নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সুনন্দ মন্ডল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সুনন্দ মন্ডল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সমাজ ও উৎসব : সুনন্দ মন্ডল



সভ্যতার রোজনামচা
      লকডাউনে সমস্যা
      ‎        কাঠগড়ায় উৎসব

মানুষের মৃত্যু মিছিলে করোনা'র তীব্র হাসি।

সমাজের বাম পাঁজরে আঘাত!

পোড় খাওয়া পাখিটাও বলেছিল কোনোদিন,
সময় নগ্ন হবে একদিন,
উল্টে যাবে প্রকৃতি!

দেখো, কোথাও রুষ্ট আবহাওয়ায় ঝড়ের তান্ডব!

সমাজের ডান পাঁজরে হঠাৎ মোচড়।
                -------$-----

সুনন্দ মন্ডল





এক চক্ষু হরিণ


                  

    নীল দিগন্ত ছুঁয়েছে সমুদ্রের কোমর
      পাখিটার গান ভেসে আসে তীরে
    বট গাছের ফাঁকে সূর্যের ক্ষীন আভা
    মলিন বুক পেতেছে সবুজ চাদরে।

   রাজা ছিল এক সেদিনের আসন আঁকড়ে
   ‎পদ তলে হাজার অনুগত আর সহযোদ্ধা
   ‎রক্তের মদে মেতেছিল বনানীর কোলে
   ‎শিকারী হাতে মেপেছিল জ্ঞানের বোদ্ধা।

   খুন করেছিল পাপ হয়েছিল পাপী 
   ‎ভাগ নেয়নি কেউই তপের ফলযোগ
   ‎নিশ্চুপে থেমে গিয়েছিল রথের চাকা
   ‎ঘিরেছিল এক অনাগত মারন রোগ।

   চোখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সব গিলে নিত যে
   হারাল বনের মাঝেই বাণ ভুলে শাপে
   এক চক্ষু হরিণ এর মতোই জীবন এখন
   কত সুখ হারিয়ে শুধু দুঃখটাকেই মাপে।

সুনন্দ মন্ডল




বিসর্জন
 *******

              

এ পাড়ায় কাঁসর ঘন্টা,
সমারোহে পুজোর কটা দিন।
ঢাকের বোলে নবমীর রাত
এলো মায়ের বিদায়ী ক্ষণ।

ভাসান যাবে মা, দশেরা হুল্লোড়ে
সংসার গুছিয়ে পাট চুকাবে।
ঢাকির নাচ, ঢাকের শব্দ
ছেলেরা সব নেশা মেখে মাতাল হবে।

পিছনে পিছনে ভক্তরা লুটাবে
চোখের জলে শোকের টিকা।
শান বাঁধা পুকুরে মায়ের দেহ
ভেসে যাবে সব গ্লানি দৈন্যতার রেখা।

ও পাড়ায় দেখ ঝোপের আড়াল
বিসর্জনে নাচছে মত্ত যুবকেরা।
পাতার খসখস শব্দ, কিছু বেড়াল
ভেসে যাচ্ছে কুমারীর ইচ্ছেরা।

লাল রক্তে ভাসে যোনি, কেউ নেই উৎসবে
শুধু শিকারির ছোবল, নরম মাংস পিণ্ডে।
কোথায় মা? কোথায় মানুষের শুভ চেতন
ফুস-ফুসমন্তর সকালটা হয়ে গেল সন্ধ্যে।

চোখের জলের নেই দাম আর
কামার্ত চাইবেই দাবি মেটাতে।
সুখের মুহূর্ত দান করে একা যুবতী
নিজেই গভীরে যাবে মায়ের সাথে।

যে পুরুষ মায়ের ভাসানে উদ্দাম নাচে
চোখের জলে আবেগটুকুই প্রদর্শিত।
বিসর্জনের শেষে হাসাহাসি পাশাপাশি
যুবতী তখনও ঝোপের পাশে গচ্ছিত।

সুনন্দ মন্ডল

   



        আরাধনা
           *********


                  

শিউলির ডালে কুঁড়ি ভরে এলো,
কাশফুলের গন্ধে আকাশটা ভরালো।
পুজো পুজো আনন্দে মাতল সবাই,
আত্মহারা খুশিতে জীবনটা ভাসায়।

শারদ প্রাতে পেঁজা তুলোর মত মেঘ,
শুভ্র-সমুজ্জল-কান্তি-সুকোমল-নির্নিমেখ।
বাতাসে বাতাসে ভেসে এলো আগমনী গান,
দুর্গা মায়ের বোধন দিয়ে পুজো-আরাধন।

নতুন জামা,নতুন পোশাক,নতুন শাড়ি গয়না,
বাঁধ ভাঙা খুশিরে ভাই, ধরে রাখা যায়না।
আয়রে ছুটে,আয়রে পলি, মিলি-লিলি,
পুজো এবার জমবে দেখ, আয়রে চোখ তুলি।

মা দুর্গা আসছেন ঘরে নতুন সকাল নিয়ে,
প্রাণের ইচ্ছা আছে যা আজ মাগি মন দিয়ে।
প্রার্থনা করি মাগো, সকলেরে রেখো শান্তিতে,
অশান্তির ছাপ যেন না লাগে কারো মনেতে।

অশুভ সব অঞ্জলি দিই তোমার চরণে,
খরা মুছে ধরায় এনো শুভ এই লগনে।
হাসি ভরা থাকে যেন, ক্লান্তি-দৈনতা ভুলে,
থাকতে যেন পারি,জাতিভেদে, সকলে মিলে।

সুনন্দ মন্ডল




কোত্থেকে যে আসলে?
   ******************
          

আকাশ থেকে পড়লে তুমি
বৃষ্টি সাথে নিয়ে।
মাথার চুল পড়ল এসে
আমার চোখে ধেয়ে।

জানলা খোলা, চুলটা এলো
চিরুনি দেয় আঁচড়।
মোটর গাড়ি থমকে গিয়ে
একটু মাখে আদর।

গন্ধ মাখা একটি চুল
ভুলিয়ে দিল পথ।
ভাবতে গিয়ে তোমার কথা
কাজের পোকা বধ।

বাদল দিন মেঘলা দেখি
বায়ুর ভরে ভাসলে।
কোথায় তুমি পড়লে দেখ
কোত্থেকে যে আসলে?

সুনন্দ মন্ডল

হিপ্নোটাইজ
*********                


সন্ধ্যারতি--শাঁখের আওয়াজ
গৃহবধূর ছড়ানো ধূপ-ধোঁয়া।
লাল পাড় সাদা শাড়িতে গন্ধ লেগে শুদ্ধতার
মিষ্টতার পরিবেশ বাড়িময়।
মশাদের আক্রমনে ডেঙ্গু কিংবা ম্যালেরিয়া
রোগের আস্তিন ঝেড়ে তকতকে।
সকাল থেকেই খরপ্রখর মাথা ঝিনঝিন
কর্মব্যস্ততার ভিড় ঠেলে বেরিয়ে
বিকেলের হাওয়ায় গায়ের ঘাম শুকিয়ে
মায়ের যত্নে লালিত ধুপকাঠির ঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে
বাড়ির রাস্তা চিনে ফেরা।
গোরুর পালও ফিরে আসে মাটির গন্ধ শুঁকে।
মায়ের মমতায় আঁকা স্নিগ্ধতার জাল
কী মায়াময়! কোলে মাথা রেখে শান্তির ছটা।
চোখ বুজে স্বস্তির পাতায় শিরা-উপশিরা বেয়ে
রক্ত চলাচলের অদম্য প্রয়াস।
মোহিনীর কুহকের মতো ছড়িয়ে শুচিতা
আত্মতুষ্টির বশ্যতায় আবিষ্ট দেহ-মন।

সুনন্দ মন্ডল



ইন্দ্রপতন
*********


                   
উজ্জ্বল আকাশে ঝলমলে তারাদের মাঝে
নিজ আলোয় সুরভিত তরঙ্গ তোমার নাম।
শিশু চরিত্র কিংবা যৌবনের উল্কা তুমি
ছিলে মানব জাতির স্নিগ্ধ কৌমুদিনী।
বনস্পতির মহীরুহ হয়ে পৌঁছেছিলে শিখরে
পর্বতের পাদদেশ ছিল আর কত শিষ্যদের।
মুম্বাই থেকে দুবাই কাঁপিয়েছিলে নামের তর্জনে
হীরের মুকুট উঠেছিল মাথায় তেরোর ঘরে।
আজ হঠাৎই হিম্মতওয়ালার হিম্মতওয়ালী
খসে পড়ল চলচ্চিত্রের পর্দা ভেদ করে নাভিমূলে।
'মম' হয়ে মানুষের মাঝেই ঠাঁই নেবে বাকিদিন
চুয়ান্নতেই ইন্দ্রপতন নক্ষত্রখচিত সুন্দরীর।
অকাল হৃদরোগ কেড়ে নিল প্রাণ তাজা রক্তের
বিষণ্ন চারিদিক বসন্তের মিছিলে শোকস্তব্ধ।
ছন্দপতনে কেটে গেল সুর বিজয়ের কোলাহল
শুধু প্রাণময় ভালোলাগা একরাশ বেঁচে থাক।

সুনন্দ মন্ডল

সজীব প্রেম

*************     
      
অঞ্জনা, আজো তোমায় মনে পড়ে।
গভীর অন্ধকারে একাকী নিরালায়
অজান্তেই চলে এলে সংগোপনে-
স্মৃতি মরুভূমির পথ ধরে।
সেই যে তমালিকা বনে
       প্রথম আলাপ হয়েছিল দুজনের।
গহীন বনচ্ছায়ে বসে কেটেছে কত প্রহর।
বৃক্ষশাখের ফাঁক বেয়ে ম্লান রবির আলো তোমার মুখে,
উঁকি মেরে চেয়ে দেখে নিতাম একপলক।
চুরি করে দেখতাম তোমার ফুটন্ত যৌবন।
হাতে হাত রেখে কথা দিয়েছিলে,
সারাজীবন পাশে থাকবে।
চোখে চোখে কত প্রতিশ্রুতি,
     কত বোঝাপড়ার পাঠ।
থাকলেনা! চলে গেলে।
চলে যেতেই হল মনিখচিত সেই রাজপ্রাসাদে!
অন্তরালে নিলে রানী বেশ!
যেখানে নারীদের জীবনে আলাদা মানে।
অঞ্জনা! তুমি হয়তো ভালো আছো,
সুখে থাকবে সে আশা করি।
আমিও আছি ভালো।
তবে একা নয়!
নীলাঞ্জনা সাথী আমার।
সারা শরীর থেকে মুছে দিয়েছে মোহময়ী অঞ্জনার গন্ধ।
প্রেমের সুগন্ধি বাতাস বয়ে এনে দিয়েছে প্রাণে।
ভুলে গেলাম তোমার মায়াবিনী প্রখরতা।
আমি আজ তাকেই ভালোবাসি।
দুঃসময়ে নিঃশর্তে সঁপে দিয়েছে তার জীবন যৌবন।
ভালোলাগা মন্দলাগার ভাগীদার হয়েছি তার।
ভালোবাসি তাকেই-
   যে আমার চড়া ভুবনে
   ‎দিয়েছে সজীবতা।

সুনন্দ মন্ডল



2নম্বর প্ল্যাটফর্ম ...
******************     

                
শীত কুয়াশা ভেঙে সেদিন পৌঁছেছিলে বর্ধমান।
অনেক সাথী ছিল তোমার!
শুধু আমি ছিলাম রামপুরহাটে
২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে।
এখান থেকেই তুমিও গন্তব্য শুরু করেছ।
নির্জনে একা শেষ প্রান্তে আমার আমি!
তুমি বলেছিলে সাথে যেতে
কিন্তু যাওয়া হয়নি।
রামপুরহাট বাজার পুরো চষে
প্ল্যাটফর্মেই দাঁড়িয়ে আছি।
অনেক রাত হয়ে গেছে।
রাতের বাতি গুলো স্পষ্ট জানাতে চাইল
আমার ঘরে ফেরার অপেক্ষায় মা
লণ্ঠনের আলো জ্বেলে বসে আছে।
বাল্বের আলোয় বাবার ঘুম ভেঙে যায় সেই ভয়ে।
আমি যখন মুরারই তখন ১০টা!
ইন্টারসিটি লেট।
তোমার ফেরার কথা ছিল
কিন্তু দেখতে পেলাম না।
ফোন যদিও মানুষকে অনেক কাছে এনে দিয়েছে
তবু সেদিন তোমাকে পেলাম না।
শেষ কল করলাম প্রায় ১১ টা রাত
একজন বলল, "ফোনটা স্টেশনে পরে আছে,
বাজছিল! তাই ধরলাম।"
আমি বললাম, "ফোনের মালিক কই?"
"নম্বরটা তো একটি মেয়ের!"
"এটা কোন স্টেশন?"
সে বলল,"রামপুরহাট"
আমি লোকটিকে খোঁজ করতে বললাম।
অনেক খোঁজ করে একটি লাল চাদর
বেগুনি ওড়না আর একটি শান্তিনিকেতনি
ব্যাগ পাওয়া গেল।
আমি সব শুনে অস্থির হয়ে গেলাম
বললাম," মেয়েটির কোনো খোঁজ পেলেন?"
সে বলল, "না স্যার! এখনো পাইনি!"
আমি উচ্চস্বরে বললাম,"একটু দেখুন তাড়াতাড়ি!"
শেষে যখন জানতে পারলাম ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে
ধারে মেয়েটির দেহ পরে আছে!
আমি হতবাক।
লোকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনুরোধ
করলাম।
আমি বাইক নিয়ে বেরোলাম,
পৌঁছলাম তখন প্রায় রাত ২টা।