নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বন্ধু তুই : মান্নুজা খাতুন


মেঠোপথের আলবেয়ে
চলতে শেখার অন্য এক নাম
বন্ধু তুই ;
আমার প্রতিদিনের অভ্যাস
 গলির মোড়ে ধোয়াওঠা কফি কিংবা
 ফুচকার স্টলে দাঁড়ানোর অন্য এক নাম
 বন্ধু তুই ;
 প্রতিদিন একই পথের যাত্রী
প্রিয় রঙের জামা
হালকা সাজগোজ
এসব কিছুর অন্য এক নাম
বন্ধু তুই ;
বিকেলের খোলা আকাশ
মুক্ত বাতাস,  ভরা গঙ্গায়
গোড়ালি  ডুবিয়ে বসে থাকা
কামরাঙা মেঘ দেখে
রুপকথা বানানো
এসব কিছুর অন্য নাম
বন্ধু তুই ;  

পোষাক : আমিনুল ইসলাম




নগ্নতাদের একত্র করলে তারা লজ্জায় পোশাক খোঁজে
প্রতিশ্রুতি নিয়ে ওরা নিজেদের ঢেকে নেয় অন্ধকারের আড়ালে।
রাতের নগ্নতা জুড়ে আড়াল খুলে খুলে খুঁজছি তাদের 
নগ্ন শরীরে আয়না নির্বাক দাঁড়িয়ে নিজেকে আরও একবার যাচাই করে
মেঘের আড়াল ঠেলে সূর্যের নগ্নতা দেখার চোখ নেই তোমার চোখে
আসলে যা দেখ সবই রেটিনায় সাজিয়ে রেখেছে অন্য কেউ
অন্যের আবর্তে আবর্তিত হতে হতে খুঁজে চলেছো সভ্যতার নগ্ন পোশাক

সূর্য প্রনাম : সুমিত মোদক




সারাটা রাত ধরে যে ফুল মেলে দিয়েছে পাপড়ি
সুঘ্রাণ ,
সকালবেলা তাকে কি ঝরে যেতে দিতে পারি !
সদ্য যুবতী প্রেয়সীকে বলে রেখেছি
ওড়না বিছিয়ে রাখতে ;
#
আজকাল নদীয়ার পথে পথে হাঁটলেও
ভিতরে ভিতরে চৈতন্য জাগে না ;
জাগে না বৈষ্ণব পদাবলি ...
#
তোমারও তো আসার কথা ছিল
কিছু রাগিনী সঙ্গে নিয়ে সেই মেঠো পথ ধরে
মায়ের নিকানো উঠানে ;
#
কেন জানি না , এখন আর সূর্য প্রণামের সময় পাই না ;
মেলে দিতে পারি না ইচ্ছা-ডানা
প্রজাপতি-রঙ ;
#
অথচ , চারিদিকে সকালের আলো , ফুলের সুঘ্রাণ ,
বৈষ্ণব পদাবলি , নিকানো উঠান , প্রজাপতি-রঙ  ...
#
হয়তো  , আমি আর আগের মতো , তোমার মতো ,
সহজ সরল নেই ।

সাংবাদ : অভিজিৎ দাস কর্মকার



ভূগোলের শব্দে সিবেকের বিজ্ঞান
কানেক্টিং পিপলস-এর সিগনালে

পশ্চিম রাস্তার গাছটি
কবিতা কুড়ায় ছায়ানীচে-

টানটান মুহুর্ত্বরা নীল আলোয়
নাইট মেয়ার হয়ে আছে চোখের ঠিক কোণে।

নিউটন খোঁচা দেয় মাধ্যাকর্ষনে
তৃতীয় সূত্রে আত্মীয়ের এপিটাফ জমে দেওয়ালের অক্ষরে লেখা হয় মহাকাব্য।

ডিজিটাল যোজনা,
রাস্তায় লাল রঙে জ্বলজ্বল করছে-
শুয়ে আছে গণতন্ত্র নামক বিষয়বস্তুটি।

প্রকৃতি হন্নে হয়ে ছুটে চলে, আর সোসিওলজিতে পথ ঝাঁটানির কণ্ঠস্বর।

বন্ধু তোমায় : শুভম চক্রবর্ত্তী



হে হৃদ-সখা,
এই দুরন্ত পৃথিবীর উন্মাদনায়
সবাই যখন একাকিত্বে মত্ত,
আত্ম চঞ্চলতা যখন সবার রক্তে,
স্বার্থপরতা যখন মানুষের একমাত্র বুলি,
এই ক্ষনে জানাই তোমায় হৃদ-অন্তরাল প্রেম।
বন্ধু যখন 'ফেসবুক'এ সীমাবদ্ধ,
আর তার প্রতিদান যখন লাইক আর কমেন্ট,
জীবন-যাত্রা যখন মোবাইলে বন্দী,
মানুষ যখন শূন্যে ভেসে বেড়ায়,
এই ক্ষনে জানাই তোমায় হৃদ-অন্তরাল বন্ধুত্ব।

এসো হে বন্ধু,
আজ এই শুভক্ষনে
লোক দেখানো বন্ধুত্ব কে বিদায় জানিয়ে,
প্রভেদের বেড়াজাল ছিন্ন করে,
সবাইকে আপন করেনিয়ে
মানুষের পাশে দাঁড়াই,
ভালোবাসার সমুদ্র গড়ে তুলি।


পুঞ্জীভূত বিক্ষোভ : অমিত কুমার জানা


খোলা আকাশের নীচে
রোদ বৃষ্টি ঝড়ের সাথে
সভ্য সমাজের আড়ালে
আমরা তাতেও ছিলাম মেতে।

সহনশীলতা হারিয়ে গেলেও
বাঁচার তাগিদে সহ্য করেছি কতো
কষ্টেরাও মাথা উঁচু করেছিল
ওদের সাথেও হয়েছি অভিযোজিত।

জীবন ছিল মুক্ত বিহঙ্গের ন্যায়
স্বাধীনতা ছিল অফুরান
সারা পৃথিবীটা ছিল ঘর
সেই খুশিতে ভরে ছিল মনপ্রাণ।

হঠাৎ ওরা এসেছিল সদলবলে
দেখিয়ছিল জীবন পাল্টানোর স্বপ্ন
বুঝিনি সে মিথ্যা আশ্বাস
ওরা নাকি দেবে অমূল্য মানিক রত্ন!

তারপর পোড়া ইঁটের মতো করে
ওরা মোদের সাজিয়েছিল উপর্যুপরি
ওদের আড়ম্বর জীবনের ভিত গড়েছিল
মোদের উপর অন্যায় বল প্রয়োগ করি।

ওরা কেড়েছিল মোদের স্বাধীনতা
ক্ষুন্ন করেছিল স্থান পরিবর্তনের ক্ষমতা
কেড়েছিল মোদের বাকশক্তি
বালি সিমেন্টের আবরণে।
কিন্তু ওরা কি জানে?
মোদের বিক্ষোভের লাভা পূঞ্জীভূত হচ্ছে
সচেতন দুটো ইঁটের মাঝখানে।

অনুপ্রবেশের ধুলো ঝড় ; আমিনুল ইসলাম



আকন্ঠ গিলে ফেলছি নিমজ্জিত পতনের ঢেউ
ঢেউয়ে ওড়নার ফুরফুরে শরীর বিলিয়ে দেয়া
এসবের আড়াল-আবডালে পরাগহীন হয়ে ওঠা ও
অন্যের তাগিদেই মৌমাছি প্রতিপালনের পক্ষ জুড়ে
মোমবাতিটি পুড়ছে
বিবশ হয়ে আসা ঠোঁটের অনুপ্রবেশে দ্রাঘিমায় নিষিদ্ধ
ধূলো ঝড়
ক্রোধের রং লাল জানি, দুরুদুরু ভালোলাগার ভয় মিশ্রণে যে রঙের আবির্ভাব, সে রং সহনশীলতায় ডিপ- ফ্রিজে বরফ জমতে থাকলে
কাঁচ ঝাপসা হয়ে ওঠে
প্রতিনিয়ত চোখের ট্যানেলে স্ক্যান হতে থাকা অবস্থান পরিবর্তন আঁকা হলে
একটি নিপুণ রাত জাগে সমান্তরাল

অতঃপর, ধীরে ধীরে মালতীর নাইট ড্রেসে জোনাকি খুলছে

মাত্র দুই :অনিন্দ্য পাল


১. রাতের মোড়কে তোমার পশমিনা গুহা
অন্ধ ভ্রমর আলোয় পুড়ে মরে ...
২.দোলনাতে কেটে যায় অলস দুপুর
অতীত আদর দেয়, ভবিষ্যৎ অচেনা সুর...
৩. রাতভর বসে আছে শীতের শিকারী
প্যালেস্তারা খসে পড়ে, কাঁদে বিপজ্জনক বাড়ী ...
৪. এত রাত খরচ হয়ে গেছে কবে ভগ্নাংশ জীবন
কোন রাতে খরচা হল, জীবনের মন!
৫. উঁচু আরও উঁচু বোবা অট্টালিকা
পাষণ্ড পাষাণ নিয়েছে জীবনের ঠিকা!
৬. নৈশব্দের গল্প নিয়ে এল  ম্যাগেলান আমার
তখন আলোর উপোস, জোনাকিআলোয় স্নান...
৭. চরম এক মেঘলা সুখ ধীরে ধীরে
বর্ষাদেহে ঢুকে পড়ে রোমকূপের গভীরে ;
৮.সমস্ত মনখারাপের জীবানুদের আজ ছুটি
যুবতী হয়েছে কলঙ্কিনী চাঁদ ...
৯. মনের দেওয়ালে লেগেছে কাল-ঘুণ
জীবাশ্মে রাখ পা, জ্বালাও উন্মাদ আগুন ;
১০. অনেক দূর থেকে পৌঁছে দিয়েছে প্রেম
অথচ আমার পরমায়ু ধুয়ে গেছে, সমুদ্র সৈকতে ...

তোমার জন্য : সুমিত মোদক


একটা সকাল তোমার জন্য রেখেছি
মহাকাল ;
ভৈরবী রাগে ডুবিয়ে রাখি চরাচর ভূমি
রাতে ফোটা ফুলের সুঘ্রাণ ;
কেবল , তুমি আসবে বলে ....
#
যদিও এখানে পানীয় জলের হাহাকার
মনুষ্যত্বের আকাল ;
যদিও এখানে ভয়ে ভয়ে পথ হাঁটে
সদ্য কিশোরী
সকলেই ....
তবুও , এখানে ঘটা করে কুমারী পূজা হয় ;
হয় চণ্ডী পাঠ ---
ইয়া দেবী সর্বভূতেসু শক্তিরূপেন সংস্থিতা . ..
#
যে রাতচরা পাখি সারারাত তোমার জন্য অপেক্ষা করেছে ,
তাকেও বসিয়ে রেখেছি  ;
বসিয়ে রেখেছি সেই অভিবাসী পাখিদের ,
যারা জাতিঙ্গা গ্রামে আত্মহত্যা করতে চায় ;
এমনকি মৃত্যুকেও ...
#
একটা সকাল তোমারও জন্য রেখেছি ...

মালতীর উড়ান : আমিনুল ইসলাম



তপবনে বসে নেই শকুন্তলা, অপেক্ষায় অপেক্ষায়
ঝিমিয়ে গেছে জারুল
ভাগাড় সাজিয়ে শকুন পাহাড়ায় পঁচা গলা নগ্নতা
অসাড় পড়ে থাকা কাঠের পালিশ
নারায়ন লাঠি হাতে বহুদূরে চলে গেছে সোজা চোখের গভীরে
ডুবতে ডুবতে শুরু হয়েছে বন্যার তলিয়ে যাওয়া শব্দ-সম্ভার।
সবকিছুকেই হটিয়ে রেখে ভালোগুলোই তুলে আনে
তথাপি মালতীর আকাশে উঠতে পারেনি একটিও অন্য উড়ান
এযাবৎ মহড়া হয়েছে, অনেক যুদ্ধ বিলম্বিত হচ্ছে আড়ালে

বিষণ্ণ হৃদয় :আহাম্মেদ হৃদয়



তুমি বোঝতে পারনি,
কোনটা রাগ
কোনটা অভিমান।
আমি বোঝাতে পারিনি,
আমার মনের ভালোবাসার স্লোগান।
রাগ অভিমানের গাড়ি,
চলছে অভিরত।

চমকে উঠিনা আগের মতো আর
না শব্দটি শুনে।
কষ্টআমার শেষ্ঠ সময়
এটায় নিয়েছি মেনে।

তুমি বোঝতে পারনি
কোনটা রাগ,
কোনটা অভিমান।
জানি আমি বোঝবে একদিন তুমি
সকল না বলা কথা
বলবে ভালোবাসি বারে বার।
কিন্তু,আমার মুখে হারিয়ে যাবে
ভালোবাসি তোমাকে এই স্লোগান।

দাও দাও দাউ দাউ : কৃষ্ণ বর্মণ



দিচ্ছো ভালো কথা
দাবীটা ন্যায্য বলেই না দিতে বাধ্য হচ্ছো
যা দিচ্ছো যত টুকু দিচ্ছো
নিজের ঘর থেকে তো দিচ্ছো না
যারা দাও দাও বলে চীৎকার করে
প্রাপ্য পায়নি বলেই
তাঁরা আজ পথে মাঠে ঘাটে

ওরা তো এমনি এমনি চাইছে না
এমনি এমনি ওরা নামেনি পথে
না দিতে দিতে ওদের দেউলিয়া করেছো বলেই
ওদের কন্ঠে আজ--"দাও দাও"

এই দাও দাও যেদিন দাউ দাউ করে জ্বলবে
সেদিন বুঝবে তোমার দর্পের যতুগৃহ
কতটা দাহ্য কতটা দূর্বল

শরীর যখন ডাকবাক্স : অভিজিৎ কর্মকার


মন্দ আমি,মন্দ আমার সৃষ্টি
মুঠোফোনে প্রেম শেয়ার করেছি,জানিনা শরীরী মাখামাখি...
কালোবকের ডাক শুনে সাড়া দিই,কিবা রোদ্দুর কিবা বৃষ্টি।
ঢুলুঢুলু চোখে নীল সাগর দেখি,পক্ষীরাজে সাইবেরিয়া
রুগ্ন দেহেও লোলুপ চাহনি,আঁটকায়নি সেক্সোফোবিয়া
লেখাগুলো সব হামাগুড়ি দিচ্ছে...অভিশপ্ত অহল্যা আমি,কষ্টে রয়েছি মিছে।
মন কেমনের জানালা দিয়ে গলিয়েছি নিজেকে বারবার,
হিংস্র নখের আদর মেখে গায়ে খুঁজেছি নিজেকেই আবার।
অঙ্কের খাতা হার মেনেছে টেলিফোনের আর্তনাদে,
ভালোবাসার মই ওঠেনি উপরে,পেয়েছি নিজেকে খাদে।
জ্যোৎস্না রাতে প্রেম বিলোতে উঠেছি বাড়ির ছাদে তনুবিহঙ্গে মত্ত হয়েছি,মাতাল তোমার হাতে।
ক্লাস বাঙ্কের হাতেখড়ি ষোড়শী হলাম যখন,
ব্ল্যাক টিকিটে পুষিয়েছি সব,সিলেবাসে আমরা দুজন।
জুটি ভেঙেছি বহুবার,এক্সপিরিমেন্টের নেশায়...আজ আমি এক্সপিরিয়েন্সড্,দাঁড়িয়ে থাকি রাস্তায়।
প্লেটোনিক থেকে হয়েছি প্যাথেটিক,কাঙালী ভালোবাসার
জানিনা কবে আসবে চিঠি ডাকবাক্সে আবার।   
                  

অব্যাহতি : অমিত কুমার জানা


নিশুতি রাত, হায়নার ভয়ংকর ডাকে ও চমকে উঠলো।
ও চিৎকার করে ডাকলো বাবা মাকে,
বললো-"তোমরা কোথায়? এখনই লাঠিসোটা নিয়ে এস,
হিংস্র হায়নাটাকে তাড়িয়ে দাও"।
বাবা মা ভাই বোন কেউ এল না।
-"তোমরা কি শুনতে পাচ্ছো না কেউ?"
ও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো,তবুও---

এবার ওর প্রকৃত নিদ্রা ভঙ্গ হলো,
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে ও পরিবারের সবাইকে ছেড়ে এসেছে,
ও মস্ত অফিসার, এখন ভীষণ স্বাধীন।
সংসার সামলানোর বাধ্যবাধকতা থেকেও মুক্ত।
উপার্জিত অর্থ একাই ভোগ করে,বাকিটা সঞ্চিত  থাকে।

রাত্রি বাড়ে, ওর চারপাশ ছমছমে আঁধার ঘন হয়ে ওঠে,
সুযোগ সন্ধানী হায়নার দল ধেয়ে আসে ওর দিকে,
ও যেন শিশুর মতো নিতান্ত অসহায় হয়ে ওঠে,
পরিবারবর্গের সঙ্গ পেতে ও মরিয়া হয়ে ও সচিৎকারে বলে ওঠে-"বাঁচাও, বাঁচাও---"

তুই কি আমার বন্ধু হবি : মুহাম্মদ ইয়াসিন।



তুই কি আমার বন্ধু হবি?
রাত-বিরাতে একলা চলার সঙ্গী হবি?
সাঝ সকালে ঘুম বাড়িতে
ঝাঁকুনি মেরে ঘুম তাড়াবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
একলা রাতে আকাশ দেখার সঙ্গী হবি?
দুঃখ রাতে পাশে থেকে
দুঃখগুলোয় ভাগ বসাবি?
সুখের সময় দুঃখের সময়
সব বেলাতে আমার হবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
শিশির ভেজা ঘাসের উপর
হাঁটতে গিয়ে আমায় নিবি?
মিষ্টি রোদের শেষ বেলাতে
মন খারাপের সব বেলাতে
কাছে থেকে মন রাঙ্গাবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
বৃষ্টি ভেজা রৌদ্র ছায়ায়
একলা যখন ভিজবে কায়া
কলা পাতার ছাতা নিয়ে
তুই কি আমার পথ শুকাবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
আঁধার রাতে একলা হলে
দুঃসময়ে পথ হারালে
তুই কি চেনা পথিক হবি?
আলো হয়ে পথ দেখাবি?
তুই কি আমার বন্ধু হবি?

চাই না কারগিল : পিনাকি কর্মকার


বন্ধ হোক রক্তস্রোত নিয়ত দুইবেলা,
বন্ধ হোক পড়শির সাথে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
বন্ধ হোক দেশের মধ্যে আরেকটা দেশ গড়া,
 বন্ধ হোক প্রত্যহ এই লাশগুনতির ছড়া।
সীসের টুকরো বোঝেনা যে কে আপন কে পর,
মৃত্যুদূতের কোলে তুলে সে ভাঙছে শুধুই ঘর।
যুদ্ধের মুখে ছাই দাও আর বারুদের ঘরে খিল,
চাইনা কারুর রক্ত যে আর চাইনা কারগিল।

শিক্ষার হালচাল : মাধব মন্ডল


বিষয় : শিক্ষার হালচাল
স্থান : শিক্ষাপুর,
কলার : পিকু
অন্যান্যরা : ইকু, মিকু, রিয়া ও রুবিনা।
----------------------------------------------


পিকু : আগত সবাইকে জানাই স্বাগত।
অন্যান্যারা(একসঙ্গে) : মহা স্বাগত।
পিকু : শিক্ষাপুরে সত্যিই শিক্ষার ফল
ফলছে।
ইকু : নিশ্চয়ই, না হলে এখানে একসঙ্গে এত
স্কুল চলছে!
মিকু : চারদিক বিজ্ঞাপণে গিয়েছে ছেয়ে।
রিয়া : মনে হচ্ছে বাচ্চারা বড় হবে বিজ্ঞাপণ
খেয়ে।
রুবিনা : রিক্সাওলাও হাজির বিজ্ঞাপণ পেয়ে।



পিকু : ফ্রি প্রাইমারি তকমা পেয়েছে খিচুড়ি
স্কুলের।
রুবিনা : এস এস কের কপালেও জুটেছে ছাপ
একই ফুলের।
রিয়া : বাদ নেই এম এস কে আর জুনিয়র
হাইও।
মিকু : এর বাইরে আর কিছু নাইও।
ইকু : এবার তাহলে শিক্ষা কিনতে অন্য
কোথাও যাইও।



পিকু : তাহলে প্রথম চলো জ্ঞানালয়ে।
যেতে পারি বোধোদয়ে। না হলে
জ্ঞান পিপাসায়। জ্ঞানজলসায়?
হ্যাঁ তাও যাওয়া যায়।
ইকু : অকারণ বইয়ের বোঝা।
মিকু : দায় হয় মাজা রাখা সোজা।
রিয়া : এলেবেলে টিচারকুল।
রুবিনা : হম্বিতম্বিতে নাম্বার ওয়ান বিলকুল।
ছুতো নাতায় পয়সা আদায়ে করেনা
ভুল। হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা
মারছে খালি গুল।



পিকু : ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে
সব। যেমন ছিরি নামের তেমনি লক্ষ্য
নিয়েও নীরব।এক একটি শিক্ষাগর্ধভ।
রিয়া : লক্ষ্যের চেয়ে উপলক্ষই বড়। মান?
মান চুলোতে যাক টাকা পেমেন্ট কর।

মিকু : শিক্ষাপুরের শিক্ষাশালায় প্রোডাক্ট
তৈরি হয়।তা ঝাঁ চকচকে মোড়ক
মোড়া সমাজ বৈরি হয়।
রুবিনা : নিজেকে ছাড়া কাউকে চেনে না।
এমনকি মাঝে মাঝে মনে হয় এরা
নিজেকেও চেনে না। দেশ নয়, মাটি
নয়, মা নয়, শুধু মস্তিতে বাঁচো। টাকা
টাকা করে শুধু হিঁচ্চা হিঁচিং হাঁচো।
ইকু : নিজেদের দোষে ডুবে মারি তোকে। হায়,
ঝাঁ চকচকের, অকারণ শৌখিনের কদর
করছে লোকে।



পিকু : ভুলে ভরা বই।
সাত ভূতে খায় কমিশনই।
রুবিনা : ব্যবসা বাড়ছে চড়চড়।
শয়তান ওড়ে ফড়ফড়।
রিয়া : খাতারও নেই শেষ।
চুপ, শিক্ষা চলছে বেশ।
ইকু : প্রজেক্টের জোয়ার!
কিছু শিখুক না শিখুক থাকবোই গোঁয়ার।
মিকু : পয়সায় পয়সায় শিক্ষা ওড়ে
তোমার বাড়িতে যায়।
হায়, হায়, হায়!
****************************

ঊনিশের প্রেম দিবস : প্রলয় কুমার বিশ্বাস


এক থালা পায়েস সাজিয়ে ছিল মা
ফেরা হয়নি জন্মদিনে,
গত শ্রাবণী পূর্ণিমার  বোনের রাখি হাতে ছিল সেদিনও,
প্রতি বছর এইদিনটিতে প্রেয়সী গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকতো স্কুলের চেনা কৃষ্ণচূড়ার নীচে।
কিন্তু, এবারে আর ফেরা হয়নি।

আমার শরীরে এদিন তেরঙ্গা জড়ানো ছিল
মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি,
গোটা দেশের চোখে তখন জল।
যারা কাছের ছিল, তারাই আগুন দিল
শূন্যে ভাসলো গুলির শব্দ
দলা পাকাতে লাগল আমার শিরা উপশিরা।
কিন্তু, অমরত্ব পেলাম আমি
আর ঊনিশের প্রেম দিবস।

সাদা এপ্রোনের মেয়ে : নির্ঝর চৌধুরী


একটা মেঘাচ্ছন্ন সন্ধ্যা,বৃষ্টির প্রতিক্ষায় থাকা আমাদের অনুভূতি গুলো।আর ওপাশে খোলা চুলে একটা সাদা এপ্রোনের তুমি অবিরাম।

হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামুক।বৃষ্টিভেজার ছলে সাদা শার্টের বুক পকেট বরাবর একটা গোলাপি লিপিষ্টিকের জীবন্ত দাগ লাগুক।এইতো বেশ....

বিশ্বাস করো একটা জীবন তোমার সাদা এপ্রোনে কবিতা লিখতে লিখতে কাটিয়ে দেবো....

সুখটুকু : মান্নুজা খাতুন



বামপাশের পার্লামেন্টে  ক্ষুদ্র ইচ্ছেখানি ধারণ  করে
বিভোর  ভাবুকতার রঙিন মায়ার আবেশে
নিশিদিন রচেছি হৃদয়ের প্রকোষ্ঠে সুখমাল্য।।

প্রবৃত্তির কঠিন পীড়নে  হায়!
গড়া স্বপ্ন  ধূলিসাৎ হয়ে যায় ;
তবুও অতৃপ্ত আত্মাটি সব ভুলে
ভাবের তাপে আবারও  গড়তে বসে
হৃদয়ের শ্রেষ্ঠ পুস্পের সমাহারে সুখমাল্যখানি
খুঁজতে থাকে সত্যকারের হৃদয়াসনটি। 

একটা কবিতা একটা তর্জনী : অলোক মিত্র



একটা কবিতা আজ গান হোল
শুধু তোমার জন্য...
একটা তর্জনী আজ প্রতিবাদের ভাষা হোল
তোমার জন্য, হে কবি।
তুমি উঠে এসো হাজারো প্রতিবাদী কবিতায়
মধুমতির পলল মৃত্তিকায় তুমি ঘুমিয়ে থেকো না,
তুমি আমার রক্তের অস্তিত্বে মিশে আছো,
চেতনার বোধীবৃক্ষ।
আমি ক্লান্ত পথিক, তোমার সবুজ শ্যামল
ছায়াতলে বেঁচে আছি নির্ভয়ে।
হে প্রিয় কবি, তোমার বজ্রকন্ঠে
আমার প্রিয় কবিতা, বাঙালির মুক্তির ডাক....
আমি শ্রদ্ধায় মাথানত, আপদমস্তক
আমাকে রাখি তোমার পদতলে।
হে প্রিয় কবি, একটিবার উঠে এসো
আমার চেতনার বোধীবৃক্ষ।
মধুমতির জ্বলে জোয়ারের বান ডেকে।
আমি শতবার পূজিত চোখে
আমি আমার পিতার ছবি দেখি
হাজার টাকার নোটে।
সারা বাংলায় কে আছে বলো
তোমার চেয়ে বড়!




ত্রিতাল: ভগ্ন পুরুষ



রাত্রে ঘুমিয়ে আছে পিলসুজ,
রাস্তাময় কেউ কি কিছু ভাবছে ভগ্নাংশ নিয়ে ?
      তবুও
          কিছুদূর
            এগিয়ে চলেছি
 
আলো ক্রমশ সর্বশেষ সিদ্ধান্তে প্রশমিত করছে শরীরমুখি কোলেস্টেরল___
   কয়েকটা যৌগ সংখ্যা অনর্গল কাছে আসছে

তাকাও,____
        পিছনে সন্ধান পাবে না
                                     অন্ধকারের

রেটিনায় দৃশ্য গুলো দারুণ উর্বর হচ্ছে
টালমাটাল নদীর সন্ধান গড়িয়ে পড়ছে ইন্দ্রিয়ে
    তবু, কিছুতেই ত্রিতাল বাজানো যাচ্ছে না__

তুই আসবি বলে : তপন কুমার মাজি



প্রত্যাশার দোরে বসেছিল রাত,চাতকের মতো--
যে রাতের ভিতরে থাকে অন্য এক রাত--
যে রাতের বিছানায় ঘুমিয়ে থাকে অন্য এক স্বপ্ন,

তুই আসবি বলে
জেগে ঘুমিয়ে ছিল অবদমন,
যে মনের ভেতরে থাকে অন্য এক মন
যে মনের কথা স্বপ্নময়ী ছাড়া জানে না কেউ,

তুই আসবি বলে
টুকরো টুকরো ইচ্ছেগুলো
ফুল ফুটিয়েছিল আমার মরা ডালে,
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে গন্ধ শুকেছিল ঘুমন্ত জানালায়
হেসেওছিল চোখে চোখ রেখে,
তোর গোপন কথাদের নীল ইশারায়,

কান্নাদের হাসতে দেখেছিলেম আমার স্বপ্নের চোখে
যে স্বপ্নদের সাজিয়ে রেখেছিলেম আমি প্রাণের সাজিতে,
চাঁদহীন শূন্য আকাশের মতো শুয়েছিল
আমার স্বপ্নিল মন...তোর নিশিরাতের নির্জন বারান্দায়--
তুই আসবি বলে...

বেড়া : অনিন্দ্য পাল


পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় এসে গেছে শুনেছিলাম দুধেদাঁতবেলায়, এখন ছোট হতে হতে মোবাইল অ্যাপে ঢুকেছে ক্লিক-শরীরে; অথচ কাঁটাতার বরাবর মৃত্যু এখন আরও রহস্যময় এবং খোলাখুলি,
ঘরের বাইরে উঁচু হয়ে ওঠে রামতুলসীর বেড়া, ছাদ আঁটা ঘর থেকে বের হলে পথ রোখে কনেসাজানো পাঁচিল, স্মার্ট যজ্ঞ থেকে উঠে আসে যথাক্রমে দেশ আর বিদেশ ...
আকাশের তাঁবু ছোট হতে হতে এখন
 সীমান্তে চায়ের ভাঁড়,
তার উপুড় হওয়া নাভিগহ্বরে বেঁচে থাকে
নুনভাত আর ডিজিট্যাল মাঢ়
সেই সব ব্যকরণে পাতা নেই, পাতা থাকেনা কালক্রমে
"ফিউচার টেন্স" গিলে খেয়ে বেঁচে থাকে,
রক্ত বেচে দিয়ে খালিপেটে থাকে, চাঁদা দেয় গুমনামে

সবুরে এখন দ্রাক্ষা ফল ফলে,
তপস্যায় সোনালি বোতল
তাঁবুর ছাতে ছেঁদা বড় হয়

পৃথিবী এখনও কি তেমনি গোল !

ফুটন্ত মালতি : আমিনুল ইসলাম


বাউল বনে মালতী ফুটলে
কচুরিপানার আদর মেখে দেয় রোদ
স্তন ভেজা জল সাঁতরে পার হয় বালিহাঁস
এসবের ঘন কুয়াশার অন্ধকার ঠেলে সিটি মেরে
ছটা কুঁড়ির ভাগীরথী ছুটছে ফেলে ইস্টিশান
পানের গুমটিতে ফুল ফুটলে
এখনো বাঁশি বাজে মনে...

আর্য পুরুষ: সুমিত মোদক




সকাল হতে না হতে এক এক করে জমা হতে থাকে
অচেনা মানুষ গুলো দরজার সামনে ;
অথচ , চেনা পরিচিত মানুষজন অনেক দিন হল
এ মুখো হয়নি ;
#
আমার উঠান চিরকালই বড় ...
সে কারণে হাজার হাজার মানুষ
এক সঙ্গে মিলিত হতে পারে প্রথম সকালে ;
#
ঘরের দরজাটা খুলে দেখি সামনে একটা আকাশ ;
সেই আকাশের মাঝখানে আমি দাঁড়িয়ে ;
#
আমার আকাশ আমাকে করে তুলেছে
এক আর্য পুরুষ ।।

তিল :- সঞ্জয় গায়েন


 ও বলেছিল ওর একটা গোপন তিল আছে। আমি যদি সত্যি  প্রেমিক হই তবে খুঁজে পাব। 
  এ আবার কেমন কথা? তুমি যদি ফুলের পাপড়ির মতো নিজেকে মেলে ধরতে পারো, আমি অনায়াসে তা খুঁজে দেব।
 -তাই! বেশ। কিন্তু মনে রেখ, পরীক্ষায় ফেল করলে আমায় হারাবে। 
    শুনে হেসেছিলাম। আমার স্মাইলি দেখে ও কিছুক্ষনের মধ্যেই  হোয়াটসঅ্যাপে একের পর এক সেলফি সেন্ড করতে লাগল। প্রথমে পায়ের ছবি। দেখি বাঁপায়ের পাতায় দুটো আর ডানপায়ের বুড়ো আঙুলে একটা তিল।   এইভাবে একে একে ঠোঁটের কোণে, ডানচোখের পাতায়, বাঁ ভ্রু-র পাশে, ডানদিকের চিবুকে, গলার মাঝখানে, বাঁহাতের কনুইয়ে, ডানদিকের ঘাড়ে...   ছোট্ট ছোট্ট কত তিলের ছবি দেখিয়ে গেল।
- কিন্তু এগুলো তোমার গোপন তিল নয়। 
বলতেই ও এরপর নাভিদেশের সেলফি পাঠালো। আমি যথারীতি জানালাম, না, এটাও নয়।
-ভেবেছ গোপন তিল মানেই গোপন জায়গায় থাকে! কিন্তু মশাই, আর তো কিচ্ছু দেখাবো না।
-আমি তো সেকথা বলি নি। বলেছি যেগুলো দেখালে সেগুলো তোমার গোপন তিল নয়।       
- তাই! তবে বলো সেটা কোথায় আছে?                                                                       - সেটা এমন জায়গায় আছে যার সেলফি মোবাইলে ওঠে না।
-তাই বুঝি!
-হুম।
- তা কোথায় আছে শুনি।
-কেন তোমার বুকের বাঁদিকে যেটা সবসময় ধুকপুক করছে। তার ভিতরে আছে সেই গোপন তিল। 


                                         

সে ভালোবাসা বোঝে না : আহাম্মেদ হৃদয়



সূচনা..........
তুমি কি ভালোবাসাও আমায়,
নাকি ভাসো না?
রাত দিন একাকার হয়ে যায়
কষ্ট যত্ননার তীব্রতা........
বুকে হাজারো যন্ত্রণা
সূচনা তুমি কি তা বোঝনা।
ভালোবেসে যোদি করে থাকি ভুল
যতন করে কেনো হাতে দিলে ফুল।
দিয়েছো একি যন্ত্রণা
তোমার অনুভুতি ছাড়া,
কিছুই ভালো লাগে না।
ঐ সূচনা.......
আমি তোমাকে কতো খুঁজেছি
পদ্ম, মেঘনা, যমুনায়।
তুমি আমাকে দিয়েছো
কষ্টের এক বিশাল হিমালয়
বলেছিলে আসবে তুমি ফিরে
কিন্তু, তুমি আর এলে না।
তবে তুমি কি আমাকে,
আর ভালোবাসো না...?
ঐ সূচনা...
আজ আমার ঘর আমার কাছে
সুখ দুঃখের আলপনা।
বলে ছিলাম তোমাকে নিয়ে
আমার স্বপ্নের রঙিন ঘর সাজাঁবো,
কিন্তু, সেটা বোঝি আর হলো না।
তোমাকে কতটা ভালোবাসি,
কেনো তুমি তা বোঝোনা।
আমার ভুলটা কি সেটা...
তুমি বলো একবার।
সূচনা......
তুমি কি ভালোবাসো আমায়
নাকি ভালো না...?
ঐ সূচনা...
সূচনা

শারদীয়া : জয়দেব বেরা



আশ্বিনের শুক্লপক্ষে
হয়েছে মা দুর্গার আগমন
দেবী দুর্গা ধরিত্রীতে অবতীর্ণ
হয়েছিলেন মহিষাসুর কে করিতে নিধন।।
মা এর পাশে থাকে কার্ত্তিক, গণেশ,মহেশ্বর, দেবী লক্ষী ও বীণাপাণি,
দেবী দুর্গা হলেন এই জগতের মঙ্গলদায়িনী,মহিষাসুরমর্দিনী এবং অসুরবিনাশিনী।।
জগতের সমস্ত জীব অপেক্ষায়
থাকে দেবী দুর্গার আগমনে,
শুভ এই শারদীয়ায়
প্রকৃতিও যেন সেজে উঠে আপন মনে মনে।।
জাতি ,ধর্ম, বর্ন, নির্বিশেষে আয়, মোরা করি সকলে মায়ের আরাধনা ও দুর্গা দুর্গা নাম
নারী শক্তিরূপিনী,মঙ্গলদায়িনী দেবী
দুর্গাকে জানাই মোদের শতকোটি প্রণাম।।

নিমন্ত্রণ : রহমান জিল্লুর


এসো, পুনর্বার বশী-ভূত করো প্রণয় মন্ত্রণায়
মুখে পুরে দাও পিয়ালা বিষের।

কী যে দুঃসহবাসে দিন গেছে আমাদের!
ঝরে যাওয়া সময় থেকে মৃত্যুর -
গন্ধ আসে আজও...

শোকের মাতমে ফেটে যায় মাটির হৃদয়।

এসো, পুনর্বার রোপন করো প্রলয় আসক্তি
ভঙ্গুর করোটিতে জেগে উঠুক
রক্তশ্বাস।

হে
দুর্ভোগ মরীচিকা
এই মন্হর জীবন থেকে আমাকে মুক্তি দাও।

কী যে দুর্বিষহ শীতকাল আমার ভেতরে -
বাহিরে স্তব্ধ কুঁয়াশা...

                                                  দেখে যাও
                            স্মরণ আর সহানুভূতিতে

শেষবারের মতো পুনর্বার,
মধু-আলিঙ্গনে জড়িয়ে রাখো রাত্রির গুহায়।

এ রূপকথা নয় :প্রলয় কুমার বিশ্বাস


           
           

জ্বলছে দেখো মানচিত্র,  স্বপ্ন নয়গো সত্যি,
চিত্তের খাতা পুরো ভর্তি, বাদ নেই একরত্তি!
আগামীর যা কথা ছিল, সেসব আজ মিথ্যা,
বৃহস্পতি শৃঙ্খল বলেই, শুক্রাচার্যে দীক্ষা!
বাজনা বাজায় নিরো রাজা বন্ধ করে চোখ,
কুমির কান্না চোখে মুখে,  বিলাসিতায় ঝোঁক।

এ রূপকথা নয়,...
চরম বাস্তব।
চোখ খুলে জেগে দেখো একটিবার,
জীবনবিমা তেমনি আছে,
শূন্য ঘর, ফাঁকা চেয়ার!

            

সম্ভ্রান্ত বিশ্রামের শেষ লাইনগুলি : অভিজিৎ দাসকর্মকার



...নেভার আগেই
শরীরের রক্তকণার জীবনপ্রবাহ
শুষে নেয় ভারীজল
তখনও
চর্যাপদের এপারে সমবেত হচ্ছে
হলুদ স্তব্ধতা, আর-
খোলা চিঠির বাছাইকরা পদ্যটির পদধ্বনি-

গতবেলার গাঢ় জলীয় দ্রবণে
সম্মোহিত হয়
ভিজে যাওয়া অতিবেগুনী রশ্মি।
চিরশান্তির এবং দুশ্চিন্তার
অনুঘটকে মিশে আছে
নীলনদের জমাট বাঁধা
দ্বিতীয় কিনারা-

মাধুর্যহীন প্যারাগ্রাফের মাঝে
জিরো-আওয়ারের কৌতুহল,
অথবা -
সম্ভ্রান্ত বিশ্রামের শেষ লাইনগুলি
এখনও কী সঠিক ব্যালেন্সে দাঁড়িয়ে?

সব অভিমান ভুলে : মান্নুজা খাতুন (মালা)



চলো সব অভিমান ভুলে কল্লোলিনী তিলোত্তমার
জনজোয়ারের ভিড় ঠেলে এসপ্ল্যানেডের ধার বেয়ে
এক শান্ত প্রদোষবেলায় গঙ্গার তীরে।।

চলো পাশাপাশি বসি আরও একবার
সহস্র বছরের পুরানো ; সহস্র স্মৃতির সাক্ষী
বাঁধানো সেই অশ্বত্থের নীচে!
যার ডাল গুলো নুয়ে পড়ে ঠেকেছে মা গঙ্গার বুকে
যার কোটরে এখনও বাস করে
কয়েকশো পক্ষীযুগল ও তার পরিবার।।

চলো ভুলে গিয়ে সব দ্বিধা দ্বন্দ্ব
আরও একবার আসি কাছাকাছি
দুহাতের মুঠোয় হাতপুরে ; ছলছল নেত্রে
চেয়ে থাকি একে-অপরের পানে  কিছুক্ষন;
করি বিচরনে আবেগের রাজ্যে।।

ভুলে গিয়ে সব অভিমান,   মুছে ফেলে সব দ্বিধাদ্বন্দ
চলো রচি  আরও একবার প্রেমের নিগড়।।
      

শুদ্ধিকরণ: সুমিত মোদক




জেগে উঠে প্রথম সকাল
তানসেনের সুরে ...
সম্রাট অশোকের রাজপ্রাসাদ
দূরে , বহু দূরে ...
#
তোমার মধ্যে সেই শিশুটি
জাগতে দেখি আবার ...
বিক্রমাদিত্যের সিংহাসনে বসতো যে বার বার , এবার ...
#
জল চেয়েছি , প্রাণ চেয়েছি ,
বাতাস চেয়েছি শুদ্ধ ...
তোমার সঙ্গে শুদ্ধিকরণে
আমরা ঐক্যবদ্ধ . .
#
মেলে দেবে সবুজ পাতা
বৃক্ষরাজি , নম্রতায় ...
চাণক্যর অর্থশাস্ত্রে ইলশেগুঁড়ি
বৃষ্টি আজি , সভ্যতায় ....