নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বসন্ত সংখ্যা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বসন্ত সংখ্যা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

✍️✍️সম্পাদকীয় ...






"এরপর ঝরতে ঝরতে পাতা ,শহরে বিষন্ন মেঘ
পর্ণ মোচী ,নতুন করে বৃষ্টির ফোটায় ,মিশেছে আবেগ ।
মনখারাপি বিজ্ঞাপনে প্রেম হয়েছে জ্যান্ত ,
শিশির ভেজায়নি পা ,ভুল ,ফুলে এলো বসন্ত " ।।


শীত চলে যেতে যেতে পাতার ঝাড়ার শব্দে যেমন ভরে যায় অরণ্য ,মাঠে দূর্বা ঘাসে তখন হাসি হাসি মুখে ফুল ফোটে। আমের মুকুলের গন্ধে ঘুম ঘুম চোখে ভেসে আসে বাসন্তী মেলা ,কিংবা চরকের ঘুরপাক । রং বসন্তে অবিরে ছুঁয়ে দেওয়া প্রেমিকার গাল ,রাঙাতে রাঙাতে সংসারী হয়ে উঠে ভাঙা চোরা সম্পর্ক গুলো । আর গোল্লা ছুটের মাঠে নেমে আসে মৃদু বাতাসের উদ্বেল হওয়া । ভেসে যাওয়া রোমাঞ্চিত অতীতে ,কিংবা নতুন করে ফুলের সুবাসে ফের ভালোবাসায় ।

রক্ত পাত ,মিছিলের মুষ্টিবদ্ধ হাতেও জেগে ওঠে বাৎসরিক বাজেটের দিক নির্ণয় ,নতুন স্ট্র্যাটেজি ,তারপর নতুন বছরে রোদমুখর দিনের শুভেচ্ছা এর মাঝেই ভুল ,ফুলে বসন্ত আসে । মনখারাপি রাতের অক্সিজেনে সাজে তাজমহল ।


তাই এবারের নিকোটিনের সংখ্যা "বসন্ত " তোমার আমার ভিতরের কিছু কথা নিয়ে । সকল কবি/সাহিত্যিক ও প্রিয় সাহিত্য প্রেমী মানুষদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন । অনেক গুণী জনের লেখায় আবার ফুলে ফুলে ভরে গেছে এবারের সংখ্যাও ।
এভাই পাশে থাকুন ,ভালো থাকুন ,ভালো রাখুন প্রিয়মানুষটিকে ।


                                             ধন্যবাদান্তে ,
                                             ঈশিতা দাস
                                           (সহ-সম্পাদিকা)

সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা,

ননিকোটিন ও নিকোটিন পরিবার

রুনা দত্ত




দোল
******




বসন্ত এলে আজও মন হয় যে  চঞ্চল,
 মন জুড়ে থাকে শুধু আবির আর দোল।
শীতের বিদায়কালে ঋতুরাজ আসে দোরে,
 প্রাণ খুলে ডেকে নিই তারে আমাদের ঘরে।

 শিমুল পলাশ আর কৃষ্ণচূড়ার ফুলে,
 ফাগুনের রঙ কেউ ঢেলে দেয় গুলে।
 কোকিলের মধুর তানে আমাদের মনে,
  আবিরের রঙ লাগে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে।

  ঘাসে ঘাসে ফুলে ফুলে রাঙা প্রজাপতি উড়ে,
  রাঙা মুখে রাঙা হাসি, প্রাণ যে সবার ভরে।
  রঙ লাগে আকাশে বাতাসে আর বনে বনে,
  রঙ লাগে তোমার আমার হৃদয়ে আর মনে।

  কারো কাছে দোল খেলা, কারো কাছে হোলি,
 আবির আর ফাগে যেনো আজ রঙের রঙ্গোলী।
  ভেদাভেদ ভুলে সবাই আজ কাছাকাছি আসে
  দেয় রাঙিয়ে একে অপরকে শুধু ভালোবেসে।

 লাল নীল গোলাপী আবিরে হৃদয় আর প্রাণে
  বাজে সুর আনন্দে খুশীতে আর গানে গানে
 বসন্তের সুরে, রঙের বাহারে মন হয় উজ্জ্বল   রঙীন
 মনের মধ্যে ডানা মেলে যতো স্বপ্ন অন্তঃবিহীন

  মনের মণিকোঠায় দোল যেনো মধুর আবেশে,
 থেকে যায় আজীবন ভালোলাগায় ভালোবেসে।
  ফিরে আসুক দোলের এই শুভ মুহুর্ত বারেবারে,
  চঞ্চল মন আনমনা হোক বসন্তে আর আবিরে ।

   

জ্যোতির্ময় রায়



বসন্ত শেষে

************


আজ ফের বৃষ্টি হল ,রাম ধনু আঁকা সিঁদুরে মেঘে
আজ ফের কচু পাতায় জমেছে জল
দূর্বা ঘাসের গা ছুঁয়ে ,খেঁজুর পাতা বাতাসে ,
শিউরে উঠে শরীর ।
কাঁচা আম আর লবণ লঙ্কা গুড়ো ... !
তোমার মিষ্টি ঠোঁট আর রেশমী চুল ...
উষ্ণ কিছু চাওয়া ,কিছু নিরব অভিমান
বৃষ্টি ... তুমি এলে ... স্তব্ধ হয়ে যাওয়া
 শব্দে ফের দিলে প্রাণ ... ।।

বৈশাখী চ্যাটার্জী



কবিতা ছুঁয়ে বেঁচে থাকা কিছু গদ্য কথা 
***********************************




কবিতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে বেঁচে ফেরে কিছু কাকতালীয় সুখ --
বড় রাস্তার মোড় থেকে সরু গলির ঘুপচি ঘর গুলো পর্যন্ত দিব্যি কবিতা ছুঁয়ে বেঁচে থাকে । 
কবিতা ছুঁয়ে বেঁচে ফেরে বড় শহর ছোট গ্রাম । 

সন্ধ্যেবেলায় বাঁশঝাড়ের অন্ধকারের মধ্যে তৈরি হওয়া এক ক্যাচ ক্যাচ শব্দ রহস্য না খুঁজে খুঁজেছিল কবিতা । 
পরদিন সেই বাঁশগাছে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলেছিল কোন মালতি নামের মেয়ে । 
তারপর আরও কত রাত অতৃপ্ত আত্মারা  ঘুরে গেছে -
কবিতা ছুঁয়ে বেঁচে উঠেছে আরও কত অশরীরী কথা । 

কবিতা আছে বলে মালতি -আশা -লতা -বা সেই কোন এক কবির বনলতা আজও বেঁচে। 
কিন্তু সন্ত্রাস লোভ লালসার ইতিহাস গুলো শুধু বিদ্রোহ করে ফেরে । 

কবিতা আছে বলে ধুলো ঝড় গুলো বয়ে চলে । 
অযথা কিছু মুকুল খসে পড়ে ।    

তারপর কোন অন্ধকারের মধ্যে -কোন স্বপ্নের লাল রঙ ছুঁয়ে আসতে চায় আমেরিকা -ব্রিটেন-লন্ডন -অথবা প্যারিস। 

কাঞ্চনজঙ্ঘার সূর্য ওঠা বা কাশ্মীরের বরফের মধ্যে টুকরো টুকরো অভিমান বঞ্চনার কথা গুলো আলো আঁধারি কবিতা হয়ে বেঁচে ফেরে । 

বড় বড় উঁচু ফ্লাটের ওপর থেকে নিচে তলায় জমা কান্না আর অট্টহাসিরা ফোয়ারা ছোটায় বোতলের । 

সাধারনের পাঁচমিশালী পাঁচফোড়নের কাহিনীতে তেমন কোন কবিতা নেই । 

ঘাম ছোটা জীবনে -আঁচড় কাটা জীবনে -পাশবালিসে লেপ্টিয়ে ঘুমানো জীবনে তেমন কোন কবিতা নেই । 
তবু কবিতার মধ্যে এই ছোট ছোট অনুভূতিরা আটপৌরে হয়ে বেঁচে আছে - বেঁচে থাকে ।

আধঘুম চোখেও প্রতিটা কলমে সজীব হয়ে বাঁচে কবিতা আর কবিতা ছুঁয়ে বাঁচে কিছু গদ্য কথা ॥ 

                  

মৌসুমী রায়




জ্বলন
******

হাসনুহানার পুড়তে ভালো লাগে..
সূর্য ডোবার আগের আকাশ লাগে মিঠে
মুঠো মুঠো পলাশের রঙ তার কাছে,
যখন তখন আগুন হয়ে ওঠে।

নিষিদ্ধ ভালোবাসার স্বাদ...
তার কাছে পাখির নরম শরীরে
ঠোঁট ডুবিয়ে আদর,
আদর ভরা আঁচল হয়েছে বরবাদ।
বরবাদ যখন হয়েই গেছে..
নিজের ঘর সাজায় কারুকাজে
কারুকাজের ভুল সাজে,
আঁচল জ্বলে দাবানলে
হাসনুহানা পোড়ে সে অনলে
জ্বলনের নেশায় আবার একবার
তার আকাশের রঙ লাল পলাশ হয়ে যায়।


মনি আহমেদ



বসন্তের  সন্ধ্যা
************



গৌধুলির  সন্ধ্যায় যখন  দেখতে পেলাম,
আকাশটা  রক্ত লাল  হয়ে আছে  মনটা উদাস হল ,
আজ  সন্ধ্যায়  গাঢ়  নীল  আকাশ যখন  কাল হতে ,
থাকবে চাঁদের  স্নিগ্ধ  আলোর  কাছে  একটু ,
হিমেল  হাওয়া  ধার  চাইবো ------------।

তোমার  সঙ্গে  পথ  পেরুবো  বলেই  বুঝি ,
শক্ত  হাতে  তোমার  হাতে  হাত  ধরেছি ।
এক  জীবনে  হয়নি  চেনা ভালোবাসার ,
গভীর জলে  ডুবতে  থাকে  জীবনের ,
সব  আনন্দ  দুঃখ  ব্যাথা  -----------।

তোমার বুকে  আঁকড়ে  ধরে  কবির প্রেমে ,
হৃদয়  ভূমি  কে  নোঙ্গর  করা  ------------।
চোখের  ভাষা  হয়নি  বাধা  হয়তো  তুমি,
বুঝেই  গেছো   কবির  আছে  চরণভূমি।

তোমার  হাতে  হাত  টি  ধরে চলবো  পথে ,
ডাকছে  কারা  হাতছানিতে  ------ধার  ধারি না।
বুকের  থেকে  স্বপ্ন  কেনা  যে  এই  ঠিকানার ।



মনিকান্ত সর





~*** বসন্ত মনে ***~
        ********
         

বসন্ত এসেছে আকাশ জুড়ে
শিউলি পলাশ ফুলেদের ভিড়ে,
আবীর রঙে মেঘ ছেয়ে যায়
মনের মাধুরী মন'কে রাঙায় ।

সেই খেলাঘর - একই খেলায়
মন পড়ে থাকে গোধূলি বেলায়,
বসন্ত এসে বলে কানে কানে
এই তো আমি , চেনা ফাগুনে ।

খুশির ছোঁয়ায় দোলাও হৃদয়
বসন্ত মানে'ই - কী হয়, কী হয়,
সাঁঝের বেলা'তে মায়াবী সুর
হাতের নাগালেই অনেকটা দূর।

সোহাগে ভ'রেছে দখিনা বাতাস
তোমার পরশে'ও মধুর সুবাস,
চোখ ছুঁয়ে যাক্ স্বপ্ন এসে. . .
তোমার আমিতে - রাত্রি শেষে ।।

মৌসুমী ভৌমিক



হারানো বসন্ত
***********



এত ভালবেসেছি
     এত ভালবেসেছি বসন্তকে
তবু যখন বসন্তকাল এল
     ছুঁতে পারি নি শিমূল
           খোঁপায় লাগাতে পারি নি পলাশ
কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়ার কাছেও বসতে পারি দুদণ্ড
শুনতে ইচ্ছে করেনি কোকিলের কুহুতান।

যখন ফাগুন এল
   আবির মাখতে পারি নি ত্বকে জ্বালার ভয়ে
       পারি নি দোল খেলতে -

নিত্যদিনের কর্মমাঝে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি
     বসন্তকে চিনতেই পারি নি
         কিংবা চিনতে চেষ্টাও করি নি।

অথচ বসন্ত আসবার আগে
      কত প্রতীক্ষায় থেকেছি --

সোমা বিশ্বাস




বসন্ত
*****



বসন্তের বাহার ফুলে ফুলে ভরা
সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়েছে চতুর্দিকে,
ভালোবাসা ভালোবাসা বসন্তের দান
ফাল্গুনে ফাগুন চায় সর্বলোকে ।
গাছে-গাছে ফুল-ফল, মৌ-এর গুঞ্জন
প্রজাপতি ডানা মেলে উড়ে যায় সর্বত্র ।
গাছে গাছে ভরে উঠেছে সবুজ পাতা
বসন্তের গুণাগুণে অমর ছাড়পত্র ।

তপময় চক্রবর্তী





বসন্ত আসবে বলে 
****************




কোনো-একদিন বসন্ত আসবে ব'লে
নিজেকে বিদ্ধ করেছ কফিনের ফালে,
আতরের গন্ধেমাখা  সুদূর  ঝাপসা পথে
কালো ঝরা পাতার খস খস শব্দে,
আর ওই দূরের বাতাসের হুইসেলে
গা ধুয়ে যায় শুদ্ধ শীতল পরশে,
চাওয়া পাওয়া সেরে লাল বিকেলে
শুকনো পাতার মতো শেষ হয় বনে,
বন্দী ছবি প্রতিচ্ছবির ফ্রেমের কোণে,
নীতিহীন মুখ ও রাঙে নানা রং -এ
আর কালো কোকিল ও রঙীন ডাকে ,
যে সৌন্দর্য জন্ম লয় -- -- কমলার ফুল বনে ; 
মানুষের মনে কোকিলের গান ব্যবহৃত হ'য়ে 
সে সুদূর তরঙ্গে নাড়িয়ে দেবে কৃত্রিমতাকে
পৌঁছে যাবে মাকড়সার রোজগার বোনা জালে,
যে অন্তে শুকনো পাতার মতো ঝরে নাকো বনে ।।

নুশরাত রুমু




এসেছে ঋতুরাজ
***************



সূর্যের ঝিকিমিকি
পাখিদের কলতান
হৃদয়ে খুশির দোলা
ফাগুন এসেছে আজ।
মৌবনে মৌমাছি
ফুলগুলো ফুটে আছে
কৃষ্ণচূড়ার ডালে
এ যে বাসন্তী সাজ।
দখিনা হাওয়া এলো
সুরে সুরে কাছে টানে
কাব্যের ছোঁয়া লাগে
রেখে দিই যত কাজ।
সুশোভিত এই ধরা
পুলকিত মাঠ-ঘাট
দু'হাত ছড়িয়ে বলি
এসেছে ঋতুরাজ।

ইসমাইল মোল্লা




বসন্ত
****


ফাগুন আনন্দে মাতোয়ারা উদ্বেল বাতাস ।
আট থেকে আশির বুকে ভালোবাসার উন্মত্ত সুবাস ।
ধামসা মাদলের তালে তালে হারিয়ে যাক দুঃখ আছে যত
অশুভ রাত্রি শেষে ডাক দিয়েছে প্রিয় রঙিন বসন্ত ।
বসন্ত মানে প্রেম ।
বসন্ত মানে বুকের বাঁপাশে সদ্য ফোটা শিমূল –পলাশ–কৃষ্ণচূড়া ।
বসন্ত মানে প্রাণের নেশায় পথ হারানো পথভোলা । 
বসন্ত মানে চেনা প্রকৃতির সাথে নতুন করে আলাপ
বসন্ত মানে মুখোমুখি বসে ভালোবাসার যুক্তিহীন প্রলাপ ।
বসন্ত মানে প্রিয়জনের রঙের ছোঁয়ায় রঙিন হয়ে ওঠা
বসন্ত মানে অপেক্ষার আগল শেষে পেখম মেলে ধরা ।
বসন্ত মানে চোখে চোখ রেখে নীলচে আকাশ সীমাহীন
বসন্ত মানে প্রতিটি বাঙালির প্রেমের জন্মদিন ।

সৈকত বণিক





সঙ্গী যখন হেমলক
*****************





তবে তাই হোক
আমার গায়ে হাত দিয়ে যেদিন  নশ্বর হয়েছিল ব্রহ্মপুত্র
সেদিন তো প্রশ্ন করিনি
কেন করলে এইরকম, বলো।
শরীর শুধু শরীর, প্রিয়তমা নয়
তাই বনমালী নস্কর লেনের শরীরটা
আজ তোমার খাদ্য
কাল আবার রবীন্দ্রতীর্থ...
সেদিন যে বলেছিলে
আমি নাকি তোমার বিশল্যকরণী!
তোমার ক্ষতের প্রলেপ
তাহলে আমায় ক্ষতবিক্ষত করতে
একটুও হাত কাঁপল না, অথবা মন?
রবীন্দ্রসরোবরে আজও ভীড় হয়
হাট বসে বক্সিগঞ্জে
জমে ওঠে ময়ুরপঙ্খী
কেউ দেখে না
নির্ভয়া আজও কাঁদে
কখনো জনসমক্ষে, কখনো বা আড়ালে।।।

অসিতাভ দাস



বসন্ত 
******



বসন্তকে নিয়ে অনেক আদিখ্যেতা করেছ কবি ।
যেকোনো দিন বসন্ত ডাকার দাবি জানিয়েছ তুমি ।
ন্যাড়া ডালে পলাশের মোহে বেঁধেছ গান, এঁকেছ ছবি ।
আবেগ ছড়িয়ে বাতাসী সুরে ডুবিয়েছে মন, ভাসিয়েছ বোধ।
গভীর ক্ষতের অশ্রুধারা তোমার আনুগত্যে হয়েছে উজ্জ্বল রবি।
তীক্ষ্ণতর দিন-রাতের ছাতে টাঙিয়েছ ভাললাগার সামিয়ানা।
সেই বসন্তের মুখোমুখি বিদ্রূপে আজ হাসে খুব অভাবী!
ছেলেটা রাজমিস্তিরি বটে, খোপায় দিয়েছিল লাল পলাশ ।
কিশোরী পার্বতী বোঝে নি এভাবেই বসন্তকাল আসে,
ভালবাসা বলে একে, বোঝে নি সর্বনাশ ।
দিন-রাত খাটে, হাড়-মাস এক হয় চটের মিলে।
একটা মেয়ে তো পেলি, আর কী চাস?
শরীর দিলে ভাত আসে, মেয়ে কোলে শূন্যে চেয়ে -
আবার আসবে বসন্ত? আবার পলাশ? 

প্রভাত মণ্ডল



বসন্ত
*****



পলাশ শিমুল
রাঙ্গালো নীলাকাশ
গোধুলির রঙ্গে মনে 
ধরে আশ....... 
যেন প্রেমিক শিল্পীর
ক‌্যানভাসে তুলির রঙ্গিন 
আভাস...... 
কিম্বা ফুলে ডালিতে
বসন্তের প্রেমের 
প্রয়াস..... 
গন্ধে ভরপুর মুক্ত
বাতাস.... 
গাঁদার হলুদ রাঙ্গা
শাড়ি....... 
ভ্রমরের লেগেছে
উচ্ছাস...... 
এসেছে আজি বসন্তরাজ।

বিশ্বজিৎ ভৌমিক




" বসন্তের রাঙা প্রেম "
*******************




বসন্তের আলতো বাতাস হয়ে তোমায় আজো ছুঁয়ে যেতে চাই ,
কল্পনায় রামধনুর সাত রঙ খুঁজে নিয়ে বারবার তোমাকে রাঙিয়ে যাই ।
ফুলের গায়ে লেগে থাকা রঙ, সেই রঙ দিয়েও তোমাকে রাঙাতে চাই।
ফাল্গুনের জ্যোৎস্না রাতে তোমাকেই খুঁজে বেড়াই,
আশা নিরাশায় মাঝেও আমি বারবার তোমাতেই হারাই ।
হৃদয়ের ভগ্ন নীড়ে কষ্টরা এসে প্রতিনিয়ত কড়া নাড়ে,
ক্ষত বিক্ষত জীবনের হৃদয় বীণা বেজে ওঠে বিরহের সুরের ওপারে ।
স্মৃতির আবডালে বন্দি হয়ে বারবার পেছনে তাকাই,
সেই রঙিন জীবনের পদ্মপাতার ভীড়ে হারিয়ে যাওয়ার মাঝেও তোমাকেই খুঁজে পাই ।

আমার যতো প্রেমের কবিতা লিখেছি তোমায় নিয়ে,
আমার সকল ভালোবাসার গানে তুমি আছো সুর হয়ে।
তোমায় নিয়ে কষেছি আমার জীবন সুখের অঙ্ক,
পলাশ ফুলের গেঁথেছি মালা তোমায় পরাবো।
তুমি আমার বসন্তের রাঙা কৃষ্ণচূড়া ফুল,
টকটকে লাল শিমুল ফুলে তোমার মাঝেই দেখি আমি--- বসন্তের রূপ।।

পূজা গোস্বামী



বসন্তের ডাক নিমন্ত্রণে
*******************


নিছক প্রেমের গল্প সেদিন,
রাত ভাঙা স্বপ্নে এলো,
পল্লী স্রতের শুষ্ক আবির,
বসন্তের নিমন্ত্রণ পাঠালো। 

প্রেম কি শুধুই জড়িয়ে ধরা?
কাছে থেকে পাশে শোয়া!
ভেজা ঠোঁটে, ঠোঁট গোজা
এই কি শুধুই ভালোবাসা?

এই তো মিছে মিলন মনের,
ইচ্ছে ফুরোলেই নতুন আদর খোঁজে,
যেনো কুঁড়িয়ে পাওয়া পথের পারে,
অতিষ্ঠ মনের জীবন্ত হৃদয় পোড়ে।

তখন, মেঘ লজ্জায় আকাশ সাজে,
মাইল কতেক দূরের শহরে,
রাত নামে চাঁদের আড়ালে,
সারা বেলার ক্লান্ত চিঠি,
শেষ বসন্তে এলাই ঝরে। 

সুনন্দ মন্ডল



ইন্দ্রপতন
*********


                   
উজ্জ্বল আকাশে ঝলমলে তারাদের মাঝে
নিজ আলোয় সুরভিত তরঙ্গ তোমার নাম।
শিশু চরিত্র কিংবা যৌবনের উল্কা তুমি
ছিলে মানব জাতির স্নিগ্ধ কৌমুদিনী।
বনস্পতির মহীরুহ হয়ে পৌঁছেছিলে শিখরে
পর্বতের পাদদেশ ছিল আর কত শিষ্যদের।
মুম্বাই থেকে দুবাই কাঁপিয়েছিলে নামের তর্জনে
হীরের মুকুট উঠেছিল মাথায় তেরোর ঘরে।
আজ হঠাৎই হিম্মতওয়ালার হিম্মতওয়ালী
খসে পড়ল চলচ্চিত্রের পর্দা ভেদ করে নাভিমূলে।
'মম' হয়ে মানুষের মাঝেই ঠাঁই নেবে বাকিদিন
চুয়ান্নতেই ইন্দ্রপতন নক্ষত্রখচিত সুন্দরীর।
অকাল হৃদরোগ কেড়ে নিল প্রাণ তাজা রক্তের
বিষণ্ন চারিদিক বসন্তের মিছিলে শোকস্তব্ধ।
ছন্দপতনে কেটে গেল সুর বিজয়ের কোলাহল
শুধু প্রাণময় ভালোলাগা একরাশ বেঁচে থাক।

অসীম মালিক



শিমুল ফুলের ভায়োলিন 
*******************            
                 
               ( এক ) 


নড়বড়ে ঠোঁটের সেতু , 
ব্যথাহত কথারা পারাপার হতে না পেরে 
চোখের সূচিপত্রে -জল অক্ষরে লেখা । 

ঠোঁটের ওঠানামা , 
যেখানে চোখের থেকেও নীরব 
সেখানে চোখের পাতা ওল্টাই । 
দেখি , চোখের নদীতে ভাসে 
একগুচ্ছ পলাশ ফুল । 

ঠোঁটের সেতুর প্রতি 
আর আমার ভরসা নেই ! 
আজ ওই সেতু দিয়ে 
শুধু চাঁদ পারাপার হয় । 

চোখের নদী সাঁতরে কুড়িয়ে আনি 
বৃন্তচ্যুত একগুচ্ছ শিমুল ফুল । 
                
               ( দুই ) 

দোলপূর্নিমার চাঁদ বাজায় , 
শিমুল ফুলের ভায়োলিন । 
কী বিষন্ন সেই সুর ! 
আমায় স্মৃতিতে চমকায় । 

পুনরায় উল্টে দেখি – 
তোমার চোখের সূচীপত্র । 
ধূসর চরাচরে 
একাকী বিষন্ন মনে শুনি – 
শুকনো পাতার সানাই । 

                ( তিন ) 

ঝরাপাতার জলসাঘরে 
ভেসে আসে কোকিলের বিষন্ন সুর । 
অদূরে কৃষ্ণচূড়ার ডালে 
কচিপাতার দোতারা বাজায় 
দক্ষিনা বাতাস ! 
বাসন্তী আকাশের নীচে আমাকে বাজায় – 
বৃতি খুঁজে পাওয়া অশোকফুল । 

ঝরাপাতায় সওয়ারি হয়ে দেখি 
আমার প্রিয় রাধাচূড়া 
আজ তোর কানের দুল ।

বিকাশ কারাক


পাগল
******


আমি এক অদ্ভুত জীব, লোকে আমায় পাগল বলেই চেনে.
অর্ধনগ্ন জোটা দেওয়া চুল, জঞ্জালের স্তুপে থাকি ফুটপাথের এক কোনে.
কেউ মাড়িয়ে যায়,কেউ দেয় গালি,কেউ ছোড়ে ঢিল,কেউ বা ইস! পাগলটা বলে এগিয়ে যায়.
আমি পড়ে থাকি ক্ষুদার্ত, নিসম্গ, কুকুরগুলোকে আদর করে বিস্কুট খাওয়ানোর দিকে চেয়ে,
কখনও বা আকাশ ছুতে চাওয়া অট্টালিকার ফাঁকে এক চিলতে শুন্যতার দিকে হাত বাড়িয়ে.
আমরা আবর্জনা আমাদের ধুয়ে ফেলতে কখনও আসে বৃষ্টি কখনও আসে পুলিশ.
আসে না একটু ভালবাসা আর একটুখানি রুটি.
মানবতাবাদীরা! আজও ভীষণ ব্যস্ত কোনো বড়লোক বাবার মদপ কিশোর ছেলের
খুনোখুনিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে মিছিলে স্লোগান দিতে.
মিডিয়ার ফ্লাশেও হারিয়ে যায় আমাদের কথা,অজানা স্রোত যদি ঢুকে পড়ে
চিত্কার উঠে আরে! ওটা তো পাগল ছুড়ে ফেলো একে আরব সাগরের বুকে.
অমানবিকতার সমুদ্রে ডুবতে থাকে শরীর, মাথা আস্তে আস্তে শেষ আঙ্গুলটা.
কেউ আসে না আমরাতো মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
 লোকে পাগল বলেই চেনে.
ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলা খাওয়ার ছবি ঠাই পায় তোমাদের আর্ট গ্যালারিতে
পার্টিতে নামিদামী মদের ফোয়ারায় উঠে আমাদের কথা.
মানব জাতিকে, দেশটাকেও নগরা করার দায় উঠে আমাদেরই উপর.
উঠেনা শুধু একটা হাত আমাদের দিকে মানুষের মর্যাদা দিতে.
  কারণ আমরাতো মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
 লোকে পাগল বলেই চেনে.
আমাদের চিন্তা মনন ভালবাসা এমনকি স্মৃতি টুকুও কেড়ে নিয়েছে
হয়ত বা আমাদের কোনো প্রিয়জন. শুধু পারেনি শুন্যতার গহ্বরে 
আমাদের চোখের জল টা কেড়ে নিতে.
ওটা আমার একান্তই আমার হয়তবা বৃষ্টির জলে বুজতে পারি না ,আনুভব করি.
তবুও আমি মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
 লোকে আমায় পাগল বলেই চেনে.
আমার জন্য কবি নেই কবিতা নেই,আমার জন্য কোনো সমাবেশ নেই.
দাবি নেই, নেই কোনো বরাদ্দ.
আছে রেলস্টেশন,একটা ব্যস্ত কোনো আন্ডারপাস অথবা বৃষ্টিতে ভেজা রেলিং এর একটা কোন.
সময় সময় ওরা আসে ধুয়ে মুছে সাফ করতে.
রাস্তায় কুড়ানো ছেড়া পেন্ট ফেলে দেওয়া আধখাওয়া রুটি,কিছু রঙিন কাগজ আর পুড়িয়ে দেওয়া
কম্বল নিয়ে দৌড়াই,
পিছন পিছন দৌড়ায় একটা সমাজ একটা জাতি একটা লাটিধারী পুলিশ
     আমাদের মিটিয়ে দিতে আর একটা সভ্য সমাজ বানাতে
যেখানে ঠাই নেই আমাদের কারণ
আমরাতো মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
 লোকে পাগল বলেই চেনে.