নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

✍️সম্পাদকীয় কলমে ...




প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটা ভাষা থাকে,আর সেই ভাষাতেই সে তার মনের ভাব প্রকাশ করে।আর সেই ভাষাকে আমরা মাতৃভাষা বলি।মায়ের কাছ থেকে প্রথমে শিখি এই ভাষা।আমাদের মাতৃভাষা হচ্ছে বাংলা ভাষা।আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি আমাদের মাতৃভাষা পৃথিবীর সকল ভাষার সেরা ভাষা।আমরা অন্য ভাষাকে ও সম্মান করি।এই বাংলা ভাষা কে দাবানলে চাপানোর জন্য পাকিস্তানী সরকার বিভিন্ন ভাবে নানা সময় করেছে ষড়যন্ত্র। কিন্তু বাঙ্গালীরা হার মানেনি। বরং সারাবিশ্বে আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত হয় আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস।যারা আজকের দিনে ১৯৫২ সালে শহীদ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে সালাম,বরকত,রফিক,জব্বার ও আরো নাম না জানা অনেকে।আমরা আজ নিকোটিনের পক্ষ থেকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী।আমরা গর্বিত আমরা বাঙ্গালী।প্রিয় নেতা শেখ মজিবর রহমান,সুবাস বসু,সুকুমার সহ অনেক নেতা বাঙ্গালীদের
কল্যাণের তরে নিজেদের জীবন কে করেছিলেন উৎসর্গ। আমরা কখনো এই ঋন শোধ করতে পারবো না।ভাষার মাসে ভাষা শহীদদের উৎসর্গে নিকোটিনের এবারের আয়োজন।

তাছাড়া যারা লেখা দিয়ে আমাদের পাশে রয়েছেন সে সব লেখক-লেখিকা এবং কবিদের প্রতি রইলো অজস্র অজস্র শুকরিয়া এবং অফুরন্ত ভালোবাসা।আপনাদের এই কষ্টের মূল্য নিকোটিন পরিবার কখনো শোধ করতে পারবেনা।তবুও বুক বেধেঁ আশা রাখি আপনাদের কে সব সময় আমাদের পাশে পাবো।

             নিকোটিন পরিবারের পক্ষ থেকে

             শেখ ইমদাদ উল্লাহ নিলয়


ধন্যবাদান্তে ,

নিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার



বৈশাখী চ্যাটার্জী



একুশের ধুলোয় দাঁড়িয়ে
*******************



একুশের ধুলো আজও ওড়ে
সেই ধুলোয় আজও ভাসে রক্তের গন্ধ ।
আজও বাতাস শুনতে পায় সেই ধুলো চিৎকার করে বলছে ---
আমার ভাষা আমার চাই ।

সেদিনের সেই রক্তাক্ত একুশের ধুলোয় দাঁড়িয়ে অামি কথা বলছি এক প্রতক্ষ্যদর্শী ।
আজও প্রতিটা একুশ আমাকে সেখানে নিয়ে যায় -যেখানে আমার মায়ের ভাষা দাঁড়িয়েছিল বুলেটের সামনে।

অামি এক প্রতক্ষ্যদর্শী অামি দেখছি আমার ভাই সাকিল -বরকত -শকিউব -সালাম ধুলোতে গড়াগড়ি করছে ,
শেষ রক্তবিন্দু আর শেষ নিঃশ্বাসের মাঝেও ওরা চিৎকার করে বলছে --
আমার ভাষা আমার চাই ।

অামি সেই ধুলোর মধ্যে দাঁড়িয়ে -
অামি দেখছি আমার ভাষার যন্ত্রণা।
অামি দেখছি আমার মাতৃভাষার কান্না ।
দেখছি এক নির্লজ্জ লজ্জা ।

মৃত্যুমিছিল এগিয়ে চলেছে --,
এগিয়ে চলেছে ধুলো ঝড় ।
প্রতিটা ধুলো বুক পেতে ঝাঁঝরা হচ্ছে বুলেটের সামনে ।

আজও বাতাসে সেই গন্ধ পাই ।
সেদিনের সেই রক্তাক্ত ধুলো থেকে বলছি
আমার ভাষা আমার চাই ।
আমার ভাষা আমার চাই ॥

                   
                      

জ্যোতির্ময় রায়






বাংলা আমার
***********






শহর সেজেছে রুপোলি চাঁদের আলোয় ।শোনো...
মুখের ভিতর জমছে কথা ।রবীন্দ্রনাথ কেউ গাইছে যেন ।।


আমিও প্রথম ডেকেছি "মা " যে ভাষাতে
তেত্রিশ কোটির মুখের বুলি সে ,আমার রোজের "না বলা কথা তে" ।।

রক্তেও আছে সে সুর ,পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মধুর ভাষা ,
বাংলা ও বাঙালি পরিচয় আমার ,সে'ই গর্ব সেটাই ভালোবাসা ।।

হাজার রাত্রি নামুক ,কিংবা ঝড় ।ইংলিশে ...
বলতে সবাই পারে ,বাংলা বলাটাও আর্ট।আছে রক্তে মিশে।।




কামরান চৌধুরী




একুশে চেতনা
************

 

একুশ মনে চেতনা আনে
ভাষার বোধ হৃদয় পানে,
রক্ষা করতে মায়ের ভাষা
শহিদ বেদিতে ছুটে আসা।

ফাগুন দিনে দীপ্ত শপথ
বর্ণ শব্দে মোহিত জগৎ।
অতীত সাথে মেল বন্ধন
অন্তর গৃহে ভাষা স্পন্দন।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে
ভাষা মাধুর্য বাহিত সুরে।
গর্ব আমার বাংলা ভাষা
গড়েছি সেথা স্বপ্নের বাসা।

ভাষার জন্য দেশের জন্য
শহিদি মরণ ধন্য ধন্য।

একুশ মনে তারুণ্য আনে
শত্রুর মূলে আঘাত হানে,
দেশের মাটি কপালে ছুঁয়ে
মৃত্যু চুমি যে অহংকারে।

শেকল ছেঁড়া দুরন্ত তরী
নোঙর করে প্রভাতফেরি।

ভাষার তাজ শ্বাস প্রশ্বাস
শিমুল পলাশে নিত্য বাস।
একুশ মানে এগিয়ে চলা
সপ্ত সিন্ধুতে ভাসিয়ে ভেলা।।


কবির কাঞ্চন





একুশ এলে
********


বছর ঘুরে একুশ এলে 
সাহস জাগে মনে
অপার সুখে হয় মিতালি
বাংলা ভাষার সনে।

ভাই হারানোর গান গেয়ে যাই
ফেব্রুয়ারির দিনে
ছেলেহারা মা'র চোখের জলে
বাংলা ভাষা চিনে।

সালাম জব্বার রফিক আরো-
কতো অজানা ভাই
বুকের তাজা রক্ত ঢেলে
শহীদের সম্মান পায়।

একুশ দিলো প্রেরণা মনে
একুশ দিলো আশা
আমার ভাইরা জীবন দিয়ে
নিলো ভালোবাসা।

যতোদিন রবে এই বাংলা
বিশ্বজগৎ মাঝে
পরম শ্রদ্ধায় স্মরিব তাঁদের
সকালবিকাল সাঁঝে।

বিশ্বজিৎ ভৌমিক


"মহান ২১শে"
************



আবার আসিয়াছে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারি---

বাঙালি জীবনে ২১শে ফিরে ফিরে আসে নবজীবনের ডাক নিয়ে।
২১শে ডাক দিয়ে যায় উদ্দীপনের, উজ্জীবনের।
২১শে আমাদের বাতিঘর মননের।
২১শে মহিমামণ্ডিত করিয়াছে বাঙালি জাতিকে,
১৯৫২ সালে মাতৃভাষার মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার দাবিতে।
মিছিলে শ্লোগানে প্রকম্পিত হইয়াছিল সেদিন গোটা বাংলাদেশ।
রফিক, সফিক, সালাম, বরকত, জব্বারের বুকের রক্তে,
যে ইতিহাস রচনা হয়ে আছে,
উহাই বাঙালি জাতীকে---
মাথা নত না করিবার,
চিরকালীন প্রেরণা যুগিয়েছে।।

অসীম মালিক





মা বলে ডাকলে
***************

          
       
মা বলে ডাকলে সোনালি ফসলে
ভরে ওঠে খামার বাড়ি ।
ঘোমটায় ঢাকা লাজুক গ্রাম
পড়ে নেয় পাতার শাড়ি ।

মা বলে ডাকলে উঠানে উঠানে
পড়ে যায় ছড়াঝাঁট ।
রূপশালি ধানে ভরে ওঠে
আদিগন্ত খোলা মাঠ ।

মা বলে ডাকলে দুর্গাদালানে
শুরু হয় সিঁদুর খেলা ।
কোজাগরী চাঁদ আল্পনা দেয়
মরসুমি ফুলের দোলা ।

মা বলে ডাকলে রমজানি চাঁদ
তুলসী মঞ্চের প্রদীপ ।
লক্ষ্মী দালানে ভোরের আজান
গোলাপি রঙের টিপ ।

মা বলে ডাকলে অ আ ক খ
নয়তো ধূমকেতু ।
অমর একুশ হাঁক দিয়ে যায়
বাংলা ভাষার সেতু ।

বিকি দাস




বাংলা ভাষা আমার মায়ের মতন
*************************



একটা গভীর রাত পেরিয়ে যেমন নতুন সকাল আসে। নতুন আলো, নতুন দিনের সূচনায় আমরা ব্রতী হই। ঠিক তেমন'ই আমার বাংলা ভাষা। আমার ঠোঁটে নিয়ে কথা বলবার অধিকার। সারাদিন ইংরাজিতে কথা বলে যখন ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরি, তখন এক বাংলা ভাষার মা তার স্নেহময় আঁচলে আমায় ঢেকে রাখে। তাই তো বাংলা ভাষা তোমায় ভালোবাসি।
কৃষ্ণচূড়া ফুলের মতন আমার ভাষা। আমি যেমন মা'য়ের কাছে আমার সুখ দুঃখগুলি বলতে পারি। ঠিক তেমন'ই আমার বাংলা মা আমার সব কষ্ট বুঝতে পারে।
রোদ্দুরে জবা ফুলের ন্যায় লাল আমার ভাষা, আমার বাংলা ভাষা। আমার প্রথম কথা বলা, আমার হাত ধরে চলতে শেখা আমার ভাষা। বাংলা ভাষা আমার মায়ে'র মতন ।






একুশ
 *****



"পদ্ম পাতায় শিশিরজলে লেখা আছে স্বপ্ন ভোর।
এই প্রজন্ম জাগিয়ে রেখো বুকের মধ্যে একাত্তর।
বাংলা আমার মাতৃভাষা,
বাংলা আমার ভালোবাসা।
গর্ব আমার বাঁচিয়ে রাখি জন্ম থেকে জন্মান্তর।"

রিক্তা মুখার্জি



*অমর একুশে*
************


জননী, আমার গর্বিতা জননী,
দেখ তোমার ছেলের লহু জননী,
গড়িয়ে লাল এই মাটির বুকে,
তোমার গৌরব তুলে ধরতে
তারা জেগেছে শান্তির চিরহরিৎ মুখে।

ভুলেছে জোছনাস্নাত চাঁদনী রাতের ফোয়ারা,
গায়ে মেখে কত রক্ত, ঘাম,বুলেট,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।
ও আমার স্বাধীন জননী,
সমুদ্র নদীর রক্তজলায়
তোমার ছেলেরা রয়েছে সেথায়,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।

আকাশের বিদ্যুৎ ঝলকের মত জেগে ওঠা
তোমার রূপেরঘটায়, প্রকৃতির ঘ্রাণে,
সবুজের ঘোমটাপরা উদার দিগন্তরেখা জননী,
ওরা এনেছে স্বাধীন বাংলায় শান্তির পায়রা,
তুলে ধরেছে পেশিবহুল হাতে
এই মানচিত্র, সবুজের মাঠ,
কৃষাণের লাঙল, পতপত করে ওড়া
লাল সবুজ সমুজ্জ্বল তোমার আঁচল জননী।
ওরা এঁকেছে সুউচ্চ তাল-তমালে
স্বাধীন সূর্য লহুর প্রেম, প্রশান্ত বায়ুর অবনী।

হিমালয়ের শিখর ছড়িয়ে
বাংলার স্বর্গ তুলে দিতে
ওরা জেগেছে বিনিদ্র রজনী,
অজস্র বুলেটের আঘাতে
ঝাঝরা বুকের কাঁপুনি,
মরেও ওরা মরেনি,
মরেও ওরা মরেনি।
হে আমার দুখী বাংলা জননী,
তোমার চোখে অশ্রু মুছে,
ওরা লুটিয়েছে তোমার শিয়রে,
হাসি হাসি দিবস রজনী।

ওরা এঁকে গেছে ভাটিগাঙ স্নিগ্ধ জল হাসি,
শত শত মাইল সুবিস্তৃত তটে,
তোমার ঢেউয়ের বাঁশি,
বীরের সমুদ্রজলে দিগন্ত প্রসারিত
ডানা মেলা গাঙচিল, সারস,
সূর্য ছুঁয়ে সদা জাগ্রত মাঝির তরণী,
ও আমার শান্তির জলপাই পাতা জননী।
জেগেছে ওরা তোমার শিয়রে
হাসি হাসি মুখে দিবস রজনী।

রূপা রায়




একটি দিনের তাৎপর্য
*****************



তাৎপর্যপূর্ণ দিন না দিনটির তাৎপর্য!
শহিদের বেদিতে ফুল না ফুলের
সজ্জায় শহিদ!
   প্রতিটি দিন আসে প্রতিটি দিনের মতো।
সব দিন ই সমান
কেউ জানে না কোনদিন কখন তারিখ হয়ে যায়;
ইতিহাসের পাতার কোনো গুরুত্বপূর্ণ
অধ্যায় সৃষ্টি করে সে।
  জীবনের আয়ু যেমন কল্যানপুত কর্মে
দিনের মাধুর্য তেমন মানুষের বিপ্লবের উচ্ছ্বাসে।
  অধিকারের মান্যতা বোঝার বিড়ম্বরতা,
খসখসে কলমের কালির লেপন কাগজের পাতায়।
দিবসের অন্ত নেই
আর নেই প্রকাশের মাধুর্য;
দিন আসে দিন যায়
শহিদ অমর হয়,
তুমি আমি ফুল দিই তাতে।
রাখতে শহিদের মান
আগুনে জ্বালাও প্রাণ
ঝড় তোলো কোনো প্রভাতে।
  প্রাচ্য পাশ্চাত্যের অপূর্ব মেলবন্ধন
বাংলার শিক্ষক,তার ই সন্তান
ইংরেজী স্কুলের নন্দন;
আভিজাত্যের অহংকারে উচ্চ শিরে কহে-
ছেলেটা আমার বেশ নাম করেছে
ইংরেজী ইস্কুলের ফাষ্ট বয়,
তবে বাংলাটা বিশেষ বোঝে না
তাতে কি আসে যায়?
মানুষের মত মানুষ হচ্ছে
কেবল মাতৃভাষায় দুর্বল।
তা হোক  তাতেই বা কি আসে যায়
মারা পড়েছিলো কিছু মানুষ না হয়!
  বিবেক বন্দী তালকানা তাই
করছি পালন ভাষা দিবস।
বন্ধ দেরাজ খোলো রে সকলে
দ্বন্দ্ব ভুলে তোলো আওয়াজ।
তোমার ভাষা আমার ভাষা
বাংলা আমার মান
সবে মিলে অমর করি
বাংলা ভাষার প্রাণ।।


মো: রফিকুল ইসলাম




আমি শহীদ মিনারে দেখেছি
**********************



আমি শহীদ মিনারে দেখেছি
যেখানে চল্লিশ কিংবা তারও বেশি রক্তের ছাপ।
যারা মা , মাটি ও মাতৃভূমির গর্বিত সন্তান ,
মাতৃভাষার জন্য দিয়েছে যারা অকাতরে প্রাণ
তারা যে আমার স্বপ্নে আঁকা এই বাংলারই বুকে মুক্তির জয়গান ।

আমি দেখেছি মায়ের চোখের জল
বিধবা মায়ের হয়েছে স্বপ্ন ধূলিসাৎ
পিতৃহারা সন্তানের আর্তনাদের চিৎকার
কবে আসবে সেই প্রতিজ্ঞায়...।

জানি ওরা চল্লিশ জন কখনো ফিরে আসবে না,
ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের বুকে তারা যে মৃত্যুঞ্জয়ী বীর।
আমি কৃষ্ণচূড়ার অজস্র পাপড়ি ভালোবাসি ,
ভালোবাসি মুকুল গাছতলায় বসে প্রশান্তি নিতে-
যেখানে ফাল্গুনের পুষ্পিত ফুলের গন্ধে রমনার প্রাঙ্গণ,
আজ ইতিহাস সাক্ষী মায়ের ভাষার জন্য।

আমি ভালোবাসি তাদের কে
যারা বুকে শহীদের স্বপ্ন লালন করে
বাংলাকে দিয়েছে প্রাণ,
রঙিন বর্ণে ধরণীর বুকে।
আমি বিশ্বাস ঘাতকের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই,
যারা দিতে চাইনি আমার মায়ের সম্মান
যাদের বুলেটের আঘাতে বাংলার বুকে রাজপথে রক্তক্ষরণ হয়েছে আমার ভাইয়ের দেহ,
সেসব ঘাতকরা যে এখনো সজাগ ,
কিভাবে বাংলাকে বিলুপ্ত করবে এ ধরণীর বুক থেকে।
বাংলাকে ভালোবেসে করে যাবো আমরা তাদের প্রতিঘাত।

আমি শুনতে ভালোবাসি মুয়াজ্জিনের আযানের সুমধুর সুর,
যে  মধুর সুর শুনে ভাইয়ের ঘুম ভাঙ্গে মায়ের ভাষা রক্ষায়,
ঘুম ভাঙ্গে ভোরের দোয়েল ,কোকিল , শালিকের কন্ঠে,
যে কন্ঠ শুনে রাজপথে ঝড়েছিল তাজা প্রাণ!

কখনো ভুলবো না তাদেরকে , ভুলবো না মায়ের গর্বিত সন্তানদের,
যে বুকে তোমাদের নিয়ে আমার বাংলার জয়গান,
ভালোবাসি তোমাদের স্বপ্ন ,
যে স্বপ্ন লালন করে যাবে আমার এই স্বপ্রাণ ।

মো: আল-আমীন হোসাইন



চাপাবাজ
*********




ভাষার জন্য তোমরা যারা
দিয়ে গেলে প্রাণ,
আমরা কি রেখেছি কভু
বাংলা ভাষার মান।

বাংলার সাথে ইংরেজী হয়
হায় হ্যালো সরি,
এসব কথা বলতে গেলে
লজ্জায় যে মরি।

আম্মু ছেড়ে মাম্মি বলি
আব্বু ছেড়ে যে ডেডি,
ডিজিটালের ছোঁয়া লেগে
শুরু না হয়ে রেডি।

ভাষার মাসে যাদের জন্য
শহিদ মিনারে ফুল,
নাচে-গানে অশ্লিলতা
এটাও একটা ভুল।

হায়রে বিবেক পঁচে গেলি
বিক্রিত তুই আজ,
বাংলাভাষি দাবি করে
হইছো চাপাবাজ।

কামরান চৌধুরী





একুশে চেতনা
*************

একুশ মনে চেতনা আনে
ভাষার বোধ হৃদয় পানে,
রক্ষা করতে মায়ের ভাষা
শহিদ বেদিতে ছুটে আসা।

ফাগুন দিনে দীপ্ত শপথ
বর্ণ শব্দে মোহিত জগৎ।
অতীত সাথে মেল বন্ধন
অন্তর গৃহে ভাষা স্পন্দন।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে
ভাষা মাধুর্য বাহিত সুরে।
গর্ব আমার বাংলা ভাষা
গড়েছি সেথা স্বপ্নের বাসা।

ভাষার জন্য দেশের জন্য
শহিদি মরণ ধন্য ধন্য।

একুশ মনে তারুণ্য আনে
শত্রুর মূলে আঘাত হানে,
দেশের মাটি কপালে ছুঁয়ে
মৃত্যু চুমি যে অহংকারে।

শেকল ছেঁড়া দুরন্ত তরী
নোঙর করে প্রভাতফেরি।

ভাষার তাজ শ্বাস প্রশ্বাস
শিমুল পলাশে নিত্য বাস।
একুশ মানে এগিয়ে চলা
সপ্ত সিন্ধুতে ভাসিয়ে ভেলা।।


মাযহারুল ইসলাম অনিক




ভাষা শহীদের প্রতি
**************




ইচ্ছেগুলো যখন তখন
বলতে পারে কথা,
উর্দূ ঘায়ে মনের মাঝে
হয় না এখন ব্যথা।

শাসকগুলো মাইক হাতে
ছাড়ছে না আর ডাক,
বাংলা ভাষা মনের মাঝে
দিচ্ছে শুধু হাঁক।

বুড়ো -বুড়ি খোকা -খুকু
জানায় মনের আশা,
অ, আ,ক,খ সর্বখানে
বাঁধছে সুখের বাসা।

গলা ছেড়ে ইচ্ছেমতো
গাইতে পারি গান,
বাংলা মায়ের দামাল ছেলে
করলো জীবন দান।

হাজার সালাম জানায় তাদের
লড়লো যারা একা,
রাজপথেতে জীবন দিতে
পায় না ভীতির দেখা।

সেই তো আমার সবার প্রিয়
দেশের রফিক সালাম
তাদের তরে জীবন ভরে
পড়ি দোয়া কালাম।

নিলুফার




*ফেব্রুয়ারি  মানে আনন্দ*
   *******************

ফেব্রুয়ারি মানে হৃদয়  মাঝে একরাশ  আনন্দ!
শীতের কুয়াশা ভেদ করে তেজি সূর্য,
গাছে গাছে নতুন পাতা, নতুন কুঁড়ি ,স্নিগ্ধ,
শোনা যায় কোকিলের কুহু কুহু, আগমনের ধ্বনি ঋতুরাজ
বসন্ত!
কত ফুল কৃষ্ণচূড়া, পলাশ ,শিমুল, টগর, দোলন চাঁপার সুগন্ধ!
আবার আসছে যে আগুন ঝরা মাস
ফাগুনের ঐতিহ্য!
আসছে আট  ফাল্গুন, বরেন্য!
এক দিকে প্রকৃতি নবতর সাজে সজ্জিত!
আর অন্য দিকে সেই
বুলেটের সেই শব্দ---
তারপর ভাই  হারিয়ে চারদিক নিস্তব্ধ,
সালাম রফিক, জাব্বার, বরকতের নিষ্প্রাণ দেহ!!
অনেক শোকে কাতর ,, যেন  স্তব্ধ!
জানাই সকলে তাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য!
তবুও নিজের মাতৃভাষা বাংলাকে একান্ত করে পেয়ে কতনা আনন্দ!
আর
বারো ফাল্গুন---
মাদারীপুরের এক  গাঁয়ে
যে কন্যা শিশুর জন্ম,
মা বাবার অনেক প্রত্যাশিত, সীমাহীন আদরে লালিত
জন্মের পর  যে সে  মাতৃভাষা বাংলাকে পেলো,
তোমরা জানো,
সেও কত  বেশি গর্বিত?
বাংলায় কিছু লিখতে পেরে সে কতটা  আনন্দিত?
ফেব্রুয়ারিতে শুধু শোক  নয আর় --
ধরো, প্রিয় বাংলাকে বিশ্বের সম্মুখে মেলে ধরো-
শোক ভুলে  আনন্দে মাতৃভাষা শেখো, লেখো,
তাহলেই শহীদের আত্মা শান্তি পাবে ,জেনো,
ওরা তো এই ভাষার জন্যে প্রাণ দিয়েছিল!
লিখো, তোমাদের কাব্যে, গল্প, সাহিত্যে
বাংলার
গৌরবের ইতিহাস কথা লিখো।
মনের ভাব বাংলায় লিখে  ভাষাকে করি সমৃদ্ধ,
রবীন্দ্র, নজরুল, সুকান্ত, জীবনানন্দ, নির্মলেন্দু,
ফররুখ, আল মাহমুদ, ডঃশহীদুল্লাহ, হুমায়ূন, সব বিখ্যাত
কবি সাহিত্যিকের মতো!
বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে  বিশ্বের  মানচিত্রে দেই  আসন অনন্য ,
সম্মানিত!
মা, মাতৃভূমি, মাতৃভাষার অনেক অমূল্য!
রেখো না এঁদের অবহেলিত!
বইমেলা দিয়েছে খুলে, যে দ্বার ছিল রুদ্ধ,
বাংলার চর্চার জন্য উন্মুক্ত!
এসো, বাংলা চর্চা করি, বাংলায় দেখি বিশ্ব!
চল, মায়ের ভাষায়  পড়ি, লিখি , বলি, শুনি, বাংলা শিখি শুদ্ধ!।
মায়ের ভাষার সাথে অন্য ভাষা করবো না মিশ্রিত,
করবো না বিকৃত,
মায়ের আঁচলের মতো মাতৃভাষা থাকুক অমলিন, পবিত্র!
চল, বাংলায়
প্রকাশ করি মনের কথা , প্রাণের  ইচ্ছে  যতো,
এ ভাষা একান্ত নিজস্ব!
এই ভাষা আমার !
এই ভাষা তোমার!
আমাদের সকলের!
দু'শো দশ মিলিয়ন মানুষের!
একমাত্র এই ভাষাই পাওয়ার জন্য
উনিশশো বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারি হয়েছিল যুদ্ধ!
পারেনি  মুছে দিতে বাংলাকে , তাড়িয়ে দিয়েছি শত্রু!!
এ ভাষা মুছে ফেলা সহজ নয়‌ অত!
অনেক দামি!
রক্ত দিয়ে কিনেছি!
সতের নভেম্বর ,উনিশশো নিরানব্বই---
সেই যে রফিকুল  ইসলাম
লিখলেন চিঠি ইউনেস্কো :
বাংলা পেল
'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মান'।
জীবন দিয়ে এ ভাষার মর্যাদা রাখবো!
বড্ড বেশি  প্রিয়!
অনেক সাধনা , অনেক ত্যাগে পেয়েছি!
ভালোবাসি বাংলা ,
ভালোবাসি।!

হায়দার আলী লিটন




বাঙ্গাল ও কাঙ্গাল
**************



বাংলা বল্লে বাঙ্গাল বলো
বাঙ্গাল কথা সত্য বটে
বাঙ্গাল আমি কাঙ্গাল নই
ভিন ভাষা নেই ঠোঁটে।

বাংলা বল্লে বাঙ্গাল বলো
ডাকো আমায় ক্ষেত
একুশ এলে চিৎকার করো
বুঝিনা তোমাদের ভেদ।

বাঙ্গাল আমি কাঙ্গাল নই
নই আমি বাংলিশ
উপরে যেমন ভিতরে তেমন
নই তো আমি ইবলিশ।

হয়তো আমি দিন মজুর
হয়তো কোন চাষী
বাংলা আমার মায়ে মতো
বাংলারে ভালোবাসি।

মাইনুদ্দিন আল আতিক






।।মাতৃভাষা প্রেম।।
**************




আমি অনুভব করছি
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন
একুশে ফেব্রুয়ারির রাজপথ
শোষকদের প্রহসন ১৪৪ ধারা।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবির হুংকার
সারিসারি সুপারি গাছের মতো
সাহসী বুকে এগিয়ে চলা ছাত্রজনতার ঢল।
আকস্মিক ছুটে আসা বুলেট বিদ্ধ তাঁদের বুক
গড়িয়ে পড়ছে টকটকে লাল তাজা রক্ত
লুটিয়ে পরা দেহের ছটফটানি
হাতে আটকে আছে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড
কাকের কা-কা রব আকাশে-বাতাসে।
রফিক সফিক সালাম বরকতের দেহ ত্যাগ করে
প্রাণপাখি পাড়ি জমায় জান্নাতের ঠিকানায়,
রাজপথ ভাসে রক্তের প্লাবনে।
আমি মাটির মমতায় শহীদের আর্তনাদ শুনি
ঘ্রাণ শুকি ভালোবাসায়,
প্রতিবাদী হই মুষ্টিবদ্ধ হাতে
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায়।

ইভা আলমাস





" আমি ' ২১ "
**********




আবার এসেছি ফিরে মাগো         
 তোমার শহীদের মাঝে
সব কিছু বিলীন হলেও জানি
আমি রবো সকাল সাঁঝে।
তোমার দামাল ছেলে আমি
শত বারণ উপেক্ষা করে
তোমার ভাষাকে তোমার আঁচলে
বেঁধে দেবার অঙ্গীকারে
নেমেছিলাম রাজপথে।             
  তোমার জন্য দিয়েছি জীবন
মান রেখে গেছি  ভাষার অমন
আজলা ভরে দিয়েছি ও মা
তোমার ভাষার ফুলঝুরি।
অথচ আজ আমায় ভূলে
কি এক মহা উল্লাসে
তোমার ছেলেরা তোমারই কাছে
হিব্রুতে  বায়না করে !
শত অবহেলা সয়েও মা
কি এক অমোঘ টান
বারবার আমায় ফিরিয়ে আনে
এই বাংলার গান ।
আমায় চেনোনি?
আমি '২১ আমি চঞ্চল
আমি বল্গাহীন রাজরোষ
আমি স্বজনহারা দীপ্ত শপথ
বিজয়ের বিশ্বকোষ।
ধন্য আমি এ ধরাধামে
তোমাতে মিশেছি বলে
ও মা, আমায় কখনো দিওনা ফেলে
নতুন ভাষার জলে।
তোমার চেতনায় যুগে যুগে আমি
ফিরবো বাংলার ঘরে
আমি '২১ আমি মাতৃভাষা
বিজয় কেতনে উড়ে ।

তৌহিদুল ইসলাম মিশু




একুশ বন্দনা
**********



তুমি এসেছিলে বলেই হে একুশে_
আমার এ কবিতা বাংলাই লিখা।
নয় এ কবিতা উর্দুই হত আজ।

যদি না থাকত তোমার গায়ে রক্তের ছাপ ;
তবে আজ আমার মাতৃভাষা হত উর্দু।
উর্দুই উর্দুরে গালাগাল দিয়ে ফেনা তুলতাম।

যদি অস্ত্র হাতে না নিত বীর বাঙ্গালী;
তবে আজ আমি রাষ্ট্রদোহী হতাম।
কারণ আমি হতাম স্বাধীনতাকামী।

একুশ তুমি এলে,বাংলাকে করলে বৈশ্বিক ভাষা;
বাংলার জন্য জীবন দিল কত ছাত্র,মজুর,চাষা।
তাই একুশ স্বীকৃত আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা।

ধন্য আমি,আমি বাঙালী_
     বাংলাকে করি সম্মান।
বজ্রকন্ঠে উচ্চারি আজ_
আমি বাংলা মায়ের সন্তান।

মনীষা কুন্ডু



আজও শিহরণ
*************



অমর একুশ ভাষা দিবস,
   তোমায় হাজার সেলাম,
তোমার মূল্যে বিশ্বে আজ,
     আমাদের এত সুনাম।
দেশের জন্যে,ভাষার জন্যে,
   আমরা এগিয়ে সবার চেয়ে,
অন্যায় আপোষ কখনো নয়,
    মরতেও রাজী শিক্ষা দিয়ে।
ইতিহাসের সাক্ষী অমর একুশ,
     ভাষার জন্যে মরণ পণ,
তোমার সংগ্রাম রক্তে লেখা,
     আমার জন্ম হয়নি তখন,
অবাক প্রজন্ম ভাষার জন্যে,
    প্রাণ দিয়েছিল এত লোকে,
অমর একুশ কে ভোলেনি মানুষ,
       গর্ব মোদের মুখেমুখে।
মাতৃভাষা, মাতৃভূমি, মাতৃক্রোড়,
         কেড়ে নিতে এলে,
মহোল্লাসে লড়ে যাব জেনো,
       রক্ত দিয়ে হোলী খেলে।



এম. এ. রোকন




বর্ণমালা
******


.
আজ শ্লোগান হবে মেশিনগানে
পথ কাঁপিয়ে মিছিল হ'বে
ডানা মেলে উড়ে যাবে ভাষার
কপোত।
আজ আঁধারে ডোবা আকাশে
সূর্যালোক পোহাবে রাত,
উত্তাল মিছিল রাজপথ পা'য়ে পা'য়ে
কার্জন হল!
শকুনের ঠোঁটে এলো রক্তের স্বাদ
খুনের ধারাপাত উচ্চারিত হলো
স্টেনগানে-
বৃষ্টি ফোঁটায় বর্ণমালা ভাসিয়ে দিল
রক্তের স্রোতে আমার শহীদ ভায়েরা
জলোচ্ছ্বাস এনে দিল জয়ের।
.
আজ ধ্বংস হ'বে শোষিতের
কালো পাহাড়-
যার আড়ালে চাঁদ, সবুজ দেশ,
বাঙালী জাতি।
অ আ ক খ হৃদ নিংড়ানো বর্ণমালায়
বাঙালী সাজাবে সবুজ বাগান,
রক্তাক্ত হৃদপিন্ডে লাল লাল ফু'লে।
.
আজ আঁকবে মানচিত্র সাহসী বাংলা -
এ আমার অবুঝ বুক; সবুজ বাংলা,
এ আমার রক্তের নদী ; রক্তিম বাংলা,
এ আমার বর্ণমালা; মায়ের ভাষা,
এ আমার স্বাধীন দেশ; সোনার বাংলা,
এ আমার শেষ নিঃশ্বাস; স্বাধীন বাংলা,
এ আমার বহমান কন্ঠ; হৃদয়ে বাংলা।

সীমান্ত চন্দ্র রায়




অমর একুশ
************


অমর একুশ আমার জান ,অমর একুশ আমার প্রাণ ।
কে দিবে না তার সম্মান?
অমর একুশের জন্য রফিক জব্বার রাজপথে জীবন করেছে দান।
কৃষ্ণচুড়ার ডালে ফাল্গুন এসেছে লাল হয়ে।
সালাম বরকত অমর একুশের জন্য দিয়েছে বুকের তাজা রক্ত ডেলে।
অমর একুশের জন্য আজো আমি প্রাণের বর্ণমালা লিখি ।
অ আ ক খ প্রাণের বর্ণমালার ইতিহাস আছে সাক্ষী।
অমর একুশের কথা ইতিহাসে আছে লেখা প্রাণের বর্ণমালা দিয়া।।
অমর একুশ আমার জান অমর একুশ আমার প্রাণ।
অমর একুশের জন্য আজো আমি বাংলায় কথা বলি
বাংলা আমার মায়ের ভাষা ,ভাইয়ের ভাষা।
তাইতো বাংলাকে ভালোবাসি।

শামীমা ডেইজী




উর্বর বর্ণমালা অ আ ক খ
********************




আমার শহীদ ভাইয়ের রক্তে রাঙানো মাতৃভাষা
শহীদ ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত বাংলার ধূসরমাটি
সবুজ ঘাসে রক্তে দুর্গন্ধে ঘ্রাণ ভেসে বেড়িয়েছে আকাশে বাতাসে দূর দূরান্তে.
২১শে ফেব্রুয়ারি....
আমরা কি ভুলিতে পারি তোমাদের লড়াই করে
ছিনিয়ে আনা মোদের বাংলা ভাষার ধ্বনি।
জন্ম নিয়েছি যখন থেকে শুনেছি মোরা মিষ্টি সুরে
মায়ের মুখে অ আ ক খ বাংলা ভাষার ধ্বনি।
বই এ পাতার ভাজে-ভাজে বাংলা বর্ণের শ্লোগান
অ আ ই ঈ বাংলা ভাষার রক্তিম আর্তনাদ,
 শহীদ ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে সন্তানহারা মায়ের
অর্জিত বাংলা ভাষা,
ভাষা সৈনিক শহীদের আন্দোলনের শ্লোগান কানে আসে ভেসে....
যারা করেছে প্রতিবাদ বাংলা ভাষার জন্য ভালোবেসে দিয়ে গেছে বাংলার মাটিতে প্রাণ,
বীর বাঙ্গালীর কণ্ঠে একটাই শ্রোগান রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই।
বাংলার দামাল ছেলেরা রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চেয়ে নেমেছে  আন্দোলনে ভয় করেনি প্রাণের।
বাংলা ভাষার সুর মানুষের কণ্ঠে রবে যতোদিন
বাংলা ভাষা বাঙ্গালীর মুখে থাকবে ততোদিন
বাংলা ভাষা শহীদের স্মৃতি স্মরণ হয়ে রবে।
ভাষা শহীদেরা বাঙ্গালীর হৃদয়ের স্পন্দনে চির অমর হয়ে থাকবে।
পৃথিবী জুড়ে আমার বাংলা ভাষা
শহীদের তাজা রক্তে বর্ণলিপির জমিনে
উর্বর বর্ণমালা অ আ ক খ।

এবিএম মাহাবুবুল ইসলাম




একুশের কবিতা
*************



যে চেতনায়
শিমুল-পলাশ-কৃষ্ণচুড়া ফুল,
হৃদয়জুড়ে ফুটেছিল
দ্রোহের আগুন ফুল।
সেই চেতনার সাহস বুকে
মৃত্যুক্ষুদার গানে,
স্বাধীনতার শপথ ছিল
সাতকোটি ঐ প্রাণে।

সেই চেতনার আগুন জ্বলে
একুশ এলে প্রাণে,
বর্ণমালার মুক্তো ঝরে
কবিতা আর গানে।

একুশ আমার অহংকারে,
একুশ দ্রোহের গানে,
মুক্তিপাগল স্বপ্ন সাজে
একুশ এলে প্রাণে।

শাহ্ আলমগীর

       


          ''রাষ্ট্রভাষা''
             *******
         
   


আমার ভা‌য়েরা রক্ত দি‌য়ে সে‌দিন
রঞ্জ‌িত করে‌ছিল রাজপথ।
উর্দ্দুই হ‌তে হ‌বে বাংলার রাষ্টভাষা
পিন্ডির হুকুম‌তে নেয় মত।

তরতাজা প্রাণ ব‌লিদান‌ে রুখে
সে দি‌নের কা‌লো ধারা।
কেঁপে উঠে মসনদ ক‌রে গদগদ
সকল দাবীতে দেয় ‌সাড়া।

এই মু‌খের ভাষা‌‌ কে‌ড়ে নেবার
সাধ্য ‌যে নাই কাহার।
আমার মা‌য়ে‌দের মুখে শু‌নেই
ফু‌টে স্ব‌রের বাহার।

এ ভাষ‌ায় বর্ণে সা‌হিত্য লি‌খে
কু‌ড়ি‌য়ে‌ছি ভবে সম্মান।
এ ভাষা‌য় দৈনিক ইচ্ছে প্রকাশে
প্রশান্তি পায় যে প্রান।

স্বরে অার ব্যাঞ্জনে লুকে আ‌ছে
সভ্যতা কৃ‌ষ্টি ‌আচার।
শিল্পীর তুলিতে দেয়া‌লে অ‌ঙ্কিত
মুখরিত শ্লোগান বাঁচার।

এ ভাষার বর্ণে বিন্যাস ছড়া‌নো
এঁকে যাই সুখে কল্পনা,
মস্ত অ‌ভিধা‌নে খুটে খু‌টে দে‌খে
অবসান করি‌ জল্পনা।

আমার এ ভাষা আ‌লো আশা
মুক্তো মা‌নিক সোনা।
অগ‌নিত কাব্য উপন্যাস গল্পে
সারা বিশ্বে আছে বোনা।

ফি‌রে আসে বায়ান্নর স্মৃতি নি‌য়ে
প্রতি একু‌শে ফেব্রুয়ারী।
বেদীটায় দাঁ‌ড়ি‌য়ে অশ্রুজলে
ফু‌লে ঢাকি শহীদ ফুয়ারী।

লায়লা ফাতেমা সুমী





একুশ
*****


একুশ তোমায় মনে পড়ে
শীতের মিষ্টি সকালে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
গ্রীষ্মের দাবদাহ বিকালে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
সাগরের বিকট গর্জনে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
শিউলি ঝরা ভোরে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
বর্ষার টিপ টিপ বর্ষনে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
মাঠের ঐ সোনার ধানে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
রাখালের কণ্ঠের গানে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
প্রতিটি বাঙালীর প্রাণে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
আমার প্রাণের মাঝে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
আমার সকাল সাঁঝে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
ফেব্রুয়ারি এলে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
প্রভাত ফেরীর মিছিলে।

মৌসুমী ভৌমিক




একুশে ফেব্রুয়ারি
*****************



ফেব্রুয়ারির অমর একুশ
রক্তে ভেজা দিন
সহস্র প্রাণে উঠেছিল বেজে
মাতৃভাষার বীণ।
পলাশ শিমূলের রঙ মাখা
একুশের রাজপথ
লাল রক্ত মেখে কেঁদেছিল
বিষন্ন জনপদ।
চির স্মরণীয় সেই দিন
একুশে ফেব্রুয়ারি
স্বণাক্ষরে রয়েছে লেখা
'আমি কি ভুলিতে পারি'।
প্রাণের ভাষার মর্যাদা রক্ষায়
উঠেছিল প্রতিবাদ।
অকাতরে বিলিয়ে প্রাণ, বাঙালি করেছিল জয়নাদ।

মনি আহমেদ




এই আমার দেশ ,
***************




এই  আমার  দেশ  রক্তের ঘ্রাণে ,
তৈরী  বাংলা তোমাকে  পাবো  বলে ,
ভালোবাসার  অফুরন্ত  প্রমান  দিয়েছি ,
তোমার   সম্ভ্রম  লুটিয়ে  পড়ার  আগেই ,
বিন্দু  বিন্দু  রক্তে  নিজের  অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি ।

এই  যে  শহীদ  মিনার  মাথা  উঁচু  করে  দাঁড়িয়ে আছে ,
কেমন  একটা  শিহরণ   জাগে  বুকে ------
রফিক ,সালাম ,বড়কত ,এদের  বুকে নিয়ে মাথা
উচ্চু  করে  দাঁড়িয়ে  থাকা  এই  মিনার ,
বাঙ্গালীর  জাতীর  মহান  প্রতিক -----
লাল  সূর্য  মহান  বাঙ্গালীর   আত্মত্যগের প্রেরনা দেয় ।

একবার  মনে  স্কুল  জীবনে  ভাইয়ার  সাথে  শহীদ  মিনারে
প্রথম  যাই  ,আগের  আমরা  সব  ছেলে  মেয়েরা  লিফলেট ,
লিখি রাতে    কাল  ব্যজ  তৈঁরী  করি  সবাই  ,
সকাল  হতে  ভাইয়া  বা  ছাত্র  ইউনিয়ানের  কিছু, ছেলেমেয়ে,
আমাদের  লাইন  করে  আজিমপুর  হয়ে  শহীদ  মিনার ,
খালি  পায়ে  উঠি   ভাইয়া  তখন  শ্লোগান  দিচ্ছিল ।
অসুস্থ  ছিল  এই   শহীদ  মিনারের  পিছনে লুকিয়ে ,
আছে  কত  ত্যাগ  বিরহ  বেদনা ------------

পাশাপাশি  বাংলার  গৌরব গাথা  ,
নিপীরিত  নির্যাতিত  বাঙালি  জাতী  অধিকার বঞ্চিত হয়ে ,
জেগে  উঠেছিল  প্রতিবাদি   সত্ত্বায় -----------।
নিজ  গৃহে  পরবাসি  হয়ে  প্রতিবাদ  প্রতিরোধ করে ,
মৃত্যুর  পথে  এগিয়ে  যাওয়া ----------
ভালবাসায়  জয়  চিরন্তন  ,তাই  চিৎকার  করে ,
বলতে  চাই   মা  তোমায়  ভালোবাসি  জন্ম  জন্মান্তরে।

শান্তনু দে





ভাষা দিবস
*********



যে ভাষাতে শিশুকালে
শুয়ে আমি মায়ের কোলে
বলেছিলাম মা ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

যে ভাষাতে বাউল গান
ভরিয়ে দেয় মন প্রাণ
ভরায় সকল গাঁ ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

যে ভাষাতে শিশু ডাকে
নিবিড় করে জড়িয়ে থেকে
আদর করে মা ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

যে ভাষার আন্দোলনে
জোয়ার এনেছিল প্রাণে
আজও ভুলি না ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।


যে ভাষার আন্দোলন
একুশে ফেব্রুয়ারীর ক্ষণ
হয় না তুলনা ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

রশিদ মোহাম্মদ জিয়া



আমার একুশ
***********



মায়ের শাসন
প্রেমিকার আহ্বান সে তো বাংলায়।
প্রতিবাদের ভাষা
প্রয়োজনে পাশে থাকা সেও বাংলায়।
বাংলা আমার অস্তিত্বে
বাংলা আমার চেতনাতে
বাংলা আমার মূল্যবোধে
বাংলা সর্বাবস্থাতে।

নবীন মণ্ডল






প্রার্থণা
********





       
আমি  জীবন খেয়ার দাঁড়ি হয়ে
               রয়েছি এই ভবে
        তোমার চালানো তরী বেয়ে
             তোমায় স্মরি এবে।।
      পারের নৌকো যেথায় যাবে
      দাঁড়ির কর্ম সেটাই চাবে
      আমার মাঝি তুমি হয়ে
                  ধন্য আমি সবে।।
       বাইব খেয়া তোমার দানে
       তোমার বাণে জীবন মানে
       চারণ বিশ্বে সুখে দুখে
                    তোমার ইচ্ছা যবে।।
      ক্ষণিক বুকে তোমায় পেয়ে
      কাটাই আমি,বেদন দিয়ে--
       ভুলেই থাকি,অশ্রু বিনে
                  তোমায় কেবা পাবে!!
      আমার মাল্লা হয়েই থেকো
      তোমার পাল্লা সদাই দেবো
      তোমার সঙ্গ প্রার্থণা যে
                  তুমিই মোরে দেবে।।

অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়





বর্ণমালার সাথে আমার সংসার 
 ***************************




চেতনামাত্র শব্দ সমুদ্রে ডুবে দেখি --চোখের সামনেই ভাসছে  আমার অজস্র জন্মের প্রেমিকা বর্ণমালা ।
আমি বর্ণমালাকে ভালোবাসি --বর্ণমালা আমাকে . . . . 

সাতপাকে  ঘুরে আমি এখন তার  সাথেই সংসার করি ।

জয়দীপ রায়





বাংলা জানে  একুশে
*******************





    জানলা ছুঁয়ে কার্নিশ ভেদ করে আসা রোদ
     অ লেখা এক পাঞ্জাবীর উপর         
     পাশের বাড়ির ছেলেটা সদ্য স্কুলের জামা পেয়েছে
     কাকু নাক শিটকে  
     ইংরাজি সাহিত্য শেক্সপীয়র ভুলে তুই
     বাংলা শিখবি বেশ বেশ 
     “আম পাতা জোড়া জোড়া 
     বড় হয়ে বেশ চড়িস ঘোড়া” 
     খিল্লি ওড়ালেন এক পোশাকি 
      হুম নামে বাঙালি ই বটে।
     তার কিনা সকালে সুগার ফ্রি 
     দুপুরের মেনু ভাত কাঁচা লঙ্কা
     আর পোস্ত দিয়ে মাখি
  
   সুইট হার্ট ব্যাপী ভ্যলেন্টাইন মাখা 
   আঁতেল শব্দ গুলো  জ্বর গায়ে থার্মোমিটার মুখে 
   ঘুরে বেড়াচ্ছে আর চড়ছে পারদ 
   বাঙালির লোহিত শ্বেত দিনে দিনে কমতে থাকা 
          অণুচক্রিকায় 
   রবীন্দ্র সরোবর বঙ্কিম সরণি র বদলে
   তাদের আড্ডা জমে শেক্সপীয়র সরণির রোয়াকে
নাম না জানা ভোকাল সঙ
ভোকালিস্টদের তালু চেনে 
আমাগো ভাষা রসগুল্লায়
মেঘের কিনারা খোঁজে 
চটি পেতে ফুটবল 
গোল তুই শালা মোহন বাগান আমি ইস্টবেঙ্গল
এলাইচি মাখা রাস্তার ভাঁড় ছোট্ট চুমুক
 রেডিও বলছে একুশে ওই দিন কি দাদা
 আপনার বোঝার কম্ম নয় 
 খাটি বাঙালি রা সেটা জানে। 
 

স্বপন রায়




আমার বাংলা
*************



বাংলা আমার রক্তের কণে কণে,
শিরায় শিরায় প্রবাহিত অনুভব_
প্রথম সে'দিন চোখফোটা দর্শনে,
দেখেছি কোমল বাংলার অবয়ব ৷
বাহান্ন সাল সূচনার অধ্যায়...
রক্তে লিখিত ভাষাশহিদের কথা ৷
লোহিত কণিকা রাজপথে বয়ে যায়,
ভেসে যায় কত জননীর নীরবতা ৷
পাষান গলেছে বেদনার আঁখিজলে,
ঘনঘোর মেঘে তারা ফুটে জ্বলজ্বল ৷
পশ্চিমী ঝড় ফিরেছে আস্তাবলে
রণাঙ্গনের মাথানীচু সেনাদল ৷
জনগণমনে বাংলা থাকুক বেঁচে—
অমর একুশ থাক্ সদা অন্তরে ৷
মুক্তো এনেছে অতল সিন্ধু সেঁচে,
প্রহরী জাগুক প্রতি বাঙালির ঘরে ৷

মালবিকা হাজরা





আনন্দ
******


                
অবকাশে গিয়ে বসি যখন 
পলাশের গালিচায়
চেনা উঠোন থেকে একটি আঁচল 
উড়িয়ে নিয়ে যায়
হলুদরোদের মতো বর্ণমালায়...
কী নামে ডাকি সে মুগ্ধ ছোঁয়ার!
দ্রিমি দ্রিমি মাদলের বোল শুনি
আমার মায়ের ভাষায়।

ফারদিন খান সুপ্ত





  তিন গম্বুজ
 **********





কিচিরমিচিরে অবচেতনার নিদ্রাভঙ্গ -
      প্রহর যে হলো সবে মাত্র।
  উদিত সূর্যের আলোয় আলোকিত ভুবনে,
      জুড়ে গেল  ভোর পাখিদের মেলা।
রবির আবছা আলোর প্রকাশে মনকোণে,
      চেঁপে যাওয়া গহিন আর্তনাদ।
বদ্ধ-গৃহ চৌকাঠ পেরিয়ে পুষ্পকাননে,
  দুরন্তপনায় ছুটে চলা তাজা পুষ্পের আশায়।
টকটকে রক্তিম গোলাপগুচ্ছ বদ্ধ হাতে,
      খালি পায়ে রাস্তার মাঝে হন্টনরত-
    রক্তিমা লাল পাঞ্জাবী পরিহিত।
ফুঁটছে পায়ে কাঁটার ন্যায় ইট-পাথরের কণা,
    বদ্ধহাতে কণ্টকময় পুষ্পকানন পুষ্পসম।
অব্যক্ত ব্যথায় মনে পড়ে গেল,
              ভাষা শহীদদের যন্ত্রণা।
আবুল,বরকত,সালাম,জব্বার-
               প্রাণ দিয়েছেন ভাষায়।
রক্তে মম, পথ রঞ্জিত হওয়ায়,
       স্মৃতিচারিত ভাষা আন্দোলন।
তিন গম্বুজের নিচে তুচ্ছ কয়েক গোলাপ,
      সাক্ষরিত মম রক্তাক্ত পথের।
সাক্ষরিত ভাষা শহীদের রক্তাক্ত-
        অমূল্যচরণ পদধূলিরঞ্জিত পথের।

শুভদীপ সেন





নৈস্তব্ধ
*****




আগুন,তুমি স্বপ্ন পথিক-
রক্ত আগন্তুক,
ঝর্ণাধারায় মৃত জীবন-
সমকামী সব সুখ।
আফ্রিকা'র ঐ কালো শিশু-
পেটে নেই আজ ভাত,
পুঁজিবাদের হাতটা ছাড়ো-
থাকবে না জাতপাত।
বৃক্ষরোপন,বনসৃজন 
পাগলামি ঝুড়ি ঝুড়ি
হীরক রাজার দেশেতেও ভাই,
হীরে গেছিল চুরি।
মিথ্যে কথা বলবে যতই,
ততই তুমি সৎ
সঠিক বিচার চাইতে গেলেই
বন্ধ বিশ্বপথ।
কন্যাভ্রূনের মৃত্যু মিছিলে,
ভোরের সূর্য কাঁদবে
যাবজ্জীবন সঙ্গীরা সব, 
আগামী জোনাকি আনবে।
শহরের সেই সবুজ মাঠে,
কত্তো পায়ের ছাপ
বলতে গেলেই বুঝতে হবে,
ভাবাটাই মহাপাপ।
অট্টালিকা উঠবে গড়ে,
আকাশগঙ্গা ফুঁড়ে
বিনিময়ে আজ আসবে না আর,
একটি পাখিও উড়ে।
প্রেম-প্রীতি ছাত্র-ছাত্রী,
তোমরাই মহাকাল
বুঝিয়ে শুধু দাওগো ওদের,
কত ধানে কত চাল।
যতোই ভাবো এগিয়ে গেছো
রয়েছে ছায়া পিছে,
দূরে তুমি ঠেলবে যতই
ততই আসবে কাছে।
ঘুম আমার মধ্যরাতে,
করছে স্বপ্ন ফেরি
কলম তুমি গর্জে ওঠো,
নেই রেনেসাঁর দেরি!



প্রভাত মণ্ডল





একুশে 
******* 


                    

দিনটা ছিল একুশে
বাতাসে ছিল ফুরফুরে মেজাজ
বিহান বেলায় কে যেন
কৃষ্ঞচূড়া রঙে রাঙিয়ে ছিল নীলাকাশ
গুলদস্তা হাতে ছিল বসুন্ধরা
কি অপূবই না তার সাজ
ছিল চাতকের কন্ঠে সুখমধুর তান
পলাশ রাঙা শাড়ীতে
কোনো গ্রাম‌্য বালার লাজুক স্বরের গান। 

দিনটা ছিল একুশে
কথাও ছিল যেন একটা গুমটানো ভাব
ভ্রমরের গুঞ্জনের মধ‌্যে ছিল প্রতিবাদ
হিজল, শিমূলের বিদ্রোহীর সাজ
বাংলা বাপ=ঠাকুরদার ভাষা
ওই ভাষাতেই বলেছিলুম প্রথম কথা
প্রান দিয়েও রাখবো তার লাজ। 

দিনটা ছিল একুশে
পদ্মার বুকে জলতরঙ্গের উঠেছিল উচ্ছ্বাস
শালিক দম্পতি গুনে চলছিল প্রমাদ
বরকত, জব্বার, সালামের
রক্তে লাল হয়েছিল বসন্তের সকাল
দিনটা ছিল একুশে
ঢাকার রাজপথে রচে ছিল
বাংলাভাষা আন্দোলনের অমর ইতিহাস।

সৈকত বণিক






একুশের ডাকে স্ত্রৈনতা
********************




সেদিন শহরের শীতলতম দিনে
বোধহয় সেই জামরুল গাছের নীচে
নিজেকে আবার হারালাম
তোর কাজলের কাছে...
কিছু প্রশ্ন ছিল, শুকনো
আচ্ছা তোর সাথে মেঘের আহ্লাদে
এখনও বৃষ্টি পড়ে?
কৃষ্ণকলি বলে এখনও কেউ ডাকে তোকে?
আমি তো ভেসেছি তোর কবিতায়
আর তুই আমার ছন্দের আস্কারায়...
সেই শেষ পিরিয়ডের শেষ বেল
কিংবা ভাঙা ঘাটে পা চুবিয়ে জলকেলি-
আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি
হয়ত আমায় খুঁজে চলেছে
স্ট্রিট লাইটের আবছা আলোয়...
আর তুই অনেক অনেক দূরে
সেই জামরুল গাছের নীচে
শহরের শীতলতম দিনে...

তপময় চক্রবর্তী




অবশ বিবশ দিবস
*****************





এ এক অন্য দিন , প্রস্ফটিত এক কৃত্তিম,
নিলয় অনিলদের স্বতঃস্ফূর্ত রুক্তিম !
যেখানে মেঘেদের কোন প্রতিজ্ঞা নেই ,
ঘন আধার এখন বিরাজমান
পিছুটান নেই কোন ...
রক্তিম জলে ধুয়ে যাই প্রাণতরলতা
নীলসরোবরে স্বরবর্ণ ব্যঞ্জন মন!
মাটির শরীর তবুও ব্যাকুল 
ভালোবাসার ভাষার ব্যাথায় আকুল ,
কাটছে সময় এখন অপেক্ষাতে
খুব ক্লান্ত প্রাণ'টা অবশ বিবশ ,
দখল করে অশ্রুর ' ভাষা দিবস ' ;
বুকে মাথা রেখে যেদিন বললে
ধুয়ে মুছে সকল ক্ষোভ গুলো
আর প্রভাতফেরিরর সেই প্রথম সকালে
প্রাপ্তির, তৃপ্তির ছোঁয়া তাই এই মনের গভীরে,
তুমি পেরিয়ে এসেছ অনেক ভাষার বসন্তে
আজ তাতে আর একটি সংযোজন |

রুনা দত্ত





একুশে ফেব্রুয়ারি
 *******************


২১ আমাদের মায়ের ভাষা
২১ আমাদের প্রাণের ভাষা
২১ আমাদের লক্ষ শহীদ ভাইয়ের দান
২১ আমাদের লক্ষ কন্ঠে মিছিলের স্লোগান
 একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা কি ভুলিতে পারি।

২১ আমাদের গৌরব আমার অহংকার
২১ আমাদের রক্তে বিপ্লবের সঞ্চার
২১ আমাদের নির্ভীক প্রতিবাদী গান 
২১ আমাদের সংগ্রামী অভিযান
একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা কি ভুলিতে পারি।

২১ আমাদের প্রানের স্পন্দন
২১ আমাদের স্বাধীনতার জাগরণ
২১ আমাদের মিষ্টি মধুর বাংলা ভাষা
২১ আমাদের মোদের গর্ব মোদের আশা
একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা কি ভুলিতে পারি।

২১ আমাদের রক্তে রাঙানো আন্দোলন
২১ আমাদের জাতীয়তাবোধের প্লাবন
২১ আমাদের ভাইয়ের মৃতদেহে ঢাকা শহীদ মিনার
২১ আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনজোয়ার
 একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা কি ভুলিতে পারি।

 ২১ আমাদের ভালোবাসার মহান মাতৃভাষা দিবস
 ২১ আমাদের চেতনার রঙে রাঙানো স্নেহ পরশ
  ২১জেগে থাকুক সারা পৃথিবীর বুক জুড়ে
  ২১ বাঁচুক বাংলাভাষার স্মৃতির স্মারক  হয়ে
   ২১ বারবার ফিরে আসুক সময়ের সরণী বেয়ে।

    

সোমা বিশ্বাস




বাংলার জয় গান 
************



আমি বাংলার জয়গান গাই ।
বাংলাতে জন্ম নিয়েছি,
বাংলাকে ভালোবেসে যাই ।
আমি বাংলার জয়গান গাই ।
বাংলা আমার, স্বদেশ আমার,
বাংলার আমি সন্তান গো ।
এই ধরণীর স্বর্গসুখ
বাংলা মায়ের চরণে গো ।
আমি বাংলার জয়গান গাই ।
বাংলা তোমার, বাংলা আমার,
বাংলা সবার লক্ষ্য হোক ।
বাংলা ভাষার সহজ পাঠ
আদি পুরাণের পুণ্য শ্লোক ।
আমি বাংলার জয়গান নেই ।