নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

তবুও আজ ভালোবাসবো :কাজী জুবেরী মোস্তাক



আজ শহর জুড়ে অঝোর ধারায় বৃষ্টি থাক
ভেজা কাকগুলোও আর বেশি ভিজে যাক
বন্ধ হয়ে যাক আজ গাড়ির সব চাকাগুলো
আজ আমি শুধু তোমাতেই লেপ্টে থাকবো ৷

হলে হয়ে যাক আজ হুলিয়া এ শহর জুড়ে
তল্লাশি চৌকি খুলে বসুক সব পথের মোড়ে
অাজ আমি তোমাকে কোত্থাও যেতে দেবনা
আজকে আমার বুকেই হবে তোমার ঠিকানা ৷

এই শহর আজ একেবারে অচল হয়ে যাক
দোকানপাট গুলো সব আজ বন্ধ হয়ে যাক
শুধু খোলা থাকুক রাস্তার ধারে টং দোকান
সেখানে বসে না হয় শোনাবো বে-সুরো গান ৷

রিক্সাগুলো সব বন্ধ থাক আজ শহর জুড়ে
ছুটি থাক ব্যাস্ত শহরের ট্রাফিক সিগন্যালে
আমাদের পায়ে আজ পথ হারাবে এই শহর
যৌথ ভালোবাসাতে আঁকবো সুখের আঁচড় ৷

বৃষ্টি : কুনাল গোস্বামী



অতঃপর আমি নিস্তব্ধ হলাম,ব্যাঙদের গোঙানি আরও বেড়েই চলেছে 
তারপর শুষ্ক মাটির বুক স্পর্শ করে বৃষ্টি নামল পাতায় পাতায় 
আমি আর কবিতা খুঁজিনা, কল্পনায় হারিয়ে যাইনা খড়কুটোর মতো
কান পেতে শুনি ল্যামপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকা কুকুরের কান্না 
দু'একটা ফোঁটা বৃষ্টি মুখে মেখে নিয়ে ভাবি এই বেশ ভালোই আছি 

কবিতারা নাকি এক একটা জীবন্ত ইতিহাস! 
তবে তাঁদেরও বুকে জমে থাকে একরাশ অভিমানী কালো মেঘ
যদি আমারও থাকতো কয়েকটা খাঁজকাটা নখ
তবে আঁচর কেটে বৃষ্টি নামাতাম এমনই এক অন্ধকার রাতে
সে রাতে আমিও চিৎকার করে বলতে পারতাম
বৃষ্টিকে চাদর বানিয়ে নগ্ন শরীর ঢাকতে আমিও ভালোবাসি।

ভালোবাসার গল্প : তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়


আকাশ যখন মেঘকে সাথী করে নিয়ে এলো,
তখন চারিদিকে কত আনন্দ!
নতুন জীবন পেলো ওরা।
আকাশ মেঘকে বুকে করে আগলে রাখলো,
আর মেঘও যেন আকাশের বুকে ভেসে গেলো।
এইভাবেই হাসিতে খুশীতে দিব্যি সুখে দিন কেটে যায়।
হঠাৎ  একদিন আকাশের মুখ ভার,
মেঘের মনেও কালো ছায়া।
ওদের মধ্যে একটু দূরত্ব বাড়লো--
মেঘের কোলে বৃষ্টি এলো যে!
রিমঝিমিয়ে নেচে বেড়ায় কাজলা সেই মেয়ে।
তার নাচের তালে তালে গাছপালাও আনন্দে নাচে।
একদিন হঠাৎ দেখি বৃষ্টির সাথে ভাব হয়েছে রোদের।
তারপর....
রোদ আর বৃষ্টির সে কি লুকোচুরি খেলা !
এইভাবেই কেটে যায় বাদলবেলা।
আকাশ-মেঘ-বৃষ্টির ভালোবাসা ভরা দিন।।

বারি ধারা ": রাসমণি সাহা দেবনাথ


গ্রাজুয়েট, শ্যামবর্ণা মধুলীণা এবার ইতিহাস নিয়ে এম এ তে ভর্তি হয়েছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে।গায়ের রং এবং চেহারার জন্য ছোট থেকেই তাকে অনেক কটুক্তি শুনতে হয়েছে, এখনও শুনতে হয়।
তার দ্বারা নাকি জীবনে কিছুই হবে না... পারিপার্শ্বিক মানুষ গুলোর ভারি অদ্ভুত ধারণা। এ জীবনে তো তার বিয়েটাও হবে না।যেমনি তার গড়ন, তেমনি তার রূপ রঙ ! কে করবে তাকে বিয়ে ?...আজকের যুগে দাঁড়িয়ে মানুষ কেন যে এমন মত পোষণ করে, মধুলীণা নিজেও সেটা বুঝতে পারে না।যৌথ পরিবারে বড় হয়েও সে খেয়াল করেছে, তার পরিবারের অনান্য সদস্যরা যারা তার খুব কাছের, পরম আত্মীয়, তারাও আজকাল তাকে হেয় করতে পারলে বেশ খুশি হয়।তার মনের কষ্ট গুলো কবিতার মালা হয়ে উদ্ভাসিত হয়।তার লেখনী শৈলীর গুণে সেই কবিতা গুলো যেন বাগ্ময় হয়ে ওঠে।মধুলীণার লেখার নেশা খুব ছোট্ট বেলা থেকেই।বিভিন্ন পত্রিকায় তার বেশ কিছু লেখা বেরিয়েছে, যেটা বাড়ির কেউ জানে না।

এবার গরমটাও পড়েছে সাংঘাতিক।আজ সকাল থেকেই কেমন যেন অস্বস্তি দায়ক অবস্থা।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে বিগত দশ বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে এবারের গরমের দাপট।"ফণী"-নামক ঘূর্ণিঝড়ের দরুন  বায়ুমণ্ডল আরও শুষ্ক হয়ে উঠেছে।শ্রাবণ মাস আরম্ভ হলেও বৃষ্টির হাত ধরে বর্ষার দেখা নাই।যেন মেঘরাজের সাথে আড়ি করে অভিমানী বৃষ্টি হয়েছে নিরুদ্দেশ।
ড্রয়িং রুমে টিভি চ্যানেলে সবাই বিশ্বকাপ খেলা দেখতে মগ্ন।এমন সময় ল্যাণ্ড ফোনটা বেজে উঠল।পুরো রিং কমপ্লিট হয়ে যাবার দু মিনিট পর আবার বেজে উঠল।অবশেষে পরিবারের অভিভাবক তথা সকলের দাদু শ্রী ক্ষিতিশ রায় ফোনটা রিসিভ করলেন।কিছু ক্ষণ পর দাদুর বাজখাঁই গলার স্বর শুনে সবাই চমকে উঠে।কী ব্যাপার? 
দাদুর ডাকে মধুলীণাও গুটি গুটি পায়ে আসতেই, ক্ষিতিশ তাকে দু হাত ভরে আশীর্বাদ করলেন।বললেন, যে মেয়েটির জন্য পাড়া প্রতিবেশী, পরিবারের সকলের অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্য.... সেই মেয়েটিকেই সেরা মহিলা কবির সম্মান দেওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে।কোলকাতার একটি নামী প্রকাশনা সংস্থা তার একক কবিতার বই প্রকাশ করবে এবারের বইমেলায়।
শ্যামবর্ণা মধুলীণার দু'চোখে আনন্দের ঘন শ্রাবণ ধারা।
বাইরেও তখন হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানি ! ড্রয়িং রুমের জানালার সার্সিতে এল বৃষ্টির ঝাঁট।শুরু হল বহু কাঙ্খিত মুষল ধারায় বৃষ্টি।

স্বপ্ন ভঙ্গ : বীরেন্দ্র নাথ মহাপাত্র



    হঠাৎ দেখি  বিকেল বেলায়
    পশ্চিমেতে মেঘ জমেছে,
    বলতে বলতে নামলো বৃষ্টি
    গা ভিজল বলে মা বকেছে ।

    একটু  বাদে বৃষ্টি থামলো
    মোদের গাঁ থেকে,
    দেখতে পেলাম উইপোকাগুলি
    স্বপ্ন ভরা ডানা মেলেছে ।
    
    ক্ষণিক আনন্দ গেল মিলিয়ে
    উড়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল,
    ডানা খসে পড়লো সবে
    পাখি কিছু তাদের খেল ।

    আবার যারা বাঁচলো  সবে
    আশা আলো দেখে ছুটে এলো,
    বাড়ীর মেয়েরা রেগে মেগে
    স্বপ্নের পাখিকে ঝেটিয়ে বিদায় দিলো ।

মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো : - অমিতাভ মীর



মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো চোখের পাতায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা জাগায়।
কাজল মেঘের অভিমানে আকাশ পাগলপারা,
ঝমঝমিয়ে মাটির বুকে নামলো শ্রাবণধারা।

মাটির দহন নিভলো যখন শ্রাবণ ধারায় ডুবে,
আমার বুকের সুপ্তসুখ তখনই গেল উবে।
ছলছলিয়ে চোখের আকাশ ঝরছে নিরবধি,
কলকলিয়ে উঠলো দুলে বুকের গহীন নদী।

সেদিন এসেছিলো পাশে কেউ গভীর ভালোবেসে,
ভুল বুঝে সেও গেল চলে আনমনে বাঁকা হাসি হেসে!
গরম কফির ধোঁয়ায় স্মৃতির আবেশ জুড়ায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।

অঝর ধারার বর্ষণমুখর এক উদাসী সন্ধ্যায়,
ভেজামন নিয়ে কেউ এসেছিলো আমার আঙিনায়।
মজেছিলো দু'টি ঠোঁট গরম কফির কাপের ছোঁয়ায়,
বুকের নদীর পাড় ভেঙেছিলো সেই শ্রাবণ সন্ধ্যায়।

তারপর কেটে গেছে অনেক বর্ষণমুখর শ্রাবণ,
বুকের নদীর পাড় ভাঙে আজো চোখের প্লাবন।
আজ মন বেসামাল মনখারাপের শ্রাবণ সন্ধ্যায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।