নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সত্যি :সুমিত ভদ্র



বিস্তৃত কংক্রিটের রাস্তা;
হাঁটতে হাঁটতে একদিন ব্যর্থতার দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে,
সেলাইয়ের পরে সেফ্টিপিনে আটকানো হাওয়াই চটিটা।
পথের ধারে সস্তার ল্যাড়ো বিস্কুট আর এক কাপ গরম লাল চায়ের ধোঁয়াতে
একনিমেষে ফ্যাকাসে হয়ে আসে ঝা চকচকে শহরতলি।
তবুও চোখ বন্ধ করলে
এখনও সামনে আসে নিজের হাতে সাজানো আলোকিত এক স্বপ্নপুরী;
একমুহুর্তের মধ্যেই সমস্ত স্বপ্ন চুরমার করে
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে দেনায় জর্জরিত পরিবার আর বেকারত্বের সাথে গভীর সম্পর্ক।
জীবনে কখনও প্রেম ছিল,
ছিল চিত্রকলাতে নতুন নতুন সৃষ্টির আনন্দ-
আজ সবই অতীত,
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দায়ে প্রেম আজ পরিণত বিচ্ছেদে
আর ভার্জিন ক্যানভাসের মতোই সাদা হয়ে থাকে জীবনের সব সৃষ্টির উল্লাস!
তবুও আত্মবিশ্বাস হারায়নি কখনও ছেলেটি;
বুকের মাঝে আজও বাঁচে রবির কলম-
"নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন হবেই হবে।"

দ্বন্দ্ব :মান্নুজা খাতুন



আর কতদিন প্রিয়!

আর কতদিন চলবে এভাবে?

আর কতদিন সময় চুরি করে গঙ্গার তীরে নির্জনতা খুঁজতে হবে?

আর ভালো লাগে না,

এইভাবে চুরি করে ভালোবেসে যেতে

মনে একরাশ ভয় নিয়ে অভিসারে বেরোতে

একটা দুটো কথা বলে মনে শান্তি আনতে 

আর ভালো লাগে না

নিছক আকর্ষন অনুভব করতে

গঙ্গার তীরে নির্জনতা খুঁজতে খুঁজতে বড্ড ক্লান্ত আমি

এত পরিচিত হয়েও অপরিচিতের মতো  একরাশ ক্লান্তি আর অভিমান নিয়ে গৃহে ফিরতে  !

আর কতদিন  সমাজের সমস্ত কুসংস্কার মুছে যাওয়ার পথ চেয়ে রইব?

জ্বর :মাধব মণ্ডল


এ্যাতো ডাকঘুড়ি
এ্যাতো ভোঁ ভোঁ
রক্তে দুলছে জ্বর

আর তো প্রভাবিত হও না

আমার হাজারটা মন
কান্ডজ্ঞান ছিঁড়ছে
রক্তে দুলছে জ্বর

এই অসময়ে তুমি একটা ধাতব স্ট্যাচু হলে

সময় গিলছে আমাকে
চিরস্থায়ী ওষুধে ডুবছি
রক্তে দুলছে জ্বর

তোমার মুখের ভাষা আরো শক্ত হলো

অপেক্ষা পাথর ছুঁড়ছে
আমার ফুসফুস, লিভার আর কিডনি বরাবর
রক্তে দুলছে জ্বর

কপালে বাতিল ছাপ্পা মেরে গুম হয়ে থাকো খালি!

পথে হারা কিশোর জামান আহম্মেদ ইমন



পথে হারা কিশোর আমি
যাচ্ছে থেমে সুর,
যতই ভালোবাসি যাই তোমায়
আমায় রাখ দূর।

আমার পাশে কেউ ছিলোনা
ছিলে শুধুই তুমি,
পাঁজর ভেঙে আঁড়াল হয়েছো
আমি শুকনো ভূমি।

চোখের কূলে জোয়ার তুমি
না আসিলেই ভাঁটা,
আমার ভালোবাসার মানুষ তিথি
স্মৃতি ছাড়াই ঘাটা।

আমি কবি না, দুঃখ পুষি! : অলোক মিত্র



আমি কবিতাকে বুঝি না
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই,
মনের অজান্তে বিরবির করি
দুঃখের প্রলাপন।
দুঃখ সেও ইদানিং হয়েছে চতুর,
রঙ বদলিয়ে ভাইরাসের মতো।
গেও এই ছবির কাছে ছায়া এসে
বলে দেয়, দ্যাখ তো কেমন
বুড়ো হয়ে যাচ্ছিস সময়ের অতলে।
চলে আসছে প্রথম দশক, নুতনের
আগমন, আমি তো গেও ছায়া
কবিতাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি
প্রান্তিক কৃষাণি কইন্যার মায়াভরা বুক।
কি মায়া লাগাইলো মনের গহীন তিমিরে,
ধুম তানা না না! কাচের চুড়ি,
অল্পভাসি কইন্যার মায়াভরা
মুখটি ভাসে ভরদুপুরে পদ্মজলে।
দুঃখ সেও হয়েছে দারুন চতুর,
হুট করে হানা দেয় বুকের ভিতর
হৃদের নরম শরীর।
তির তির বাতাস বহে রক্তস্রোত
বাম অলিন্দে শস্য শ্যামল বাংলা আমার।
ডাল অলিন্দে দুঃখছায়া কবিতা আমার
বাম নিলয়ে শুভ্র সকাল, ডান নিলয়ে
বলেশ্বর আর সন্ধা নদীর ঢেউ ছলাত ছলাত
আমি কবি নই, দুঃখ পুষি
ছায়া এসে বলে, অনেক তো হোল
চল এবার আকাশবাড়ি,
মেঘেরা সব নিয়ে নিবে তোর দুঃখ ভারী
সুয্যি হেসে দেখ না আজকে নিসর্গ পরী।

থেমে আছে : সুজাতা মিশ্র



সেইখানে থেমে আছে , যেইখানে জ্বলেছিল বিদ্যুৎ,
সন্ধ্যেবেলার অবসরে। সেইখানে সেই নিঃশেষ অচ্ছুৎ।
বিছানা হাতড়ানো সেই,  থেমে আছে বালিশের ঘ্রানে।
উপনদী মেশে আশ্বাসে। বর্ষা ভেজে শিউলির স্নানে।