নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

নির্মল ধারা:-অথৈ দেবনাথ (রিনা)



প্রকৃতি যখন,
বর্ষণের ধারায় শুদ্ধ স্নানে রত।
তুমি তখন ঘড়ে বসে, রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনছিলে।
আর আমি,
 বৃষ্টির  অবিরাম নৃত্য  দেখছিলাম।
অতপর সেই বৃৃষ্টির ধারা
আমার দু'হাতে নিয়ে,,
তোমার কাছে এসে বললাম,
 চোখদুটো বন্ধ কর।
তুমি বললে কেন?
আমি বললাম তোমায় ভিজাবো বলে,
তুমি মৃদু হেসে বললে
পাগলী,
 এটুকু বৃৃষ্টিতে কেউ ভিজে নাকী?
আমি আমার ছিটানো সেই বৃষ্টির ফোটা,
তোমার উপরে ছিটিয়ে দিলাম,,
সেই ছেটানো বৃৃষ্টির  ফোটা,
তোমার সমস্ত শরীরে পড়ল।
তুমি বললে সত্যি তো এই টুকু বৃৃষ্টি দিয়ে,
তুমি আমায় ভিজিয়ে দিলে।
আমি বললাম,
এ যে ভালবাসার স্পর্শ।
এর প্রয়োজন বেশি হয়না,
তারপর তুমি আমার হাত দুটো ধরে,,
তোমার বুকের কাছে রেখে বললে।
এর নাম বুঝি ভালোবাসা,
আর অধরে ঊষ্ণ স্পর্শ দিয়ে বললে,
এই বুঝি ভালবাসার স্পর্শ।
তারপর,
তুমি আর কি যেন বলতে চেয়েছিলে?
হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল,
আমি দেখলাম,
 তুমি বলে যাকে আমি ভালোবাসি,
ও আমার স্বপ্ন।
আর তোমার ভালোবাসা যা আমায় দিয়েছিলে,
তা ছিল কল্পনা।
আর অবিরাম সেই ঝড়া বৃ্ষ্টি,
ও আমার অতৃপ্ত ভালোবাসা
যা পাইনি বলে
 আজো অবিরাম ঝড়ে পড়ছে।।


জাগো : অযান্ত্রিক



মাটি কাটতে গিয়ে পেয়ে যাচ্ছি, দেখো কত সহজেই,
হঠাৎ হারানো সে নাম, পড়তে গিয়ে না ফেরা কোনো মুখ।
পাঁকে ভরা শুকনো পুকুর কেটেছি একশ দিনের কাজেই,
কত সহজেই জিতেছি বাঁচার বাজি, জিতে যাওয়াটাই সুখ।

চালিয়েছি কোদালের পরে কোদাল,এক নয় কত বার হাজার ,
মাটির আড়াল ঠেলে বেরিয়েছে ,কেটে যাওয়া গলা ,কণ্ঠহার
কান গলার টুকরো ,বাজুবন্ধ, আর কত  চেনা জীবন ফসিল,
গলে যাওয়া চোখের কোটর, তবু উজ্জ্বল পচা চিবুকের তিল।

হোক তবে হোক আরো ,মারো কোদাল সরাও,জমা কাদা মাটি,
সামনে আসুক  বুক পেট স্তনের আদল ঠোঁটহীন দাঁত কপাটি।
তারপর সাজিয়ে হৃদয়ের লড়ঝড়ে সমাধি মন্দির ,ওগো,
অবিনশ্বর সময় নেহাতই বাঁচার ছলে বলি ,
জাগো  মা দুর্গা জাগো।

আমি ক্লাসের ফালতু ছেলে : শুভম চক্রবর্ত্তী




ছিলাম যখন ক্লাস এইট-এ,

স‍্যারের চাবুক পড়তো পিঠে।

পড়াশোনার বালাই ছাই-

হো হো টো টো ঘুরেই তাই,

কাটতো দিন হেলেদুলে

আমি ক্লাসের ফাল্তু ছেলে।


নিলাঞ্জন সেতো গুডবয়

অঙ্ক, বাংলা, ইংরেজিতে।

আমরা সবাই যাতা যাতা

ওর সঙ্গে তুলনা যোটে।

মা বোকে বলতো তখন-

'দেখো, দেখে শেখো ওর থেকে।

কিল, চড়, উঠবোস

এই সবই কি তোর ভাগ‍্যে থাকে?'

আমি বলতাম-'ভালো লাগেনা,

যাওতো এখান থেকে চলে।

নিলাঞ্জন ভালো তো কী?

যানোনা আমি ক্লাসের ফাল্তু ছেলে।



একদিন এক অঙ্ক ক্লাসে,

অংক স‍্যার বলল হেসে-

'এই যে সব ক্লাসের বাজে ছেলে

এ প্লাস বি এর স্কয়ার সূত্র বলতে পারো।'

আমি তখন চুপ

নিলাঞ্জন বলল -'এটা কি এমন বড়ো।'

আমার বেশ মনে আছে

সেদিন নিলাঞ্জন ছিল বলে,

'হুঁঃ যত সব ফাল্তু ক্লাসের ছেলে।'


এখন নিলাঞ্জন বিশাল বড়ো,

বউ নিয়ে আলাদা আছে।

মা বাবার সুখ-দুঃখ ও‌ ভালো-মন্দ

বোঝার কি তার সময় আছে।

আমি আজ ট্রেনের হকার

নুন আনতে পান্তা ফুরায়।

তবু মা আমার সাথেই

শাক ভাজা ভাত আনন্দে খায়।

কী হবে পড়াশোনায়

আমি তাই ফাল্তু ছেলে।


আমি থাকবো অট্টালিকা

বাবা মায়ের চোখের জলে,

মিধাবী ও দাদারা-

এটাকেই কি শিক্ষা বলে???

হাজার হাজার বছর পর : সুমিত মোদক





সকালের আলো ফুটতে না ফুটতে
সংবাদটি সকলেই পেয়ে গেছে  ;
কেবল , পায়নি সে ....
#
সে তখনও সেই হাজার হাজার বছর পুরানো আড়বাঁশিটি নিয়ে দাঁড়িয়ে যমুনার তীরে ;
#
মৃতপ্রায় যমুনাও যেন আজ বেশ চঞ্চল ;
ধোঁয়া-ধুলায় মলিন কদম গাছ গুলো যেন
নতুন করে মেলে ধরছে ফুলের পাপড়ি
সুঘ্রাণ ;
সমগ্র বৃন্দাবন জুড়ে বেজে চলেছে কিশোরী-নূপুর ;
হাজার হাজার বছর পর সকলেই জেগে উঠেছে আজ ;
#
কেঁদে কেঁদে কেঁদে কেঁদে শুকিয়ে গেছে চোখে জল ;
তবুও সে অপেক্ষায় থাকে গভীর বিশ্বাসে  ;
একদিন না একদিন ফিরবেই তার কাছেই . . .
#
সকালের আলো ফুটতে না ফুটতে
সংবাদটি সকলেই পেয়ে গেছে ;
কেবল , পায়নি সে ....

সাচ্চা প্রেমিক : অযান্ত্রিক



সেই কি যেন বলে না,ডানা কাঁটা পরী,
হাঁ করে দিন রাত শুধু তোকে গিলতাম।
তোদের উঠোনে জানি রোদ্দুর হামাগুড়ি,
আমি স্যাতসেঁতে সাইকেলে সময় বেচতাম।

তোদের বাড়িটা উঁচু, পাড়ায় পদবী উন্নয়নশীল,
আমার ছাদের ফাঁকে জোছনা দেখা করতে আসে
তবুতো  চোখের রাজা দেখেছি যে চিবুকের তিল।
ওরে ডানা কাঁটা পরী সাইক্লোনই জমে গরীব নিঃশ্বাসে

ভারী বাড়ি ভোরে ওঠে জেগে,বেমেয়াদি পেতে যায় ইঁট,
আমি সেই ইঁটেরই তদারক,পর পর গুনে গুনে চলি,
শিখেছিলি সেতারের কথা ,তারে তারে উদাসী সংগীত।
তবু আমি চোখেরই রাজা যে দেখছে সর মাখা সাদা গোড়ালি।

ওরে ডানা কাঁটা পরী, সেই তুই উঠে গেলি বিকেল কাগজে,
কলা বিভাগের ছাত্রী মুখে কারা যেনো ছুঁড়ে দিলো রুক্ষ তেজাব।
প্রেমের গুজব ছড়ায়, থানা পুলিশ ব্যর্থ প্রেমিক খোঁজে,
দরকার রক্ত দিলো ক্লাবের ছেলে, ও বাড়িতে যাদের মুখ দেখা পাপ।

জানলায় মধুবনি পর্দা দামাল,ভেসে আসে জাগরণে বিভাবরী,
যদি আড়াল ছেড়ে দেখিস একবার  নীচে ,সাথে নিয়ে পুড়ে যাওয়া ঠোঁট,
এখনও সেই  সাইকেলে আছি দাঁড়িয়ে,ওরে আমার ডানা কাঁটা পরী,
তোর একমাত্র আজন্ম প্রেমিক,আয় হাত ধর,
ওঠ সাইকেলে ওঠ।

অভিমানে : সাকলাইন মুস্তাক



সেই কবে তুমি সন্ধ্যতারায় মিশে গেছো
আর কি ফিরে তাকাও এ সেবিকার পানে??
সে কি তোমায় আত্মস্থ করে নিয়েছে খুব??
তাই হয়তো ....
তবে আমি বেশ আছি
এ ধুলির ধরায় নাই বা হলো পূর্ণিমা
তোমার আলোর ঝর্ণায় আজো ম্লান এ ভুবন
উজ্জ্বল জোৎস্না নাই বা থাকলো
প্রয়োজন হারিয়েছে তার প্রয়োজনীয়তা

জানো, কেমন করে যেন সবাই তাকাই আমার দিকে
গা জ্বালা করে, কাঁটা দিয়ে ওঠে
মনে হয় উপড়ে ফেলি দৃস্টি,
মিথ্যা বলছিনা
গোপন রাতের একা ব্যালকনি তে যখন ফিরে ওরা
হাত ধরাধরি করে, ভুলতে পারিনা বয়স
মনে করতে ইচ্ছা হয় সেই গা-জ্বালা দৃষ্টি
তুমি কি সম্মত তাতে???
বোঝাতে পারিনা নিজেকে......

তোমার কাকিমা পোড়ামুখী নাম দিয়েছেন
আমি তো গা পেতে নিয়েছি এ উপাধি
কজনেরই আর এমন ভাগ্য হয় বলো
কপালের লাল এক ঝটকায় কেমন
ভস্ম হয়ে যাই
অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাই রজনীগন্ধা
সান্তনা দিয়ে যায় পাড়া
মানুষ কে 'মানুষ' হতে বলে যেন.....

আজও জল ঢালি ওই কালো পাথরে
উপবাস হয় সবরকমেরই
কার জন্য জানিনা
যদি শেষ হয় উপবাস ক্ষনিকের তরে
অন্তত স্বপ্নেও.........
ক্ষমা কোরো তবে যদি ভ্রম হয় কভু....
ক্ষমা কোরো মোরে যদি ভ্রম হয় কভু.....



-পুন‍্যছেদে প্রিয়তমা কবি:-শুভম চক্রবর্ত্তী



প্রিয়তমা,
আজ বসন্তের উপস্থিতি বাতাসে,
আজ আমার তুমিহীন বসন্ত।
আজ বিবেক, আদর্শ জাগ্রত।
উদারতাও কম যায়না!
আজ আমার মনের নিঃস্ব স্থানে
প্রকৃতির, বাস্তবতার পরিপূর্ণতা।
আজ মনের সংকীর্ণতা গেছে লীনে।
আজ আমি স্বাধীন,
বাঁধনছাড়া পাখির ন‍্যয়।

আজও আমার বাড়িটা অগোছালো,
আমি সমাজ ও প্রকৃতি গোছাতে ব্যস্ত।
আমার হৃদয় প্রসারিত হচ্ছে,
তুমিহীন হৃদয় অনেক বড়ো।
তোমার ছোট ছোট ব‍্যথা
আর আমায় কষ্ট দেয়না।
আমার হৃদপূর্ণ আনন্দ আর আনন্দম।

আজ আমি সবার জন্য ভাবি
দেশের, দশের, সমাজের।
ভাবনাগুলো একঘর থেকে হয়েছে একপৃথিবী।
আজ আমি উপলব্ধি করেছি
তোমার না পাওয়াগুলো কতটা সংকীর্ণ।

এই প্রথম ভালো থাকতে শিখেছি,
শিখেছি প্রকৃত ভালোবাসাতে।
প্রেমহীন, আবেগহীন, নির্লিপ্ত অথচ
প্রকৃত ভালোবাসা।।

কবিতা বর্ণন.... শুভম চক্রবর্ত্তী



কবিতা তুমি কল্পনা না সৃষ্টি?
কবিতা তুমি বসন্ত না বৃষ্টি?
কবিতা তুমিকি হাসনুহানার গন্ধ?
কিংবা তুমি পলাশ রাঙা ছন্দ।
কবিতা তুমি বিদ্রোহী না প্রেমী?
ছন্দ মিলেছে গিয়েছে কখনো থেমে।
কবিতা তুমি উন্মাদ না শান্ত?
কখন তুমি মুক্ত কখন ব‍্যক্ত‌‌‌।
কবিতা তুমি কি বৃদ্ধ নাকি যৌবন?
নাকি কলম ঠেঙিয়ে প্রতিবাদে তুমি উদ‍্যম।
কবিতা তুমি বাচাল নাকি মৌন?
তুমি জোয়ার নাকি গৌন?
যদি হয় কলায় 'কলা' নির্মাণ
কবিতা তোমার থাকবে নিজ স্থান?

কবিতা এখনো বৃষ্টি বাদল হচ্ছে,
এখনো সংগ্রামে হাজার মানুষ মরছে।
এখনো নৈতিকতায় হানী,
এখনো মানুষ বেইমানি।
কবিতা এখন কলম হয়েছে ব‍্যস্ত
প্রকৃতি তার নিজের খেয়ালে চলে,
মানুষ এখন মৃত 'সুকান্ত'
কলম এখন শেখানো কথা বলে।
কবিতা এখন পৃথিবী চায়না তোমায়
কবিতা তুমি সৃষ্টির জীবাশ্ম,
কবিতা এখন কবিরা কর্পোরেট
ছন্দ এখন মৃত্যুতে বিষন্ন।

কবিতা এখন ভাবনা কি কথাবলে?
নাকি বিকৃতিতে আপনবেগে চলে।
কবিতা এখন প্রেমকি কাছে আসে?
নাকি অন্য কারোর যৌনতাতে ভাসে।
কবিতা তুমি কি পাচ্ছ খেতে?
নাকি বাবুরা সব তালা লাগায় গেটে।
কবিতা তুমি কি এখনো বিদ্রোহী?
নাকি সন্ত্রাসীদের বেত্রাঘাতে প্রতিবন্ধী।
কবিতা কলম ছেড়ে তুমিকি ধরেছো লাঠি?
নাকি বাবুরা সব তোমায় করেছে বন্দী।

কবিতা যদি আমারা তোমায় প‍্যানচ‍্যেটেতে ডাকি,
আসবে তুমি কবিদের হাতধরে?
নিভবে নাকি জলন্ত মোমবাতি,
পাবো জবাব সাদাখাতা ভোরে?
কবিতা তুমি বলছো তুমি জীবিত,
কিন্তু তোমার অস্তিত্ব গেছে মরে।
মানুষ এখন বিবেকহীন মৃত রাজা,
মেরুদণ্ড হীনতায় সমাজ গিয়েছে ভরে।
কবিতা তুমি এরকম জীবিত?
তবে দোহাই তোমার গ্রহন করো মৃত্যু।
আমি আজও আদর্শে বিশ্বাসী,
কবিতা তুমি তাহলে আমার শত্রু।

কবিতা তুমিকি করছো রাজনীতি?
মহাভারতের বিষাক্ত সেই ঢঙে।
তুমি এখন স্বাধীন নাকি বন্দি?
অদৃশ্য কোনো রাজনৈতিক রঙে।
কবিতা তুমিকি মানুষের অন্তরে?
নাকি পারার মোড়ের দেওয়ালের রঙ-তুলি।
এরা দেয় মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,
তুমিকি ওদের কোনো রঙচঙে বুলবুলি?
কবিতা দোহাই তোমায় ছেড়ে দাও রাজনীতি
ওরা চলে আপন আপন ছলে,
আজও বানায় মানুষকে ওরা হদ্দ
কবিতা ওরা সব মিথ্যেকথা বলে।

কবিতা, কবিরা এখন ভাব প্রকাশে ব‍্যর্থ,
কেউবা লেখে ছন্দে কিংবা আবেগ।
কেউবা বলে অসামাজিক পদ‍্য,
কটুক্তি আর মিথ্যা নানান ভাবে।
কবিতা অনেকে আবার অনুবাদে বিশ্বাসী,
কলম এখন ছেড়েছে নিজেসত্ত্ব।
বিদেশী লেখায় অনেক দাম আসে,
কবিরা এখন চোখ ট‍্যারাতেই মত্ত।
কবিতা তুমিকি শীতের দেশে আছো?
বেরোবে কবে শাল-মুড়ী খুলে।
একবার নাহয় হটাৎ উঠেবসো,
চশমা পরো হালকা হাই তুলে।

কবিতা তুমিকি আগের মতোই সত‍্য?
নাকি মেপে-ঝেপে মিথ্যে কথায় পোক্ত।
কবিতা আজও তোমায় বুঝিনি আমি,
তাইতো আমার কাছে আজও প্রশ্ন তুমি।
একটা কথা হালকা আবদারে
কিছু মানুষ আজও তুমি হীনতায় মরে।
কথা দাও তুমি রাখবে প্রতিশ্রুতি- 
ওদের হাত ধরে তুমি পৌঁছোবে আবার
সবার সবার সবার অন্তরে।।

শ্রমিকের দু-চার লাইন :শুভম চক্রবর্ত্তী




রক্ত হচ্ছে জল

ঘামে রক্ত লীন,

সত্য নিষ্ঠা হাতিয়ার

চতুরতা বিহীন।


নিত্য চলে অনটন

দুর্ভিক্ষের রেশ,

সুখের চিন্তা করার ভাবনা

চোখের জলে শেষ।


দিন সে অনেক বড়ো

যখন পেটে খরা,

আকাল যখন শ্রেষ্ঠস্থানে

সবাই দৃষ্টিহারা‌।


আবার সবাই দৃষ্টি পাবে

যদি পকেট ঝোলে,

দূরের লোক খবর নেবে

ঝগড়া ঝাটি ভুলে।


সমাজ এখন মিথ্যাখ‍্যেকো,

সহজ, সরল - পাগলাটে।

আইন কানুন বোকার পালন

শ্রেষ্ঠত্ব ওই ফাঁকটাতে।


বাবুরা বাবুই এই স্বাভাবিক

তুমি আমি মানুষ নই,

আমরা বানাই বাবুর গদি

লবাবীপনার সাক্ষী রই।


যুগান্তর সবকিছুতে

সকল জিনিস দামে পোড়ে,

আমরা পাই পূরান মজুরী

পূরান সিদ্ধ সবার উপরে।


সব স্বাভাবিক এবং সচল

পেটের কথা অন‍্য রকম,

বিষ-ই বোধহয় শেষ হাতিয়ার

জানিনা তার বাজার কেমন।


সর্বকালের চামড়া আমাদের

বাবুদের ওই জুতোরলেস,

পরিবর্তন সে মঙ্গলে হয়

আমাদের লড়াই লড়াইয়ে শেষ।।

দক্ষিণমেরু আর আমার বিক্ষত ব্যক্তিত্ব... অভিজিৎ দাসকর্মকার



কৃষিক্ষেত গুলি
আজন্মকাল কোলের কাছে
হলুদ রং মেখে সম্পৃক্ত হচ্ছে...

রাস্তার ধারে অপলক ফুটপাত-

অবশিষ্ট বৃষ্টিগুলো নদীর জলজকলার
দীর্ঘছায়ায়
তবুও
ভৈরবী গান করে তানপুরা আর
সংসারি আঙুল

নদীগর্ভ আর গেরস্ত শরীর
আক্রান্ত রিপু থেকে তুলে নেয়
গরিষ্ঠ সাধারণ গুনিতক

পড়ে থাকে
প্রাচীন অস্থিরতার প্রতিসৃত নাড়িটান

হে পরম পুরুষ
অন্ধকার ও দায়বদ্ধতা থেকে
সামনে দাঁড়িয়ে
    গোধূলির ক্লান্তি 
         দক্ষিণমেরু আর-
              আমার বিক্ষত ব্যক্তিত্ব...

সেই দিনটির মতো .... সুমিত মোদক



সকাল থেকে সেদিনের সেই তোমাকে
খুবই মনে পড়ছে আজ ;
সকাল থেকে ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি হয়ে চলেছে
সেদিনটির মতো ;
আমরা তখন খাজুরাহর মন্দির প্রাঙ্গণে ;
নির্জন এক মন্দিরে তুমি আর আমি ;
দলছুট হয়ে , আধভেজা হয়ে ,
অপরিচিত হয়েও কত সহজেই পরিচয় হয়ে গেলো ;
সেদিন তুমি শুনিয়ে ছিলে খাজুরাহর লোককথা ,
হাজার বছরের ইতিহাস  ;
আমি কোনদিন ইতিহাস বুঝিনি ;
বুঝিনি নিজেকে ;
অথচ , বুঝতে চেয়েছিলাম তোমাকে ;
তোমার না বলা  কথা গুলি . 
#
তারপর কখন যে আমরাই খাজুরাহর ভাস্কর্য হয়েগেছি ...
তুমি আমার সঙ্গে এখন সব সময় ;
অথচ ,  সেদিনটির মতো নেই আমরা :
চলো , আবার দুজনে বেরিয়ে পড়ি
এই সকালবেলায় , এই শ্রাবণে , সেই খাজুরাহরয় ...

একটা শরীর দেবে :- অথৈ দেবনাথ (রিনা)



তোমরা তো কত শরীর পোড়াও ,
কত শরীর মৃত্তিকার বুকে সমাধী কর,, জলে দাহ কর।
আমায় একটা শরীর দেবে?.........
আমি তার পাঁজরে আশ্রয় নিয়ে,
ফিরে যাব আমার মায়ের কাছে।
যে মা আজো আমার পথ চেয়ে,
 দুচোখের লোনা জলে,,
লোচনে অাজ স্বয়ং নিজেকে ঝাপসা দেখে।
যার বক্ষ ফাটা অাত্ম চিৎকার আমাকে কাছে টানে।
দেবে আমায় একটা শরীর?
যেখানে আমি প্রবেশ করে ফিরে যাব,
আমার পূর্বজন্মের প্রেমিকের কাছে।
যার অশ্রুধারা, স্রোতস্বিনীর মত বেয়ে অাসে আমার কাছে।
যার উল্টো স্রোত, আমায় টেনে নিয়ে যায় তার কাছে।
সে অাজো গোভীর নিশিতে,
আমায় খোঁজে।
আমার চোখের তারায়, চোখ রেখে দেখতে চায়
ভোরের উদয় হওয়া প্রথম সূর্য্য।
যে প্রতিটা মুহূর্তে পেতে চায় অামার ঘ্রাণ।
দেবেতো অামায় একটা শরীর,,
হোকনা সেটা জীর্ণ।
শুধু একবার তার কাছে গিয়ে চুলে সিঁথি কেটে দিয়ে,
তার কোপালে অালপনা এঁকে দেব,,
অধরের স্পর্শে।
অার মন্ত্রমুগ্ধের মত
বলব ভালবাসি, ভালবাসি, ভালোবাসি......


মনবাঞ্ছার হেয়ালী -আরণ্যক রাহাত



হোতাম যদি মুক্ত কন্ঠে আকাশ নীলের সুর,
চাঁদ-সুর্যের নাও ভাসিয়ে হারাতাম বহুদূর।
মেঘবরণে দিক ভোলা রঙ পান্থপাখীর ডানায়,
সাঝের চোখে রোদ ছড়াতাম তেপান্তরের মানায়।

পাহাড় বাদক হোতাম যদি যজ্ঞ নাশী ঢলে,
পাষাণ দু’চোখ ভিজিয়ে দিতাম ঝরে পড়ার ছলে।
বন্য সাজে অঙ্গ ভরিয়ে বিভোর বৃষ্টি-ছায়ে,
প্রপাত পায়েল পড়িয়ে দিতাম পাথর কঠিন পায়ে।

পারতাম যদি শান্ত নদীর বিলাপ মুছে দিতে,
সাগর কূলে ঢেউ ফেরাতাম প্রণয়ের সঙ্গীতে।
সৈকত চোখে ফিরতাম ঠিক ডিঙি ভাসা পথ ধরে,
দুরদ্বীপের স্বপ্ন নিয়ে ঝিনুক কুড়ানোর ভোরে।

কুঞ্জ হয়ে হারাতাম যদি শুকনো পাতার চাদরে,
ফুলের ধুমে ভাঙতো যে ঘুম মাধবীলতার আদরে।
কলির সুখে রোজ পাপড়ি হয়ে বৃক্ষ মায়া কাঁপিয়ে,
মিশে যেতাম মধুর আঁধারে নিসর্গ রঙ ছাপিয়ে।

রুপময়ী হাওয়র কন্যা :-রুদ্র সুশান্ত


হাওয়র কন্যার এতো মুগ্ধকারী রুপ, তোকে অনাবৃত না দেখলে কোন শালায় বুঝতে পারবে না।

ঈশ্বরের চরম সৃষ্টির মায়াবী চন্দ্রিমা যখন লুটোপুটি খায় তোর সুঠান বক্ষে তখন পৃথিবীর যেকোন যুবক স্বর্গের গালে থুথু মেরে প্রাচীনতম চুম্মা দিবে তোর উদ্যমী ঠোঁটে, পেটের দায়ে টিউশন করা ছেলেটা জীবন ভুলে গিয়ে সারা মাসের মাইনে দিয়ে তোর জন্য একটা উজ্জ্বল রক্তিম লিপস্টিক কিনে নিবে অনায়াশে,
পাড়ার বেকার ছেলটা চাকরীর জন্য হন্যি হবে তোর রুপময়ী ঠোঁটের আশায়।
আর এ ধরিত্রীর যেকোনো কবি তাঁর নির্মিত পবিত্র পান্ডুলিপি সহস্র বছরের জন্য বন্ধক দিবে তোর দৃষ্টিনন্দন ঠোঁটের নেশায়।

হাওয়র কন্যা, তুই রাতবিরেতে আমার সাথে শুষ্ক বিছানায় গড়াগড়ি খাবি, আমার বিছানায় একটা মাত্র চাঁদ--তুই। কুঁপি বাত্তির আলোয় তোর মুখে এঁকে দিই ভালোবাসার উদ্যান, তুই পরম তৃপ্তভরে জড়িয়ে নিবি একটা যুবককে।
আহা-- কি যে মোনায়েম সুখ!
তোর বক্ষ না হলে পৃথিবীর কোন শালা এ সুখ বুঝতে পারবে না, খালি অবোধ শিশুর মতো হামাগুড়ি খাবে,
তুইও তো জানিস না কুঁপি বাত্তি নিভে যখন চাঁদের আলোয় সজ্জিত হয় তোর সমগ্র দেহ তখন তোর নাভি হয়ে উঠে স্বর্গোদ্যানোর দ্বার।

একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী... সবকটা দিনেই তুই রহস্যময়ী মোনালিসা।
ঈশ্বর হয়তো তোরও প্রেমিক, তুই জানিস না।
তোকে ভালোবেসে ইশ্বর আর কাউকে এমন নয়নাভিরাম করে বানায় নি।

রাসররাতে তোকে চুমু খেয়ে যেকোন যুবক পরবর্তী চব্বিশঘণ্টা মাতাল থাকবে, নতুবা ফের তোর সাথে মৈথুনে লিপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত।
তুই পুরোটাই রহস্যময় রুপের কুঞ্জণ।

আমি ভাসতে ভাসতে হাওয়র কন্যা নগ্ন ঠোঁটে চুমু দিয়ে বলেছিলাম---আজ অবধি পৃথিবীর পবিত্রতম চুমো হলো এটাই।
তুই চোখ তুলে বলেছিলি -- "আমি লজ্জায় মরে যাই"।
আমরা নয়নোৎসবে মিলিত হলাম খোলা আকাশের নিচে, তুই তো বলেছিস- তুই নাকি স্বর্গে যাবিনা।
বললাম কেনো? তুই আবার বললি --"এই তো আমার অমরাবতী"।
সেই দিন আমি বুঝেছিলাম আমিও তোর প্রেমিক হতে পেরেছি। হাওয়রে দ্বীপের মতো ভেসে থাকা তোর সুডোল বক্ষে আমি যতবার মগ্ন হয়েছি ততবার তোকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। তোর আছে রহস্যোপন্যাস, আমি পৃষ্টায় পৃষ্টায় ঠোঁট লাগিয়ে তোকে ইচ্ছে মতন পড়ে নিই।
আমি প্রথম তোর কাছেই জেনেছি, নীরবতা মানে আরো কিছু চায়।

আমি আকাশ হাতের মুঠোয় পুরে বলছি- পরজন্মেও আমি তোকে অনাবৃত করবো।
কন্যা, অমন করে হাসিস না, মানব জাতির ইতিহাস সাক্ষী থাকবে, আমি তোর কাছে বেহায়া হবো কোটিকোটি বার।

তোর উচ্ছ্বল হাসি ঈশ্বরেরও ধ্যান ভঙ্গ করে, আমরা তো মানুষ মাত্র,
এবার বুঝ পৃথিবীর কতো যুবক তোর ঠোঁটে পাগল হতে চায়(?)

আমার বাসরে তোর চাঁদমাখা মুখখানিই সারাক্ষণ জ্বলে। তোর মিলনে আমার প্রতিরাতে বাসর হয়, রুপময়ী।

তব চুম্বন:- বিপ্লব গোস্বামী



সেদিন নীরবে নির্জনে দুজন
তৃষাতুরা চিত্তে তাপ দাহ ভীষণ।
অপলক দৃষ্টিতে কর পরশন
ঘন ঘন তপ্ত শ্বাস অঙ্গ শিহরণ।
লাজে রাঙা মুখ চন্দ্র,নত মস্তক
দীর্ঘ তপ্ত শ্বাস,হৃদপিণ্ডে ধক ধক।
কাঁপা কাঁপা তব শুষ্ক অধর
বসিলো মম ওষ্ঠে কেঁপে থর থর।
নিমীলিত আঁখি তব, স্তব্ধ হলো ক্ষণ
আজো ভুলিনি তব প্রথম চুম্বন।

পীরইতো :- অযান্ত্রিক



সময়ের চরিত্রগত অভয়ারন্য থেকে,নিয়ত সুগন্ধির ঘ্রাণ,
চারিদিকে সার বাঁধা স্তব আর আজানুলম্বিত করুনা
চাদরের উপরে কাঁচা টাকা দৃষ্টি জোড়া দয়াপ্রাথীর মুখ।
আজন্ম পাতা ভিক্ষার ঝুলি,মাটির সাথে মিলেছে দেহত্বতঃ,
ভুঁইফোড় বনস্পতির নীচে নিশ্চিন্ত শয়ান,
কবর নয় জাগ্রত চাঁদের চাদরে ঢাকা পীরের থান।।

মা -পাখি,বাবা পাখি শিখিয়েই ছাড়ে ,ছেলে পাখিকে উড়ান,
ভিড় ঠেলে ,বে-নামাজী মরদ মর্দানি দয়া ভীক্ষা চান।
কারো দাবীতে পেটের ব্যামোর দাওয়াই কেউ বা হেপকেশো,
সন্তান হয়নি যে বৌটার তাকে নাহয় তুমি স্বপ্ন দিযেই এসো।
কারো ছেলের পড়ায় নেই মন,তার দাবী মেধাবীর মাথা,
যার গলায় লাগে নাকো  ধারালো আলাপী সুর ,তার চাই সেটা।

শুনে শুনে কান ঝালাপালা, ফুলে উঠে রাগের চোরা স্রোত,
ভয় ভয় বেড়ে যায় ভক্তি ভরে ওঠে পাঁচ পোয়া সিন্নি মানত।
সন্ধ্যের ধুপ ধুনা জ্বলে যায় বৃথা,ফাঁকা চত্বর জুড়ে আঁধারের সেনা
ক্ষুদে এক রাঙা হাত তুলে নিয়ে মাটির প্রার্থনা ঘোড়া, খিলখিল হাসিতে
বলে “দু য়ো, দাদু দুয়ো, চাইলেও তুমি আমায় ধরতে পারবে না।।

বর্তমান:- শুভম চক্রবর্ত্তী




বর্তমানে ছুটছে কালি

আবল-তাবল কবিতা লেখা।

বর্তমান তো অনেক কিছুই

চাকরি নিয়ে চাকর হবার স্বপ্ন দেখা।।


বর্তমান উন্নয়নী

রাস্তা-ঘাটে, আর দান-ধ‍্যানে।

কদিন চলবে নির্বাকতা

দুহাত দিয়ে দান গ্ৰহনে।।


'বর্তমান' তো বর্তমানে

বর্তমানই শেষ কথা।

বর্তমানে প্রশ্ন ওঠে

এক্তিয়ার, আর ব‍্যক্তিগত স্বাধীনতা।।


বর্তমানে আমরা স্বাধীন,

তবু ভয় গিলছে সবার মত।

বর্তমান ভবিষ্যৎ- শূন্য

মরিচীকার মতো শূন্য সে পথ।।


এইযে তোমরা বর্তমানী

বর্তমানেই ডুবে আছো।

একটা কথা, অতীত দেখে

ভবিষ্যতে আবার বাঁচো।।


এদিক ওদিক না তাকিয়ে

উপযুক্তে ব‍্যালট ভরো।

পরিবর্তন আবার হবে

নিজের প্রতি ধৈর্য ধরো।।


অপেক্ষা করো তোমরা সবাই

ঝড় আসবে অতীত-রাজের।

গনতন্ত্র বুঝিয়ে দেবে

গনতন্ত্র-ই শুধুই কাজের।


বর্তমানে মত-বিভেদ

বর্তমানেই লোপাট যাবে।

অন্তরে ও বাহিরে সবাই

সাম‍্যতাকে খুঁজে পাবে।।

মন পুরাতন :-অনিন্দ্য পাল


এখন একুশ শতকের হিমবাহ গলে নেমে আসছে
এ শতাব্দীর শিশুরা ,তাদের গতিবিধি যন্ত্ররেখায়
এ প্রজন্মে হাতে খড়ি হয় মোবাইল স্ক্রিনে
শুভেচ্ছা, আশীর্বাদ আসে অশরীরী অনলাইনে।

এ প্রজন্মে ছায়া গলে গলে পড়ে এস এম এস বুকে
নিশাচর লক্ষ চোখ, টাচ্ মুখ জ্বলেপুড়ে ঘুম সিন্দুকে
পূর্বরাগ অভিমান কাঁদে বাইট সঙ্কেতে
যন্ত্র থেকে যন্ত্রে ছোটে প্রেম,লাইন পড়ে অ্যাপগুমটিতে
স্পর্শ ক'রে ছুঁড়ে দেওয়া স্মৃতির লেফাফা
কোথায় যে থিতু হবে, আলাস্কা বা নামডাফা
স্ক্রিন পঞ্জিকায় ভাসে নতুন মন্ত্র
'লাইফ ইজ অ্যা গেম ' শেখায় নেটওয়ার্ক তন্ত্র,

একুশ শতক ছোটে অজানা উৎসমুখে
এ প্রজন্ম চিন্তাহীন বাঁচে অ্যান্ড্রয়েড সুখে
তবুও যে সব মন এখনও ছিন্নমূল
নতুন রুমাল মুছবে তাদের, জন্মাবে গুগল,

এযুগে রোদ নেই,জানালা জুড়ে শুধু তথ্যের বিকিরণ
ঘুলঘুলি মরে গেলে বাতাসে ভেসে আসে কূটসমীকরণ
কাদা নেই ধুলো নেই বৈদ্যুতিন বিকেল
ছন্দনেই, কাব্যনেই, এ এক আবিশ্ব কারাগার-জেল ,

 এ প্রজন্মের মেরুদণ্ডে ছোটে বেতাল স্নায়ুঝড়
পুরোনো যা বেঁচে আছে, অর্বাচীন সব গড় ।

ব্যাথা দাও আগের মত:- কৃষ্ণ বর্মন



যদি তুমি কাছের বলেই ভাবো
তবে ব্যথা দাও না কেন আগের মত।
তোমার দেওয়া ব্যথাই তো মনে করায়
আমি কাছের তোমার খুব কাছের কেউ।
আজকাল ঠিক বুঝে পাই না
তুমি ব্যাথা দিতে ভুলে গেছো
না ব্যথা পেতে পেতে আমি ব্যথাকেই ভুলে গেছি।
তোমার দেওয়া কোনো ব্যথাকেই আজ ব্যথা বলে মনে হয় না।
কে জানে তুমি দূরে সরিয়ে দিলে
না আমিই সরে গেলাম দূরে।

ব্যথা পেতে পেতে এখন ব্যথার নেশারী হয়ে উঠেছি আমি
ব্যথাহীন সময়কে বড় দুঃসহ মনে হয়।
মনে হয় তুমি বুঝি সরে গেছো বহুদূরে
নির্বাসিত করে আমায় ব্যথার নিস্তরঙ্গ সমুদ্রে
অথবা ব্যথা দিতে দিতে তোমার অনুভূতিরা নির্বিষ হয়ে গেছে
তাই তাঁদের দংশনের চিহ্ন থাকলেও
ব্যথা নেই লেশমাত্র।

তোমার দেওয়া ব্যথাগুলো সযত্নে রেখেছি আজ
হৃদয়ের নিশ্চিদ্র প্রহরায়
স্মৃতির সমধুর সিন্দুকে,
মাঝে মাঝে খুলে দেখি তাঁদের
আর ব্যথাহীন বেদনা নিয়ে ভাবি
তুমি কি দূরে সরিয়ে দিলে
না আমিই সরে গেলাম দৃরে।

যদি তুমি আজও কাছের বলেই ভাবো
যদি আজও অনুভবে রাখো অবিরত
তবে যত দূরেই যাও না কেন সরে
আজও ভুলোনা দিতে ক্ষত
আপন বলেই ভাবো যদি
ব্যথা দাও আগের মত।

রাতের কুসুম রাতেই ঝড়ে যায় : অথৈ দেবনাথ ( রিনা )





স্বপ্ন দহন পারাবারে,
আমি রিক্ত শূন্য হস্তে ,,
শুধু আপনারে করেছিনু সমর্পণ।
জানিনে তৃপ্তকী তাতে তুমি ছিলে?
নাকি নিভৃতে  বারিধারায়
স্রোত এনেছিলে হৃদয় নীড়ে!
তারই বিরহী মন বীণার মর্মর ছন্দে...
 সবটুকু চাওয়ার অবগাহনে,
একান্ত নিবিষ্ট চিত্তে,,
মনের অবলকনে।
এঁকেছিলে দীর্ঘস্বাসের চিত্র,
দক্ষিণা মালয়ে,,
পরজনমে দেখা হবে প্রিয়,,
হেতায় রাতের কুসুম  রাতেই ঝড়ে যায়।🌷
ভালোনা বাসিতে হৃদয় শুকায় ।🌼

শ্রাবণের স্বরলিপি : সুমিত মোদক





ভৈরবী রাগের বিস্তার আনে সকালের চায়ের পেয়ালায়
আমার গোপন প্রেয়সী ;
খোয়াইয়ের জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে উঠে আসে দখিনের বাতাস ;
তখনও ওড়েনি রাঙামাটির ধুলো ;
সে যে সারারাত ভিজেছে মালকোষ রাগে ...
শ্রাবণের প্রথম সকালে গোপন প্রেয়সী হয়ে ওঠে লাজুক ;
চায়ের পেয়ালায় শব্দ তোলে ;
শব্দ তোলে প্রেমিক হৃদয়ে  ;
#
এখনও বোলপুরের মাটিতে জন্ম নেয় আদিবাসী রমণীর নূপুর ধ্বনি #  মাদলের বোল
আমার স্ত্রীর সংলাপ  # মেয়ের হাসি
লালন সাঁইয়ের গান.. ..
আর আমি , আজও অপেক্ষায় থাকি প্রথম সকালের চায়ের উষ্ণতা #  শ্রাবণের স্বরলিপি  

গরিব সিরাজ, নিঃস্ব বেগম : অযান্ত্রিক




কে প্রথম দেখছিলো, আমি ,আমি দুজনেই বলে উঠলাম একযোগে,
কবে?যতদূর মনে পড়ে,ছেদি বামনির ছাগলটা যবে বিয়োল মরা ছানা।
আর তেড়ে এলো বৃষ্টি,রেল বাঁধে ভরে উঠলো ভেড়া ছাগল গরু আর লোকে।
মনে পড়ে না?

শুধু জল আর জল চারিদিক ভরা কোনদিকে পাইনা কো তল,
তুলে ধরে চার হাত ছিনে নিলাম চিরে গুড় আর কিছু অন্নভোগ,
পেটে নিয়ে মন্ত্রী চোখ দেখে গেল রাস্ট্রীয় বিমানের দল
মনে পড়ে না ?

প্রহরের পর গুনে নিয়ে ভেজা হায় আর ফুলে ওঠা চেনা শবদেহে,
বুঝিনি কে প্রথম ঠোঁটের পরে রেখে ঠোঁট গড়েছিল অবরোধ
ওপাড়ার বুড়ির সাথে হয় গেল গাঁট ছড়া এপাড়ার বাবুর সস্নেহে।
মনে পড়ে না?

আর সেই থেকে বৃষ্টি পড়লেই বুকে ,ছাতের পরে শব্দে ঝমাঝম,
স্বচ্ছ জলের সুর বলে দেয়, আমি তোর সিরাজ,তুই আমার বেগম।

#অযান্ত্রিক

ছাব্বিশ বছর পর : রুদ্র সুশান্ত





আমি মরে গেলে-
বহুদিন পর তুমি জানবে- আমি চরম ভালোবাসতাম তোমায়।
সয়মের ব্যবধানে কষ্ট পুষে বড়ো হচ্ছো তুমি, নিদারুণ স্নেহ আজো রাখেনি কথা, মন বাড়িয়ে সে শুধু তোমাকে খুঁজে।
বড়ো হবার বিরল আর্তনাদ ছিলো মনের কিন্তু সে এখনো ছাব্বিশে আটকে রইলো, যেমন করে তোমার তুলতুলে ঠোঁটে প্রথম যৌবন বিসর্জিত ছিলো প্রেমিকের।

যুকবের বয়স বাড়লো, চুলগুলো আউলা হলো, গিটারের ছিঁড়ে গেছে সব ক'টা সোনালি তার, ডায়েরীর ভিতর পুরানো চিঠির গন্ধ এখনো নাকে আসে সবিশেষ।

এখনো বয়সের ফাঁকে তোমাকে খুঁজে বেড়ায় একজন প্রেমিক, আরো ছাব্বিশ বছর পরে তুমি জেনে যাবে- তোমার একমাত্র প্রেমিক সে, বাকিরা তোমায় ভোগ করেছে, উপভোগ।
ভালোবাসার তীর্যক তোমার পানে রাখেনি, রেখেছিলো মোহ। ছাব্বিশটা বছর হারিয়ে গেলো তুমি আসলে না, বসলে না পাশে, ধরলে না হাত, নাকে নাক ছুঁয়ে করোনি বেসামাল।

আরো ছাব্বিশ বছর পরে ক্রন্দনের অনুতাপে বিলাপ করবে তুমি, তোমার শহরে কালোরাত্রি পার হয়ে ভোর হবে, রঙিন সকালে সূর্য উঠবে কিন্তু তোমার মন জাগাতে পারবে ওসব কিছুই। ছাব্বিশটা বছর প্রেমিকহীন কেটে যাবার করুণ শোকে শহরে নামবে তোমার মাতোম।

দীর্ঘ হলো না আমাদের বাসর, আসরের সবক'টা কোকিল সুর তুলেছিলো, বেসুরা কণ্ঠে নিনাদধ্বনি ছিলো তোমার,  আমাকে হারানোর সুকরুণ স্বাদ ডুকরিয়ে তোলে তোমার  বক্ষদেশ। তুমি এখন আমাকে ছু্ঁতে চাও অথচ ছাব্বিশটা বছর তোমার অপেক্ষায় ছিলাম, তুমি আর আসোনি ফিরে। আজ বিলাপ করছো তোমার পৃথিবীর দু'কূল ভেঙে। আমি আর ফিরবোনা।
এখান থেকে আর কেউ ফিরে না, আমি জল হবো যাবো,  তুমি যাতে কান্না লুকাতে পারো।

ছাব্বিশ বছর পর, আমি জল হয়ে ফিরে আসছি তোমার নয়নে।
তুমি বুকে নিয়ে রাখোনি আমায়, আমি তাই তোমার নয়ন ছুঁয়ে গড়াবো ধূলায়।

বালুঘাট, ঢাকা।
২৭/১২/১৮

স্বপ্নানন্দ :শুভম চক্রবর্ত্তী






মধ‍্য রাত্রি,

স্বপ্নে দেখা এক রাজ‍্য।

যে রাজ‍্যে মন্ত্রীরা সব প্রতিভাবান।

মন্ত্রীগন রাজ‍্যকে মাতৃতুল‍্য এবং

প্রজাদের ভাতৃতুল‍্য সম্মান দেয়।

সে রাজ‍্যে যে যে বিষয়ে সর্বজ্ঞ এবং শ্রেষ্ঠ

সে সেই বিভাগীয় মন্ত্রী।

সে রাজ‍্যে গনতন্ত্র আছে উপযুক্তের পক্ষে।

সে রাজ‍্যে মানুষ দানে নয় মন্ত্রী

মন্ত্রীর সহযোগিতায় এবং আত্ম-অধিকারে বাঁচে।

সে রাজ‍্যে সুখ শান্তি সমৃদ্ধি বিরাজমান।

মন্ত্রী, জনগন সবাই গনতন্ত্রের গুরুত্ব বোঝে।


শরীরে আনন্দের শিহরন,

বুকে ধামসা-মাদলের ন‍্যয় কম্পন,

হটাৎ ঘুম ভাঙে বসা,

আর গালে হাত।।

জীবাশ্ম : সাব্বির সেখ

            আমিও একদিন এই আবেগহীন সভ্যতার ইতিহাস রচনার প্রত্নতাত্বিক উপাদান হবো,
জীবাশ্ম হয়ে ঠাঁই নেবো কোনো পাললিক শিলার ভাঁজে,
সেদিন আমার অবয়ব ছাপা থাকবে কোনো পাথরের গায়ে,
হৃদয়ের ভালোবাসা গুলো প্রস্তরীভূত হবে প্রবল চাপে ও তাপে,
তবুও শিলার প্রতিটি রন্ধ্রে খোদাই করা থাকবে নির্ভেজাল ভালোবাসার চিহ্ন.
সেদিন হয়তো যান্ত্রিক পৃথিবীতে থাকবে না কোনো নিখাদ ভালোবাসা,
শুধু এই হৃদয়ের ভালোবাসা গুলো টিকে থাকবে কোনো পাথরের গায়ে জীবাশ্ম হয়ে.

যদি: সুরভি ইসলাম


একবার ঘুরে,
তাকিয়ে দেখতো যদি
বাঁধন ভেঁগে ভাবনার,
গড়িয়ে যেত নদী।

অন্ধকার শীতল সন্ধ্যায়,
গা ঢ়াকা দিয়ে পার পেয়েছিলো।
একফোটা জ্যোৎস্না তাকে
ছূয়ে যেত যদি

আজ রজনী গন্ধার গন্ধেতে,
সেই সাধ আর নেই
কোকিলের মিশ্টি কন্ঠে,
সেই রাগ আর নেই

আমার ভাগে তো সেই
সোহাগ আর নেই
সে আজ থাকতো আমার পাশে,
তাকে বৃষ্টি আটকে দিত যদি।

নরম ঘাসের  ডগা তার,
পায়ের আঙুল ছুঁয়ে দিত যদি
এক নিমিষে পাওয়া  যেত সবই
এক মুহুূর্ত, আরও এক মুহূর্ত
সে থেকে যেত যদি

সে ডানা কাটা পরী
সে অপরূপা সুন্দরী ।
বলে দিতাম সব খুলে
তার থুতনি টা তুলে
আমার মন সঙ্গ দিত যদি।

আমি ভাবতে ভাবতে রয়ে গেলাম
আবেশে কত কি সয়ে গেলাম।
মুহূর্ত সেই মুহূর্ত সব
অকারণে কেন হারিয়ে  দিলাম।

তাকে বুকের পাশে রাখতাম
প্রেমের বয়ে যেত নদী
একবার শুধু  একবার
সে হেঁসে দিত যদি। । ।