নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র



পরিণাম
***★***
 


 ১
শুধু তোমাকে ছেড়ে যাবো বলেই
কার্তিক দা আমার প্রাণের দোসর।

দু জোড়া ঠোঁটে মহুল গন্ধ, রঙীন নেশা
বন্ধুত্বের মদ্যপ বন্ধন, বেপরোয়া বাক্য সমর্পণ।

নেশা চড়তে চড়তে ছুঁয়ে যায়
ভাতের হাড়ি, মায়ের পিঠ, বাবার গাল
ভুল নয় ঠিক নির্ভুল ভাবে
নিজেকে চড়িয়ে রাখি নিজের ওপর।
তোমাকে ভুলেছি কবেই, কতকাল
কার্তিক দা এখন ছায়া শরীর, স্মরণে তাকে জিইয়ে রাখি

আজ নেশাহীন জোৎস্নায় ভিজতে ভিজতে
অলীক স্বপ্নের মতো অতীত আসে,
মায়ের আদুরে গলা, বাবার গম্ভীর স্নেহ
পরিবার, ছেলেবেলা যেন জরাহীন রামরাজ্য।

এক অনুতাপ এসে ঘাড় ধাক্কা দেয়,
পচনশীল শরীর মৃত্যুভিক্ষা চায়, মুক্তি চায়
মুক্তি মেলেনা,
প্রতি মুহুর্তে এক মৃত্যুযন্ত্রণা ছুঁয়ে যায় প্রতিটা কোশ।

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র





তমসা, এক অতৃপ্ত আঁধার!!!
********★****************★**




আমার প্রাক্তন প্রেমিকা তমসা,
রাত্রির গর্ভে জন্মানো এক অতৃপ্ত আঁধার।
অমাবস্যার গাড় সৌন্দর্য ছুঁয়ে গেছে তার শরীর,
পূর্ণিমার বাসি চাঁদ ব্যঙ্গের আলপনা এঁকে দেয় তার কপোলে।

আমার প্রাক্তন প্রেমিকা তমসা,
আমায় ভালোবাসত অক্সিজেনের মতো।
আমি কখনো ভালোবাসিনি তারে,
তার শরীর জুড়ে কালো কার্বন আমায় বিষিয়ে দিত।
শশ্মান ভূমি থেকে উত্থিত অগ্নিবিষ্ট কাষ্ঠের ন্যায়
তার শরীরে দেখেছি নরকীয় আঁধার।
গভীর স্নেহাবিষ্ট চুম্বন আমার শুভ্র শরীর পুড়িয়ে দিত।
আমি ভালবাসতে পারিনি তারে,
শুধু তার উন্মুক্ত শরীর, উদবাস্তু যৌবন
ছিল আমার ক্ষুধার্ত অভ্যেস।
আমি ভালোবাসতে পারিনি অমাবস্যার অবৈধ কন্যাকে,
শুধু রাত্রির অন্ধকারে চার মিনিটের মিথ্যে অভিনয়ে
উগরে দিতাম সব ঘৃণা, মিটিয়ে নিতাম সব অবৈধ তৃষ্ণা ।

তমসা আমার প্রাক্তন প্রেমিকা,
তার কুঁকড়ানো অবিন্যস্ত চুল, পাশবিক নখ, বিবর্ণ দাঁত
এক কুৎসিত প্রেতকায়ার জীবন্ত মূর্তি।
আমি ভালাবাসতে পারিনি তারে,
শুধু তার শরীর আঁচড়ে-কামড়ে-খুবলে খেয়েছি,
তার পাউষ চোখ সয়ে গেছে সব ভালবাসা, সব ঘৃণা।
যতই ঘৃণা করেছি, উগরে দিয়েছি ক্ষোভ,
সে ভালোবেসে গেছে অবলীলায়, চেয়েছে প্রতীকী স্থাপন।

তারপর একদিন ঘন ঘোর বর্ষায়
তার তমসাচ্ছন্ন গর্ভে আমার অবৈধ বীর্যপাত,
বর্ষার স্বাচ্ছলতায় পিতৃহীন শুক্রাণুর অঙ্কুরোদ্গম ।
বন্য অন্ধকার মুছে ফেলে, একাকীত্বের গিরিখাতে
তমসার বিসর্জনে আমি ফিরেছি সামাজিক আলোয়।

কেটে গেছে কত দিন, কত কাল না জানি,
বৈধতার উঠোনে, সামাজিক সম্পর্কের গাঁটবন্ধনে,
আমার হৃদয় দুয়ারে শুভ্র জ্যোৎস্নার মতো  অর্ধাঙ্গিনী।
রজনীগন্ধার শুভ্র বিছানায় আমি তারে করি আমন্ত্রণ,
নিয়নের বাতি সব নিভে যায়, মিলনের সেই পূর্বক্ষণ ।
অন্ধকার, ঘন অন্ধকার, অতি ঘন অন্ধকারে মিশে যায়
বাসরের ঘর, শুভ্র অর্ধাঙ্গিনীর অতৃপ্ত প্রথম প্রহর।
বিস্ফারিত চক্ষু মেলে চেয়ে থাকি আঁধারের তরে,
উন্মুক্ত শরীরে তমসা চেয়ে আছে ভালবাসার নীড়ে,
প্রেতকায়ার মত স্নেহাকাঙখী এক অপূর্ণ মুর্তি
জীবনের সরল সমীকরণে শুধু পেতে চায় ঘৃণাবর্জিত প্রেম।
আমি ভালোবাসতে পারিনি তারে, তার নিবিড় তৃষ্ণার্ত চোখ,
জীবন্ত ফসিল হয়ে জ্বলতেই থাকে আমার অপত্য স্নেহের খোঁজে।

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র






মেঘ বন্দনা
 

প্রতিবার এসেছ তুমি,
অপলক দৃষ্টিতে চেয়েছ আমার পানে।
আমি খোলা আকাশের নীচে
অপেক্ষারত তোমার আহ্বানে।
তোমার সিক্ত পরশে
আমি ভিজেছি সর্বক্ষণ।
তুমি আগামীর কামনায়
ভিজিয়েছ গর্ভবতীর ওষ্ঠ।

তোমার পানে চেয়ে শুস্ক ধানের ক্ষেত অপেক্ষায়,
ফসলের কামনায় চাষি করজোড়ে প্রার্থনায়।
তোমার আগমনে ঘোষিত হয় জীবন,
বৃষ্টি তোমার গর্ভধারিণী অমুল্য সন্তান।

হে প্রাণময়ী মেঘরাজী,
তোমার গর্ভজাত সন্তান ফিরুক
মৃতপ্রায় মাতৃভুমির শুস্ক বক্ষদ্বয়ে।
তোমার গর্জনে প্রাণ পাক মেঠো ক্ষেত।
তোমার হৃদয়বীণার সপ্তসুরে
     বেজে উঠুক করমের গান।

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র


      এসো হে বৈশাখ     
     *****************                          


এসো হে বৈশাখ,
বসন্তের একঘেয়ে সৌন্দর্যে
তোমায় স্মরি।
উঠুক প্রবল ঝড়,কাঁপুক মাতৃভুমি,
স্পর্ধা জাহির করুক তোমার আগমনী।

এসো হে বৈশাখ,
শীতের নৈসর্গিক বিলাসিতায়
তোমায় স্মরি।
যাদের মাথার ছাদ অতীত ও আগামী,
তাদের করেছ শিকার
শুনিয়েছ বজ্রবাণী।
যাদের বিলাসিতা কিনেছে বসন্ত,
তোমার বজ্রবাণ তারা করেছে আত্মসাৎ,
তোমার প্রবল ঝড়ে তাদের বিলাসী প্রেমালাপ।

এসো হে বৈশাখ,
শরৎ এর আগমনী কাশবনে
তোমায় স্মরি।
তোমার প্রবল ক্ষোভ শুধু বিরহ কুটীরে!
প্রাসাদ বিলাসী মনে তুমি যে আজও বসন্ত।
তোমার অগ্নিবাণে শুধু বিদ্ধ সর্বহারা,
আর্থিক সুখী গৃহকোণে
তুমি যে বৃহন্নলা।

এসো হে বৈশাখ,
বর্ষার পেখমনৃত্যে আজ
তোমায় স্মরি।
তোমার প্রবাহী প্রকোপে শুধু মুর্ছিত ঘাসফুল।
বিলাসী গোলাপে আজও
বিজীত বসন্তধ্বনি।

এসো হে বৈশাখ,আজ ভিন্নতা পাক প্রাণ।
গাও হে বৈশাখ আজ গাও হে সাম্যের গান