নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অসীম মালিক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অসীম মালিক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

নুনের কৌটো : অসীম মালিক




                     ( ১)
নুন ,
তুইতো ঝালেও আছিস
ঝোলেও আছিস
অম্বলেও আছিস ।

তুই তো সমুদ্রকে ভালোবাসিস !

নুন ,আমি যে বস্তির দগ্ধ চাঁদ ,
তোকে উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাই ---
একমুঠো গরম ভাতের সঙ্গে
তুই একটিবার আমার ঘরে আসিস ।

                            (২)
নুন
    নুন
         নুন ....

তোর গুনে বিস্বাদ লাগেনি ,
                         কচিপাঁঠার খুন !

                              (৩)

নুন ,
তুই কি খবর রাখিস ?
        একটা আস্ত নদী খেয়েও
                  কেন সমুদ্রের হয়না অবগুন !

                                  (৪)
নুন ,
   নুন ,
       নুন ....

তোকে দেখেছি ঘামে ।
শূন্য থালায় হারিয়ে গেছিস ,
                  ধর্মতলার জ্যামে ....

                                      (৫)
নুন ,
তুই কি জানিস ?
অন্ধকারেও বস্তির ছেলেটা
করে
      গুন
            গুন ....

                                    (৬)
নুন ,
   নুন ,
       নুন .....

ভাতের থালা দোলপূর্ণিমার চাঁদ হলে
            তুই আমার ফাগুন ...

নুনের কৌটো : অসীম মালিক


             
                     ( ১)
নুন ,
তুইতো ঝালেও আছিস
ঝোলেও আছিস
অম্বলেও আছিস ।

তুই তো সমুদ্রকে ভালোবাসিস !

নুন ,আমি যে বস্তির দগ্ধ চাঁদ ,
তোকে উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাই ---
একমুঠো গরম ভাতের সঙ্গে
তুই একটিবার আমার ঘরে আসিস ।

                            (২)
নুন
    নুন
         নুন ....

তোর গুনে বিস্বাদ লাগেনি ,
                         কচিপাঁঠার খুন !

                              (৩)

নুন ,
তুই কি খবর রাখিস ?
        একটা আস্ত নদী খেয়েও
                  কেন সমুদ্রের হয়না অবগুন !

                                  (৪)
নুন ,
   নুন ,
       নুন ....

তোকে দেখেছি ঘামে ।
শূন্য থালায় হারিয়ে গেছিস ,
                  ধর্মতলার জ্যামে ....

                                      (৫)
নুন ,
তুই কি জানিস ?
অন্ধকারেও বস্তির ছেলেটা
করে
      গুন
            গুন ....

                                    (৬)
নুন ,
   নুন ,
       নুন .....

ভাতের থালা দোলপূর্ণিমার চাঁদ হলে
            তুই আমার ফাগুন ...

অসীম মালিক






একমুঠো আলোর অন্বেষণে 
*****************

                      

সব দেখাই পুজোর অর্ঘ্য হয়ে ওঠেনা । সব দেখাই জীবনের ফ্রেমে বাঁধানো যায় না । কিছু কিছু দেখা 
ফুলটুসী না হয়ে ,কুটুস হয়ে যায় । অনিবার্যকারণ
বশত ,কুটুসপাখি এখনও হামলায় । এভাবেই হয়ত 
সমাবর্তনের পসরা ছাপোষা করে যায় নবাগত 
উৎসবের রঙগুলিকে ।মহালয়ার ত্রিকালস্পর্শী সুর 
আজও বেজে ওঠেনা ফ্যানপিপাসু কুটুসপাখির 
হৃদয়ে । স্বভাবতই সে আগমনীর সুর স্বাভাবিক ভাবেই মাড়িয়ে যায় --একমুঠো আলোর অন্বেষণে । 
খোড়ো চালের ফাঁক দিয়ে হেসে ওঠে অষ্টমীর চাঁদ ।
যে চাঁদ বৈষম্যের তালুতে উৎফুল্লতার প্রেরণা এনে 
দিতে পারে না । উপেক্ষার প্যান্ডেল থেকে সে যোজন দূরে সরে যায় অবিরত । 

দীনতার খোলস ছাড়তে ছাড়তে সে প্রত্যক্ষ করে --সেরা প্রতিমা ,সেরা প্যান্ডেল ,সেরা আলোক সজ্জার নির্বাচনে কিভাবে মেতে ওঠে টিভি চ্যানেলগুলি ।  পুজো পরিক্রমায় ভেসে ওঠে বনেদিবাড়ির ঐতিহ্য 
কুমারী পুজো ,পাঁঠাবলি ,সিঁদুরখেলা ,ঢাকের বোল ।
তখন পুজোর কাউন্টডাউন থেকে দূরে সরে যায় 
কুটুসপাখি । পুজোর কেনাকাটা থেকে ব্রাত্য থেকে 
থেকে যায় অনালোকিত মুখগুলি । শপিংমলে জমে 
ওঠে ভিড় । আমি কুটুসপাখি হয়ে সাংবাদিকের 
ক্যামেরাবন্দী পঞ্চমী ,ষষ্ঠী ,সপ্তমী ,অষ্টমী ,নবমী ও 
বিজয়াদশমীর দর্শনার্থীর ঢল প্রত্যক্ষ করছি । আর 
উমার সংসারে খুঁজে চলেছি লক্ষ্মীর আল্পনা । আজ কার্তিক ও গণেশ খুশির তুবড়ি ফাটায় । ফি বছর 
চাঁদার অংকগুলিকে অনায়াসেই হেরফের করে 
দেয় l বিউটিপার্লারে লক্ষ্মী ও সরস্বতী ফেসওয়াশ 
ও ভ্রুপ্লাক করে ,ফ্যাশন শোয়ে যোগ দেয়। উৎসবের রং মেখে ওঠার ,যাদের সাধ থাকলেও সাধ্যি হয়ে 
ওঠেনা । তাদের জন্য ওঠে বিজয়া দশমীর চাঁদ । 

তবুও ঘাসের ডগায় শিশির ,হিমেল হাওয়া ,শিউলি 
সুবাস এবং শরতের আকাশ কুটুসপাখির মননে নিয়ে আসে আগমনী সুর । উমা আসছে । তবুও 
উমার সংসারে অপ্রত্যাশিত কাউন্টডাউন থেকে 
ব্রাত্য থেকে যায় ম্লান কিছু মুখ ...

অসীম মালিক







বৃষ্টি
****


             

                          ( ১ )

বৃষ্টি ,
চাষীর চোখে
ভুবন ডাঙার
দৃষ্টি ।

               (  ২ )

বৃষ্টি ,
আরশীনগর
পড়শী পাড়ার
কৃষ্টি ।

              ( ৩ )

বৃষ্টি ,
কান্না-হাসির
মান-অভিমান
দৃষ্টি ।

              ( ৪ )
বৃষ্টি ,
সোঁদা মাটির
বুকের ঘ্রান
মিষ্টি ।

              (  ৫ )

বৃষ্টি ,
মাঠের খাতায়
সবুজ মনের
সৃষ্টি ।

                ( ৬ )

বৃষ্টি ,
শুকিয়ে যাওয়া
নদীর বুকে
মেঘলা মনের
দৃষ্টি ।
      বৃষ্টি
             বৃষ্টি
                    বৃষ্টি ...

অসীম মালিক

টোপ
****              


মাছ ধরতে মাছের টোপ যেই দিয়েছি আমি , 
রুপোলি মাছ , সোনালি মাছ টোপ গিলেছ তুমি । 
মাছের টোপে মাছের খিদে কক্ষনো কী সাড়ে ? 
বড়শি হাতে ঘাটের দখল মনের অসুখ বাড়ে । 
টোপ গিললে ছিপুরে খুশি খেলায় অথই জলে , 
রাজাও কী এখন ছিপ ফেলে নদী নালা বিলে ! 

কোন নদীতে কী মাছ থাকে কোন টোপেতে খুশি , 
রাজাকে রোজ খবর পাঠায় আমার পাড়া পড়শি । 
ঘাট বদলে টোপ পাল্টায় রাজা , পাল্টায় না সমাজ 
মন্দিরে গিয়ে পুজো করি মসজিদে পড়ি নামাজ । 
শিক্ষা , স্বাস্থ্য , অন্ন-সংস্থান কমন কোনও টোপ নয় , 
যদি বিশ্বাস হয় মঙ্গলঘট , চাল কলাতেই তুষ্ট রয় । 

রামের চর্চা কিসের ভরসা কোন আগুনের টোপ , 
কেঁচো আজও কৃষক বন্ধু , রক্ত চোষে জোঁক । 

অসীম মালিক



শিমুল ফুলের ভায়োলিন 
*******************            
                 
               ( এক ) 


নড়বড়ে ঠোঁটের সেতু , 
ব্যথাহত কথারা পারাপার হতে না পেরে 
চোখের সূচিপত্রে -জল অক্ষরে লেখা । 

ঠোঁটের ওঠানামা , 
যেখানে চোখের থেকেও নীরব 
সেখানে চোখের পাতা ওল্টাই । 
দেখি , চোখের নদীতে ভাসে 
একগুচ্ছ পলাশ ফুল । 

ঠোঁটের সেতুর প্রতি 
আর আমার ভরসা নেই ! 
আজ ওই সেতু দিয়ে 
শুধু চাঁদ পারাপার হয় । 

চোখের নদী সাঁতরে কুড়িয়ে আনি 
বৃন্তচ্যুত একগুচ্ছ শিমুল ফুল । 
                
               ( দুই ) 

দোলপূর্নিমার চাঁদ বাজায় , 
শিমুল ফুলের ভায়োলিন । 
কী বিষন্ন সেই সুর ! 
আমায় স্মৃতিতে চমকায় । 

পুনরায় উল্টে দেখি – 
তোমার চোখের সূচীপত্র । 
ধূসর চরাচরে 
একাকী বিষন্ন মনে শুনি – 
শুকনো পাতার সানাই । 

                ( তিন ) 

ঝরাপাতার জলসাঘরে 
ভেসে আসে কোকিলের বিষন্ন সুর । 
অদূরে কৃষ্ণচূড়ার ডালে 
কচিপাতার দোতারা বাজায় 
দক্ষিনা বাতাস ! 
বাসন্তী আকাশের নীচে আমাকে বাজায় – 
বৃতি খুঁজে পাওয়া অশোকফুল । 

ঝরাপাতায় সওয়ারি হয়ে দেখি 
আমার প্রিয় রাধাচূড়া 
আজ তোর কানের দুল ।

অসীম মালিক





মা বলে ডাকলে
***************

          
       
মা বলে ডাকলে সোনালি ফসলে
ভরে ওঠে খামার বাড়ি ।
ঘোমটায় ঢাকা লাজুক গ্রাম
পড়ে নেয় পাতার শাড়ি ।

মা বলে ডাকলে উঠানে উঠানে
পড়ে যায় ছড়াঝাঁট ।
রূপশালি ধানে ভরে ওঠে
আদিগন্ত খোলা মাঠ ।

মা বলে ডাকলে দুর্গাদালানে
শুরু হয় সিঁদুর খেলা ।
কোজাগরী চাঁদ আল্পনা দেয়
মরসুমি ফুলের দোলা ।

মা বলে ডাকলে রমজানি চাঁদ
তুলসী মঞ্চের প্রদীপ ।
লক্ষ্মী দালানে ভোরের আজান
গোলাপি রঙের টিপ ।

মা বলে ডাকলে অ আ ক খ
নয়তো ধূমকেতু ।
অমর একুশ হাঁক দিয়ে যায়
বাংলা ভাষার সেতু ।

অসীম মালিক


রমা ,তুই হাত ধরলে 

*****************
                    

রমা ,তুই হাত ধরলে ,
আমি বিক্ষোভ মিছিলে ফোটা গোলাপ । 
চুম্বন ফাটা ধূসর বিকেলে ,
তোর সাথে জমে যায় আমার আলাপ । 

রমা ,তুই হাত ধরলে ,
১৪৪ ধারা আমার চোখে ফতুর হয় । 
ভোর ছুঁয়ে যায় বন্দুকের টিয়ার ,
কার্তুজ নয় ,আমাকে তাড়া করে তোকে হারানোর ভয় । 

রমা ,তুই হাত ধরলে ,
আমি হায়নার চোখে উদিত চাঁদ । 
সুইসাইড নোটে পলাশ হয়ে ফুটতে পারি ,
জোছনায় ঢেকে দিতে পারি খাদ । 

রমা ,তুই হাত ধরলে ,
আমি মোমবাতি মিছিলের হারানো চোখ । 
অনশন মঞ্চের আহত পাখি ,
আমার নয় ,তোর ডানার জয় হোক । 

রমা ,তুই হাত ধরলে ,
আমি বীজপত্রে তুলে রাখি সম্ভাবনা । 
তুই আমার আকাশের মেঘ হলে ,
আমি তোর মাটির আয়না । 

অসীম মালিক








হুগলি জেলার আরামবাগের এক প্রত্যন্ত গ্রাম শীতলপুর l এই গ্রামেই 14 ই জানুয়ারী , 1983 সালে এক দারিদ্র পরিবারে আমার জন্ম l জেদ এবং অধ্যবসায়ে ইংরেজিতে স্নাতক l বর্তমানে পেশায় একজন শিক্ষক l ছোটবেলা থেকেই লেখার প্রতি অসীম আগ্রহ ও হাতেখড়ি l আজ পর্যন্ত যা সচল l প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'পেন্ডুলামটা দুলছে'l যা 2008 সালে প্রকাশ পায় l সৃজন , মানভুম সংবাদপত্র , আর্থিক লিপি , ঈশ্বরকণা , কলেজস্ট্রীট , সময় সংকেত , উদ্ভাস প্রভৃতি পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে l ভালোবাসি ছবি আঁকতে এবং ভ্রমণে যেতে l




কিছু আলাপ কিছু কথা 
**********************


) কবিতা কি ? :আমার কাছে কবিতা চোখের আলোয় জারিত হওযা এক সুন্দর অনুভূতি l যা হৃদয় পেলে কবিতার দেহ নির্মাণ করে l 

2) প্রিয় কবি ও আমার অনুপ্রেরণা :--শক্তি চট্টোপাধ্যায় l আমার অনুপ্রেরণা আমার মা l যার জন্যই আমার এই কবিতা প্রেম l 

3) কেন লিখি কবিতা :- আনন্দ পাই তাই লিখি l 

4) প্রথম কবিতা ও কাব্যগ্রন্থ :-- সেভাবে প্রথম কবিতার নাম মনে নেই l ছাত্র অবস্থায় অনেক কবিতা লিখেছি l হারিয়ে গেছে l তবে প্রথম প্রকাশিত কবিতা 'অপেক্ষা' l যা কলেজ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত l প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ 'পেন্ডুলামটা দুলছে 'l 

5) কবিতা /কবির সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক :--বৃষ্টি ও মাটির মত হওয়া উচিত l 


  

                               কবিতা গুচ্ছ 
                            **************



                     বাসস্ট্যান্ড 


                          

আগমন ও প্রস্থানের কোলাহল গায়ে মেখে
রাস্তাগুলি ছড়িয়ে গ্যাছে চাদ্দিকে ...

যারা এসেছিল ,
কাজ সেরে ফিরে গ্যাছে ঘরে l
বাস ড্রাইভার ,কন্ডাক্টর ,প্যাসেঞ্জার ও ফেরিওয়ালার ডাকে ,বাসস্ট্যান্ডের অলিতে-গলিতে
থেকে গ্যাছে কিছু নমুনা .....

ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাস্তাগুলিকে
এক ছাতার তলায় এনে
আদর্শ হিন্দু হোটেলের গলিতে হারিয়ে যায়নি বাসস্ট্যান্ড !

সম্প্রীতির ঈপ্সিত ইচ্ছেগুলি
বাসের সিটে সিটে ছড়িয়ে দিয়ে
ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার মুখ হয়ে দাঁড়িয়ে
একাকী ,নীরব বাসস্ট্যান্ড .....

প্যাসেঞ্জার ঘরে নিয়ে আসেনি বাসস্ট্যান্ডের মুখ !





               পাখির ভূগোল 


                 

একটি সারস ,কদম গাছের ডালে বসে ,
রোজ ভূগোল পড়ায় l

আমাদের ভূগোল দিদিমণি ,ঘরের দাওয়ায় বসে
ছেলেকে ভূগোল পড়াতে পড়াতে ,
নিবিষ্ট মনে পড়ে পাখির ভূগোল l

যে ভূগোল থেকে চোখ সরালেই
ঘর ,কিছুতেই পাড়া হয়ে ওঠেনা l
পাশের বাড়ির প্রাচীরে ,ভূগোল দিদিমনির
দৃষ্টি এসে থমকে দাঁড়ায় l

সারস ভূগোল পড়াতে পড়াতে ,
তিতলিদের রান্নাঘরের চালে এসে বসে l
উড়তে উড়তে কানাইদের বেড়া অতিক্রম করে যায় l

আমাদের ভূগোল দিদিমনি ,উড়তে না পেরে
ধূসর মানচিত্র হয়ে যায় ....




তুমি কাঁদবে না কলকাতা 


               

যে মেয়েটি আমার ঘরের ভিতর
শত শত আলোকবর্ষ দূরের
উজ্জ্বল নক্ষত্র জ্বালিয়ে রেখেছে l
যে মেয়েটি আমার ঘরের ভিতর
অফপিরিয়ডের গল্প সাজিয়ে
আমার পথ চেয়ে বসে
                 ছাতিম গাছের তলায় ,
যে মেয়েটি আমায়
                 সুনীলের নীরাকে চিনতে শিখিয়েছে l
গীতবিতানের আকাশে উন্মুক্ত করেছে
আমার ঘরের জানালা ...
তোমাকে ঠিক সেই মেয়েটির মত দেখতে l
যে সুনীলের নীরাকে ধর্ষিতা হতে দেখে ,
চালের বাতায় গুঁজে রেখেছে ---
                      তরুণ কবির কলম l
তোমাকে ঠিক সেই মেয়েটির মত দেখতে l
যে মেয়েটির ঘোমটায় আত্মগোপন করেছে ,
তৈল চিত্রে আঁকা ভারত ...
যে মেয়েটির চোখে রানাঘাট ,
                         একটি পোড়া রুটির মত চাঁদ l
সেই মেয়েটি আমার ঘরের ভিতর ,
মৌন মোমবাতি মিছিল দেখে ---
                        মোমের মত পুড়তে পুড়তে বলেছে ,
আমিই তোমাদের নীরা ,
আমার ভীষণ জ্বর হয়েছে

তুমি কাঁদবে না কলকাতা ?








এবছর কেমন গোলাপ ফুটেছে 

                 



জানতে ইচ্ছে করে ,
খুব জানতে ইচ্ছে করে l
যদিও জানলে কষ্ট হয় ,
আবার না-জানলেও বুকে ব্যথা হয় l

পথে-ঘাটে রাস্তায় প্রিয়জনদের সাথে দেখা হলে ,
জিজ্ঞেস করি ,কেমন আছ ? সবাই ভাল আছে তো ?
চোখের জমিতে এবছর ফসল কেমন ফলল ,
হাসি ,দুঃখকে স্পর্শ করতে পারল কিনা !
নদীপ্রেম ,পুনরায় কি লাশ হয়ে ভেসে গেল ?

পুব জানালার রোদ ,বৃষ্টি ,ঝড় ...
ওরা কেমন আছে ? সবাই ভাল আছে তো ?
বুড়িবসন্ত ,চুকিতকিত,ড্যাংগুলি ,রুমালচুরি ....
ওরা সবাই কেমন আছে ?

তালপুকুরের পাড়ে বুড়ো বটগাছটায় ,
আজও শৈশব দোল খায় তো ?
ডোবার জলে রেখে আসা ,
আমার শ্যাওলা ধরা শৈশবের চোখ
কেউ কি খুঁজে পেয়েছে ?
কেষ্টবাবুর বাগানে ,তাল তাল কমলালেবুতে লেপ্টে থাকা
দুরন্ত কৈশোর কি দুরন্ত দুপুর ছুঁয়েছে ?

জানতে ইচ্ছে করে ,
খুব জানতে ইচ্ছে করে l
তোমার মধ্যে যে নদী দেখেছি ----
এখন তার সঙ্গে মেঘের সম্পর্ক কেমন ?

ভালবাসা ,তোমার চোখের বাগানে ---
এবছর কেমন গোলাপ ফুটেছে ?

মেঘের উদরে ,তুমি উত্তরটা রেখে গিয়ো কিন্তু l





একগুচ্ছ গোলাপের জন্য




এক ফোঁটা বৃষ্টির জন্য ,
হাজার হাজার সম্ভাবনার জন্য
সমুদ্রের নিকট সুপারিশ করল রোদ l

জলীয় বাষ্পের নিকট সুপারিশ করল মেঘ ,
মেঘের নিকট সুপারিশ করল বাতাস l

মেঘ দেখাল ,
তার শরীরে অফুরন্ত সবুজ l

সবুজের জন্য ,
গোলাপী ঠোঁটের জন্য
একটি গাছের নিকট সুপারিশ করল বৃষ্টি l

একগুচ্ছ গোলাপের জন্য ,
একটি মনোরম বাগানের জন্য ,মানুষের নিকট
সুপারিশ করতে পারলনা বৃষ্টি ....।

অসীম মালিক



                     





কাঠের ফুল





সোনাঝুরি গাছের খাটে ঘুমিয়ে সমাজ l 
আশার আলো নিয়ে জেগে ,
কাঠমিস্ত্রির করাত ,ছেনি ,রাঁধা ,হাতুড়ি ...
আর রংমিস্ত্রির তুলি l 

কাঠগোলায় বসন্ত আসেনি ,
শাল ও মেহগিনি গাছের গুঁড়িতে গুঁড়িতে লেগে আছে 
কোকিল পাখির পায়ের ছাপ l 

করাত কলের বাতাসে উড়ছে ,
মিহি মিহি কাঠের গুঁড়ো l 
গোলায় ফুটেছে করাত ফুল ...

পলাশ ফুলের কবিতা কণ্ঠে নিয়ে উড়ে যাচ্ছে 
কতশত রঙিন প্রজাপতি l 
কিন্তু তারাও খাটের পায়ায় শিকড় ছড়াতে পারেনি ,
তাই ঘরময় ফুটেছে কাঠের ফুল l 

জানালাটা খুলে দাও ,
ভেসে আসুক সোনাঝুরি গাছের অক্সিজেন l