একমুঠো আলোর অন্বেষণে
*****************
সব দেখাই পুজোর অর্ঘ্য হয়ে ওঠেনা । সব দেখাই জীবনের ফ্রেমে বাঁধানো যায় না । কিছু কিছু দেখা
ফুলটুসী না হয়ে ,কুটুস হয়ে যায় । অনিবার্যকারণ
বশত ,কুটুসপাখি এখনও হামলায় । এভাবেই হয়ত
সমাবর্তনের পসরা ছাপোষা করে যায় নবাগত
উৎসবের রঙগুলিকে ।মহালয়ার ত্রিকালস্পর্শী সুর
আজও বেজে ওঠেনা ফ্যানপিপাসু কুটুসপাখির
হৃদয়ে । স্বভাবতই সে আগমনীর সুর স্বাভাবিক ভাবেই মাড়িয়ে যায় --একমুঠো আলোর অন্বেষণে ।
খোড়ো চালের ফাঁক দিয়ে হেসে ওঠে অষ্টমীর চাঁদ ।
যে চাঁদ বৈষম্যের তালুতে উৎফুল্লতার প্রেরণা এনে
দিতে পারে না । উপেক্ষার প্যান্ডেল থেকে সে যোজন দূরে সরে যায় অবিরত ।
দীনতার খোলস ছাড়তে ছাড়তে সে প্রত্যক্ষ করে --সেরা প্রতিমা ,সেরা প্যান্ডেল ,সেরা আলোক সজ্জার নির্বাচনে কিভাবে মেতে ওঠে টিভি চ্যানেলগুলি । পুজো পরিক্রমায় ভেসে ওঠে বনেদিবাড়ির ঐতিহ্য
কুমারী পুজো ,পাঁঠাবলি ,সিঁদুরখেলা ,ঢাকের বোল ।
তখন পুজোর কাউন্টডাউন থেকে দূরে সরে যায়
কুটুসপাখি । পুজোর কেনাকাটা থেকে ব্রাত্য থেকে
থেকে যায় অনালোকিত মুখগুলি । শপিংমলে জমে
ওঠে ভিড় । আমি কুটুসপাখি হয়ে সাংবাদিকের
ক্যামেরাবন্দী পঞ্চমী ,ষষ্ঠী ,সপ্তমী ,অষ্টমী ,নবমী ও
বিজয়াদশমীর দর্শনার্থীর ঢল প্রত্যক্ষ করছি । আর
উমার সংসারে খুঁজে চলেছি লক্ষ্মীর আল্পনা । আজ কার্তিক ও গণেশ খুশির তুবড়ি ফাটায় । ফি বছর
চাঁদার অংকগুলিকে অনায়াসেই হেরফের করে
দেয় l বিউটিপার্লারে লক্ষ্মী ও সরস্বতী ফেসওয়াশ
ও ভ্রুপ্লাক করে ,ফ্যাশন শোয়ে যোগ দেয়। উৎসবের রং মেখে ওঠার ,যাদের সাধ থাকলেও সাধ্যি হয়ে
ওঠেনা । তাদের জন্য ওঠে বিজয়া দশমীর চাঁদ ।
তবুও ঘাসের ডগায় শিশির ,হিমেল হাওয়া ,শিউলি
সুবাস এবং শরতের আকাশ কুটুসপাখির মননে নিয়ে আসে আগমনী সুর । উমা আসছে । তবুও
উমার সংসারে অপ্রত্যাশিত কাউন্টডাউন থেকে
ব্রাত্য থেকে যায় ম্লান কিছু মুখ ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন