নোটিশ বোর্ড
বিশ্বজিৎ ভৌমিক
" বসন্তের রাঙা প্রেম "
*******************
বসন্তের আলতো বাতাস হয়ে তোমায় আজো ছুঁয়ে যেতে চাই ,
কল্পনায় রামধনুর সাত রঙ খুঁজে নিয়ে বারবার তোমাকে রাঙিয়ে যাই ।
ফুলের গায়ে লেগে থাকা রঙ, সেই রঙ দিয়েও তোমাকে রাঙাতে চাই।
ফাল্গুনের জ্যোৎস্না রাতে তোমাকেই খুঁজে বেড়াই,
আশা নিরাশায় মাঝেও আমি বারবার তোমাতেই হারাই ।
হৃদয়ের ভগ্ন নীড়ে কষ্টরা এসে প্রতিনিয়ত কড়া নাড়ে,
ক্ষত বিক্ষত জীবনের হৃদয় বীণা বেজে ওঠে বিরহের সুরের ওপারে ।
স্মৃতির আবডালে বন্দি হয়ে বারবার পেছনে তাকাই,
সেই রঙিন জীবনের পদ্মপাতার ভীড়ে হারিয়ে যাওয়ার মাঝেও তোমাকেই খুঁজে পাই ।
আমার যতো প্রেমের কবিতা লিখেছি তোমায় নিয়ে,
আমার সকল ভালোবাসার গানে তুমি আছো সুর হয়ে।
তোমায় নিয়ে কষেছি আমার জীবন সুখের অঙ্ক,
পলাশ ফুলের গেঁথেছি মালা তোমায় পরাবো।
তুমি আমার বসন্তের রাঙা কৃষ্ণচূড়া ফুল,
টকটকে লাল শিমুল ফুলে তোমার মাঝেই দেখি আমি--- বসন্তের রূপ।।
পূজা গোস্বামী
বসন্তের ডাক নিমন্ত্রণে
*******************
নিছক প্রেমের গল্প সেদিন,
রাত ভাঙা স্বপ্নে এলো,
পল্লী স্রতের শুষ্ক আবির,
বসন্তের নিমন্ত্রণ পাঠালো।
প্রেম কি শুধুই জড়িয়ে ধরা?
কাছে থেকে পাশে শোয়া!
ভেজা ঠোঁটে, ঠোঁট গোজা
এই কি শুধুই ভালোবাসা?
এই তো মিছে মিলন মনের,
ইচ্ছে ফুরোলেই নতুন আদর খোঁজে,
যেনো কুঁড়িয়ে পাওয়া পথের পারে,
অতিষ্ঠ মনের জীবন্ত হৃদয় পোড়ে।
তখন, মেঘ লজ্জায় আকাশ সাজে,
মাইল কতেক দূরের শহরে,
রাত নামে চাঁদের আড়ালে,
সারা বেলার ক্লান্ত চিঠি,
শেষ বসন্তে এলাই ঝরে।
সুনন্দ মন্ডল
ইন্দ্রপতন
*********
উজ্জ্বল আকাশে ঝলমলে তারাদের মাঝে
নিজ আলোয় সুরভিত তরঙ্গ তোমার নাম।
শিশু চরিত্র কিংবা যৌবনের উল্কা তুমি
ছিলে মানব জাতির স্নিগ্ধ কৌমুদিনী।
নিজ আলোয় সুরভিত তরঙ্গ তোমার নাম।
শিশু চরিত্র কিংবা যৌবনের উল্কা তুমি
ছিলে মানব জাতির স্নিগ্ধ কৌমুদিনী।
বনস্পতির মহীরুহ হয়ে পৌঁছেছিলে শিখরে
পর্বতের পাদদেশ ছিল আর কত শিষ্যদের।
মুম্বাই থেকে দুবাই কাঁপিয়েছিলে নামের তর্জনে
হীরের মুকুট উঠেছিল মাথায় তেরোর ঘরে।
পর্বতের পাদদেশ ছিল আর কত শিষ্যদের।
মুম্বাই থেকে দুবাই কাঁপিয়েছিলে নামের তর্জনে
হীরের মুকুট উঠেছিল মাথায় তেরোর ঘরে।
আজ হঠাৎই হিম্মতওয়ালার হিম্মতওয়ালী
খসে পড়ল চলচ্চিত্রের পর্দা ভেদ করে নাভিমূলে।
'মম' হয়ে মানুষের মাঝেই ঠাঁই নেবে বাকিদিন
চুয়ান্নতেই ইন্দ্রপতন নক্ষত্রখচিত সুন্দরীর।
খসে পড়ল চলচ্চিত্রের পর্দা ভেদ করে নাভিমূলে।
'মম' হয়ে মানুষের মাঝেই ঠাঁই নেবে বাকিদিন
চুয়ান্নতেই ইন্দ্রপতন নক্ষত্রখচিত সুন্দরীর।
অকাল হৃদরোগ কেড়ে নিল প্রাণ তাজা রক্তের
বিষণ্ন চারিদিক বসন্তের মিছিলে শোকস্তব্ধ।
ছন্দপতনে কেটে গেল সুর বিজয়ের কোলাহল
শুধু প্রাণময় ভালোলাগা একরাশ বেঁচে থাক।
বিষণ্ন চারিদিক বসন্তের মিছিলে শোকস্তব্ধ।
ছন্দপতনে কেটে গেল সুর বিজয়ের কোলাহল
শুধু প্রাণময় ভালোলাগা একরাশ বেঁচে থাক।
অসীম মালিক
শিমুল ফুলের ভায়োলিন
*******************
( এক )
নড়বড়ে ঠোঁটের সেতু ,
ব্যথাহত কথারা পারাপার হতে না পেরে
চোখের সূচিপত্রে -জল অক্ষরে লেখা ।
ঠোঁটের ওঠানামা ,
যেখানে চোখের থেকেও নীরব
সেখানে চোখের পাতা ওল্টাই ।
দেখি , চোখের নদীতে ভাসে
একগুচ্ছ পলাশ ফুল ।
ঠোঁটের সেতুর প্রতি
আর আমার ভরসা নেই !
আজ ওই সেতু দিয়ে
শুধু চাঁদ পারাপার হয় ।
চোখের নদী সাঁতরে কুড়িয়ে আনি
বৃন্তচ্যুত একগুচ্ছ শিমুল ফুল ।
( দুই )
দোলপূর্নিমার চাঁদ বাজায় ,
শিমুল ফুলের ভায়োলিন ।
কী বিষন্ন সেই সুর !
আমায় স্মৃতিতে চমকায় ।
পুনরায় উল্টে দেখি –
তোমার চোখের সূচীপত্র ।
ধূসর চরাচরে
একাকী বিষন্ন মনে শুনি –
শুকনো পাতার সানাই ।
( তিন )
ঝরাপাতার জলসাঘরে
ভেসে আসে কোকিলের বিষন্ন সুর ।
অদূরে কৃষ্ণচূড়ার ডালে
কচিপাতার দোতারা বাজায়
দক্ষিনা বাতাস !
বাসন্তী আকাশের নীচে আমাকে বাজায় –
বৃতি খুঁজে পাওয়া অশোকফুল ।
ঝরাপাতায় সওয়ারি হয়ে দেখি
আমার প্রিয় রাধাচূড়া
আজ তোর কানের দুল ।
বিকাশ কারাক
পাগল
******
আমি এক অদ্ভুত জীব, লোকে আমায় পাগল বলেই চেনে.
অর্ধনগ্ন জোটা দেওয়া চুল, জঞ্জালের স্তুপে থাকি ফুটপাথের এক কোনে.
কেউ মাড়িয়ে যায়,কেউ দেয় গালি,কেউ ছোড়ে ঢিল,কেউ বা ইস! পাগলটা বলে এগিয়ে যায়.
আমি পড়ে থাকি ক্ষুদার্ত, নিসম্গ, কুকুরগুলোকে আদর করে বিস্কুট খাওয়ানোর দিকে চেয়ে,
কখনও বা আকাশ ছুতে চাওয়া অট্টালিকার ফাঁকে এক চিলতে শুন্যতার দিকে হাত বাড়িয়ে.
আমরা আবর্জনা আমাদের ধুয়ে ফেলতে কখনও আসে বৃষ্টি কখনও আসে পুলিশ.
আসে না একটু ভালবাসা আর একটুখানি রুটি.
মানবতাবাদীরা! আজও ভীষণ ব্যস্ত কোনো বড়লোক বাবার মদপ কিশোর ছেলের
খুনোখুনিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে মিছিলে স্লোগান দিতে.
মিডিয়ার ফ্লাশেও হারিয়ে যায় আমাদের কথা,অজানা স্রোত যদি ঢুকে পড়ে
চিত্কার উঠে আরে! ওটা তো পাগল ছুড়ে ফেলো একে আরব সাগরের বুকে.
অমানবিকতার সমুদ্রে ডুবতে থাকে শরীর, মাথা আস্তে আস্তে শেষ আঙ্গুলটা.
কেউ আসে না আমরাতো মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
লোকে পাগল বলেই চেনে.
ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলা খাওয়ার ছবি ঠাই পায় তোমাদের আর্ট গ্যালারিতে
পার্টিতে নামিদামী মদের ফোয়ারায় উঠে আমাদের কথা.
মানব জাতিকে, দেশটাকেও নগরা করার দায় উঠে আমাদেরই উপর.
উঠেনা শুধু একটা হাত আমাদের দিকে মানুষের মর্যাদা দিতে.
কারণ আমরাতো মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
লোকে পাগল বলেই চেনে.
আমাদের চিন্তা মনন ভালবাসা এমনকি স্মৃতি টুকুও কেড়ে নিয়েছে
হয়ত বা আমাদের কোনো প্রিয়জন. শুধু পারেনি শুন্যতার গহ্বরে
আমাদের চোখের জল টা কেড়ে নিতে.
ওটা আমার একান্তই আমার হয়তবা বৃষ্টির জলে বুজতে পারি না ,আনুভব করি.
তবুও আমি মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
লোকে আমায় পাগল বলেই চেনে.
আমার জন্য কবি নেই কবিতা নেই,আমার জন্য কোনো সমাবেশ নেই.
দাবি নেই, নেই কোনো বরাদ্দ.
আছে রেলস্টেশন,একটা ব্যস্ত কোনো আন্ডারপাস অথবা বৃষ্টিতে ভেজা রেলিং এর একটা কোন.
সময় সময় ওরা আসে ধুয়ে মুছে সাফ করতে.
রাস্তায় কুড়ানো ছেড়া পেন্ট ফেলে দেওয়া আধখাওয়া রুটি,কিছু রঙিন কাগজ আর পুড়িয়ে দেওয়া
কম্বল নিয়ে দৌড়াই,
পিছন পিছন দৌড়ায় একটা সমাজ একটা জাতি একটা লাটিধারী পুলিশ
আমাদের মিটিয়ে দিতে আর একটা সভ্য সমাজ বানাতে
যেখানে ঠাই নেই আমাদের কারণ
আমরাতো মানুষ না এক অদ্ভুত জীব,
লোকে পাগল বলেই চেনে.
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)