নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

দেবব্রত সেন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
দেবব্রত সেন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

অপরাজিতা : দেবব্রত সেন



         
সুলেমান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুবাদে মাঝে মাঝে এলাকার কিছু সমস্যা তুলে ধরেন সংবাদপত্রে। প্রবন্ধ আকারে। এছাড়াও ভালো ভালো লেখক ও কবির লেখা পড়ে, মতামত দিত। আজকে মনে পড়ছে তার কবি শ্রীজাত  বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই লাইন দুটো ----
            মানুষ হতে মানুষ আসে
                বিরুদ্ধতার হাতবাড়ায়
             আমিও মানুষ তুমিও মানুষ
                 তফাৎ শুধু  শিরদাড়ায়।।

এটাই ভাবছে সে। কিছুক্ষণ চুপচাপ।  পরে সুলেমান উঠে দাঁড়াল, দুহাতের আঙ্গুল গুলো সংযোগ করে ঘারটা দুপাশে ঘুরিয়ে ফুটিয়ে নিল, বলল,, আচ্ছা শিবু  পুজা মা উঠিরে আইজ, কাইল দেখা করবাম তর মা 'য়ের লগে! বলতে বলতে উঠোন পেরবে এমন সময় পুজার মা মালতি বাড়ির ভেতর প্রবেশ করল।আরে সুলেমান যে, কখন এয়েছো? সুলেমান বলল, প্রায় আধ ঘন্টারও বেশি হবে বৌদি।
আর বলিস না সুলেমান , মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যানের ছোটো মেয়েটার জন্মদিন,তাই আর ছাড়ল না, একটু যোগাড়টোগারে সাহায্য করতে হলো।কি করব শহরে বাবু কথা শুনতেই হবে! আর কাজ করেই তো খাই।
বউদি একটা কতাকই? রাগের কিছুই নাই কিন্তু? যেইডা মানবিক হেইডাই কমু! এর বেশি কমু না?
----কি বলবি সুলেমান বলেই ফেল? আমি হাত পা চোখ মুখে জল দিয়ে আসি আগে কেমন!
----- ঠিক আছে বউদি! আহ আগে! তারপর

এই সময় মনে পড়ে গেল, পুজার কলেজে ভর্তির সময় চেয়ারম্যান সঙ্গে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার কথা। সেটাই ভাবতে লাগল সুলেমান। সেইদিন যখন পুজার কলেজে ভর্তির জন্য, কিছু সাহায্য চাইতে গেলাম চেয়ারম্যানের বাড়ি, চেয়ারম্যান সাহেব  যা নয় তাই বলল, আর দেখা করতে বলল,  মিউনিসিপালিটি অফিসে, সেখানও ঠেসা ঠেসি করছে, কখনও এর দিকে,,  কখনও আবার ওর দিকে দেখিয়ে দিয়ে বিষয়টা এরিয়ে যেতে চাইছে! মনে হয় চেনেও নাচেনার ভান ! আরে বাবা দিবি কিনা সেটাতো বল, সেটা বলছে না! না দিলে, না বলে দিলেই হত। আর গরীব অসহায় মানুষগুলানরে ওরকম করাই ওদের স্বভাব ! আসলে গরীব মানুষদের বলার লোক নাই, তাই এরম। শালার বিরোধি নেতারাও তো ওরকমই, তোর হয়ে কতা বলে ঠিকই যখন ভোটে জিতে ক্ষমতার গদিতে বসে, তখন তাড়াও একই পইন্থা করে বসে। মনে হচ্ছিল। একটা নিশ্বাস নিল সুলেমান, মনে মনে বলল, আর কারে ভালো কমু? কারেই বা বিশ্বাস করমু? এই দুনিয়ায় ভাল মাইনষি নাই কেন আছে, তবে হাতে গোনা শত করার অংকের মতন। হাজারে দশটা মিলে।

  সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতই হতে লাগল। ফাঁকা তিস্তা চরে মাঠে কিছু কুকুর শেয়াল তাড়া করছে। ঘেউঘেউ করে পিছু নিল কুকুরের একটি দল। ঘেউঘেউ আওয়াজে তা বোঝা গেল।

হাত-পা চোখেমুখে জলদিল পুজার মা মালতি। মুছতে মুছতে  হাই তুলছে , আহ্বা..... করে উঠল।আর বলছে, কি যেন বলছিলি সুলেমান। এবার বলো। চা, দিয়েছে পুজারা?  এই পুজা কাকুকে চা দিয়েছিস তো, মা?

পুজা রান্না ঘর থেকে বলল, হুম, মা। সে তখন কড়াইএ খুন্তি  নাড়ছে। পটল ভাজা করছে। ডাল একটু আগে হয়েছে! ডাল আর পটল ভাজা ভাত করছে পুজা! পুজার মা পুজাকে বলল, রান্না শেষ হয়েছে তো মা,! তোর কাকুটা আছে একসাথে খাই।

সুলেমান বলল,  না না বৌদি আমি কিন্তু খাব না!  তোমরা খাও। মালতি বলল, খাও কিরে এটা তো তোমার বাড়ি তাই না! বন্ধু থাকলে হয়তো, কত কত আনন্দ করতিস, গল্প করতিস! আর বলতিস বৌদি ভালো করে দুকাপ চা দিয়ে যাও তো! নাহলে কষা কষা খাসির মাংসের কথা! বলতিস আজ কবজি ডুবিয়ে খেয়ে যাব। তোর মনে আছে সুলেমান, একবার বিজয়াদশমীর হালযাত্রায়, তুমি বললে না আজ বৌদি কবজি ডুবিয়ে খেয়েছি, জীবনে স্মরণীয় থাকবে। এমনভাবে বলছে মালতি যেন তাদের পাশে বসেই গল্প শুনছে তার স্বামীও! আসলে কিন্তু তা নয়। এই সময় সুলেমান বলল, বৌদি ওসব থাক। ,। আসল কথায় আসি।কি জন্য ডাকছিলা হেই কথা কও। আসলে সুলেমানের মন এখনও কাঁদে বন্ধুর জন্য।

সুলেমান জাতে মুসলমান ঠিকই,  অন্য ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল রয়েছে! তার কাছে পুজার বাপের মতো  মনুষ্য ধর্ম ও কর্তব্যবোধ সমান ভাবে মেনে চলে। পুজাদের মতো অসহায় পরিবারটা পাশে সব সময় দাড়িয়েছে, শুধু আপন বন্ধু বলে নয়। শৈশব থেকে তিস্তা পাড়েই পুজার বাপ আর সে খেলা ধূলা, বড় হওয়া স্কুল জীবন কেটেছে!!

অস্বস্তির মধ্যে স্বস্তির বোধ আইতাছে বৌদি, দ্যাওয়াটাত মেঘ ভীড় করতাছে,  ঝর বৃষ্টি নামবে বুঝি , আইজ যাই বৌদি! অন্য একদিন আইমু। এহন তো আর সময় কম, জমিনে জল জমলে,  কাইল থেকে আবার রোয়া রোপন লাগবো, বিচন তুলতে হইব, জমি চাষ দেওনের লাগব। কি করব! সারা বছরের খাওয়া তো জোগাড় করন লাগব এইডাই সময় ! ও কত্তদিন হইল বৃষ্টি নাই!মাটি যারা যারা রোপন করছিল, তাদের জমিন মাটি ফাটা ফাটা হইছে!  আইলে ভালাই হয়।

----হুম! তাই তো রে সুলেমান। জীবনটা একটা চক্রকার, ঠিক যেমন গরমকাল পেরিয়ে বর্ষা, শরৎ যাবে হেমন্ত আসবে! শীত আসবে তারপর আবার বসন্ত, তারপর আবারও গ্রীষ্ম পেরিয়ে বরষা। কখনও জোয়ার, কখনও ভাটার!  জীবন চক্রে সবই থাকে আর যে মানুষ গুলো চলে যায়, সে আর আসে না ফিরে।  শুধু এটুকুই পার্থক্য।

....বৌদি হক কথা কইছ। এইটাই আল্লাহর বিধান।

......আল্লাহ আর ভগবান যাইহোক,  সবাই যেন বিধিবাম। এত দিন থেকে ভেসে সংসারটা আগলাচ্ছি, কই আছে? আহা করে হাই তুলে, চোখে জল পড়া আঁচলে মুছতে মুছতে বলল। বলল, আর ভগবান? আছে ওই বড়লোকের ঘরে!ওর  যা চায় তাই করতে পারে টাকার জোরে। বাদ দেয় সে সব সুলেমান।

আগে পুজা শিবুকে দেখল মালতি ! কারণ তাদের আড়াল করে আলোচনা হবে মনে হয়, শিবু তখন বিছানায় ঘুমিয়েছে,বেচারার খাওয়া হয়নি তখনও! মা আর সুলেমান কাকু গল্প করছে, তাই সে বিছানায় । পুজা কল পারে, হা পা ধুতে গেল।
মাসদুয়েক আগে একটা ছেলে এসেছিল, ছেলেটা সংবাদ পত্রে কাজ করে! আমার মনে হয় পেরেম টেরেম আছে, তুই একটু খোজ করে দেখিস তো সুলেমান! আমি মেয়ে মানুষ, আমার দ্বারা ওসব হবে নারে।
-----ও! হেই কথা। আমি একদিন শহরে গিয়েছিলাম, কি কাজে ঠিক মনে কইরতে পাচ্ছি  না! তবে, সে দিন ওরা রাজবাড়ী দীঘির পাশে বসে গল্প কইরছে। ভাবলাম থাক! এ বয়সে ছেলে মেয়েরা এরকমই করে। তারপর একদিন  ছেলেটার সঙ্গে দেখা কইরলাম৷ আলোচনা হল, বুজলাম ওরা দুজন দুইজনকে ভালোবাসে। তোমাকে বলাই হয়নি বৌদি। ওর বাড়ি গিয়েছি, বাড়ি শিলিগুড়ি, শিবমন্দিরের ওইদিক।

-----আমার ঠিক এই জায়গাটায় ভয় হচ্ছিল রে সুলেমান।

----ভয়ের কি আছে বৌদি? কওনে! বিয়ের কথাই আলোচনা কইরত  হইব।তোমার কি মত বৌদি?

----- আমি কিছু বুজে উঠতে পারছি নারে সুলেমান। ভাবছিলাম একটা ভালো মাস্টারি চাকরি ছেলে দেখে বিয়ে দেব! কি হল! আর কি ভাগ্যে যা আছে তাই হবে।

-----আমার মইতে বিয়ে ঠিক কইরা ফালাই ভালো। ভালোবাসা আছে ওদের মইধ্যে! তখন আবার কি না কি হয়!

......ঠিক আছে সুলেমান! তোর হেফাজতে দিলাম মেয়েটাকে। তুই যেটা ভালো বুজিস, সেটাই করিস।

----আমি আর কি বৌদি? সবই আল্লাহর ইচ্ছা। আইজ উঠি। দ্যেওয়াটাত মেঘ ছড়াইতেছে! যাই! বৃষ্টি আইবো।

বিয়ে তে মত দিল মালতিও। শুধু আলোচনা দুপক্ষের অর্থাৎ দুবাড়ির সময়ের অপেক্ষা। তারপর বিয়ে। চারহাতের ফার্স্ট ব্র্যাকেটক্লোস। পুজা তার বিয়ের ব্যাপারটা কলপাড় থেকে সব শুনল।পুজার মা মালতি পুজাকে ডাকল,  এই পুজা, পুজা তোর ভাইকে ডাক নারে মা। আয় রান্না ঘরে আয় খাওয়া দাওয়া  সেরে নিই।বৃষ্টি আসার আসার উপক্রম হয়েছে, তাড়াতাড়ি আয়।
শিবু ও পুজা রান্না ঘরে এল, পুজার মা থালা ভরা ভাত সাজিয়েছে তিনটে থালায়। খাওয়া হল সবার।

জোরদার বৃষ্টি শুরু হল, এদিকে আকাশটা ফুটছে চারাং চারাং করে, কোথাও হয়তো উল্কা পিন্ড খোসে পড়ল বুঝি। যে দিকটা পড়ে সেখানে কয়ে বলে যায়, একে বারে পুড়ে ঝলছে যায়! গতবছর এক বিকেলে সুলেমান দের নারকেল গাছটায় পড়েছিল, পোয়াল পুজিটা একবারে ছাই হয়ে গিয়েছিল, গোরু রাখার জায়গাটা ছিন্ন ভিন্ন হয়েছিল! সুলেমানদের কালো গাইটা তো সেই উল্কা পাতের শকে মারা যায়,,ও গাভীটা কি না ভালো ছিল। দিনে লিটার চারেক দুধ দিত! এখন দুধের যা অবস্থা গোয়ালরা অর্ধেক দুধে অর্ধেক জল মেশায়। ও শ্বশুর মশাই থাকতে আমাদের তিনটে বড়ো বড়ো জার্সি গোরু ছিল, সেই ভহাবহ বন্যায় দুটো গোরু কোথায় চলে গেল, ভেসে গিয়ে হয়তো কোথাও আশ্রয় পেয়েছে, কিংবা মারাও যেতে পারে! তবে বাড়ি  যে গাভীটা ছিল, সে অবশ্য ঠিক অবস্থায় ছিল, বেচারাটারও আমাদের সঙ্গে বাধে দিন কেটে ছিল,  না খাওয়া অবস্থায়! আর বাছুরটা জলে ভিজে জ্বরের দাপটে মারা গেল। কি কান্না? ও ।সে ভাবা যায়। ওরাও মায়াবি জীব। পরে কিন্তু বাছুর ছাড়াই দুধ দিত। ওই গোরু গুলো নাকি বাছুর ছাড়াই দুধ দেয়!

পুজার মা রা শুয়ে পড়ল! পুজার মালতি ভাবছে
সেদিনের কথা! পুজার বাবা থাকলে হয়তো বলত পুজার মা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়! কালকে একটু তাড়াতাড়ি ঘুম ভাঙ্গতে লাগবে! শশীবাবুদের বাড়ি গিয়ে জমিতে হাল দেওয়ার ব্যাবস্থা করতে লাগবে! জমিতে ধান বুনতে হবে। এখন আর জমি কই? মানুষটা বেচে থাকলেও খেটে খেতেই হত। যা হয়, জমিদার বাড়ির দুর্দিন। আহ্া........।।

অপরাজিতা (দুই):দেবব্রত সেন






হয়তো টিনের চালের বাড়ি,দোচালা চৌয়ারি ঘর দুটো ইংরেজি এল এর মতো গঠন। যদিও ঘর গুলো অনেক পুরোনো, তবুও মোটামুটি ভালোই আছে।  আর  ডিতটা সিমেন্টে পাকা করা, বাড়িটা শতকরা অঙ্কের হিসেব করলে পাঁচ  পৌনেপাঁচ কাঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ হবে। শহর লাগোয়া তিস্তা পাড়ের গ্রাম। বর্তমান বাড়িটার চেহারা গরীব গরীব বোঝালেও গাছগুলো আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যটা এরকম যে যেকোনো লোক বাড়িটার প্রেমে পড়ে যাবে। আর গ্রামের বাড়ি গুলো একটু ফাঁকা ফাঁকাই সাধারণত হয়ে থাকে।
পূজার মা শচীনকে বারান্দায় একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বলল, বসো বাবা, বসো। যা গরম পরেছে সহ্য করা যায় না বাবা। একটা টেবিল ফ্যান বের করে শচীনের কাছাকাছি রেখে ফ্যানের সুইচটা অন করে দিয়ে বলল, তুমি বাবা এখানে বিশ্রাম নাও আমি বরং ঠাকুর ঘরে ফুলজল দে আসি কেমন! 
-----ঠিক আছে মাসিমা। যাই বলুন মাসিমা প্রচন্ড রোদ্দুর পড়েছে, এই সময়টা বাইরে বেরোনোটা একপ্রকার সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।
পুজার মা ঠাকুর ঘরে গেল, আকাশটা তখন চুপচাপ, শুধু গরম আর গরম!  এই সময় একটা হালকা বাতাস এল, মে জুন মাসে যেরকম লু নামের গরম বাতাস বয় ঠিক সেরকম ভাবে শীতল বাতাস এল, আকাশটা যে দীর্ঘ নিশ্বাস নিল আর কৃষ্ণচূড়া ফুল গুলি হাওয়ায় বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ল, দুচারটে পায়রা ডানা ঝাপটে আঙিনা থেকে টিনের চালে গিয়ে বসল, দুজোড়া পাশাপাশি!চোখ বিনিময় করছে এরকমটা বোঝাচ্ছে,   মনে হয় যেন তারাও যুগল প্রেম করছে। আর শচীন একা একা সেটা ভোগ করল,  সে ভাবছে ইস যদি আমার জীবনে কখনও  এমন সময় আসে খুব রোমান্স হবে।শচীনের ইচ্ছে হল কৃষ্ণচূড়া গাছটার নীচে চেয়ারটা নিয়ে বসি কিন্তু হল না, ততক্ষণে পূজার মা ঠাকুর ঘর থেকে বারান্দায় এল, শচীন একা বসে আছে।
বলল,  তো এখানে কোথায় এসছো ? আমি মাসিমা 
----হুম। 
......জানতেই পাচ্ছেন আমি সাংবাদিকতার মানুষ, খবর সংগ্রহে এখানে ওখানে যেতে হয়। জানো মাসিমা,  আপনাদের পাশে জমিদারপাড়ায় একটা নারী  নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, তারই কিছু তথ্য সংগ্রহে এসেছি। তাড়াতাড়ি হয়েগেল তাই ভাবলাম একটু পূজার সঙ্গে দেখা করেই যাই।
-----না না  বাবা বেশ ভালো করেছো। পুজার মুখে তোমার সাংবাদিকতার কথা শুনেছি বাবা, তবে ......
এই বলে চুপ করল।
-----তবে কি মাসিমা? বলেন সংকোচন করবেন না।
আসলে কি, পূজা আর শচীনের মধ্যে যে প্রেম ভালোবাসা গড়ে উঠেছিল সেটা পূজার মা ভালো করেই আন্দাজ করেছিল, তাই বোধহয় তবে করেই থেমে গেল। আর মনে মনে যাচাই করার চেষ্টা করছে। একটা মেয়ের ভবিষ্যতের বিষয়, এটা ছেলেখেলা নয়। আর যদি ভালোভাবে তাদের সম্পর্কটা মেনে না নেয়, তাহলে হয়তো কিছু একটা অঘটন ঘটে যেতে পারে,পূজার বাপটা বেচে থাকলে হয়তো তাকে এসব বিষয়ে মাথা ঘামতে হত না।  সত্যিই তো প্রেম ভালোবাসা এরকম জিনিস সেটা উপর থেকে কিছুই বোঝা যায় না অন্তরের ভিতর প্রবেশ করে বুজে নিতে হয়। এটাই ভাবছে সে।আর এটাও ঠিক মেয়ে ও ওই ছেলেদের তো মন বলে কিছু আছে, সব থেকে বড় কথা কারও মন ভাঙা হচ্ছে  মন্দির ও মসজিদ ভাঙার সমান সমান।
পুজার মা বলল,  বলছিলেম বাবা কোন পত্রিকায় কাজ করো?
---- দৈনিক জনজাগরন পত্রিকায়! 
----আচ্ছা তুমি থাক, আমি একটু  ততক্ষণে লেবু সরবত করে আনি।
-----না না মাসিমা এসবের আবার কি প্রয়োজন?
----ধুর!  চুপ কর!  বসো দেখি
পূজার মা মালতি রায়! পুজা আর শিবু যখন তিন ও দেড় বছর বয়স, তখন তার স্বামী মারা গেছে। পূজার বাবারা ছিল তিন ভাই।কিন্তু তাড়া এখন কোলকাতাতে থাকে হঠাৎ যদি খবর নেয় নেয়, আর না  হলে যোগাযোগ বন্ধ, আসলে কি পুজার মা বিধবা আর ভরন পোষনের ব্যাপার তো রয়েইছে, হয়তো এলে বুঝি টাকা করি কিংবা অর্থ করি দিয়ে সাহায্য করতে হবে এই ভয়ে। আর বেচারা পুজার মা শহরের বাবুদের বাড়িতে কাজ করে আসছে ছেলেমেয়ে দুটোকে তো  মানুষ করতে হবে!সংসারটার ভরন পোষন করতে হবে, ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে হবে! আর অর্থ সাহায্য লাগলে বাবুদের কাছেই নেয়, একটু গায়ে গতরে খেটে দেয়।  এখন ওরা অসহায় ঠিকই এককালে জমিদার ছিল পরিবারটা।   জমিদার বাড়ি মানুষ আজকে বাবুদের বাড়িতে খাটছে ....আসলে বাংলায় একটা প্রবাদ আছে ---আজকে রাজা কালকে ফকির। ঠিক সেরকম।
পূজা স্নান ছেড়ে বেরিয়ে এল, স্নান করতে করতে সে সব শুনেছে, যে  শচীন তাদের বাড়িতে এসছে ও গল্প করছে!  তবুও সে শচীনকে বলল,  আরে শচীনদা কখন এলে? আসতে অসুবিধে হয়নি তো? 
----আরে না রে পাগলি!  তো কেমন আছিস? কলেজ যাবি বুঝি?
----- আরে বাপরে বাপ কোন ছেড়ে কোনটা বলি। আচ্ছা শচীনদা তুমিই বলো যে কখন এলে।
----- শচীন বা হাতের ঘড়িটার দিকে একবার তাকাল, দেখল দশটা চল্লিশ বাজে তখন। বলল, কুড়ি মিনিট হল রে। 
------ আমি ভালো আছি দাদা। এখন কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি।
-------বেশ ভালো তো!
তোমার জানি কিসে অনার্স?
বাংলায়।
এইসময় মালতি, কাচের গ্লাসে লেবু সরবত নিয়ে এল! বলল, এই নাও ধরো বাবা একটু সরবত। খেতে খেতে না হয় গল্প হবে। 
যেহেতু খাটুনি করে বানিয়েছেন মাসিমা তবে কিন্তু না খেলেই নয়, এক চুমু দিতেই বলে উঠল, আহ মাসিমা দারুণ হয়েছে, মনে হচ্ছে এখন একটু তৃপ্তি পেলাম, 
লেবু ও পুদিনা পাতার সরবত। দারুণ লাগছে।। আমরা বাইরে যা খাই মাসিমা। বাড়িতে তো লোক নেই! আর বাপ ভাই  ছাড়া কেউ নেই। মা ছিল,  দুবছর আগে আমাদের ছেলে চলে গেছে। এখন ভাই আমি আর বাবা।
গল্প করতে করতে বেলা গড়াতে চলল, গল্পেই যেন সবাই মজে গেছে। প্রায় ১টাই বাজে, ১২:৪৭ মিনিট। মালতি বলল,  তোরা গল্প কর দেখি, আমি একটু রান্না ঘর থেকে আসি।
এদিকে রান্না হয়েছে পূজাদের বাড়ির কত আগেই । এখন শুধু খাওয়ার পালা। আর খাওয়া সেরে যে যার কাজে যাব রোজকার মতো।  তার মধ্যে বাড়িতে কেউ এলে তাকে তো অতিথি বলাই যায়।
বারান্দার টেবিলে চলে এলো পূজার মা মালতির হাত বেয়ে সাজানো থালা ভরা ভাত আর বাটি ভরা সবজি। সঙ্গে  চুনোপুটি মাছের দুটো পদও!  রসুনপেয়াজ দিয়ে চটচটি আর মাছের টক আম দিয়ে। সে দিন শিবুই গেছে পাড়ার বন্ধুদের সাথে জাল নিয়ে! ভাগাভাগি করে আড়াই /তিনশ গ্রাম মাছ সে ভাগে পেয়েছে।
হয়তো খেতে চাইছিল না শচীনবাবু, ভাবছে চুনোপুটি মাছ, আর মাছের টক!! সে অনেক দিন হল খায়নি!  মা বেচে থাকতে সেই কবে খেয়ে ছিল। এখন দোকানের ভাত তরকারি ছাড়া উদ্ধার হয় না, পেট কামরায়। সব থেকে বড় কথা হল আজকে মায়ের মতো হাতের রান্না পেয়েছে সে, খেতে রাজি হল। এদিকে অতিথি যে তাই না খেয়ে ওঠা, এটা একরকম খারাপ ছাড়া কিছুই নয়।
সময় গড়াল অনেকটা,  তাই আর কারও কোথাও যাওয়া হল না, এতক্ষনে হয়তো পুজা কলেজে যেত, আর তার মা শহরেবাবুদের বাড়িতে থালাবাসন মাজা কিংবা রান্নার কাজে লেগে যেত, আর শিবুটা স্কুলে।


(চলবে..)

অপরাজিতা(প্রথম পর্ব) : দেবব্রত সেন






কতই বা বয়স বাপ মরা মেয়েটার, সবে স্কুল ছেড়ে কলেজে পা দিয়েছে। এরই মধ্যে আবার গোলাপের হাবুডুবু, রঙ্গিলা বাতাসের গুন গুন সূর। ভালোবাসার পরশপাথর ছুঁয়েছে, হৃদয়পূর্ণ কোকিল কোকিলা মন। মধু চন্দ্রিমার রাতে শশীবাবু যেমন একলা বসে থাকা রুপসীর ঘরে জানলা দিয়ে উকি মারে কিংবা কোনো এক দুপুরে ছায়া ঘেঁষা শ্রাবণী মেঘের বৃষ্টিভেজা মাটির গন্ধে শালিক জোড়াযুগলের অপরুপ রোমান্টিক দৃশ্যের মতো।  তার পর আর কি! বিয়ে -সংসার জীবন। মেয়ে মানুষের নাকি স্বামী ব্রত প্রধান ধর্ম।


১//সকালবেলা একনাগাড়ে মোবাইলটা বেজেই চলছে

সকালবেলা একনাগাড়ে মোবাইলটা বেজেই চলছে, ঘরটা শূন্য মানবহীন! শোনার কেউ নেই একলা বসে শুনছে ঘরটা। থাকলেও থাকতে পারে, তবে হয়তো যে যার কাজে ব্যাস্ত আছে ক্ষন, তাই বোধ হয় এরকম হচ্ছে।

কিছুক্ষণ পর, দশ সাড়ে দশটা নাগাদ হবে, একজন যুবকের বাইক এসে দাঁড়াল পূজাদের বাড়ির সামনে। এসেই দেখল কলিংবেল আছে! সে কলিংবেল টিপল। সঙ্গে সঙ্গে পূজার মা পূজাকে বলল, এই পূজা, পূজা কই গেলি মা! দ্যাখ না কে এল। পুজা তখন স্নান করছে, সে কলেজে যাবে! পূজা স্নান ঘর থেকে বলল, মা আমি স্নানে। তুমি যাও। আমি পারব না মা।
ঠিক এই সময়ে আবার কে এল বাবা আর পারছি না, ঠাকুর ঘর ফেলে আসতে হচ্ছে এই বলতে বলতে পূজার মা বাড়ির উঠান পেরিয়ে সদর দরজার কাছে এল এবং দরজা খুলে দেখল  বছর পচিঁশ ছাব্বিশের একজন যুবক, কাধে একটা ব্যাগ ঝোলানো, চোখে চশমা, গায়ের রং ফরসা আর লম্বা। সে দাড়িয়ে আছে কখন দরজা খুলবে তার অপেক্ষায়।

দরজা খোলার সাথে পুজার মা একটু হতভম্ব হল কারন এই ছেলেটা হঠাৎ করে, তাছাড়া ওনার ছেলের বন্ধু বান্ধব হলে না হয় হত কিন্তু ছেলের বয়স চৌদ্দ পনের হবে,  আর এই ছেলেটা এসে দাড়িয়ে আছে সে তো বয়সে অনেক বড়! পূজার মা গড় হিসাব কিছুতেই মেলাতে পারল না, সে শুধু অবাক দৃষ্টিতে ভাবতেই লাগল। আত্মীয় স্বজন হলেও হতো কিন্তু সেই ছেলেটা অচেনা, কি আর বলবে?
এরম করতে করতে পূজার মা আমতো আমতো করে ছেলেটাকে বলল, আপনি কে বাপু? আপনাকে তো এর আগে দেখিনি?
------আপনি পুজার মা তো?
---- আজ্ঞে হুম, বলুন।
-----নমস্কার নেবেন মাসিমা, আমি শচীন বর্মন, বাড়ি শিলিগুড়ি শিব মন্দির এলাকায়।
-----সে কি মাসিমা পুজা আপনাকে আমার ব্যাপারে কিছু বলেনি?

পুজার মা একটু ঘাবরে গেলেন আর ভাবলেন বাইরের একটা অচেনা ছেলে আমাকে কিসব বলছে, বিষয়টা ভালো ঠেকছে না।
হুম মনে পড়েছে, কলেজে প্রথম প্রথম যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে পুজা একটি ছেলের কথা বলেছিল কিন্তু সে তো সাংবাদিকতার চাকরি করত! আলাপ হয়েছে পূজার কলেজে, কিন্তু সে আবার প্রেম করছে না তো?  আমাদের মতো গরিবের কপালে প্রেমট্রেম হজম হয় না বাবা, সে না হলেই ভালো হয়। এই ভাবে ভাবতে বলল, ও হ্যাঁ মনে পরেছে। আপনিই তাহলে সেই শচীন? আমি ভাবছি কোন, কোন শচীন! এসো বাড়ির ভেতর এসো।

শচীন পূজাদের বাড়ির ভেতর প্রবেশ করেই দাড়িয়ে পড়ল, কারনটা কি! পুজা তাকে বলেছিল ওদের বাড়ির উঠানের উত্তর দিকে একটা নারকেল গাছ আর সেখানে বৈশাখ - জ্যৈষ্ঠে বাবুই পাখির দল বাসা বানিয়েছে, দেখতে লাগছে খুবই সুন্দর যেন সবুজ সবুজ কলসী ঝুলছে। অন্য দিকে উঠানে প্রবেশ করার মুহূর্তে একটা কৃষ্ণচূড়ার গাছ, গাছে লালে লাল ফুলে ছেয়ে গেছে দেখলে চোখ জুড়োয়। আর পায়রা গুলো বাকুম বাকুম করে ডাকছে,  এ টিনের চাল থেকে ও চাল উড়ে যাচ্ছে। চোখ জুড়ানো দৃশ্য। পুজার মা বলল, কি দেখছো বাবা? বারান্দায় চেয়ার টেনে বসো যাও।

হয়তো টিনের চালের বাড়ি,দোচালা চৌয়ারি ঘর দুটো ইংরেজি এল এর মতো গঠন। যদিও ঘর গুলো অনেক পুরোনো, তবুও মোটামুটি ভালোই আছে।  আর ডিতটা সিমেন্টে পাকা করা, বাড়িটা শতকরা অঙ্কের হিসেব করলে পাঁচ পৌনেপাঁচ কাঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ হবে। শহর লাগোয়া তিস্তা পাড়ের গ্রাম। বর্তমান বাড়িটার চেহারা গরীব গরীব বোঝালেও গাছগুলো আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যটা এরকম যে যেকোনো লোক বাড়িটার প্রেমে পড়ে যাবে। আর গ্রামের বাড়ি গুলো একটু ফাঁকা ফাঁকাই সাধারণত হয়ে থাকে।

পূজার মা শচীনকে বারান্দায় একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বলল, বসো বাবা, বসো। যা গরম পরেছে সহ্য করা যায় না বাবা। একটা টেবিল ফ্যান বের করে শচীনের কাছাকাছি রেখে ফ্যানের সুইচটা অন করে দিয়ে বলল, তুমি বাবা এখানে বিশ্রাম নাও আমি বরং ঠাকুর ঘরে ফুলজল দে আসি কেমন!
-----ঠিক আছে মাসিমা। যাই বলুন মাসিমা প্রচন্ড রোদ্দুর পড়েছে, এই সময়টা বাইরে বেরোনোটা একপ্রকার সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।

পুজার মা ঠাকুর ঘরে গেল, আকাশটা তখন চুপচাপ, শুধু গরম আর গরম!  এই সময় একটা হালকা বাতাস এল, মে জুন মাসে যেরকম লু নামের গরম বাতাস বয় ঠিক সেরকম ভাবে শীতল বাতাস এল, আকাশটা যে দীর্ঘ নিশ্বাস নিল আর কৃষ্ণচূড়া ফুল গুলি হাওয়ায় বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ল, দুচারটে পায়রা ডানা ঝাপটে আঙিনা থেকে টিনের চালে গিয়ে বসল, দুজোড়া পাশাপাশি!চোখ বিনিময় করছে এরকমটা বোঝাচ্ছে,   মনে হয় যেন তারাও যুগল প্রেম করছে। আর শচীন একা একা সেটা ভোগ করল, সে ভাবছে ইস যদি আমার জীবনে কখনও এমন সময় আসে খুব রোমান্স হবে।শচীনের ইচ্ছে হল কৃষ্ণচূড়া গাছটার নীচে চেয়ারটা নিয়ে বসি কিন্তু হল না, ততক্ষণে পূজার মা ঠাকুর ঘর থেকে বারান্দায় এল, শচীন একা বসে আছে।
বলল,  তো এখানে কোথায় এসছো ? আমি মাসিমা
----হুম।
......জানতেই পাচ্ছেন আমি সাংবাদিকতার মানুষ, খবর সংগ্রহে এখানে ওখানে যেতে হয়। জানো মাসিমা,  আপনাদের পাশে জমিদারপাড়ায় একটা নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, তারই কিছু তথ্য সংগ্রহে এসেছি। তাড়াতাড়ি হয়েগেল তাই ভাবলাম একটু পূজার সঙ্গে দেখা করেই যাই।
-----না না  বাবা বেশ ভালো করেছো। পুজার মুখে তোমার সাংবাদিকতার কথা শুনেছি বাবা, তবে ......
এই বলে চুপ করল।
-----তবে কি মাসিমা? বলেন সংকোচন করবেন না।

আসলে কি, পূজা আর শচীনের মধ্যে যে প্রেম ভালোবাসা গড়ে উঠেছিল সেটা পূজার মা ভালো করেই আন্দাজ করেছিল, তাই বোধহয় তবে করেই থেমে গেল। আর মনে মনে যাচাই করার চেষ্টা করছে। একটা মেয়ের ভবিষ্যতের বিষয়, এটা ছেলেখেলা নয়। আর যদি ভালোভাবে তাদের সম্পর্কটা মেনে না নেয়, তাহলে হয়তো কিছু একটা অঘটন ঘটে যেতে পারে,পূজার বাপটা বেচে থাকলে হয়তো তাকে এসব বিষয়ে মাথা ঘামতে হত না।  সত্যিই তো প্রেম ভালোবাসা এরকম জিনিস সেটা উপর থেকে কিছুই বোঝা যায় না অন্তরের ভিতর প্রবেশ করে বুজে নিতে হয়। এটাই ভাবছে সে।আর এটাও ঠিক মেয়ে ও ওই ছেলেদের তো মন বলে কিছু আছে, সব থেকে বড় কথা কারও মন ভাঙা হচ্ছে মন্দির ও মসজিদ ভাঙার সমান সমান।



(চলবে ...)

দেবব্রত সেন



মেঘ 



সময় বলছে আয় ভাসিয়ে নিয়ে যাব
      আকাশ ছিদ্র পথে......
ভরাট করে দেব নদী নালা মাঠ
দেখবে সূদৃশ্য প্রহরীর মতো
আমি তখন মেঘ...............
যখন রাশি রাশি মিলে যাই তখনই হই মেঘমালা
আমি মেঘ হলে কি হবে...
আমি ভালোবাসি পৃথিবীর যা কিছু আছে সকলকে ...
হিংসা আমার নেই......
আমি চুম্বন আর আলিঙ্গনের ছোঁয়ায় ভালোবাসি
আমার হৃদয়টা কোমল.....
একবার ছুঁয়ে দেখবে পুরুষ তুমি
আমার জাতও নেই, ধর্ম নেই
ধর্ম নগরে আমার ধর্ম ভালোবাসা
আমার বিরোধীরা আমার কাছে তৃপ্ত হয়
যখন বৃষ্টি হয়ে ঝরে পরি...