নদীতে ষাঁঁড়াষাাঁড়ি বান ।পাক খেয়ে এক স্রোত অপর স্রোতের পেটের মধ্যে সিঁধিয়ে যাচ্ছে ।আবার কখনও কখনও পৃথিবীর বুক ঠেলে লাভা স্রোতের মতো লাফিয়ে ফুলে উঠেছে। দক্ষ মাঝি ছাড়া এমন বানে কেউ নৌকা বাইতে সাহস করে না ।বাবুর শখ হয়েছে বানে নদী কেমন উত্তাল হয় দেখেন।মাঝি কোন কৌশলে ঢেউএর ফনাগুলোকে বসে এনে তাদের মাথায় নাচে তা দেখেন ।দাঁড় বাওয়া আর হালের কেরামতি যেন কোন ধ্রুপদী সংগীতের তালে তালে নৃত্য। বাড়িতে অসুস্থ ছেলে। কেঁদে কেঁদে মায়ের চোখের কোণে কালি পড়ে গেছে । দিগন্তে সূর্যটা ডুবলে মোহন মাঝির মন খারাপ হয়ে যায়। মহাজন' মাছের অর্ধেক ভাগ নেয়। বাকিটা তিনজনের মধ্যে ভাগ হয়। কয়েকশো জাল ভেদ করে কতটুকুই বা তাদের জালে ধরা পড়ে। বখরা পয়সায় প্রতিদিনের চাল ডাল সবজি ও কেনা হয়ে ওঠে না।
মোহনমাঝি শক্ত করে কোমরে গামছা বাঁধে।
-বাবু কত দেবেন?
একটা পাঁচ'শ টাকার নোট দেখিয়ে বাবু বলেন, উঠে এলে আরো দেবো।
মতিন এবং রাঘব মোহনকে বাধা দিয়ে বলে, তোর বউ বাচ্চার কথা তো একবার ভাব।
মোহন স্থির দৃষ্টিতে বাবুর দিকে তাকিয়ে বলল, বাবু, যদি না ফিরি তো ওদেরকে দিয়ে দেবেন। বাচ্চাটা হয়তো বেঁচে যাবে।
সূর্য তখন পাটে বসেছে ।সূর্যকে প্রণাম করে মোহন মৃত্যু গহ্বরে ঝাঁপ দিল ।
মতিন এবং রাঘবের ঘৃণিত দৃষ্টির সামনে বাবু তখন শূন্যে সিগারেটের রিং বানাচ্ছেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন