নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

মেঘ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মেঘ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মায়িশা তাসনিম ইসলাম





গোলাপ চক্র



গ্রীষ্মের অভিধান মুখস্ত করে আসা ভালোবাসা
        বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে আবৃত্তি করে
                    শরতের আসন্ন মৃত্যু!
বজ্রের আঁকাবাঁকা সরু দাঁত
          আকাশে নিয়তির অট্টহাসি!
জল-করুনায় ভিজে থাকা পথে
     কিছু ম্যানহোলের জিভ হয়ত খুঁজবে        
                      নোনাজলের স্বাদ!

শরীরের স্পর্শগুলো ধুঁয়ে দিতে চাইবেন
          বৃষ্টির যিঁনি রক্ষণশীল স্রষ্টা...
পা থেকে মাথা অবধি সজল চাবুকের বাড়ি!
     হে শ্রাবণ, তুমি তাঁকে বলে দাও
তাঁর ক্ষমতা তিঁনি নিজেই করেছেন সসীম,
অদ্ভুত মেঘ-প্রচ্ছদে কামার্ত প্রেমের অন্য বরষায়।
শ্রাবণের এই অবাধ ধারায় ভিজবে না কোনোদিন
    স্পর্শধারায় রচিত মস্তিষ্কের সংবিধান।

এক একটা ধারার উন্মোচনে,
     ইতিহাসের নির্লজ্জতা এসে দাঁড়িয়ে যায়!
ভালোবাসার রাষ্ট্রে বসে
     ঐতিহাসিক মহাশ্মশানের আয়োজন!
চামড়ার কাফন উলটে পালটে দেখে, 
     ভাগ্যচিতায় সাজানো শরীর ছাই বানায় ধর্মের পাপ!

দিক বেঁকে যাওয়া নদীস্রোতের অনীহায়
                    ছাইগুলো থেকে ফুটে ওঠে 
                               প্রথম দিনের গোলাপ!
শুরু হয় আরো একবার
           প্রণয়ের বিনিদ্র নেশায় 
             পেলব রাত্রিগুলোর অবগাহন!
কিন্তু কোন এক শ্রাবণদিনে
     সেই গোলাপ আবারো শুয়ে পড়ে 
                               ভাগ্যচিতার আসনে!
এভাবেই জন্ম-জন্মান্তর পুড়তে থাকে 
    রক্ত-লালের
           আজন্ম পুরাণ।

তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়




মেঘের পাড়ায় 


সেদিন যখন হাত বাড়িয়ে ডাকল আকাশ,
আমি তখন পা বাড়ালাম মেঘের পাড়ায়।
এক সাদা মেঘ অমনি দেখি পাল তুলেছে,
আমিও তাকে পাঠিয়ে দিলাম তোর ঠিকানায়।
মেঘদূত ওই মেঘটা তখন তোকে ছুঁলো।
আবার সে ফিরে এল তোর ইশারায়।
তখন দেখি মেঘের মনেও মেঘ জমেছে।
বললো আমায়- তুই ভুলেছিস আমার কথা।
এমনি করেই দূরে গেলে সবাই ভোলে,
আয় মেঘ আয় লুকিয়ে রাখি মনের ব্যথা।
আমার আর মেঘের চোখে তখন  শুধুই জলের ধারা,
ঝাপসা মনে সোঁদামাটির গন্ধমাখা নক্সিকাঁথা।।

সুদীপ ঘোষাল





মেঘ 


মাটিমাখা মেঠো মেয়ে তুমি বৃষ্টি মাখো
মায়ের ঐশ্বরিক পরশের মত তোমার হৃদয়
বেলি ফুলের সুগন্ধে ছুটে আসা অবোধ বালিকা
পলকহীন নয়নে কাজ ভুলে যায়...



বৃষ্টি ফসল ফলিয়ে ভরে উঠুক
আরও প্রাণ আরও আলো
ভালোবাসা ছড়িয়ে  ছুটে চলে আঁধার পেরিয়ে...

কাজী জুবেরী মোস্তাক






ওরা ভুলে গেছে 



মাঝে মাঝে ওরা বেমালুম ভুলে যায়
এ বাংলা কোন ব্রিটিশ কলোনী নয় ,
নয়কো জারজ পাকিস্থানী কলোনী ৷

মাঝে মাঝে ওরা বেমালুম ভুলে যায়
যে,আমার টাকাতে ওরা বেতন পায় ,
খেতে পায় আমার ফলানো ফসলে ৷

মাঝে মাঝে ওরা বেমালুম ভুলে যায়
যে,আমার ভোটে ওরা ক্ষমতায় যায় ,
অথচ আমার উপরেই ছড়ি ঘোরায় ৷

মাঝে মাঝে ওরা বেমালুম ভুলে যায়
এই দেশ কোন স্বৈরতান্ত্রিক দেশ নয় ,
এদেশ স্বাধীন সার্বভৌম একটা দেশ ৷

মাঝে মাঝে ওরা হাতে হাতও মেলায়
আবার বুকে জড়িয়ে নেয় অবলীলায় ,
আহ্ কি সুনিপুন ওদের সে অভিনয় ৷

আমার মাথাতেই কাঁঠাল ভেঙে খায় 
তাকেও আবার শূলে চরায় নির্দিধায় ,
হাতে মেলানো হাতটা সাতবার ধোয় ৷

মাঝে মাঝে ওরা অতীতটা ভুলে যায় 
শেকড়কে ভুলেই শিখড়ে উঠতে চায় ,
দেশকেও বাঁশের খাঁচা বানিয়ে ছাড়ে ৷

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র






মেঘ বন্দনা
 

প্রতিবার এসেছ তুমি,
অপলক দৃষ্টিতে চেয়েছ আমার পানে।
আমি খোলা আকাশের নীচে
অপেক্ষারত তোমার আহ্বানে।
তোমার সিক্ত পরশে
আমি ভিজেছি সর্বক্ষণ।
তুমি আগামীর কামনায়
ভিজিয়েছ গর্ভবতীর ওষ্ঠ।

তোমার পানে চেয়ে শুস্ক ধানের ক্ষেত অপেক্ষায়,
ফসলের কামনায় চাষি করজোড়ে প্রার্থনায়।
তোমার আগমনে ঘোষিত হয় জীবন,
বৃষ্টি তোমার গর্ভধারিণী অমুল্য সন্তান।

হে প্রাণময়ী মেঘরাজী,
তোমার গর্ভজাত সন্তান ফিরুক
মৃতপ্রায় মাতৃভুমির শুস্ক বক্ষদ্বয়ে।
তোমার গর্জনে প্রাণ পাক মেঠো ক্ষেত।
তোমার হৃদয়বীণার সপ্তসুরে
     বেজে উঠুক করমের গান।

মহাজিস মণ্ডল




জলছবি 


                       
একা একা ভেঙে যাচ্ছি রোজ
একটা হলুদ আকাশে উড়ে যাচ্ছে একটা পাখি
ঠিকানাবিহীন চিঠির মতো


কোত্থাও কোনও অস্থিরতা নেই
পুকুরের জলের মতো স্থির হয়ে আছে সমস্ত রঙ
কাচের আয়নায় ও কার মুখ দেখি


রবাবর আঁকতে হলে জলছবি
অবয়বে ধরতে হয় তার সমস্ত রূপ
যেভাবে আকাশ ধরে রাখে বুকে আস্ত একটা চাঁদ।

অষ্টপদ মালিক


স্বচ্ছ ভারত 


রাস্তাঘাটে ময়লা ফেলে কি মজা পাই
রোগ জীবানু ধরবে যখন পালাবার পথ নাই !
স্বচ্ছ ভারত গড়ব এসো
দূর হবে সব মনের ক্লেশ-ও
বাঁচার মতো বাঁচতে হলে সুস্থ সমাজ চাই ।



প্রত্যয়

মাথায় হাত রেখে যে কথা বলেছিলে
আজ সে কথা রাখতে পারবে না জানি
দিন বদলে সম্পর্কের সুতোয় টান
প্রত‍্যয়ের শিথিল শিকড় দৃশ‍্যমান ।

জিবেন্দু রাজবংশী




গরীব ঈদ 


আজ বিহানে যখন নামাজের সুর ভাইসে আস‍্যা
খড়ের ছাউনি দেয়া ঘরত করিম মিঞার লাশটা তখন ঝুলছে ।
তাঁর বেটা আর বিবি যখন ঈদের খুশিত মাতিবার কথা
 তখন করিমের নিথর লাশ আগা করি রাখে শোক পালনে ব্যস্ত
গেরামের বিবি তো সুর টানে টানে কাঁদে আর বলতে থাকে
"কেহ নাহি কেহ নাহি গরীবের জন্যে ফেরেস্তা কাঁথা মুড়ি দিছে রে বেটা"
"আগে জাইনবার পাইলে মোর কানের দুল বেইচা ঈদ মানাইতু।"
"হে আল্লাহ তুই বড় নিঠুর "
১২ বছর বয়সী করিম মিঞার বেটা 
বাপের বুকের মাথা রাখে হায় রে কি কান্না
"বাজান তুই কই গেল, তুই কই গেল বাজান"
বাজান মুই তোর ঠেনা কিছুই চাহনি"
এমন দিনত মইলে করিম কেউই নাই
আখন আছে খালি একটা নিথর লাশ আর দুখান শোকাতুর মানুষ।
শেষ কাজ করিবার মতন মাইনষের যে বড় অভাব
গরীব মাইনষক কে নিয়ে যাবে গোরস্থান?
করিম মিঞা কি আর মরিবার চাহিছিলো বেটা আর ফুটুফুটে বিবিক ছাইরে।
কিন্তুক সেই কবে থেকে করিম বেটা আর বিবিক ঈদে নয়য়া কাপড় দিতে চায়
সেই একটা ছিড়া শাড়ি আর বেটাটা একখান ছিড়া শার্ট পরে বেড়ায়
দিলে না দিলে না বড়লোক মোল্লারা করিমক  বাইচবার দিলে না।
খুটরিত জইমে থয়া টাকা সব নিছিল কাইহরে।
কাপড় দিবা না পারার দুঃখে করিম মিঞা মইরে গেল্।
কিন্তু তাঁর বেটা আর বিবি তো কাপড় চাহিনী,
শুধু মাইগেছিলো কমদামী গরীব ভালোবাসা। 
সেটা করিম মিঞা বুইজবা না পায়ে গরীবের দায়ে মইরে গেল্।।

     


হিজল গাছের ছায়া 
******************




কলেজ থেকে সামান্য দূরে চার পা হেটেই একটা ছোটো জমির পাশেই পুকুর ধারে একটি বেশ ছায়া প্রদানকারী হিজল গাছ। নিরিবিলি জন-মানবহীন একটা জায়গা চুটিয়ে প্রেম করা যায়।
সাগর একজন  দ্বিতীয় বর্ষের কলেজে পড়া ছেলে ভালোবেসেছিলো তারই বান্ধবী নদী কে। সেতো সাগর নয় যেন জলের প্রাচুর্যের মতো কবিতার অসীম ভান্ডার । আর নদী যেমন প্রতিদিন বয় তেমনি প্রায় কেঁদে ফেলত মেয়েটা সাগরের কবিতা শুনে। অবশ্য একথা অনস্বীকার্য যে নদী কিন্তু সাগরের কবিতা শুনে নিজের আবেগকে থামতে না পেরেই তার প্রেমে পড়েছিলো।ওই যে কলেজের প্রথম দিন সাগর ক্লাশে সেই কবিতাটা শুনিয়েছিল না রবীন্দ্র নাথের "হঠাৎ দেখা"।এভাবেই তো ওদের রিলেশনটা শুরু। সম্পকের্র প্রথম দিন সাগর ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিল নদী কে সেই ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় হিজল গাছের নিচে।হিজল গাছের নিচে বসে ভালোবাসার পৃথম দিনেই সাগর নদীকে শুনিয়ে ছিল জয় গোস্বামীর কবিতা '"ঈশ্বর ও প্রেমীকের সংলাপ"
               — ‘সে যদি তোমাকে অগ্নিতে ফেলে মারে?’
:বিনা চেষ্টায় মরে যাব একেবারে
— ‘সে যদি তোমাকে মেঘে দেয় উত্থান?’
:বৃষ্টিতে, আমি বৃষ্টিতে খানখান
— ‘সে যদি তোমাকে পিষে করে ধুলোবালি?’
:পথ থেকে পথে উড়ে উড়ে যাব খালি
— ‘উড়বে?– আচ্ছা, ছিঁড়ে দেয় যদি পাখা?’
:পড়তে পড়তে ধরে নেব ওর শাখা
— ‘যদি শাখা থেকে নীচে ফেলে দেয় তোকে?’
:কী আর করব? জড়িয়ে ধরব ওকেই
বলো কী বলব, আদালত, কিছু বলবে কি এরপরও?
— ‘যাও, আজীবন অশান্তি ভোগ করো!’........""
            নদীর দু-চোখ ভোরে জল এসেছিল আবেশে। দূরের ওই মাঠের স্নিগ্ধ বাতাস, হিজল গাছের শীতল ছায়া সব কিছু যেন দারুন ভাবে আলোড়িত করেছিলো নদীকে।আর তক্ষুনি নদী জলস্রোতের মতো কলকল শব্দে বলেছিল - "আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি সাগর খুব"। প্রথমদিনের কাটানোর দারুন অম্ল-মধুর আমেজ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল দুজনই।
           সম্পর্কের ১বছর হলো যেদিন ,সেদিন সাগর নীল পাঞ্জাবি আর নদী গোলাপি শাড়ী পরে এসেছিল।দুজনে বসে কথা বার্তা চলছে এমন সময় হঠাৎ করে আনমনা হয়ে সাগর আওড়াতে খাকে জীবনানন্দ দাশের "বনলতা সেন"
                "..........হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি.......
           আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন..."
এই একবছরে কত যে কবিতা শুনিয়েছে  সে নদীকে একমাত্র হিজল গাছটি ছাড়া কেউ জানে না।  এই তো কবে যেন ঠিক মনে পড়ছে না সেদিন সাগর Robert Browning এর .."Meeting at Night" কবিতাটা নদীর চোখে চোখ রেখে বলেছিলো।
      ".....and a voice less loud,though its joys and fears,
             Than the two hearts beating each to each!"
কবিতা যখন থামল নদী তখন বিভৎ্স মায়া নিয়ে সাগরের দিকে চেয়েছিল।একদিন সাগর নদীকে বলেছিলো যে তাকে সে বিশ্ব কবিতা দিবসে এক গুচ্ছ কবিতা শোনাবে।২১শে মার্চ কথা মতোই এসে নদী সাগরের অপেক্ষায় বসে ছিল হিজল গাছের নিচে।কিছুক্ষন পর ফোন আসে নদীর কাছে।ফোনের ওপার থেকে জানান দেয় সাগরের একসিডেন্ট হয়েছে।
                     (৭ দিন পর)
সাদা কাপড় পরে একটা মেয়ে গাছের নিচে বসে আছে।মুখটি এখন তার দারুন মায়া,দেখলেই যেন কান্না পাবে। চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে।আর বিড়বিড় করে একরাশ কবিতা হেসে হেসে শুনিয়ে যাচ্ছে কাকে যেন? আর অস্থির আশা নিয়ে সাগরকে জিজ্ঞেস করছে 'ভালো হচ্ছে তো?' কিন্তু শুনবে কে তার কবিতা?সাগর ? সেতো বেঁচে নেই। যে কবিতার কোনো শ্রোতা নেই,আবৃতি শুনে বাহবা দেবার কেউ নেই।সেই কবিতা আবৃত্তি শুনে কে তাকে উত্তর দেবে যে ভালো না খারাপ হয়েছে।এভাবেই প্রতিদিন দিশাহীন নদী যার সামনে একরাশ কবিতা আওড়িয়ে যাচ্ছে সে এক স্থির শান্ত শীতল হিজল গাছের ছায়া । হ্যাঁ হিজল গাছের ছায়া।

"কোনও একদিন ফিরে এসো,যে কোন
একদিন যেদিন খুশি....
.....
আমি খুব বেশী চাইছি বলে
আমি চাইলে কখনও তুমি না দিয়ে
থাকোনি।(তসলিমা নাসরিন)।। 


          ~~সমাপ্ত~~

জয়দীপ রায়


মেঘপক্ষ 


ঘন কালো আবছায়া
লুকিয়ে আছে কার্নিশ ধেয়ে
এক প্রেয়সীর কায়া
কালো ওই দুরবীন রেখা
বর্ডার দিয়ে...
একটা পুরুষ এঁকেছি
ধ্রুবের বুকে
তীর ধনুক ওয়ালা
মানুষটার বদলে ওকে
খাড়া করব
পাশের সিংহাসনে
যোনি আঁকবে
প্রসবস্থলে জন্ম নেবে বিকেল
আরেকটা বৃষ্টি পক্ষে। 
                                 

জয়শ্রী রায় মৈত্র


   ওরে ও মেঘ  



ওরে ও মেঘ 
তুই এত চঞ্চল ?
ভোর হতে না হতে এক কালো শামিয়ানায়
ঢেকে ফেলেছিস আকাশের রঙ,

বিশাল কালো ওড়না উড়িয়ে
দু’হাতের বন্ধনে খিড়কি পেরিয়ে
এ কোথায় নিয়ে এলি ?
বিশাল অজানা সফরে,

ঝমাঝম ঝুম ঝুম তালে
জুড়িয়ে গেল সারা শরীর
একমুঠো উত্তেজনার উল্লাসে
হারিয়ে দিলি মন ?,  

আজ কি তুই শান্ত হলি ?
প্রেমাসিক্ত আলিঙ্গন লেপনে
“হারিয়ে যাবার নেই মানা”-য় 
বর্ষণ মুখর ভালোবাসার আঙিনায় ।।

সন্দীপ ভট্টাচার্য



       আমি'র কাহিনী 



         
একটা অনুপস্থিতি 
ধাওয়া করে রাত দিন সময় অসময়
স্বপ্নের মতো দীর্ঘ আকাশের মতো বিস্তীর্ন
তাড়া করে ট্রাম বাস রেস্তোঁরা বিছানায়

একটা ঢেউ দুলিয়ে দেয় মন অজান্তে
রক্তাক্ত "আমি" খোঁজে একটা ঠিকানা
ক্লান্ত কেরানি ঘামের বাষ্পে গুমোট মেঘ
মনখারাপি রেলিঙে অপেক্ষা বৃষ্টিঘ্রাণ

আপাত রঙীন আচ্ছাদনে নাগরিক ধুকপুক
দূরত্ব দীর্ঘতর ক্রমশঃ চাওয়া পাওয়ার
হারাচ্ছে কেউ একটু একটু করে সামাজিকতায়
সময় কোথায় ঝড়া পাতার গল্প শোনার

আসলে জ্বলতে থাকা অহরহ
আর জ্বলে পুড়ে ছাই হওয়ার অপেক্ষা
মাঝে কিছু মিথ্যা মনের রঙে বানানো 
আর বাকিটা নির্বাসিত সেই আমি'র কাহিনী

অনোজ ব্যানার্জী


   এসো কালবৈশাখী



   ‎
ঐ ডাকছে গুরগুর,ভয়ে বুক দূরদূর কাঁপে,
‎নীলাকাশে জমছে কালোমেঘ,
‎আলো কাঁদে, আঁধারের দাপে। 
‎কী ভয়ংকর, কী দুর্বার, কালো কালো
‎মেঘের মিছিল।পাগলী প্রকৃতির,
‎অসহ্য খেয়ালে,ভয়ে সবে...
‎ঘরে আঁটে খিল। ক্ষুব্ধ প্রকৃতিরাণী,
‎সেজেছে আজ, এ কোন রণে???
‎লেগে যাবে হানা্হানি,দাপাদাপি,
‎গাছেগাছে বনেবনে। আকাশ মাটিতে
‎নিবিড় মাখামাখি,বিজলীদীপ্ত
‎লিপ্ত চুম্বনে।ঝরে পড়ে প্রেমের সুধা,
‎অবিরত ধারাবরিষনে।এলোমেলো
‎কুন্তলরাশি,বড়ো বড়ো লাল লাল
‎আঁখি।এসো ঝনঝন প্রলয়নৃত্যে,
এসো ‎,এসো প্রিয় কালবৈশাখী।
ধুয়ে দাও,মুছে দাও,করো সাফ,
আছে যত জমা জঞ্জাল।....
যত পাপ,যত তাপ,করো হরণ,
হে মহাকাল।
ভেঙে দাও, দাও করে তছনছ, 
অন্যায় অত্যাচারী  যত গাছ....
ডালপালা, ফুলফল তার।করো
ধ্বংস গভীর জলের মাছ।
এসো টর্ণেডো,এসো টাইফূন,
পাপের প্রাসাদ দাও গুড়িয়ে,
এসো বজ্র,এসো বিদ্যুৎ, পাপাচারী
চিত্ত,দাও পুড়িয়ে।ধনীদের অবহেলা,
অহংকারে,ঢালো জল,আরো  জল,।
বঞ্চিত বুকে তৃষিত মুখে,দাও জল,
ঝরঝর,শান্তির কলকল।নতুন প্রাতে,
নতুন সূর্যালোকে এই ধরণী করো,
উদ্ভাসিত।এসো এসো কালবৈশাখী,
নব মনেপ্রাণে, সবারে করো উল্লসিত।

শরীফ সাথী


শ্রমিক 
*******


বিশ্ব মাঝে ঘুরে পিছু
ধনী গরীব উঁচু নিচু
সাজানো তাঁর ক্রমিক,
যে যারে যার ধর্ম করি
যে যেখানে কর্ম করি
কেউ কারো কেউ শ্রমিক ৷
হয়না কিছুর সমতুল্য
গায়ের ঘামের ন্যায্য মূল্য
জাগ্রত হোক বোধের,
ঘাম শুকানোর আগে ভাগে
যেন সবার মনে জাগে
মূল্য পরিশোধের ৷

শুভদীপ পাপলু






মিসিং লিঙ্ক ও এক আহত পদার্পণ
******************************



ফের দারিদ্রসীমা দূর করছো সেলুলয়েডের পর্দায়, 
অথবা মধ্যরাতে শর্করা মিশ্রিত ব্যর্থ অ্যানাইহিলিনে
বা উপনিষদের ব্লাড রিপোর্টে সর্বভুক সাইবেরিয়ায়
কিংবা সাপলুডো খেলার অনিষিক্ত কথোপকথনে?

গঙ্গাবক্ষেই সবেমাত্র উত্থিত এ বুর্জোয়া কবির ঘাম
এ মুক্তমঞ্চ সাজালো কেবল শ্রাবস্তী'র কারুকাজ
কোন গ্রন্থি'তে সাপুড়ে বাজায় নায়িকার বদনাম, 
এ কোন সার্কাসে অতিথি তুমি?মহারাজাধিরাজ!

শ্রাবণধারা অস্তাচলে,চলে মস্তানি ফিল্মি দুনিয়াতে, 
কিপারের হাতে গ্লাভস্ নেই,তবু তিনি নাকি আছেন
তিনিই আজও ঘুষ খেয়ে যান সৃষ্টির বীজ বুনতে, 
অভিজ্ঞতার পাপ ঘোচাতে শিশুর রক্ত মোছেন!

আঁধার ঘনিয়ে চশমার ফাঁকে নরমেধ ব্রিজ তুলি
কোথায় জওয়ান,কে আগুয়ান,কোন পথে সভ্যতা
শক্তিহীনা কর্ম করে,ধর্মঘটে-আঁতকে ওঠে বুলবুলি
কুমির কাঁদলে আজও দেখি রঙ মাখে কলকাতা।

এ পাঞ্চজন্য তোমার নয়,ওনার রণসাজ...
এ কোন সার্কাসে জোকার তুমি?মহারাজাধিরাজ!