নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অক্ষয় কুমার সামন্ত





কবি হতে পারো নি 




এখনও যদি মাসিক কিছু রোজগারের ভেতর
নিজেকে হাঁটা চলা করতে দ্যাখো
মাথার মধ্যে চলা কিছু হিসেব নিকেশ
তোমাকে বাড়ির দরজা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়
তাহলে বলবো দারিদ্রতা দোষী নয়, তুমিই দোষী
তুমি কবি হতে পারো নি --
কবিত্বের মধ্যে কোন দারিদ্রতা নেই।

এখনও যদি প্রতিবাদী কথায়
তোমার কলম চুম্বন না করে
সমাজ ফোটাতে তুলি না ধরো
বুলেটের সামনে নিজেকে ছুঁড়ে দিয়ে
বলতে না পারোঃ এই ধরো কবিতার পাতা
আমাকে মেরে ফেলার আগে আগুন ধরাও
আর তার উত্তাপে বাষ্প হোক
তোমাদের রক্তে মিশে থাকা সব সাধ --
তাহলে বলবো তুমি কবি হতে পারো নি
কবিত্বের মধ্যে কোন ভয় নেই।

এস. কবীর






জয় হোক 
*********

                                        

জীবনের প্রতিনিয়ত বালখিল্যতায়-
অদম্য দেউল পাখি ফুঁরুৎ উড়ে চিলেকোঠায়;
শীতল ঠান্ডা হাত  নগ্ন হয় শীতের দিনে,
একবার কাছে টেনে নেওয়া মানে-
মরা গাঙে বান আসা-
দরিয়ার ঢেউ - এ গা ভাসানো, গা ভেজানো,
উথাল - পাথাল মর্ত্যতল;
তবে কিসের নেশায় উজান স্রোতে হাঁটা?
প্রাচীন দেবতার ডাকে সাড়া না দিয়ে উপায় কি?
কাঁকড়ের রাস্তা বেয়ে পথে হাঁটা মানে-
তোমার টানে বিচালির  মাচান খোঁজা;
উলুবন থেকে একদল পাখি ডেকে ডেকে সারা-
চৈতালী রোদে.....।
কারা যেন বলেছিল - ভালোবাসার যুদ্ধে অন্যায় বলে কিছু নেই? সে না থাকুক!
একনিষ্ঠ প্রেমি হিসাবে তোমার বক্ষে -
উঠুক আমার খদিত নাম;
জিন্দাবাদের বদলে - ভালোবাসার জয় হোক -
জীবনের ইতিহাসে...। 

অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়






এক্স




অধৈর্য লাগছে বড্ড। সাথে অস্বস্তিও খুব। প্রায় মিনিট চল্লিশ হতে চলল তিতাস ক্যাফে’তে বসে আছে। সৌম আসবে আজ। অনেকদিন পর একটা আশার আলো দেখেছে আবার তিতাস। গতকাল রাতে ফোনটা আসার পর, বাঁধভাঙা নদীর মতন স্রোত ছুটিয়েছে তার দুচোখ। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেও বেশ খানিকটা সময় চোখের উপর একটু ব্যথা ব্যথা ভাব টের পেয়েছিল সে। শরীরটা বেশ দুর্বলও লাগছিল ওর কিন্তু তাই বলে সৌমের সাথে ডেটিংটা মিস করা যায় না। আর তাও যখন এতগুলো বছর পর, তিতাস ছিঁড়ে যাওয়া সম্পর্কটা জোড়া লাগানোর একটা রাস্তা পেয়েছে তখন প্রয়োজনে রামসেতু বানাতে হলেও তাকে আসতে হবে। তাই সেই প্রাক্তন প্রেমিকের চোখে মুগ্ধতা আর জৌলুস ফিরে পেতে, খুব করে সেজেছে আজ। মাস্কারা, আই লাইনার, আই শ্যাডো, নেল পলিশ, লিপ স্টিক আর সাথে সুগন্ধি পারফিউমের মিশ্রণে নিজেকে লোভনীয় করে তুলেছে যতটা সম্ভব। স্লিম চেহারাটা আরও আকর্ষণীও করে ফুটিয়ে তুলতে ব্ল্যাক কালারের অফ শোল্ডার ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়েছে তিতাস। অল্প একটু ফ্লেশ ফ্ল্যাশিং আর চোখ ধাঁধানো গায়ের রঙ দেখে নিশ্চয়ই সৌম চোখ ফেরাতে পারবে না ওর থেকে, এ বিশ্বাস তিতাসের আছে। যদিও এইভাবে সাজতে খুব একটা স্বচ্ছল নয় ও, তবু সে সেজেছে। একটি মাত্র মানুষের জন্য সেজেছে। শুধু এটা বোঝাতে যে একদিন যাকে সৌম ছেড়ে গিয়েছিল, সে এখন কতটা পাল্টে গেছে। আজও কি তিতাস যোগ্য হবে না? এত গুলো বছর পাগলের মতন ভালোবেসেছে সে। এক তরফা প্রেম। অনেকেই বলেছে, এ তোর বড্ড বাড়াবাড়ি। কিন্তু তারা তো আর বোঝেনি ওর যন্ত্রণাটা।

গতকাল রাত্রে তিতাস যখন রোজ রাতের মত মানসিক যন্ত্রণাগুলো ভেঙে ভেঙে ঘুমের পথে ছুটছিল, তখন বালিশের পাশে রাখা মোবাইলটা একটা অচেনা নম্বরে কেঁপে উঠল। তন্দ্রাচ্ছন্ন কণ্ঠে তিতাস অস্পষ্ট একটা “হ্যালো’ বলতেই ওপার থেকে ভেসে আসা কণ্ঠের পুরুষালি গাম্ভীর্যে, তার ঘুম সম্পূর্ণ কেটে গিয়েছিল।
-আমি সৌম বলছি।
ব্যস এটুকুই যথেষ্ট ছিল তিতাসের বুকে হড়কা বান ডাকতে। কোনো রকমে সামলে নিয়েছিল সে নিজেকে। তারপর...
-সৌম?
-হ্যাঁ। ভালো আছো?
-হুম
-ঘুমাচ্ছিলে?
-হুম
-সরি। আসলে একটু কথা ছিল...
তিতাসের ইচ্ছে করছিল সে চিৎকার করে বলে, একটু কেন তোমার যত ইচ্ছে তুমি কথা বলো। সারারাত ধরে বলো। তোমার কথা শোনার জন্য আমি যে বিরহ কাতর রাধা হয়ে এতদিন চাতকের মতন অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু সমস্ত শব্দ গলার কাছে কেবল আঁটকে আসতে লাগল আর অস্পষ্ট স্বরে সে বলল...
-হ্যাঁ
-দেখা করতে পারবে প্লিজ?
কথাটা শোনা মাত্রই তিতাসের মনে দপ করে একটা আশার আলো জ্বলে উঠেছিল। হয়তো আবার একবার গল্পটা শুরু হতে চলেছে, ঠিক যেখানে অসম্পূর্ণ হয়ে পড়েছিল, সেখান থেকে। তিতাস’কে চুপ থাকতে দেখে সৌম আবার বলল...
-হ্যালো, বলছি কাল একবার দেখা করতে পারবে?
-কাল?
-হুম।
-কিছু বলতে চাও?
-হ্যাঁ।
-কী?
-তোমায় সরি বলার আছে। আর সাথে আরও অনেক কিছু...
-সরি কেন বলবে?
-আমি জানি, আমি ভুল করেছি তাই। প্লিজ কাল একবার দেখা করবে?
-বেশ। করব।
-থ্যাঙ্কস। আমি কোথায় আসবে সেটা তোমার নম্বরে মেসেজ করে দেবো কাল সকালে। কেমন?
-হুম। আচ্ছা একটা কথা বলবে?
-হ্যাঁ, বলো...
-তুমি আমার এই নম্বরটা কোথায় পেলে?
-একটা নম্বর খুঁজে পাওয়া কি খুব কঠিন?
-বলো না...
-তোমার ফেসবুক থেকে পেয়েছি।
-আমার নম্বর তো পাবলিক করা নেই। তবে কি তুমি আমার ফেসবুকে ফ্রেন্ডস লিস্টে আছো? অন্য নামে?
-না, আমার এক বান্ধবি আছে। ওর মোবাইলে তোমার ছবিটা দেখেছিলাম। চ্যাট হেডে তোমার একটা মেসেজ এসেছিল একবার। কেমন চেনা চেনা লেগেছিল। ভালো বুঝিনি। তারপর, ওর কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে তোমার প্রোফাইল অন করতেই তোমায় দেখি...
-আচ্ছা। আমার কোন বান্ধবি বলোতো?
-রিয়া। রিয়া দত্ত।
-ওহ আচ্ছা। আমার বান্ধবি নয়। অফিসের কলিগ। তেমন ক্লোজ নই আমরা। খুব দরকার ছাড়া তেমন একটা কথা হয় না। শিফটও আলাদা পড়ে।
-আচ্ছা। বুঝলাম। বাই দ্যা ওয়ে, তোমায় কিন্তু দারুণ দেখাচ্ছে প্রতিটা ছবিতে। আগের থেকে অনেক পাল্টে গিয়েছ...
-থ্যাঙ্কস।
-আর এখন ওয়েল সেটেল্ডও হয়েছ। অত বড় একটা সংবাদপত্রের নামকরা রিপোর্টার।
-থ্যাঙ্কস আগেন...
-মোস্ট ওয়েলকাম। এনিওয়ে, আমার মোবাইলে একদম চার্জ নেই। আজ রাখি, কাল অ্যাড্রেসটা মেসেজ করে দেবো। প্লিজ এসো।
-হ্যাঁ, আসব।
-আর... আই লাভ ইউ...
বলেই ফোনটা কেটে গিয়েছিল। শেষের তিনটে শব্দ শোনার পর কিছুক্ষণ, স্থির পাথরের মতন বসেছিল তিতাস। তারপর...তারপর বৃষ্টিঝরা প্রচণ্ড আবেগে ঝর ঝর করে ঝরে পড়েছিল সে...

সকালে ঘুম থেকে উঠেই, মোবাইলে একটা নোটিফিকেশন দেখেছিল সে। সৌম অ্যাড্রেসটা মেসেজ করে দিয়েছে অলরেডি। লেখা ছিল, ওয়াটারসাইড ক্যাফে, হায়াত রিজেন্সি, সন্ধ্যা ৭ টা। এরপর শুধু অপেক্ষা রেখেছিল, সেই সময় টুকুর জন্য। সামনা সামনি দেখা হলে কী বলবে, কিভাবে বিহেভ করবে ইত্যাদি ইত্যাদি চিন্তায় অস্থির ছিল তিতাস। আবার মনে হয়েছিল, সে যেন খুব বেশি পাগলামি না করে ফেলে। তাই বারবার চেষ্টা করেছিল নিজেকে শান্ত করার।

এখন ঘড়ির কাঁটা আটটা ছুঁই ছুঁই। এবার অস্বস্তি আর অধৈর্য একত্রিত রূপ নিয়ে দগদগে অসন্তোষ হয়ে উঠছে একটু একটু করে। এত দেড়ি কেন করছে সৌম? তবে কি আসবে না? তাহলে ফোন করল কেন? নাঃ আর ভালো লাগছে না এইভাবে। বুঝতে পারল একটু ফ্রেশ হয়ে নেওয়া খুবই প্রয়োজন। তাই ওয়াশরুম যাওয়ার পথে একটা টেবিলের পাশ কাটাতে গিয়ে দুই যুবকের কথাপকথনে কান গেল তিতাসের। ওদের মধ্যে একটি যুবক বলছে-
-আই ডোন্ট থিঙ্ক ধোনির কম্প্রমাইজ করা উচিত এখানে। হি হ্যাজ ট্যালেন্ট এই সব লোক’কে ওর একটা শিক্ষা দেওয়া দরকার। নাম্বার ফোরে নামুক আর একটা সেঞ্চুরি করে ওদের মুখে ঝামা ঘষে দিক।

ওয়াশরুমে গিয়ে মিররে নিজের মুখটা দেখতে দেখতে ছেলেটার এই কথাগুলো কানে বাজতে লাগল তিতাসের। তারপর হঠাৎ যেন, সারা শরীর ওর জ্বালা করে উঠল। কি করছে ও?  আজ থেকে বছর তিনেক আগে কলেজ লাইফে তৈরি হওয়া একটা প্রেম নিভে গিয়েছিল। এই সৌম তাকে একদিন ছেড়ে চলে গিয়েছিল। যেহেতু তখন তিতাস একটু স্বাস্থ্যবতী ছিল, তাই তার জন্যে কত টিটকিরিও দিয়েছে সৌম। কিন্তু এই ভালোবাসার প্রভাব এত বেশি ছিল তিতাসের মনে যে, কখনও সে তাতে কিছু মনে করেনি। তিতাস খুব ভালো করেই জানে সৌম এক কুৎসিত মানসিকতার পুরুষ। না, এদের পুরুষও বলা যায় না। প্রকৃত পুরুষ হলে কেউ কি একজন মেয়ে’কে সবার সামনে চড় মারতে পারে? সেদিন তো তিতাস কিছুই বলেনি, শুধু বলেছিল, সে একজন বড় জার্নালিস্ট হতে চায়। বাইরে বাইরে ঘুরতে চায়। আবর্জনা খুঁড়ে লুকিয়ে রাখা সত্য উদঘাটন করতে চায়। সৌম বলেছিল এমন কাজ তাদের সংসারে নাকি শোভা পায়না। তিতাস একটু জোর করায়, অচেনা অজানা লোকের সামনে রেস্টুরেন্টে ওকে চড় মেরে চলে এসেছিল সে। তারপরেও, হ্যাঁ তারপরেও তিতাস ওকে ভালোবেসেছে। এতদিন। “ছিঃ আমার কি কোনো আত্মসম্মান বোধ নেই?” অস্ফুট স্বরে ককিয়ে উঠেছিল কথাগুলো। এতদিন তার কত বন্ধু তাকে বুঝিয়েছে, কিন্তু ও বোঝেনি। বারবার এক তরফা প্রেমে আগুনে পুড়িয়েছে নিজের গোটা মনটাকে। এখন ওয়াশরুমে নিজের দিকে দেখতে দেখতে তিতাস নিজে নিজেকে একটা প্রশ্ন করল, “ভালোবাসা না আত্মসম্মান?”

উত্তরটা খুঁজে নিতে এবার আর ভুল করল না তিতাস। বেশ কিছুটা সময় সে নষ্ট করেছে ঠিকিই তবে আজ তিতাস বুঝতে পেরেছে, যে এক তরফা প্রেমে আত্মসম্মান নগ্ন হয়, সে প্রেম আঁকড়ে ধরে কোনো লাভ নেই। তাই শারীরিক আর মানসিক সকল মেকআপ ধুয়ে ফেলে, ধীরে ধীরে নিজের টেবিলে এসে বসে পড়ল। আশপাশ আর একবার দেখে নিলো। না, অমানুষটা এখনও আসেনি। ভালো হয়েছে আসেনি। তিতাস কেনই বা এতকাল ওর অপেক্ষায় বসেছিল? কেনই বা এত সেজে আজ এসেছে ওর জন্য? সৌম তো ভালোও বাসে না ওকে। ফেসবুকে ওর ফোটো আর স্ট্যাটাস দেখে, হঠাৎ কোনো ইনফাচুয়েশনে হয়তো আবার ফিরে আসতে চায় সে। কিন্তু ওকে প্রশ্রয় দিলে আখেরে ক্ষতি তিতাসেরই হবে। যদি বিয়ে হয় তবে কি আর তখন এরকম টিপটপ সুন্দর থাকতে পারবে ও? সন্তানও আসবে, তখন কি আর সৌম ওর খেয়াল রাখবে? আবার যে ছেড়ে যাবেনা তার কি নিশ্চয়তা আছে? এমন মানুষ কোনো মেয়ের যোগ্য হতে পারে না। আজকাল যখন তিতাস সেজেগুজে রাস্তাঘাটে বেরোয় তখন বেশ ভালোভাবেই ওর চোখ অবলোকন করেছে কিভাবে ছেলে, যুবক, মধ্য বয়স্ক, বিবাহিত, অবিবাহিত , বৃদ্ধ সকলেই তার দিকে চেয়ে চেয়ে দেখে। যা প্রমাণ করে তিতাস সত্যই অতুলনীয়া সুন্দরী। আর কেবল সুন্দরীই নয়, সাথে সাথে খুবই ট্যালেন্টেড একজন ব্যক্তিত্ব। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জার্নালিসম নিয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট। আর আজ সে একটি বিখ্যাত সংবাদপত্রের সাথে জড়িত। উচ্চ পদস্থ একজন জার্নালিস্ট। ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল। না, তিতাসের কোনো ছেলের অভাব হবে না। একজন ভালো মনের পুরুষ মানুষ সে নিশ্চই পাবে। এসব ভাবতে ভাবতে তিতাসের ফোনটা একবার কেঁপে উঠলো, তাতে ফ্ল্যাশ করছে সৌম নামটা। সৌম একটা মেসেজ পাঠিয়েছে যাতে লেখা, “গট স্টাক ইন দ্যা ট্রাফিক... ভেরি সরি। প্লিজ ওয়েট ফর টেন মিনিটস মোর...” মেসেজটা পড়ে, তিতাস উঠে পড়ল চেয়ার ছেড়ে আর ক্যাফে থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে রিপ্লাইটা লিখে সেন্ড করল সৌমকে, যাতে লেখাছিল, “আত্মসম্মান সবার চেয়ে দামি... এক্স”। 

মোঃ মিজানুর রহমান



বেহায়া-০৯



নেহ মোরে দিলো ডাক
নাম ধরে দাঁড়কাক,
যাবে কুমার নদীতে 
একা ডিঙি বাইয়া,
ছুটেছি পিছু পিছু 
আমি যে অতিশয় বেহায়া।

হিসেবে কাঁচা যে 
করি কাজে শুধু ভুল,
ভাবনার বেড়াজালে
পাইনা না তো কোনো কূল।

সুপ্তিরা করে খেলা
নয়নের নয়নে,
বেহায়া মন স্যাঙাতের খোঁজে
দিবানিশি শয়নে স্বপনে।

বিনি সুতার ওড়াটা
ছেড়েছি দূর আকাশে,
হঠাৎ অনপেখিত বৃষ্টিতে
ঝলমলে আকাশটা ফ্যাকাশে।

পাইনা যে কোনো ভয়
মেঘের আড়ালে,
বেহায়া মন খুশি
প্রীতিজন প্রণয়ের দুটি হাত বাড়ালে।

সোমা দাস




পাথর 



শব্দগুলো জমতে জমতে যখন 
মাত্রা ছাড়ায়-
অলেখাগুলো যখন পূর্ণতা চেয়ে 
বেড়িয়ে আসতে চায় -

আমি তখন পাথর হয়ে উঠে
চোয়াল শক্ত করি! 

তুমি চলন্ত ট্রেনের ভিড় ঠেলে 
দরজা খুঁজে দাঁড়াও. . 
চোখে লেগে থাকে কুয়াশা মাখা 
সকালের প্রশান্তি , 
জনতার ভিড় ছোঁয়না তোমায়! 

তুমি নীলের দিকে চোখ রেখে 
তোমার অলেখাগুলোতে প্রাণ ঢেলে 
উড়িয়ে দাও মেঘের বুকে. . . 

তপন জানা




হিংসা বিষে 



হিংসা বাষ্পে ছেয়েছে আকাশ
   মাটির পৃথিবী রক্তাক্ত।
অমানবিকতার গরল গিলে
   মানব জাতি বিধ্বস্ত।
হিংসায় আজ উন্মত্ত পৃথিবী
   কেউ চায় না কারো ভাল
জীবশ্রেষ্ঠ হয়েও মানুষ
  মানুষের ই চিতা জ্বালো।
বিশ্বাসের কোন বালাই নাই
   প্রতারণার ফাদ পাতা।
স্বার্থসিদ্ধির নিষ্ঠুর খেলায়
   কে কাটে কার মাথা?
ধর্মের নামে দাঙ্গা করে
  গুলি বন্দুক বোম বারুদে।
হাজার অসহায় প্রান মরে
   স্বজন হারার দুঃখে কাদে।
মৃত্যু এখন দাড়িয়ে রাস্তায়
   খড়্গ নিয়ে হাতে।
সুযোগ পেলেই কাটবে গলা
  অন্যায় প্রতিবাদ না হয় যাতে।
মাতৃ জঠরে কাঁপছে  শিশু
   ভুমিষ্ঠ হবার ভয়ে।
ধরার বায়ু বারুদে ভরা
   সে বাঁচবে কি লয়ে?
সভ্যতার গায়ে অকাল আধার
  চন্দ্রকায়ায় রক্ত দাগ।
সূর্য ডোবে বারুদ স্তুপে
   সৃ‌ষ্টি স্রোতে ঘূর্ণি পাক।