নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

জয়শ্রী রায় মৈত্র




সেই বর্ষা ঝরা দিনে
                        

এক পশলা বৃষ্টি এলো 
ছোট্ট এক ছাউনিতে দাঁড়িয়ে আমি 
এক ঝলক হাওয়ায় 
ভিজল শরীর 
শীতল পরশ হৃদয়ে লিখে গেল 
এই সন্ধিক্ষণের এক বরষা  
দাঁড়িয়ে ছিলাম সেদিন 
সে  আমি এক বট গাছের নিচে 
চিনতাম না তাকে, 
ভিজে ওড়না দাপুটে হাওয়ায় 
উড়েছিল তার গায়ে 
মৃদু হেসে শান্ত চোখে 
চেয়েছিল সে, 
রোমান্টিকতার ঝড়ে 
হারিয়ে ছিলাম মন 
থেমেছিল বৃষ্টি জমেছিল জল 
সে ভাসিয়েছিল কাগজের নৌকা, 
প্রথম প্রেমের পূর্বাভাষে 
মুখ হয়েছিল কনে দেখা রোদ্দুর  
তারপর অনেক বরষা 
হয়ে গেছে পার 
সে আজ নেই আমি একা 
তবুও স্মৃতি মেদুর হয়ে দাঁড়িয়ে 
এই সন্ধিক্ষণের সেই বর্ষা ঝরা দিনে ।।

সৌরভ বর্ধন






চরৈবেতি
*********





নিতান্ত সাধারন আপেলগুলোকে মাটির দিকে ঠেলে দিয়ে
ভবঘুরে কোশ চেয়ারে বসে কাটিয়ে দেয় প্রোটোপ্লাজম

জলের মধ্যে প্যারামোসিয়াম গ্যাজেলি-হরিণ টিকটিকি
দেয়ালের ছায়ায় পড়ন্ত হয়ে ওঠে গাছের জীবনচরিত -
গাছ মাত্রেই দৌড়াতে নারাজ। থেমে যাওয়া = মৃত্যু (?)

            আপেল উঠে আসে গাছের দিকে 
                    আরেকটু গেলেই ০তা

বাস্তব ≠ সত্য []    স্থিরতা ≠ গাছ []    জাড্যতা ≠ সভ্যতা []

[ রাতের আকাশে { নক্ষত্রখচিত + মেঘাচ্ছাদিত } প্যারোলে
মুক্ত যে ঘুড়িটাকে আমি উড়তে দেখেছি তার কাপকাঠিতে
অতসী মেঘ জড়িয়ে আছে। আমি হাত বাড়ালেই বৃষ্টি.....]

তবু নিশপিশে ভিড় ঠেলেগুঁজে নোতুন পায়ের সিলিয়া/সিটি

বাস কন্ডাকটর 
                      ঘামাচি হাতে 
                                         টিনের সাথে চুলকুনি 
                                                                          (খ্যালো)

পকেট বোঝাই ডায়াটম মাটি নিয়ে আমি আলতো করে
মেপে নিই মোহ স্কেলের আশকারা.................... 

এসব ঘামের কোনো মানে না হওয়ায় সন্তুলিত মার্গ দিয়ে
রগড়ে নিলাম দুই বগল আর পেছন ঘুরে জাঙিয়া

[ ছায়া ঘনাইলো বনে বনে; ওসব কিছু না, আসলে সন্ধ্যা
ঘাসের থেকে ঝুর ঝুর করে পরলো। নিথর সব কলাঘাস।]

এই সন্ধিক্ষনে বিবিধ মুদ্রায় কৌষিকী নৃত্য। তারপর

জোনাকি বাগানে আলো ধরে ধরে ছায়া হাঁটা শুরু........
শাম্ত পায়ে দিক্চক্রবাল

(ধরে নাও,                এখন আর আমি বৃষ্টিতে ভিজি না।)

অনোজ ব্যানার্জী




বর্ষা
*****



বৃষ্টি আসে,সৃষ্টি হাসে,আষাঢ় -শ্রাবণ আনে বর্ষা।
সবুজ ঘাসে,সবুজ মাসে,চাষীরা মনেপায় ভরষা।।
গ্রীষ্মের কান্না,মুছে দেবে বন্যা,নদীর দুকূল ছাপিয়ে।
ময়ূরের নৃত্যে,শান্তিতে ফিরতে,সুখপাখী ওড়ে দাপিয়ে।।
বর্ষার ঝমঝম, মনে জাগে কত দম,উড়ে যায় গ্রীষ্মের তেজ।
মাঠঘাট টলমল, শুধু জল আরজল, বাবুদের কী আমেজ।।
ধনী, সাহেবরা,খুশীমন ফুরফুরা,তাকায় জানালার চোখে।
নগরের রাজপথ,বরষার কি মদত! হাঁটুজল কে আর রোখে??
বিদ্যুৎ, মেঘ, ঝড়,ভেঙে যায় কত ঘর,বর্ষার প্রচণ্ড তাড়নায়।
আসে শত রোগ,ভাসে কত দুর্ভোগ, সাপের উপদ্রব বাড়ে।
ঝোপঝাড় বনে,বিনা অস্ত্রে-রণে,নিমেষে জীবনমণি কাড়ে।।
দিন আনে,দিন খায়,দারিদ্র্যের যাতনায়,কত লোক ভেঙেপড়ে কান্নায়।
চাষীরা করে চাষ,অন্ন করে বাস,কৃষকের লাঙলের ফলায়।
বরষার করুণায়,পৃথিবী খাদ্য পায়,দারিদ্র্য সভয়ে পালায়।।
হৃদয়ের ভালোবাসা,জাগায় স্বপ্ন আশা,প্রেমিক জোয়ারে ভাসে।
পিয়াসী মরুর বুকে, বিক্ষত যারা দুঃখে, দাঁড়াও চাতকের পাশে।।
পাপীদের যত পাপ,গুণ্ডাদের সংলাপ,ভেসে যাক ধর্মের বন্যায়।
সমাজের খাতা থেকে,সমাধিতে দাও ঢেকে,প্লাবিত দূর্নীতি অন্যায়।।।

অসিতাভ দাস




বিকেলবেলার শ্রাবণ
*****************


মনকেমন শ্রাবণে,
রাত নামে আনমনে,
মাঠঘাট ভরে যায় জলে।
গোধূলির শেষ আলো,
মন কেন ভার হলো,
আজ খোকা নেই ফুটবলে।
ও বাড়ির ছোট খুকী,
খাতাভরা আঁকিবুকি,
কুমিরের ডাঙা জলে থৈ।
কেউ নেই খেলাসাথী,
নিশ্চুপ মাতামাতি,
মিছিমিছি খেলা-পড়া বই।
বস্তির ভোলা, বিশু,
কাকভেজা ছাড়া-শিশু,
জমা জলে পুঁটিমাছ ধরে।
ফুলি, চাঁপা একসাথে,
ভিজে ভিজে হাতেহাতে,
বাসনের স্তূপ সাফ করে।।

মোনালিসা পাহাড়ী




শ্রাবণ প্লাবন
**********


শ্রাবণ প্লাবন বইছে দুচোখ বেয়ে
উপচে পড়া জলরাশি বয় খাতে
ঠোঁটের সীমানা পেরিয়ে মেশে গহ্বরে
নুন জমছে আঠালো লালারসে।

চোখ আর মন পিঠোপিঠি ভাই বোন
মন কাঁদলেই চোখের আকাশে বৃষ্টি
চোখের সামনে বিরহী দৃশ্যপট
মনের গহ্বরে বেদনা রসের সৃষ্টি।

মনের আকাশে টুকরো টুকরো স্মৃতি মেঘ
জমতে জমতে ঘনায় কালচে ধোঁয়াটে
তাই তো শ্রাবণ অঝোর প্লাবন বয়ে যায়
বালিশের দেশে, বাঁধ ভাঙা এই রাতে।

পিয়ালী সাহা






তবুও বৃষ্টি নামে
************



 এক বিকেলের হঠাৎ বৃষ্টিতে ফোঁটা ফোঁটা জলের  সঙ্গে  মিশে গেলে তুমি
চুঁইয়ে পড়তে লাগলে
 আমার চুল ঘাড় কপাল বেয়ে

আমার সে বিকেলের স্বাদ তখন শুধু ভালোবাসার

এক পা,দু পা এগোতে এগোতে অনুভব করলাম অসম্ভব কালো চারিদিক
আমার চিবুক থেকে আর ঝরে পড়ছেনা বৃষ্টির শীতলতা 

 সেই ফোঁটা গুলো তখন 
স্বাদে অম্ল.. 
আর সেই আমি তখন শীতলতা ছেড়ে  
বিকৃত এক অন্য আমি

যে ভিজেছিল
আর শুধু ভিজতে চেয়েছিল

তবু আজও বৃষ্টি নামে অন্য কোথাও
হয় শ্রাবণে নাহয়
 মনের  ঈশান কোণে