*অমর একুশে*
************
জননী, আমার গর্বিতা জননী,
দেখ তোমার ছেলের লহু জননী,
গড়িয়ে লাল এই মাটির বুকে,
তোমার গৌরব তুলে ধরতে
তারা জেগেছে শান্তির চিরহরিৎ মুখে।
ভুলেছে জোছনাস্নাত চাঁদনী রাতের ফোয়ারা,
গায়ে মেখে কত রক্ত, ঘাম,বুলেট,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।
ও আমার স্বাধীন জননী,
সমুদ্র নদীর রক্তজলায়
তোমার ছেলেরা রয়েছে সেথায়,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।
আকাশের বিদ্যুৎ ঝলকের মত জেগে ওঠা
তোমার রূপেরঘটায়, প্রকৃতির ঘ্রাণে,
সবুজের ঘোমটাপরা উদার দিগন্তরেখা জননী,
ওরা এনেছে স্বাধীন বাংলায় শান্তির পায়রা,
তুলে ধরেছে পেশিবহুল হাতে
এই মানচিত্র, সবুজের মাঠ,
কৃষাণের লাঙল, পতপত করে ওড়া
লাল সবুজ সমুজ্জ্বল তোমার আঁচল জননী।
ওরা এঁকেছে সুউচ্চ তাল-তমালে
স্বাধীন সূর্য লহুর প্রেম, প্রশান্ত বায়ুর অবনী।
হিমালয়ের শিখর ছড়িয়ে
বাংলার স্বর্গ তুলে দিতে
ওরা জেগেছে বিনিদ্র রজনী,
অজস্র বুলেটের আঘাতে
ঝাঝরা বুকের কাঁপুনি,
মরেও ওরা মরেনি,
মরেও ওরা মরেনি।
হে আমার দুখী বাংলা জননী,
তোমার চোখে অশ্রু মুছে,
ওরা লুটিয়েছে তোমার শিয়রে,
হাসি হাসি দিবস রজনী।
ওরা এঁকে গেছে ভাটিগাঙ স্নিগ্ধ জল হাসি,
শত শত মাইল সুবিস্তৃত তটে,
তোমার ঢেউয়ের বাঁশি,
বীরের সমুদ্রজলে দিগন্ত প্রসারিত
ডানা মেলা গাঙচিল, সারস,
সূর্য ছুঁয়ে সদা জাগ্রত মাঝির তরণী,
ও আমার শান্তির জলপাই পাতা জননী।
জেগেছে ওরা তোমার শিয়রে
হাসি হাসি মুখে দিবস রজনী।