নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সুমিত মোদক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সুমিত মোদক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সুমিত মোদক

 জ্বেলে যায় দীপ



অন্ধকার সরিয়ে সরিয়ে বার করে নিতে হয়
সামনের এগিয়ে চলার পথ ;
পথিক বার বার পথ হারায় ;
তবুও পথে নামে পঞ্চপাণ্ডব ও পাঞ্চালী ;

ঘোর অমাবস্যায় তন্ত্র সাধনায় মগ্ন অঘোরী-জীবন ;
গভীর জঙ্গলে থেকে উঠে আসে প্রেত-তত্ত্ব ,
মহাকাল …
অথচ , মুখোশের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যায় ;
দিকে দিকে চুরি হয়ে যায় শ্মশান ;
কেবলমাত্র পড়ে থাকে আধপোড়া চিতাকাঠ ,
ফুটোকলসি ;

রাতচরাপাখি গুলো রাতের অসুখ দেখে
ভয়ে ভয়ে থাকে ;
এই বুঝি আকাশ থেকে ভেঙে ভেঙে পড়বে 
সহজ সরল মানুষের কান্না ;
সে কান্নার শব্দ গুলোকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা
তাদের নেই ;
সে কারণে অপেক্ষায় থাকে নতুন ভোরের ;

ডোম হরিশচন্দ্র এখনও খুঁজে বেড়ায় 
একটা শ্মশান ;
চারপাশে তার হাজার হাজার মৃত দেহ ;

এমনই অন্ধকারের মধ্যে দিয়েই হেঁটে যায়
গৌতম বুদ্ধ ;
খুঁজে পেতে বোধিবৃক্ষ , সুজাতা পায়স …

এতো কান্না , এতো অন্ধকার , এতো নৈশব্দ
তবুও করা যেন দিকে দিকে , দিগন্তে 
জ্বেলে যায় দীপ ;
আলোয় আলোয় ভরে উঠছে সনাতন ভারত ভূমি ।

হৃদয় থাকলে : সুমিত মোদক




কোনো কথার ভিতর দিয়ে হাঁটা শুরু করলে সকল কথা কে ঠিক ভাবে চেনা যায় । সূর্যের দিকে মুখ করে আছে ভালবাসা । ষোড়শী । হৃদয় তা-ধিন-তা-ধিন করে নেচে ওঠে । আর যাযাবর পাখি উড়তে থাকে । অনেকে সমাধির ভিতর ঢুকে পড়েছে । অনেকে আবার সমসাধী ভিজিয়ে দিচ্ছে চোখের জলে । কথার ভিতর দিয়ে হাঁটা যায় হৃদয় থাকলে  ।।

ধ্যানস্থ হই : সুমিত মোদক




নদীর ওপারে থেকে ভাসতে ভাসতে এপারে ,
ঠিক তোমার কাছাকাছি ;
যেখানে তুমি ধ্যানস্থ হয়ে আছো
তোমার মধ্যে ;

সকালের আলো তখনও ফোটেনি ;
দিগন্ত রেখার ওপার থেকে
আলোর আভা এগিয়ে আসছে
তোমার দুচোখের কাছাকাছি ;
মেখে নিচ্ছো আলোর রেণু
প্রেম ;

আমি প্রেমিক হয়ে উঠছি একটু একটু করে ,
এই আলোর উৎসবে ;
ভুলে যাওয়া অতীতের দিন গুলো ফিরে আসে ,
ধরা দেয় ;
তাদেরকেও বসতেদি বুকের মধ্যে ;
মস্তিষ্কে এখন মহাজাগতিক সংসার খেলা করে ;
দেখি আরেক গ্রহের সৃষ্টি ;

তুমি দিয়েছো আমাকে প্রথম সকালের আলো ,
ধ্যানস্থ হওয়ার কৌশল  ;
আমি ধ্যানস্থ হই আমার মধ্যে ,
আমারদের উত্তর পুরুষে  ।।


-----

মেয়েরা : সুমিত মোদক




মেয়েদের তৃতীয় নয়ন প্রখর ,
তাই তারা ঝড়ের পূর্বাভাস বোঝে  ;
মেয়েরা নমনীয় ,
তাই তারা প্রকৃতি ;
হাতে অস্ত্র তুলে নিলে ,
তং হি দুর্গে ..
অসুর নিধন ;
শক্তি রূপেণ .....

আমাদেরই দেখি : সুমিত মোদক



টিলার ওপারে হাট বসে ;
শনিবারের হাট ...
ওখানে মোরগের লড়াই হয় ;
মৃত্যুর লড়াই ...

ধারালো দুটো ছোট ছুরি বাঁধা থাকে
মোরগ গুলোর পায়ে ;
তাদের মালিক লড়াই বাঁধিয়ে দেয় ;

লড়াইটা ততক্ষণ চলে ,
যতক্ষণ না একটা মারা পড়ছে ;
আর সেই লড়াইয়ের উপর চলে জুয়া ;
জুয়া--জুয়া--জুয়া---

টিলার এপারে আগুন জ্বলে ;
যেখানে ঝলসে খাওয়া হবে ;
পরাজিত মালিকরাও আমন্ত্রিত
প্রীতিভোজে ;

টিলার উপর দাঁড়ালে দেখি আমাদের ,
আমাদেরই ঝলসানো শরীর ।।


অমৃত : সুমিত মোদক



যে মানুষ গুলো প্রথম থেকে মরে আছে
ভিতরে ভিতরে ,
তাদের জন্য সমুদ্র মন্থন ;
তাদের জন্য অমৃত কুম্ভ ;
#
 জানি ওরা কেউই অমৃত পাবে না ;
কারণ , ওরা কুম্ভটাকে পেয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে দেবে ;
ওরা কেউ বাঁচতে শেখেনি ;
শিখবেও না ;
অন্যকে বাঁচানো তো
অনেক দূরের ভাবনা ;
#
তুমি ওদেরই নতুন প্রজন্ম ;
তুমি নাও অমৃত ;
মহাকালের অমৃতবাণী সকল ।।

নতুন জীবন : সুমিত মোদক



স্বপ্ন নাচে আঙুলে আঙুলে ;
আঙ্গুল নাচে সুরে ..
সে সুর এতো দিন হারিয়ে গিয়েছিল
নদীর বাঁকে ;
তাকে খুঁজে পেয়েছে হৃদয়
লাজুক প্রেয়সী ;

কয়েক যুগ পর সকলেই হাঁটছি
নদী বরাবর ;
প্রথম সকালের সূর্যোদয় দেখার জন্য ;

আঙুল গুলোয় ছুঁয়ে নিচ্ছি
নতুন আলো
নতুন জীবন ।।

মন- দূষণ : সুমিত মোদক



যাযাবর জীবন নিয়ে নামছে মানুষ পথে ;
লক্ষ্য তাদের একটাই
সবুজ রাখবে কাছে ;
আবার তারা গাছ কাটবে
ধ্বংস করবে সবুজ ;
মানুষ নামক জীব গুলো সব এতটাই অবুঝ ;
বায়ুদূষণ , জলদূষণ , শব্দদূষণ , শত ....
আসল কথা মন-দূষণ , করে রেখেছি ক্ষত ....

।।শুদ্ধিকরণ ।।সুমিত মোদক






জেগে উঠে প্রথম সকাল
তানসেনের সুরে .....
সম্রাট অশোকের রাজপ্রাসাদ
দূরে , বহু দূরে ....


তোমার মধ্যে সেই শিশুটি
জাগতে দেখি আবার ....
বিক্রমাদিত্যের সিংহাসনে বসত যে
বারবার , এবার ....


জল চেয়েছি , প্রাণ চেয়েছি ,
বাতাস চেয়েছি শুদ্ধ .....
তোমার সঙ্গে শুদ্ধি করণে
আমরা ঐক্যবদ্ধ ....


মেলে দেবো সবুজ পাতা 
বৃক্ষরাজি , নম্রতায়  ..
চাণক্যর অর্থশাস্ত্রে ইলশে গুঁড়ি
বৃষ্টি আজি , সভ্যতায় .. . 

||মানুষ গড়ার স্বপ্নে||সুমিত মোদক






জোয়ার এলেই নদী শব্দ তোলে ছলাৎ ছলাৎ ,
ছলাৎ ছলাৎ ....
সে শব্দ নদী-চর ছুঁয়ে ছুঁয়ে উঠে আসে 
মাটির বাঁধ বরাবর ;
তার পর সে শব্দ ছড়িয়ে পড়ে ,
ঢুকে পড়ে লোকালয়ে ,
বুকের ভিতর ;



আমার বুকের ভিতরের নদীতে জোয়ার-ভাঁটা ,
ছলাৎ ছলাৎ শব্দ .....
সে নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারি জীবন-নৌকা ,
ভাটিয়ালি  , আগমনিগান ;



আমি এখন অষ্টাদশী ;
আমি এখন স্কুল পেরিয়ে কলেজে ;
আমার মননে সোঁদামাটির ঘ্রাণ ;
সুন্দরী-গড়ান-হেতালের ছায়া ;



আমার মা এখনও শাঁখা-সিঁদুর বন্ধক রাখে 
বনবিবি-দক্ষিণরায়ের কাছে ;
বাবা খাঁড়িপথে কাঁকড়া ধরতে গেলে ;
কত মানুষ যে বাঘের পেটে চলে গেল তার হিসাব নেই ;
হিসাব রাখেনা এ সুন্দরবন ;
কেবল হিসাব রাখে মা , 
বাবার বাড়ি ফেরার দিনের ;



বাবা বলেছে ----
তোকে মানুষ হতে হবে ,
একটা গোটা মানুষ , সম্পূর্ণ মানুষ  ;
আর গড়তে হবে হাজার হাজার মানুষ ;
যারা বাঁচাবে এই জল-জংলার দেশ ,
বাদাবনের কাদাজল ;




জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে বাবা কাঁকড়া ধরেই বাড়ি ফেরে ;
জীবন নিয়েই বাড়ি ফেরে ;
একটা জীবন একটা পরিবার ;
একটা জীবন একটা স্বপ্ন , মানুষ গড়ার স্বপ্ন ;
আমাকে মানুষ হতে হবে , 
গোটা একটা মানুষ ;
গোটা একটা দেশ , ভারতবর্ষ ;



বাবা গল্প শোনায় , গল্প ....
দিনের গল্প , রাতের গল্প ;
সে গল্প জুড়ে মাঝি , বহরদার , রাতের শব্দ ,
পায়ের ছাপ , মানুষখেকো ...
বাবার গল্পে জাগে গঙ্গারিডি সভ্যতা ;
গল্পে জাগে শেষ হয়ে আসা এ সভ্যতা ;
জলের নীচে ব-দ্বীপ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ;



গুরু মশায়ের পাঠশালায় কোনো দিন যায়নি বাবা ;
অথচ , প্রকৃতির পাঠশালায় পাঠ নিতে নিতে 
নিতে নিতে জেনে গেছে 
জলের স্তর বাড়ছে উষ্ণায়নের ফলে ;
শেষ হয়ে আসছে এ জঙ্গল ,
এ ব-দ্বীপ , এ জনপথ , এ সভ্যতা ;
বাঁচাতে হবে , 
বাঁচাতে হবে আমাকে , আমাদের ...



জোয়ার এলেই নদী শব্দ তোলে ছলাৎ ছলাৎ ,
ছলাৎ ছলাৎ .....
মাঠে মাঠে এখন কাশফুল ,
জলাভূমিতে রঙবেরঙের শালুক ,
উঠানের বেড়াতে জড়িয়ে ফুটে থাকা অপরাজিতা ,
আর দূর থেকে ভেসে আসা ঢাকের আওয়াজ 
জানিয়ে দেয় পূজা আসছে ;
আর ভিতর থেকে কে যেন বলে উঠছে ----
তং হি দুর্গে দশপ্রহরণ ধারিণী নমামি তাং....

পুনঃজন্ম : সুমিত মোদক


নেচে নেচে ওঠে নূপুর-পা ;
কালবেলার দিন ...
হারিয়ে যায় ফড়িং-প্রজাপতিরা ;
বাজে সাপুড়ে-বীন ....
#
একে একে গিলেখায় দাবানল ;
পড়ে থাকে চিতার ছাই ..
তবুও , কণ্ঠে মীরার ভজন ;
নিজেকেই খুঁজে পাই ...
#
নেমে পড়েছি মাটির গভীরে ;
শিকড়ের অভিমুখে এখন ...
ঘুমেও তোমার পদধ্বনি শুনি ;
সময়ের পুনঃজন্ম যখন ....

নতুন প্রজন্ম: সুমিত মোদক



হাজার বছরের মিথ খাজুরাহর মন্দির গাত্রে ;
প্রেয়সীর হৃদয়ে ভাদ্রের  বৃষ্টি আর রোদের খেলা ;
আমি বার বার ফিরে আসি মৃত্যুর মুখে থেকে ;
অকালবোধনে  সময়কে বসিয়ে রাখি অষ্টমীর সকালবেলা  ।
#
একে একে সকলে পার হয় বাঁশের সাঁকো ;
মনুষত্ব মেরে মানুষ হওয়ার অলীক চেষ্টা ...
মৃতপ্রায় নগরী থেকেও উঠে আসে ওমকার ধ্বনি ;
নতুন প্রজন্মের আপ্রাণ লড়াই বাঁচাবে এ দেশটা ।

অলৌকিক নুপুর ধ্বনি: সুমিত মোদক



শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি হয়ে বাজতে পারি তোমার বুকে , শ্রীরাধিকা ;
আবার তোমার পায়ের নূপুর হয়ে  শব্দ তুলি
শ্রীকৃষ্ণের গভীর থেকে গভীরে
প্রেমিক হৃদয়ে ;
আমিই পারি ....
আমি যে তোমাদেরই সুর-তরঙ্গ ;
#
যমুনার জলকে ছুঁয়ে আসার সময় গুলিকে একের পর এক ধরে রাখতে জানি ;
মনে রাখতে জানি মহাকালের স্বরলিপি
বসন্ত-বাহার ...
#
শ্রীরাধিকা , তুমি বার বার জন্ম নিতে জানো ;
শ্রীকৃষ্ণ বিরহে দুচোখ ভেসে যায় জলে  ;
তবু , তোমার কোনো অভিযোগ নেই  ,
অনুযোগ নেই সময়ের কাছে ,
শ্রীকৃষ্ণের কাছে ,
এই জীবনে ....
#
আর আমি যুগ যুগ ধরে বেজে চলেছি মহাকাল হয়ে ;
একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে সময়ের ধারাপাত ,
কদম ফুলের সুঘ্রাণ , বৈষ্ণব পদাবলি ,
আমারই চলচ্চিত্র  ;
#
কেবল , তুমি শ্রীকৃষ্ণে বিভর হতে  জানো ;
আর , আমাকে করে তোলো অলৌকিক নূপুর ধ্বনি  ।

সকালের জন্য : সুমিত মোদক




তোমায় কথা মনে পড়লেই নিজেকেই দেখি ;
দেখি চেনাজানা মানুষ গুলো
প্রতিদিন-ই কেমন যেন বদলে যাচ্ছে ;
বদলে যাচ্ছে সমাজ , সভ্যতা , সম্পর্ক গুলো ;
জন্ম নিতে থাকে না-মানুষের সংলাপ ;
চারিদিকে গুমোট-অন্ধকার ;
#
সেই কবে তুমি বলেছিলে একটা সকাল নিয়ে আসবে ;
সে জন্য বসে আছি আজও ;
বসে থাকতে পারি তোমার জন্য ,
একটা সকালের জন্য ...
#
মাঝে মধ্যেই মনে হয় , আমি কি বদলে যাচ্ছি !
বদলে যাচ্ছে আমার ভিতরের আমি !
এতো দিন ধরে যে গুলো আঁকলে রেখে রেখে ছিলাম
সে গুলো আমার নয়  ;
হয়তো অন্য কারোর !
#
জীবনের শেষ অঙ্ক হয়ে এলে
তোমার কথা খুবই মনে পড়ে ;
মনে পড়ছেও ....



সূর্য প্রনাম : সুমিত মোদক




সারাটা রাত ধরে যে ফুল মেলে দিয়েছে পাপড়ি
সুঘ্রাণ ,
সকালবেলা তাকে কি ঝরে যেতে দিতে পারি !
সদ্য যুবতী প্রেয়সীকে বলে রেখেছি
ওড়না বিছিয়ে রাখতে ;
#
আজকাল নদীয়ার পথে পথে হাঁটলেও
ভিতরে ভিতরে চৈতন্য জাগে না ;
জাগে না বৈষ্ণব পদাবলি ...
#
তোমারও তো আসার কথা ছিল
কিছু রাগিনী সঙ্গে নিয়ে সেই মেঠো পথ ধরে
মায়ের নিকানো উঠানে ;
#
কেন জানি না , এখন আর সূর্য প্রণামের সময় পাই না ;
মেলে দিতে পারি না ইচ্ছা-ডানা
প্রজাপতি-রঙ ;
#
অথচ , চারিদিকে সকালের আলো , ফুলের সুঘ্রাণ ,
বৈষ্ণব পদাবলি , নিকানো উঠান , প্রজাপতি-রঙ  ...
#
হয়তো  , আমি আর আগের মতো , তোমার মতো ,
সহজ সরল নেই ।

তোমার জন্য : সুমিত মোদক


একটা সকাল তোমার জন্য রেখেছি
মহাকাল ;
ভৈরবী রাগে ডুবিয়ে রাখি চরাচর ভূমি
রাতে ফোটা ফুলের সুঘ্রাণ ;
কেবল , তুমি আসবে বলে ....
#
যদিও এখানে পানীয় জলের হাহাকার
মনুষ্যত্বের আকাল ;
যদিও এখানে ভয়ে ভয়ে পথ হাঁটে
সদ্য কিশোরী
সকলেই ....
তবুও , এখানে ঘটা করে কুমারী পূজা হয় ;
হয় চণ্ডী পাঠ ---
ইয়া দেবী সর্বভূতেসু শক্তিরূপেন সংস্থিতা . ..
#
যে রাতচরা পাখি সারারাত তোমার জন্য অপেক্ষা করেছে ,
তাকেও বসিয়ে রেখেছি  ;
বসিয়ে রেখেছি সেই অভিবাসী পাখিদের ,
যারা জাতিঙ্গা গ্রামে আত্মহত্যা করতে চায় ;
এমনকি মৃত্যুকেও ...
#
একটা সকাল তোমারও জন্য রেখেছি ...

আর্য পুরুষ: সুমিত মোদক




সকাল হতে না হতে এক এক করে জমা হতে থাকে
অচেনা মানুষ গুলো দরজার সামনে ;
অথচ , চেনা পরিচিত মানুষজন অনেক দিন হল
এ মুখো হয়নি ;
#
আমার উঠান চিরকালই বড় ...
সে কারণে হাজার হাজার মানুষ
এক সঙ্গে মিলিত হতে পারে প্রথম সকালে ;
#
ঘরের দরজাটা খুলে দেখি সামনে একটা আকাশ ;
সেই আকাশের মাঝখানে আমি দাঁড়িয়ে ;
#
আমার আকাশ আমাকে করে তুলেছে
এক আর্য পুরুষ ।।

শুদ্ধিকরণ: সুমিত মোদক




জেগে উঠে প্রথম সকাল
তানসেনের সুরে ...
সম্রাট অশোকের রাজপ্রাসাদ
দূরে , বহু দূরে ...
#
তোমার মধ্যে সেই শিশুটি
জাগতে দেখি আবার ...
বিক্রমাদিত্যের সিংহাসনে বসতো যে বার বার , এবার ...
#
জল চেয়েছি , প্রাণ চেয়েছি ,
বাতাস চেয়েছি শুদ্ধ ...
তোমার সঙ্গে শুদ্ধিকরণে
আমরা ঐক্যবদ্ধ . .
#
মেলে দেবে সবুজ পাতা
বৃক্ষরাজি , নম্রতায় ...
চাণক্যর অর্থশাস্ত্রে ইলশেগুঁড়ি
বৃষ্টি আজি , সভ্যতায় ....

চাতক পাখি : সুমিত মোদক



হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে এসে
চাতক পাখিও চেয়েছে জল ;
বার বার বলেছে ---
চোখ গেলো , জল ঢালো ....
কে আর জল ঢালবে !
জল ঢালার কেউ যে নেই এখানে  ;
বৃষ্টিও আর হয় না ;
প্রকৃতিও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে
এ পরিত্যক্ত গ্রাম থেকে ;
#
এখানে এক সময় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামতো
আষাঢ়-শ্রাবণ-ভদ্রে....
এখানে এক সময় সোনালী ধান ফলতো  ;
সবুজে সবুজের সমারোহ ;
পুকুরে পুকুরে ডুবসাঁতার , চিৎসাঁতার....
#
ওরাও একদিন পুকুর ভরাট করলো ,
খাল ভরাট করলো ,
কেটে ফেললো গাছ ;
বাদ পড়লো না ভূগর্ভস্থ জলও. . .
#
এখানে আর বৃষ্টি হয় না বর্ষা কালে ;
কোনো ঋতুতেই ;
#
একটু একটু করে শুরু হল জলের হাহাকার ;
শুরু হয় আরেক গ্রামের খোঁজ ...
কিন্তু , কোথায় পাবে আরেক গ্রাম !
সব গ্রাম যে মৃত , মৃত এক সভ্যতা  ;
#
অথচ , হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে চাতক পাখি আসে
বৃষ্টির আবাহনে , বর্ষার আবাহনে ;
#
আর আমরা ,
চাতক পাখি হয়ে তাকিয়ে আছি
চাতক পাখির দিকে  ,
আকাশের দিকে
এক ফোঁটা বৃষ্টির আশায় ;
বাঁচার আশায়  ....

পরিবর্তন করি নিজেদের.. সুমিত মোদক



ঋতুদি পড়াশুনায় ভালো ;
ঋতুদি দেখতেও ভালো
ঠিক মাটির প্রতিমার মতো ;
নিজের পড়ার খরচ জোগাতে শুরু করল পড়ানো ;
আমি তখন নাইনে উঠেছি
ঋতুদির পড়ছি
ঋতুদি পড়ছে বি.এ ;
#
মনেতে তখন ফাগুন
শরীরে তখন আগুন
সেই আগুনে পুড়ল দুটো মেয়ে ;
খুঁজছিলাম আমি যাকে
পেলাম আমি তাকে
রিতুকে রাতের কাছে পেয়ে ;
#
ও পরিবর্তন আনে আমার ভাবনায়
আমার চাওয়া পাওয়ায় ;
ও আমাকে দেখতে শেখাল
কিভাবে দুটো নারী একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠে
হয়ে ওঠে প্রেম
সমপ্রেম ;
#
আমরা খুঁজে নিয়েছি জীবনের ভাষা ;
আমরা খুঁজে পেয়েছি জৈবিক নেশা ;
সেই নেশাতে বুঁদ হয়ে হয়ে ছিলাম কটা বছর ;
এক গ্রামে বাড়ি , পড়াশুনা নিয়ে থাকি
দুজনে ;
সে কারণে অবাধ মেলামেশা অবাধ ইচ্ছা ডানা
শরীরে ও মননে ;
#
হঠাৎ ই কথাটি কিভাবে জানাজানি হয়ে গেল দুটো দুটো বাড়িতে, পাড়ায় ;
মেনে নিতে পারলনা কেউ আমাদের পরিবর্তনের স্বপ্ন ,
পরিবর্তনের ছন্দ , চলচ্চিত্র . .
#
কয়েক দিনের মধ্যে সব ওলটপালট হয়ে গেল .....
ঋতুকে জোর করে বিয়ে দিল ;
আমাকে পাঠানো হল মামার বাড়ি
সবার সঙ্গে আড়ি ;
কেবল ভাব ঋতুর সঙ্গে , ভিতরে ভিতরে ;
#
পুরুষ ঘ্রাণে মন ভরে না
গভীর রাতে ঘুম আসে না
স্বামীর কাছে সুখ পায় না
নিজেকে কখনও নারী ভাবে না   . .
#
তাইতো সে ফিরে এলো
খুঁজে নিলো
আমাকে
নিজেকে ;
দুজনে পালিয়ে এলাম আঙিনা থেকে  , অনেক দূরে ,
এখানে ,
কেউ চেনে না
আমাদের , আমাদের অতীত ,
পরিচয়  ;
#
এখানে আমরা বেশ আছি
পরিবর্তনে আছি
পরিবর্তনে থাকি  ;
পরিবর্তন করি নিজেদের প্রতিদিন , প্রতিরাতে  ।।