অগ্রাধিকার নয়, সমাধিকার চাই
*****************************
নাবালক ছেলেকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত দুই মহিলা...
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার প্রেমিকা...
বাসের মধ্যে শ্লীলতাহানি, পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন যুবক...
বন্ধুর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা, গ্রেপ্তার মহিলা...
স্বামীকে পুড়িয়ে মারলেন স্ত্রী, পলাতক স্ত্রী...
নিজের পেটের শিশু কন্যাকে গলা চেপে খুন করলেন মা, সিসিটিভি ফুটেজে সেই ভয়াবহ দৃশ্য...
আপনারা আমার লেখা পড়ছেন, আর ভাবছেন যে লেখিকা পাগল।
না, না আমি একদম সুস্থ, পাগল না। উপরে আমার লেখা খবরগুলো বাস্তব। কিন্তু তা প্রকাশ্যে আসে না।
তার কারণ কি?
কারণ, পুরুষরা এখনো নির্যাতিত হলেও সেটা নিয়ে অভিযোগ করতে ভয় পায়। যারা অভিযোগ করে সাহস করে, তাদের উপর সমাজ হাসে। কম মশলাদার আর মানুষের তেমন কৌতুহল এই বিষয়ে না থাকায় কোনো খবরের কাগজে বা খবরের চ্যানেলে এসব খবর তেমন দেখানো হয় না। আর মূল কারণটা হলো, আমাদের সমাজ নারীর দোষ দেখে না, নারী সবসময় মা-বোনের অজুহাতে পাড় পেয়ে যায়। আর নারীর হাতে তো মোক্ষম অস্ত্র আছেই, মিথ্যা নারীকেন্দ্রিক মামলা।
পণের জন্য যেমন বধূ হত্যা হয়, তেমনি পরকীয়া বা আর্থিক মর্যাদা স্বামী বজায় রাখতে না পারলে স্বামী হত্যাও হয়।
নারীর যেমন ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি হয়, তেমন পুরুষেরও ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি হয়।
অনেক বাবা যেমন সন্তানকে মেরে ফেলে অবাঞ্ছিত কারণে, অনেক মাও সন্তানের ঘাতক হয়ে ওঠে।
স্কুল-কলেজে ছাত্রীরা বা অফিসে মহিলা কর্মচারীরা যেমন সুরক্ষিত না, তেমনি ছাত্ররা বা পুরুষ কর্মচারীরাও সুরক্ষিত না।
আমার বা আপনার মা, বোন, দিদি, মেয়ে, বউদি, কাকীমা, বান্ধবী, প্রেমিকা বা স্ত্রী যেমন সুরক্ষিত না আমাদের সমাজে। ঠিক তেমনি আমাদের বাবা, দাদা, ভাই, ছেলে, জামাইবাবু, কাকু, বন্ধু, প্রেমিক বা স্বামীও সুরক্ষিত না আমাদের সমাজে।
ভারতীয় মহিলা কমিশনের ২০১৩-১৪ রিপোর্ট অনু্যায়ী ৫৩.২% ধর্ষণের মামলা মিথ্যা। ধর্ষণ হলে তো আমরা খবর পাই। কিন্তু সেটা মিথ্যা প্রমাণিত হলে, আমাদের কান অবধি সেটা পৌঁছায় না।
কত স্ত্রী নিজের আর্থিক মর্যাদা বজায় রাখার জন্য স্বামীর উপর অত্যাচার করে। এটা পণের জন্য অত্যাচারের চেয়ে কম কি?
কত নাবালক ছেলেগুলো বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন নারীর তীব্র পাষবিক যৌন লালসার শিকার হয়। আমরা কয়টা জানতে পারি?
আসলে আমরা ছোট থেকেই শুনে এসেছি নারীর উপর অত্যাচার, নারী পণ প্রথার বলি, এই সমাজ নারীকেন্দ্রিক। আর সেই নিয়েই নারীর অধিকারের লড়াই।
কিন্তু নারীর অধিকার লড়াইয়ে যে আমরা আমাদের সমাজের পুরুষদের নরকে ঠেলে দিচ্ছি সেটা কেউ লক্ষ্য করলো না।
যেক্ষেত্রে নারী পিছিয়ে, সেই ক্ষেত্রে নারী অধিকার পাক। কিন্তু সমাধিকার, অগ্রাধিকার নয়।
আর যেক্ষেত্রে নারীরা আজ অগ্রাধিকার পাচ্ছে এবং তাতে পুরুষদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। সেই ক্ষেত্রে নারীকেই দাঁড়াতে হবে নিপীড়িত পুরুষদের পাশে।
একদিন বহু বিবাহ প্রথা বন্ধে, বাল্যবিবাহ বন্ধে বা সতীদাহ প্রথা বন্ধে যেমন আমাদের সমাজের পুরুষরা এগিয়ে এসেছিলেন। আজ তেমনি পুরুষ নির্যাতন বন্ধ করতে আমাদের নারীদেরই এগিয়ে পুরুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
নারী বা পুরুষ কারোরই অগ্রাধিকার চাইনা আমরা। আমরা চাই নারী-পুরুষের সমান অধিকার। মানবতার স্বার্থে সমাজ এবং আইন ব্যবস্থা এগিয়ে আসুক।