নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

ফিরে আসে ঘরে :- সুমিত মোদক




মেয়েটি ফিরে এসেছে ঘরে ;
#
কদিন ধরে মেঘ জমে ছিল আকাশের বুকে ;
অথচ , বৃষ্টির দেখা নেই  ;
মেয়েটা ফিরে আসতে ঝমঝম করে শুরু হল  শ্রাবণের বৃষ্টি ;
#
পাড়া-গাঁর বর্ষার গান বেঁধে নেয়
উদাস বাউল ;
সেধে নেয় লালন ফকিরের গান ...
নদীর বুকেও ভাটিয়ালি সুর জেগে উঠে
মেয়েটি ফিরে এলে  ;
#
বাদাবনের কাদাজলে জমে থাকে অনেক দুঃখ-যন্ত্রণা-অভিমান---
খাঁড়ি পথে জীবন মৃত্যুর লুকোচুরি খেলা  ;
মেয়েটি বাঁচার জন্য শ্বাসমূল আঁকড়ে ধরে ;
মণি নদী পাড় ভেঙে , জন্ম দেয় দ্বীপ ;
#
মেয়েটি ফিরে এসেছে ঘরে ;
#
আবার সে নেমে পড়বে জলে মিন ধরতে ;
এ শ্রাবণের সকালবেলায় ...
#
মেয়েরা ফিরে আসে ঘরে ।।

রঙ :- কৌশিক গাঙ্গুলি


এখন সবাই শান্তিতে থাকেনা
বুকে আগুন চেপে মুখে মুখোশ আঁটে ,
তাই কষ্টের রঙ বেগুনী আর দুঃখের রঙ ধূসর ...
শান্তি এখন হারিয়ে গেছে বহুদূরে ,
মানুষ ভালবাসতে ভুলে গেছে
মনে ইর্ষা চেপে মুখেতে হাসি সাটে , তাই
প্রেমের রঙ হলুদ আর যৌনতার রঙ লাল ।

অসময়ে : অনিন্দ্য পাল


সেই তারিখটা মুছে দিয়েছি ডেট ক্যালেন্ডার থেকে যদিও শুণ্যতারও ভাষা আছে জানি, অস্তিত্বহীনতা
কথা বলে নিজের মত করে, তবু 'কিছু নেই ' থেকে ভেসে আসে 'না ', আমিও তাকে মুঠো করে লুকিয়ে ফেলতে চাই, ভুলে যাই হারিয়ে যাওয়ার ও নিজস্ব অঙ্ক থাকে ...

চুল্লির ও খিদে থাকে দুর্ভাগা কয়েদির মত।

উল্লাস :- অভিজিৎ দাস কর্মকার



এখনো নামেনি বৈশাখি,
গ্রহান্তর ছেড়ে-
নিম্বাস একটি মেঘেরই নাম
অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ঝাপাটায় অশ্বশক্তির দলিল
কল্পনাপ্রবণ সন্ধ্যেগুলোয় পিঠ চাপড়েছিলো
বিজ্ঞাপন আর চোখ
বিভাসরাগে জ্বালিয়েছি ইশারার মোমবাতি সমাধির নীচে ঐতিহাসিক মালিকানায়
রাত বদলে যাচ্ছে স্বেচ্ছাচারীতায়
মাননীয়,
আমি টাল খাচ্ছি
হৃদপিণ্ডে উভচরী শব্দের শিলাবৃষ্টি
আলটপকাই উপত্যাকার সাথে শুয়ে পড়েছি-
এবং
অসাধারন ব্যক্তিত্বে বায়োমেট্রিক ছাপ
বিকেলবেলা বাড়ালো মান্দাক্রান্তা ছন্দটি
আমারা মনের হসপিটাল সেই
নিকুঞ্জতলার কালো লক্ লকে মেয়েটি
যার যৌনতা গাছের ছায়া আর
গন্ধ হয়ে মিশে গেছে সপ্তাহের শেষে
আমি এখন বৃদ্ধ
কোমর অব্দি ব্যাথাটা নিয়ে
চিল্কায় দাঁড়িয়ে ঢেউ ফেরা দেখি মহেঞ্জোদরো আর ঈশ্বরের দিব্যি লেখা
একটি ঔঁ আর
কিছু কিটসের রোমান্টিকতার উল্লাসে... **

সময়ের ঘড়িটা :- অথৈ দেবনাথ



স্নেহাশিস খোকা,
   আমার বাবা মানে তোর দাদুকে এক দিন আমি বলেছিলাম,
 বাবা তোমার কি কখনো কষ্ট হয়না?
 তোমাকে কাঁদতে দেখিনি কোন দিন।
আমার কথা শুনে তোর দাদু মুচকি হেসে বলেছিল,
পুরুষ মানুষের যে অনেক কর্তব্য।
 তারা যদি কাঁদে, 
নিরাশ হয় তাহলে সংসার নামক এই নৌকাটা,
মাঝ সমুদ্রে ডুবে যাবে।
 বাবার সেই কথার মানে আমি পরে বুঝেছি।
আর এটাও বুঝেছি যে পুরুষের জীবনটা অনেকটা শামুকের খোলসের মত আবৃত থাকে।
যা উপরে শক্ত আর ভীতরে নরম।
আর তাই তো তোকে যখন বকা দিতাম, আমারো খুব কষ্ট হত।
কিন্তু তুই যখন রাতে ঘুমিয়ে পরতিস।
আমি তোকে মন ভোরে আদর করতাম।
আর তোর মাকে বলতাম, দেখে নিও আমার খোকা একদিন অনেক বড় হবে।
সত্যি খোকা , আজ তুই অনেক বড় হয়েছিস। আমি আর তোকে ছুঁয়ে দেখতে পারিনা।
সময়ের ঘোড়িটাও আজ উল্টো দিকে বইছে। আমিও স্হবির হয়ে যাচ্ছি।
এক সময় ছিল,
 তুই তোর পরিচিতদের কাছে গর্ব করে আমার পরিচয় দিতিস।
কিন্তুু এখন তোর লজ্জা হয়।
 আর তোর এই লজ্জা আমায় অনেক কষ্ট দেয় খোকা।
তা তুই বুঝবিনা।
জানিস খোকা,
 প্রতিটা মানুষের জীবনে যেমন জোয়ার আসে .... , তেমনি আসে ভাটা।
এক সময় আমারো এসেছিল জোয়ার সে সময় আমি অনেক পেয়েছি ,
 তোর মাকে পেয়েছি গৃহ লক্ষি হিসেবে।
তার পর তুই এলি আলো হয়ে।
কিন্তু তখন বুঝতে পারিনি,
 এত দ্রুত বদলে যাবে। এক ভয়ঙ্করী ভাটা এসে তোর মাকে নিয়ে গেল। আমি প্রার্থনা করি যেন সে ভালো থাকে স্বর্গে স্থান পায়।
এই দুর্বিষহ জীবন তাকে বইতে হয়নি,
এই বলে নিজেকে শান্ত্বনা দেই।
আজ আমি তোর কাছে বোঝা হয়ে গেছি তা আমি বুঝি,
কিন্তু কি করব বল,
 সময়ের ঘোরিটা যে উল্টো দিকে বইছে কিন্তু থামছে না,
জানিনা আর কত দিন চলবে,,
সব কিছুই তো একসময় ফুরিয়ে যায়,
 কিন্তুু আমার জীবন কেন ফুরায় না?
জানিস খোকা,
এই দু হাত ভোরে তোকে দিয়ে এসেছি।
চাই নি কিছুই।
আজো দিতে চাই, তোমায় মুক্তি,
আমার ভার থেকে।
যেই বুকে তোকে আগলে রেখেছিলাম,
সেই বুকের স্পন্দনটা দিতে চাই  তোর হাতে।
কিন্তু এতটাই স্হবির হয়েছি,
আমি তাই পারছিনা,
আমি পারছিনা।

        ইতি তোর অক্ষম
                            বাবা

তখন ও এখন :- মান্নুজা খাতুন


একটা সময় বড্ড অচেনা ছিলাম তাই না?
ব্যস্ততার পথ ধরে চলতে ফিরতে
পথের অন্তিমে তোমার বেখেয়ালে লেগেছিল ধাক্কা 
অবনত নয়নে, খুব ছোট্ট করে বলেছিলে ‘'সরি’। 

তারপর!
ঘরে ফিরে ক্লান্ত দুচোখ এক করেছি যেই
ভেসে উঠতে থাকে তোমার ছবি!
আর শুনতে পায় তোমার মিস্টি সুরের ‘’ সরি’ শব্দটা।।

সেদিন হঠাৎ করেই হয়ে গেল সাক্ষাৎ
অফিস ফেরতা পথে। 
শেষ সন্ধ্যার এক্সপ্রেস কামরার তৃতীয় শ্রেনীর কামরাতে
লজ্জায় তুমি করেছ আনত মুখ, আমি হেসেছি মুচকি।।

তারপর আলাপ,  আলাপ হতে বন্ধুত্ব
বন্ধুত্বের গন্ডি পেরিয়ে গেছিল কখন আমার অনুভূতি
তা জানতে পারি তোমার দীর্ঘ অদেখায়!
যদিও আমি জানি আমার মতোই হয়েছিলে ব্যাকুল
খুজেছিলে অফিস ফেরতা পথে
উৎসুক দৃস্টিতে চেয়েছিলে ফাঁকা  স্টেশনের পানে
দেখা যেদিন হয়েছিল প্রিয় অভিমানে ঘুরিয়েছ মুখ
সে আমি জানি।
কিন্তু কখনো কি জানতে পারবে প্রিয়
দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদের অনলে আমিও পুড়েছি মরে
দিবস কি রজনী অবসর সময়ে মনে করেছি তোমাকে
আর হৃদয়ের পার্লামেন্টে  লড়েছি  ভালোবাসার প্রতীকে
জিতেছি শেষ মুহুর্তে যখন দেখা হলো তোমার সাথে।।