কবি পরিচিতিঃ
নামঃ কাজী জুবেরী মোস্তাক
জন্মঃ ১৯৮৩ সালের ২১এ সেপ্টেম্বর ।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ বি,এ পাস ।
পারিবারিক জীবনঃ পিতামাতা ও ছোট এক ভাই পিতা ছিলেন একজন সরকারী কর্মচারী ও একজন সংগীত শিক্ষক , মা পুরোপুরি গৃহিণী ৷
স্ত্রী এক পুত্র এবং এক কণ্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক জীবন ।
পেশায় একজন সরকারী চাকুরীজীবি
সাহিত্য কর্মঃ ১৯৯৮ সাল থেকেই অনিয়মিত ভাবে লেখালেখির সাথে জড়িত ।
দৈনিক পত্রিকা , সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন এবং বিভিন্ন সাময়িকী ম্যাগাজিনে বিভিন্ন সময় কবিতা ও ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে ৷ এখন পর্যন্ত কোন একক বই প্রকাশিত হয়নি তবে বিভিন্ন সময়ে যৌথ কাব্যগ্রন্থেই লেখা প্রকাশ হয়েছে যেমনঃ
শতকের স্বপ্ন প্রাপ্তি
ভোরের পাখি
শততারা
হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু
বিশ্ব সাহিত্য ও কবিতা সম্ভার
শখঃ পড়া ও লেখা, আড্ডা, ভ্রমণ ।
সাক্ষাৎকার
***********
১:- আপনার কাছে কবিতা কি ?
উত্তর :- কবিতা আমার কাছে একটা অস্ত্র যে অস্ত্র দিয়ে মানুষের রক্তে আগুন জ্বালানো সম্ভব, সম্ভব জলন্ত দাবানল নিভিয়ে ফেলা ৷
২:- আপনার প্রিয় কবি কে ? আপনার অনুপ্রেরণা কে বা কি ?
উত্তর:- আমার প্রিয় কবি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ৷
আমার বিবেক এবং দ্বায়বদ্ধতাই আমার অনুপ্রেরণা ৷
আমার বিবেক এবং দ্বায়বদ্ধতাই আমার অনুপ্রেরণা ৷
৩:- কেন লেখেন আপনি কবিতা ?
উত্তর:- কবিতা লিখি জেগে ঘুমিয়ে থাকা মানুষ গুলোকে সজাগ করার জন্য ৷
৪:- আপনার প্রথম কবিতার নাম ও কাব্য গ্রন্থের নাম (প্রকাশিত/ অপ্রকাশিত)
উত্তর:- আমার প্রথম কবিতার নাম " শহীদ মিনারের গল্প "
কবিতাটা লেখার ৮ বছর পরে শতকের স্বপ্ন প্রাপ্তি নামক বইয়ে কবিতাটি স্থান পায় বইটি যৌথ ছিলো ৷
কবিতাটা লেখার ৮ বছর পরে শতকের স্বপ্ন প্রাপ্তি নামক বইয়ে কবিতাটি স্থান পায় বইটি যৌথ ছিলো ৷
৫:- কবিতা/কবি সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ ?
উত্তর:- কবি বা কবিতার সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক হওয়া উচিত অক্সিজেন এবং কার্বনডাই অক্সাইডের মতো কবি বা কবিতা ছাড়বে পাঠক গ্রহণ করবে আবার পাঠক ছাড়বে কবি বা কবিতা বেঁচে থাকবে ৷
৬:- ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যে জগতে কতখানি গুরুত্ব রাখে ?
উত্তর:- মানুষ এখন আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হতে শিখেছে , প্রযুক্তির এই যুগে ফেসবুকিয় কবিতা বা সাহিত্য বাংলা সাহিত্য জগৎকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে বা করা শুরু করে দিয়েছে ৷ তবে হ্যাঁ ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা অনেক গ্রুপ আছে যেগুলো সাহিত্য জগৎকে কলঙ্কিত করতে পারে ৷
৭:-ছাপা ম্যাগজিন ও ব্লগ ম্যাগজিন বা ওয়েব ম্যাগজিনের মধ্যে কার বেশি গুরুত্ব ? এবং কেন ?
উত্তর:-তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে মানুষ ছাপা ম্যাগাজিন এর চাইতে ব্লগ বা ওয়েব ম্যাগাজিনের দিকে ঝুঁকছে ৷ আমি মনে করি প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ব্লগ বা ওয়েব ম্যাগাজিনের গুরুত্বটাই বেশি ৷
৮:-আজ কাল অনেক কবি জন্ম নিচ্ছে ,কেউ বা প্রেমে আঘাত খেয়ে ,কেউ বা ব্যর্থতায় আবার কেউ কবি হবে কবিতা লিখছে , কিন্তু যখন লেখা ছাপাতে চাইছে টাকার অভাবে বই করতে পারছে না ,বা করলেও বই বিক্রি হচ্ছে না , মানুষের এই বই বিমুক হওয়ার কারণ কি ? বইয়ের অভিমুখে আনতে গেলে কি করা উচিৎ বলে আপনার মনে হয় ?
উত্তর:- ভালো বই বা ভালো লেখার পাঠক নেই তা না পাঠক প্রচুর আছে ৷ তবে মূল সমস্যা হলো প্রত্যেকেই নিজেকে কবি বলে দাবি করি ঠিকই কিন্তু পাঠক কি চায় তা তারা জানেনা বা বোঝেনা ৷ একজন পাঠকের চাহিদা যদি কবি বা সাহিত্যিক বুঝতে পারে তবে অবশ্যই পাঠক বই পড়বে ৷
প্রকাশকরা এখন প্রতিভার মূল্যায়ন করেনা তারা চিন্তা করে একজন নতুন লেখকের বই কেনো একজন পাঠক পড়বে? যদি না পড়ে তার লগ্নিকৃত অর্থ জলে চলে যাবে ৷
একজন প্রকাশককে অবশ্যই আগে বিচারিকজ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে সঠিক পান্ডুলিপি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তবেই পাঠকের চাহিদা মাফিক লেখা পাঠক পড়তে পাড়বে এবং বই মুখি হবে ৷
প্রকাশকরা এখন প্রতিভার মূল্যায়ন করেনা তারা চিন্তা করে একজন নতুন লেখকের বই কেনো একজন পাঠক পড়বে? যদি না পড়ে তার লগ্নিকৃত অর্থ জলে চলে যাবে ৷
একজন প্রকাশককে অবশ্যই আগে বিচারিকজ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে সঠিক পান্ডুলিপি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তবেই পাঠকের চাহিদা মাফিক লেখা পাঠক পড়তে পাড়বে এবং বই মুখি হবে ৷
৯:-উত্তরাধুনিক কবিতা বলতে কি বোঝেন ? অনেক জনই আজকাল কিছু কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে বলছে এটা উত্তরাধুনিক কবিতা , কিন্তু কবিতা পড়তে গেলে দাঁত ভাঙার উপক্রম কিংবা মাথার উপর দিয়ে চলে যায় সেক্ষত্রে আপনার কি মতামত ?
উত্তর:-দাত ভাঙা গুটি কয়েক শব্দ জুড়ে দিলাম আর এটা উত্তরাধুনিক কবিতা হয়ে গেলো আমি অন্তত এটা মনে করিনা ৷
১০:- গদ্য কবিতা ও গদ্য-পদ্য কবিতা কি ? গদ্য কবিতায় কি ছন্দ বা নির্দিষ্ট তাল থাকার প্রয়োজন নেই ?
উত্তর:-গদ্য কবিতা নির্দিষ্ট বিষয়ের ভিত্তিতেই শুরু হয় এবং শেষ হয় ৷ তবে নির্দিষ্ট ছন্দ অবশ্যই থাকা প্রয়োজন ৷ আর গদ্য-পদ্য কবিতায় অবশ্যই তাল এবং ছন্দ জরুরী ৷
কিছু কবিতা
************
সব তন্ত্রের একই মন্ত্র
*******************
কানের ঠিক কিছুটা উপরে একটা পিস্তল তাক করা ,
সামনে সাজানো রয়েছে বিশাল এক পেটোয়া বাহিনী ,
পিছনেও পড়ে আছে রাজ্যের তামাম রক্ষি বাহিনী ;
কারনতো একটাই জনতাকে ওদের মতো
করতে না পারা ৷
গণতন্ত্র নামক এক দিল্লিকা লাড্ডু ঝুলিয়ে রাখা সামনে ,
একনায়কতন্ত্রকেও বৈধতা দিয়ে;নাম তার অাজ গণতন্ত্র ,
স্বার্বভৌমত্ব ভেবে ছিনিয়ে নিয়ে দেখি সেও এক ষড়যন্ত্র ,
সব তন্ত্রেরই ঠিক একই মন্ত্র যা জনতার
কাপর খোলে ৷
স্বৈরাতন্ত্রের নিয়মিত চলাচল আজকে আমার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে ,
স্বাধীনতা'তো হলো এক ট্রাম কার্ড তার জুয়ার টেবিলে বসে ,
সব তন্ত্রকেই দেখি দিনের শেষে স্বার্থতন্ত্রেই
গিয়ে মিশে ,
বাম ঘরামী স্বভাব আমার সেতো শুধুই আপন দম্ভে ৷
মৃত্যুদন্ডের দাবি
***************
আমি অমরত্ব নিতে আসিনি
আমি আমার মৃত্যুদন্ড নিতে এসেছি ,
আমি জানি এখনই আমাকে বন্দী করা হবে
শেকল পড়ানো হবে আমার উন্মুক্ত হাতে পায়ে ৷
আমি জানি আমি দেশদ্রোহী ,
তোমরা কতোটা দেশ দরদী বলবে ?
আমার টাকা চুরি করে গড়েছো অট্টালিকা
তাতেও আবার বসিয়েছো দেখি সিসি ক্যামেরা ৷
আমি জানি আমি সংখ্যালঘু ,
কারন বিদ্রোহী হয়ে জন্মায় খুব কম ,
আর যারা বিদ্রোহী লাশ থাকে তাদের ডোবা,নালায়
তাদের নিস্তব্ধ দেহতে শেয়াল শকুনেরাও মচ্ছোব চালায় ৷
আমি জানি আমি একা ,
কারন আমি কোন দুর্নীতিবাজ না ,
পেনশনের ফাইল আটকে হাত পেতে দিইনা
অথবা অন্যায়ের সাথে আমি আপোষহীন চলি তাই একা ৷
মধ্যরাতে আমার ছবি যাবে প্রেসে ,
আমার কন্ঠ রোধ করতে ক্রসফায়ার হবে ,
শিরোনামে থাকবে আমার মৃত্যু হয়েছে বন্দুক যুদ্ধে
আর পা চাটার দলেরা তখন চায়ে টোস্ট ভিজিয়ে খাবে ৷
আমি অধিকার চাইতে এসেছি ,
নির্যাতিত নিপীড়িতের কথা বলতে এসেছি ,
মনে রেখো আমাকে হত্যা করলেই সব শেষ হয়ে না !
১০মাস ১০দিন পরে আবারো অামার জন্ম হয় অন্য কোন গর্ভে ৷
আপন স্বার্থে দ্বন্দ
****************
অঘোষিত এক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি আজকে ,
প্রতিনিয়তই এক স্বার্থ যুদ্ধ চলছে পৃথিবীতে ,
ইরাক,প্যালেষ্টাইন আজও জ্বলছে সেই দ্বন্দে ,
কাশ্মীর আজও স্বার্থের দ্বন্দে রক্তা রক্তি খেলে ৷
তিব্বত আজও নিষিদ্ধ তাই অজানাই রয়ে গেছে
স্বার্থের দ্বন্দে আফগানীরা ঐ তালেবান হয়ে গেছে ,
সিরিয়াও তাই আপন গৃহেই আজও বন্দী পরে আছে ,
আর আই,এস,আই সেখানে করা পাহারায় বসে আছে ৷
শান্তির পতাকা হাতে স্বার্থপর ঐ ছুটছে দেশ বিদেশে ,
ধর্মের কথা বলে ঐ স্বার্থপরই আবার অধর্মের গান গাইছে ,
ওদের স্বার্থেই মানুষ আজ দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে
আপন স্বার্থে দেশে-দেশে সবাই যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে ৷
কখনোবা নিজের স্বার্থেই দ্বন্দে জড়িয়েছ তুমি আমাকে ,
আবার কখনো সে স্বার্থে যুদ্ধেই জড়িয়েছি আমি তোমাকে ৷
অস্ত্রের মুখে বিরোধীতা করবে বলো কার সাধ্য আছে?
তবুওতো কেউ না কেউ গর্জে উঠবে হয়তো সেটাও আপন স্বার্থে ৷
যেদিন তর্জনী উঠবে
******************
আমার পক্ষেও একদিন তর্জনী উঠবে
রাস্তার মোড়েও সেদিন পিকেটিং হবে ,
ছাত্র জনতা মিলে রাজপথ দখল নিবে
ঝড়ো স্লোগানে চারিদিক মুখরিত হবে ৷
আমার পক্ষেও একদিন কেউ দাঁড়াবে
কাঁধে কাঁধ রেখে প্রতিবাদী হয়ে উঠবে ,
ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে পাশে দাঁড়াবে
ন্যায়ের পক্ষে বুকটা টান করে দাঁড়াবে ৷
আমার পক্ষেও একদিন ওরাই লিখবে
যে কলম আজকে ভয়ে পকেটে আছে ,
সংবাদপত্র সেদিন আবারো সরব হবে
টিভি রিপোর্টাররাও ছুটে চলে আসবে ৷
আমার জন্যও কোন মা সিজদায় রবে
আবার কোন মা ঠাকুর ঘরে পড়ে রবে ,
কেউ রোজা রবে ,কেউবা রাখি বাঁধবে
জয়ীও হবো ওদেরই দোয়া আশির্বাদে ৷
একদিন ওরা ঠিক সংগ্রামী হয়ে যাবে
দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি জ্বলে উঠবে ,
অন্যায়ের প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে
নিজের অধিকারও আদায় করে নিবে ৷
যাচ্ছি কিন্তু যাচ্ছিনা
******************
তবে তাই হোক তোমাদেরই জয় হোক
আমার নাহয় ব্যারাকেই ফিরতে হোক
আমার জন্য দরকার নেই কোন শোক ৷
জয় হোক আজকে ওদেরই জয় হোক
যারা ভঙ্গুর সমাজে রক্তখেকো জোঁক
আমরা নাহয় হলাম আজ ছোটলোক ৷
বেঁচে থাকো তোমরা শতাব্দীর সমদিন
বিবেকের কাছেই থাক তোমাদের ঋণ
শতায়ু হোক তোমাদের বাঁচার এইদিন ৷
আজকে আমরা ব্যারাকে ফিরে যাবো
আমাদের যাই আছে জমা দিয়ে দেবো
দেশপ্রেম আর প্রতিজ্ঞাটা রেখে দেবো ৷
আজকের মতো হয়তোবা ফিরে যাবো
নতুন করে আবারও সব গুছিয়ে নেবো
ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে স্বপ্নটা সাজাবো ৷
কিছুই অবশিষ্ট নেই
*****************
এখানে আজ আর কিছুই চাওয়ার নেই
এক সুশৃঙ্খল সমাজ চাইতে গিয়ে দেখি !
সে সমাজ উশৃঙ্খলতার আগুনে পুড়ছে
অথচ সমাজপতিরা আলু পোড়া খাচ্ছে ৷
এখানে আজ আর কিছুই পাওয়ার নাই
সস্তায় আজ যা মেলে তা শুধুই উপদেশ ,
নয়তো নেতাজীদের মিথ্যে আশার বাণী
আর কৃত্তিমতায় ঝড়ানো চোখের পানি ৷
এখানে আজ স্বপ্ন দেখাই যেনো দুঃস্বপ্ন
ইচ্ছাগুলো গলাটিপে হত্যা করছি রোজ ,
স্বপ্নবাজদের স্বপ্ন প্রতিদিন হয় নিখোঁজ
আর ; সমাজপতিরা দেখায় মিছে দরদ ৷
এখানে আজ বেঁচে থাকাটাই বিলাসিতা
আর মৃত্যু সেতো আজ একেবারেই সস্তা ,
জীবন সাজাতেই জীবন আজকে মরিয়া
অথচ মৃত্যুকে রাখি বুকপকেটে ঢাকিয়া ৷
এখানে আজকে কেউই ইতিহাস ঘাঁটেনা
ক্ষমতা আর অর্থ দম্ভই যেনো মূল চেতনা
মগজেও লালন করে নোংড়া চিন্তা,ছলনা
অথচ ভাবটা তার ; সে ধোয়া তুলসিপাতা ৷
আমার চাওয়া
*************
বুক সেল্ফে বন্দী পড়ে থাকা গণতন্ত্র আমার চাইনা ,
যে গণতন্ত্রর মুখোশে স্বৈরাতন্ত্রর বাস তাকে চাইনা ,
বুক ফুলিয়ে যে গণতন্ত্রে কথা বলা যায় তাকে চাই ৷
পর্দার আড়ালে বিদ্রোহী কবিতা আবৃতি করবোনা ,
জনমঞ্চে দাঁড়িয়ে পাঠ করতে চাই বিদ্রোহী কবিতা ,
আজকে আমি আমার বাকস্বাধীনতার মুক্তি চাই ৷
রাজনীতির পকেটে বন্দী গণতন্ত্রকে অামার চাইনা ,
হাতে-পায়ে শেকল জড়ানো কথিত গণতন্ত্র চাইনা ,
মুক্ত বিহঙ্গের মতো সতন্ত্র হয়ে উড়ার গণতন্ত্র চাই ৷
যে সংবিধান স্বাধীনতার মুক্তি দেয়না তাকে চাইনা ,
যে সংবিধান রাজনেতার হয় জনতার না তা চাইনা ,
আমার সংবিধানে আমার জন্য বলার ক্ষমতা চাই ৷
যে আইন দূর্বলের না হয়ে সবলের হয় তাকে চাইনা ,
ক্ষমতা অার টাকায় বিক্রি হওয়ার আইনও চাইনা ,
আমার আইন সেতো ভরসা ও আস্থার হওয়া চাই ৷
আমার দূর্বলতাকে পূঁজি করে দুর্নীতি হতে দেবোনা
আমার ন্যায্য হিস্যায় অনিয়ম হবে তাও মানবোনা
দুর্নীতিহীন অধিকারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়া চাই ৷
আমি যা চাই
************
তোমাদের বাক্সবন্দী স্বাধীনতা আমি চাইনা
আমি শুধু মুক্ত হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে চাই ,
যে হাওয়ায় ভেসে বেড়াবে না বারুদের গন্ধ
অাবার ; পঁচা লাশের গন্ধও নাকে লাগবেনা ৷
অবচেতন মনের চেতনাবাদ আমার চাইনা ,
আমিতো শুধুই আমার আগামী ফেরত চাই ,
অনেক হয়েছে এবার এ ব্যবসা বন্ধ করো
বিশ্বাস করো ধোঁকাবাজি আর সহ্য হয়না ৷
নীতিহীনদের নীতিকথা আর শুনতে চাইনা
ওদের গালগল্প , ভন্ডামি আর কত সইবো ?
আমিতো শুধুই দূর্নীতিমুক্ত এক সমাজ চাই ,
নীতি আদর্শহীন ভাবে আমি বাঁচতে চাইনা ৷
আমি বাক প্রতিবন্ধী হয়েতো বাঁচতে চাইনা ,
আমিতো শুধু উচিত কথাগুলো বলতে চাই ,
আর চাই ; ন্যায্য পাওনা চাওয়ার ক্ষমতাকে
বলতে গেলে কণ্ঠ চেপে ধরবে তা মানবোনা ৷
পুরোনো শহরের স্মৃতি
********************
একদিন আমিও ছিলাম তোমার পুরোনো শহরে
আমারও বসতভিটা ছিলো তোমার পুরোনো সে
শহর জুড়ে ৷
ভালোবাসাময় এক যৌথ খামার ছিলো সেখানে ,
দুয়ার ছিলো ; ছিলো জানালা ভরা প্রিয় আকাশ
আর তুমি ছিলে ৷
আমার অপেক্ষাতেই বন্দী থাকতে ভেতর দুয়ারে
কখন ফিরবো আর কড়া নাড়বো খামারের সেই
বন্ধ দুয়ারে জোড়ে ৷
আজও স্বপ্ন দেখার স্বপ্নেরা আছে তোমার শহরে ,
শূন্যতা আর হতাশার যৌথ গ্রহণ চলছেই আজও
আমার শহর জুড়ে ৷
যে শহরে একদিন ছিলো ভালোবাসার মাদকতা
সে শহর আজকে ভালোবাসাহীন ; আছে শূন্যতা
আর ব্যার্থতা ৷
তোমার শহরে আজ জানালা ভরা প্রিয় আকাশ ,
আর আমার শহরে আজও পাওয়া না পাওয়ার
যন্ত্রনার বসবাস ৷
তোমার শহরে তুমি তোমার মতো ভালো থেকো ,
অামিও ভালো থাকার অভিনয়টা আমার মতো
শিখে নেবো
আমি তোমার দখলে
*******************
যতোই সময় যাচ্ছে
তোমার ওজন বেড়ে যাচ্ছে
তুমি জেকে বসছো এ অন্তরে ,
প্রতিনিয়ত তোমার বিস্তৃতি ঘটছে
তুমি দখল নিয়েছো এই অম্তরে ৷
যতোই সময় যাচ্ছে
তোমার আনাগোনা বেড়ে যাচ্ছে
ছায়ার মতো থাকছো আমার পাশে ,
আর তোমার বসতি গড়ে উঠছে
আমার এই ভাংগাচুরা অন্তর জুড়ে ৷
যতোই সময় যাচ্ছে
আমি হারিয়ে ফেলছি নিজেকে
তোমাকে দেখছি সারা সত্তা জুড়ে ,
নির্ভরশীল হচ্ছি তোমার উপরে
ঠিক পরজীবিদের মতো করে ৷
যতোই সময় যাচ্ছে
বেওয়ারিশ চর দখলের মতো করে
আমিও যাচ্ছি তোমার পূর্ণ দখলে ৷
সাক্ষাৎকারে : জ্যোতির্ময় রায়