নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

আমি ক্লাসের ফালতু ছেলে : শুভম চক্রবর্ত্তী




ছিলাম যখন ক্লাস এইট-এ,

স‍্যারের চাবুক পড়তো পিঠে।

পড়াশোনার বালাই ছাই-

হো হো টো টো ঘুরেই তাই,

কাটতো দিন হেলেদুলে

আমি ক্লাসের ফাল্তু ছেলে।


নিলাঞ্জন সেতো গুডবয়

অঙ্ক, বাংলা, ইংরেজিতে।

আমরা সবাই যাতা যাতা

ওর সঙ্গে তুলনা যোটে।

মা বোকে বলতো তখন-

'দেখো, দেখে শেখো ওর থেকে।

কিল, চড়, উঠবোস

এই সবই কি তোর ভাগ‍্যে থাকে?'

আমি বলতাম-'ভালো লাগেনা,

যাওতো এখান থেকে চলে।

নিলাঞ্জন ভালো তো কী?

যানোনা আমি ক্লাসের ফাল্তু ছেলে।



একদিন এক অঙ্ক ক্লাসে,

অংক স‍্যার বলল হেসে-

'এই যে সব ক্লাসের বাজে ছেলে

এ প্লাস বি এর স্কয়ার সূত্র বলতে পারো।'

আমি তখন চুপ

নিলাঞ্জন বলল -'এটা কি এমন বড়ো।'

আমার বেশ মনে আছে

সেদিন নিলাঞ্জন ছিল বলে,

'হুঁঃ যত সব ফাল্তু ক্লাসের ছেলে।'


এখন নিলাঞ্জন বিশাল বড়ো,

বউ নিয়ে আলাদা আছে।

মা বাবার সুখ-দুঃখ ও‌ ভালো-মন্দ

বোঝার কি তার সময় আছে।

আমি আজ ট্রেনের হকার

নুন আনতে পান্তা ফুরায়।

তবু মা আমার সাথেই

শাক ভাজা ভাত আনন্দে খায়।

কী হবে পড়াশোনায়

আমি তাই ফাল্তু ছেলে।


আমি থাকবো অট্টালিকা

বাবা মায়ের চোখের জলে,

মিধাবী ও দাদারা-

এটাকেই কি শিক্ষা বলে???

হাজার হাজার বছর পর : সুমিত মোদক





সকালের আলো ফুটতে না ফুটতে
সংবাদটি সকলেই পেয়ে গেছে  ;
কেবল , পায়নি সে ....
#
সে তখনও সেই হাজার হাজার বছর পুরানো আড়বাঁশিটি নিয়ে দাঁড়িয়ে যমুনার তীরে ;
#
মৃতপ্রায় যমুনাও যেন আজ বেশ চঞ্চল ;
ধোঁয়া-ধুলায় মলিন কদম গাছ গুলো যেন
নতুন করে মেলে ধরছে ফুলের পাপড়ি
সুঘ্রাণ ;
সমগ্র বৃন্দাবন জুড়ে বেজে চলেছে কিশোরী-নূপুর ;
হাজার হাজার বছর পর সকলেই জেগে উঠেছে আজ ;
#
কেঁদে কেঁদে কেঁদে কেঁদে শুকিয়ে গেছে চোখে জল ;
তবুও সে অপেক্ষায় থাকে গভীর বিশ্বাসে  ;
একদিন না একদিন ফিরবেই তার কাছেই . . .
#
সকালের আলো ফুটতে না ফুটতে
সংবাদটি সকলেই পেয়ে গেছে ;
কেবল , পায়নি সে ....

সাচ্চা প্রেমিক : অযান্ত্রিক



সেই কি যেন বলে না,ডানা কাঁটা পরী,
হাঁ করে দিন রাত শুধু তোকে গিলতাম।
তোদের উঠোনে জানি রোদ্দুর হামাগুড়ি,
আমি স্যাতসেঁতে সাইকেলে সময় বেচতাম।

তোদের বাড়িটা উঁচু, পাড়ায় পদবী উন্নয়নশীল,
আমার ছাদের ফাঁকে জোছনা দেখা করতে আসে
তবুতো  চোখের রাজা দেখেছি যে চিবুকের তিল।
ওরে ডানা কাঁটা পরী সাইক্লোনই জমে গরীব নিঃশ্বাসে

ভারী বাড়ি ভোরে ওঠে জেগে,বেমেয়াদি পেতে যায় ইঁট,
আমি সেই ইঁটেরই তদারক,পর পর গুনে গুনে চলি,
শিখেছিলি সেতারের কথা ,তারে তারে উদাসী সংগীত।
তবু আমি চোখেরই রাজা যে দেখছে সর মাখা সাদা গোড়ালি।

ওরে ডানা কাঁটা পরী, সেই তুই উঠে গেলি বিকেল কাগজে,
কলা বিভাগের ছাত্রী মুখে কারা যেনো ছুঁড়ে দিলো রুক্ষ তেজাব।
প্রেমের গুজব ছড়ায়, থানা পুলিশ ব্যর্থ প্রেমিক খোঁজে,
দরকার রক্ত দিলো ক্লাবের ছেলে, ও বাড়িতে যাদের মুখ দেখা পাপ।

জানলায় মধুবনি পর্দা দামাল,ভেসে আসে জাগরণে বিভাবরী,
যদি আড়াল ছেড়ে দেখিস একবার  নীচে ,সাথে নিয়ে পুড়ে যাওয়া ঠোঁট,
এখনও সেই  সাইকেলে আছি দাঁড়িয়ে,ওরে আমার ডানা কাঁটা পরী,
তোর একমাত্র আজন্ম প্রেমিক,আয় হাত ধর,
ওঠ সাইকেলে ওঠ।

অভিমানে : সাকলাইন মুস্তাক



সেই কবে তুমি সন্ধ্যতারায় মিশে গেছো
আর কি ফিরে তাকাও এ সেবিকার পানে??
সে কি তোমায় আত্মস্থ করে নিয়েছে খুব??
তাই হয়তো ....
তবে আমি বেশ আছি
এ ধুলির ধরায় নাই বা হলো পূর্ণিমা
তোমার আলোর ঝর্ণায় আজো ম্লান এ ভুবন
উজ্জ্বল জোৎস্না নাই বা থাকলো
প্রয়োজন হারিয়েছে তার প্রয়োজনীয়তা

জানো, কেমন করে যেন সবাই তাকাই আমার দিকে
গা জ্বালা করে, কাঁটা দিয়ে ওঠে
মনে হয় উপড়ে ফেলি দৃস্টি,
মিথ্যা বলছিনা
গোপন রাতের একা ব্যালকনি তে যখন ফিরে ওরা
হাত ধরাধরি করে, ভুলতে পারিনা বয়স
মনে করতে ইচ্ছা হয় সেই গা-জ্বালা দৃষ্টি
তুমি কি সম্মত তাতে???
বোঝাতে পারিনা নিজেকে......

তোমার কাকিমা পোড়ামুখী নাম দিয়েছেন
আমি তো গা পেতে নিয়েছি এ উপাধি
কজনেরই আর এমন ভাগ্য হয় বলো
কপালের লাল এক ঝটকায় কেমন
ভস্ম হয়ে যাই
অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাই রজনীগন্ধা
সান্তনা দিয়ে যায় পাড়া
মানুষ কে 'মানুষ' হতে বলে যেন.....

আজও জল ঢালি ওই কালো পাথরে
উপবাস হয় সবরকমেরই
কার জন্য জানিনা
যদি শেষ হয় উপবাস ক্ষনিকের তরে
অন্তত স্বপ্নেও.........
ক্ষমা কোরো তবে যদি ভ্রম হয় কভু....
ক্ষমা কোরো মোরে যদি ভ্রম হয় কভু.....



-পুন‍্যছেদে প্রিয়তমা কবি:-শুভম চক্রবর্ত্তী



প্রিয়তমা,
আজ বসন্তের উপস্থিতি বাতাসে,
আজ আমার তুমিহীন বসন্ত।
আজ বিবেক, আদর্শ জাগ্রত।
উদারতাও কম যায়না!
আজ আমার মনের নিঃস্ব স্থানে
প্রকৃতির, বাস্তবতার পরিপূর্ণতা।
আজ মনের সংকীর্ণতা গেছে লীনে।
আজ আমি স্বাধীন,
বাঁধনছাড়া পাখির ন‍্যয়।

আজও আমার বাড়িটা অগোছালো,
আমি সমাজ ও প্রকৃতি গোছাতে ব্যস্ত।
আমার হৃদয় প্রসারিত হচ্ছে,
তুমিহীন হৃদয় অনেক বড়ো।
তোমার ছোট ছোট ব‍্যথা
আর আমায় কষ্ট দেয়না।
আমার হৃদপূর্ণ আনন্দ আর আনন্দম।

আজ আমি সবার জন্য ভাবি
দেশের, দশের, সমাজের।
ভাবনাগুলো একঘর থেকে হয়েছে একপৃথিবী।
আজ আমি উপলব্ধি করেছি
তোমার না পাওয়াগুলো কতটা সংকীর্ণ।

এই প্রথম ভালো থাকতে শিখেছি,
শিখেছি প্রকৃত ভালোবাসাতে।
প্রেমহীন, আবেগহীন, নির্লিপ্ত অথচ
প্রকৃত ভালোবাসা।।

কবিতা বর্ণন.... শুভম চক্রবর্ত্তী



কবিতা তুমি কল্পনা না সৃষ্টি?
কবিতা তুমি বসন্ত না বৃষ্টি?
কবিতা তুমিকি হাসনুহানার গন্ধ?
কিংবা তুমি পলাশ রাঙা ছন্দ।
কবিতা তুমি বিদ্রোহী না প্রেমী?
ছন্দ মিলেছে গিয়েছে কখনো থেমে।
কবিতা তুমি উন্মাদ না শান্ত?
কখন তুমি মুক্ত কখন ব‍্যক্ত‌‌‌।
কবিতা তুমি কি বৃদ্ধ নাকি যৌবন?
নাকি কলম ঠেঙিয়ে প্রতিবাদে তুমি উদ‍্যম।
কবিতা তুমি বাচাল নাকি মৌন?
তুমি জোয়ার নাকি গৌন?
যদি হয় কলায় 'কলা' নির্মাণ
কবিতা তোমার থাকবে নিজ স্থান?

কবিতা এখনো বৃষ্টি বাদল হচ্ছে,
এখনো সংগ্রামে হাজার মানুষ মরছে।
এখনো নৈতিকতায় হানী,
এখনো মানুষ বেইমানি।
কবিতা এখন কলম হয়েছে ব‍্যস্ত
প্রকৃতি তার নিজের খেয়ালে চলে,
মানুষ এখন মৃত 'সুকান্ত'
কলম এখন শেখানো কথা বলে।
কবিতা এখন পৃথিবী চায়না তোমায়
কবিতা তুমি সৃষ্টির জীবাশ্ম,
কবিতা এখন কবিরা কর্পোরেট
ছন্দ এখন মৃত্যুতে বিষন্ন।

কবিতা এখন ভাবনা কি কথাবলে?
নাকি বিকৃতিতে আপনবেগে চলে।
কবিতা এখন প্রেমকি কাছে আসে?
নাকি অন্য কারোর যৌনতাতে ভাসে।
কবিতা তুমি কি পাচ্ছ খেতে?
নাকি বাবুরা সব তালা লাগায় গেটে।
কবিতা তুমি কি এখনো বিদ্রোহী?
নাকি সন্ত্রাসীদের বেত্রাঘাতে প্রতিবন্ধী।
কবিতা কলম ছেড়ে তুমিকি ধরেছো লাঠি?
নাকি বাবুরা সব তোমায় করেছে বন্দী।

কবিতা যদি আমারা তোমায় প‍্যানচ‍্যেটেতে ডাকি,
আসবে তুমি কবিদের হাতধরে?
নিভবে নাকি জলন্ত মোমবাতি,
পাবো জবাব সাদাখাতা ভোরে?
কবিতা তুমি বলছো তুমি জীবিত,
কিন্তু তোমার অস্তিত্ব গেছে মরে।
মানুষ এখন বিবেকহীন মৃত রাজা,
মেরুদণ্ড হীনতায় সমাজ গিয়েছে ভরে।
কবিতা তুমি এরকম জীবিত?
তবে দোহাই তোমার গ্রহন করো মৃত্যু।
আমি আজও আদর্শে বিশ্বাসী,
কবিতা তুমি তাহলে আমার শত্রু।

কবিতা তুমিকি করছো রাজনীতি?
মহাভারতের বিষাক্ত সেই ঢঙে।
তুমি এখন স্বাধীন নাকি বন্দি?
অদৃশ্য কোনো রাজনৈতিক রঙে।
কবিতা তুমিকি মানুষের অন্তরে?
নাকি পারার মোড়ের দেওয়ালের রঙ-তুলি।
এরা দেয় মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,
তুমিকি ওদের কোনো রঙচঙে বুলবুলি?
কবিতা দোহাই তোমায় ছেড়ে দাও রাজনীতি
ওরা চলে আপন আপন ছলে,
আজও বানায় মানুষকে ওরা হদ্দ
কবিতা ওরা সব মিথ্যেকথা বলে।

কবিতা, কবিরা এখন ভাব প্রকাশে ব‍্যর্থ,
কেউবা লেখে ছন্দে কিংবা আবেগ।
কেউবা বলে অসামাজিক পদ‍্য,
কটুক্তি আর মিথ্যা নানান ভাবে।
কবিতা অনেকে আবার অনুবাদে বিশ্বাসী,
কলম এখন ছেড়েছে নিজেসত্ত্ব।
বিদেশী লেখায় অনেক দাম আসে,
কবিরা এখন চোখ ট‍্যারাতেই মত্ত।
কবিতা তুমিকি শীতের দেশে আছো?
বেরোবে কবে শাল-মুড়ী খুলে।
একবার নাহয় হটাৎ উঠেবসো,
চশমা পরো হালকা হাই তুলে।

কবিতা তুমিকি আগের মতোই সত‍্য?
নাকি মেপে-ঝেপে মিথ্যে কথায় পোক্ত।
কবিতা আজও তোমায় বুঝিনি আমি,
তাইতো আমার কাছে আজও প্রশ্ন তুমি।
একটা কথা হালকা আবদারে
কিছু মানুষ আজও তুমি হীনতায় মরে।
কথা দাও তুমি রাখবে প্রতিশ্রুতি- 
ওদের হাত ধরে তুমি পৌঁছোবে আবার
সবার সবার সবার অন্তরে।।