নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বৃষ্টি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বৃষ্টি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃষ্টি:পবন কুমার সাহা







 ওরে আজ হঠাৎ করে

বৃষ্টি এলো নেবে
ঝড়ে ভিজে সুখ চড়ে
চেনা ঢেউ দেবে।
ভিজে গেলো স্বপ্ন গুলো,
চোখে দেখা ঢল
বৃষ্টি ভিজে স্নিগ্ধা এলো
চেনা সেই টোল।
হোক বৃষ্টি অন্তরেতে
চাই সারাক্ষন
চেনা পথ জলে ভেসে
নৌকা নিয়ে রন।
স্রোতে কাগজের নৌকা
ঝড়ে নড়ে চড়ে
পোড়া মন ভিজে অক্কা
কেনো ডোবে ওরে।

✍️সম্পাদকীয়....

"শত ব্যস্ততার মাঝে হঠাৎ বৃষ্টি এসে জুড়িয়ে দিল প্রাণ
মরতে থাকা মানুষ জানে,মেঘ,সে বেঁচে থাকার গান।।"



প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সবার কাছে, সময় মত প্রকাশ না করতে পারার জন্য। রোজ অফিস ফেরত ক্লান্ত চোখে হারিয়ে যাচ্ছে সব,সবটুকুই।আসলে সবার খিদে পায়।পকেটে তাই দুটাকা রেখে বাজি খেলছি।

হয়তো এটাই নিকোটিন এর শেষ সংখ্যা,আসলে নিকোটিন সব সময় পুড়ে গেলে ছাই হয়ে যায়।
পরে থাকা এস্ট্রেতে থাকে ঘৃণা।

এইটুকুই থাক তবে আমার নামে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাইকে ,আপনারা যারা লেখা পাঠিয়েছিলেন, সবার লেখা নেওয়া সম্ভব হয়নি ,যাদের লেখা নেওয়া হয়নি তাদের জন্য দুঃখিত।

ধন্যবাদ নিকোটিন এর সকাল বেলা ও রবিবাসরীয়'র সম্পাদক কে  মান্নুজা এ সংখ্যা প্রকাশ করা সম্ভব হতো না ।।

                                      ধন্যবাদান্তে,

                               জ্যোতির্ময়


বৃষ্টি তুমি নেমে এসো : অষ্টপদ মালিক



বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
রোদজ্বলা ঘাসে
বাঁচার আশায় ওরা যেন
খুসির হাসি হাসে ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
ফুটিফাটা মাঠে
মাঠ ভরা ফসল ফলুক
চাষির জীবন পাঠে ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
শহিদ স্ট‍্যাচুর বুকে
ধূয়ে যাক ধূলো বালি
বাঁচি মনের সুখে ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
পুকুর ডোবা খালে
জলজীব যত আছে
বাঁচুক খুশির তালে ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
ঘাম ঘামাচির দেশে
রোদপোড়া মানুষজনে
একটু ভালোবেসে ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
বাদল পোকার গায়
টাপুরটুপুর ঝমঝমিয়ে
এসো নুপুর পায় ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
চাতক পাখির ঠোঁটে
ফটিক জলের আশায় ওরা
ছটপটিয়ে ওঠে ।

বৃষ্টি তুমি নেমে এসো
অফিস ছুটির দিনে
ছন্দে সুরে বাঁধবো তোমায়
আপন হৃদয়-বীণে ।

আসুক বৃষ্টি: বৈশালী ব্যানার্জ্জী



আকাশ ডেকে ওঠো একবার ঘোলাটে মেঘ আবার জড়াক তোমাকে 
গনগনে রোদে ঝলসানো ব্যর্থ চাকরি খোঁজা ছেলেটা শান্তহাসি হাসুক
সদ্য প্রিয়জনকে হারানো বিধবা মেয়েটা গল্প
বুনুক নিজের জন্য 
ঋণগ্রস্ত হাড়জিরজিরে অসহায় চাষিটা বুক
ভরুক আশার বিদ্যুৎএ
উদাস বাউল তার একতারা তুলে গলা চড়াক
' বাদল বাউল বাজায় বাজায় বাজায় রে'।
দিন সাতেক পরে আকাশ টা ধূসর রঙের শাড়ি তে ঢেকেছে নিজের সোনার চেহারা ঠিক রঙ্গনা যেমন ভাবে হেঁটে চলে অফিসের দিকে। হঠাৎ চারিদিকটা অন্ধকার করে এল ঝড় উঠল এলোমেলো হয়ে চুলগুলো ঝামড়ে পড়ল মুখের উপর তারপর সব থামিয়ে আছড়ে পড়ল বৃষ্টি তড়বড় করে ভেজাল সব ফুটি ফাটা মাঠে রুক্ষগাছ শুক্ষ নদী সাথে বিবর্ণ ক্লান্ত মুখের রঙ্গনাকেও।

কম্পন : জয়ীতা চ্যাটার্জি



একটা ভূমিকম্প ঘটে গেল হঠাৎই,
কেঁপে উঠল বাড়িটা, বাঁ দিকের
বারান্দাটা ঝুঁকে পরল বেশ খানিকটা
তবু জানলার মুখ যেনো আকাশের দিকে।
দুহাতে অঞ্জলি করতে চায়,
আলো ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকে,
প্রার্থনার মতো পথ খুঁজে ফেরে আলো ভরা চোখে।
বাড়ির ভেতরেই ভীষণ একটা হাহাকার,
অনেক হুল্লোড় ঘুমিয়ে পরছে
 চড়া বিদ্যুৎ ঝলকানির মধ্যে।
মনে মনে ভাবছি কি ভাবে ফেরা যায় চেনা ডাকে।।

তবুও আজ ভালোবাসবো :কাজী জুবেরী মোস্তাক



আজ শহর জুড়ে অঝোর ধারায় বৃষ্টি থাক
ভেজা কাকগুলোও আর বেশি ভিজে যাক
বন্ধ হয়ে যাক আজ গাড়ির সব চাকাগুলো
আজ আমি শুধু তোমাতেই লেপ্টে থাকবো ৷

হলে হয়ে যাক আজ হুলিয়া এ শহর জুড়ে
তল্লাশি চৌকি খুলে বসুক সব পথের মোড়ে
অাজ আমি তোমাকে কোত্থাও যেতে দেবনা
আজকে আমার বুকেই হবে তোমার ঠিকানা ৷

এই শহর আজ একেবারে অচল হয়ে যাক
দোকানপাট গুলো সব আজ বন্ধ হয়ে যাক
শুধু খোলা থাকুক রাস্তার ধারে টং দোকান
সেখানে বসে না হয় শোনাবো বে-সুরো গান ৷

রিক্সাগুলো সব বন্ধ থাক আজ শহর জুড়ে
ছুটি থাক ব্যাস্ত শহরের ট্রাফিক সিগন্যালে
আমাদের পায়ে আজ পথ হারাবে এই শহর
যৌথ ভালোবাসাতে আঁকবো সুখের আঁচড় ৷

বৃষ্টি : কুনাল গোস্বামী



অতঃপর আমি নিস্তব্ধ হলাম,ব্যাঙদের গোঙানি আরও বেড়েই চলেছে 
তারপর শুষ্ক মাটির বুক স্পর্শ করে বৃষ্টি নামল পাতায় পাতায় 
আমি আর কবিতা খুঁজিনা, কল্পনায় হারিয়ে যাইনা খড়কুটোর মতো
কান পেতে শুনি ল্যামপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকা কুকুরের কান্না 
দু'একটা ফোঁটা বৃষ্টি মুখে মেখে নিয়ে ভাবি এই বেশ ভালোই আছি 

কবিতারা নাকি এক একটা জীবন্ত ইতিহাস! 
তবে তাঁদেরও বুকে জমে থাকে একরাশ অভিমানী কালো মেঘ
যদি আমারও থাকতো কয়েকটা খাঁজকাটা নখ
তবে আঁচর কেটে বৃষ্টি নামাতাম এমনই এক অন্ধকার রাতে
সে রাতে আমিও চিৎকার করে বলতে পারতাম
বৃষ্টিকে চাদর বানিয়ে নগ্ন শরীর ঢাকতে আমিও ভালোবাসি।

ভালোবাসার গল্প : তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়


আকাশ যখন মেঘকে সাথী করে নিয়ে এলো,
তখন চারিদিকে কত আনন্দ!
নতুন জীবন পেলো ওরা।
আকাশ মেঘকে বুকে করে আগলে রাখলো,
আর মেঘও যেন আকাশের বুকে ভেসে গেলো।
এইভাবেই হাসিতে খুশীতে দিব্যি সুখে দিন কেটে যায়।
হঠাৎ  একদিন আকাশের মুখ ভার,
মেঘের মনেও কালো ছায়া।
ওদের মধ্যে একটু দূরত্ব বাড়লো--
মেঘের কোলে বৃষ্টি এলো যে!
রিমঝিমিয়ে নেচে বেড়ায় কাজলা সেই মেয়ে।
তার নাচের তালে তালে গাছপালাও আনন্দে নাচে।
একদিন হঠাৎ দেখি বৃষ্টির সাথে ভাব হয়েছে রোদের।
তারপর....
রোদ আর বৃষ্টির সে কি লুকোচুরি খেলা !
এইভাবেই কেটে যায় বাদলবেলা।
আকাশ-মেঘ-বৃষ্টির ভালোবাসা ভরা দিন।।

বারি ধারা ": রাসমণি সাহা দেবনাথ


গ্রাজুয়েট, শ্যামবর্ণা মধুলীণা এবার ইতিহাস নিয়ে এম এ তে ভর্তি হয়েছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে।গায়ের রং এবং চেহারার জন্য ছোট থেকেই তাকে অনেক কটুক্তি শুনতে হয়েছে, এখনও শুনতে হয়।
তার দ্বারা নাকি জীবনে কিছুই হবে না... পারিপার্শ্বিক মানুষ গুলোর ভারি অদ্ভুত ধারণা। এ জীবনে তো তার বিয়েটাও হবে না।যেমনি তার গড়ন, তেমনি তার রূপ রঙ ! কে করবে তাকে বিয়ে ?...আজকের যুগে দাঁড়িয়ে মানুষ কেন যে এমন মত পোষণ করে, মধুলীণা নিজেও সেটা বুঝতে পারে না।যৌথ পরিবারে বড় হয়েও সে খেয়াল করেছে, তার পরিবারের অনান্য সদস্যরা যারা তার খুব কাছের, পরম আত্মীয়, তারাও আজকাল তাকে হেয় করতে পারলে বেশ খুশি হয়।তার মনের কষ্ট গুলো কবিতার মালা হয়ে উদ্ভাসিত হয়।তার লেখনী শৈলীর গুণে সেই কবিতা গুলো যেন বাগ্ময় হয়ে ওঠে।মধুলীণার লেখার নেশা খুব ছোট্ট বেলা থেকেই।বিভিন্ন পত্রিকায় তার বেশ কিছু লেখা বেরিয়েছে, যেটা বাড়ির কেউ জানে না।

এবার গরমটাও পড়েছে সাংঘাতিক।আজ সকাল থেকেই কেমন যেন অস্বস্তি দায়ক অবস্থা।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে বিগত দশ বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে এবারের গরমের দাপট।"ফণী"-নামক ঘূর্ণিঝড়ের দরুন  বায়ুমণ্ডল আরও শুষ্ক হয়ে উঠেছে।শ্রাবণ মাস আরম্ভ হলেও বৃষ্টির হাত ধরে বর্ষার দেখা নাই।যেন মেঘরাজের সাথে আড়ি করে অভিমানী বৃষ্টি হয়েছে নিরুদ্দেশ।
ড্রয়িং রুমে টিভি চ্যানেলে সবাই বিশ্বকাপ খেলা দেখতে মগ্ন।এমন সময় ল্যাণ্ড ফোনটা বেজে উঠল।পুরো রিং কমপ্লিট হয়ে যাবার দু মিনিট পর আবার বেজে উঠল।অবশেষে পরিবারের অভিভাবক তথা সকলের দাদু শ্রী ক্ষিতিশ রায় ফোনটা রিসিভ করলেন।কিছু ক্ষণ পর দাদুর বাজখাঁই গলার স্বর শুনে সবাই চমকে উঠে।কী ব্যাপার? 
দাদুর ডাকে মধুলীণাও গুটি গুটি পায়ে আসতেই, ক্ষিতিশ তাকে দু হাত ভরে আশীর্বাদ করলেন।বললেন, যে মেয়েটির জন্য পাড়া প্রতিবেশী, পরিবারের সকলের অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্য.... সেই মেয়েটিকেই সেরা মহিলা কবির সম্মান দেওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে।কোলকাতার একটি নামী প্রকাশনা সংস্থা তার একক কবিতার বই প্রকাশ করবে এবারের বইমেলায়।
শ্যামবর্ণা মধুলীণার দু'চোখে আনন্দের ঘন শ্রাবণ ধারা।
বাইরেও তখন হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানি ! ড্রয়িং রুমের জানালার সার্সিতে এল বৃষ্টির ঝাঁট।শুরু হল বহু কাঙ্খিত মুষল ধারায় বৃষ্টি।

স্বপ্ন ভঙ্গ : বীরেন্দ্র নাথ মহাপাত্র



    হঠাৎ দেখি  বিকেল বেলায়
    পশ্চিমেতে মেঘ জমেছে,
    বলতে বলতে নামলো বৃষ্টি
    গা ভিজল বলে মা বকেছে ।

    একটু  বাদে বৃষ্টি থামলো
    মোদের গাঁ থেকে,
    দেখতে পেলাম উইপোকাগুলি
    স্বপ্ন ভরা ডানা মেলেছে ।
    
    ক্ষণিক আনন্দ গেল মিলিয়ে
    উড়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল,
    ডানা খসে পড়লো সবে
    পাখি কিছু তাদের খেল ।

    আবার যারা বাঁচলো  সবে
    আশা আলো দেখে ছুটে এলো,
    বাড়ীর মেয়েরা রেগে মেগে
    স্বপ্নের পাখিকে ঝেটিয়ে বিদায় দিলো ।

মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো : - অমিতাভ মীর



মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো চোখের পাতায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা জাগায়।
কাজল মেঘের অভিমানে আকাশ পাগলপারা,
ঝমঝমিয়ে মাটির বুকে নামলো শ্রাবণধারা।

মাটির দহন নিভলো যখন শ্রাবণ ধারায় ডুবে,
আমার বুকের সুপ্তসুখ তখনই গেল উবে।
ছলছলিয়ে চোখের আকাশ ঝরছে নিরবধি,
কলকলিয়ে উঠলো দুলে বুকের গহীন নদী।

সেদিন এসেছিলো পাশে কেউ গভীর ভালোবেসে,
ভুল বুঝে সেও গেল চলে আনমনে বাঁকা হাসি হেসে!
গরম কফির ধোঁয়ায় স্মৃতির আবেশ জুড়ায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।

অঝর ধারার বর্ষণমুখর এক উদাসী সন্ধ্যায়,
ভেজামন নিয়ে কেউ এসেছিলো আমার আঙিনায়।
মজেছিলো দু'টি ঠোঁট গরম কফির কাপের ছোঁয়ায়,
বুকের নদীর পাড় ভেঙেছিলো সেই শ্রাবণ সন্ধ্যায়।

তারপর কেটে গেছে অনেক বর্ষণমুখর শ্রাবণ,
বুকের নদীর পাড় ভাঙে আজো চোখের প্লাবন।
আজ মন বেসামাল মনখারাপের শ্রাবণ সন্ধ্যায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।

আষাঢ়ে কথা : কিশলয় গুপ্ত


অবশেষে বৃষ্টি নেমে এলো-
নোংরা ঘামের অত্যাচারের পরে,
আষাঢ় কথা নিন্দুকেরাই খেলো;
তবু ওম রেখেছি তোমার একা ঘরে।
বুকের সাথে বুকের গোপন কথা,
হাত রেখেছে হাতের উপর জল;
আর কিছু নয়- মেঘের বর্বরতা
সময় ভুলে করেছে দুর্বল।
নজর ধরে সরলরেখায় চোখ-
পায়ের উপর পা রেখেছে কাল!
আজ ভুলে যাই গতকালের শোক,
লোকের কথায় ফালতু বাওয়াল।
অবশেষে বৃষ্টি এলো ঘামে-
এবার তুমি দেবে নরবলি?
মোমবাতি আজ জ্বলুক আমার নামে
ভেজা হাঁসি দিক বদনাম গলি।
                      

বর্ষা রাণী : বিপ্লব গোস্বামী


সাজিয়াছে আজি বর্ষা রাণী
মাতিয়াছে আকাশ ধরণী ;
অঝর ধারায় ঝরিতেছে বারি
বাহিয়া মেয়ের তরণী।
আনন্দে আজি মাতিয়াছে পাপিয়া
মুখরিত কানন কূজনে ;
গগনে বনানীতে বড় ভাব আজি
সীমান্তে চুমিছে দুজনে।
পুষ্পে আজি ভরিয়াছে কানন
শ‍্যামলী বালা  হরষা ;
তটিনীতে আজি ভরা যৌবন
নামিয়াছে আজিকে বরষা।

বৃষ্টি মানে : বটু কৃষ্ণ হালদার


বৃষ্টি মানে দাপিয়ে বেড়ানো সবুজ প্রান্তর, নদীর চরে কাদা মাখামাখিতে ফুটবল খেলা
আর রাখাল গরুর পাল।
বৃষ্টি মানে আলো-আঁধারের খেলা, মায়ের কোলে মাথা রেখে আদর মাখানো
হারিয়ে যাওয়া শৈশবের মিষ্টি সকাল।
বৃষ্টি মানে গরম পেয়ালায় তৃষ্ণার্ত ঠোঁটের চুমুক,
চাল ভাজার সাথে ,মায়ের হাতে কুমড়ো ফুলের বড়া,
বৃষ্টি মানে নকশী কাঁথা গায়ে দিয়ে সহজ পাঠের পড়া।
বৃষ্টি মানে চাষি ভাইদের মহা আনন্দের আউল,বাউল গান
বৃষ্টি মানে ভাঙ্গা টিনের চালে কুকুর অপলক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা,
 আর মাতলা নদীর বুক চিরে বয়ে আসা ভাঙ্গনের আহ্বান।
বৃষ্টি মানে চাতকের অনাহুত মহোল্লাস, পরিযায়ী পাখিদের ভিড়।
বৃষ্টি মানে মেদুর কাঁথাতে, অবারিত অলস সুখের নীড়।
বৃষ্টি মানে উষ্ণ হৃদয়ে প্রাণের ছোঁয়া ভুবন ডাঙ্গার মাঠ।
বৃষ্টি মানে রাখালিয়ার করুন বাঁশির সুর, শেষের খেয়া পাড়ি দেওয়া,
চিতার শুকনো কাঠ।
বৃষ্টি মানে কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে ভালোবাসার পরম অনুভূতি।
বৃষ্টি মানে খুব সহজে দুটি অচেনা হৃদয়ের জীবনের আত্ম স্মৃতি।
বৃষ্টি মানে গভীর ভালোবাসা বাঁধন হারা হয়ে আপনজনকে কাছে চাওয়া,
বৃষ্টি মানে মাঝ দরিয়ায় মাঝি-মাল্লাদের উল্লাসের গান গাওয়া।

ছুটির নির্ঘন্ট : মান্নুজা খাতুন

আয় না সবাই মজে থাকি
আজকের এই দিন-টাই
আজকে তোরা খেলার সাথি
ছুটির সারাদিনটাই।।
আয় সবাই ছুটে বেড়ায়
যে দিকে যাই চোখ
আয় না সবাই উড়িয়ে ধুলো
গ্রামের মেন রোড।।
কি করে আর খেলব বল!
বাড়িতে যে বড়োর দল!  
ভাদ্রের এই ভর দুপুরে
খেলতে এলে হায়
মুছড়ে দেবে কান
পিঠে পড়বে ছড়ি!  

এসব বললে শুনব না
মানবো নাকো কথার ছল
বকলে বকুক ,  মারলে মারুক
খেলব সারাদিনটাই।।  

বর্ষা তুমি : শিবানী বাগচি



বর্ষা তুমি অঝোর ধারায়,
সকাল বিকাল সন্ধ‍্যা সাঁঝে!
অনুভূতির ভাল লাগা,
মন লাগেনা তাইতো কাজে!

ঘন মেঘে আকাশ ভরা,
গুড় গুড় গুড় শব্দ মাতন!
উঠছে হাওয়া তাল মিলিয়ে,
নুপূর পায়ে ছন্দে নাচন!

বর্ষা তুমি দুষ্টু ভারী,
সময় টুকু;তাও মনে নেই?
ইচ্ছে হলেই ঝরছো কেবল-
তোমায় ছুঁয়ে লাগছে ভালই!

ভিজছি তো বেশ ছাতার তলে,
পথ ঘাট সব জলেই ভরা!
বৃষ্টি আমি তোমার সাথে;
ভিজবো;হবো আত্মহারা!

ভিজছে মাঠ চাষের জমি,
সবুজ মাখা দূর বনানী -
হাওয়ার মৃদু একটানা দোল,
নুপূর পায়ে বৃষ্টি রানী!

ফলে ফুলে ভরলো ভূবন,
মন ভ্রমরার গুঞ্জরণ;
বইছে হাওয়া;শীতল ছোঁয়া,
মন উদাসী একতারা মন!

উজাড় করে স্বপ্ন বোনে,
চাষের জমি,খাটছে চাষী।
ফলবে ফসল ,ভরবে গোলা;
অনুভবে,প্রানের খুশী!

বর্ষা রানী তোমায় দেখে,
ময়ূর কেমন পেখম তোলে!
প্রেম সোহাগী বন ময়ূরী,
নাচছে কেমন পায়ের তালে!

তোমার নাচন বাড়লো বুঝি;
ভাসল জমি,গরীব চাষী-
ঘর বাড়ী সব কোথায় গেল;
জলের তলার স্বপ্ন গুলো?

ঝরছো কেন এবার থামো!
ঝর ঝরিয়ে ঝরছো কেন?
আর কতকাল ঝরবে শুনি;
সৃষ্টি ছাড়া ঘ‍্যান ঘ‍্যানানী?
.

বৃস্টির বিকেল : রবি মল্লিক



প্রকৃতি আজি সেজেছে আবার
নববর্ষার সাজে,
স্নিদ্ধ শান্ত বারিধারায়
মনেতে মৃদঙ্গ বাজে৷

তাল সুপারি গাছের সারি
নৃত্য করেই চলে,
দীঘির জলের সমুখ পানে
ঢলা ঢলি খেলে৷

শান্ত বাগান উঠেছে মেতে
নিত্যনতুন তানে,
মনটা আমার উথালপাতাল
বর্ষামঙ্গল গানে৷

ঈশানকোণে মেঘের ফাঁকে
সূর্য্য মারেন উঁকি,
বৃষ্টি শেষে আবার নতুন
দিবার আলো দেখি৷

অকালে বর্ষণ : অনিন্দ্য পাল


পাঁচিলের উপরে পেরেকগুলো ভেজারোদে মাখামাখি
দুটো শালিখ সেই উল্টানো পেরেকের শাসানি ভুলে
নাচছিল
খুনসুটি করছিল
আর বৃষ্টিতে ভিজছিল
                                 এখন আইনত বসন্তের শেষ
বর্ষার ধারা নামে ঝুরঝুরে আইনের মত
এখন কি খুব দরকার ছিলো
                                         বৃষ্টির ?
বসন্ত শেষ হয়নি এখনও
টিকিট হাতে দাঁড়িয়ে আছে গ্রীষ্ম
বৃষ্টির কনভয় কোথাথেকে ঢুকে গেল
                                                      অকাল নিয়মে?
দরকার ছিল কি খুব ... এ বসন্তের শেষে
আকাশ-মেঘ আর দেবদারু গাছের দুঃখ দুঃখ খেলা?
দেবদারু পাতা থেকে স্রোত
নেমে এল অন্ধকূপ থেকে
নিদ্রা গেছেন দেব

অপ্সরীদের এখন ঋতুকালীন ছুটি
                                            ভেজা শিথিল রোদ্দুর
                         স্নান সেরে হেসে ওঠে বিফল বসন্ত
                  ভেজা হাসি থেকে ঝরে 
পারলৌকিক ফোঁটা

কান্না যদি বলা যায় সেই সব অকাল বৃষ্টিস্বরে
কবুতর মন তবে
                  ভেঙেচুরে নেমে আসা
                                           আকাশ আঁকড়ে ।

স্বপ্ন-পরী : মিঠুন কর্মকার


আর ঝরো না ও বৃষ্টি ভাই
                     দোহাই লাগি তোর,
তোর লাগি আজ বন্ধ হয়েছে
       নৌকা ক্ষেয়া দেওয়া মোর।
মাঝি আমি ক্ষেয়া দিয়েই
              মোর সংসারখানি চলে,
অতুরে দূরে বিদ্যুৎ চমকাইয়া
   কে যেন আসিতেছে দুলে দুলে।
কাছে আসতেই হৃদয় মোর
                  কেঁপে চলেছে হন হন,
কোন পরীর দেশ থেকে
            আজ তার অত্র আগমন ।
ভুলে গেছি আমি মাঝি
             দেখে এই অপ্সরীয় রূপ,
যেন স্বর্গ থেকে হেথায় এসে
           দিয়ে চলেছে দর্শনীয় সুখ।
বৃষ্টিতে ভেজা কালো চুল
                 আর চঞ্চল চক্ষু দুই খানি
হৃদয় ব্যাকুল করা কণ্ঠ স্বরে বলিল,
                আমায় পার করে দেবে তুমি?
কথা নয় যেন মুখ দিয়ে তার
                  বয়ে চলেছে অমৃতের ধারা,
আমি নিরবে নৌকা চালিয়ে চলেছি
                              লগি ও দাড় দ্বারা ।
হঠাৎ ভঙ্গিত হলে নিদ্রা
                     বসে পড়ি বিছানায় ,
একি দেখিলাম আমি,
কেন জাগিয়ে দিল বিধাতা মোরে হায় !
ছোট্ট বেলায় অনেক
                 পরীর গল্প শুনছিলাম আমি ,
স্বপ্নে দেখা দিয়ে আজ আমার
                  এ কি অবস্থা করিলে তুমি?
হে বিধাতা আমার সাথে
                       খেলিলে এ কি খেলা ,
আমি পাগলা নৌকায় পড়ে থাকি
                      সকাল সন্ধ্যা রাত্রি বেলা ।

বিষন্ন অপেক্ষায়: কৌশিক গাঙ্গুলি


অনেকদূর চলে যেতে যেতে
মনে হয় বলতে ভুলে গেছি
আসি বলে আসতে ,
আমার অপেক্ষায় বুড়ি মা
এখন অস্হির হয়ে আছে ।
তবু হাঁটছি চোখের জল মুছে
সামনে রুক্ষতা , সবুজ হারিয়ে গেছে , দেওয়ালেতে রক্তের দাগ যেন মানচিত্র ।
কে কাকে চিনতে পারছে বা পারবে কিনা তা নিয়ে শীতল প্রতিযোগিতা ।
তবু হাঁটছি অনেকদূর , রুক্ষতা
কুটিল কিংবা জটিল জীবন পেরিয়ে ,
অপেক্ষায় আছে বুড়ি মা , চোখের জল অবিরাম ,
এক বিষন্ন অপেক্ষায় .... ।
মনে হয় বলতে ভুলে গেছি
আসি বলে আসতে ।