নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

দেবী : যীশু চক্রবর্তী




১.

আচমকাই আমার জানালা জুড়ে শরৎ,
                        লেভেলিং করে সাঁটিয়ে দেওয়া রোদ্দুর।
             বৃষ্টির সপাট চড়ে টলো-মলো পাহাড়।।

২.
নতুন সকালে প্লট হাতড়ে পাই বীরেন্দ্রকৃষ্ণকে,
     
নিংড়ে নেওয়া শৈশব সোল্ড-আউট।।
রোজনামচা কবিতারা কেনাকাটায় ব্যস্ত..



আমি তবে যাই দোজখের দরজায়,
                 মাটির ঢেলায় শেষ ফিনিশিং চলছে..

     জমজমাট চারদিনে ব্রাত্য ভিখিরি শিশু
মাকে বলি - "পৃথিবী সুখী হোক"।


৪.

 কফি-কাপে গরম আর শীতের স্যান্ডউইচ,
                    কুড়িয়ে পাওয়া একটা জীবন।। 

শেষ রাতে পথ আটকে দাঁড়ায়  ভেঙে যাওয়া প্রতিমা......

||মানুষ গড়ার স্বপ্নে||সুমিত মোদক






জোয়ার এলেই নদী শব্দ তোলে ছলাৎ ছলাৎ ,
ছলাৎ ছলাৎ ....
সে শব্দ নদী-চর ছুঁয়ে ছুঁয়ে উঠে আসে 
মাটির বাঁধ বরাবর ;
তার পর সে শব্দ ছড়িয়ে পড়ে ,
ঢুকে পড়ে লোকালয়ে ,
বুকের ভিতর ;



আমার বুকের ভিতরের নদীতে জোয়ার-ভাঁটা ,
ছলাৎ ছলাৎ শব্দ .....
সে নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারি জীবন-নৌকা ,
ভাটিয়ালি  , আগমনিগান ;



আমি এখন অষ্টাদশী ;
আমি এখন স্কুল পেরিয়ে কলেজে ;
আমার মননে সোঁদামাটির ঘ্রাণ ;
সুন্দরী-গড়ান-হেতালের ছায়া ;



আমার মা এখনও শাঁখা-সিঁদুর বন্ধক রাখে 
বনবিবি-দক্ষিণরায়ের কাছে ;
বাবা খাঁড়িপথে কাঁকড়া ধরতে গেলে ;
কত মানুষ যে বাঘের পেটে চলে গেল তার হিসাব নেই ;
হিসাব রাখেনা এ সুন্দরবন ;
কেবল হিসাব রাখে মা , 
বাবার বাড়ি ফেরার দিনের ;



বাবা বলেছে ----
তোকে মানুষ হতে হবে ,
একটা গোটা মানুষ , সম্পূর্ণ মানুষ  ;
আর গড়তে হবে হাজার হাজার মানুষ ;
যারা বাঁচাবে এই জল-জংলার দেশ ,
বাদাবনের কাদাজল ;




জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে বাবা কাঁকড়া ধরেই বাড়ি ফেরে ;
জীবন নিয়েই বাড়ি ফেরে ;
একটা জীবন একটা পরিবার ;
একটা জীবন একটা স্বপ্ন , মানুষ গড়ার স্বপ্ন ;
আমাকে মানুষ হতে হবে , 
গোটা একটা মানুষ ;
গোটা একটা দেশ , ভারতবর্ষ ;



বাবা গল্প শোনায় , গল্প ....
দিনের গল্প , রাতের গল্প ;
সে গল্প জুড়ে মাঝি , বহরদার , রাতের শব্দ ,
পায়ের ছাপ , মানুষখেকো ...
বাবার গল্পে জাগে গঙ্গারিডি সভ্যতা ;
গল্পে জাগে শেষ হয়ে আসা এ সভ্যতা ;
জলের নীচে ব-দ্বীপ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ;



গুরু মশায়ের পাঠশালায় কোনো দিন যায়নি বাবা ;
অথচ , প্রকৃতির পাঠশালায় পাঠ নিতে নিতে 
নিতে নিতে জেনে গেছে 
জলের স্তর বাড়ছে উষ্ণায়নের ফলে ;
শেষ হয়ে আসছে এ জঙ্গল ,
এ ব-দ্বীপ , এ জনপথ , এ সভ্যতা ;
বাঁচাতে হবে , 
বাঁচাতে হবে আমাকে , আমাদের ...



জোয়ার এলেই নদী শব্দ তোলে ছলাৎ ছলাৎ ,
ছলাৎ ছলাৎ .....
মাঠে মাঠে এখন কাশফুল ,
জলাভূমিতে রঙবেরঙের শালুক ,
উঠানের বেড়াতে জড়িয়ে ফুটে থাকা অপরাজিতা ,
আর দূর থেকে ভেসে আসা ঢাকের আওয়াজ 
জানিয়ে দেয় পূজা আসছে ;
আর ভিতর থেকে কে যেন বলে উঠছে ----
তং হি দুর্গে দশপ্রহরণ ধারিণী নমামি তাং....

।।ভগবতী।।অমিত কুমার জানা





দুই নাতির আবদারে দাদু (তপনবাবু)গল্প শুরু করলেন। তিনি বললেন, -"বুঝলি, বহু বছর আগে অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটতো। আজকের ভোরে তো মহালয়া, তো তোদের এই মহালয়া দুর্গাপূজা নিয়ে একটা গল্প বলছি শোন। 
আমার বয়স তখন তোদেরই মতো। আমাদের পাড়ার চার মেয়ে রিমি, মিমি ,সুমি আর ভগবতী একই ক্লাসে পড়াশোনা করতো। ভগবতীর গায়ের রং শ্যামলা হওয়ায় এবং দেখতে কুশ্রী হওয়ায় তাকে তিন বন্ধু দলে মেশাতে চাইতো না। সেইদিন ছিল মহালয়ার ভোর। বাড়ির দুয়ারে রেডিওতে মহিষাসুর মর্দিনী শুরু চলছে। আমি আর ওরা চারজন বসে বসে তা শুনছি।  ভগবতী বলে উঠলো যে সে দুর্গা সাজতে চায়। বাকি তিন বন্ধু নাক উঁচু করে তাকে অপমান করে বললো যে এমন কুৎসিত মেয়ে সে আবার দুর্গা সাজবে! ভগবতী কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে গেল।  হঠাৎ রেডিও থেকে তীক্ষ্ণ কন্ঠে ভগবতীর আওয়াজ শোনা গেল-" আমি ভগবতী,তোদেরকে আমি শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো।"
রেডিওর মধ্য থেকে এই ভয়ানক আওয়াজে সবাই আতঙ্কে চিৎকার করে ঘরে প্রবেশ করলো। সবাই দেখতে পেল ভগবতী তো ঘুমিয়ে আছে! প্রত্যেকে প্রত্যেকের মুখের দিকে তাকালো।
তারপর আবার এক অত্যাশ্চর্য কাণ্ড ঘটলো সপ্তমীর দিন। ঐ তিন বন্ধু মিলে ভগবতীকে না জানিয়েই পাড়ার দুর্গা প্রতিমা দেখতে এল। প্যান্ডেলের সামনে প্রচুর জনসমাগম। রিমি,মিমি এবং সুমির নিকটে হঠাৎ উপস্থিত হলো ভগবতী। সে প্রচণ্ড ক্ষোভে জ্বলে উঠে দেবীদুর্গার রুদ্রমূর্তি ধারণ করলো এবং চিৎকার করে বললো, " তোরা আমায় এত ঘৃণা করিস কেন?" তিন বান্ধবী অচৈতন্য হয়ে লুটিয়ে পড়লো। 
এমন সময় দাদুর ভাঙা রেডিওতে মহিষাসুর মর্দিনী শুরু হয়ে গেছে। হঠাৎ রেডিও থেকে ভগবতীর তীব্র কন্ঠ ধ্বনিত হলো  " বুড়ো তপন, আমি তো তোর একমাত্র বোন ছিলাম, দেখতে খারাপ বলে তুইও তো আমায় কোনদিন স্নেহ করিস নি।"
দাদু (তপনবাবু) জ্ঞান হারালেন।
              

।।আলোয় ভুবন ভরা।।প্রতিভা দে




আলো যখন আমার
রবি কবির কথায়,
আলোয় ভুবন নিশার স্বপন,
আলো জগৎ ভরা,
আলোয় আলোয় 
স্নান করে হ ইযে 
আপন হারা,
আলোর হাওয়া,
আলোর মেলা,
সকল দিকে আনন্দ
মেলা,
এমন ভুবনে জন্ম
নিয়ে যেতে চাইনা ছেড়ে,
এমন সুন্দর আলোর
জগৎ,
সুন্দর মনের খেলা,
এমন আলোয়
আছি আমরা যেথায়
মুক্তি ধারা।

।।ভালোবাসি।। আশীষ মাহাত





তোমাকেই ভালোবাসি "সু" কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি না 
আশীষ 

এই কয়েকদিন আমার চোখে শুধু তুমি আর তুমি সাঁতার কেটে যাচ্ছো "সু"

আমি সাঁতার জানি না বলেই সমুদ্রে ভাসার ইচ্ছেটা প্রবল 
হয়তো মন খারাপের নৌকা ভাসতে ভাসতে একদিন তলিয়ে যাবে
তুমি ১১ টা দিনের মেকি শোকের বরখা পরে রবে

তারপর পথে হেঁটে যেতে যেতে পায়ের ছাপ
যেভাবে ভুল যাও

ভ্রু কুঁচকে আকাশের দিকে দেখবে মেঘ করেছে
ধীরে ধীরে বৃষ্টিতে ভিজে আমাকে ভুলে যাচ্ছো

।।বেখেয়ালী স্বপ্নরা! ।।শিবানী বাগচী

,



কোন এক হেমন্তের অলস বিকেলে রঙচটা বেখায়ালী স্বপ্নগুলোকে টাঙিয়ে রেখেছিলাম দেওয়ালে পেরেক ঠুকে!

নৈঃশব্দে সুরসুরি দেওয়া তোর আলতো ছুঁয়ে যাওয়ায়,ওরা গোপন কামনায় নিবিড় হতে চায়;আজ তাই অকারনে আমার মৌনতাকে সম্মতি জানাই!

তোর মাথায় বিলিকাটা রাত আজও একি ভাবে খেলা করে আমার আঙুলের ডগায়;আমার মন জমুনায় নামে জোয়ার;উথাল পাথাল আছড়ে পরে আমার বুকে!

বুভুক্ষ লাঙলের ফলায় লাগে পলি মাটির সোঁদা সুবাস;বন মহুয়ার নেশায় গোধুলির রক্তিম আবেশে ওরা ডানা ঝাপটায়;খেলে রঙিন স্বপ্নের কাটাকুটি।