নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

শ্রীময়ী(দ্বিতীয় পর্ব)

         







শ্যামল কুমার রায়, সহ শিক্ষক,
নবগ্রাম ময়না পুলিন বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়।




               দ্বিতীয় পর্ব 
               -----------------



     মাখন ফিরে এসে তিতলি কে প্রপোজ্ করল । অধ্যাপিকা তিতলি সলজ্জ হেসে বলল, " জানি না যাও ।" কিন্তু অবাঙালী তাও আবার মারোয়াড়ি পরিবারে মাছ ভাত খাওয়া বাঙালি মেয়ে? ছি!ছি!ছি!বেটা , মাখন, ইয়ে গলত হ্যায়।

আবার মেয়ে প্রফেসর তো কি হয়েছে? বংশ বলেও তো একটা ব্যাপার আছে? একদিকে, এত বছরের জমানো কৃতজ্ঞতা, রক্ত ঋণ শোধ করার সময়ে মা বাবা কেউ বুঝল না । আর মাখন কে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা যায়, শরীর দেওয়া যায়, তার ঔরসজাত সন্তানের মা হওয়া যায়, কিন্তু মনের জমির দখলীসত্ব কি করে দেবে , তিতলি? ওর মনের জমির মালিক যে একমাত্র, একমাত্র মাখন । সুতরাং আর কি? এক কাপড়ে তিতলি বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা মাখনের কর্পোরেট অফিসে। জ্যোতিষী শ্রী ঋষিকেশ শাস্ত্রী বলেছিলেন, " মাখনের বৃহস্পতি তুঙ্গী । " আর মাখনের ইন্টারকাস্ট ম্যারেজ হবে। আমেরিকা যাওয়ার আগে মাখন তিতলি কে নিয়ে শাস্ত্রী আঙ্কেলের কাছে  গিয়েছিল । যোটক নিঃসন্দেহে রাজযোটক। কিন্তু রান অ্যাওয়ে ম্যারেজ। পরিনতি যখন জানাই ছিল, তখন তো আর সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই । তিতলি কে নিয়ে মাখন নিজের পাওয়া অফিসের ফ্ল্যাটে। প্রেমিক আর স্বামী কখনো এক হয় না , বিশেষ করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে। তিতলি তাই অধ্যাপনা  সামলে স্ত্রী ধর্ম পালন করত। প্রকৃতির নিয়মে মাখন আর তিতলির কোল আলো করে এল সৌমদর্শন মুকেশ । সব অভিমান , জমানো ক্ষোভ, ব্যাথা নিমেষ উধাও হয়ে গেল নাতি হওয়ার আনন্দে। সম্পর্কটা শুধু আর তিতলি আর মাখনের মধ্যে রইল না, জোড়া লাগল দুটো পরিবারের মধ্যেও ।


(চলবে...)

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(ষষ্ঠ পর্ব)





মাধব মন্ডল 
**********


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।




আমি জানি মাঝে মাঝে তুই বিপুল বিষাদী 
চুপচাপ হাঁটিস
তোর মুখ শুকিয়ে মরুভূমি
বাঁদিক বরাবর
ডানদিকেও একলা থাকিস।

কি করি কি করি ভাবতেই থাকি আর
এক আঁচলা বিদ্যাধরীর জল আনি
ছিটাই তোর চোখে মুখে
ক্ষণিকে শান্ত হোস
সাগরী ঢেউ ঝাঁপায় অন্তরে অন্তরে।

এবার আর তোকে কোল ছাড়া করবই না
সুর করে মেখে রাখি তাই কাজে অকাজে
তোর কানে সুর দেব
ঐ নদী দিয়ে দেব
রোদে জলে রাতে বেরাতে ওর বুকে নিঃশব্দ ঘুমাস।


কাল রাতটা কাল রাতের মতই কেটে গেল
রাত জাগা হুতোমেরা লজ্জা পেল শুধু
চারদিকে এত আলো
ঝলসে গেল অন্ধকারেরা
মানুষের মনেই তা`লে হুতোমের বাসা!

আজ ক'দিন হল
সত্যি কথা বলতে কি
আমি একা একাই তোর সঙ্গে কথা নিয়ে খেলছি
মাঝে মাঝে কি রাগাটাই রাগছিস
এহ বাহ্য
তোর রাগগুলোকেও খাচ্ছি সশব্দ!

কিন্তু কাল যে কি হল
আবছা আবছা একটা ছায়া নড়ছে চড়ছে
আমাকে ফিসফিস করে বলল
নে নে চল চল চল চল 
কি আশায় পড়ে আছিস পাগল!
অকস্মাৎ
অকস্মাৎ মর্মভেদী ডাক সন্তানের।

অতঃপর 
অতঃপর বাস্তবে ফিরি
বড় কি দেরি হয়ে গেল!
এখনও কি শীত শেষে কৃষ্ণরা নাচায়?
এখনও কি চড়াই পাখি কিচিমিচি ডাকে?
শিম ঝোপে ছাতার এসে বসে আর ছটপট করে?
অকস্মাৎ মর্মভেদী ডাক সন্তানের
কাল রাতটা কাল রাতের মতই কেটে গেল!


এইমাত্র শ্মশান থেকে ফিরছি
আসলে কি জানেন
খুব ছোট থেকেই ওর শরীরে এ বিষ ঢুকেছিল
আধুনিক চিকিৎসাও কোন কাজে এল না
অতঃপর সব শেষ!

অতঃপর সব শেষ হয়ে গেল
শ্মশানে যেতে যেতে শকুন বাচ্চার কান্না শুনি
একদল সমব্যথী রাস্তা-কুকুর সঙ্গ নেয়
ঐ তো শ্মশানের ছায়া ছায়া গাছ
একটি মাতাল গদগদ হল।

অতঃপর চিতার আয়োজন
ডোমকে চোলাই দিলাম পরিমাণ মত
শ্মশান শাসক নেতিয়ে পড়ল কিঞ্চিত পরে
একে একে সব সুতো ঐ চিতা খায়
সাক্ষ্মী শ্মশান পাখি,কুকুরের দল।

অতঃপর সেই মুহূর্ত!
ভূত্বকে ধুলোর উপর পদ্মাসনে আমি
হিঁচড়ে আনি শরীর থেকে নিজের একান্তকে
হায়, একি তোর হাল
মানুষকে ভালবেসে ভালবেসে!

দৃঢ় প্রত্যয়ে উঠে পড়ি
চিতার মধ্যে ঢুকি অতঃপর
আগুনকে ভালবেসে বলি
আঃ, কি শান্তি! কি শান্তি!
এই নাও আচ্ছন্নকে পরিমার্জনা কর।


হাঁটতে হাঁটতে শূন্যে ঝাঁপাচ্ছি
কাঁপাচ্ছি শরীর মন
হাঁপাচ্ছি একটু একটু
শূন্য দিচ্ছে ধরা তাও একটু একটু
বকুলের সময় এখন
এখানে অনেকেই আজ নিরাপদ।

যদিও ভূত্বকে সবাই নয় নিরাপদ
আপদ কংস সচল প্রকাশ্যে
শিশুরা ব্যঙ্গে ওখানে হাসে
যদিচ এখানে এখন অনেকেই নিরাপদ
এখানে এখন বকুলের সময় কিনা!



(চলবে...)