নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মেয়েটা একটা মানুষ : শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায়



মেয়েটা পুড়ছিল
মেয়েটা জ্বলছিল
মেয়েটা শুনছিল — হল্লা-হৈ

আসলে মেয়েটা, একাই আগুন।

মেয়েটা ছুটছিল
মেয়েটা ছুটছিল
থামাতে পারেনি তাকে — হাজার কুহক

মেয়েটা চাইছিল, জয়ের তিলক তার কপালে আঁকুক।

মেয়েটা পুড়ছিল
মেয়েটা ছুটছিল
মেয়েটা বলছিল — দুঃখ একবুক

মেয়েটা জিতে নিল, জয়ের মুকুট।

মেয়েটা হাসছিল
মেয়েটা কাঁদছিল
মেয়েটা বলছিল — লড়াই চলুক

আসলে মেয়েটা একটা মানুষ।।

শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায়





আগমনী 
********


কাশফুলে ভরে গেছে মাঠ, নৈঋত হাওয়া ছুঁয়ে দিলেই রেনু ছড়িয়ে পড়েছে আহ্লাদী  কিশোরীর হাসির মত।

ছুঁয়ে দেখিনি আজও, শহরে ফোটে না কেন কাশ? বন্ধু বলেছিল কোন এক শারদপ্রাতে উপহার দেবে, প্রিয় কাশফুল। সে এখন গ্রাম ছাড়িয়ে, জন্মভূমি ছাড়িয়ে, মাতৃভূমি ছাড়িয়ে অনেক অনেক দূর -- বন্ধু , তোর ওখানে কাশফুল ফোটে? কাশফুল তোর এন আর আই বুকে আগমনী বার্তা পাঠায়? আমার প্রতিটি শরৎ-সকাল  কল্পনার কাশফুল ছুঁয়ে, স্পর্শসুখে ভেসে যায়...
নীলাকাশ ক্যানভাস জুড়ে জমাটবদ্ধ মেঘ কখনও বিশাল পুরুষের অবয়বে ঘনীভূত, কখনও কুচি-কুচি শুভ্র মেঘ দুরন্ত বালিকার চঞ্চল রূপে নৃত্যরত, কখনও বা বিষাদ ঘনিয়ে আসে কালো মেঘের ছায়ায়... যেন দক্ষ কোন শিল্পীর আশ্চর্য ব্রাশিং এ  চিত্রিত মোহময় শারদ আকাশ ।
দ্যাখো দ্যাখো! কি উজ্জ্বল রঙে পাপড়ি মেলছে  পদ্মকুঁড়ি ...প্রতিটি পাপড়িতে দৃঢ় প্রত্যয়, তুমি আসছো হে সারদ লক্ষ্মী! কৃষ্ণের মোহন বাঁশির সুর মন্দ্রিত 
আকাশে-বাতাসে।

নবীন শিশির ছুঁয়ে ফুটে ওঠা শিউলির সুগন্ধে বিহ্বল চরাচর , সোনারোদ গায় মেখে ঝরে পড়ে, শিউলি কুড়োনো আঁচল হাওয়ায় ছড়িয়ে দেয় আগমনীসুর। সেই মিহি সুরের মূর্ছনায় ভেসে যেতে যেতে উমা, ভেসে ওঠে তোর প্রিয় মুখ -- অধীর ব্যাকুল  জননী হৃদয় মিনতি জানায় গিরিরাজে--
"যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী উমা নাকি বড় কেঁদেছে/  দেখেছি স্বপন নারদ বচন
উমা মা মা বলে কেঁদেছে ।" 

ব্রহ্মা, বিষ্ণু,মহেশ্বর, ইন্দ্র আরো বহু দেবতার তেজরশ্মি হিমালয় এর সুউচ্চ শিখরে অবস্থিত ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে সম্মিলিত হয়ে মহিষাসুর বধের জন্য যে দশপ্রহরনধারিনী দেবী দুর্গার সৃষ্টি সে হয়ে উঠল পৃথ্বীকন্যা।

তাই তো উমা আসবে বলে মাঠে ঘাটে কাশের আয়োজন, আকাশ সেজে ওঠে উজ্জ্বল নীল রঙে, দীঘি ভরে ওঠে পদ্মফুলে। বকুল কুড়োনো হাত শিউলি কুড়িয়ে মালা গাঁথে। সে আসবে বলে নবীন ধানের মঞ্জুরী আনন্দ ছড়িয়ে দেয়। নতুন পোশাকে, দেওয়ালে নতুন রঙে, পর্দায় ছড়িয়ে পড়ে আগমনী সুর -- মায়ের অবুঝ মন, নিজেকে প্রবোধ দেয়--

"এবার আমার উমা এলে আর উমা পাঠাব না/ লোকে বলে বলুক মন্দ, কারো কথা শুনবো না ।"

উমা আসবে বলে আমার মায়ের হাতদুটি কেমন সেজে ওঠে একজোড়া নতুন শাখা-পলায়, সেখানেও  আগমনী সুরে সুরে উমা আসবার আনন্দ বার্তা ছড়ায়।।

শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায়





বৃষ্টি -তবু.. 
********




গত বর্ষায় ছিড়ে গিয়েছিল, তার
বৃষ্টি হয়নি, মেঘ ডেকেছিল খুব, 
সেই থেকে আর ছোঁয়নি সেতার, মেয়ে 
জুড়তে চায়নি একবারও ছেঁড়া তার 

যদিও সেতার বাঁধা ছিল, মা পা সা তে
মন জুড়েছিল ধ্রুপদী মায়ার সুর,
শ্রাবণ এলেই ভাসত মেয়ের মন
শ্যামকল্যাণ,মেঘমল্লার কখনও বেহাগরাগে

বৃষ্টি এখনও জানালায় ডেকে যায় 
বেল-জুঁই -কেয়া বৃষ্টিতে স্নান সারে,
দু'জনের আজও পাশাপাশি বসবাস 
শুধু,মেয়ের উঠোনে খরা চলে বারোমাস ।।