নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(পঞ্চম পর্ব)






মাধব মন্ডল 
**********


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।






জীবনটা এমন চলতে পারে না
বাস রাস্তার মাঝখানে ঐ লোকটা
সাদা পাঞ্জাবি পায়জামা বুট পরে
হাতে দলীয় পতাকা
তামাশা আরো জমাবার জন্যে
কে একজন একটা প্লাস্টিকের চেয়ার দিল।

অতঃপর চেয়ারে ওঠে লোকটা
জীবন এভাবে চলতে পারে না
এ প্রধান চোর
প্রধান সাহেব জিন্দাবাদ
এরপর শুরু হয় জিন্দাবাদ ধ্বনি
গাড়িরা দাঁড়িয়ে পড়ে একে একে।

একে একে লোকেদের মনের কথাগুলো
প্রকাশ্যে না বলতে পারা কথাগুলো
লোকটা টেনে হিঁচড়ে বার করে
কারো চোখে রাগ নেই
বেবাক হাসিগুলো পিচ রাস্তায়
আহা,প্রধান আপনি তুমি তুই এক্ষুণি আয়!



লতপতে কথারা আমার মুন্ডু ছিঁড়ে খাক
তবুও আমার বাঁচা আমারই হাতে থাক
হাওয়ায় ওড়ে সজনে আর শিমূল শিমূল
চ্যাঁচাচ্ছি না এটা বলে - কি ভুল কি ভুল!

আমার চোখে কি বিদ্বেষ আঁকা ছিল?
আসলে শীতে শিরীষের ডাল ফাঁকা ছিল
আচমকা রোদ্দুর এবার যদি আঁকো
চোখে চোখে গড়ে ওঠে বারুদের সাঁকো।

ঐ দেখ ডালে ডালে কাজলের রেখা
ওড়ে খুব ডাকে খুব নানা দলের শেখা
ডাকি তোকে আয় আয় মুন্ডু ছিঁড়ে খা
অনন্ত বিষাদের ছায়াদের চেয়ে ভাল যা।



চাওয়া পাওয়া সব উঠে গেল
কার কি হিসেব বাকি বল
নিয়ে নাও নিয়ে নাও
আমাকে নীরবতাই দিলে দাও।

চারপাশে এত শব্দ, এতই শব্দ
দশরথের মত ব্যর্থ হতে চাইনা
নীরবতা তুই আমাকেই শেখা
শব্দভেদী সেই অব্যর্থ বাণের কৌশল!

যার যা বোঝার বুঝে নাও,নিয়ে যাও
নিখুঁত সাজানো নীরবতায় তোর প্রবেশ নিষেধ
আর তো ফিরব না সন্তানের ডাক ছাড়া
চল মন লোটা কম্বল আর নীরবতায়।


(চলবে...)

শ্রীময়ী(প্রথম পর্ব)


     


        
শ্যামল কুমার রায়, সহ শিক্ষক,
নবগ্রাম ময়না পুলিন বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়।





                       ( প্রথম পর্ব )
                    --------------------
                     মুরারীমোহন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শ্রীময়ী। সহ শিক্ষা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মুকেশ শর্মা । ঐ বিদ্যালয়টা মুকেশের ঠাকুরদার স্মরণে । অত্যন্ত উচ্চবিত্ত ঘরের ছেলে মুকেশ । অর্থের প্রাচুর্য মুকেশ কে বখাটে ছেলে হতে দেয়নি । কারণ, মুকেশের মা লেডি ব্রাবোন কলেজের বাংলার  অধ্যাপিকা। মা জাতিতে বাঙালি । আর বাবা মারোয়াড়ি । মাঝারি মাপের শিল্পপতি । মুকেশের মা, বাবার ও প্রেমের বিয়ে । তখন ১৯৭৪ সাল। বাঙালি মেয়ে তিতলি তালুকদার ।আশুতোষ কলেজে বাংলা অনার্সের ছাত্রী । আর মুকেশের বাবা মাখনলাল শর্মা তখন ফিটফাট তাজা যুবক । অডি গাড়িতে চড়ে কলেজে আসত । আর পুলিশ কনস্টেবল, তারকনাথ তালুকদারের মেয়ে তিতলি সাদামাটা কিন্তু মার্জিত পোষাকে কলেজে আসত। মৃদু ভাষী, শালীন, মিষ্টি মুখের তিতলি কে চোখে লেগে গেল মাখনের । হাতে সোনার আংটি ও গলায় সোনার চেন। মাখন হিসাব শাস্ত্রে অনার্স। কলেজ ক্যাম্পাসে তিতলি থেকে চোখ সরত না মাখনের । চাপা গুঞ্জন শুরু হল কলেজে - প্রজাপতি এখন আর ফুলে বসে না , রে। প্রজাপতি এখন মাখনে আটকে গেছে। সতীর্থদের উৎসাহ, টিপ্পনী তে কখন যে ওরা কাছাকাছি চলে এল, তা দুজনকেই ভেবে বলতে হবে।
    অভিজাত পরিবারের ছেলে মাখন এর পর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ করে দেশে ফেরে। আর তীব্র লড়াই করে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকা তিতলি মাস্টার্স কমপ্লিট করে জে আর এফ কোয়ালিফাই করে। তালুকদারবাবুর অশিক্ষিত কিন্তু ধর্মপ্রাণ স্ত্রী তিতলির নৈতিক চরিত্র গঠনে খুব বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন । একদম নিজের প্রচেষ্টাতে রিসার্চ করাকালীন তিতলি লেডি ব্রাবোন কলেজে অধ্যাপিকা পদে যোগদান করে । জীবনের প্রথম প্রেমের কথা তো ভোলা যায় না । আর মাখন , তিতলির সম্পর্কটা 'ফ্লার্ট' এর ছিল না ।

(চলবে...)