নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

খিদে : ইসমাইল মোল্লা


দেশ  জুড়ে  লকডাউন  নভেল করোনা
বলছে  নাকি  ঘরেই  থাকো  বাইরে  যেও  না 
দোকানদানি  রাস্তাঘাটে  লোক  মেলা  ভার
আমার  ঘরে  যে  ধিকিধিকি   জ্বলছে  অনাহার 
আমার  ঘরের  বছর আটেক  শুনেছে  রাস্তায়
বাপের নাকি  কাজ   বন্ধ   ইঁটের  ভাটায়
মায়ের  মুখে  চাপা  ভয় 
চলবে কেমন করে
ঘরে  যে মোটে  দশটা  টাকা
খাবার এতে মেলে !
বউটা মোটে পাঁচমাস
 মাসি বলে  ভালো খাবার চাই
বাপের  সুগার  ভীষণ  চড়া
বলতো দেখি  টাকা কোথায় পাই ?
বলছে  লোকে  মাস্ক  পড়ো 
 হাত ছুঁয়োনা হাতে
 জ্বলা  পেটে  বলতো দেখি
 মাস্ক  বাবু কিসের কাজে আসে ?
আমায়  তবে  নিয়ে চলো  ওই বাবুদের কাছে
বলবো  বাবু  দুবেলা ভাত  দে  না ওরে খেতে 
না  পারলে  মানব না  যা
সব  বলব   মিছে
বলতে পারিস  খিদের চেয়ে 
কোথায়  বড়  মহামারী আছে ?

গোপাল ভাঁড় : পিনাকি কর্মকার



বাংলাদেশের রসের রাজা, কি নাম বল তাঁর?
সমস্বরে বললে সবাই, তিনি গোপাল ভাঁড়।

নাদুসনুদুস গোপাল বাবু, টাকে ভরা মাথা ।
পেটটা যেন বটের গুঁড়ি, লম্বে খানিক নাটা।

কৃষ্ণনগর রাজার দেশ ,সেথায় তাঁর নিবাস।
রাজামশায়ের প্রিয়পাত্র, লোকটি তিনি খাস।

রসের রসিক ছিলেন তিনি, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি তাঁর।
ধূর্ত গোপাল পেয়েছিলেন, রাজার সমাদর।

কৃষ্ণচন্দ্রের ভাগ্য ভালো, সঙ্গী এমন ব্যক্তি।
একা গোপাল বাড়িয়ে দিলেন, মহারাজের শক্তি।

যতই আসুক বিপদ আপদ, না থাক পাশে কেউ।
একাই একশ গোপাল ভাঁড়, সামলে দিতেন ঢেউ।

রসের রাজা গোপাল ভাঁড়, জন্ম নাপিত ঘরে।
হাস্যরসে মন মজিয়ে, বিখ্যাত দেশজুড়ে।।

স্পষ্টবক্তা ছিলেন তিনি, ছিলেন যুক্তিবাদী।
রাজার ভুলও ধরিয়ে দিতেন, পেলেন ভাঁড় উপাধি।

তাঁকে নিয়ে হাজার গল্প, মজার এবং ভালো।
ভূবনজুড়ে মজার ছলে, ছড়ায় জ্ঞানের আলো।

ছোট্ট বেলায় সব হারিয়ে, একা হলেন ভবে।
দুঃখ ব্যাথা লুকিয়ে রেখে, হাসিয়ে গেলেন সবে।

রসের রাজা জ্ঞানের রাজা, তিনিই গোপাল ভাঁড়।
ভূবনমাঝে যতই খোঁজ, তুলনা নেইকো তাঁর।

ডাউন ট্রেন কর্ড লাইন লোকাল: অভিজিৎ দাসকর্মকার



...আরও নিম্নগামী হোতে চায় চোখের দৃশ্য-জল। 

মন বলে বস্তুটির পাশে উনকোটি প্রত্নস্বাক্ষর_____

অক্ষরে অক্ষরে মননের আদর্শলিপি কথা বলে;  তবুও
আবশ্যিক কোন documents দেখতে পাচ্ছি না

জ্যোৎস্নার সময়সীমায় চাতক পাখিটি রংবদল করে।
     কালো।  বাদামি।  সাদা।
   
নির্ধারিত ভাবে আকাশ আর গিরগিটির পোশাক বদলে শীতকালের সকাল আর গ্রীষ্মের দুপুরে ডাহুক পাখি ডাকে। 

       সময়ক্ষণটির ছায়ার পিছনে আবদ্ধ হচ্ছি।

ডাকছে আর ভাঙছে শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঈষদুষ্ণ শরীরী কারু-কোষ ।

ও বলা হয় নি, আজ নিরুত্তাপ ছিলো স্টালিনের স্বেদনজল।

এবং
    ১টি ঘোষণায়
ডাউন ট্রেন কর্ড লাইন লোকাল ৩৩ মিনিট লেটে চলার খবরে
      গোটা পলাশ চত্তরের সরলরেখা জ্যামিতি বক্স হাতে ত্রিকোণমিতি করছে_____

মানবিক ভেদাভেদ : দেব জৈন



শহরের রাজনীতি, দেশের জাতি-ধর্ম,
গরিবের স্থান পদতলে, কে-আর বোঝে তাদের মর্ম!
ক্ষুধার জ্বালায় প্রাণ ঝরে, করতে হয় তাদের ভিক্ষা;
কেউবা আবার ঘাম ঝরিয়ে, চালায় ভাড়ার রিক্সা।
ছেঁড়া পকেটে জোটে না কিছু, পেট কাদাঁয় রাত-দিন;
সাহেবের নাকি দিন ভালো আজ, দেখেছে সে শালিক তিন।
খাবারের খোঁজে ট্রেনে-বাসে, বাচ্চারাও করে ভিক্ষা;
শিক্ষিত দেশের বিবেকহীন মানুষ, অভাব তাদের শিক্ষা।
খাবারে আজ নুনটা বেশি, সাহেবের মেজাজ হয়েছে ক্ষীণ;
রাতের বেলা ভাত জোটেনি! গরিব হালটাচ্ছে ডাসবিন।
স্বার্থের দুনিয়ায় কেই বা বোঝে, গরিবের পেটের জ্বালা;
জীবনের সুখ লকার ভর্তি, লেগেছে তাতে তালা।
সমাজ আজ অশিক্ষিত, করেছে ধনী-গরীবের ব্যবধান;
মিশেছে গায়ে লাল রক্ত‌ তা ধনী, গরীবের সমান।
বাড়ি-গাড়ি ধনদৌলত, ধনীর হাতে আছে যে রত্ন;
ছেড়াঁ জামা-কাপড়, ধুলো মাখা গায়ে, গরিবেরাও দেখে স্বপ্ন!

অপেক্ষায়: শুভম চক্রবর্ত্তী


ঐ যে দেখো হাঁটছে, রাস্তা মাঝে;
ঐ যে দেখো মানুষ রুপি সাজে।
হল্লা করে পাড়ার মোড়ে,
খিল্লি করে কাজে।

ঐ যে তোমার আগামী,
তুমি যেমন রেখেছো তাকে।
সাবধানতার আশ্রয়ে,
সুস্বাস্থ্য লুকিয়ে থাকে।

ঐ যে দেখো নিয়ম কানুন,
তোমার অনিচ্ছার আড়ালে।
বাঁচিয়ে দিচ্ছে তোমাকে ,
এ বিশ্ব ব্যাধির আকালে।

তাই আপামর একটা উপায়,
শান্ত হয়ে বসো ঘরে।
এই একঘেয়েমির অন্তরালে-
তোমার সু-ভবিষ্যৎ খেলা করে।

বেসরকারি ইংরেজির আদর : রাজা দেবরায়


তমন্নাঃ আর ভালো লাগেনা । এপ্রিলেই আবার নতুন সেশন । আবার নতুন একগাদা বই ! দাম কত পড়বে এবার কে জানে !

আদিত্যঃ বললাম সরকারী স্কুলেই ভর্তি করাও । শুনলে না তখন । নাও এবার ঠ্যালা সামলাও !

তমন্নাঃ কী করবো ! সবাই তো বলেছে যে প্রাইভেট ইংলিশ মিডিয়ামে না দিলে ভালো রেজাল্ট করতে পারবে না, জাতীয় প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না ইত্যাদি ইত্যাদি । আচ্ছা বই এত বেশি কেনো বলো তো ?

আদিত্যঃ বই বেশি হলেই তো তোমার মতো সবাই 'স্ট্যান্ডার্ড' স্কুল বলবে । ইংরেজী ভালো শিখতে পারবে বলবে । বলবে, 'স্মার্টনেস' আসবে তাড়াতাড়ি !

আসলে বই বেশী হলে মা-বাবার পক্ষে পড়ানো সম্ভব হবে না । অগত্যা প্রাইভেট টিউটর !! আর বই বেশী হলে স্কুলের 'আয়'ও বেশি হয় !

তাছাড়া বই বেশি হলে বাচ্চারা ছোটো বয়স থেকেই মুক্ত চিন্তা থেকে দূরে সরে থাকবে, তাতে 'অনেকের' অনেক কিছু 'লাভ' হয় এবং 'ভবিষ্যত'ও সুনিশ্চিত হয় !!!

তমন্নাঃ শেষ কথাগুলো কী বললে বুঝতে পারিনি । একদম মাথার ওপর দিয়ে চলে গেছে !

আদিত্যঃ বলেছি, চিন্তা করো সন্তানকে দার্শনিক বানাবে নাকি শুধুই 'দক্ষ শ্রমিক' !!