নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অমিতাভ মীরের গুচ্ছ কবিতা

১.
সেই শ্রাবণ সন্ধ্যায়
  - অমিতাভ মীর

ইচ্ছের বিরুদ্ধেই যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখি-
বুকের গভীরে বাসা বেঁধে থাকা যত ব্যথাকাঁটা।
ফাল্গুন-শ্রাবণ বলে কোন কথা নেই
রাত অথবা দিনের বাঁধা নেই
মরা কটাল আর ভরা কটালের প্রভাব নেই
যখন তখন বুকের ভেতর নড়ে চড়ে ওঠে;
মনে পড়ে যায় গত জীবনের কত কথা।

এক ফাল্গুনের প্রথম প্রভাতে নব মঞ্জরিতে
বিকশিত নন্দনের প্রিয় পারিজাত কলি;
ভরে দিলো বুক সৌরভ গৌরবে অনাবিল সুখে।
হৃদয়ের তানপুরা সাধে সুর তার গীত গানে
মহুল বনের তল গেল ভেসে অপার প্রণয় বানে,
হাতে রেখে হাত অভিসার শতবার পথে পথে দেখা;
এখনও অমলিন জেগে আছে সেই পথ রেখা।

নুপুর পায়ে ঝুমুর তালে এলো শ্রাবণের ঘনঘটা,
বৃষ্টির পরশে প্রকৃতি পেল ফিরে নব জীবন,
নব মঞ্জরিতে বিকশিত হলো বৃক্ষ-তরু-লতা।
তারপর, এলো বেদনার অঝর সেই শ্রাবণ সন্ধ্যা,
রজনীগন্ধা হাতে কাকভেজা ভিজে গিয়েছিলাম প্রিয় আঙিনায়,
আবেগের ভুলে ভুল বোঝাবুঝি, ঘটলো ছন্দপতন;
বুকে বিঁধে গেল ব্যথাকাঁটা হায়, সেই শ্রাবণ সন্ধ্যায়।


২).
গোলাপ বাগানে পোড়া গন্ধ
   - অমিতাভ মীর

গোলাপ বাগানে ভাসে শ্বাসরোধী পোড়া গন্ধ একী,
দাবানল করেনি তো গ্রাস প্রান্তরের বনাঞ্চল,
গৃহদাহ ঘটেনি কোথাও
জনপদ স্বাভাবিক, নদীও নীরব;
বহুতল ভবনেও নিত্যকার কোলাহল
শ্মশান চিতায় সে কবে পুড়েছে শব,
তারপর থেমে গেছে সব কলরব।
পুড়ছে তবে কি?

মনের চিতার আগুন সে-ও তো গেছে নিভে,
পোড়া গন্ধ নয়, এখন রক্তের স্বাদ লাগে জিভে।
যৌবনের তাপ নেই হিমেল শীতল অনুভূতি,
ছায়া ঘোরে পায়ে পায়ে সমাহিত ডাক শুনি।
অন্দর পোড়েনি, বাহির পোড়েনি
পোড়েনি বন্দর, বালুকার চর,
পতাকা পোড়েনি, ভূখণ্ড পোড়েনি;
পোড়েনি মায়ের কনক গৈরিক।

ওই যে বিশাল আসমুদ্রহিমাচল
সে-ও দেখি আছে নীলিমার নীচে স্থির অবিচল।
পাতালপুরীতে সুনসান কবরের নীরবতা,
কেন তবে ভাসে গোলাপের বাগে শ্বাসরোধী পোড়া গন্ধ?
পুড়ছে কী তবে হৃদয়ের ঘর,
যেখানে শাশ্বত প্রেম-হেম অনির্বাণ জ্বলে!
খোঁজাখুঁজি শেষে দেখি অনিমিখ-
দাউ দাউ পুড়ছে মানুষের বিবেক।


৩).
হলুদ ঘাসের কফিনে ঘাসফড়িঙের শব
    - অমিতাভ মীর

খরায় পুড়ে যাওয়া শস্যক্ষেতের মত বিষন্ন আকাশে-
একা জেগে থাকে আষাঢ়ের একাদশী চাঁদ,
হাপরের টানে উস্কে ওঠা গনগনে আগুনে
ঝলসে যায় সকালের নরম রোদ;
স্বার্থের ঘুণপোকা ধীরে ধীরে কুরে খায়
প্রকৃতির কোমল গতর,
তপ্ত লাভার উদগীরণে পুড়ে খাঁক
বিস্তীর্ণ বনানী, জনপদ, সবুজ শহর।

সীসার চাঁদোয়ার তলায় চাপা পড়ে থাকে
বিষবৃক্ষের মত কংক্রিটের জঞ্জালে ভরা নগর জীবন,
হুহু করে বাড়তে থাকে তাপানুকুল বাড়ি-ঘর
লালসার বিষাক্ত লালায় ভিজে যায়
ভোগবাদী আধুনিক নগর সভ্যতা;
চিতাভস্মের তলায় ডুবে থাকে সবুজের সমাধি
পাপের শাপে অঙ্গার হয়ে যায়
দশ দিগন্তের স্বচ্ছতোয়া বিপুল জলধি।

মধু ফাল্গুনের রাজপাটে শ্রাবণের আগ্রাসন,
আষাঢ়ের কোল জুড়ে জ্যৈষ্ঠের দহন,
হলুদ ঘাসের কফিনে ঘাসফড়িঙের শব
জল বিনে চাতকের যায় বুঝি প্রাণ!
পাপের কলসি পূর্ণ দেখেও নেই কোন অনুতাপ,
রীতিহীন নগরায়ন বাড়ায় প্রকৃতির ক্রোধ;
বনজ প্রতিবেশ ধ্বংসের অর্বাচীন ফল-
গুটি পায়ে ধেয়ে আসে প্রকৃতির প্রতিশোধ।


৪).
মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো
   - অমিতাভ মীর

মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো চোখের পাতায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা জাগায়।
কাজল মেঘের অভিমানে আকাশ পাগলপারা,
ঝমঝমিয়ে মাটির বুকে নামলো শ্রাবণধারা।

মাটির দহন নিভলো যখন শ্রাবণ ধারায় ডুবে,
আমার বুকের সুপ্তসুখ তখনই গেল উবে।
ছলছলিয়ে চোখের আকাশ ঝরছে নিরবধি,
কলকলিয়ে উঠলো দুলে বুকের গহীন নদী।

সেদিন এসেছিলো পাশে কেউ গভীর ভালোবেসে,
ভুল বুঝে সেও গেল চলে আনমনে বাঁকা হাসি হেসে!
গরম কফির ধোঁয়ায় স্মৃতির আবেশ জুড়ায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।

অঝর ধারার বর্ষণমুখর এক উদাসী সন্ধ্যায়,
ভেজামন নিয়ে কেউ এসেছিলো আমার আঙিনায়।
মজেছিলো দু'টি ঠোঁট গরম কফির কাপের ছোঁয়ায়,
বুকের নদীর পাড় ভেঙেছিলো সেই শ্রাবণ সন্ধ্যায়।

তারপর কেটে গেছে অনেক বর্ষণমুখর শ্রাবণ,
বুকের নদীর পাড় ভাঙে আজো চোখের প্লাবন।
আজ মন বেসামাল মনখারাপের শ্রাবণ সন্ধ্যায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।


৫).
অদ্ভূত কানার বাজার
     - অমিতাভ মীর

এই বৃষ্টি এই রোদ্দুর ভেজা শরীর রোদে শুকায়,
মনমর্জি চলছে ওরা, আমার কথায় কি এসে যায়!
বৃষ্টির সাথে চোখের প্রীতি হাত বুলিয়ে দেয় রোদ্দুর,
বৃক্ষতলে ঠেস দিয়ে ওদেরও কাটে অলস দুপুর।

বৃষ্টিভেজা রোদে পুড়ে কোটার আগুন রাজপথ জুড়ে,
ছেলে-মেয়ে একাট্টা হয়ে আসছে যেন পাতাল ফুঁড়ে!
হঠাৎ ফের বৃষ্টি নামে মেধার ছাতা লাগে না কাজে,
বিভীষণ সব ঘিরে ধরে মুঠোবন্দী হাতুড়ি রাজে।

হাড়-মাংস থেতলে গেলে রোদের তাপের কি দোষ আছে?
শুনছো না? কারা যেন কাঁদছে ভীষণ দূরে কিবা কাছে!
কোন মায়ের ধন হারিয়ে গেল চেনা সেই অন্ধকারে,
দোষ না করেও দোষী সবাই অদ্ভূত কানার বাজারে।

ভণ্ডরা সব একজোট হয়েছে ভাঁড়ের দলের সাথে,
জ্ঞানপাপীরাও নেই বসে আজ কর্তাল বাজায় হাতে।
অন্ধরা সব দেখছে বেশী, মুখ খুলেছে সব বধির,
ভাঁড়ামিতে কে কার সেরা; ঘোড়ার রেসে ছুটছে অধীর।

শব্দমালা হাতে, মৌন যাত্রাস্রোতে ভিজে গেছে রাজপথ,
অভিযাচনা সবার, সূত্র এক; ভিন্নতা পথ ও মত।
যাচনা করার নেই অধিকার, দেয়ালে ঠেকেছে পিঠ,
ফসিল ইতিহাসের পাতা খুলে দেয় বন্ধনের গিঁট।

৬,


ক্ষোভের বারুদে বুক ঠাসা
  - অমিতাভ মীর

পরাধীনতার বৃত্তে পথিক শেকল ভাঙার গান ভুলেছে,
শৃঙ্খল মুক্তির উদ্দীপনাময় স্লোগানে এখন গ্রহণ লেগেছে,
অধিকার আদায়ের রাজপথ জুড়ে শকুনীর বিচরণ;
বুকের কথা মুখে ফোটে না, ধমনীতে জাগে না তো শিহরণ।

ব্যালটের রফা বুলেটের ভয়ে, ভোটারের দায় সহজে কি মেটে?
রাতের আঁধারে বাক্সের ভেতরে ব্যালট ঢুকেছে পায়ে হেঁটে।
ব্যালটের দখল কাদের হাতে ছিলো, কারা করেছে তা নিয়ন্ত্রণ?
শূণ্য জনপ্রিয়তায় করে কে ভোটারকে কেন্দ্রে নিমন্ত্রণ?

বাইশ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীন হয়েছে দেশ,
বাইশ লাখের ওপর পরিবার এখন জাঁকিয়ে বসেছে বেশ।
মুক্তির সোপানতলে বয়েছে লাখো শহীদের রক্তের স্রোতধারা,
স্বাধীনতার এই তবে অর্জন গোটা দেশ আজ গণতন্ত্রহারা।

রাজনীতি আজকে দেউলিয়া ভীষণ, সবাই স্বার্থের বাজিকর,
ভণ্ডামির চূড়ামণি মিথ্যার বেসাতিতে রচেছে আপন বাসর।
তেজময় সত্য প্রকাশিত হবে, খসে পড়বেই মিথ্যার নেকাব,
সময়ের কোপানলে একদিন দিতেই হবে সব হিসাব।

লুটের সম্পদ থাকে না দেশে ভিনদেশে হয়ে যায় পাচার,
দ্বৈত নাগরিক রসে-বশে বেশ করছে তারাও এধার-ওধার।
দু'চোখ ঘিরে নামবে অন্ধকার, আকাশের বুকে তারা খসা,
সব ছেড়ে যাবে শূন্য হাতে, লুটের টাকার কী হবে অন্তিম দশা!

মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে সার্বভৌম গণতান্ত্রিক এক দেশ চেয়ে,
স্বাধীনতা এসেছে লাখো অগ্রজের শহীদী রক্তের বন্যায় ধেয়ে।
আমেরিকা-সিঙ্গাপুর হতে নয়, দেশ হবে সার্বভৌম- এই ছিলো আশা,
শহীদ হওয়ার এসেছে সময়, ক্ষোভের বারুদে বুক ঠাসা।



সন্তাপন : রিনা রানী দাস



গেঁথে রাখো যদি প্রিয়ভাষী- শকুন্তলা সন্তাপন
ঘন-ঘোর বনে অমা-বৃষ্টি চঞ্চলা হরিণী যত...
আখছোবরার অধিকালে যাঁতে মায়াবী ক্ষতই
’সরাবান তহুরা’ পিয়াসী তাপসীর আলাপন।

বিদূষক রাত্রির কিনারে বিনয়ী চাবুক কাঁপে
সারিবাঁধা সেগুনবীথিতে রিনিঝিনি বৃষ্টি ছোটে...
আধ-ভাঙা ছড়ার ভিতর সুক্ত জমে না মোটেই
কি কথা কহ হে, কাপালিক! প্রণয়-ভিক্ষার ভাঁপে।

বিবাগীকানন নিশি জাগে, শতবর্ষী অপেক্ষায়!
কোন কু-লক্ষণে অর্ধ-রাত্রি কাটে প্রদোষের দেশে...
সুখতারা নৌকা নিয়ে আসে রুদ্ধ বারতা শেষেই
অধি-সরসী ঝঙ্কারে নেচে জলকেলি স্বপ্নে আয়।

চাঁদ-মূখী কথার সন্তাপে দু’টি প্রাণে বাজে ডুগডুগি
প্রেয়সীর নীরব ঘাতক বেদানার রসে বাঁচে হুগি।

আঙুলের কলকেলি :অভিজিৎ দাসকর্মকার



কিশোরীর শেষে
জলজ-শ্যাওলায় লি লি বাতাস,
ঢেউয়ে দোলা অসংখ্য ঘুনসি বাঁধা নস্টালজিয়া

অতঃপর গলায় ছোট্ট মাদুলি আর,
গোরুটির ইউরেনাস অর্বিটে জাবর কাটা বা
পায়রা উড়ে যাওয়া ডট্-বল লেখা দানাটির উপর

পুটুস ফুল বাড়ছে স্যাটেলাইট ছাতা ধরে
কানের কাছে শালিক পাখিটি ওয়েব লেন্থ আঁকা বৃষ্টিদুপুর বলেছিল
ভলতেয়ার তখনো সামনে দাঁড়িয়ে

পাটকুহু পাখিটি মুখে করে ছিঁড়ে ছিঁড়ে
নক্সা কাটা টুনটুনি পাখির অভিনয় যাপনের আষাঢ়িকোষ

অহল্যাবাই রাস্তাটি ঠিক
অক্লান্ত জলের বুদবুদ ভিড়ে মিশে গেছে,  আর-
সরবনে দ্রুপদীপদের আলাপ

সা-পা ধরে তানপুরা
সকালে খবরকাগজ হাতে
মৈত্রী চ্যানেল শোনে আর-
চায়ের ঠোঁটে গরম ক্ষণিক চুমু, এতে -
শিবরঞ্জনী ও রাগ হারায়

কবি শান্ত হয় কলমে 
প্রেমিকার কোলে মাথা আর
আঙুলের কলকেলিতে আঙটির কলাকোষ
সোনা-জল হয়ে বয়ে যায়...

অলৌকিক নুপুর ধ্বনি: সুমিত মোদক



শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি হয়ে বাজতে পারি তোমার বুকে , শ্রীরাধিকা ;
আবার তোমার পায়ের নূপুর হয়ে  শব্দ তুলি
শ্রীকৃষ্ণের গভীর থেকে গভীরে
প্রেমিক হৃদয়ে ;
আমিই পারি ....
আমি যে তোমাদেরই সুর-তরঙ্গ ;
#
যমুনার জলকে ছুঁয়ে আসার সময় গুলিকে একের পর এক ধরে রাখতে জানি ;
মনে রাখতে জানি মহাকালের স্বরলিপি
বসন্ত-বাহার ...
#
শ্রীরাধিকা , তুমি বার বার জন্ম নিতে জানো ;
শ্রীকৃষ্ণ বিরহে দুচোখ ভেসে যায় জলে  ;
তবু , তোমার কোনো অভিযোগ নেই  ,
অনুযোগ নেই সময়ের কাছে ,
শ্রীকৃষ্ণের কাছে ,
এই জীবনে ....
#
আর আমি যুগ যুগ ধরে বেজে চলেছি মহাকাল হয়ে ;
একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে সময়ের ধারাপাত ,
কদম ফুলের সুঘ্রাণ , বৈষ্ণব পদাবলি ,
আমারই চলচ্চিত্র  ;
#
কেবল , তুমি শ্রীকৃষ্ণে বিভর হতে  জানো ;
আর , আমাকে করে তোলো অলৌকিক নূপুর ধ্বনি  ।

রিসাইকেল বিন: শাহীন রায়হান


ইদানিং হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলো নিউরন কোষে
উন্মাদ হয়ে ঘুরে বেড়ায়
প্রতিনিয়ত প্রেমময় নীল যন্ত্রণায় ভূগী
হৃদয় শ্মশানে অতীত সুখানুভূতির
এক ব্যর্থ দামাল ঘোড়া উষ্ণ শ্বাস-প্রশ্বাসের বুদবুদে ডুবে যায় অবিরাম।
.
নিঃস্ব আমি অবাঞ্ছিত চিন্তার পরাজিত মসনদে-
তোমার চির অমর ভালোবাসার
রিসাইকেল বিনে তোমাকে হাতড়ে বেড়াই
কামনার শরাবে।

সীমান্তের শহীদ : অমিত কুমার জানা




প্রবাদে আছে 'বীরভোগ্যা বসুন্ধরা,
বাস্তবে বীর জোয়ানের সব সুখই অধরা।
দেশমাতৃকার রক্ষার দায়িত্ব অর্জনের তরে,
অকথ্য কায়িক শ্রমে নিজেদের গড়ে তোলে তিল তিল করে।
তাদের প্রসর স্কন্ধ একে একে গ্রহণ করে প্রশিক্ষণ,
তারপর শপথ নেয় নির্দ্বিধায় করতে জীবন সমর্পণ।
যৌবনের স্বপ্ন, সাংসারিক সুখের অপমৃত্যু হয়,
এভাবেই দেশ রক্ষিতে বীর সেনার আগুয়ান অকুতোভয়।
কখনো সীমান্তের তুষার ঝড় গায়ে মেখে নেয়,
কখনো খোলা আকাশকে ছাদ ভেবে রাত কাটায়।
কখনো স্মৃতির আঙিনায় ভেসে ওঠে স্বজন,
অবসন্ন শরীরে অশ্রূমাখা হয় দুটি নয়ন।
এভাবেই দিন রাত কেটে যায় সীমান্তের নিরাপত্তায়,
অন্যথায় দেশবাসীর দুঃস্বপ্ন, ব্যাঘাত অনিবার্য সুখনিদ্রায়।
সারা দেশ যখন নিদ্রাচ্ছন্ন এরা তাকিয়ে থাকে নক্ষত্র খচিত আকাশপানে,
কখনো বা শত্রুপক্ষের বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় তরতাজা প্রাণে।
হয়তো বা শত শত প্রাণ লুটিয়ে পড়ে জঙ্গির বোমা বিস্ফোরণে,
কফিনবন্দী নিথর বিচ্ছিন্ন দেহ ফিরে আসে জন্মস্থানে।
শীততাপের আরামে নেতা মন্ত্রীরা টাকার অংকে করে ক্ষতি পূরণের ঘোষনা,
নতুন শত শত তরুণ পুনঃপ্রস্তুত হয় ,সত্যিই এ তো অমর শহীদদের প্রেরণা।