নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

একতাই বল:-অনোজ ব্যানার্জী


  ‎


একতাই বল আনে জানি,হবে তাই জোট বাঁধতে।
বিন্দুবিন্দু জলে গড়ে সিন্ধু, কথাটি হবে মনে রাখতে।।
একা যে আমি বড়ো বোকা,তুমি যদি থাকো সাথে।
সব বাধা করবোই জয়,পারবেনা কেউ কখনোই টলাতে।।
জীবনের পথ বড়ো দুর্গম, কাঁচ কাঁটা বারুদেতে ভরা।
রাক্ষস খোক্কস, ডাকিনী যোগিনীতে পূর্ণ হয়েছে এই ধরা।।

এসো বন্ধু,  হাতে রাখো হাত, পিশাচের সাথে হবে লড়তে।
শয়তানের শয়তানি পুড়িয়ে,, নতুন সমাজ হবে গড়তে।।
ভেঙে দাও ঘুঘুদের বাসা, কাটমানি,সিণ্ডিকেট দাও উড়িয়ে।
পাপীদের মুখোশের প্রাসাদ,বিপ্লবের ঝড়ে দাও গুড়িয়ে।।
চেতনার জোয়ার আসুক আমাদের সকলের হৃদয়ে।
জ্বলছে সন্ত্রাসের আগুন,তবু থাকবোনা আমরা ভয়েভয়ে।।
লুটেপুটে খাচ্ছে যারা,দেশের সব ধনরত্ন, দিতে হবে শাস্তি তাদের।
আসবে সুখ  শান্তি তবেই। এই প্রিয়  দেশ আমাদের।
এই দেশ তোমার আমার, সকলের সমান অধিকার।
তবে কেন বিভেদ এত,,ধনী দরিদ্রে?  কেন এত হাহাকার....?

ফুটপাথে পথশিশু , কাঙাল ভিখারি, বেকারের  কেন আর্তনাদ??
দেশের সুদিন এলো ফুরিয়ে,সামনেই দেখো বড়ো খাদ!!
কে বাঁচাবে এই পচা সমাজ? এসো সবাই একসাথে।
দড়ি  ধরে মারো টান,,দুর্নীতির ইমারত লুটিয়ে পড়বে ধুলোতে।।

উদ্বাস্তু :-অনিন্দ্য পাল


যেমন সব কিছু থাকে
ঘাস মাটি পাথর , ঝরা পাতা
অস্তিত্বে প্রত্যয়িত বাস্তব অথচ ঠিকানা নেই কোনো
ঠিক তেমনি,
ওরাও আছে জোয়ারের জলে ভেসে আসা
অমর পলিথিনের মত
অনেকটা ওই খাল বিল নদী থেকে সদ্যজাত
চঞ্চল মেঘ
নাম গোত্রহীন
না হিন্দু না মুসলিম না খৃষ্টান না ইহুদি
 অথবা বৌদ্ধ অথবা জৈন
ওদের ধর্ম বর্তমান দিন
ওরা সামাজিক অথচ বাস্তুহীন

কোথাও স্থায়ী নয় দর্মা পাঁচিল
একফালি টিনছাদ, পোষাক বাতিল
ওরা কারা জানে না ওদের ছেলেমেয়ে
জীবন দরজাহীন, নেই কোন খিল

অসীম না হোক এই নীলগ্রহ অনেকটা বড়
স্থল জল এত কিছু দখল নিল কে?
শুরুতে সবাই ছিলাম বন্য একাকার
কেন কেউ স্বর্গ পেল, কারো হাহাকার

এদেশ ওদেশ নিজের ঠিকানা কোথায়
সন্তান আঁকড়ে বুকে বাবা মারা যায়
আয়লান একা নয় অসংখ্য যেমন
অদ্ভুত জেলখানায় বাঁচতে বাধ্য হয়

সীমারেখা টানলো কে পৃথিবী টা কার?
বাস্তুনেই তবু বাঁচে ওদের সংসার
দেবালয় ঠাঁই দেয় আর আছে ফুটপাথ
ওদের সরকার নেই, আছে নগ্ন কালো হাত

প্রমাণ কোথায় তোমরা এ পৃথিবীর জীব ?
গ্যারান্টি দেবে কে তোমরা নও ক্লীব!
এ নাটকে অভিনেতা নও তুমি, দর্শক ও নও
তুমি শুধু এ গ্রহের উদ্বাস্তু হও!

এক আঁচলা জল:- সুমিত মোদক



হরপ্পা নগর থেকে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে ঠিকই পৌঁছে যাবো তোমার কাছে ;
সেদিন কি তুমি চিনতে পারবে আমাকে  !
চিনতে পারবে কি তোমার সেই পোড়া মাটির পুতুল !
যে গুলো নিয়ে তোমার মেয়েবেলার পুতুল খেলার দিন ;
সে গুলো সযত্নে আজও রেখে দিয়েছি নিজের কাছে ;
#
সেই হরপ্পা সভ্যতার অন্তিম থেকে আজও খুঁজে চলেছি তোমাকে ;
তোমার জন্মচিহ্ন ঠিকই ছিনিয়ে দেবে ;
সে কারণে , যেখানে যেখানে জলের হাহাকার দেখা দেয়  ,
যেখানে যেখানে জলের অভাবে সভ্যতার ধ্বংসের পদধ্বনি শুনি  ,
সেখানেই ছুটে যাই কেবল তোমাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় ;
#
সে সময় তো চোখের সামনে দেখেছি কেবলমাত্র জলের অভাবে কিভাবে ধুঁকছিলে ;
ধুঁকছিলে তোমার হরপ্পা সভ্যতা ,
আমার হরপ্পা সভ্যতা ,
আমাদের ভারতবর্ষ  ;
#
কেবল জলের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে বেরিয়ে পড়ে ছিলে  , শুধুমাত্র তুমি নও , আমি নই ,
আমাদের হরপ্পা সভ্যতার প্রতিটি মানুষ
মানুষের মিছিল ;
একটা সভ্যতা থেকে আরেকটা সভ্যতার দিকে
জলের সন্ধানে  , বাঁচার সন্ধানে ;
#
রাস্তার দুধরে দেখেছি হাজার হাজার মানুষের মৃতদেহ  , সভ্যতার মৃতদেহ ;
মৃত এক নগরী ....
যে যেদিকে পেরেছে হেঁটে গেছে এক ফোঁটা জলের আশায় , বাঁচার আশায় ;
#
আজও হাঁটছি আমি ;
তুমিও হাঁটছো হয়তো এক ভূখণ্ড থেকে আরেক ভূখণ্ডে , আরেক সভ্যতার দিকে ;
#
এখানে এখন শ্রাবণের বৃষ্টি ;
ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি  .  ..
বৃষ্টির জলে ভিজেছি আর ভাবছি কেবল তোমার কথা , তোমাদের কথা ,
আমাদের কথা . .
#
আজ এই সকালবেলায় তোমার জন্য রেখে দিলেন  এক আঁচলা জল , আমাদের জীবন  ।।

অষ্টাদশ এই যথেষ্ট :শুভম চক্রবর্ত্তী




আমি এক অষ্টাদশের যুবক।


ভোটের কার্ড হাতে লাইনে দাড়াই,

ছাপ্পা দিয়ে পয়সা কুড়োই।

টাকা পেলে ঝান্ডা ধরি,

দেওয়াল লিখি, প্রচার করি।


দাদারা বলে-'আমাদের দাবি মানতে হবে।'

আমরা বলি-' মানতে হবে, মানতে হবে।'

কী দাবি ? কী বুঝি ছাই,

ঝান্ডা ধরি স্লোগান চালাই।


কী হবে এডুকেশনে?

এডুকেশন কি পয়সা আনে?

দেশটা কী চলছে তায়,

আমাদের কিইবা আসে যায়।


সুখের জোগাড় কিইবা কষ্ট ?

অষ্টাদশ এই যথেষ্ট।।


এরকম যদি হয় চিন্তা,

সর্বনাশের মাথায় বাড়ী।

সমাজ হবে নেতা-মন্ত্রীর,

শখে রাখা মোচ আর দাড়ি।

নির্মল ধারা:-অথৈ দেবনাথ (রিনা)



প্রকৃতি যখন,
বর্ষণের ধারায় শুদ্ধ স্নানে রত।
তুমি তখন ঘড়ে বসে, রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনছিলে।
আর আমি,
 বৃষ্টির  অবিরাম নৃত্য  দেখছিলাম।
অতপর সেই বৃৃষ্টির ধারা
আমার দু'হাতে নিয়ে,,
তোমার কাছে এসে বললাম,
 চোখদুটো বন্ধ কর।
তুমি বললে কেন?
আমি বললাম তোমায় ভিজাবো বলে,
তুমি মৃদু হেসে বললে
পাগলী,
 এটুকু বৃৃষ্টিতে কেউ ভিজে নাকী?
আমি আমার ছিটানো সেই বৃষ্টির ফোটা,
তোমার উপরে ছিটিয়ে দিলাম,,
সেই ছেটানো বৃৃষ্টির  ফোটা,
তোমার সমস্ত শরীরে পড়ল।
তুমি বললে সত্যি তো এই টুকু বৃৃষ্টি দিয়ে,
তুমি আমায় ভিজিয়ে দিলে।
আমি বললাম,
এ যে ভালবাসার স্পর্শ।
এর প্রয়োজন বেশি হয়না,
তারপর তুমি আমার হাত দুটো ধরে,,
তোমার বুকের কাছে রেখে বললে।
এর নাম বুঝি ভালোবাসা,
আর অধরে ঊষ্ণ স্পর্শ দিয়ে বললে,
এই বুঝি ভালবাসার স্পর্শ।
তারপর,
তুমি আর কি যেন বলতে চেয়েছিলে?
হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল,
আমি দেখলাম,
 তুমি বলে যাকে আমি ভালোবাসি,
ও আমার স্বপ্ন।
আর তোমার ভালোবাসা যা আমায় দিয়েছিলে,
তা ছিল কল্পনা।
আর অবিরাম সেই ঝড়া বৃ্ষ্টি,
ও আমার অতৃপ্ত ভালোবাসা
যা পাইনি বলে
 আজো অবিরাম ঝড়ে পড়ছে।।


জাগো : অযান্ত্রিক



মাটি কাটতে গিয়ে পেয়ে যাচ্ছি, দেখো কত সহজেই,
হঠাৎ হারানো সে নাম, পড়তে গিয়ে না ফেরা কোনো মুখ।
পাঁকে ভরা শুকনো পুকুর কেটেছি একশ দিনের কাজেই,
কত সহজেই জিতেছি বাঁচার বাজি, জিতে যাওয়াটাই সুখ।

চালিয়েছি কোদালের পরে কোদাল,এক নয় কত বার হাজার ,
মাটির আড়াল ঠেলে বেরিয়েছে ,কেটে যাওয়া গলা ,কণ্ঠহার
কান গলার টুকরো ,বাজুবন্ধ, আর কত  চেনা জীবন ফসিল,
গলে যাওয়া চোখের কোটর, তবু উজ্জ্বল পচা চিবুকের তিল।

হোক তবে হোক আরো ,মারো কোদাল সরাও,জমা কাদা মাটি,
সামনে আসুক  বুক পেট স্তনের আদল ঠোঁটহীন দাঁত কপাটি।
তারপর সাজিয়ে হৃদয়ের লড়ঝড়ে সমাধি মন্দির ,ওগো,
অবিনশ্বর সময় নেহাতই বাঁচার ছলে বলি ,
জাগো  মা দুর্গা জাগো।