নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রাণা চ্যাটার্জী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রাণা চ্যাটার্জী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রাণা চ্যাটার্জী'র গুচ্ছ কবিতা





স্বপ্ন সন্ধানী
                 

একটু অন্ধকারের বড় দরকার,
    চারদিকে শুধু আলোর ঝলকানি,
      মুহুর্মুহু ক্যামেরার ফ্ল্যাশ।
মাঝে আমি, আমি পিঠ চাপড়ানো শব্দ...

মুক্তির অলিন্দে খুঁজে নিতে চাই,
             অন্ধকারের মায়া বেষ্টনী ।
কাউকে চাই না, বিদায় হোক সব
নিয়ন আলো,গেজেট -ল্যাপি আবর্ত..

পারলে দু-চারটা জোনাকি ছেড়ো
        নিকষ কালো আঁধারে....
আলোর তীব্রতা মুক্ত,অদ্ভুত প্রশান্তির
কোমল স্পর্শে,পাহাড় ঘেরা উপত্যকার
                   নিস্তব্ধতায় এক গামলা ঘুম ।





               পুনর্বাসন
           

অনেক তো হলো এবার না হয়
     একটু একা থাকা শুরু করি
             নিশ্চিদ্র অন্ধকারে ডুবে ...

অনুভবে তোমার মনের গহনে
পাট্টা পাওয়া জমিতে অজান্তেই
         গড়েছি সাত মহলা প্রাসাদ।

মন্ত্রী-সেপাই,বরকন্দাজ ভিড়ে
     দখিনের খোলা বারান্দায়
         নিজেকে দিয়েছি পুনর্বাসন।
লাগোয়া অলিন্দে,দুধসাদা পর্দা,
মখমলি সোফায়, তুমি তুমি আতর গন্ধে
                বেঁচে থাকার নির্যাস।

চলেছি কোন পথে :- রাণা চ্যাটার্জী



যত বেশি স্বাধীনতা তত দেখছি এর অপব্যবহার।চায়ের দোকানে এঁটো বাসন মাজা ছেলেটার বাড়িতে ভাত ফুটানোর জোগাড় আছে কিনা ঠিক নেই,হকার দাদাটার কাল কি করে চলবে চিন্তায় নেই কপালে ভাঁজ কিন্তু পকেটে এন্ড্রয়েড মোবাইল আর ডেলি ফ্রি ডাটা মজুত। হোক আটা দামি বয়েই গেল,নেট দুনিয়ায় রগরগে ভিডিওর প্রতুলতা বুঁদ করে রেখেছে শিক্ষিত অশিক্ষিত ছোট বড় সকলকে। প্রকাশ্যে ঘুরছে যৌন উস্কানি ভিডিও রমরমা।অশ্লীলতার মোড়কে পণ্য জাত হচ্ছে নারী শরীর।এ যেন মগের মুলুক স্বাধীনতা,যখন যাকে খুশি যা খুশি ভাবে করায়ত্ত করার প্রচেষ্টা আর বাধা পেলেই নোংরা তকমায় বিদ্ধ।

কি দেখতে হয় আর কি দেখার বয়স হয় নি এই লক্ষণ গন্ডি ধুয়ে মুছে সাফ। পরশু খবরে পড়লাম মফস্বল ছোট শহরে এক মধ্য বয়স্ক ঠান্ডা মাথায় প্রতিদিন বিভিন্ন বাড়ি ঢুকে মহিলাদের খুন করতেন আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন। শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে ভয়ঙ্কর অপরাধ প্রবণতা।স্কুল বাচ্চা প্রায়শই ধর্ষণের শিকার,সদ্যজাত ঝলসে উঠছে লালসার আগুনে,বৃদ্ধা হোক মধ্যবয়সী সে হোক নান কিংবা ভিখারি সবাই টার্গেট এই নর পিশাচ আবহাওয়ায়।তবে কি  কোথাও  নিরাপদ নয় আমরা,আমাদের মহিলা,শিশু কন্যা মহল?

কিসের আমাদের বড়াই তবে?রুচি সংস্কৃতির দোহাই। দেওয়াল জুড়ে মনীষী দের বাণী নিভৃতে কাঁদে।সদা জাগ্রত প্রশাসন কি করবে মনের মধ্যে যদি অপরাধ প্রবণতার বিষাক্ত লেলিহান আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে আমাদের। সম্প্রতি ফুলের মতো একরত্তি শিশু তিন বছরের টুইঙ্কেলকে যেভাবে নৃশংসতার সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় খুন করে  ফেলে দিয়ে যাওয়া হলো শিহরণ বয়ে গেল ঠান্ডা রক্ত স্রোতের।দেখ কেমন লাগে আর কত ভয়ঙ্কর হতে পারি আমরা এই বার্তা  প্রকাশ্যে খুল্লম খুল্লা ছোবল মারছে। "দেশ বাঁচাও বেটি বাঁচাও স্লোগানের ছত্রছায়ায় মা বাবার স্নেহ ভালোবাসায় হাসি খুশিতে বড়ো  হওয়া শিশু কন্যা যার বাড়ির  উঠোন জুড়ে  এখনো পাবে হরেক খেলনা বাটি,পুতুল ঘর কন্না। কানে বাজছে বাঁশি লাগানো জুতোর পিক পিক শব্দ।কিন্তু কোথাও নেই,হঠাৎ খুঁজে পাওয়া গেল তাকে এক ডাস্টবিনে না চিনতে পারা ছিন্ন ভিন্ন  টুকরো হয়ে নৃশংশতার  স্মৃতি চিন্হ মেখে এক তাল রক্তাক্ত মাংস পিন্ড হয়ে।

মানুষ কখনো এভাবে ঐ টুকু বাচ্চা কে শ্রীখন্ডি করে মা বাবাকে শিক্ষা দিতে এতটা বীভৎসতার নজীর সৃষ্টি করতে কি  পারে ভাবতে অবাক লাগছে।কিন্তু কি অপরাধ মা বাবার? 
প্রায় দশহাজার টাকা ধার নিয়ে অভাবের সংসারে শোধ করে উঠতে পারছিল না  তারা। চেষ্টা চলছিলো যত জলদি  টাকা দিয়ে দিতে পারে হুমকি ভয় ,নোংরামি থেকে মুক্তি।কিন্তু কি পেলাম আমরা? অসহায় মা বাবাকে শিক্ষা দিতে তাদের তিন বছরের ফুলের শিশু টুইঙ্কেল কে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখ,চুল উপড়ে, গায়ের চামড়া চেঁছে,শরীরের সব অঙ্গ বিকৃতি বা গায়েব করে ফেলে দিয়ে গেছে বাড়ির কাছে।শ্বাস নালি,কিডনি,যৌন অঙ্গ সব কিছু তছনছ যে আসলে সমাজের গালে পাঁচ আঙুলের দাগ বসানো পেল্লাই চড়।

ভাবতে অবাক লাগে কোন মায়ের কোলে জন্মেছিল এই কুলাঙ্গার গণ, তাদের কি বাড়ি,পরিবার সন্তান বলে কিছুই নেই। কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দেশ কে ফোঁপড়া করে বহাল তবিয়তে দিন গুজরান কিছু মহান চোরের, আর সামান্য কিছু টাকা ধার নিয়ে এ এমন পাশবিক ঘটনার সাক্ষী হওয়া তাও নিজের সন্তানকে এভাবে দেখা কি যায় ,না সম্ভব কখনো?আবার আমরা মোমবাতি জ্বালাবো,শোক প্রস্তাব পাঠ করে মৌন মিছিলে হাঁটবো কিন্তু পারবো না সমাজটাকে নিরাপদ আশ্রয়ে মুড়ে রাখতে,এই সুন্দর সমাজকে ফুলের মতো শিশুদের বাসযোগ্য করে তুলতে । তাই আর কিছু চাইনা,স্তব্ধ হোক লোকদেখানি এই  প্রতিবাদ ,সহানুভূতি।

চলেছি কোন পথে ... রাণা চ্যাটার্জী



যত বেশি স্বাধীনতা তত দেখছি এর অপব্যবহার।চায়ের দোকানে এঁটো বাসন মাজা ছেলেটার বাড়িতে ভাত ফুটানোর জোগাড় আছে কিনা ঠিক নেই,হকার দাদাটার কাল কি করে চলবে চিন্তায় নেই কপালে ভাঁজ কিন্তু পকেটে এন্ড্রয়েড মোবাইল আর ডেলি ফ্রি ডাটা মজুত। হোক আটা দামি বয়েই গেল,নেট দুনিয়ায় রগরগে ভিডিওর প্রতুলতা বুঁদ করে রেখেছে শিক্ষিত অশিক্ষিত ছোট বড় সকলকে। প্রকাশ্যে ঘুরছে যৌন উস্কানি ভিডিও রমরমা।অশ্লীলতার মোড়কে পণ্য জাত হচ্ছে নারী শরীর।এ যেন মগের মুলুক স্বাধীনতা,যখন যাকে খুশি যা খুশি ভাবে করায়ত্ত করার প্রচেষ্টা আর বাধা পেলেই নোংরা তকমায় বিদ্ধ।

কি দেখতে হয় আর কি দেখার বয়স হয় নি এই লক্ষণ গন্ডি ধুয়ে মুছে সাফ। পরশু খবরে পড়লাম মফস্বল ছোট শহরে এক মধ্য বয়স্ক ঠান্ডা মাথায় প্রতিদিন বিভিন্ন বাড়ি ঢুকে মহিলাদের খুন করতেন আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন। শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে ভয়ঙ্কর অপরাধ প্রবণতা।স্কুল বাচ্চা প্রায়শই ধর্ষণের শিকার,সদ্যজাত ঝলসে উঠছে লালসার আগুনে,বৃদ্ধা হোক মধ্যবয়সী সে হোক নান কিংবা ভিখারি সবাই টার্গেট এই নর পিশাচ আবহাওয়ায়।তবে কি  কোথাও  নিরাপদ নয় আমরা,আমাদের মহিলা,শিশু কন্যা মহল?

কিসের আমাদের বড়াই তবে?রুচি সংস্কৃতির দোহাই। দেওয়াল জুড়ে মনীষী দের বাণী নিভৃতে কাঁদে।সদা জাগ্রত প্রশাসন কি করবে মনের মধ্যে যদি অপরাধ প্রবণতার বিষাক্ত লেলিহান আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে আমাদের। সম্প্রতি ফুলের মতো একরত্তি শিশু তিন বছরের টুইঙ্কেলকে যেভাবে নৃশংসতার সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় খুন করে  ফেলে দিয়ে যাওয়া হলো শিহরণ বয়ে গেল ঠান্ডা রক্ত স্রোতের।দেখ কেমন লাগে আর কত ভয়ঙ্কর হতে পারি আমরা এই বার্তা  প্রকাশ্যে খুল্লম খুল্লা ছোবল মারছে। "দেশ বাঁচাও বেটি বাঁচাও স্লোগানের ছত্রছায়ায় মা বাবার স্নেহ ভালোবাসায় হাসি খুশিতে বড়ো  হওয়া শিশু কন্যা যার বাড়ির  উঠোন জুড়ে  এখনো পাবে হরেক খেলনা বাটি,পুতুল ঘর কন্না। কানে বাজছে বাঁশি লাগানো জুতোর পিক পিক শব্দ।কিন্তু কোথাও নেই,হঠাৎ খুঁজে পাওয়া গেল তাকে এক ডাস্টবিনে না চিনতে পারা ছিন্ন ভিন্ন  টুকরো হয়ে নৃশংশতার  স্মৃতি চিন্হ মেখে এক তাল রক্তাক্ত মাংস পিন্ড হয়ে।

মানুষ কখনো এভাবে ঐ টুকু বাচ্চা কে শ্রীখন্ডি করে মা বাবাকে শিক্ষা দিতে এতটা বীভৎসতার নজীর সৃষ্টি করতে কি  পারে ভাবতে অবাক লাগছে।কিন্তু কি অপরাধ মা বাবার?
প্রায় দশহাজার টাকা ধার নিয়ে অভাবের সংসারে শোধ করে উঠতে পারছিল না  তারা। চেষ্টা চলছিলো যত জলদি  টাকা দিয়ে দিতে পারে হুমকি ভয় ,নোংরামি থেকে মুক্তি।কিন্তু কি পেলাম আমরা? অসহায় মা বাবাকে শিক্ষা দিতে তাদের তিন বছরের ফুলের শিশু টুইঙ্কেল কে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখ,চুল উপড়ে, গায়ের চামড়া চেঁছে,শরীরের সব অঙ্গ বিকৃতি বা গায়েব করে ফেলে দিয়ে গেছে বাড়ির কাছে।শ্বাস নালি,কিডনি,যৌন অঙ্গ সব কিছু তছনছ যে আসলে সমাজের গালে পাঁচ আঙুলের দাগ বসানো পেল্লাই চড়।

ভাবতে অবাক লাগে কোন মায়ের কোলে জন্মেছিল এই কুলাঙ্গার গণ, তাদের কি বাড়ি,পরিবার সন্তান বলে কিছুই নেই। কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দেশ কে ফোঁপড়া করে বহাল তবিয়তে দিন গুজরান কিছু মহান চোরের, আর সামান্য কিছু টাকা ধার নিয়ে এ এমন পাশবিক ঘটনার সাক্ষী হওয়া তাও নিজের সন্তানকে এভাবে দেখা কি যায় ,না সম্ভব কখনো?আবার আমরা মোমবাতি জ্বালাবো,শোক প্রস্তাব পাঠ করে মৌন মিছিলে হাঁটবো কিন্তু পারবো না সমাজটাকে নিরাপদ আশ্রয়ে মুড়ে রাখতে,এই সুন্দর সমাজকে ফুলের মতো শিশুদের বাসযোগ্য করে তুলতে । তাই আর কিছু চাইনা,স্তব্ধ হোক লোকদেখানি এই  প্রতিবাদ ,সহানুভূতি।

অটোওয়ালা : রাণা চ্যাটার্জী





অটোওয়ালার হাতে সত্তর টাকাটা এমন ভাবে গুঁজে দৌড় দিলেন পালবাবু  যেনো আর বেশি চাইতে পারার অবকাশ না পায় চালক ! অবশ্য অন্য কারণটাই প্রধান,ওই যে স্টেট বাসটা ছেড়ে যাচ্ছে সেটাকে  কোনরকমে ধরতেই হবে আজ । 

প্যাচ প্যাচে কাদায়,ভিড় ভাট্টার মধ্য দিয়ে ততক্ষণে এই একমাত্র অবলম্বন বাসটি গড়াতে গড়াতে গতি নিচ্ছে । 'আরে দাঁড়াও দাঁড়াও করতে করতে অফিস ব্যাগ ,বগলে ছাতা নিয়ে ড্রাইভারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করবেন কি তখনও রাস্তা ক্রশ করে উঠতে পারেন নি বাইক ,অটো ওলাদের লাগাতার  লাইনে। ভিড় যতো বাড়ছে , বাসটা না পাবার গ্লানি ভ্রু কুঞ্চনে ততো  ধীর্ঘ হচ্ছে  ইরিগেসন দপ্তরের পাল দার ! আর থামে প্যাসেঞ্জারে  উপচে পড়া বাস ! ভুঁড়ি মোটা ট্রাফিক পুলিশ , দুবার লাঠির বাড়ি মারতেই চাকা গতি বাড়িয়ে এলাকা ছাড়ার প্রস্তুতি । তবুও ছুটেই চলেছেন যদি সামনের মোড়ের যানজটে, আর একটু দাঁড়ায় বাসটা ! 

"আরে ও দাদা, ও দাদা দাঁড়ান দাঁড়ান ছুটবেন না "আশ্চর্য্য তো ,  সেই ছেড়ে আসা অটোওয়ালাটার গলা না ! " আচ্ছা বজ্জাত তো ,উঠে থেকে আশি টাকা নেবার কথা বলে আসছিল" কিন্তু সত্তরের বেশি এক পয়সা দেবো না জিদ করে ছিলো পাল দা , নেমে দিয়েওছে সেটা,তবুও কিনা পিছু ধাওয়া ! ছুটতে ছুটতে এই কথা গুলো ভাবছিলো আর নাহ্,  পারছি না ,ছেচল্লিশ টা বসন্ত পার করা পালদার বুকের ভেতর টা ধরাস ধরাস করছে ,এই বুঝি হৃৎপিণ্ড ছিটকে বেরিয়ে আসবে ! বাসের আশা ছেড়ে চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে পড়তেই সেই অটো ওয়ালার সক্কাল সক্কাল এক মুখ পান বজবজে গলা ! 

"আরে কি হয়েছে কি তোর ! তোকে তো ভাড়া মিটিয়েই এলাম "একটু ক্ষেকিয়েই কথা গুলো বলে ফেললো  পালদা  ! সকাল থেকেই তার মেজাজটা খিচড়ে দিয়েছে অফিসের বড়ো বাবুর একটা ফোন "হটাত নাকি ইন্সপেকসন আসছে , দশটার আগে অফিস আসতেই হবে !" অন্যদিন খেয়েদেয়ে , সাড়ে নটায় বেরিয়ে, পরের বাস ধরে পৌনে এগারোটায় পৌছানো অভ্যাস , তাই আজ এই ৮-৫০ এর স্টেটটা ধরার এত্তো তাড়া ছিলো , ! 

"আরে দাদা তুমি খামোখাই রাগ করছো আমার ওপর" হাতে খৈনি ডলতে ডলতে উজ্জ্বল মায়াবী চোখে তাকিয়ে কথা গুলো বললো অটোওয়ালা ছেলেটা । কিংকর্তব্যবিমূঢ় পাল ঘাড় উঁচু করে ওর দিকে তাকাতেই সে বললো , 'দাদা বসো , আমি পৌঁছে দিয়ে আসছি তোমায় , আরে চিন্তা করো না দাদা বসো ,কোথায় তোমার অফিস শুধু সেটা বলো "
অলরেডি সকালে চৌদ্দটাকার  পরিবর্তে সত্তর খসেছে , আবার অটোতে মিনিট চল্লিশের পথ মানে মিনিমাম দুশো ! এই চিন্তায় বিভোর হওয়ার আগেই অফিস ব্যাগটা ধরে , "আরে এসো তো , সে আমায় না হয় কিছু দিতে হবে না "বলে অটোতে বসিয়ে স্টার্ট দিলো ! 

চিরটা কাল এই সংখ্যাতত্বের আঁকিবুঁকি হিসাবে সংসার চালানোর মতো কঠিন কাজে  জর্জরিত, পা টিপে চলা  মধ্যবিত্ত এই ছাপোষা মানুষ পালদা।  আর না করেন নি মুখে , করার উপায় ও খুব একটা ছিলো না । এটাই তাকে স্বস্তি দিয়েছে যে বেশি টাকা লাগলেও , দশটার আগে অফিস পৌঁছে গেলে অন্তত তার ইমেজটা ঠিক থাকবে অথরিটির কাছে । এই ভাবতে ভাবতেই ক্যাঁচ করে আমতলা মোড়ে আটকে গেলো অটোটা , সামনে তীব্র জটলা , ভিড়ে থিকথিক করছে ! অটোওয়ালা ছেলেটি ,  নেমে পরিস্থতি বুঝে এসে জানালো, কেলো হয়েছে , একটু আগে স্টেটবাস টা এক পথচারি কে ধাক্কা মেরেছে , স্থানীয়রা পথ অবরোধে সামিল ! 
হে ভগবান , কি যে আছে কপালে একথা ভাবতেই অটোওয়ালার নিশ্চিন্ত অভয়বাণী "দাদা সবে নয়টা বেজে সতের মিনিট ঘড়িতে , আমি ভেতরের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি  আপনাকে , বিন্দাস বসুন চিন্তামুক্ত হয়ে ! "

"আচ্ছা কপালের গেরো লেগেছে তো আজ !তবে তো ওই স্টেট বাসটা না পেয়ে ভালোই হয়েছে ! অফিস পৌঁছানোর বারোটা 
বেজে যেত ,"এসব সাত পাঁচ ভাবনা ভাবতে ভাবতে গলি ,গলি তস্য গলি দিয়ে এগুতে লাগলো অটো।
কাউকে পেমেন্ট দিতে হলে ,সে বাস,ট্রেন অটো যাকেই হোক না কেনো ,অনেক আগে থেকে কিছুটা টাকা বের করে জামার পকেটে রেখে দেবার বহু পুরনো অভ্যাস পাল দার ।কিন্তু একি কাণ্ড ! প্যান্টের পকেটে  মানি ব্যাগ হাতড়ে তো চক্ষু চড়ক গাছ !কেবল রুমাল টা !তবে কি আনেন নি !উঁহু তা হয় কি করে ,সকালে নিজে ওখান থেকে সত্তর টাকাটা নিয়ে  মিটিয়েছেন ! তবে কি রাস্তায় পরে গেলো ! চুরি নয় তো ,আরে কি সর্বনাশ আজ ছাব্বিশ তারিখ,এল আই সি প্রিমিয়াম ৫৪৩৫ টাকা গুনে কালরাতে গুনে  মানিব্যাগে রেখেছেন ! এই সব স্বগতোক্তির মতো বিড় বিড় করছেন আর কল কল করে ঘামছেন পাল দা !

ইশ এই অটোওলাকেই কি বলবে !এত্তো হয়রানি করে বেচারা নিয়ে আসছে ।লজ্জায় ,সংকোচে কাঁচুমাচু মুখ করে থম মেরে বসে রইলো কিছুক্ষণ ভেতরে !

"আরে ও দাদা ,ঘুমিয়ে পড়লেন নাকি ! আরে দেখুন এসে গেছি আপনার অফিস "বলে হাত ঘড়িটা পেছন করে দেখালো নয়টা বেজে আটচল্লিশ ! ছেলেটির স্বগর্ব ঘোষণায় আরো যেন থমকে গেলো পালদা ,ওকে কি যে উত্তর দেবে ! নিচে আড়ষ্ট ভাবে নেমে আমতা আমতা করে দু হাত জড়ো আর  মাথা নিচু করে পালদা বলছেন ,'ভাই আমার খুব বিপদ হয়ে গেছে ,মানি ব্যাগটা খোয়া গেছে " যেই এটা বলা শেষ হয়েছে "আরে মশাই একি করছেন দাঁড়ান দাঁড়ান ,এই নিন আপনার মানি ব্যাগ !আপনি সকালে নেমে যেতেই দেখি পেছনের সিটে ফেলে গেছেন ,আর সেই জন্যই আপনাকে পিছু পিছু "ও দাদা ,ও দাদা করে হেঁকে অস্থির হয়েছিলাম ।"এক নাগাড়ে কথা গুলো বলে থামলো অটোওলা ! 

ব্যাগ টা হাতে নিয়ে পাল দা তখনও কল কল করে ঘামছেন ,যেন তিনি স্বপ্ন দেখছেন !কেয়ারটেকার চাবির গোছা নিয়ে অফিসের মেন গেট খুলছে ,আর সামনে যেন সাক্ষাত ভগবান রূপে অটোওলা । একটা ৫০০ টাকা জোর করে হাতে গুঁজে দেবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন নাছোড়বান্দা অটোওয়ালার কাছে ,কিছুতেই সে বেশি নেবেনা ।ছেলেটি দেড়শো নিয়ে বাকিটা ফেরত দিতে বাধা পেয়ে ,অবশেষে পাল দার পকেটে জোর করে ভরে দিলো বাকি টাকাটা ।অটো টা স্টার্ট দিতে দিতে বললো ,দাদা একটু সাবধানে হাঁটা চলা করবেন ,আর পারলে টিভি বাবু দের কাছে আমাদের ভালো দিকটাও অল্পবিস্তর বলবেন গো "

অফিসে নিজের টেবিলে পৌঁছে এক বুক শ্বাস নিলেন পাল দা ,হাত ঘড়িতে তখন নটা বেজে সাতান্ন মিনিট । রাত্রে গদ গদ হয়ে বড়ো বাবু মিত্র ফোনে খুশির খবর দিলো ,"ভায়া পার্টি দিচ্ছ কবে ,কতৃপক্ষ তো তোমার প্রমোশন দিচ্ছে শিগগিরি !"

শেষ অধ্যায় : রাণা চ্যাটার্জী


  সুদূরে ,কাশ্মীরে সংশয়
 কথা রোজ,দূরত্ব বাধা নয়,
 কল্পনায় ছুঁয়ে হই মায়াময়,
 অনুভবে বাঁচত এ হৃদয়।

  তুমি নেই হঠাৎই এ দেহ 
    রক্তাক্ত হামলা সন্দেহ!
 মালা ঢাকা কফিনে শ্রদ্ধায়, 
 অসহায় মৃত্যু,শেষ অধ্যায়!

তবু থাকি কষ্টেই নীরবে,
 তব অস্তিত্বেই বুক গর্বে,
 নেই মৃত্যু,যেন শহীদের,
গর্জে মুঠো হাত আমাদের।

দিকে দিকে সন্ত্রাস,হামলাও,
আর নয়,পিছুহটা সামলাও।

পরিপূরক নারী পুরুষ : রাণা চ্যাটার্জী



সুস্থ রুচি সংস্কৃতির,বাড়ির সব দায় সামলায় নারী
আমরা পুরুষ কেবল বড়াই করি দেখাই বাহাদুরি।

গৃহ শান্তি, সন্তান পালন, রান্নাবান্না কত্ত সব কাজ
আদেশ,অভিযোগে ব্যস্ত থাকি,ঠিক যেন মহারাজ।

সমাজ সংসার সুস্থ থাকে পুরুষ যদি থাকে পাশে
 ঝড়ঝঞ্ঝা সামলে নারী, উদ্যমে ঝলমলিয়ে হাসে।

নারী-পুরুষ আসল পরিপূরক,ঠিক যেন মেঘ-বৃষ্টি
দুজনের কেউ বিগড়ালে ঘর,মনের ক্ষতি,অনাসৃষ্টি।

যতই আসুক অভাব মনে ,দুঃখের পাহাড় অনটন,
সু -সম্পর্কে বোঝাপড়া পুরুষ -নারী অমূল্য রতন।

কাগজে কলমে নারী পুরুষ নেই কোন ভেদাভেদ,
যতো নিয়ম,শেকল বাঁধন নারীদের করে বিভেদ।

সূর্য যেমন দৃপ্ত পুরুষ,মিষ্টি রোদ্দুর তার সঙ্গী,
নারীরা পাক যোগ্য সম্মান,বদলাক দৃষ্টিভঙ্গি।

নারী-পুরুষ সমান সমান,অদ্ভুত এক মেলবন্ধন
পুরুষ বাহবা বিনা,সেরা কিভাবে  নারীর রন্ধন!?

ঝরা পাতা : রাণা চ্যাটার্জী



কালকেও যে সজীব ছিল, আজকে ঝরাপাতা
সাংবাদিক লিখছে কতো,আমার কলম ভোঁতা

এইতো সেদিন চির সবুজ,জাগলো কিশলয়
হঠাৎ দেখি এক যুদ্ধ ছায়া,কখন কি যে হয় !

দস্যি দামাল,ছন্দে কামাল,ভারত সেনানী বীর,
 মনোবলের লেলিহানে গুঁড়াও,যত জঙ্গি শিবির

বড়শি নিয়ে পড়শী দেশ,রোজ করছে নাজেহাল,
 বীর সেনাদের দৃঢ়চেতা ভাব ,হবেইনা টালমাটাল।

গাছের পাতা ঝরতেও দেখি নতুন পাতা আসে
পাখপাখালির মিষ্টি সুর সংগীত হৃদয় ভালবাসে।

  ঝরা পাতা তো ঝরেই পড়ে  নির্ঝরে টুপ করে,
  কচি পাতা আসে দেখি,সেজে ওঠে গাছ ভরে।
                     
 পাতা ঝরে ,খসে যায়ও,কত স্মৃতি রেখে যায়,
 উদাসীন মন,করে হায় হায়,গাছ বুঝি অসহায়।

 নিয়মেরই আঙিনায় সব কিছুই তো সয়ে যায়,
 পৌঢ়রাও সরে যায়,কিশলয় দেখি প্রাণ পায়।

 তবু মন খাবি খায়, সুখ দুঃখের স্মৃতি চমকায়,
 ব্যস্ততা ধমকায়,ঝরা পাতা থমকায়,ধোঁয়াশায়।

           
             

প্রকৃতি বাঁচাই চলো : রাণা চ্যাটার্জী



                   
                       

বৃষ্টির ধারা আজ বড়ো দিশেহারা-অঝরে শুধুই ঝরে,
জানি না কি রোষে,আজ নদী ফোঁসে,বসে থাকি ভয়ে  ঘরে ।

নদী কূল কূল,পাড় হুলুস্থুল,মাঝি মল্লার রাত জেগে,
দুপাড়ে ক্ষেত ,অপেক্ষা সমবেত ,বিধাতা কি তবে রেগে!

জানিনা কি হয় এই বুঝি ক্ষয় ,যেন বন্যার ভ্রুকুটি ছায়া,
দোষে-গুণে মোরা কখনো দেখি খরা বড় অদ্ভুত এ মায়া।

না হলে বৃষ্টি, হবে অনাসৃষ্টি ,জমি ক্ষেত রুখা খরা,
হলে পড়ে বেশি,হবো বানভাসি দুই তরফেই আধমরা।

কেন হয় এটা,ভেবেছ কি সেটা! ফাঁকা করি গাছ কেটে,
হায় বলিহারি,গড়ি স্বপ্ন নগরী, চলি প্রকৃতি ছাড়া পথ হেঁটে।

তবু আশা মনে,এই বুঝি ক্ষণে,সুদিন তো আসবেই,
শ্বাস চেপে থাকি,মরে যাব নাকি!সুসময়ের বাঁধ ভাসবেই ।

প্রকৃতির সৃষ্টি ,ঝরুক রূপবৃষ্টি,প্রচেষ্টা শান্তির বাতাবরণ,
নিজেদের খুঁজি প্রকৃতিকে পুজি,বাঁচানোর বড় প্রয়োজন

আর এক সংঘাত,পদত্যাগ" : রাণা চ্যাটার্জী




প্রতিবাদ,মতান্তর হলেই নিশানা-এ ঘটনা নতুন কিছু নয়।যদি সে সংঘাত হয় সর্ব শক্তিমান ভেবে বসা অর্থ মন্ত্রক,সরকারের বিরুদ্ধে তবে তো সম্মান খোওয়ানোর আগে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব ছেড়ে সরে যাওয়া বেশি
ভালো,এমন আর এক নমুনা দেখে ফেললো আপামর দেশবাসি।

রাষ্ট্রপ্রধান জনসমক্ষে প্রশংসার পিঠ চাপড়ে  দক্ষ অর্থনীতিবিদ বলে দিয়েছেন তবু চলে যেতেই হলো  রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের দায়িত্ব ছেড়ে উর্জিত প্যাটেলকে। কি পেলাম আর কি পাচ্ছির যখন হিসেব নিকেশ, আর মাত্র কয়েক মাস পরই লোকসভা ভোটের দামামা বাজার পূর্বে এমন কিছু ছন্দ পতন কিসের ইঙ্গিত দেয় জানিনা।তবে আম আদমি সাদা চোখে দেখছে,মেয়াদ ফুরানোর নয় মাস আগেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গর্ভনর,যা আবার উদাহরণ সৃষ্টি করে গেল সব থেকে কম সময়ে ওই দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকার।

মেয়াদ শেষের আগে দেখেছি নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান পানগড়িয়ার ইস্তফা,ল।গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সুব্রহ্মন্যমের পর আবার এমন গুরুত্বপূর্ন পদ থেকে পদত্যাগ,তবে কি সরকারের অতিরিক্ত নাগপাশ,খবরদারি,মতানৈক্য এ বিষয়ে  সরকার,বিরোধী,জনগন সকলের মনেই চাপা গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

কিছু বেশি দু বছর আগে এমন পরিস্থিতি জনসমক্ষে এসেছিল পূর্ববর্তী গভর্ণর বনাম সরকার সংঘাত,মতবিরোধ।রঘুরাম রাজনের ইস্তফা মুহূর্তে সবার মনে এটাই এসেছিল সরকার তার আস্থাভাজন ব্যক্তি কে নিয়ে আসছেন,হয়তো সেটার সারবত্তাও ছিল,কিন্তু আবার দ্বন্ধ, মানসিক সংঘাতের যবনিকা।অর্থ মন্ত্রকের চাপ ক্রমশ বাড়ছিল ব্যাঙ্কের উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে টাকা চেয়ে,এই রকম নানান চাপান উতোর,মত পার্থক্যের পরিনাম প্রকাশ্যে এসে যাবে,তা দৃষ্টি ঘোরাতে  দক্ষ পারদর্শী অর্থনীতিবিদ না বললেও মুশকিল।কিন্তু অভিমানী বিদায়ী গভর্নর ,সকল সহকর্মী,পরিচালন বোর্ডের ডিরেক্টরদের ধন্যবাদ জানালেও প্রধানমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রীর নাম মুখে না আনায় সেটাকেই অনেকে প্রতিবাদ হিসাবে দেখছেন,বিশেষ করে প্রাক্তন গর্ভনর রাজন মহাশয়।দেশের অর্থনীতি নির্ধারক, এই তাবড়
তাবড় ব্যক্তিদের মান সম্মান বাঁচিয়ে পদত্যাগ খুব কিন্তু ভালো বার্তা দিচ্ছে না।

২০১৬সালে ৪ সেপ্টেম্বর গুড বয় হিসাবে উর্জিত প্যাটেলের গর্ভনর হওয়া। দুমাসের মধ্যে এত বড়ো নোটবন্দির সিদ্ধান্ত সরকার নেওয়ায় সে ধারণা সত্যিই জোরদার হয়েছিল কিন্তু সরকারের সাথে উর্জিতের লড়াই,সংঘাত বোর্ডের মিটিংয়ে চলতে থাকায় অতি সম্প্রতি কিছু কমিটিও তৈরি হয়।আগামী ১৪তারিখ ডিসেম্বরের বৈঠকের ঘোষিত দিন ছিল তারমধ্যেই এমন আকস্মিক খবরে নানান কৌতূহলের জন্ম দিচ্ছে।হয়তো সরকার পক্ষ থেকে আরো চাপ,আরো জটিলতার জন্ম,তার আগেই নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে ইস্তফাই ভালো পদক্ষেপ।

বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোট অলরেডি শুরু হয়ে গেছে,রেজাল্টে পারদের ওঠা নামা। আগামী কয়েক মাস পরই বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের কুর্শির দাবিদার দল কে আসছে তার কাউন্টডাউন শুরু।  দেখছি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি,কৃষকের আত্মহত্যা, একের পর এক দুর্নীতি আজ সামনে, উজ্জ্বল নিয়ন আলোয়। বিপুল ঋণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া মহানদের বহাল তবিয়তে বিদেশে দিন গুজরান করছেন আর  নুন্যতম দৈনন্দিন পরিষেবার তথৈবচ অবস্থার সাক্ষী হয়ে আমআদমিগণ গ্যালারিতে বসে মুখ চাওয়া চাওয়ি ও হাততালি দিতে মগ্ন।

সম্প্রতি সরকারের কাজে হিন্দুত্বের রাজনীতির একটা স্রোত নজরে আসছে আবার সরকার উদার অর্থনীতির মধ্যে একটা লাগাম টানতে উদ্যত।টাকার অবমূল্যায়ন,কি পাবো আর কি পেলামের হিসেব নিকেশ,লাগাম ছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে জন সাধারণের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম।বিরোধী শিবিরের লাগাতার আক্রমণে একপ্রকার উপেক্ষা করছি ভাবনা দেখালেও সরকারের মধ্যেই নানান অনৈক্যের চোরা স্রোত ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে।

দেশের অর্থনীতির  মেরুদন্ড ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে নিয়ে এই গভর্নর পদে আসা সম্মানীয় ব্যক্তিগণের নিজস্ব কিছু ভাবনা  থাকে ।বেশ কিছু সংঘাত যা আগের সরকারের আমলে ওয়াই ভি রেড্ডি,সুব্বারাওয়ের সাথেও হয়েছিল কিন্তু এই আমলের মতানৈক্য,কিছু নতুন মাত্রা এনেছে।একের পর এক ব্যবসায়ী যখন বিপুল ঋণ নিয়ে বিদেশে বহাল তবিয়তে পালিয়েছে,সরকার দোষ দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওপরই। আবার যখন গর্বিত বুকে দেশ থেকে কালো টাকা ধ্বংস করার মহান ব্রত সামনে রেখে নোট বন্দীর বিপুল কর্ম যজ্ঞ ,পরিসংখ্যান দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তখন শুনিয়েছে,সব টাকাই ফিরে আসছে ব্যাঙ্কে।তবে কি কালো টাকা ছিল না ,এই অস্বস্তি সরকারের প্রগতির বেলুনকে  যথেষ্ট খোঁচা দিয়েছে। সর্বশেষ বেসরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলিকে ঋণ প্রদান বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে সংঘাত যে আগামী বৈঠকে চরম আকার নিতো সেটা অনুমান করেই এমন সরে যাওয়া।সেই সঙ্গে আরো যে কিছু চমক বাকি আছে এই সরকার বনাম রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তা বোঝা যায় ডেপুটি গভর্নরের ,"সরকারের উচিত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসিত চরিত্র বজায় রাখা"এই গোপন মন্তব্য ফাঁসে।

রাণা চ্যাটার্জী





পদস্খলন
                           




এ এক আশ্চর্য ডামাডোলের সন্ধিক্ষণে আমরা। পত্র-পত্রিকা, খবরে পড়ছি, দেখছি আর বিস্ময়ের ঘোর যেন কাটছে না! ছোট থেকে দেখে অভ্যস্ত চোখ,শুনে আসা যে,উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তিগণ, নিজেদের গুণাবলী ও দক্ষতার স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হবার সাথে সাথে,গুরুত্বপূর্ণ পদ অলঙ্করণে সমাজের ভারসাম্য বজায় রাখেন। না জানি কেন এক গ্রহের ফেরে,তাঁদের পদক্ষলন ঘটছে, এর বেশ কিছু জ্বলন্ত উদাহরণ সম্প্রতি দেখছি আমরা।

কোনো সম্মানীয় পদ থেকে সংশ্লিষ্ট শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তির  আকস্মিক সরে যাওয়া বেশ মানহানিকর ও  অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আমরা এড়াতেও পারি না। আপন ভাস্বরে উজ্জ্বল থেকেও  উচ্চপদে আসীন বেশ কিছু ব্যক্তিবর্গ ,কেমন  না জানি এক  ঝড়ের পূর্বাভাসে টলোমলো আজ। পদ্ম পাতায় জল যেমন ,তেমনি সত্য,মিথ্যার দোলাচলে আমাদের,আপামর ভারতবাসীর অপেক্ষা ওনাদের দিকে তাকিয়ে আসল ঘটনা যাচাইয়ে।

সম্প্রতি ' মিটু ' আন্দোলনের সুনামি ঝড় আছড়ে পড়েছে আমাদের ভারত বর্ষেও । কোনো না কোনো ভাবে যে সকল মহিলারা যৌন অত্যাচারের শিকার হয়েও লোক লজ্জা,নিরাপত্তা,ভয়ের জন্য সে সব ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে বার বার পিছুপা হয়েছেন,সহ্য করেছেন মুখ বুজে। আজ অন্তত তারা একটা প্রতিবাদ করার সুবিধা জনক জায়গায় একত্রিত হতে পেরেছেন। এই আন্দোলনের জোয়ারে যে অনেক, গৌরবান্বিত পদ টলোমলো হয়েছে ও হবেও, পুর্বাভাস পাচ্ছি তা ,এই আন্দোলনের লেজের ঝাপটায় । সাধারণ জনমানসে ওনাদের প্রতি যে সম্মান বর্ষিত হয় তাতে যেন একটা চিড় ফাট দেখা যাচ্ছে যা বড়ো ফাটল তৈরির রসদ জোগাছে জনমানসে।এ এক সত্যিই অবিশ্বাসযোগ্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।

দেখতে পাচ্ছি নামকরা স্বচ্ছ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তিরাও কিভাবে ধরাশায়ী হচ্ছেন, সত্য তর্কে যাচ্ছি না তা প্রমাণিত হবে পরে কিন্তু এই যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সিনেমা দুনিয়ার তাবৎ রাজা-উজির এমন কি নিজের বাবা ও বাদ যাচ্ছেনা এই অভিযুক্তের তালিকা থেকে । কোনো এক সময় হয়তো গর্হিত কাজের মাসুল হিসাবে,ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই উচ্চ পদে আসীন ব্যক্তি আজ দেরিতে হলেও তার কৃত কর্মের জন্য শাস্তি পাবেন তার সম্মান ও পদস্খলনে।

অপর আর এক  চাঞ্চল্যকর  ঘটনা, ভীষণ ভাবে জনমানসে রেখা পাত করেই চলেছে প্রত্যহ হেড লাইন নিউজে এই কদিন ধরে ।দেশের শীর্ষ কেন্দ্রীয় তদন্ত কারী সংস্থা সি.বি.আই এর অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া গোলমাল ।একদম প্রকাশ্যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে পর্যবসিত হয়ে গেছে দুই প্রথম সারির সিবিআই অফিসারের ঝগড়া,কোন্দল।কিন্তু এতে কি হলো এটা কি ভেবে দেখেছেন ওনারা! যে ভরসা,বিশ্বাস ,সমীহ এই সংস্থা এত দিন ধরে জনগণের কাছ থেকে অজান্তেই তিল তিল করে আদায় করে এক মহিরুহতে পর্যবসিত হয়েছে,তার কি হলো! ঘুষ খাবার চক্করে ও উভয়ের প্রতি প্রকাশ্যে তিক্ততা বর্ষণে এই শীর্ষ শব্দের প্রতি,এই উচ্চ পদের প্রতি জনগণের ঘোর বিস্ময়ের জন্ম নিলো।এক লহমায় ঘটে গেল পদস্খলনের মতো ঘটনা আমাদের চোখে। কেন্দ্র সরকার অবশ্য লোকলজ্জার খাতিরে  এই মহান তদন্তকারী সংস্থার হৃৎ গৌরব ফেরাতে ওনাদের জলদি সরিয়ে সংকট দূরীভূত করার চেষ্টা করলেন কিন্তু  খুব সুবিধা জনক বাহবা কুড়াতে পারলো কই! বরং কেন্দ্রের তড়িঘড়ি সঠিক নিয়ম কানুন না মেনে সিদ্ধান্ত অতি সহজে  বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নামক সেরা পদটিরও পদস্খলন  ঘটালো।

রাণা চ্যাটার্জী






মৃত্যু 
*****


                    

মৃত্যুর রঙ কে দেখেছো ? গাঢ় নীল না সবুজ ! 
মৃত্যু ঘন্টা বাজলে পরে,নিস্তব্ধতা,সব অবুজ । 
দিকে দিকে ওই লেলিহান শিখা,মৃত্যুর পরোয়ানা,
টিভির পর্দা,খবরকাগজে অকালে মৃত্যুর মুন্সিয়ানা

  জীবন ও মৃত্যু ব্ন্ধু প্রগাঢ়,হিম শীতল  গভীরতা , 
  মৃত্যু তো, মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ ,স্পন্দিত নীরবতা । 
  কিছু মৃত্যু তবু রোখা যায়, এলে পরেও মৃত্যু থাবা , 
 নারীশিক্ষা,সচেতনতা,জীবনকে সহজ ভাবে ভাবা।কতো সহজে মৃত্যুর গ্রাস, পুরুষ তন্ত্রের দেখি ধ্বজা
মাতৃ শক্তি হয়েও নারী,বয়ে চলে কতপাপের বোঝা

কোথাও মৃত্যু সরল মায়ের,জন্ম দেওয়ায় কন্যা , 
মেয়ের মুখে অ্যাসিড অ্যাটাক, বইলে রূপের বন্যা। আবার মৃত্যু গৃহ বিবাদ,মদ্যপ স্বামীর মাতাল গুনে,  
অসহ্য চাপে আত্মহত্যা,কেরোসিনে দগ্ধ আগুনে । 

আরো কতো বলি মৃত্যুর পথ,ধর্ষণ,খুন,পণ প্রথা , 
নারীর ওপর যত বাহাদুরি ,ছল চাতুরী ,কু-কথা ।
এই নারীই সৃস্টি কারী , সমাজের  ধারক বাহক,  
নয়কো নারী সেবা দাসী, কিংবা পুরুষ তুষ্ট গ্রাহক। 

তবু আজ বলি ,গর্বে ফুলি,নারী পুরুষের নেই ভেদ,
মৃত্যু আনে করাল ছায়া,জীবনহানি,হটাৎ পূর্ণচ্ছেদ।

রাণা চ্যাটার্জী




পর্দা ফাঁস
*********





বাড়ির অমতেই হোক আর অবশেষে ছেলের ভালোবাসায় সিলমোহর দিয়ে পাত্রী নির্বাচনে বিবাহের প্রস্তুতি শুরু করার পরই হবু শশুর মশাই ঢাক পেটাতে শুরু করলেন, "বৌমা দারুন বুদ্ধিমতী,কোনো এক কোচিং সেন্টারে রিসিপশনিস্ট পদে জব করেই নাকি আঠারো হাজার টাকা বেতন পান! " কথাটা  এখনকার  হলেও না হয়  বটে কিন্তু দশ বছর আগে কোন মফস্বল শহরের কোচিং সেন্টারের বেতন এত ! শুনে হেঁচকি উঠলেও বাড়িয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলাটা দারুন টেকনিক ,সবাই পারে না!
যেখানে সেই সময়ে সরকারি স্কুল টিচার এর মাইনে শুরু হতো আঠারো হাজারের  কিছু বেশি দিয়ে! কিন্তু তাতে কি?  উনার ঢাক পেটানোকে গ্রামের অনভিজ্ঞ মহল আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি বিস্ময় চোখে "তাই নাকি ,আরে বাহ" বলেই খুশি  সেখানে নীরব না থাকলে বদনাম জুটবে,হিংসা করছে বলে!

কিছু কিছু মানুষ এমন টা করে মানে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলে বেশ মজা পান ।ভাবখানা এমন,"কেমন চমকে দিলাম ,বোকা হাঁদার দল কিচ্ছু টেরও পেলো না! কিন্তু সে বা তিনি এটা বোঝেন না ,যে তার সাধের ফোলানো বেলুন, ফুটো হলেই চুপসে যাবে । যে টুকু হৃৎগৌরব এসেছে, সেটাও লোক হাসি  হয়ে গিয়ে পড়ে থাকবে রসকষহীন এড়িয়ে যাওয়া,বা গুরুজনদের বলা যায়না ,সামনে বলা উচিতও নয়, সেই অন্তঃসারশূন্য সমীহ টুকু।

বিয়ের পরে পরেই কোন এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম। নতুন জামাই পেয়ে বাড়ির কর্তা, সারাদিন যে কতবার, ফিরিস্তি দিলেন,রাজকীয় খাওয়া-দাওয়ার  আয়োজন করেছেন বলে। খাওয়া-দাওয়া ,মাংস নাকি প্রচুর পরিমানে,এলাহী ব্যাপার ! রাজকীয় বিয়ে বাড়ির পরিবেশে এসে পড়েছি ভেবে বেশ গর্বিত হচ্ছিলাম  কিন্তু ভুল ভাঙলো বাস্তবের ছবি কড়া নাড়াতে! · হলোটা কি তিন নম্বর ব্যাচ থেকে মাংসের টান!  চার নম্বর ব্যাচ থেকে মিষ্টির কমতি শুরু হলো! আমরা যখন ছয় নম্বর ব্যাচে খেতে বসলাম, গোটা কয়েক শুকনো কচুরি  ছাড়া কিছুই নেই !

এখানে আমি দোষের কথা বলছি না ,বিয়ে বাড়ির মত পবিত্র অনুষ্ঠানে এত লোককে খাইয়ে ভবিষ্যতের ভাঁড়ারে টান পড়ানোর কোনো মানেই হয় না ,কিন্তু তবু এই যে বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলা, বাস্তবের সঙ্গে এমন অসামঞ্জস্য এটা বোধহয় ঠিক নয়। 

কোন কোন বাবা-মাকে দেখি, বাইরের লোকের সামনে ছেলে-মেয়ের দারুণ প্রশংসা করেন। সাবাস ,বলে পিঠ চাপড়ে দেন আবার এটাও দেখি যত ভালোই পড়াশোনা করুক না কেন,অনেক বাবা মা বেশিরভাগই নিন্দা করে ,বকা ঝকাও। ওনাদের উদ্দেশ্য একটাই যে,সন্তান যেন শেখে ,আরো ভালো করে পড়াশোনা করে ,মানুষের মতো মানুষ হয়।

কোন এক কাক,ভাইপোর ওকালতি পড়তে যাবার খবর, যেভাবে গ্রামের লোকের সামনে দিয়েছিলেন , বেশ মজাই লাগছিল শুনে ,"বাপরে বাপ, পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিনা ভাগ্না হাইকোর্টের উকিল হয়ে গেছে !এমন বাড়িয়ে প্রচার  সিনেমার গতিকেও হার মানায়!

ছোটবেলা থেকে বাড়িতে অনেক পত্রপত্রিকা, সৌজন্য সংখ্যা আসার সুবাদে অনেক গল্প পড়তাম সে সব স্মৃতির অতলে তলিয়ে গেলেও একটা অবাক করা মজার গল্প পড়েছিলাম ।লেখকের নামটা ঠিক মনে নেই তবে গল্পের নাম ছিল," রুপার বর মাস্টার"। সংক্ষেপে বিষয়টা ছিল," গ্রামের এক সাধারণ মেয়ের হঠাৎ বিয়ের সম্বন্ধ আসে মাস্টার পাত্রের সাথে ! চাকরির এমন আকালে,ভালো পাত্র হাত ছাড়া কি করা যায় ! তাই মহা ধুমধামে বিয়ে হয়ে গেল রুপার।

অষ্টমঙ্গলায় বেড়াতে আসা জামাই কে ফুরসৎ পেয়ে,কেউ ইস্কুল টা কোথায় জানতে চাইতেই বিপত্তি। ঝোলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ার উপক্রম। জামাই ও অবাক,সে জানালো ,"স্কুল মানে?আমি তো ব্যান্ড পার্টির ব্যান্ড মাস্টার!!" এক্ষেত্রে অবশ্য বড় মিসান্ডারস্টান্ডিং ই দায়ী।ভালো পাত্র হাতের নাগালে চলে  যায় পাছে, নানা প্রশ্নে! আবার পাত্রপক্ষ জানিয়েছেও ভাসা, ভাসা যে পাত্র মাস্টার! তবু তথ্যের অভাবে এত বড় অঘটন ! 

কখনো দেখি পাড়ার কোন বাড়ির গার্জেন, পাড়ার অন্যান্যদের প্রতি  দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কথা ছোড়েন ! ভাবখানা এমন যেন,আমার ছেলে বা মেয়ে সোনার টুকরো আর বাকিরা দোষে ভরা!কিন্তু চোখ ,কান মাথা খেয়ে ,অধিক প্রশ্রয়ে সেই বাড়ির ছেলে বা মেয়ে, প্রেম-ভালোবাসা,প্রণয়ে জড়িয়ে অঘটন ঘটায় যখন ,মুখে কুলুপ এঁটে,খিল দিয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে দেন সেই বাড়ির অভিভাবক গণ। কোন সমালোচনা করে বলছি না,রোমিও দাপটে ধোঁকা খাওয়া সত্যি খারাপ কিন্তু তা বলে বাকিরা সব খারাপ, আমি ভালো আর আমার দুধে ভাতে থাকা সন্তানরা সেরা,কেবল, এটা ঠিক  নয়।

একবার  বন্ধুর পিসির বাড়ির ছোটখাটো  বারোয়ারি পুজোতে গিয়ে বেশ অভিজ্ঞতা হয়েছিল।সামান্য আয়োজনের দু চারটে দোকান আসা মেলায় কোনো এক মধ্য বয়সী আধিকারিক জামাই ঘুরে ফিরে দেখছিলেন। কেউ কুশল কামনা করলেই ,তাদের ঘুরে ফিরে উত্তর দিচ্ছিলেন যে,ওনার ছেলে এবার,মাধ্যমিকের রেসাল্ট বেরুলে মেধা তালিকায় প্রথম না হলেও পাঁচের মধ্যে থাকবেন।

এতবার করে উনি ফাটা  ক্যাসেট বাজাচ্ছিলেন ছেলের কি বলবো!গ্রামের সাদা সিধে সরল মুখের মানুষ গুলো চমকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন ওনাকে।এরই মাঝে ওনার ছেলেটি ,সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাবার কাছ থেকে কুড়ি টাকা নিয়ে জিলাবি কিনে,  পিছন দিক দিয়ে একাই খেতে খেতে চলে গেল ! একা যে খেতে নেই ,ভাগ করে খেতে হয় কে শেখাবে ওকে? এটা ওকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। একা খেয়ে খেয়ে আর  পিঠ চাপড়ানো প্রশংসা দেখেই বড় হয়ে ওঠা তার।

এই বিষয়ের উপর যত আলোকপাত করব,তার শেষ নেই।মানুষের চরিত্রের নানা দিক নগ্ন ভাবে ফুটে উঠতেই থাকবে । ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ জমানায় নিত্যনতুন অ্যাপের দৌলতে , সবাই এমন ঝাঁ-চকচকে নিজেদের ছবি আপলোড করে,বেশ দারুন লাগে। কিন্তু সে বা তিনির সঙ্গে বাস্তবের ছবির  মিল থাকাটাও জরুরি।তবেই না আমার আমিতে আমার বাস! জানিনা বাপু এতে, মনের কনফিডেন্স ঠিক কতটা বাড়ে বরং মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষনে  এটা এক প্রকার হতাশা, ফুরিয়ে যাবার বহিঃপ্রকাশকেই ইঙ্গিত করে।

এইভাবে কখনো কেমন পর্দাফাঁসের বিষয় প্রকাশ্যে,গোপনে,মনের গহনে বেআব্রু হয়ে যায়।আজ  মানুষের কিছু চেনা প্রকৃতির,এক ঝলক ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম ।এখানেই শেষ নয় আসলে এই আলোচনার সত্যিই কোন শেষ নেই।

রাণা চ্যাটার্জী



পরকীয়া
 *********
                            

পেপার খুলে চমকে দেখি পরকীয়া নয় অপরাধ বাতিল সেই মান্ধাতা আইন প্রেমে মঞ্জরি অবাধ।
৪৯৭ ধারা অবৈধ হলো,পরকীয়ায় আর নয় ভয়।আমার ভারত প্রগতির দেশ , নারী প্রগতির জয়।

দেশ চলেছে সমুখ পানে উন্নয়নের আকর্ষণে,
প্রেমে বাধা থাকছে না ,খুশি হও প্রেমের টানে। পরকীয়া নো ম্যাটার,প্রেম তুফানে বাজুক গিটার
প্রেমপর্বে ঘাটতি কেন,বাড়তে দাও প্রেমের মিটার।
প্রেমের বীজ হলে বপন,কি হবে রেখে তা গোপন এসব নিয়েই দৃষ্টি ঘুরুক,মুদ্রাস্ফীতি যখন তখন।

অসুখী দাম্পত্যে নাকি পরকীয়া  খোলা হাওয়া, ধর্ষণ কি কমবে এতে ভালোবাসার গান গাওয়া!
স্ত্রীর ওপর খবরদারি ,নয়কো পুরুষ এ বাহাদুরি
স্ত্রীও তো স্বাধীন মানুষ,কমুক এবার নজরদারি।