নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কলাবউ :শক্তি পুরকাইত


গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে মেয়েটা   কলাবউ স্নান করানো দেখতে  গিয়েছিল ।

আর ফেরেনি
 ফিরে আসে নি ।

 কলাবউ দেখতে গিয়ে
 নিজেই কলাবউ হয়ে গেছে
  কখন জানতে পারেনি ।

 জানতে পারেনি , ওর নিজের বাবা-মা ,আত্মীয় স্বজন ।

শহর থেকে এসেছিল
     গ্রামের পুজোতে
      গ্রামের বাড়িতে ।

তবুও দূর থেকে এখনও
শোনা যায় , ঢ্যাম-কুড়া-কুড়
   ঢাকের বাদ্যি ।

মাতৃ আরাধোনা
 ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা ।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ

মেয়েটা শাড়ি পরতে জানত না
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
 শাড়ি পরা শিখেছিল ।

 জীবনের প্রথম ঘোমটা টানতে গিয়ে
লজ্জা পেয়েছিল
ভীষণ , লজ্জা !

মেয়েটা শহর থেকে গ্রামে এসেছিল
মা দুগ্গাকে দেখবে বলে ।

পাড়ার বোখাটে কয়েকটা ছেলে
পিছু নিয়েছিল মেয়েটার
  জানতে পারেনি ।

সুযোগ বুঝে কখন মুখে হাত চাপা দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছিল
পাশের ধানজমির ভিতর ।

ছুড়ে ফেলেছিল শাড়ি , ব্লাউজ
নগ্ন করে ধর্ষিত করেছিল
মেয়েটাকে ।

পায়ের আলতা ধুয়ে যাচ্ছিল
দেবীবোধনের , দেবীবিসর্জনের ।

মেয়েটা , কলাবউ স্নান করানো দেখতে গিয়ে নিজেই কলাবউ হয়ে গেল কেউ জানতে পারল না ।

শহর থেকে এসেছিল মেয়েটা ।

শরৎকাল: অনোজ ব্যানার্জি



বর্ষারাণী নিলো বিদায়,এলো শরৎকাল,,
বৃষ্টিজলে পূর্ণ এখন,নদী, পুকুর খাল।
সবুজ ঘাসের ডগায় ডগায় শিশিরকণা
 হাসে। বাদল,বৃষ্টি, ঝড়,গরম,গুমোট ,বন্যা,
 হয়তো নেবেই ছুটি। গুটিগুটি পায়ে আসে
 ওই স্নিগ্ধ শীতলবুড়ি। পূজোর সুগন্ধ ভাসে,
 আকাশেবাতাসে।মুক্তো ঝরে, মাটির পরে,,
 শিশিরকণার বেশে,দুর্বাদলে,ঘাসেদের ঘরে।

দুর্বাদলের হীরের ছটায়,চোখ করে ঝলমল,
মরুর বালি হিংসে করে,আঁটছে কত ছল।
অসুরেরা চায়না ভালো,মন্দ শুধুই চায়।
অন্যকে দুঃখ দিয়ে ওরা নিজে মজা পায়।

কাশফুলেরা মিছিল করে নদীর দুটি পাড়ে,
সবুজ গাছের মধুর শোভায়,মন যায় ভরে।।
প্রকৃতি মা উঠছে সেজে,আগমনীর আশে।
ডাকছে মাকে,,দুর্গামাকে,,পূজোর গন্ধ ভাসে।
নতুন কাপড় কিনছে সবে,মনের আনন্দে।
শিউলিফুলের সুগন্ধে  হৃদয় পূর্ণ ছন্দে।
 **-**********

পাগলা নিতাই: কৌশিক গাঙ্গুলি


চারপাশে ধূলো , বালি মাখা পৃথিবীতে ইশ্বরের মতন মাটিতে বসে আছে পাগলা নিতাই । দু চারটে অবশিষ্ট গাছে কাকেরা কর্কশ কন্ঠে গালি দিচ্ছে সব সফলতাকে ।  চায়ের দোকানে বাতেলাবাজেরা প্রচুর জ্ঞান বেলাচ্ছে বোকা ও পাঁকাদের উদ্দেশ্যে ।  মাখন মাখা সুন্দরীরা ব্যাপক সেজে গেস্টহাউসে সেক্স বিক্রি করছে কামুক দু নম্বরীদের ।  বেপরোয়া গাড়ি ছুটে যাচ্ছে বেখাপ্পা রাস্তা দিয়ে । দেশকে রক্ষা করেও মধ্যবিত্তের পেটে লাথি পড়ছে । ভবিষ্যত না ভেবে দেদার জল নষ্ট করছে ক্যালানে পাবলিক । হারিয়ে যাচ্ছে বিবেক বোধ আর মনুষ্যত্ব ।বলো হরিবোল ধ্বনিতে মুখরিত আকাশ বাতাস ।

পরিক্রমণ : শ্যামল কুমার রায়।



জীবনের পরিক্রমণ অ্যাত অদ্ভুত,সর্পিল!
ভাবায়, ভীষণ ভাবে ভাবায়।
এই সেদিনও যা ছিল আগুন রঙা ফুল
আজ তাই আগুনের লেলিহান শিখা।
আবার জ্বলে,পুড়ে ছাই হওয়া জীবন
ঠিক,ঠিক যেন ফিনিক্স পাখি।
শেষ! সব শেষ! শেষের পরেও শুরু।
      ------------------------

আবাহন-৩ : কিশলয় গু প্ত


মাটির প্রলেপ দিস না বুকে মা
খড়ের বাঁধন চাই না
রক্তে মাংসে আসবি যদি আয়
হাজার আলো শুকনো মুখে মা
চড়াই। উতড়াই না
প্রতিদিন চোখ স্বপ্নটা পাল্টায়।

চন্ডীপাঠে পাকদন্ডীই থাক-
গন্ডী কাটা ঘর
রাস্তায় তোর খুব বেশী দরকার
ঠাকুরদালান শূণ্যই চমকাক
নাচুক বছর ভর
তুই ঠিক কর কে কার সরকার।

মাটি লাগুক পায়েরই আলতায়
নজরে আন সন্দেহ
আমাদের সামনে বিশাল খাদ
আয় মা- এবার অস্ত্র হাতে আয়
তুলে রাখ অপত্য স্নেহ
চেখে দ্যাখ বদরক্তের স্বাদ।

   
                 
                              

তোমার আবক্ষমূর্তি :শাহীন রায়হান


পানাম নগরে ঈঁশা খাঁর রাজধানী ডিঙিয়ে
প্রিয়তম কামাগ্নি নদী বার বার ফিরে আসো
পালক ঝরা ভাঙা হৃদয়ে পঞ্চ মোহনায়।
.
তোমার প্রেমময় গোপন চত্ত্বরে কামনায় জেগে থাকা
সূঁচালো কাঁটাতার উড়ন্ত পাখির ডানায় একাকি ছুঁয়ে ছুঁয়ে
কুসুমিত জোড়া নিতম্বে আজও নগ্ন স্বপ্ন আঁকে।
সোঁদা গন্ধে অনন্ত ঝর্ণার অন্তহীন রিনিঝিনি শুনে
প্রতীক্ষার গ্রীবায় জাগা ফাল্গুনী রূপালী চাঁদ
পুরুষত্বের সুখে উষ্ণতায় গলে গলে যায়।
.
কামনা মেঘের প্রার্থণায় তখনও শুধুই তুমি
হৃদয় চত্ত্বরে দাগ কাটা অভিমানী নিশি কন্যা
কতোদিন তোমাকে নিয়ে জীর্ণ ছাদের চিলেকোঠায়
পুরনো টেপরেকর্ডারে সুরের মাতম তুলি না-
গড়িনা তোমার পতিত অন্দরে রক্তস্রোত পেরিয়ে
তোমার আবক্ষমূর্তি-