নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অমিত কুমার জানা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অমিত কুমার জানা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

পুরোনো স্মৃতি: অমিত কুমার জানা



স্মৃতির পাতায় মরচে ধরে
স্মৃতিচারণায় মরচে সরে,
মনস্পটে ভেসে ওঠে পুরানো দিনের কথা,
কত বিচিত্র অভিজ্ঞতা হাসি কান্না ব্যথা।

আসে না ফিরে পুরানো দিন
মন থেকে তবু হয় না বিলীন,
মনের দরজায় উঁকি দিয়ে যায় কর্মের অবকাশে,
বেদনা-মধুর প্রতিক্রিয়ায় এ মন অজান্তে হাসে।

মনে পড়ে সেদিনের ছেলেবেলা,
কি মিষ্টি মধুর হাসি কান্না খেলা!
কি করে ভুলি এমনই মধুর মায়ের তিরস্কার!
পুরানো দিনের স্মৃতির সাথে শৈশব একাকার।

কোলাহল করি বন্ধুর সাথে
স্কুলে যাওয়া সেই মেঠো পথে,
খেলার স্মৃতিচিহ্ন আঁকা গাঁয়ের সবুজ প্রান্তরে
স্মৃতিচারণায় অমৃত লভি তা যদি পেতাম ফিরে!

পুরানো বন্ধুর মুখখানি ভেসে ওঠে
স্মৃতির গলিপথে ব্যাকুল মন ছোটে।
স্মৃতিপটে আজও অক্ষয় 'প্রথম কলেজে যাওয়া,
ভুলতে কি পারি 'তার প্রেমে প্রথম হাবুডুবু খাওয়া'?

কত সংগ্ৰাম জীবনের সাথে
ডুবে থাকি সেই স্মৃতিতে,
পুরানো লড়াইয়ের কত ক্ষতচিহ্ন জেগে থাকে বুকে
তাইতো বর্তমানেও চোখ ছলছল অতীতের শোকে।

।।ভগবতী।।অমিত কুমার জানা





দুই নাতির আবদারে দাদু (তপনবাবু)গল্প শুরু করলেন। তিনি বললেন, -"বুঝলি, বহু বছর আগে অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটতো। আজকের ভোরে তো মহালয়া, তো তোদের এই মহালয়া দুর্গাপূজা নিয়ে একটা গল্প বলছি শোন। 
আমার বয়স তখন তোদেরই মতো। আমাদের পাড়ার চার মেয়ে রিমি, মিমি ,সুমি আর ভগবতী একই ক্লাসে পড়াশোনা করতো। ভগবতীর গায়ের রং শ্যামলা হওয়ায় এবং দেখতে কুশ্রী হওয়ায় তাকে তিন বন্ধু দলে মেশাতে চাইতো না। সেইদিন ছিল মহালয়ার ভোর। বাড়ির দুয়ারে রেডিওতে মহিষাসুর মর্দিনী শুরু চলছে। আমি আর ওরা চারজন বসে বসে তা শুনছি।  ভগবতী বলে উঠলো যে সে দুর্গা সাজতে চায়। বাকি তিন বন্ধু নাক উঁচু করে তাকে অপমান করে বললো যে এমন কুৎসিত মেয়ে সে আবার দুর্গা সাজবে! ভগবতী কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে গেল।  হঠাৎ রেডিও থেকে তীক্ষ্ণ কন্ঠে ভগবতীর আওয়াজ শোনা গেল-" আমি ভগবতী,তোদেরকে আমি শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো।"
রেডিওর মধ্য থেকে এই ভয়ানক আওয়াজে সবাই আতঙ্কে চিৎকার করে ঘরে প্রবেশ করলো। সবাই দেখতে পেল ভগবতী তো ঘুমিয়ে আছে! প্রত্যেকে প্রত্যেকের মুখের দিকে তাকালো।
তারপর আবার এক অত্যাশ্চর্য কাণ্ড ঘটলো সপ্তমীর দিন। ঐ তিন বন্ধু মিলে ভগবতীকে না জানিয়েই পাড়ার দুর্গা প্রতিমা দেখতে এল। প্যান্ডেলের সামনে প্রচুর জনসমাগম। রিমি,মিমি এবং সুমির নিকটে হঠাৎ উপস্থিত হলো ভগবতী। সে প্রচণ্ড ক্ষোভে জ্বলে উঠে দেবীদুর্গার রুদ্রমূর্তি ধারণ করলো এবং চিৎকার করে বললো, " তোরা আমায় এত ঘৃণা করিস কেন?" তিন বান্ধবী অচৈতন্য হয়ে লুটিয়ে পড়লো। 
এমন সময় দাদুর ভাঙা রেডিওতে মহিষাসুর মর্দিনী শুরু হয়ে গেছে। হঠাৎ রেডিও থেকে ভগবতীর তীব্র কন্ঠ ধ্বনিত হলো  " বুড়ো তপন, আমি তো তোর একমাত্র বোন ছিলাম, দেখতে খারাপ বলে তুইও তো আমায় কোনদিন স্নেহ করিস নি।"
দাদু (তপনবাবু) জ্ঞান হারালেন।
              

জীবনযাত্রার বৈপরীত্য : অমিত কুমার জানা




জীবনব্যাপী কেউ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে,
কারো বা আলস্যে সময় কাটে অবহেলে।

কারো খাবার প্রতুল,নিঃসংকোচে ছুঁড়ে ফেলে অতিরিক্ত,
কেউ খাদ্যহীনতায় শুষ্ক প্রাণ,উদর রিক্ত।

কেউ অতিভোজনের মেদ ঝরাতে জিমে যায় নিত্য,
কোন জীবনযোদ্ধা নিত্য পরিশ্রম করে অকথ্য।

কারো সারাক্ষণ গাড়িতে চড়ে সময় সানন্দে অতিবাহিত,
কারো জীবনপথের কাঠিন্যে পদযুগল ক্ষতবিক্ষত।

অর্থের বলে বলীয়ান কেউ করে বেহিসেবি অপচয়,
সামান্য অর্থ উপার্জনের তরে কারো সর্বদাই হয় জীবনের ক্ষয়।

লিফটে চড়ে কেউ আসে যায় ইমারতের বহুতলে,
কারো ছোট্ট স্বপ্ন ফুঁপিয়ে কাঁদে কোন্ সে অতলে।

আভিজাত্যে ভরা পোশাক পরিহিত বাবুরা হেঁটে যায় রাজপথে,
ক্ষুধার তাড়নায় অপেক্ষমাণ ভিখিরি ধূলো মাখে ফুটপাতে।

চাকরির খোঁজে উদভ্রান্ত উচ্চশিক্ষিত দরিদ্র বেকার,
অশিক্ষিত নেতার অবাধ শোষণ,সঙ্গে পদাধিকারের হুঙ্কার।

সত্যের পথযাত্রী কেউ আজীবন ধরে রাখে সততা,
সব পেয়েও কেউ বা প্রতিনিয়ত করে মানবতার হত্যা।

সীমান্তের শহীদ : অমিত কুমার জানা




প্রবাদে আছে 'বীরভোগ্যা বসুন্ধরা,
বাস্তবে বীর জোয়ানের সব সুখই অধরা।
দেশমাতৃকার রক্ষার দায়িত্ব অর্জনের তরে,
অকথ্য কায়িক শ্রমে নিজেদের গড়ে তোলে তিল তিল করে।
তাদের প্রসর স্কন্ধ একে একে গ্রহণ করে প্রশিক্ষণ,
তারপর শপথ নেয় নির্দ্বিধায় করতে জীবন সমর্পণ।
যৌবনের স্বপ্ন, সাংসারিক সুখের অপমৃত্যু হয়,
এভাবেই দেশ রক্ষিতে বীর সেনার আগুয়ান অকুতোভয়।
কখনো সীমান্তের তুষার ঝড় গায়ে মেখে নেয়,
কখনো খোলা আকাশকে ছাদ ভেবে রাত কাটায়।
কখনো স্মৃতির আঙিনায় ভেসে ওঠে স্বজন,
অবসন্ন শরীরে অশ্রূমাখা হয় দুটি নয়ন।
এভাবেই দিন রাত কেটে যায় সীমান্তের নিরাপত্তায়,
অন্যথায় দেশবাসীর দুঃস্বপ্ন, ব্যাঘাত অনিবার্য সুখনিদ্রায়।
সারা দেশ যখন নিদ্রাচ্ছন্ন এরা তাকিয়ে থাকে নক্ষত্র খচিত আকাশপানে,
কখনো বা শত্রুপক্ষের বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় তরতাজা প্রাণে।
হয়তো বা শত শত প্রাণ লুটিয়ে পড়ে জঙ্গির বোমা বিস্ফোরণে,
কফিনবন্দী নিথর বিচ্ছিন্ন দেহ ফিরে আসে জন্মস্থানে।
শীততাপের আরামে নেতা মন্ত্রীরা টাকার অংকে করে ক্ষতি পূরণের ঘোষনা,
নতুন শত শত তরুণ পুনঃপ্রস্তুত হয় ,সত্যিই এ তো অমর শহীদদের প্রেরণা।