নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

নিয়ম,, বৈশাখী গোস্বামী



একঘেয়েমি যাপন শেষ করে
রাত ভোর হয় নতুন অভ্যাসে,
ক্যালেন্ডার বদলায় না সময়ে
বছর পুরোনো দেবতার দোঁহাই,
অথচ নিত্য প্রতিমার বিসর্জন!
প্রতিকৃতিই পূর্ণ সহায়।

নিয়ম বানায় নিয়ম ভেঙে
নিয়ম মানি সমাজ নামেই।
প্রমাণ লোপাট যুগ পেরিয়েও
চোখ সয়ে যায়, চোখ সরিয়ে
মাত্রা মানলে মাত্রাতিরিক্ত
মাত্রা ছাড়ায়, অনাশক্ত ।

সুখ:শাহীন রায়হান




আমার শ্যাওলা ধরা ভাঙা হৃদয়ে
 চির সবুজ ছত্রাক তুমি মরুর বুকে
 বয়ে যাওয়া এক অনন্ত সুখের
প্রবাহমান জলচ্ছবি।
 তোমায় নিভৃত নিশীথে দেখাতে সুখ
 স্পন্দিত হৃদয়ে লেখাতে সুখ
 প্রেমময় স্পর্শ অনুভব অনুভূতিতে
 সুখ তোমার গভীরতম অন্দরে
 সুখ অরণ্যময় বাহিরে
 সুখ কাল কালান্তরে ছুঁয়ে থাকা
মধ্যরাতের সুখচ্ছবি তুমি।
 আমি সুখ সমুদ্রে নোঙর ছিঁড়ে পাল তোলা এক
নিরুদ্দেশ নাবিক- জীবন কম্পাসে
 উষ্ণ স্পন্দন দেখে দেখে মনে হয়
 তোমাতে মরি তোমাতে থাকি বেঁচে।

তোমার অপেক্ষায়: সাব্বির সেখ




একদিন আমিও হেঁটেছিলাম কালবৈশাখীর ঝড়ে,
বিবর্ন আকাশে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির অপেক্ষায়।
একদিন আমিও হেঁটেছিলাম তপ্ত ধু ধু মরু প্রান্তরে।
নীল দিগন্তে শীতল মরুদ্যানের প্রতীক্ষায়,
তারপর..


তুমি এসেছিলে বিদগ্ধ হৃদয়ে বৃষ্টির বারিধারা হয়ে,
জীবনের গোধূলিবেলায় শীতল মরুদ্যান হয়ে,
ধ্রুবতারাও হিংসে করে জ্বলেছিল তখন,
তোমার ভালোবাসায় তৃপ্ত হয়েছিল তৃষিত এই মন।

তারপর ভেসেছিলাম আমি সুখের সুনামিতে,
আবেগের ভেলায় পাড়ি দিয়ে অজানা এক দেশে.
আজও আছো তুমি, ঠিক আমার পাশে,
তবে তোমার আমার মাঝে শত বিরহের সুর বাজে.

প্রেম এসেছিল নীরবে :- তোহাদ্দেশ সেখ



তোমার মুখ ফেরানো আমার ভাবের পোড়া বাড়ি
শহরের লালচে জ্বরেও আদর কাড়ি
তোমার চোখ রাঙ্গানো আমার শেষ বিকেলের সূর্য যেমন
তবুও রাত নামলে তোমায় খোঁজে বেহায়া মন
তোমার অনিদ্রা আমার হলুদ স্বপন
আর ব্যাস্ত আঙ্গুল তোমার চুলে আদর বুনন
কোন এক আনমনা দুপুর ছুঁয়ে
হয়তো তুমি বুঝনি প্রেম এসেছিল নিরবে।

তোমার খুব ঝগড়ার ক্লাসরুম
আমার হাসতে থাকা উদাস আকাশ
তোমার চিমটি কাটা মিষ্টি ছোঁয়া কেন আমার তাতে
হাত বোলানো রাত কাটানো ভাবের প্রকাশ
তোমার রাগি মুখ আর গাল রক্তজবা
আমি শিল্পী তখন তোমার ঠোঁটে স্বপ্ন এঁকে বাচঁতে শেখা
আমার বন্ধু ভাবা আর তোমার মান অভিমান সবই
হয়তো তুমি বুঝনি প্রেম এসেছিল নিরবে।

পোষা কষ্টগুলো :- আহাম্মেদ হৃদয়



মনের ভিতরে পুষে রাখা
কষ্টগুলো ফুঁসে উঠতে চায় অন্তনির্শে

বলতে ইচ্ছে করে বজ্রকন্ঠ সুরে
আমি তো অভাগার সন্তান নয়।
তবে আজ কেনো লোকে আমাকে ডাকে
সমাজের দেওয়া নাম ধরে।

মার আদর স্নেহ ভালোবাসায়
কেটেছে আমার দিনকাল।
আজ আদর স্নেহ করার মতো কেউ নেই,
বলছি আমি এক সমাজের দেওয়া কাঙ্গাল।

হাজারো বায়না পূরণ করতে
চেষ্টায় ছিলো মা আমার।
আজ বায়না করতে মানা আমার
চেষ্টায় থাকি অন্ন যোগাতে।

বায়না আমার অন্ন দেয়না
কষ্টে কাটায় তিনবেলা।

আজ ভাগ্যর নিয়তির টানে,
রাত-যাপন করছি রাস্তার পশুদের সাথে।
এখন আমার দিনরাত কাটে
মার মতো মানুষের অবহেলা পেয়ে।

হাত পেতে বলি দুঃখি আমি
ধাক্কা মেরে বলে শালা এখানে কি?
আমি তো নবাবপুরের ছিলামনা দুঃখি।
নবাবের একমাত্র ছেলে ছিলাম আমি।

যারা আমার বাবার পদতলে ছিলো
আজ তারা আমাকে লাথি মারে।
সমাজ সেবার অন্তরালে
লুকানো ওদের লোমশ চরিত্র।

তাই, কখনো ইচ্ছে করে,
বনের হিংস্র পশু হয়ে যেতে।
ইচ্ছে করে প্রচন্ডগর্জনে
পৃথিবীটাকে কাঁপিয়ে দিতে।

আলো ছায়ার কথামালা : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়





।। চৌত্রিশ ।।


               আজ আমার এক ছাত্রী আমার কাছে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে হাজির। একটা প্রশ্নের ঘা সামলাতে না সামলাতে আরও একটা। প্রশ্ন শুনেই বোঝা যায়, এগুলো তার মনে অনেক দিন ধরে চেপে রাখা কথার পাহাড়। তার প্রশ্নগুলোকে পর পর সাজিয়ে দিলে ঠিক এরকম দাঁড়ায় --------- " আচ্ছা মানুষ সবসময় তার প্রিয় জিনিসটাকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে পেতে উদ্যত হয় কেনো ? তার প্রিয় ফুলের গাছটিকে বাগানে এনে বসায়, প্রিয় রঙের জামা পড়তে পছন্দ করে, প্রিয়  খাবার খেতে পছন্দ করে, প্রিয় রঙের জিনিসের প্রতি তার একটা আলাদা আকর্ষণ থাকে। এমন কি মানুষের ক্ষেত্রেও।  সে তার প্রিয় মানুষটিকে জীবনে পেতে চায়। প্রিয় জিনিস বা বস্তু বা মানুষটিকে, নিজের সব প্রিয় বিষয়গুলোকে নিজের করে পাওয়াটা কী খুব জরুরী ? "
               ভীষণ গরমের মধ্যে একটা মানুষ ঘরে ঢুকেই আগে সব জানলাগুলো খুলে দেয়। তারপর পাখাটা চালিয়ে দিয়ে মেঝেতে একটু বসে। ক্লান্তি বেশি থাকলে ঠাণ্ডা মেঝেতে সে শুয়েও পড়তে পারে। কিছুক্ষণ পরে স্নান করে সে বারান্দার ঠাণ্ডা হাওয়ায় এসে বসবে। এই যে মানুষটা বাড়ি ফিরে পর পর কাজগুলো করে গেল সবগুলোই তার ভালোলাগা। প্রিয় বলেই সবগুলোকে সে কাছে ডেকে নিল। শুধু তাই নয়, প্রিয় জিনিসগুলো তাকে ভালোও রাখলো।
               এবার একটু অন্য দিকে তাকাই। প্রিয় ফুল, প্রিয় পোশাক, প্রিয় খাবার ------ এগুলো তো আসলে খণ্ড খণ্ড আমি। এসবের যোগফলই তো সম্পূর্ণ আমি। এগুলো কেন প্রিয় ? কারণ এগুলো আমাকে ভালো রাখে। এগুলোর সংস্পর্শে আমি ভালো থাকি। আমার মাথার ওপর যে পাখাটা ঘুরছে, আমি চাইবো না পুরো গরমটায় পাখাটা আমার মাথার ওপর যেন সবসময় ঘোরে ? যে যে খাবারগুলো আমি ভালোবাসি আমি চাইবো না সারা বছর যেন আমি ওই খাবারগুলো খেতে পাই ?
               " নিজের সব প্রিয় বিষয়গুলোকে নিজের করে পাওয়াটা কী খুব জরুরী ? " ------- হ্যাঁ,  অবশ্যই জরুরী। তা যদি না হয় তাহলে তো ওই প্রচন্ড গরমের মধ্যে ক্লান্ত মানুষটার মাথার ওপর পাখাটা বন্ধ করে দিতে হয়। রৌদ্রদগ্ধ পথিক গাছের নিচে না দাঁড়িয়ে প্রখর রোদে দাঁড়িয়েই বিশ্রাম নিতে পারত। কিন্তু তা তো হয় না। সে তখন শীতলতাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়।
               প্রতিটা মানুষ চায়, তার চারপাশে যেন সবসময় ইতিবাচক আবহাওয়ার প্রাধান্য থাকে। যদিও তা মানুষ পায় না কিন্তু যাত্রাটা সেদিকেই থাকে।