"অন্ধকারে এ উৎসব"
*****************
আজ এ পৃথিবী ক্ষুধার রাজ্যে গদ্যময়,
মা দুর্গা আসছে , আনন্দ বাড়ছে যার... আছে ।
আজ মহাপঞ্চমী , কত সুর- কত গান চারপাশে করি আকর্ণন ,আজও কিছু শব্দ শুনতে পাই, "ও দাদা কিছু দাও না" "কদ্দিন ধরে কিচ্ছুটি খাইনিগো"।
আজ উৎসব এসেছে, মনে দোলা দিয়ে যায় প্রেমিক প্রেমিকার,
আমার ঘর এখনো আঁধারে, মা আজও কান্না করে, বোন আজও ভিক্ষা মাগে।
কিঞ্চিৎ উৎসব দিয়ে সব ভুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা আজ,
পাড়ায় পাড়ায়, কত ঘরে ঘরে , যার আছে....।
আজও সেই বড় প্যান্ডেলের সামনে দিয়ে অর্ধ নগ্ন "মা" , একটা থালা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়
আর ভেতরে আরেক মা লক্ষ টাকার স্বর্ণখোচিত শাড়িতে বন্দিত হয়।
বাইরে আমার মা, রাস্তার পাশে ড্রেনের কাছে এসে খাবার খায়,
আর ভেতরে খাওয়ারের জোয়ার এসেছে,
এখন হাত দেওয়া যাবে, কালকে ফেলে দেওয়া হবে।
সেই খাবার কুকুর- বেড়ালের সাথে খাচ্ছে দেখো "উৎসব" কতদিন ধরে।
আবার আমরা অনেক এগিয়ে, অনেক! এই গোলকের মহানপ্রাণী ,
ও সৌরভের মা , এবার তোর ছেলের ক'টা জামা হয়েছে?
এইতো দিদি, বেশী না মোটে দশ খানা, তোমার মেয়ের থেকে ছয় খানা কম্
ওওওওও... এত জামা নিয়ে কী করবে বলো সামনে আবার দিওয়ালি আসছে...তো
মেয়েটার ইচ্ছে হয়েছে, তাই মামা, কাকা, জ্যাঠা , দাদু, পিসি, বাবা, মা, সব্বাই মিলে দিয়েছে।
নিত্যদিন নতুন নূতন ..... আর আমার ছেলেটা ,বলেই মা কানতে কানতে বললো ওও রাজশ, তাপস আর বারিণ,, ওদের উৎসব চুকে গেছে...
কত আশা করে বাড়ি এসেছিল, কত কিছু নিয়ে , এক উৎসব , তার মৃত্যু উৎসব হয়ে গেল..
সব তার মুছে গেছে, চিতাভষ্ম আজ শীতল হয়ে গেছে।
তোমাদের মশগুল জীবন পুজার আনন্দে ভালোই কাটছে।
আমার উৎসব মাটির ঘরে, শতশত মৃত্যুর অন্ধকারের শব বানায়....
মৃন্ময়ী আজ সাজসজ্জায়, চিন্ময়ী রাস্তায় রাস্তায়
খুব ভালো উৎসব হচ্ছে কোটি টাকার লাল শরবতে আর বিছানায়।
উন্নতির আলোকসজ্জা রাস্তায় রাস্তায়, জীবন ভরে পেটে আগুন নিয়ে,
পুজোর দিনে সাজবে হাজারে হাজারে ,রঙে্র বাহারে
বিসর্জনে মায়ের মুখশ্রী জলের তলায়, কাকের বিষ্ঠায় কালো ছায়া,
চার- পাঁচ এদিনের আলো , আজকের অন্ধকারের উৎসবকে ভেঙ্গায়।