নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

উষ্ণতা : সুজাতা মিশ্র(সুজান মিঠি)





চায়ের ভাঁড়টা গরম ছিল বড়, হাতে নিয়েই ছেড়ে দিলাম ভয়ে,
দুহাত দিয়ে চেপে ধরে আমার উষ্ণতা, বললে, ‘কেমন তুমি মেয়ে?
দেখছ না ধোঁয়া উঠছে পুরো, দিতে হয় না বুঝি সময়?’
ঐটুকুটতেই কপালে তোমার দেখেছিলাম ভয়।

ট্রেনে কী ভীষণ ভিড় সেদিন, ঘামে গরমে প্যাচপ্যাচে পুরো
তারই মধ্যে কনুই এগিয়ে সুযোগ নিতে চাইলে এক বুড়ো।
ভিড় সরিয়ে আমায় বুকে জড়িয়ে নিয়ে চেঁচিয়ে উঠলে জোরে,
‘কোথায় গেলেন মিডিয়া, রিপোর্ট ক্যামেরায় নিন ভরে।
বুড়োর শখে সুযোগ মাটি, এই আগলেছি আমার বুকে,
বলুন বলুন শ্লীলতার মাথা কামড়ে খাচ্ছি ভর্তি ট্রেনে সুখে!’

লজ্জায় তোমার নীল শার্টটায় মিশিয়ে নিলাম আমার বোজা চোখ,
সমবেত আওয়াজ শুনি ‘ভালোবাসার জয় হোক, ভালোবাসার জয় হোক।’
সেই বুড়োটা কোথায় গেল, লুকালো নাকি মেলাল সুর
দেখিনি আমি কিচ্ছুটি আর, তোমার ঘামে তখন আমি ভরপুর।
কানের উপর নরম সুরে আলগা আলোয় গেয়েছিলে হাসি
এই সুরে, কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাঁশি, ভালোবাসি ভালোবাসি।
প্রথম রান্নার পরে অধীর হয়ে শুনতে চাওয়া, ‘কেমন হয়েছে বলো না?’
চোখে মুখে আরাম এঁকে বলেছিলে, ‘ আমার ভালোবাসার রান্না।’
তোমার পরে খেয়ে আমার ঝালে নুনে অক্কা পাওয়ার দশা,
হাত মুছে আঁচলে আমার বলেছিলে হেসে, ‘এটাই ভালোবাসা’।

যেবার প্রথম এলো কোলে আমার মিষ্টি একরত্তি
তুমি বললে,  ‘আমি খুশি, ভীষণ খুশি ,আমার স্বপ্ন সত্যি।’

আমার দস্যি যখন আমার রান্নাঘরে  হামাগুড়ি
সেদিন আমি প্রথম শুনেছিলাম কেমন তুমি মিছরি ছুরি!
বিদেশ ট্যুরে প্রতিমাসে তোমার আছে এমন মত কত,
তোমার বন্ধু মধুমিতা কাঁদলো এসে খুব, বললো  ‘বৌদি বুকে বড় ক্ষত।’

ওকেও নাকি স্বপ্ন দিয়ে গন্ধ দিতে, নীল শার্টের বোতাম খুলে,
সেই বুড়োটা প্রতিবারেই আসত নাকি ওই ভাবেই কনুই তুলে।
নুনে-ঝালে রান্নাটাও ‘ভালোবাসা’ মধুমিতার বিশ্বাসী চোখ,
জানো তো, সামলাচ্ছি দস্যিটাকে, আর ওই মেয়েটা গাইছে ভারী শোক।

সেই অবধি একটা কথাই ভাবছি আমি, কেবল একটা কথা,
চায়ের ভাঁড়ের উষ্ণতায়, সব মেয়েতেই তুমি সমান কি পাও ব্যাথা??

কোন মন্তব্য নেই: