
   জমাট বেঁধেছে রক্ত বিন্দু
   মুহূর্তদের কনায় কনায় ।
ডুবে গিয়েছি আজ
কোনো সীমান্তহীন জলের গভীরতায় ।
হ্যাঁ আজ আসক্ত হয়েছি আমি
      তোমার প্রতি ।
নির্বাসিতা আমি আজকাল ।
তবুও হয়তো বা কোনো একদিন
নেশা কেটে গেলে
তুমিও কেটে যাবে
   কোনো অস্তিত্বহীন পিছুটানে ।।

মীনা ঘোষ




ফিরে দেখা 
***********





আকাশের নিবিড় কোল বেয়ে,
 কুয়াশার স্বচ্ছ জলে মুখ ধুয়ে,
যারা প্রতিদিন শরীরের উত্তাপ
 মাপতে চায়,

সকালে সোনালী রোদের মিছিলে,
 ওদের সাথে দু পা হেঁটে এলে,
হঠাৎ যেন আচম্বিতে নিজের সাথে
 দেখা হয়ে যায়...!!

অতনু নন্দী




     
         অন্ধকারে এক মোমবাতি গলে 
        *****************************





টিলার উপর থেকে চাঁদ দুরন্তপনা বাড়িয়ে উঠে গেলো আর এক পাহাড়ে...
শরীর ঢেকে গেছে তরল রাত্রির রঙে

তুমিতো ছিলে না পুরুষ ধরা মেয়ে !
তোমার রূপে ঈপ্সিত ঝিলিক ,
প্রজাপতি উড়ছে তোমার আত্মায়..
বেলা পরে আসে,বেলা পরে  আসে...

নিয়নের সব বাতি নিভেছে আজ !
অন্ধকারে একা মোমবাতি গলে..
বিনিদ্র রাতে মোমবাতি থেকে
মোম গলে পরে ....।

শুভ্রা দে



এক মুঠো ছাই ...
***************



সূর্যের আলো অস্ত গেলে আসবে আবার ফিরে
সময় গেলে আর পাবোনা ফিরে
জীবন টাও তেমন গো যাবে যে অস্ত যখন আর পাবো না ফিরে
রঙ্গলীলায় উঠবেনা আর পৃথিবীর এই রঙ্গমঞ্চে
সময়ের অতলান্তে তলিয়ে যাবে এই দেহ,নাম পরিচয়
বিলিন হবে প্রবাহমান সময়ের সাথে সাথে।
জীবনের শেষ চাল বুঝে নাও।
সময়ের তুফান উড়িয়ে নিয়ে করে যাবে সব
 বিলীন এই মাটির পরে।
তেল বিহিন প্রদীপ ক্ষনে ক্ষনে নিভছে,
এক মুঠো ছাই হয়ে যাবে যে ধুলায় মিশে।

শাল্যদানী


ফর আ নিউ ইয়ার 
******************




সময়ের ঘরে কাঁটা বাস করে।
চাকাচাকা কন্সার্ট গান, বা -
মলাটে মোড়া ময়লাটে ফিসফিসানি সন্ধি।
নতুন বছর

চাদরের দাগে হিজিবিজি শব্দবহ কোলাজ,
ফরেন মাইলেজ মেল ভর্তি কুশলতা,  বা -
দেবদারু বনে ঝিলিক স্বপ্নে
জেগে থাকে তারা
যারা পুরোনো হয় না

এ পানপাত্র তুলে ধরি সময়ের নামে
ঘনঘন হাই ওঠে একঘেয়ে নিউ ইয়ারে।

তবু ভালো থেকো
ভালো থাকার অভিনয় চালিয়ে যেও

সুনন্দ মন্ডল



2নম্বর প্ল্যাটফর্ম ...
******************     

                
শীত কুয়াশা ভেঙে সেদিন পৌঁছেছিলে বর্ধমান।
অনেক সাথী ছিল তোমার!
শুধু আমি ছিলাম রামপুরহাটে
২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে।
এখান থেকেই তুমিও গন্তব্য শুরু করেছ।
নির্জনে একা শেষ প্রান্তে আমার আমি!
তুমি বলেছিলে সাথে যেতে
কিন্তু যাওয়া হয়নি।
রামপুরহাট বাজার পুরো চষে
প্ল্যাটফর্মেই দাঁড়িয়ে আছি।
অনেক রাত হয়ে গেছে।
রাতের বাতি গুলো স্পষ্ট জানাতে চাইল
আমার ঘরে ফেরার অপেক্ষায় মা
লণ্ঠনের আলো জ্বেলে বসে আছে।
বাল্বের আলোয় বাবার ঘুম ভেঙে যায় সেই ভয়ে।
আমি যখন মুরারই তখন ১০টা!
ইন্টারসিটি লেট।
তোমার ফেরার কথা ছিল
কিন্তু দেখতে পেলাম না।
ফোন যদিও মানুষকে অনেক কাছে এনে দিয়েছে
তবু সেদিন তোমাকে পেলাম না।
শেষ কল করলাম প্রায় ১১ টা রাত
একজন বলল, "ফোনটা স্টেশনে পরে আছে,
বাজছিল! তাই ধরলাম।"
আমি বললাম, "ফোনের মালিক কই?"
"নম্বরটা তো একটি মেয়ের!"
"এটা কোন স্টেশন?"
সে বলল,"রামপুরহাট"
আমি লোকটিকে খোঁজ করতে বললাম।
অনেক খোঁজ করে একটি লাল চাদর
বেগুনি ওড়না আর একটি শান্তিনিকেতনি
ব্যাগ পাওয়া গেল।
আমি সব শুনে অস্থির হয়ে গেলাম
বললাম," মেয়েটির কোনো খোঁজ পেলেন?"
সে বলল, "না স্যার! এখনো পাইনি!"
আমি উচ্চস্বরে বললাম,"একটু দেখুন তাড়াতাড়ি!"
শেষে যখন জানতে পারলাম ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে
ধারে মেয়েটির দেহ পরে আছে!
আমি হতবাক।
লোকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনুরোধ
করলাম।
আমি বাইক নিয়ে বেরোলাম,
পৌঁছলাম তখন প্রায় রাত ২টা।

অনিরুদ্ধ বাগচী



অয়নিকা ও বুদ্ধপূর্ণিমা 
*********************



বৈশাখের কিছু পরে জ্যৈষ্ঠের সেই রাতে
 দূরবর্তী কোন সানাই'এর সুর,
যেন তিমিরনাশিনী এক জ্যোতি।
উ‌ৎসুখ সুখী মানবের আনাগোনা
বিক্ষুব্ধ যেন কাদের কথাবার্তা;
আমি বসে একা বৃষ্টি হলো কি হলোনা                                             তার হিসেব নিয়ে,
হিসেবে নেই কোন গলদ।

তবুও,

তবুও অয়নীকাদের নিয়ে ভাবতে হবে
ভাবতে হবে বুদ্ধপূর্ণিমার রাতকে নিয়েও;
কিন্তু, ভাববো কি শুধু আমিই একা?
হ্যাঁ শুধু আমি, হ্যাঁ শুধু একা।


পাপাই সেন



ফিরে যাও 2017 
****************




ভালো কেটেছে দিন তোমার-আমারও
বছর দুই হাজার সতেরো-
ক্লান্ত হয়েছি শ্বাস নিতে নিতে।
দুচোখে দেখেছি পাশবিকতা…
গণধর্ষণের উৎসবে।

একই সেই রক্তমিছিল
কুকুরের জিভ চাটে খুন-খারাপি দিন,
বীরের মৃত্যু অমিতাভের
ভুলব না কোনোদিন-
চোখের কাছে কুয়াশাদিন;মন মেপেছে ফারাক,
এমন দিন গুলো সব-
ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে হারাক।

                  

গোলাম কাদের



খেলোয়াড় 
*************


আমার বাঁশির সুরে ঢেউ জাগেনি, 
হৃদয়স্ত শোনিত নদী পিপাসার ।

কাল-মেঘেরা বৃষ্টিকে আদর জানাই
আমি তিরস্কারে বিদ্ধ পাখিকে খুন করি।

তোমরা রোজ খেলো নিজেদের টানে।
আমার খেলাঘর স্বপ্নিল জগতে ।

চরাচর ব্যাপি মায়াজালে বিদ্ধ  অনাবিল, 
নতুন প্রাণে পাপ আদিম থেকে বর্তমান ।

ভাঙা ঘরে যেখানে ভুতেরাও ব্যর্থ! 
বিষাক্ত সেখানেই,ভয়হীন আমি অব্যর্থ ।

হাতছানির বান্দাযুগল সময়েরই সৃষ্টি 
আমি কামুক,ঠিক ওরাই দূরদৃষ্টি ।

রূপের পরশে সব কিছু মায়াজাল 
রক্ষকই অলক্ষ্যে সাঁতারু জঞ্জাল।

তোমরা গিলে পান করো ,প্রেমসুধা
আজও পারিনি উদরস্ত করতে সততা!

আমার আয়নায় সব মিথ্যে ছবি ধরা
খেলাচ্ছলে তাই ভাঙছে রোজ আনমনা ।

কে অপরাধী?কে বা বিচার প্রার্থী? 
আমি আজন্ম পাপী,আমি বিনাশী!

গৌরাঙ্গ মন্ডল




নিত্যনতুন প্রেমান্তর
*******************

বাকল মোচন, শুকনো পাতা, ঝরে যাওয়া সবকিছু 
উল্টো পিঠে দিচ্ছে টহল কয়েকশো প্রেম। ঘাড় পিছু। 

খোলাই ছিল রাস্তা দু'দিক, পা চেপে যাও পাশ কেটে 
শব্দ পেলেই মৃতেরা ঠিক নেমে আসবে প্ল্যান চ্যাট-এ। 

তার চেয়ে বরং ন্যাংটো হয়ে ঘুম দি এসো। দীর্ঘায়ু। 
লক্ষ 'তুমি'র গর্ভ তুমি অনিন্দিতা প্রেম-স্নায়ু, 

উগড়ে দিচ্ছো!উগড়ে দিচ্ছো!কক্ষে কক্ষে কোপ, জানি
আমারও নেই অসুস্থ ভয়। ব্যাধির অনুসন্ধানী। 

কথার ভাঁজে বাঁধছি শুধু লারেলাপ্পা মস্করা, 
স্পর্শ মেশাও, পাল তুলেছে পেন্ডুলামের শিরদাঁড়া। 

সমস্তই তো স্রোতোস্বিনী চরের নীচে খলবলে, 
চুপসে চোখের দৃষ্টিপাতই টেম্পোরারি ফেল হলে। 

গতি! সে নয় প্রতীক্ষিতা, বহমন্দ্রে উদবায়ী, 
চরিত্রেরা বদলে প্রতি উপন্যাস ও অধ্যায়-ই.. 

আগলাবে না আ়ঁচল পেতে, মেঘ জমেছে এক মনে;
আমার হৃদয় কুরবানী দি নব্য প্রেমের অঙ্গনে।

সিলমী ইনতেজার



বিধিবাম
*********


এ কেমন বিধির ব্যামো!
গুরু দেয় চণ্ডালে নমঃ।
ক্যাকটাসের কাঁটাও নাকি সুর তোলে?
চাঁদ নাকি ফেঁসেছে আজ কুন্তলে!
মরীচিকা আর চোরাবালির বস্তিতে
ষষ্ঠ তীর বিঁধছে মা কুন্তিতে।
টিপ আজকাল কালোও ভালো?
ছন্দ মিললেই কবি হলো?
হাসাতে তো ভাঁড় ও পারে।
হাসিয়ের ঘরে কি জীবন ফেরে?

অভিজিৎ পাল




তূর্য 
****


১.

বৈরী আবহাওয়া। দাপট জাগছে। প্রচলিত শব্দের অর্থ শুধু ঘুরে বেড়ায়। নষ্ট হয়ে যায় ভালো প্রশ্নের জবাব। অনেক তো দিন গেল। এভাবে আর কত! আর কি সত্যি কোনো প্রয়োজন আছে বেঁচে থাকার? এভাবে বর্তে থাকার? অনেকগুলি নেতিবাচক উত্তরের পর একটি ইতিবাচক উত্তর এলে ভালো লাগে। হাসি জাগে। এটুকুই তো জীবনের রসদ আমার। আমিও তো পাখির মতো মাঝে মাঝে ব্যাধের চোখ দুটো খুবলে নিতে চাই। যে সব ব্যাধ অনেক সম্ভাবনাময় মুক্ত পাখিকে বিনাছন্দে হত্যা করেছে...

২.

ভোরের বাদ্য বাজে। যুদ্ধের তূর্য। বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হয়। এটিই পৃথিবীর আদিম সমরনীতি। আমার মতো তুমি এসব জানো। তোমার আমার মতো আরো অনেকেই জানে। শুধু যারা জানে না, তাদের হাতে এবার তূর্য তুলে দাও। ওরা বাজাক। শব্দে শব্দে উন্মাদ হয়ে যাক ক্ষুধার্ত সোনার চাঁদ। সবার উচ্চারণের প্রতিটি ধ্বনি যেন ঐ মিথ্যে মহাত্মা সেজে থাকা অ-মানুষটির বিরুদ্ধে স্লোগান তোলে...

দীপক আঢ্য




আমি ও খরগোশ সমাচার
************************
(১)
অভ্যাসে  আটকে রাখি নিজেকে
রাত্রি নেমে আসে খাঁচায়
চুপ থেকে ক্রমশ খরগোশ হয়ে উঠি।

(২)
একটু গন্ধ শোঁকা পা কিম্বা ঝুল পেটিকোট
লাফ দিয়ে ভালোবাসা আসে নরম স্পর্শে
আমি বৃদ্ধ হচ্ছি ক্রমশ!

(৩)
দোতলা খাঁচা আর দোতলা বাড়ির মধ্যে
সাদৃশ্য খুঁজতে খুঁজতে
নিজেকেই কখন বন্ধ করেছি কংক্রিটের ভিতরে!

(৪)
সন্ধে আসলে ঝুপ করে মনখারাপেরাও চলে আসে কখনো
সেও আমাকে মেখে অন্ধকার হয়ে থাকে সারারাত।

(৫)
কিছুটা আদিখ্যেতা কমে গেলে
নরম বিছানা আর ওয়্যার নেটের মধ্যে পার্থক্য দেখিনি--
কেবল কষ্টগুলো যুঝতে থাকে সময়ের সাথে!

শিপ্রা দে


হেমন্তিকা 
**********




শরতের শেষে গুটি গুটি পায়ে হেমন্তিকা আসে ।
কাশবন যখন মাথা উঁচু করে অসীম বীরত্বে হাসে।
আকাশে ,বাতাসে, বৃক্ষ, চরাচরে উদ্ভাসিত হেমন্তের রূপবিভা।
কোমল, স্নিগ্ধ, মায়াময় প্রকৃতি ভিন্ন মাত্রায়  পায় শোভা।
সোনা ঝরা রোদ্দুর নীল আকাশ ঘিরে আছড়ে পড়ে ।
শিউলির সুবাসিত গন্ধে মন মাতাল করে ।
উদাসীন,ধূসর পথিক হয়ে আলোছায়া বিচিত্র খেলা ।
নরম ঘাসের ডগায় শিশিরের বিন্দু, যেনো মুক্তোর মালা।
গভীর গহনে বিস্তৃত ছাতিম, তীব্র গন্ধ ছড়ায়।
অশোক, টগর, মালতী, কাঞ্চন ফোটে শাখায় শাখায় ।
শর্ষে ফুলে ঢাকা যেন, সোহাগী হলুদ চাদর।
মাঠে ফসলের উচ্ছাসে,কৃষানের হয় কদর ।
সোনালী ধানের মাঠে ফসলের ঘ্রাণ 
উঁকি মারে শীতের আভায় অগ্রহায়ণ।
পাতা ঝরার হেমন্তে বিবর্নতা, বিমূর্ত রূপ।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দ অরূপ ।

মহ. ওলিউল ইসলাম







একটি সত্য প্রেমের কাব্য
***********************



     
আমি আজ পুরোটাই তার দখলে|
এ জবরদখল, ---আমাকে তার করে নিয়েছে|
আমি মুক্ত হতে পারিনি,
তার উলঙ্গ প্রেমে আমি আচ্ছন্ন |
তার ঠোঁটের পালিশে আমার ঠোঁট দুটি বেশ রঙ ধরেছে|
তার যৌবনের রস শেষ বিন্দু পর্যন্ত আমার করেছি|
এখনো তা জমে আছে হৃদয়ের কাছা-কাছি,
---মিছরির দানার মতো|
পৌষের সকালে তার একটু ছোয়া,চৈত্রের উষ্ণতা দিয়েছে|
ঘুম না আসা রাতে,সারা প্রহর একাত্ম হয়ে কাটিয়েছি|
তবু সংশয়, একদিন হয়ত চলে যাবে
সব কিছু ভুলে!
শুধু, থেকে যাবে কিছু জীবন্ত স্মৃতি,--কালো ঠোঁট, ফুসফুসে কালি আর খুক্ খুক্ খুক্ মগজ কাঁপানো ধ্বনি |

জ্যোতির্ময় রায়




I am Lucky again...
***************

সেদিনও মেঘ ছিল আকাশে ,নাঃ বৃষ্টি হয়নি তবে ।লোড শেডিং ছিল তিন ঘন্টার ।প্রতিদিনের মতো সেদিনও কিছু লিখবো বলে দূরে ওই জানালার বাইরে তাকিয়ে আছি ...। নাঃ ,আমি আজও শব্দহীন ,যেন শব্দ শেষ হয়ে গেছে আমার ।ফেসবুক খুলেই টাইম লাইনে দেখি প্রথমেই দেখি একটা মেয়ের ফেন্ড সাজেশন । বেশ অন্য রকম যেন ,প্রোফাইল ঘাটতে শুরু করেদিলাম ,বাঃ এও লেখে ,। আমি এত সহজে যেমন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট সেন্ড করি না, ঠিক তেমনি accept ও করি না এখনও,এমনকি কথাও বলি না মেসেঞ্জারে সাধারণত। জানি না কি কারণে ফ্রেন্ড রিকেউস্টটা আমিই সেন্ড করলাম ,জানি না কবে সে একসেপ্ট করেছে  । 7ই অক্টোবর ,হ্যাঁ আমার মনে আছে ,তার বার্ড ডে , “Happy birthday” is the 1st message to her and the  day she was  send me the 1st message to  me on 12 doctor 'hi” at,1.50 am.
My reply was “hi ,good night “ at 2.22 am
One thing I have to say that , “কিছু কিছু সময় ,কাউকে কোনো কারণ ছাড়াই ভালো লেগে যায় ,জানি না কেন ভালো লেগেছিল তাকে আমি জাস্ট তার প্রোফাইল ঘাটতাম কিন্তু মেসেজ করার সাহস হয়নি,মেসেজ করেও বা কি বলবো তাকে এই সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে আর মেসেজ করা হতো না ,and I never accept that she sent me the 1st messege ,may God heard my voice ,or may I was lucky on that day . And. আমি জানি না কবিতা গুলো যেন তারপর থেকে প্রাণ পেতে শুরু করলো ।
And her 2nd message was on the next day

“তোমার অনুগল্প গুলো কিন্তু দারুন”
That's one of my greatest succes ever, যে যাকে মেসেজ করতে গেলে আমার ভাষা হারায় সেই মেসেজে আমার লেখা পড়ে তার তারিফ করছে .আমি ভেবে পাইনি কি বলবো প্রথমে ,আসলে আগে কোনোদিন লিখিনি অনুগল্প ।1st response from her ,I get confidence to write again .তারপর থেকে শুরু হলো কথা ,
“Good night” was the Word I used to start to talking with her . I just forgot words ,I couldn't get the words ,what I say to her? .
যাই বলি সব যেন কেমন কবিতা হয়ে যায় শুধু ।এখনো পর্যন্ত বুঝতে পারি না কিভাবে কথা শুরু করবো ,কি ভাবে কথার পর কথা সাজাবো । একটা হাল্কা ভয় কাজ করে যেন ,তবুও মনে হয় সব কিছু তাকে বলা যায় ,সব কিছুই ।
তাকে বোঝবো কি করে যে তাকে কেন যেন ভালো লেগে গেছে আমার ,অথচ তাকে কোনো দিন দেখিনি ,তবুও মন হচ্ছে যেন হাজার বছর আগে থেকে তাকে আমি চিনি । সে যেন খুব কাছের কেউ । নাঃ বলতে কিন্তু পারিনি প্রথমেই । তার পর একদিন পোস্ট করলাম “একটা গুন্ডা টাইপের প্রেমিকা চাই ,যে আমার কলার ধরে ,এক ঘুষি তুলে বলবে ,যেন আর অন্য কোনো মেয়ের দিকে না তাকাই” ।

Yes , সে ,সেই প্রথম মেসেজ করল ,দারুন পোষ্ট ।
এবার ইরকির ছলে সাহস করে বলেই ফেললাম ,”হবে নাকি এরকম gf ,তোমার কাছে ,সঙ্গে 2 টো স্মাইলি”
“না ,না …..হা হা”

কিছু কিছু লেখা শুধু মাত্র Particularly for one person  এর জন্য হয় । ঠিক সেরকমই লেখা পোস্ট করতাম ফেসবুকে ,সে পড়ত ,আর বলতো বলে দাও মেয়েটাকে ,সাহস দিত আমাকে ,সে নিজেই বলতো যে “দাও আমিই বলে দিচ্ছি”
আরে বাবা তার কথাই তো তাকে বলছি ।
বলতে পারছি না তাই I told her indirectly .
এরকম চলতে থাকল দু তিন  দিন । প্রতিদিনই ভাবতাম নাঃ বলবোই এবার ,কিন্তু ওই যে ভাষা হারিয়ে যায় ,ইচ্ছে করে শুধু তার ছবিতে তাকিয়ে থাকি সারাক্ষণ ...হমম তার চোখ ,ঠোঁট ,গাল ,আর গালের ওই তিলে দিকে তাকিয়ে যেন থাকা যায় সারা দিন সারা রাত । বন্ধুরা বলতো ,মেয়েটিকে দেখিস নি ,জানিস না ,হঠাৎ প্রেম হয়ে গেল ? ,সত্যি তো ? কত টুকু বা জানি তাকে ,কতটুকু বা চিনি আমি ,সেও বা কতটুকু জানে আমায় ? তবুও কোথাও যেন অভিকর্ষ কাজ করে ।
বললাম at লাষ্ট । সেও বুঝতেই পেরেছিলো তার কথা তাকেই বলছি । তবে বলতে কিন্তু একবারে পারিনি ,বলতে বলতে ভোর হয়ে গিয়েছিলো সেদিন । হ্যাঁ তারিখ টা মনে আছে 16 octbr .একটা বড় নিশ্বাস নিয়ে বলেই দিলাম ,কিন্তু ..তাকে কিছুতেই বোঝাতেই পারছি না “সে” হল সেই মেয়েটাই ,হয়তো বুঝেছিল আগেই ,তার কথা তাকেই বলছি ,কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছিলাম ডিরেক্টলি বলতে ,যদি বন্ধুত্বটাই না থাকে ,মেয়ে দের ব্যাপারে একটু  ভীতু আমি । সেই ছোট বেলা থেকেই । যাক একটা বড় দম নিয়ে বলেই দিলাম ডিরেক্টলি ,And I was off the Data connection  just when I told her directly , because I didn't want to see the reply from a”big NO” I couldn't bear that .

I was lucky again ,No ,there was not a reply with “NO” and “you can't send any messes to that conversation”
I like to thank to God again ,that there is a message for me “ বড় ভীতু তুমি ,এটা বলতে ভোর করে দিলে”
“আমি তো একটা ভোরই চেয়েছি ,রাত্রির পর ,আরও একটু আলো”
And You is the light of dawn ,and I am very lucky that I get You .

সুস্মিতা কর্মকার





অনুপম 
*****



অনুপম তোর ভাবনা যত
সবটাই তোর আমার কত ?
নিজের কাছেই নিজেই হারাই ,
বক্ষে যে প্রাণ জুড়ছে ক্ষত |
তোর আবেগের কুলকিনারায়
আমার আমিই হারাই শত |
অনুপম তোর ভাবনা ঘিরেই
 আমার আমি উদ্গিরত |
কি জানি ঠিক একোন নেশায়
তোর আমিতেই ভাবনা ফিরায় ,
চোখের কোণের জল ঝরিয়েই
একনিমিষের কান্ডি জুড়ায় ||

সম্পূর্ণা চ্যাটার্জী




অন্তঃ পর 
*******



আমার চোখে জেগে থাকা এখনও কিছু রোদ
ঠিক যেমন সহিংস দিন খুঁজে চলে বোধ
অল্পসল্প লুকোচুরি যদিও চলে মনে
ঝাঁপবন্ধ সকালে আগামী। অন্যকোনো নামে

আপাত দৃষ্টিতে গড়ে তুলি মাঠ
যেটুকু যা গাছ ছিল আজ সব কাঠ
অবসরের ইতিকথায় সদ্য বোনা কাঁথা
প্রত্যেকটা আদরে রক্ত। শৈশবের নকশা

খুঁজে মরি নিজের কাছে হারিয়ে যাওয়া রাস্তায়
নিজেকে পেয়েই ভুলে যাই গত দিনের অসময়
নিতান্ত সমীহরা আড় চোখে দেখে
কয়েকটা আনুগত্য সপ্রশ্ন| অবাধ্যতায় চেয়ে

চমকে উঠে দেখি হঠাৎ, পিঠে কার হাত
ভেবেছিলাম শহর! অভিপ্রেত রাত


জ্যোতির্ময় মুখার্জী



আত্মঘাতী জলের মতো গড়িয়ে 
*****************************


আত্মঘাতী জলের মতো গড়িয়ে
কাঁচা ঘুম ভেঙে।হাত-পা ছুঁড়ে
এবড়ো-খেবড়ো কুড়িটা বছর চুরি গেছে
        অন্তর্বাসে ঢেকে কিছু ঘণীভূত রাত





আর্যতীর্থ




এই বছরে 
*******





ঠিক কতটা করেছো লাভ, কি খোয়ালে এই বছরে,
লাভ কি বলো  সেসব কথা অঙ্ক কষে হিসেব করে?
স্মৃতির কফিনবন্দী করে সময় রাখুক তাদের তুলে,
এবার সময় সামনে দেখার, আগের বছর বেবাক ভুলে।

দুঃখ কিছু  ফাউ জুটেছে হয়তো কারো এই বছরে
খন্দখানায় ভরে ছিলো গিয়েছো যে রাস্তা ধরে।
সেই বিষাদে আকাশ ঢেকে আগামীতেও চলতে গেলে
আর কাউকে দোষ দিও না আগের মতোই হোঁচট খেলে।

কিংবা তোমার সুখযাপনের রূপকথা সব এই বছরে
চাওয়ার বেশী প্রাপ্তি দিলো ভাগ্য তোমায় দুহাত ভরে।
সফলতার পট্টি চোখে বাঁধলে সেটাও বোকামি যে,
কেউ জানেনা পরের মোড়েই তোমার জন্য লুকিয়ে কি যে।

বেশির ভাগের মাঝামাঝি কেটেছে দিন এই বছরে,
সুখের গাড়ি দুখের গাড়ি পাশাপাশি আস্তে জোরে।
আনন্দ আর অশ্রু মিশে ক্যালেন্ডারের বাতিল পাতায়,
এবার লেখা শুরু আবার  ভাবীকালের সাদা খাতায়।

রোজনামচায় গল্প অনেক ফেললে লিখে এই বছরে,
আবছা হওয়ার অমোঘ পলি জমবে দেখো কদিন পরে
চলো এবার সামনে হাঁটি , বুকের খাঁচায় নতুন আশা,
কুড়িয়ে নিই ভাগ্য যা দেয় বিষাদ কিংবা ভালোবাসা।


রুপা রায়




আজ কাল পরশু 
*************

আজ কাল পরশুর শব্দ মিছিল
চলছে যে তালে তালে ভাবনার ঝিল

কাল ছিলো সুখে ওরা আজকের মত
হিসেবের বোঝাপড়া সাথে ছিল যত

পথের বাঁকে ছিলো রাশি রাশি ভুল
সেই কাঁটা সরিয়ে আজ সুখের ফুল।

নদীর পাড় ছিলো নোঙরেতে বাঁধা
জীবনের গান হয় সাত সুরে সাধা।

সা রে গা মা পা ধা নি সা সপ্তক সুর
মন চায় ভালোবাসো হোক বহুদূর।

ভালোবেসে ঘর বাঁধে পরিযায়ী পাখি
বসন্ত ঠোঁটে নিয়ে করে ডাকাডাকি।

আজ কাল পরশুর একসাথে চলা
কবিতার কথা হোক ছন্দতে বলা।।

শ্রীময়ী গুহ




অলীক 
*****




ভাললাগা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় অবিরাম,
অমলতাস ,পলাশ, মহুয়ার.... মাটি শিকড় আজও পিছুটান...
কেমন যেন উজান ঢেউয়ের কবিতার আখর।

অভিমানী মেঘ ----
জমাট বাঁধা হৃদয়ের চৌখূপীতে- ভোর ঘেঁসা ,
অভিসারী বাসি ফুলের ছেঁড়া পাপড়ির মৌনতা বাসর.....

নিকষ কালো অমানিশার বুকে, যেমন তারা খসা.... বিদ্যুৎ ঝলক চিরে চিরে যায়.....
তোর আথালি পাথালি খোঁজা শরীরী সর্তবন্দী প্রণয়----
 আমার মনবাগিচায় বেদনার
ফলক অবিরত রক্ত ঝরায়----

 সেদিনের পাশাপাশি হৃদস্পন্দন ...
সেদিনের দুটি শরীর মিশে মিশে যাওয়া .....
সেদিনের অকাল শ্রাবণের আভ‍্যন্তরিন ঝড় প্রলয়ের -
সিক্ত ,রিক্ত ,ঋদ্ধ, পরিপূর্ণ বর্ষণ ব‍্যথা ছাওয়া ......
এ সবই আজ অবান্তর/
এ সবই--- শুধুই স্মৃতি-
 চোরকাঁটা ক্ষত আহত স্বপন!

অনাহূত এ মুহুর্ত !
তোর আমার এই অপলক ছলছল- অযথাই গভীর দৃষ্টি দর্পণ .......

এ কবিতা নয় ....
নয় শুধু কোনও ছন্দ বদ্ধ মনকথা অবান্তর মনন....

এ কেবলই টুকরো টুকরো পথচলা /
আকাশ দিগন্তের.... অচেনা মাঝির -
ভাঙাচোরা নাওখানির -হঠাৎই থমকে চাওয়া ----
    অলীক কাল্পনিক আগন্তুকের মিলন যাপন ।।


অঞ্জনা দে ভৌমিক




দূরের আকাশে 
**********





দত্যিদানা মেয়েটি
সারাদিন মনে মনে পাখির মতো
ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় সবুজ থেকে নীল আকাশে।
সে যেন সদ্য ফোটা একটি গোলাপ
শুধু একবার ছুঁয়ে দেখো তাকে!
যেন নীলিমার চাঁদ মেঠোপথের  বাঁকে।
ফুলেশ্বরী বাংলার কাজলনয়না অভিমানী সে
তিস্তার পারে মেঘবালিকা নামে ভেজা গায়ে
নদীর আঁকন বাঁকন দেখে।
দুচোখে তার দূরের আকাশ দৃষ্টি সেদিন উদাস,
আকাশ হয়েছে কালো ;
ঘুরলো এবার বকুলতলা, চাঁপাবনে নেই আলো ;
বাতাস হয়েছে কৃপণ চোখে সোনালী স্বপ্ন
হঠাৎ করে বাজলো ঝুমুর কলাপাতায় ;
দূরের আকাশ দেখলো এবার মনের পাখি, দত্যিদানার ডানায়।

চন্দ্রানী পাল



হারিয়ে গেছে ...
**********






বছর আসে,চলেও যায়
শেষ হয়ে যায় খেলা,
এরই মাঝে হারিয়ে গেছে
মজার ছেলেবেলা।

মান ও নেই,হুঁশ ও নেই
মানুষ লোকে বলে
হারিয়ে গেছে হৈ-হুল্লোড়
লোভের কোলাহলে।

মিথ্যা কথার ফুলঝুরি আর
বিশ্বস্ততার নামে,
বিকিয়ে গেছে মনুষ্যত্ব আজ
সস্তা জলের দামে।

 সরলতার দাম নেই আর
সহজ,সরল কথা,
বাঁকা চাহনী, আর কটাক্ষ
হৃদয়ে জাগায় ব্যথা।

নিত্য নতুন মুখোশে মোড়া
মেকি মুখের মেলা,
ভালোবাসার নামে চলছে
নিত্য নতুন খেলা।

সবাই কেমন ব্যাস্ত এখন
ত্রস্ত সকল কাজে,
শৈশব তাই পথ হারিয়ে
বিষাদ সুরে বাজে।

দুষ্ট মনের চঞ্চলতা
চাঁদনী আলোর রাতে
লুকিয়েছে সব কোন সুদূরে
শিশির ধোয়া প্রাতে।

আজকে কার ও হয় কি দেখা
লালচে রোদের সোনা
পাখির সুরে সকাল হওয়া
এখন হাতে গোনা।

মনের কথা মনেই থাকে
যায় না এখন লেখা
অ-দেখাকে যায় না এখন
নতুন  করে দেখা।

এখন ও কেন বেঁচে আছি
জানিনা কিসের তরে,
সোনায় মোড়া দিনগুলো কেউ
ফিরিয়ে দিতে পারে!! !!

জয়তী দাস



জেগে আছি ...
*********

    ও চাঁদ....
    তুমি আজ জেগে থেকো,
    মধ্যরাত কথা দিয়েছে জাগবে সেও।

   নদীর পার ধরে আজ অনেক হেঁটেছে সূর্য,
   গাছেদের সঙ্গে মেঘের কথা হয়েছে বিস্তর।
   খরার সঙ্গে বৃষ্টির শর্ত হয়েছে, বাৎসরিক,
   সবাই হাঁটবে একসঙ্গে, পাশাপাশি।

  শুনছো....
  শিশির ঝরছে,
  বাতাসের চাদরে, ভিজে কুয়াশা
  বারুদের গন্ধে জমাটি আসরে ডায়মন্ড স্পেডস,
  আতসবাজির বুক চিরে বাজল গীর্জার ঘন্টা ধ্বনি,
  ক্যালেন্ডারের বোতাম খুলছে আগামী।

  আমি জেগে আছি এখনো....
  তোমাকে গুছিয়ে রাখবো গোপনে,
  ন্যাপথালিনের সুবাসে, স্মৃতির রোমন্থনে।
  পুরাতনী বুকের উষ্ণ ওমেই, ডাকবো "নতুনে"।।

               

তপন সৎপথী




বর্ষ শেষে 
******



দিবসের শেষ রাগ আসিল ভাসিয়া
পশ্চিমের ক্ষীণ আভা আলস্য উঠানে ,
নিমিত্বের পথে শেষ উদয়াস্ত ডাক
ভাস্কর্যে উজ্জ্বল প্রভা সূর্য আগমনে ।
পৃথিবী প্রবীণ হবে আগামী বিহ্বল
বৃদ্ধাশ্রমে শান্ত মুখ নীরব নিশ্চুপ !
কালের অন্তিম রথে নিরাধার শুন্য
সময়ের ডাকে আমি মুক্ত আগন্তুক ।
কর মোরে ক্ষমা তুমি বিগত সময়
চলিবার পথে থাক শুভেচ্ছা তোমার ,
নবীনের মুক্তাঙ্গনে নিশ্চিন্ত সমাজ
অবিশ্বাস লুপ্ত হোক বিশ্বাসে সবার।

মনি আহমেদ



                    নতুন দিন 
                     *********



"দোহাই  তোদের , একটু  চুপ  কর ।
 ভালোবাসিবারে  দে  আমারে  অবসর ।"--রবীঠাকুর
সত্য  অদ্ভুত  এই  ভালোবাসা  ,মানুষ  কি না  করতে,
পারে এর  জন্য  ?জীবনের  যা কিছু  সকাল  সন্ধ্যা
ঘড়ির  কাঁটায়  চলতে  চলতে  সব  কিছু  ভুলে ।
ভালবাসাকে  ভুলতে  পারে  না --------

সেদিন  সন্ধ্যাবেলা  ছাঁদে  এসে  দাঁড়ালাম
তুমি  এসে  দাঁড়ালে  কাছে  এটি  বড়  দরকার ছিলো,
যে  আমার  কপালে  চুমু  খেলে  ,আমার  শূনতা  যে
পূরন  করলে  চলো  আমরা  চলে  যাই  এখান থেকে ।

নূতন  পৃথিবী  গড়বো  আমরা  সমস্ত সৌন্দর্য  নিয়ে ,
হাজার  গোলাপ  ফুটে ,পাখির  কলকাকলিতে  ঘুম ভাঙ্গে ।
থাকবে  সমুদ্রের  উত্তাল  তরঙ্গ মাথার  উপর  একফালি চাঁদ ।
আমরা  ফেলে  যাবো  নূতন  দিনের জন্য  সব  কিছু ----

পুরানো  জঞ্জাল  শেষ  হবে  নূতন  দিন ,
ছেড়ে  যেতে  চাই  সব  ধ্বংসের  রাজনীতি
তৈরি  করবো  নুতুন  দিনের  নুতুন  পৃথিবী ,
যা  ভালোবাসা  শ্রম  দিয়ে  ঘিড়ে  রাখবে  ,
আমাদের   এই  সাজানো  পৃথিবী টা ।

মৌসুমী সুর রায়



              সময়      
             ******

সেই রাতে অস্থির আমি বারান্দায় পদচারণরত,সঙ্গী ছিল ঝরা পাতার ফিস ফিসানি,শিশিরের কান্না।চাঁদ গুমরে গুমরে অভিমান উগরে দিচ্ছিল,মেঘেরা এদিক সেদিক দলবাজিতে ব্যাস্ত।রাতের শরীরে সাড় নেই,সে বড় শান্ত।তখনই দেখলেম তাকে, স্বপ্নাবিষ্ট মোহগ্রস্ত এক ভবঘুরে...নিশুতি রাতে যেন কেউ দীপ জ্বেলে তার পথ চেয়ে বসে আছে,সে হাঁটছে দ্রুত যেন হাওয়ায় ভেসে ভেসে চলেছে,যেন সে বাস্তব নয় সে আমারই দেখা এক স্বপ্ন।

আমিও তার পিছু নিলাম,সে খেয়ালও করলে না।সে এক স্বপ্নের জাদুকর,কলির ঘুম ভাঙিয়ে তাকে আবেগ-মথিত চুম্বন করে ফুল ফুটিয়ে চলে,তার তুলির টানে হিল্লোলে মেতে ওঠে নদী।পাখিরা থতমত খেয়ে বন্দনা শুরু করে।

অনুভব করলাম আমি এই সে...যে আমাদের সকলকে পরিপক্ক ফলের মতো পরিণতি দেয় তারপর আমরা মরা পাখির পালকের মতো নিঃশব্দে ঝরে যাই।মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে, বনবাদাড় পার করে সে তার ঝুলিতে বয়ে নিয়ে যায় আমাদের সুখ,দুঃখের হরেক হিসেব।আমরা তার পিছু পিছু চলতেই থাকি নিয়তির অমোঘ টানে।

                                 


মৌসুমী বেরা




 বসন্ত এসেছিলো যেদিন 
*****************


শীতার্ত রাতেও বসন্ত এসেছিলো সেদিন,
যেদিন আগুন সরিয়ে বলেছিলে - "ভালোবাসি"।

বিবর্ণ প্রেমে বেনোজলে ভেসে যাওয়া মন,
সেই কবেকার আমলকিবনে বিষন্ন পাখির ডাক,
তবুও ম্লান হেসে হেরেছিলাম তোমার কাছে -
বিশ্বাস করো জিততে চাইনি একবারও।

আজ ভালোবাসার রং মিশেছে বসন্তের চৌকাঠে,
ভুলিনি সেই প্রথমবার, 'বসন্ত এসেছিলো যেদিন'।

কৃপা বসু




এসো আগুন ছুঁইয়ে দাও তোমার প্রসাদী ফুল 
******************************




অনেকখানি ক্লান্ত হলে প্রিয় কবিতার কাছে নগ্ন হই। খুব নিবিড়ে ঢেউ খেলে যায় গোটা শরীর জুড়ে। ফুল ফোটানো যেমন উদ্ভিদের লক্ষ্য তেমন বংশবিস্তার করাও মানুষের প্রধান কাজ তাইনা!!

   বদলে যাওয়া ঋতু,পুরোনো বাড়ির পরিবর্তিত ক্লেমাটিস সয়ে যায় একদিন ধীরে ধীরে। মরচেধরা স্মৃতির লিফলেট আদতে কমলালেবুর পিঠ থেকে খসে যাওয়া চামড়ার মতোই অকেজো..

   কুয়াশার ভেতর দুটো চোখ ভেসে ওঠে। মায়ের হাতে বোনা সোয়েটার চেপে ধরি শক্ত করে। ভাত ফুটে উঠলে কতদিন তোমার আঁচলের গন্ধ পাইনা মা। ধুলোমাটি মেখে আসা প্রতিটি বিকেলরোদ দোলনচাঁপা ছুঁয়ে নির্মেদ আলো হতে চায় কেবলই..


    গাছ বলতে তো আমরা হেলান দেওয়ার একটা কাঁধ বা জিরিয়ে নেওয়ার ছোট্ট কোল বুঝি। অগ্রিম টিকিট কেটে বসে থাকি জামরঙা ট্রেনের অপেক্ষায় অথচ টাইমটেবিলে মাপা হয় স্টেশন ও সময়ের দূরত্ব। রাতের ডানা ঝাপটানো বন্ধ হলে বুঝি সকাল হয়ে এসেছে..

   ঝরে পড়া শীতের কুঁড়ি লেপের তলায় ভাজ করে মেতে উঠি অবশিষ্ট ক্লোরোফিল বিলিয়ে দেওয়ার কাজে..

 
 এসো আগুন এসো ছুঁইয়ে দাও তোমার প্রসাদী ফুল আমার কপালে..

✍️সম্পাদকীয়✍️(পুরোনো স্মৃতি ও নতুন বছর সংখ্যা )




দেখতে দেখতে বছর শেষ ,কেমন করে যেন হঠাৎ চলে গেল দিন গুলি , আর এর মাঝেই ঘর ভেঙে ঘর করা ,কিংবা দূর থেকে আরো দূরে চলে যাওয়া ,কাঁটাতার পেরিয়ে ,প্রাচীর পেরিয়ে অন্য একটা পৃথিবী ,পেয়েও হারিয়ে ফেলা , আবার কিছু চাওয়া পাওয়ার হিসাব ।

যাক বছর শেষ হবে ,আবার আসবে ,আবার শেষ হবে ....নিয়মমাফিক ,আর তবুও কষ্ট গুলো কে ঢেকে রেখে এক গাল হাসি নিয়ে চলাই বেঁচে থাকা ।

তাই প্রতিবারের মতো  এবারও কিছু বেঁচে থাকার ,ভালোবাসার কথা নিয়ে ভরে গেল"তোমার আমার কথা" । কখন বিষণ্নতা ,কখন বা একাকিত্ব ,খামোখা মন খারাপ ,এর থেকে বেরিয়ে এসে  এক গাল হাসি নিয়ে নতুন বছরের আগমন,আর নিজেকে শুধরে নেবার প্রচেষ্টা ,নতুন  করে এগিয়ে চলার প্রস্তুতি ।

হ্যাঁ এবারও একগুচ্ছ লেখা নিয়ে ,মনে কথা নিয়ে "নিকোটিন" এর এই বিশেষ সংখ্যা "ফেলে আসা স্মৃতি ও নতুন বছর " ।
অনেক প্রিয় কবি ও সাহিত্যিকরা এবারও প্রস্ফুটিত করেছে আমাদের এই সংখ্যা । সকলকে অনেক অনেক  ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ,নতুন বছরে থাকুন সব সময় আরও ভালো,সমাজের ঘুন ধরা বুকে জ্বালিয়ে দিয়ে আরও আলো ।।

এই সংখ্যা প্রকাশের আমাকে বিশেষ সহযোগিতা করেন শ্রীমতি সুধা সরকার(চেয়ার ম্যান) শ্রীমতি সুস্মিতা কর্মকার (সম্পাদিকা) শ্রী জ্যোতির্ময় রায় (কার্যকরী সম্পাদক) ও পিন্টু মাহাতো (সহ সম্পাদক ও মিডিয়া ম্যানেজার) এদের সাহায্য ছাড়া এ সংখ্যা প্রকাশ করা সম্ভব হতো না ।সকলে আরো একবার নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন । ভালো থাকেবন ,ভালো রাখবেন প্রিয়মানুষটিকে ।




                                                   ধন্যবাদান্তে ,

                                                   ঈশিতা দাস
                                                (সহ সম্পাদিকা)


নিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার

সুধা সরকার
(চেয়ার ম্যান )
সুস্মিতা কর্মকার
(সুম্পাদিকা)
জ্যোতির্ময় রায়
(কার্যকরী সম্পাদক)
পিন্টু মাহাতো
(সহ সম্পাদক ,মিডিয়া ম্যানেজার )
ইশিতা দাস
(সহ সম্পাদিকা )