নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

স্মৃতি :বৈশাখী চক্কোত্তি



বেশ তো আছো। আমার থেকে
 গুটিয়ে নিয়েছ নিজেকে
আমি খুঁজে মরি হণ্য হয়ে
তোমার স্পর্শ লেখনীতে ।

কখনো কি মনে পড়ে
এই শ্যামা মেয়েকে
উনুনতপা আঁচে, ধীরে ধীরে
সেঁকেছিলে যার মনকে?

ভালো থেকো ।
আর পথ হারিয়ে ফেলোনা ।
নদীর ঘন নীল জলে
বন্য গন্ধের আবেশ আর মিশিয়ে দিও না।

দোহাই প্রেম! আমার জীবনে
এনো না আর ফাগুনের বার্তা ।
থাক্ বন্ধ দরজা। কেন বারবার
করাঘাত হানো অশনি সংকেতের দরজা!!!

        

বসন্তের কনকাঞ্জলী: মান্নুজা খাতুন


প্রতিদিন  প্রত্যুষে ভেজাচুলের গোছা মেলে
কার কথা ভাবো তুমি!
 তোমার ভাবনায় এখনো কি আমি আছি?
যে আঁখিদ্বয়ে এঁকেছ  সীমানা অঞ্জনের কালো রেখায়
সেই চোখে আজ তুমি কার ছবি আঁকো?
যে মিস্টি অধরের  হাসির কারণ ছিলাম আমি
সেই অধর তাম্বুলে রঞ্জিত  করে
কার পথ পানে চেয়ে থাকো? কার মুখাবয়ব  দেখে মিটিমিটি  হাসো?
শীত গত হতে আর বাকি নেই বসন্ত নাড়ে দরজায় কড়া
প্রকৃতি সাজে আপন তেজে, বাতাস মুখরিত হয় নানা ফুলের  সৌরভে
সেই বসন্তের প্রথম  দিবসের প্রত্যুষে হলুদ ডুরে শাড়ি পরে আজ তুমি  কার ফেরার পথ চেয়ে রয়েছে?
প্রেয়সী,  বলিবে কি?
তোমার আঁখিদ্বয়ের কাজল, রক্তিম অধর,  হলুদ শাড়ি এসব কার জন্য?

তুমি না থাকলে :পলি ঘোষ



তুমি না থাকলে আমার কাছে
সকালটা এত মিষ্টি হতো না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
মেঘ করে যেত বৃষ্টি হতো না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে চাঁদটার গায়ে পরে যেত মরচে ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
আকাশের নক্ষত্ররা এত উজ্জ্বল হতো না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
স্বপ্নের রঙ্গ হয়ে যেত খয়েরি ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
বন বন করে দুনিয়াটা আর পারত না ঘুরতে ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
রামকৃষ্ণ -বিবেকানন্দের বাণী মিথ্যা হয়ে যেত ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
বাগানের ফুলগুলো এত সুন্দর হতো না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
দিবা -নিশির সম্পর্ক বুজতাম না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
মনের গভীরতা কি বুজতাম না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
সময়ের মূল্য কি বুজতাম না ।

তুমি না থাকলে আমার কাছে
প্রেমের যন্ত্রণা কি বুজতাম না ।

দেবীপক্ষ : রমা সিমলাই



এইমাত্র নিজের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফিরলাম !

পান্ডুলিপি জুড়ে বিষাদের একমুঠো ছাই !
প্রলয়ের  সাঙ্কেতিক রোজনামচায় এক ঘাটে
জল খাওয়া বাঘে গরুতে উপবাস করে আমার  তর্পণ করবে, কথা দিয়েছে !!

প্রবালপ্রাচীর থেকে নেমে আসা ধর্ষিতা মেয়েরা
মুক্তির আনন্দে সাবলীল সামিল হয়েছে যজ্ঞের
বেদীতে, যজ্ঞকাঠ আজকাল আগুনকে ভয় পাচ্ছে
বলে, মৃদু কিছু সমস্যা !!

অন্যরাতে পদাবলী আর রসকলি গল্পে যত কিছু
অমায়িক স্নিগ্ধ অনিয়ম, ভ্রূণ হত্যা করেছিলো নিয়মিত, প্রেতযোনী রাতে তাদের সে কী হাসাহাসি,
বৈধ নথিপত্র নিয়েই  একমাঠ কুরুক্ষেত্র !!

ও মানুষ, মাটির বিকলাঙ্গ সন্তান..........
পোড়ামাটি ছেনে যেটুকু আমিষ সুখ জড়ো করেছো, আমার অনাত্মীয় শরীরের নদী ঢেউ উপত্যকা অন্ধকার নিয়ে শ্মশানের পথময় যতখানি
আদিখ্যেতা দিলে, আমি তাকে আপন ভাবি নি।

নিজের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফিরেছি ।
                                     এবার পোড়াবো তোমায়  ।

               
                 আমি আজ দেবীপক্ষ  !!!


অপেক্ষা :নাহার নাসরিন


সকাল থেকে বসে আছি অপেক্ষায় তোর         
আসবি বলেছিলি এলি না তো কই?
এক ঘণ্টা দুই ঘণ্টা তিন ঘণ্টা বসে,
এমন করেই প্রাণ বাঁচাস ডাক্তার তুই অবশেষে?
আশার বাঁধন যাচ্ছে ছিঁড়ে আর কতক্ষণ
শত শত মানুষ যে চেয়ে আছে তোর দিকে সর্বক্ষণ।
আস্তে আস্তে নিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে বিশ্বাস
তবুও আছি অপেক্ষায় নিয়ে মনে বিশ্বাস।
অবশেষে,
আসবি তুই দেখবি নাস, বলবি শেষে সর্বনাশ।
চোখ রাঙিয়ে বলবি আমায়
এতো দেরি করলে কী হয়।
ইচ্ছে হল বলি একবার করি নি আমি দেরি
অপেক্ষায় ছিলাম আমি, এসেছি অনেক আগেই।।

সুখী ও অসুখী ঘাম : উজান উপাধ্যায়


শক্ত করে এঁটে বসা প্লাস্টিক আবরণ তুলে দিতে গেলে আঁঠার শত্রু কোনও তরলকে খুব প্রয়োজন।

শহরে গরম এলে মানুষের দ্বিস্তরীয় খোসা উঠে যায়। ফুটপাতে নিরাময়ী চোখ রাখে আঁশহীন খোলামেলা  ফল, বহুতল ছেড়ে আসা ক্লান্ত টহল।  খোসা ছুঁড়ে ছায়া ফুঁড়ে বেহুলা আঁচল -- হঠাৎ রাস্তা জুড়ে সারি সারি বৃহন্নলা গাছ-চিঠি জুড়ে নাগরিক ঘাম বাধ্য শহর জুড়ে ছড়িয়েছে সুখের অসুখ। অসুখের পারদেরা উপেক্ষিত বিধবার সিঁথি জোড়ে, শিৎকারে শিষ্ট নষ্টামির পালতোলা খাম।

শহরে গরম এলে পরিযায়ী পাখিদের প্রবল আরাম। শেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরা গাছগুলো দিনগত পাপক্ষয়ে মুছে ফেলে শহরের নাম।  সুখী ও অসুখী ঘাম প্রয়োজন অনুসারে চুকিয়েছে ভ্রমনের দাম।