নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কন্যাভ্রুণ,,, সাথী কয়াল




বাবা আমার "কন্যাভ্রুণ" বলছি,
তুমি মেয়ে চাওনি, তাই বাড়তে দেওয়া হয়নি আমাকে!
ফেলে গেছো নোংরা আবর্জনার মতো,
তবে আজ তুমি তোমার ছেলের পাঠানো বৃদ্ধাশ্রমে, --
                কেমন আছো বাবা?
আজ বুজতে পারছো কি আমার সেদিনের মনের বুকের যন্ত্রনা,
এক অস্ফুট সন্তান হারানোর ক্ষত .....!


          আশা করি ভালোই আছো,
বৃদ্ধাশ্রমের  ওই চার দেওয়ালের ঘেরা ঘরে,
অথবা ওই ভীষণ ফাঁকা নির্জন বারান্দায় ....

   তোমার স্মৃতিপটে ফেলে আসা কিছু অতীত,
       তোমাকে আজ বিদ্রুপ করে বুঝি?
জানো আমিও একটা নরম মায়ের কোল চেয়েছিলাম,
চেয়েছিলাম তোমার পরিচয়ে পরিচিত হতে.......

নির্জন স্মৃতি কাতর অথবা কিছু বিবেক বেদনা
এখন যখন তুমি নির্জন বারান্দাতে এসে দাঁড়াও --
 গোধূলির মনকেমনের আলোছায়ায় .......
 উপলব্ধি করেছো নিশ্চয়ই তোমার চোখে রোজ বৃষ্টি নামে,
দু হাত জড়ো করো তখন এক দমকা হাওয়ায় ----!
     তুমি রোজ ক্ষত - বিক্ষত হও!.........

     স্মৃতির ক্যানভাসের সব , সব যেন একগুচ্ছ বিভৎস রং,
  সবকিছু যেন এক বিভ্রান্ত মানবতার সংজ্ঞা মাত্র !
  এখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে পাশবিক কামনার ....
  তবে কেন এই খেদ , কার উপর শত অভিমান!
                      জানো বাবা,
আমি কন্যাভ্রুণ, আমিও একটা নরম মায়ের কোল চেয়েছিলাম!...

ছবিটা যে কয়না কথা ... মোঃ মিজানুর রহমান



দিন শেষে রাত আসে রাত পোহালেই দিন
হিসেব খাতায় শূন্য পাতা শোধ হলোনা
দিনের আলোয় এতটুকু ঋণ।
আলোর দেখা পাইনা দিনে
তাইতো বুকের পাঁজর ভাঙা ব্যথা,
চোখের জলে বুক ভেসে যায়
তবুও ছবিটা যে কয়না কথা।

আগুন জ্বলে আঁখি কোণে
দেখে রাতের খামখেয়ালী আঁধার,
তবে কি?
কিয়ামতের আলামত চোখের সামনে
সুন্দরও পৃথিবী আজই ছেড়ে যাবার।

চায় না যেতে একা ফিরে
সঙ্গী তবে কে?
বুকের পাঁজর ভেঙ্গে নিয়ে
আমায় গায়ে রক্ত মেখে নিঃস্ব করে দে।

সইবো কেমনে এমন কষ্টের সাগর
উথাল-পাতাল সাগরের বে-সামাল ঢেউ,
পাষান সূর্যের প্রখর তাপে দেহ অঙ্গার
বুঝলো না তা কেউ।

রোগে শোকে মান অভিমানে
জিদের বাড়ি ঘুনে পোকার ঘর,
এ যেন জগৎ সংসারের মাঝে
হঠাৎ বৃষ্টি কালবৈশাখী ঝড়।

তারা ভরা নিঝুম রাতে
বাড়ছে মনের ব্যথা,
চোখের জলে বুক ভেসে যায়
তবুও ছবিটা যে কয়না কথা।

ধুসর বকের দল , জয়তী দাস



  এসব লেখা ! সব জঞ্জাল -
  ছাইয়ের মতো কিছু সাদা ধুসর ছেঁড়া কথা।

  মাঝেমাঝে অসহ্য গরমে তেঁতেওঠে অসহায় -
  তেঁতুলের মতো তিতিয়ে রাখে হলুদ থালা,

  সব ছুঁড়ে দিই শূন্যে, পুকুরে -
  কেউ নেয়না, উন্মাদ কথাদের--

  এভাবে বকের মতো ফিরতে পারিনা বাসায় !
  এভাবে একা থাকতে পারিনা নিরবে ঘরদাওয়ায়-

  এত জঞ্জালে পুড়তে কতটা আগুন আর বিষাদ লাগে !
  প্রেম নেই মরু- শিলা থেকে কঠিনতর শিলায়-

  এতবার পণ ভেঙে আমাকে লিখিয়ে নেয়--

  

অরণ্য,,, চিত্তরঞ্জন গিরি


অন্তঃসলিলা ফল্গুধারায় তোমার স্নেহের পদ্ম রেনু ত্যাগের মহিমায় অপার
আধুনিকতার বিষ গতিশীলতায় যখন মাঠ ঘাট ফুসফুস ক্ষয়ে ক্ষয়ে  যায়
তখনই তো তোমার"" ভিনি ভিডি ভিসি"" নবদ্বীপের চৈতন্যময়  প্রেমের অভিসার ।

হেনেছি কুঠার ।প্রবাহমান কালে  বিজ্ঞানের অট্টহাস্য উদ্ধত জয়জয়কার !
সমুদ্র মন্থনের সব গরল শুষে নিয়ে সব সময় তো নীলকন্ঠ হয়ে যাও
প্রাণীর প্রাণ সত্তাকে শাশ্বত করার অঙ্গীকারে কত সহজেই নিজের হাতটি বাড়িয়ে দাও
 কার্বন মনোক্সাইড ও থোরিয়াম বিষবাষ্পের আঘাতে যখন পার্থিব ও প্রাণ সঞ্চার বিঘ্নিত হয়
তখনই তো পরিবেশের উপাদানে ভারসাম্য এনে ধীরে ধীরে বাস্তুতন্ত্রের উপকরণ সাজাও

পাখিদের নীড় শান্তির কুজন মাধবীলতা আর কনক মঞ্জুরী
গুন গুন করে যমুনার নৃপশাখে বারবার বলে উঠ আমি  তোমার ই, আমি তোমাদের ই!
প্রেমের ও প্রানের কত লাবণ্য রেখাএঁকে এঁকে যাও
গোদাবরী আমাজন কঙ্গোর তীরে
মধুকর ও মাধুকরীর বনজ্যোৎস্নায় হিমেল হাওয়া উত্তল হয় বাণী গরান শাল পাইনের সমীরে
বাতায়ন খুলে দাও , নদীর তীরে পথঘাট প্রান্তরে ,শাশ্বত প্রাণের আহব্বানে, অমরাবতী এঁকে।
কোয়েলিয়ার গান ,শ্যাম বাঁশরীর গুনগুন সুর ,সবুজ শ্যামলিমায় জেগে উঠুক, পত্র মঞ্জরীর পল্লবীত সুখে।

আয়ুরেখার আত্মচরিত.. নয়নাভ বিশ্বাস



আয়ু রেখা দ্বিখন্ডিত। সন্ধ্যাবেলায় পথে আমি,
গাড়ির আলো পড়লে চোখে, অচেতনেই থামি।

শ্যাম পার্কের উল্টোদিকের মোড়ের মাথায় চায়ের দোকান,
ট্যাক্সিওয়ালার মুঠোফোনে বাজতে থাকে বব ডিলান।

ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাড়ে চুমুক দিই আর ভাবি,
আকাশের ঐ চাঁদটা আজ কিঅপরূপআর মায়াবী!

অনেক কথা লিখব ভাবি, অনেককিছু লিখেও ফেলি,
ঘাের কাটলে ব্যাকস্পেসে সবটা গিলে, সামনে চলি।

বন্ধুরা সব ব্যস্ত মানুষ, জীবন নামের যুদ্ধে শামিল।
আমিও সামিল আমার মতো, মনের মানুষ বড়ই অমিল।

শহর জোড়া ত্রিফলা আলােয় ক্লান্ত আমি, এ পথ চলি,
লােডশেডিং। চাঁদের আলােয় স্নাত আমার শহরতলি।

শ্রান্ত আমি, পা চলেনা। একটা যদি রিকশা পাই....
আয়ু রেখা দ্বিখন্ডিত। কপাল আমার পাথরচাপা'ই৷৷

চাতক. .. শ্যামল কুমার রায়



         তপ্ত দাবদাহে দগ্ধ ধরণী
         তরুছায়ার খোঁজ কম করেনি।
         স্বস্তি মেলা খুবই দুষ্কর
         রুজিরুটির জন্যে সবাই তৎপর।
         অবলা জীব অসহায় বড়
         শীতলতা শুধু কেন খুঁজে মর।
         বৈভবের আশ্রয় শীতল ঘরেতে,গাড়িতে
         ফকিরের দেখা মেলে মাটিতে, ছায়াতে।
         বৃষ্টির জন্যে চাতক সবাই
         আমীর, গরীবতে কোনো ভেদাভেদ নাই।
         তপ্ত ধরণী শীতল অবশেষে
         বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চারিত আকাশে।
         শীতল বারিধারা নামল শেষে
         ধরণীর মলিনতা মুছল নিমেষে।