নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বৈশাখে লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বৈশাখে লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

✍️✍️✍️সম্পাদকীয় কলমে ....





এসো হে বৈশাখ - একটি একটি করে দিন যায়, যেমন নতুন উপন্যাসের প্রথম পৃষ্টায় লেখা থাকে গল্পের সূচনা। ঠিক তেমন'ই বৈশাখ আমাদের নতুন গল্পের প্রথম পাতা। বৈশাখ যেমন মিষ্টি আমের গন্ধে মাতিয়ে দেয় ছেলেবেলা। আবার এই বৈশাখে মিষ্টি কবিতার ডালি নিয়ে রবী ঠাকুরের জন্ম। বলতে পারি বৈশাখ মানেই কবিতা, আর কবিতার জন্মমাস। পুরনো সব গ্লানি ভুলে নতুন আলোতে চোখ মেলে দেখি কত পাখি উড়ে যাচ্ছে আকাশে। আমাদের আকাশ আর বারুদের ধোঁয়ায় ঢাকবে না। এই আকাশে রঙবেরঙ মেঘ খেলবে, বৃষ্টি হবে। রিমঝিম বৃষ্টিতে সোনালি ফসল ঢেউ তুলে বলবে " ভালো থেকো বৈশাখ "। মেঠো পথ দিয়ে কোনো এক বাউল তার একতারা বাজিয়ে গান গাইবে " তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো, ছেড়ে দেবো না "। নব বধুর পায়ের আলতা দূর্বাঘাসের উপর ছাপ রেখে যাবে। আর কোনো রাখাল ছেলে শিমুল গাছের নিচে বসে মাটির সুরে বাঁশী বাজাবে।
বৈশাখী আয়জন আর সেই মিষ্টি ফুলের মতো কবিতার গন্ধ নিয়ে হাজির নিকোটিন সাহিত্য ম্যাগাজিন। কবিতার সুগন্ধে এবার হবো আমরা সবাই চাঁপাফুল।
সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই নিকোটিনের পাশে থাকার জন্য ,পাশে থাকবেন এই ভাবেই । বিশেষ ধন্যবাদ কবি বৈশাখী চ্যাটার্জী মহাশয়া কে ,উনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ,আমাদের অতিথি কবি হিসাবে আসার জন্য উনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।।
সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভ নববর্ষের  শুভেচ্ছা ।ভালো থাকবেন সবাই সব সময় ,ভালো রাখবেন প্রিয় মানুষটিকে ।
                                       
       
                                        বিকি দাস
                                       (উপদেষ্টা )
ধন্যবাদান্তে ,
নিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার






সূচীপত্র
******
অতিথী কবি
*********
বৈশাখী চ্যাটার্জী
কবিতা
*******
পবিত্র চক্রবর্তী 
চন্দ্রানী পাল
মিঠু মুখার্জি
মনি  আহমেদ
অmrita
বিকি দাস
মনোরঞ্জন সরকার
সুদীপ্ত সেন
মৌসুমী রায়
সমীর সরকার
মৌসুমী ভৌমিক
নীলা হোসেন
রুনা দত্ত
তনুজা চক্রবর্তী
আলো মন্ডল
অনোজ ব্যানার্জী
সুনন্দ মন্ডল
শরীফ সাথী
অসীম মালিক
বিশ্বজিৎ ভৌমিক
সৈকত বণিক
সুকান্ত মণ্ডল
শুভদীপ পাপলু
দেবাশিস সাহা
অর্ঘদীপ পানিগ্রাহী
জয়দীপ রায়
কাজী জুবেরী মোস্তাক
  রবীন সাহানা
সোহান আহমেদ
দেব চক্রবর্তী
সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র

ছোটগল্প
*******
শ্রী(জুঁই)  ঘোষ
কবির কাঞ্চন

অনুগল্প
*******
জিবেন্দু রাজবংশী


পবিত্র চক্রবর্তী

কৃষি কথা
**********




কোন এক গ্রীষ্মের দিনে -
যখন ধরিত্রী সম্পূর্ণ নিস্তব্ধ একাকিনী ,
যখন , বিদ্ধস্তা - বিবস্ত্রআ -
ভালোবাসার শেষ জলটুকু শুষ্ক -
তখন তোমায়,সংকোচে সংগোপনে 
রোপণ করেছিলাম আলতো দুটি 
আঙুল দিয়ে ,আমার মনের মাটিতে ;


তারপর ! তারপর যখন তোমার কচি কলাপাতার মতো ছোট্ট দুটি হাত আমার নির্জীবতাকে সজীব করলো , তখন -
বিস্ময়ে বললাম -"এত প্রাণশক্তি কোথা হতে তুমি পেলে ?" উত্তর পেলাম না ;
অনুভব করলাম সেদিনকার নরম দুটি হাত অজস্র শাখায় বিভক্ত হয়ে -
গভীর শিকড় দিয়ে মাটির কোনো এক অতল থেকে শুষে নিচ্ছে বিন্দু বিন্দু ভালবাসা ।


এসব কবেকার কথা ; জীবনের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ,হয়তো শেষ বসন্তের শেষ হাওয়াকে নিচ্ছি প্রাণভরে  ।
একটা একটা করে কত সূর্য ডুবলো ,
অঙ্কুর হল মহীরূহ ; হলদে পাতায় কত কথা ;আমরা দুজনে কথা বলি,চিন্তা করি,
সবাই যেমন শেষ দিনে শেষ কথা বলে...।


সেইবার শরতে,তাকে দেখেছিলাম ভোরে সদ্য স্নাত হয়ে - কপালে চন্দনের ছোট্ট ছোট্ট ফোঁটা পরে মাথা নত করে দাঁড়িয়েছিল ; আহা! কি ন্যাকাটাই না লাগছিল । নরম দুটি গালে হাত রেখে বলেছিলাম-" কি গো,অমন করে দাঁড়িয়ে কি দেখছো?" সেদিন তোমার কি হাসি ;


খসে পড়ছিল চন্দনের ক্ষুদ্র টুকরো -
আমার মনের মাটিতে ! আর যখন চোখ খুললাম ; ওগুলো কখন অগোচরেই হলদে পাতায় হয়েছে পরিণত ।


হয়তো,কোনো একদিন প্রবল ঝড়ে ঝরে পড়ব আমরা - এই মাটি থেকে অন্য কোনো এক মাটিতে ! হয়তো সেদিনের রোপিত স্মৃতি হয়ে যাবে টুকরো টুকরো -
স্মৃতিগুলো সব বিস্মৃতি হয়ে যাবেই ।
তবুও থাকবো আমরা এরই মাঝে -
ধরার হৃদয় পিঞ্জরে ,
আমাদের ঝরে পরা স্মৃতির
নতুন বীজের মাঝে নব সূর্যের অপেক্ষায়॥

বৈশাখে'তে বৈশাখী

বৈশাখে'তে বৈশাখী ...




প্রশ্ন :১:- আপনার কাছে কবিতা কি ?

উত্তর:- মনের মধ্যে জমে থাকা এমন কিছু কথা যা হয়তো আমরা মুখে বলে ঠিক বোঝাতে পারিনা -আমাদের জীবন -ভালোবাসা -চাহিদা -পূর্ণতা আর অপূর্ণ চাপা কষ্ট গুলো আমার কাছে কবিতা । কবিতা আমার প্রেম । অফুরন্ত জ্যোৎস্নায় ডুব দেওয়া গল্প আমার কবিতা । আমার মনের নষ্ট নেশার কথা আমি কবিতায় বলি । ঘটে যাওয়া প্রতিদিনের ঘটনা যা সমাজকে ছোবল মারছে তার প্রতিবাদ হয়তো আমার কাছে কবিতা ।


২:-আপনার প্রিয় কবি কে ?আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ?
উত্তর:-বর্তমান সময়ের শ্রীজাত -তসলিমা ভালো লাগে -জীবনানন্দ খুব প্রিয় কবি ।

কবিতার অনুপ্রেরণা হয়তো জীবনবোধ ।

৩:-কেন লেখেন আপনি কবিতা ?

উত্তর:-কবিতা যে কেন লিখি ঠিক জানি না,  -তবে ভিতরের একটা তীব্র আকুতিই হয়তো কবিতার জন্ম দেয়। ভিতরটা যখন দমবন্ধ লাগে কবিতায় নিঃশ্বাস ভেসে আসে । সবথেকে বড় কথা ভালোলাগে -ভালবাসি তাই লিখি ।

৪:-আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্য গ্রন্থের  নাম (প্রকাশিত/ অপ্রকাশিত)

উত্তর:- প্রথম কবিতার নাম এই মুহূর্তে মনে নেই । অনেকটা ছোট বয়সেই খেয়ালের বসে শুরু করেছিলাম।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ বলতে একটি যৌথ সংকলন -'কাব্যমাস' ।
আর একক কাব্যগ্রন্থ -স্বপ্ন বুননের ফাঁকি।

৫:-কবিতা/কবি সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ ?

উত্তর:- কবি -কবিতা আর পাঠক একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে । কবি- কবিতা লেখেন । পাঠক যদি না থাকে তবে হয়তো কবিতা লেখাই ব্যর্থ হয়ে যায় । একটি কবিতা ও তার সাথে যুক্ত কবির ভাবনা তখনই সার্থক হয় যখন পাঠক তার বিচার করে ।

৬:-ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যে জগতে কতখানি গুরুত্ব রাখে ?

উত্তর:- বর্তমান সময়ে আমরা ফেসবুকে কবিতা লিখি। প্রথম প্রথম এটা খুব তিরষ্কার এর বিষয় থাকলেও আমার মনে হয় বাংলা সাহিত্যে এর একটা গুরুত্ব পূর্ন জায়গা তৈরী হবে । এখন অনেক বড় বড় কবি ফেসবুক এ কবিতা লেখেন ।ফেসবুকে কবিতা লেখার ফলে যে কবিতা লিখছি তার তৎক্ষনাৎ মূল্যায়ন হয় ।বর্তমান সময়ের কবিতার মূল্যায়ন বেশ কিছু বছর পর যখন হবে -তখন ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নেবে বলেই আমার মত ।এবং অনেক নতুন নতুন লেখক এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যেও উঠে আসবে ।

৭:-ছাপা ম্যাগজিন ও ব্লগ ম্যাগজিন বা ওয়েব ম্যাগজিনের মধ্যে কার বেশি গুরুত্ব ? এবং কেন ?

 উত্তর:- গুরুত্বের দিক থেকে বিচার করলে অবশ্যই ছাপা ম্যাগাজিনের গুরুত্বটা বেশি। একটি বইয়ে ছাপা আকারে নিজের কবিতা দেখতে সকলের ভালো লাগে । কবিতাটিও বইয়ে প্রকাশ পেলে গুরুত্ব বেশি পায় । ব্লগজিন আর ওয়েবজিন এর চাহিদা যদিও সমান তালে বাড়ছে । এতে পাঠক একটি ক্লিক করেই পড়তে পারে কবিতা বা গল্প ।সব সময় ইচ্ছে থাকলেও একটি ম্যাগাজিন কেনার সময় হয়ে উঠে না । সব জায়গায় সব ম্যাগাজিন পাওয়াও যায় না ॥

৮:-আজ কাল অনেক কবি জন্ম নিচ্ছে ,কেউ বা প্রেমে আঘাত খেয়ে ,কেউ বা ব্যর্থতায় আবার কেউ কবি হবে কবিতা লিখছে , কিন্তু যখন লেখা ছাপাতে চাইছে টাকার অভাবে বই করতে পারছে না ,বা করলেও বই বিক্রি হচ্ছে না , মানুষের এই বই বিমুক হওয়ার কারণ কি ? বইয়ের অভিমুখে আনতে গেলে কি করা উচিৎ বলে আপনার মনে হয় ?

উত্তর:- আজকাল অনেক কবি উঠে আসছে একথা সত্যি -আর এটাও বাস্তব সকলের বই ছাপাবার ক্ষমতা নেই । ফলে প্রতিভা থাকলেও সব কবি পাঠকের নজরে আসেনা  বা নতুন কবিদের বই পাঠক কিনতেও চায় না । ফলে বই ছাপলেও তার বিক্রি হয় না ঠিক করে ।
পাঠক অবশ্যই আছে বই বিক্রিও অবশ্যই হয় । সব বই প্রচারের আলোয় সেভাবে আসে না আর অনেক সময় পাঠক যা চায় তা হয়তো লেখায় সেভাবে পায় না ফলে একটা বিরূপ মনোভাব তৈরী হয় ।পাঠককে বইয়ের অভিমুখে আনতে হলে অবশ্যই লেখার মান যথেষ্ট উন্নত হতে হবে,  -বিশেষ করে পাঠক কি চায় সেটা মাথায় রাখা দরকার । আর দ্বিতীয় হল বইটির ঠিক মতো প্রচার ।

৯:-উত্তরাধুনিক কবিতা বলতে কি বোঝেন ? অনেক জনই আজকাল কিছু কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে বলছে এটা উত্তরাধুনিক কবিতা , কিন্তু কবিতা পড়তে গেলে দাঁত ভাঙার উপক্রম কিংবা মাথার উপর দিয়ে চলে যায় সেক্ষত্রে আপনার কি মতামত ?

উত্তর:- উত্তরাধুনিক কবিতার সঠিক কোন সংজ্ঞা হয়তো সেভাবে বলা কঠিন । একটা সময় এসেছিল যখন আধুনিক কবিদের জন্ম হচ্ছিল । তাঁদের কবিতায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছিল পুরনো চিরাচরিত প্রথা বাদ দিয়ে । উত্তরাধুনিক হচ্ছে হয়তো আরও একটু আধুনিক হয়ে ওঠা -কোন নিয়মের বাইরে গিয়ে একান্ত নিজের মতন করে ।শৃংখলা পরায়ন না হয়ে -নিজের গতিতে নিজের ছন্দে -হয়তো নিজের দ্বন্দ্বে ।
তবে কবিতা যদি পাঠকের অন্তর ভেদ করতেই না পারে তবে তা কিসের কবিতা । সে আধুনিকই হোক আর উত্তরাধুনিকই হোক । কবিতা হতে হবে সহজ -সুন্দর -প্রানছোঁয়া -। দুচারটে জটিল ভাষা দিয়ে হয়তো কবিতার ওজন বাড়ানো যায় । তবে যা পাঠক গ্রহন করতে পারে না তার গুরুত্ব কতখানি বলা কঠিন ।

১০:--গদ্য কবিতা ও গদ্য-পদ্য কবিতা কি ? গদ্য কবিতায় কি ছন্দ বা নির্দিষ্ট তাল থাকার প্রয়োজন নেই ?
উত্তর:- পদ্য বলতে এটি ছন্দমিল যুক্ত হবে । সহজ সরল হবে এর প্রকাশ ।
গদ্যকবিতায় ছন্দ মিল থাকে না ।শব্দের মধ্যেই শব্দ নিয়ে খেলে এই গদ্যকবিতা ।
মনের গভীর বোধ এর প্রকাশ যা কখনো সম্পূর্ন ভাবে পাঠকের কাছে ধরা দেয় না ।

হয়তো গদ্য কবিতায় অন্ত্যমিল থাকে না তবে নিজস্ব একটা ছন্দ আর তাল না থাকলে হয়তো কবিতা- কবিতা হয়ে ওঠে না ॥


কিছু কবিতায়
::::::::::::::::::::


অস্থির সময়
**********


চারিদিকে এখন শুধুই কালো রাত ।
বিষাক্ত হচ্ছে নিঃশ্বাস গুলো প্রতি মুহূর্তে ।
খুবলে খাচ্ছে ভালোবাসা গুলো সম্পর্কের মিষ্টি স্বাদ ।
পৃথিবী খুবলে খাচ্ছে মাটি ।
খুবলে খাচ্ছে দেহ ।
কিছু টানাটানি -মানহানি । শহরে বাড়ছে ভয় ।
অনৈতিক কিছু চরিত্র দিনরাত হুংকার দেয়।
গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে ।
রক্ত চুষে খায় ।
ভালোবাসা বোবা ঘরে বন্দী ।
ছটফট করছে একটু মুখ তুলে নিঃশ্বাস নেবার ।
প্রতিমূহূর্ত প্লাবন নিয়ে আসে ।
মৃত্যু সলিলসমাধি ॥
কালো রাত বড় হয় দীর্ঘ হয় ॥

               
 
যা শুরু হয়নি
************


শুরুটা তেমন করে কোনদিন হয়নি ।
মাঝের কিছুটা সময় তবুও পেরিয়েছি সেই না শুরু হওয়া গল্পের হাত ধরে ।
একটা রাত আর দিনের মধ্যে যতটা পার্থক্য থাকে ঠিক ততখানি ফারাক ছিল  বোঝার আর বোঝানোর ।
তবু গল্পের ইতিটা বড্ড বেশি দাগ কাটলো মনে ।
গল্পের শেষে পিছন থেকে ছুরি মারে কাহিনী ।
সেখানেই মৃত্যু অপর পক্ষের ।
যদিও এমন করে শেষ করার বিশেষ কিছু দরকার ছিল না ।
কারন কাহিনী তো কোনদিন শুরুই হয়নি।
     
             

প্রয়োজন
*********


নিঃশব্দ শূন্যতার বুকে রোজ হাজার চিৎকার ডুকরে ওঠে ।
গরমে পুড়ছে ,
বৃষ্টিতে ভিজছে ।
দমকা হাওয়া এসে উড়িয়ে নিয়ে যায় অস্বিত্বের সাদামাটা খোলস ।
মাটিটা বড্ড নরম মনে হচ্ছে আজ ।
পা ঢুকে যাচ্ছে বারবার ।
এটা হবার ছিল জানত সে -
তবুও এতদিন চলেছিল সাবধানে ।
কিন্তু এবার একটু শক্ত মাটির প্রয়োজন ॥



                   অন্তবিহীন
                   *********


আমায় নিবিড় করে ভালবাস একান্ত অবশেষ
তোমার বুকের দোদুলদোলায় অন্তবিহীন
আমি তো রয়েছি বেশ -
তুমি আমার কমলেশ ।
সুর লহরীর ঝরনা তুলেছ আছড়ে পড়েছ বুকে ,
সীমাহীন তুমি গতিহীন তুমি ভালবেসে গেছ সুখে -
ঘনিষ্ঠ সুখময় যত অনুভবে রঞ্জিত
আরও ঘনিষ্ঠ আরও যে নিবিড় কামনায় সিঞ্চিত ,
বিন্দু বিন্দু ভালবাসা রসে সাগর দিয়েছ ভোরে
সেই রসের সাগরে সাঁতরে মরেছ নিজেকে উজার করে -
প্লাবন এনেছ কুল ভাসিয়েছ অসুখের সমাবেশ
সীমাহীন তুমি গতিহীন তুমি আমার কমলেশ ॥
                                   
           

               চুম্বন
              *****

দুটো ঠোঁট দুটো ঠোঁটে ছুঁয়ে যায়
যেমনটা সেদিনের ছোঁয়াটুকু ।

ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বুঝেছি
নীল মৃত্যুর আঠালো নির্যাস
বিষ ছিল ছুঁয়ে যাওয়া- বিষ ছিল শ্বাস ॥




সাক্ষাৎকারে ও সংগ্রহে : জ্যোতির্ময় রায়
         
         

শ্রী(জুঁই) ঘোষ

বৈশাখ
*****



ওর শরীরটা বড্ড ক্লান্ত লাগছে। ভ্রূক্ষেপও নেই যে পাঁচ মাইল পেরিয়ে এসেছে সে। পা দুটো যেন অবশ হয়ে আসছে। তৃষ্ণা নেই, ক্ষিদেও পায়না। চোখে ঘুম নেই। একটা সময় ওর খেয়াল হয়, সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে "মা" বলে চিৎকার করতে যায়। পারে না। কেউ কি দেখতে পাচ্ছে না তাকে? নাকি সে জনবসতি থেকে দূর দূরান্তে পাড়ি দিয়েছে?কোথায় চলেছে সে? পায় না কেউ দেখতে। এসব ঘটনা কেউ দেখেও দেখে না। কুমারীর শরীর রক্তে ভাসা মানে সমাজে আলোড়ন তোলা। যেন কোনো সুনামির উৎপত্তি হয়। সৃষ্টিস্থল কিনা নারীশরীর। নারীখাঁজ।



আজ চৌঠা বৈশাখ।
হ্যাঁ, আজকের দিনেই তো শৌর্য্য জানিয়েছিল তার মনের কথা কমলিকা কে। বৈশাখেই ভরা শ্রাবণ উঁকি দিয়েছিলো দুজনের মাঝে। তোলপাড় হয়েছিল দুটো হৃদয়। কালবৈশাখীর ঝড় তাদের নিয়ে গিয়েছিল কোনো এক অদূর ভবিষ্যতে। কোনো এক আদরবাসায়।
 পেরিয়ে গিয়েছিল চারটে বছর। স্বামী, সন্তান... ভরা সংসার কমলিকার।

আজ শৌর্য্যর জন্য উপহার কিনতে গিয়েছিল কমলিকা। শরৎ সমগ্র।


বইটা হাত থেকে পড়ে গেল। জন্মদিনে শৌর্য্যর উপহার দেওয়া ময়ূরপঙ্খীরঙা শাড়িটার অর্ধেক অংশ মাটিতে পড়ে আছে। রাস্তার ধূলোয় গড়াগড়ি খাচ্ছে। কমলিকার পরনে শুধু সায়া ব্লাউজ আর  শাড়ির অর্ধেক অংশ। ওর উন্মুক্ত শরীরের প্রতিটা খাঁজ ওরা চাখছে। স্বাদ জানেনা। তবু চাখে। নারীশরীর বলে কথা।

ওদের মধ্যে রয়েছে সৌভিক। কমলিকার পুরোনো বন্ধু। প্রেমপ্রস্তাব দিয়েছিল কোনোকালে।

কাউকে না পাওয়ার যন্ত্রণা যে মানুষকে এতো দূর টেনে নিয়ে গিয়ে আছড়ে ফেলে দিতে পারে, তার অভিজ্ঞতা ছিলো না কমলিকার।

একটা গুদাম ঘরে নিয়ে গিয়ে ওরা সবাই মিলে কমলিকা কে ছিঁড়ে খায়। ও পারে না আটকাতে। অবশেষে সকলের চোখে ধূলো দিয়ে পালিয়ে আসে এই জনবিরল এলাকায়। হ্যাঁ জনবিরল। বাজার একটা। তবুও জনবিরল। সবাই যে অন্ধ। কেউ কমলিকা কে দেখতে চায় না। পাশ কাটিয়ে চলে যায়।

কমলিকার চোখ দুটো শুধু খুঁজে চলে সেই বাড়িটা। যার প্রতিটা ইঁটে সাজানো সংসারের গন্ধ লেগে আছে। পুরোনো সংসারটায় আর ফিরে যেতে পারে না। লজ্জায়, ভয়ে, সঙ্কোচে। সে যে নষ্ট মেয়েমানুষ। বোশেখী ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া গাছের মতো।

চন্দ্রানী পাল

বৈশাখী ঝড় 
*********


বৈশাখী ঝড়,মন তোলপাড়,
ঝরা বকুলের গন্ধ,
মনের পালে লাগুক হাওয়া
কোরো না দুয়ার বন্ধ।

বৈশাখী ঝড়,মন তোলপাড়,
মনের মাটিতে বৃষ্টি,
মেঘ সরিয়ে আসুক আলো
হোক নব সৃষ্টি।

বৈশাখী ঝড় ,মন তোলপাড়
ইচ্ছে পালে হাওয়া,
সবার সাথে গলা মিলিয়ে
খুশিতে গান গাওয়া।

বৈশাখী ঝড়,মন তোলপাড়
মনটা পুড়ে খাক,
যাবার যে,সে যাবেই চলে
থাকার যে,সে থাক।।

মিঠু মুখার্জি

তুমি ডাকলে
*********



তুমি ডাকলে এইইই --
আমি আনমনে উঁহুঁ-
এক ঝাঁক বুনোহাঁস
ডানা মেলে উড়ে গেল নীল আকাশে ।
কি জানি কি ভেবে!
অরণ্য কাঁপিয়ে আমরা হেসে উঠি
যেন ঝড়ের লুটোপুটি
অরণ্য!মহুল বনের অরণ্য।
কি বন্য!
তোমার দুচোখ আমার চোখে নিবদ্ধ
লজ্জায় আমি জড়সড়
তোমার তখন লতানো দাঁড়ি
আমি তখন অষ্টাদশী
আকাশে ছিল চতুর্দশী চাঁদ
কোথায় গেল!সেসব  দিন আজ?
বললে তুমি যাবি? ঝুমরিতিলাইয়ার বাঁধ?
দে তোর হাতটা আমার হাতে আজ।
মুখ বাঁকিয়ে আমি বলি
কি হবে ওখানে?
বললে তুমি, হাজার পাখির
মেলা সেখানে।
দেখবি তাদের সুখের ঘরকন্না
শিখবি কতো জানা অজানা।
বাঁধের ধারে গিয়ে দেখি
রঙবাহারি পাখির জটলা
যেন শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা।
হাতে তালি মেরে আমি বলি বাহ্!
এসব তো আমার জানা ছিল না?
সব কিছু হল জানা বোঝা
কত অচেনা কে হল চেনা ।
শুধু হাতটি ধরে যে চেনালো
আজকে সেযে বড় অচেনা!

মনি আহমেদ

বৈশাখ এসো
**********



বৈশাখ আমার  জীবনে  জুড়ে আছে ,
তাই  বৈশাখ  আসলে মনে  পরে যায় ,
সব কথা  সব  ভালোবাসা ।
শাহবাগের  কর্নারে  আমারা
মঙ্গলযাত্রা  দেখবো  বলে  দাড়িয়ে আছি ,
চুতুর্দিকে  গান  বাজছে ----------------
 রবীঠাকুরের "এসো  হে  বৈশাঁখ  এসো  এসো "
নূতন  লাল  পারের  সাদা  শাড়ি  পড়েছি ,
প্রথম  শাড়ি  পড়ার  আনন্দ  আলাদা ।

হটাৎ  আমার  এক বন্ধু  বললো ,
দেখ  এই  ছেলেটা  কোলকাতার ,
তোদের  পাড়ায়  থাকে  ।
বেখেয়ালে  মুখের  ঘাম  মুছলা্‌ম,
মঙ্গল  শোভাযাত্রা  আসছে  ।
সমস্ত  অমঙ্গলের  প্রতিবাদ  চিহ্ন নিয়ে ।
চতুর্দিকে  ঢোল  বাজছে  -----------
সাদা  লাল  পাড়ের শাড়ি  সাদা  লাল পাঞ্জাবী ,
কি দারুণ  লাগছে  সবাই কে ।

বাসায়  আসার  সময়  দেখলাম  ,
সেই  ছেলেটা  আমায়  দেখছে ।
পহেলা  বৈশাঁখ  বাংলা  যেন হাসছিল ।
মন  বড়  অনমনা  ছিল -------
মুঠো  মুঠো  মেঘের  মতো  ছিল  ভাললাগা ।
হটাৎ  একদিন  আমার  এক ছোট  ভাই
এসে  বললো  তোমাকে  পাড়ার ভাইয়া ,
এই  বই টা  দিতে  বলেছে।

হৃদপিণ্ডের  শব্দ  ফুসফুসের  চাপ
সেই  বইটা  ছিল  রবীঠাকুরের
সঞ্চয়িতা  কিছু  বেলি  ফুল -----
ভিতরে  লিখা  তোমায়  কত  টা
রবীঠাকুরের  সঞ্চয়িতার  মত
প্রমান  আমার  কাছে  নেই  ।
তবু  যেন  অনেক  অনেক  ভালোবাসি ।
অল্প  বয়স  প্রেমের  মেঘলা  দিন আসে ,
সারা  বাংলা  হেসেছিল সেইদিন ।

প্রথম  ভালো  লাগা মুগ্ধতার  বীজ
বাতাসে  গাঢ়  হতে  থাকে  বনজ  গন্ধ ,
রাতের  আকাশে  নেমে  আসছে
স্বপ্নের  জলাশয়  হয়ে ।

অmrita

অতীত
*****



চূড়ান্ত ধাক্কাতে শরীরের সমস্ত উপদ্রুত অঞ্চলে অবরোধ জারি হয়।।

মাথায় সম্প্রচারিত খবর আসে,,'সাক্ষ-প্রমাণ লোপাট,আসামি ফেরার'।।

ওলট পালট খাতা,পেন। আফসোসে ভিজে যায় শুয়ে থাকার ধ্বংস-চাদর। আচমকা বিদ্যুত-ঘুম ভেঙে যায়,,,,। এত খোলামেলা কেন শরীর?

এত খুলে রাখা কেন? টানটান পদ্ম-বুকে সাফ লেখা দেখতে পাই 'আসামি ফেরার'। ফেরারি ব্যক্তিগত হাতের ঘ্রাণ।।

তারপর থেকে বিশ্বাস-ঘরে পাসওয়ার্ড-লক লাগিয়ে বাড়ি ফিরি উল্টোরথের দিন, মনে মনে আউরে যাই চোয়াল-চাপা হুমকি-মন্ত্র,,
          তুমি ক্ষমা চাও,ক্ষমা চাও হে অতীত।।
                                              

বিকি দাস

রাধাচূড়া 
******


তাহলে তুমি'ই ছিলে সেই রাধাচূড়া?
একা একা বৃষ্টিতে ভিজেছিলে।
বৃষ্টি - তো তোমার চোখেও জমে,
শুধু তুমি বুঝতে দাও না।
রোদ্দুরে পুড়ে যাওয়া মন তোমার
তবুও কত চকচকে করে.....
এমনিতেই হীরে কখনো গলে না,
আর আগুন তোমায় পোড়াবে কি...?
আমার যে একেলা একটা সিন্দুক আছে,
তোমার হীরের মন টা দাও ?
লুকিয়ে বাঁচিয়ে রাখি।


মনোরঞ্জন সরকার

তারপর আর আসোনি...
*******************



রোজ দেখি এরাস্তায় যাও
কাধে ঝোলানো লালনীল ওড়না। পিঠ ব্যাগ। বইখাতা।স্কেল।
টিউশনে বুঝি? বলতে চেয়েও বলা হয়ে ওঠেনি, কিভাবে
এপথে যেতে যেতে বারবার, মারিয়ে যাও এ-বুক তুমি আর, তোমার কন্যাশ্রী সাইকেল।
ভুলকরে যেই দিন প্রথম চোখে রেখেছিলে চোখ
চলার গতি দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়ে। কি নির্মমতায় মারিয়ে গেছ বুক। তুমি জানো?
ভেবিছিলাম এইতো প্রেমের শুরু। সেদিন থকে তুমি ভীষন সাবধানে
ফেলেছো পা হয়তো দুরুূুদুরু। চোখাচুখির করোনি ভুলচুখ আর কোনোদিন কখ্খনো।
তারপর হঠাত্ যেদিন তুমি নতুন সাজে এলে
হাটুর নীচে দোপাটি রং ফ্রক,
বলেছিলাম।কি দারুন লাগছে তোমায়!
দেখেছিলাম। ভেতর ভেতর ভীষন লজ্জাতে লাল হলে।

তারপর পুজো এলো।
ছুটি ছিল। সেই থেকে আর এ-পথে আসোনি।
না বলাই থেকেছে মনের কথা। শোনাও হয়নি-
ভালোবেসেছিলে কি বাসনি...
আমি এখনো শুধু সেই ভুলের মাশুল গুনি
দু-কানেতে বাহারি হেডফোন,
নচিকেতার নীলাঞ্জনা শুনি।

সুদীপ্ত সেন

 গ্রীষ্ম গরম
::::::::::::::::



জলের তলাই মাছের খেলা কিলবিলিয়ে
আমড়া গাছের পাতা পরেছে জল ছুঁয়ে থাক

চিলেরা কেমন বৃষ্টি আশায় ডাক দিয়ে যাই
পায়রা গুলো গোলির গায়ে ঘর করেছে

ছাদের নীচে গরম সরে জলের ফোটা
গাছের থেকে বাষ্পমোচন ধোঁয়ার মতো
দূরের পাখি ফিরছে দেখো শান্ত হাওয়ায়
চাতক গুলো তাকিয়ে থাকে জলের ফোটায়।

অনেক পরে সাঁঝের তারা,মধ্য আকাশ
জোনাকি পোকা, নিভিয়ে গেলে বিজলিবাতি
আমার থেকে অনেক দূরে ঝি'ঝি পোকা
ছাদের গায়ে বেলি ফুলের গন্ধ একা।

তাল পাতাতে বানিয়ে ছিলাম হাত পাখাটা
এক নিমেষে নামিয়ে দিলাম ছাতুর থালা
সেদ্ধভাতে গল্প গুলো শান্তি খোঁজে
রিলিপ মাখি গুড নাইটে চোখটি বুজে।

মৌসুমী রায়

বৈশাখী সাঁঝবেলা 
~~~~~~~~~~~~~~~




ছুটছে ট্রেন ছুটছে সাথে
ধানক্ষেত,নদী জঙ্গল ঘরবাড়ি
নামছে সাথে আমার প্রিয়
বৈশাখী সাঁঝবেলা
আমার দিনের সাথে আড়ি।
নকশা কাটা আকাশটাতে
নানান রঙের খেলা
আশায় আছি কবে আমার
কাটবে এমন একাকী
বৈশাখী সাঁঝবেলা।
নদীর জলে সুখের আঁচল
ভিজবে খেয়াল খুশি মত
পায়ে কাঁটাতার আর বেঁধোনা
দেখো বাড়ছে পায়ের ক্ষত।
শব্দগুলো মনের ভিতর
ঝড় ওঠাতে চায়
পালিয়ে যাবই অচিনপুরে
যাতে কেউ না খুঁজে পায়।
হঠাৎ নামা বৃষ্টি আমার
সাঁঝবেলার স্বপ্ন ভাঙ্গায়।


সমীর সরকার

ছায়াপোড়া মন
***********


গুল্ম ঘুমের কুশি
নরম হাওয়ার দোল ছোঁয়ায়

জলছবির আকর্ষ
চুঁইয়ে পড়ছে অর্বুদে

জড়া মুখ তুলে
বোঁটা খসা আলো
শিষ  কাটছে জলবাঁশি

ঠেস দুয়ার
কোদাল ছাটা অন্ধকার
আড়ষ্ট চোখ
এক দোয়াত হিমেল কুচো
উত্তুরে জানালা
ভাবডোবা খাগ সুদূর প্রান্তীয়

বাড়িয়ে হাত টানছে দাগ
 তোমার সেই অনুক্ষণ

কি করব বলো -

কথাঝরা গাছ আমার যে
 ছায়াপোড়া মন ...

মৌসুমী ভৌমিক

অবান্তর আমি 
=============



অবান্তর বার্তালাপে, কাটাই
           অবান্তর বার্তালাপে
যাক না এভাবেই
            বিলাপে প্রলাপে।

অকথার কথা শুনে
           ভাবিস অযথা যাপন
কিই-বা ক্ষতি বল্
           যদি এমনই আয়োজন !

ভাববি সেদিন ভাববি
           এমন কেন দিন
প্রলাপগুলোই খুঁজে
           খুঁজে ঘুরবি সেদিন।

নীলা হোসেন

বৈশাখ আগত
""""""""""""""""""
               
  

বিদায়ী  ১৪২৪ বর্ষ
ঝড়ো ঝড়ো আগত
ক্রমান্বয়ী  বিশাখা  হর্ষ।।

মনো প্রান্তরে যতো পাপ
নিমিষে ধূলায় উড়ায়ে
 দীপ্ত হোক ঋত প্রতাপ।।

জমাক্ত যতো জঞ্জাল
বৈশাখ আগমনে দ্বন্দ্বিত
হৃদে বিনাশিত  কজ্জল।।

রুনা দত্ত

হংসীনি রাই 
***********




 খোঁপায় চাঁদের পালক গুঁজে হংসীনি
 রাই জলকে নামে 
 বাদামী পিঠে ঝুরো ঝুরো জোছনা
 অভ্র আল্পনা এঁকে দেয়। 

 জুঁই চাঁপার গন্ধে মদির কুঞ্জবনে
 কৃষ্ণপক্ষের গাঢ় ইশারা
  প্লাবিত স্নায়ুতে শ্যাম শিউলির ঘ্রাণ 
  আর ভ্রমর বিলাস।
   
 উন্মুক্ত নাভিমূলে ময়ূরাক্ষী নদীর 
  আন্তরিক সৃজনানুরাগে...
  সোহাগী শরীর জোড়া জল,কলসী
  ভেসে যায়।
  মৌসুমী মৌতাতে সিক্ত শরীরে
  বিন্দু বিন্দু পরাগরেণুর মিলনাভূতি।
   রিরংসার অভিসারে পেখম মেলে
   হংসমিথুন রাই!

    

তনুজা চক্রবর্তী

হারানো সময়
*************


      

সময়ের আগে সন্ধ্যে এল 
আকাশের সেকি রাগ,
থেমে থেমে গর্জে উঠছে
বলছে তোরা ভাগ!
আমরা তখন নতুন পাতা
কিছুতেই নেই ডর,
আকাশ দেখে মন বুঝেছে,
পূর্বাভাস দিচ্ছে ঝড়।
টালির চালে পড়ার শব্দ
গড়ছে আমের পাহাড়, 
জিভের জল ভাবছে তখন,
আচারের কত বাহার!
আকাশ তখনও রাঙাচ্ছে চোখ
গলার সেকি জোর,
সব শুনেও না শোনায় যেন
কিসের একটা ঘোর----
এখনও আসে বৈশাখী ঝড়,
আমও পড়ে ঝরে,
আমি এখন অমলের মতো
দেখি জানলা ধরে---

আলো মণ্ডল

থমকে যাওয়া সময় 
 ******************



তোমার দেওয়া মেঘ গুলো সব
জানলা'র গ্রিল ছুঁয়ে ,
নীল পর্দায় সব'টুকু রঙ
বৃষ্টি দিয়েছে ধুয়ে !!

থমকে গিয়েছে হঠাৎ সময়
ইটের ফাঁকে-ফাঁকে ,
ক্ষত গুলো সব দিচ্ছে জ্বালা
সলতে পুড়ছে বুকে !!

মেরুদণ্ড টান-টান করে
আমার তুমি'তে ভরা ,
কথায় -কথায় কথা গুলো সব 
ঝরায় পলে'স্তারা !!

রাতের আঁধারে অজুহাত গুলো
খেরো'র খাতা খুলে,
না পাওয়া গুলো'ই বাড়িয়েছে হাত
চৌকাঠ পিছে ফেলে !!

এক মুঠো সুখ স্বপ্ন চোখে
চলার ছিল শুরু ,
কর্পূর হয়ে মিশেছে বাতাসে
আজ অজানা মেরু !!

ছোট্ট  পৃথিবী টুকরো হয়েছে
হাজার অজুহাতে ,
একটা কাগজে কলম আঁচড়ে
হাত নেই আজ হাতে !!

অনোজ ব্যানার্জী

আমি নেতাজী,আমি আছি
*************************





সেদিনের বিমান দুর্ঘটনায় আমি মরিনি।
আমি আজো আছি,
থাকবো ও  চিরকাল।
ভুলিনি তোমাদের,
আমি আছি,
অগণণ জননারায়নের হৃদয়ের গভীরে,
 চেতনার অনু পরমাণুতে,
ইলেকট্রোনে প্রোটনে।

আমি আছি ফুলে ফলে বৃক্ষে
লতায়, পাতায়,ঘাসে ঘাসে।
বিশুদ্ধ বাতাসের স্তরে স্তরে
কোশে কোশে।
নীলাকাশে গ্রহ নক্ষত্র  চাঁদে।
পবিত্র সূর্যের আলোর তরঙ্গস্রোতে।

স্নিগ্ধ  মধুর ঝর্ণাধারায়।
আমি আছি প্রতিবাদী মানুষের
দীপ্ত কন্ঠের বজ্রে।

আমি আছি, তোমাদের পবিত্র
রক্তের জিনে ক্রোমোজোমে।
আমার মৃত্যু  নেই
আমি অমর।
আমি বলবো না আর
তোমরা আমাকে রক্ত দাও
আমি তোমাদের স্বাধীনতা  দেবো।
আমি গড়বো না আর
আজাদ  হিন্দ বাহিনী।
আমি  ডাক দেবো না
দিল্লী  চলো।
আর মুখোশের অন্তরালে নয়,,
এবার তোমরা মানুষ হও।

আমার জন্মদিনে আর শুধু
ফুলচন্দনের পবিত্র মালা নয়।
ফুল নয়,ধূপ নয়।
অগণন  ক্ষুধিত মানুষের মুখে
তুলে দিও দুমুঠো ভাত।
প্রকৃত মানুষ হয়ে নিজে নিজে,,

অসহায় দুর্বল  মানুষের
পাশে পাশে এসে দাঁড়াও। 
মানুষই দেবতা,মানুষের

সেবা করো হাসিমুখে,নির্মল সুখে।

সুনন্দ মন্ডল

হিপ্নোটাইজ
*********                


সন্ধ্যারতি--শাঁখের আওয়াজ
গৃহবধূর ছড়ানো ধূপ-ধোঁয়া।
লাল পাড় সাদা শাড়িতে গন্ধ লেগে শুদ্ধতার
মিষ্টতার পরিবেশ বাড়িময়।
মশাদের আক্রমনে ডেঙ্গু কিংবা ম্যালেরিয়া
রোগের আস্তিন ঝেড়ে তকতকে।
সকাল থেকেই খরপ্রখর মাথা ঝিনঝিন
কর্মব্যস্ততার ভিড় ঠেলে বেরিয়ে
বিকেলের হাওয়ায় গায়ের ঘাম শুকিয়ে
মায়ের যত্নে লালিত ধুপকাঠির ঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে
বাড়ির রাস্তা চিনে ফেরা।
গোরুর পালও ফিরে আসে মাটির গন্ধ শুঁকে।
মায়ের মমতায় আঁকা স্নিগ্ধতার জাল
কী মায়াময়! কোলে মাথা রেখে শান্তির ছটা।
চোখ বুজে স্বস্তির পাতায় শিরা-উপশিরা বেয়ে
রক্ত চলাচলের অদম্য প্রয়াস।
মোহিনীর কুহকের মতো ছড়িয়ে শুচিতা
আত্মতুষ্টির বশ্যতায় আবিষ্ট দেহ-মন।