নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অভিমানে : সাকলাইন মুস্তাক



সেই কবে তুমি সন্ধ্যতারায় মিশে গেছো
আর কি ফিরে তাকাও এ সেবিকার পানে??
সে কি তোমায় আত্মস্থ করে নিয়েছে খুব??
তাই হয়তো ....
তবে আমি বেশ আছি
এ ধুলির ধরায় নাই বা হলো পূর্ণিমা
তোমার আলোর ঝর্ণায় আজো ম্লান এ ভুবন
উজ্জ্বল জোৎস্না নাই বা থাকলো
প্রয়োজন হারিয়েছে তার প্রয়োজনীয়তা

জানো, কেমন করে যেন সবাই তাকাই আমার দিকে
গা জ্বালা করে, কাঁটা দিয়ে ওঠে
মনে হয় উপড়ে ফেলি দৃস্টি,
মিথ্যা বলছিনা
গোপন রাতের একা ব্যালকনি তে যখন ফিরে ওরা
হাত ধরাধরি করে, ভুলতে পারিনা বয়স
মনে করতে ইচ্ছা হয় সেই গা-জ্বালা দৃষ্টি
তুমি কি সম্মত তাতে???
বোঝাতে পারিনা নিজেকে......

তোমার কাকিমা পোড়ামুখী নাম দিয়েছেন
আমি তো গা পেতে নিয়েছি এ উপাধি
কজনেরই আর এমন ভাগ্য হয় বলো
কপালের লাল এক ঝটকায় কেমন
ভস্ম হয়ে যাই
অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাই রজনীগন্ধা
সান্তনা দিয়ে যায় পাড়া
মানুষ কে 'মানুষ' হতে বলে যেন.....

আজও জল ঢালি ওই কালো পাথরে
উপবাস হয় সবরকমেরই
কার জন্য জানিনা
যদি শেষ হয় উপবাস ক্ষনিকের তরে
অন্তত স্বপ্নেও.........
ক্ষমা কোরো তবে যদি ভ্রম হয় কভু....
ক্ষমা কোরো মোরে যদি ভ্রম হয় কভু.....



-পুন‍্যছেদে প্রিয়তমা কবি:-শুভম চক্রবর্ত্তী



প্রিয়তমা,
আজ বসন্তের উপস্থিতি বাতাসে,
আজ আমার তুমিহীন বসন্ত।
আজ বিবেক, আদর্শ জাগ্রত।
উদারতাও কম যায়না!
আজ আমার মনের নিঃস্ব স্থানে
প্রকৃতির, বাস্তবতার পরিপূর্ণতা।
আজ মনের সংকীর্ণতা গেছে লীনে।
আজ আমি স্বাধীন,
বাঁধনছাড়া পাখির ন‍্যয়।

আজও আমার বাড়িটা অগোছালো,
আমি সমাজ ও প্রকৃতি গোছাতে ব্যস্ত।
আমার হৃদয় প্রসারিত হচ্ছে,
তুমিহীন হৃদয় অনেক বড়ো।
তোমার ছোট ছোট ব‍্যথা
আর আমায় কষ্ট দেয়না।
আমার হৃদপূর্ণ আনন্দ আর আনন্দম।

আজ আমি সবার জন্য ভাবি
দেশের, দশের, সমাজের।
ভাবনাগুলো একঘর থেকে হয়েছে একপৃথিবী।
আজ আমি উপলব্ধি করেছি
তোমার না পাওয়াগুলো কতটা সংকীর্ণ।

এই প্রথম ভালো থাকতে শিখেছি,
শিখেছি প্রকৃত ভালোবাসাতে।
প্রেমহীন, আবেগহীন, নির্লিপ্ত অথচ
প্রকৃত ভালোবাসা।।

কবিতা বর্ণন.... শুভম চক্রবর্ত্তী



কবিতা তুমি কল্পনা না সৃষ্টি?
কবিতা তুমি বসন্ত না বৃষ্টি?
কবিতা তুমিকি হাসনুহানার গন্ধ?
কিংবা তুমি পলাশ রাঙা ছন্দ।
কবিতা তুমি বিদ্রোহী না প্রেমী?
ছন্দ মিলেছে গিয়েছে কখনো থেমে।
কবিতা তুমি উন্মাদ না শান্ত?
কখন তুমি মুক্ত কখন ব‍্যক্ত‌‌‌।
কবিতা তুমি কি বৃদ্ধ নাকি যৌবন?
নাকি কলম ঠেঙিয়ে প্রতিবাদে তুমি উদ‍্যম।
কবিতা তুমি বাচাল নাকি মৌন?
তুমি জোয়ার নাকি গৌন?
যদি হয় কলায় 'কলা' নির্মাণ
কবিতা তোমার থাকবে নিজ স্থান?

কবিতা এখনো বৃষ্টি বাদল হচ্ছে,
এখনো সংগ্রামে হাজার মানুষ মরছে।
এখনো নৈতিকতায় হানী,
এখনো মানুষ বেইমানি।
কবিতা এখন কলম হয়েছে ব‍্যস্ত
প্রকৃতি তার নিজের খেয়ালে চলে,
মানুষ এখন মৃত 'সুকান্ত'
কলম এখন শেখানো কথা বলে।
কবিতা এখন পৃথিবী চায়না তোমায়
কবিতা তুমি সৃষ্টির জীবাশ্ম,
কবিতা এখন কবিরা কর্পোরেট
ছন্দ এখন মৃত্যুতে বিষন্ন।

কবিতা এখন ভাবনা কি কথাবলে?
নাকি বিকৃতিতে আপনবেগে চলে।
কবিতা এখন প্রেমকি কাছে আসে?
নাকি অন্য কারোর যৌনতাতে ভাসে।
কবিতা তুমি কি পাচ্ছ খেতে?
নাকি বাবুরা সব তালা লাগায় গেটে।
কবিতা তুমি কি এখনো বিদ্রোহী?
নাকি সন্ত্রাসীদের বেত্রাঘাতে প্রতিবন্ধী।
কবিতা কলম ছেড়ে তুমিকি ধরেছো লাঠি?
নাকি বাবুরা সব তোমায় করেছে বন্দী।

কবিতা যদি আমারা তোমায় প‍্যানচ‍্যেটেতে ডাকি,
আসবে তুমি কবিদের হাতধরে?
নিভবে নাকি জলন্ত মোমবাতি,
পাবো জবাব সাদাখাতা ভোরে?
কবিতা তুমি বলছো তুমি জীবিত,
কিন্তু তোমার অস্তিত্ব গেছে মরে।
মানুষ এখন বিবেকহীন মৃত রাজা,
মেরুদণ্ড হীনতায় সমাজ গিয়েছে ভরে।
কবিতা তুমি এরকম জীবিত?
তবে দোহাই তোমার গ্রহন করো মৃত্যু।
আমি আজও আদর্শে বিশ্বাসী,
কবিতা তুমি তাহলে আমার শত্রু।

কবিতা তুমিকি করছো রাজনীতি?
মহাভারতের বিষাক্ত সেই ঢঙে।
তুমি এখন স্বাধীন নাকি বন্দি?
অদৃশ্য কোনো রাজনৈতিক রঙে।
কবিতা তুমিকি মানুষের অন্তরে?
নাকি পারার মোড়ের দেওয়ালের রঙ-তুলি।
এরা দেয় মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,
তুমিকি ওদের কোনো রঙচঙে বুলবুলি?
কবিতা দোহাই তোমায় ছেড়ে দাও রাজনীতি
ওরা চলে আপন আপন ছলে,
আজও বানায় মানুষকে ওরা হদ্দ
কবিতা ওরা সব মিথ্যেকথা বলে।

কবিতা, কবিরা এখন ভাব প্রকাশে ব‍্যর্থ,
কেউবা লেখে ছন্দে কিংবা আবেগ।
কেউবা বলে অসামাজিক পদ‍্য,
কটুক্তি আর মিথ্যা নানান ভাবে।
কবিতা অনেকে আবার অনুবাদে বিশ্বাসী,
কলম এখন ছেড়েছে নিজেসত্ত্ব।
বিদেশী লেখায় অনেক দাম আসে,
কবিরা এখন চোখ ট‍্যারাতেই মত্ত।
কবিতা তুমিকি শীতের দেশে আছো?
বেরোবে কবে শাল-মুড়ী খুলে।
একবার নাহয় হটাৎ উঠেবসো,
চশমা পরো হালকা হাই তুলে।

কবিতা তুমিকি আগের মতোই সত‍্য?
নাকি মেপে-ঝেপে মিথ্যে কথায় পোক্ত।
কবিতা আজও তোমায় বুঝিনি আমি,
তাইতো আমার কাছে আজও প্রশ্ন তুমি।
একটা কথা হালকা আবদারে
কিছু মানুষ আজও তুমি হীনতায় মরে।
কথা দাও তুমি রাখবে প্রতিশ্রুতি- 
ওদের হাত ধরে তুমি পৌঁছোবে আবার
সবার সবার সবার অন্তরে।।

শ্রমিকের দু-চার লাইন :শুভম চক্রবর্ত্তী




রক্ত হচ্ছে জল

ঘামে রক্ত লীন,

সত্য নিষ্ঠা হাতিয়ার

চতুরতা বিহীন।


নিত্য চলে অনটন

দুর্ভিক্ষের রেশ,

সুখের চিন্তা করার ভাবনা

চোখের জলে শেষ।


দিন সে অনেক বড়ো

যখন পেটে খরা,

আকাল যখন শ্রেষ্ঠস্থানে

সবাই দৃষ্টিহারা‌।


আবার সবাই দৃষ্টি পাবে

যদি পকেট ঝোলে,

দূরের লোক খবর নেবে

ঝগড়া ঝাটি ভুলে।


সমাজ এখন মিথ্যাখ‍্যেকো,

সহজ, সরল - পাগলাটে।

আইন কানুন বোকার পালন

শ্রেষ্ঠত্ব ওই ফাঁকটাতে।


বাবুরা বাবুই এই স্বাভাবিক

তুমি আমি মানুষ নই,

আমরা বানাই বাবুর গদি

লবাবীপনার সাক্ষী রই।


যুগান্তর সবকিছুতে

সকল জিনিস দামে পোড়ে,

আমরা পাই পূরান মজুরী

পূরান সিদ্ধ সবার উপরে।


সব স্বাভাবিক এবং সচল

পেটের কথা অন‍্য রকম,

বিষ-ই বোধহয় শেষ হাতিয়ার

জানিনা তার বাজার কেমন।


সর্বকালের চামড়া আমাদের

বাবুদের ওই জুতোরলেস,

পরিবর্তন সে মঙ্গলে হয়

আমাদের লড়াই লড়াইয়ে শেষ।।

দক্ষিণমেরু আর আমার বিক্ষত ব্যক্তিত্ব... অভিজিৎ দাসকর্মকার



কৃষিক্ষেত গুলি
আজন্মকাল কোলের কাছে
হলুদ রং মেখে সম্পৃক্ত হচ্ছে...

রাস্তার ধারে অপলক ফুটপাত-

অবশিষ্ট বৃষ্টিগুলো নদীর জলজকলার
দীর্ঘছায়ায়
তবুও
ভৈরবী গান করে তানপুরা আর
সংসারি আঙুল

নদীগর্ভ আর গেরস্ত শরীর
আক্রান্ত রিপু থেকে তুলে নেয়
গরিষ্ঠ সাধারণ গুনিতক

পড়ে থাকে
প্রাচীন অস্থিরতার প্রতিসৃত নাড়িটান

হে পরম পুরুষ
অন্ধকার ও দায়বদ্ধতা থেকে
সামনে দাঁড়িয়ে
    গোধূলির ক্লান্তি 
         দক্ষিণমেরু আর-
              আমার বিক্ষত ব্যক্তিত্ব...

সেই দিনটির মতো .... সুমিত মোদক



সকাল থেকে সেদিনের সেই তোমাকে
খুবই মনে পড়ছে আজ ;
সকাল থেকে ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি হয়ে চলেছে
সেদিনটির মতো ;
আমরা তখন খাজুরাহর মন্দির প্রাঙ্গণে ;
নির্জন এক মন্দিরে তুমি আর আমি ;
দলছুট হয়ে , আধভেজা হয়ে ,
অপরিচিত হয়েও কত সহজেই পরিচয় হয়ে গেলো ;
সেদিন তুমি শুনিয়ে ছিলে খাজুরাহর লোককথা ,
হাজার বছরের ইতিহাস  ;
আমি কোনদিন ইতিহাস বুঝিনি ;
বুঝিনি নিজেকে ;
অথচ , বুঝতে চেয়েছিলাম তোমাকে ;
তোমার না বলা  কথা গুলি . 
#
তারপর কখন যে আমরাই খাজুরাহর ভাস্কর্য হয়েগেছি ...
তুমি আমার সঙ্গে এখন সব সময় ;
অথচ ,  সেদিনটির মতো নেই আমরা :
চলো , আবার দুজনে বেরিয়ে পড়ি
এই সকালবেলায় , এই শ্রাবণে , সেই খাজুরাহরয় ...