নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

লীনা দাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
লীনা দাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

লীনা দাস




মন কেমন করে




মন তো কত কিছুর জন্যই কেমন করে!
ছেলেবেলা,আমার গ্রাম,গাছপালা,
পুকুর,মৃত বাবা মৃতা মায়ের জন্য!
ফেলে আসা এত বছর এত মাস এত দিন!

সব কিছুর জন্যই মন কেমন করা!

কতকিছু মুছে নি:শেষ হয়ে গেছে।

তবুও ঐটি আমার গ্রাম,ঐখানেতেই
হৃদয় আমার গেছে চুরি।

জালের মত জড়িয়ে থাকা স্মৃতি
একটা একটা করে ছাড়াতে থাকি
স্মৃতি রোমন্থন নি:সঙ্গ জীবনে 
আনন্দের বাতাবরন!

মরানদীর খাত হয়ে থাকা মন,
স্মৃতিচারণে আচম্বিতে প্লাবনের
কল্লোল ছুটে আসে।      

রং বদলে যায়,বিবর্ণ মুখ ঠোঁট থরথরিয়ে কাঁপে-----
বিচিত্র অনুভূতি ঢেউ তোলে,
মিলিয়ে যায়! হিসাব নেই!
বৃদ্ধাবাসের জানালা দিয়ে আকাশপানে চেয়ে একদিন প্রতিদিন!!

লীনা দাস



দেবতার সৃষ্টি
************


দেবতার সৃষ্টি মানুষের হাতে,
মানুষই দেবতা গড়েছে,
আদিম মানুষ প্রকৃতির
রোষানল থেকে বাঁচতে----
ঝড়-ভূমিকম্প-বন্যা-বজ্রপাত কে
দেবতা জ্ঞানে পূজা করত।

অশিক্ষিত মন জাদুশক্তির শরনা-
পন্ন হয়ে নৈবেদ্য দিয়েছে
পশুবলি,নরবলি দিয়ে,
সৃষ্টি হয়েছে দেবতার।

সভ্যতার পথে অগ্রসর হয়ে মানুষ
গড়েছে সমাজ,রাষ্ট্র।
স্বার্থপর মানুষ সামাজিক শোষ-
ণের জন্য দেব কল্পনাকে কাজে
লাগিয়ে--
প্রচার করেছে মানুষ মরণশীল
দেবতা অমর।

শোন মত্যর্বাসী,দেবতা মানুষের
হাতে তৈরী--
মানুষের হাতেই তাঁর মহিমা কীর্তন নির্ভরশীল।
মানুষের স্বীকৃতি ব্যতীত দেবত্ব
মূল্যহীন।

দূরদর্শনের ধারাবাহিক গল্পের মত ,পরিচালকের হাতে চালিত।
মানুষ মরণশীল,আবার সেই
মানুষই অমর,দুঃখ দহনের মধ্য
দিয়ে,
তার আপন পৌরষ বলে,আপন
শৌর্য-বীর্য,কৃতিত্বে ও কীর্তিতে।

লীনা দাস





শিরোনামহীন--1
**************



যাযাবর পাখীদের মতো এখন মানুষ মানুষী।
গোল্ডেন প্লোভার পাখীদের  মতন,
ওরা সমুদ্র পাড়ি দেয় একটু  উষ্ণতার খোঁজে।

দু'জন মানব মানবীর এই পারমানবিক যুগে--
একটা দিনই নিটোল জীবন, 
ঠিক মুক্তোর মত।

বিয়ে সারাজীবনের একটা গভীর ব্যাপার।

চিরস্থায়ী ভাবনা,কামনা আর প্রায়ই নেই।
ওরা  অস্থির,ক্ষণস্থায়ী,ছটফটে অপরিনত সম্পর্কে বিশ্বাসী!

আগামী দিনের কথা ভাবার সময় নেই---
সারাজীবনের কথা ভাবনার প্রশ্নই নেই।
জীবন,ভবিষ্যত যখন নিজ নির্ধারিত ছিল,আবেগে আয়েশে
ভেবে দিন কাটানো যেত--

এখন--
দেশ,কাল,অর্থনৈতিক,সমাজ,
রাজনৈতিক ভবিষ্যত অন্ধকারে,
এমন কি পৃথিবীর ভবিষ্যত-ই
অর্নিদিষ্ট---তখন ওসব ভাবা?
বোকামির নামান্তর ছাড়া আর কি?

ওরা থাক ওদের মতন,বাকীরা থাক তাদের মতন।

লীনা দাস










 দ.কলকাতা,বাঁশদ্রোণী থানার অন্তর্গত ব্রহ্মপুর,
কলকাতা-96



কিছু আলাপ কিছু কথা 
*********************


১) আপনার কাছে কবিতা কি ?
উ: আমার কাছে কবিতা---
শুধু ভাল বিষয় ভাবতে পারলেই হয় না।সাজিয়ে গুছিয়ে সুন্দর ভাবে মনের ভাব ব্যক্ত করা বা পরিবেশনের কায়দাটাও জানা জরুরী।
কবিতা জন্মের সাথে সব সময় জড়িয়ে থাকে একক সত্ত্বার অধিকারী সৃষ্টিশীল মানুষের মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন।
কোন মানুষের মনের ভিতর যদি কিছু সৃষ্টির বা প্রকাশের যন্ত্রনা থাকে তবে সে শব্দের পর শব্দ বসিয়ে পংক্তির পর পংক্তি বসিয়ে শব্দের কথামালায় 
সৃষ্টি করে কবিতা।

তবে সবার আগে কবিকে
জীবনের গভীর বিশ্লেষক হতে হবে তবেই সৃষ্টি সার্থক।

২) আপনার প্রিয় কবি কে? আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ? 
উঃ আমার প্রিয় কবি----
আমি সীমাবদ্ধ রবীন্দ্র নজরুলে।
25 শে বৈশাখ আর বৃষ্টির দিনে রবি ঠাকুর পড়ি।
অন্য কোনো কবির ভাল লেখা সামনে পেলে পড়ি।


কোনো দিনই আমি কবিতা পড়তে ভালবাসতাম না।কিন্তু ছোট থেকেই মনে হত কি 
যেন করতে মন চাই, বুঝতে পারতাম না মন কি চাইছে।সর্বক্ষণ মনটা কিছু করার জন্য অস্থির 
থাকত।
ফেসবুকে এসে আমি কবিতার প্রেমে পড়লাম।বলা চলে ফেসবুক আমার অনুপ্রেরণা আর আমার মনের তাগিদ।

শুরু হল আমার কবিজীবন।কবিজীবন আমার এক বছর চার মাস।


৩) আপনি কবিতা লেখেন কেন ? 
উঃ- 

কিছু সৃষ্টির যন্ত্রনা কুরে কুরে খায়।সেই সৃষ্টির হাতিয়ার আমার কবিতা।
তাই কবিতা লিখি।
৪.আপনার লেখা প্রথম কবিতা ও কাব্য গ্রন্থের নাম কি ? 
উঃ- 
আমার প্রথম কবিতার নাম 'নষ্টসেরা'(3/8/16)।
অবশ্য প্রথমদিন আমি ৭টি কবিতা লিখেছিলাম।

আমার প্রথম একক কাব্যগ্ৰন্থের নাম"নষ্ট মনের মৌন কথা।"


৫) কবি/কবিতার সাথে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ? 

উঃ: কবি লেখেন কবিতা,তার সৃষ্টির নেশায়।
তার সাথে এটাও কাজ করে, লিখছি তো,পাঠক কেমন ভাবে নেবেন বা নিচ্ছেন।
পাঠক যদি বুঝতে না পারেন তার দায় কিছুটা বর্তায় কবির উপর।পাঠক আর কবি যদি নাগালের মধ্যে থাকেন কবির উচিত পাঠককে বুঝিয়ে দেওয়া, 
যদি পাঠক জানতে চান।


  


                          কবিতা গুছ 
                        ************



মনোরোগী 

     

অঝোর রাতে অন্ধকারে একাকি-
ত্বের যন্ত্রণা অনুভব করছি!
বুকের কাছে চাপ ধরা ব্যথা,
মনখারাপের ঘূণপোকারা মাথায়,
ঘন্টায় ঘন্টায় বংশ বৃদ্ধি ঘটছে,

মরা মাছের মতো ফ্যাকাসে চোখে
ফ্যালফ্যালে তাকান!
যন্ত্রণার মূহুর্তে মনে পড়ে 
অবহেলা,নি:শব্দে অপমান,
হেরে যেতে যেতে কুঁকড়ে গেছি!!

যন্ত্রণার মূহুর্তে ও মনে পড়ে ভাল-
বাসাকে!
ভেসে বেড়াই হাওয়ায় ওর সংস্পর্শে,মনে মনে!
আজ আমি বাতিলের খাতায়!!

হেরে যেতে যেতে কমেছে স্নায়ুর 
জোর,
ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে হয়ে পড়েছি দূর্বল;
ভবিষ্যত----হয়ত -----

শীতল শূন্যস্থান 


অন্তরে শীতল শূন্যস্থান
সুনিবিড় ডালপালায় সজ্জিত।
লুকোনো সমস্যা দেওয়াল হয়ে 
খাঁড়া,
দেওয়াল মালুম হচ্ছে না,আগেই 
ধাক্কা।

সাদামাটা শান্ত চেহারা,চাপা গাল,
হালকা দাড়ি,কোঁকড়ানো,
অনেকটা জমাট বাঁধা,শান্ত গভীর
চোখ,স্নিগ্ধ পার্সোনালিটি।

সব মানুষকে ছুঁয়ে বুঝতে হয় না-
হৃদয় দিয়ে স্পর্শ করতে হয়;
সে ছিল হৃদয়ের স্পর্শ,
আত্মার সম্পর্ক পাতিয়ে হয়েছিল 
পরমাত্মীয়.আত্মার আত্মীয়।

আজ আমার অন্তরে শীতল একটা শূন্যতা!
মনের মাধুরী দিয়ে সাজায়,স্মরণ করি,বরণ করি!!


বিরহ 




সে এক বৃষ্টি বিকেল,
আকাশময় নোংরা প্লাস্টিকের মত মেঘ।
বৈকালিক, দিগন্তের আকাশ-
ছড়ান হলুদ-কমলা আলোটা আজ আর নেই।

মন কেমন করা হলুদ-কমলা আলো!
দূ--রে উপনগরীর দানবীয় স্কাই-
লাইন।
জলদ মেঘে ভরে আছে মনের 
আনাচ-কানাচ!

বালিশ নাকে  চেপে,চেনাগন্ধটাকে
অনুভব,হারানোর বেদনা,
দীর্ঘ চুম্বন,খুনসুটি,অভিমান!
সব শেষ করে জীবন্মৃত রেখে 
চলে গেলে?

তোমার বিরহে আমার,অতল
বিরহ রাগিনী গেছে থেমে!!!


কর্কট রোগ 




রাজিতা বিড়বিড় করে,স্মল সেল 
কার্সিনোভা(ক্যান্সার)।
ভাবতে পারেনা,রজতাভ মৃত!
চিকিত্সায় সর্বস্বান্ত।
মেডিক্লেম,বলছে রোগটা প্রি-এগজিস্ট;প্রমাণ নতুবা নাটাকা।

বকেয়া বাড়ী ভাড়া,তুলে দেয় যদি!
মগজটা এখন সবুজ সর-পড়া নর্দমা যেন!
ভাবে নিজেকে রাজিতা,মন্দিরের
সিঁড়িতে মেয়েকে নিয়ে চট পেতে
ভিক্ষার ছবি!!
গাড়ির জানালায় সস্তার ধূপকাঠি
বিক্রি!!!

বুজকুড়ি কাটছে পচা নর্দমার 
থকথকে তরল।
মশার শূককীট নড়েচড়ে উঠছে,
মন-মাকুটার দড়ি টানাটানি,

বিধস্ত মনটা,আগ্নেয়গিরির গলিত-
লাভা,জমাট বাঁধতে থাকে,
ধী-রে ধী-রে----


ভালোবাসা ২



বাঁশবন,সবুজের হাতছানি,ঝিঁ ঝিঁ
জোনাকির মেলা।
বৈশাখের উত্তর আকাশের অনেকটা জুড়ে সপ্তর্ষিমন্ডল।
মরীচি,বশিষ্ঠ,অঙ্গিরা,অত্রি দক্ষিণে
পুলস্ত্য পশ্চিমে পুলহ,পুলহের 
উত্তরে ক্রতু।

গভীর রাত,লক্ষ্মীপেঁচা আমগাছের
ডালে বসে ডাকছে।
দূরের ছায়া ছায়া পাহাড়ের পাদ-
দেশ থেকে পাখি ডাকছে।
কপারস্মিথ---নদীর ওপারে দোসর
সাড়া দিচ্ছে টাক্যু টাক্যু।

আমার বুকেও অনেক কামনা-
বাসনা কপারস্মিথের মতো।
আমার ভালবাসার ঠোঁটের কোণে
দেখেছি,জলফড়িং এর ডানার মতো,
একটা তিরতির করে কাঁপতে থাকা হাসি।

ওভাবে হেসোনা,বুকের মধ্যে সব
কিছু গলে যায়।
চোখের পাতার উপর একটা কালো তিল,ঘাড়ের কাছে একটা,
বুকের ভাঁজে আরও তিনটি,
আমায় চুরি করে দেখতে হয়!

আমার ভিতরের পাগলটাকে 
অনেক কষ্টে চাপা রেখেছি!
আমাকে সুস্হ থাকতে দাও!
আমাকে পবিত্র থাকতে দাও!
আমার বড় কষ্ট,তুমি বুঝবে না!
ফুলের গন্ধ,ধূপের গন্ধ,চান করে
ওঠা শরীরের বিবশ করা গন্ধ!

ভাবতে চাইনা,সারা শরীর কাঁপছে
জ্বর এলো?
ডাক্তাররা কি জানেন কত রকমের জ্বর আসে মানুষের শরীরে?