মৌসুমী রায়
40b,Dr Sundari Mohan Avenue
Kolkata-700014
সাক্ষাৎকার :
১:-আপনার কাছে কবিতা কি ?
উত্তর: কবিতা আমার বেঁচে থাকার উৎস,জীবনের সব রং এর মাধ্যমেই পাই।আমার সুখ দুঃখ হাসি কান্না এর সাথেই জড়িয়ে।
২:- আপনার প্রিয় কবি কে ?আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ?
উত্তর: প্রিয় কবি বলতে প্রথমেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তারপর নির্মলেন্দু গুণ। আমার অনুপ্রেরণা আমার বন্ধুরা যারা প্রতিদিন আমায় নতুন ভাবে নতুন লেখায় উৎসাহ দেয়।
৩:- কেন লেখেন আপনি কবিতা ?
উত্তরঃ আমার একাকীত্বের সাথি কবিতা,কবিতার মাধ্যমে আমার না বলা কথারা প্রকাশিত হয়।
৪:-আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্য গ্রন্থের নাম (প্রকাশিত/ অপ্রকাশিত)
উত্তরঃ আমার প্রথম কবিতার বই "কষ্টেই সুখী"
৫:- কবিতা/কবি সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ ?
উত্তরঃ কবির লেখা এমন হওয়া দরকার, যেখানে পাঠক নিজের না বলতে পারা কথা খুঁজে পাবে। একাত্ব হতে পারবে কবি ও কবিতার সাথে।
৬:- ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যে জগতে কতখানি গুরুত্ব রাখে ?
উত্তর: গুরুত্বের কথা বলতে পারিনা কিন্তু এটা মানি যে ফেসবুকের মাধ্যমে পাঠকের কাছে পৌছানো অনেক সহজ।
৭.ছাপা ম্যাগজিন ও ব্লগ ম্যাগজিন বা ওয়েব ম্যাগজিনের মধ্যে কার বেশি গুরুত্ব ? এবং কেন ?
উত্তরঃ অবশ্যই ছাপা ম্যাগাজিনের ।ছাপা ম্যাগাজিন মানে আমার লেখা একটা ছাপা অক্ষরে থাকছে ,পাঠককে পড়তে হলে সেই লেখা কিনে পড়তে হবে ,অর্থাৎ লেখাটার একটা মূল্য থাকছে ,অপর দিকে ব্লগ বা ওয়েব ম্যাগাজিন এর গুরুত্বও আছে ,অনেক লেখা একসঙ্গে পাওয়া যায় ,সহজে পড়া যায় ওহ কিনতে হয় না । একসময় আসবে যেদিন খাতা কলম থাকবেন না ,সেই সময় এই ব্লগ গুলোই তো থাকবে ।হয়তো এখন নয় ,হয়তো কয়েক শতাব্দী পর ।
৮. আজ কাল অনেক কবি জন্ম নিচ্ছে ,কেউ বা প্রেমে আঘাত খেয়ে ,কেউ বা ব্যর্থতায় আবার কেউ কবি হবে কবিতা লিখছে , কিন্তু যখন লেখা ছাপাতে চাইছে টাকার অভাবে বই করতে পারছে না ,বা করলেও বই বিক্রি হচ্ছে না , মানুষের এই বই বিমুক হওয়ার কারণ কি ? বইয়ের অভিমুখে আনতে গেলে কি করা উচিৎ বলে আপনার মনে হয় ?
উত্তর: আসলে মানুষ আস্তে আস্তে বিনোদন এর যে বিষয় বা মাধ্যমে কেই বুঝে উঠতে পারছে না ,যে কোন জিনিসটা তাকে বেশি আনন্দ দেবে ।যেমন ধরুন ফেসবুক বা ইউটিউব এ কিছুক্ষন সময় কাটানোর পরই মনে হচ্ছে না। ,আর ভালো লাগছে না ,এই যে ভালো না লাগাটা জন্ম কিন্তু এই ইন্টারনেট ।আসল মানুষ এখন সব কিছু হাতের মুঠোয় পেয়ে গেছে ,পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত দেখতে পাচ্ছে যেগুলো আমরা বই পড়েই আগে জানতাম ,বুঝতাম এবং কল্পনায় সেই ছবি আঁকতাম ,হয়তো বিভিন্ন জনের সেই কল্পনা আলাদা হতো ,কিন্তু একটা কল্পনা শক্তি ছিল ,একটা ভাবার শক্তি ছিল এখন সেই শক্তিকে পঙ্গু করে দিয়েছে ,আর এই জন্যই সবাই বই বিমুখ হয়ে গেছে ।
৯. উত্তরাধুনিক কবিতা বলতে কি বোঝেন ? অনেক জনই আজকাল কিছু কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে বলছে এটা উত্তরাধুনিক কবিতা , কিন্তু কবিতা পড়তে গেলে দাঁত ভাঙার উপক্রম কিংবা মাথার উপর দিয়ে চলে যায় সেক্ষত্রে আপনার কি মতামত ?
উত্তর: উত্তরাধুনিক কবিতা মানে এই নয় যে শুধু ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করলেই হবে ।উত্তরাধুনিক কবিতার একটা নির্দিষ্ট রীতি আছে ,একটা নির্দিষ্ট তাল ,ছন্দ । ধরা যাক পদ্য কবিতার ক্ষেত্রে ...আগে যেমন লেখা হত
" এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি,
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।"
এইখানে ভূরি ও চুরি ,একদম কাছাকাছি শব্দ দিয়ে মিল করেছেন
উত্তরাধুনিক কবিতার ক্ষেত্রে
"তুমি কিসের মহৎ ,তুমি কিসের উদার
সাপের কামড় খেয়ে মেটায় ক্ষুধা "
এখনকার মিল ,ছন্দ গুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন ,একটা আলাদা রীতি সম্মিলিত ।
কবিতা মানেই তো একটা ছান্দিক রীতিতে অনুরিত হওয়া কিছু অপ্রকাশিত শব্দমালার বহিঃপ্রকাশ ।
যা সহজে বুজে নেয় মনের আকুতি ,মনের গভীরতা।তাই কবিতা এরকমই হওয়া উচিত ,যা বোধগম্য ।
নদীর কথা
**********
নদীর কথা ভাবলে আমার
তোমায় মনে পড়ে...
আবছা বাদলদিনে বৃষ্টি ফোঁটায়
দুজন কূল হারিয়েছিলাম শরীর ঝড়ে।
আমার পাশে আজকে তোমায়
আর ঘন হয়ে বসতে দেখিনা...
নদীর বুকে আজো গভীর ছায়া পড়ে
খামখেয়ালেও তুমি কি আর ভালো বাসতে পারোনা?
নদীর ওপার থেকে আমায় কেউ
খুব আদর করে ডাকে...
আমার প্রাণের চিলতে আলো আসছে নিভে
আমায় কে আর আটকে রাখে।
কাঁচের স্বপ্ন
**********
তোর কারনে আঁচড় কাটি
জমাট বাঁধা অন্ধকারে
মনের ভিতর মনের রোপণ
কজনাই বা পারে...
তোর কারনে সিঁদুর কাঠি
খেলনাবাটি সব ছড়িয়ে ফেলা।
সাধ ছিলো শুধুই কাঁচের চুড়ির
তাও দিলিনা কত আসলো গেলো মেলা
তোর কারনে চোখের জলে
মাথার বালিশ ভিজে ঢোল..
একবার তোর আসল রূপটা দেখা
একবার মুখোশটা কে খোল।
চেষ্টা করেছি বহুভাবেই
তোর তালে পা মিলিয়ে চলার
বুকের খাঁচায় চাপ বাড়িয়ে...
ভেবেছি বাড়ুক পাপের ভার।
হৃদয়ের মন্থনে উঠতো জেগে
আমার প্রেমিক কূলছাড়া বৈরাগী
আরেকবার চল নাহয় অলীক স্বপ্নের..
বাঁধন কেটে গোটা চাঁদরাত জাগি।
বেরঙ জীবন
************
আটকুঠুরির যে কোন দুয়ার খুললেই..
তোমার মুখোমুখি চোখে চোখ রাখা
পলক ফেলতেই অন্ধকার
অভিব্যক্তিহীন হৃদয় স্থির শূন্যে ফেরারি বলাকা।
বিবশ বিবেক অবশ মন্ত্রে
ঘর সামলানো আজ দায়
যখন থাকো ঘুমঘোরে প্রিয়,
জাগরণ তোমার বুকে হাঁটে কিসের ছলনায়।
আটকুঠুরির যে কোন দুয়ার খুললেই
প্রিয় তোমাকেই পাওয়া যায়..
ছায়া ঘেরা চোখ খুঁজে ফেরে মন
রামধনু রঙ হারিয়ে আজ সাদা কালো জীবন।
সাক্ষাৎকারে :জ্যোতির্ময় রায় (কার্যকরী সম্পাদক)
সাপের কামড় খেয়ে মেটায় ক্ষুধা "
এখনকার মিল ,ছন্দ গুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন ,একটা আলাদা রীতি সম্মিলিত ।
কবিতা মানেই তো একটা ছান্দিক রীতিতে অনুরিত হওয়া কিছু অপ্রকাশিত শব্দমালার বহিঃপ্রকাশ ।
যা সহজে বুজে নেয় মনের আকুতি ,মনের গভীরতা।তাই কবিতা এরকমই হওয়া উচিত ,যা বোধগম্য ।
১০. গদ্য কবিতা ও গদ্য-পদ্য কবিতা কি ? গদ্য কবিতায় কি ছন্দ বা নির্দিষ্ট তাল থাকার প্রয়োজন নেই ?
উত্তরঃ গদ্য কবিতা মানে গদ্য নয় কিন্তু কবিতা যার একটা নিদির্ষ্ট তাল থাকে ,একটা ছন্দ থাকে ।
গদ্য পদ্য কবিতা বলতে একটা গদ্য কবিতার একটা নির্দিষ্ট পদ্য রীতি ।
কিছু কবিতা :
তাসেরঘর
********
ভুল করে যদি মাঝরাতে
তোমার নাম ধরে ডাকি
তুমি কি বেঁধে নেবে মায়ার বাঁধনে...
না আবারো দিয়ে যাবে ফাঁকি?
ইচ্ছে মতো গড়ে নেবো
তোমার আমার তাসের ঘর
যা খুশি তাই বলুক লোকে, বাইরেটাকে...
বদলে দিয়ে রাখব তোমায় বুকের ভিতর।
মনখারাপের সাজিটাতে ভরে রাখি
আমার না বলা সব সুখ
মেঘের আঁচলে রাখব ঢেকে চড়া রোদে...
আমার ভালোবাসার মুখ।
জীবন মানে তোকেই বুঝি
আমার মনে অবৈধতার অসুখ
তোর ছোঁয়াতে ব্যাকুল থাকি...
তোর হাসিতে দূর হয়ে যায় আমার যত দুখ।
দূরত্ব
*****
লাল মাটির কাঁকড় বিছানো স্টেশনে
দাঁড়িয়ে মনে হলো কত জায়গায়
যাওয়ার ছিলো তোমার সাথে
হোলোনা আর কোথাও যাওয়া।
অনেক ভিড়ের মাঝে
সবচেয়ে কাছের মানুষের
মুখটা মিশে গেলেই ভয় হয়...
হয়তো আর কোনদিন তাকে
হবেনা কাছে পাওয়া।
এখন গোধূলি নেই দিগন্তে ঢলেছে দিন
সন্ধ্যার আকাশপাত্রে টলোমলো রঙ...
পাখিরা বাসায় ফেরে সাথে
আপাদমস্তক অভিমানে মুড়ে,
আমিও ফেরার পথে আবারো তুমিহীন।
**********
নদীর কথা ভাবলে আমার
তোমায় মনে পড়ে...
আবছা বাদলদিনে বৃষ্টি ফোঁটায়
দুজন কূল হারিয়েছিলাম শরীর ঝড়ে।
আমার পাশে আজকে তোমায়
আর ঘন হয়ে বসতে দেখিনা...
নদীর বুকে আজো গভীর ছায়া পড়ে
খামখেয়ালেও তুমি কি আর ভালো বাসতে পারোনা?
নদীর ওপার থেকে আমায় কেউ
খুব আদর করে ডাকে...
আমার প্রাণের চিলতে আলো আসছে নিভে
আমায় কে আর আটকে রাখে।
কাঁচের স্বপ্ন
**********
তোর কারনে আঁচড় কাটি
জমাট বাঁধা অন্ধকারে
মনের ভিতর মনের রোপণ
কজনাই বা পারে...
তোর কারনে সিঁদুর কাঠি
খেলনাবাটি সব ছড়িয়ে ফেলা।
সাধ ছিলো শুধুই কাঁচের চুড়ির
তাও দিলিনা কত আসলো গেলো মেলা
তোর কারনে চোখের জলে
মাথার বালিশ ভিজে ঢোল..
একবার তোর আসল রূপটা দেখা
একবার মুখোশটা কে খোল।
চেষ্টা করেছি বহুভাবেই
তোর তালে পা মিলিয়ে চলার
বুকের খাঁচায় চাপ বাড়িয়ে...
ভেবেছি বাড়ুক পাপের ভার।
হৃদয়ের মন্থনে উঠতো জেগে
আমার প্রেমিক কূলছাড়া বৈরাগী
আরেকবার চল নাহয় অলীক স্বপ্নের..
বাঁধন কেটে গোটা চাঁদরাত জাগি।
বেরঙ জীবন
************
আটকুঠুরির যে কোন দুয়ার খুললেই..
তোমার মুখোমুখি চোখে চোখ রাখা
পলক ফেলতেই অন্ধকার
অভিব্যক্তিহীন হৃদয় স্থির শূন্যে ফেরারি বলাকা।
বিবশ বিবেক অবশ মন্ত্রে
ঘর সামলানো আজ দায়
যখন থাকো ঘুমঘোরে প্রিয়,
জাগরণ তোমার বুকে হাঁটে কিসের ছলনায়।
আটকুঠুরির যে কোন দুয়ার খুললেই
প্রিয় তোমাকেই পাওয়া যায়..
ছায়া ঘেরা চোখ খুঁজে ফেরে মন
রামধনু রঙ হারিয়ে আজ সাদা কালো জীবন।
সাক্ষাৎকারে :জ্যোতির্ময় রায় (কার্যকরী সম্পাদক)