নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

শোকার্ত মানচিত্র আমার : গোলাম মোস্তফা লিটু



মানবরুপী কতিপয়
দাতাল শুয়োরের কাছে সহসাই
ধর্ষিত হচ্ছে আমার মানচিত্র

সেই সব দাতাল শুয়োরের
বিষাক্ত দাত ও নখের আচরে
প্রত্যহ ই- রক্তাক্ত
ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে আমার মানচিত্রের
অধর, বুক পেট সর্বাঙ্গ

অভিজাত এলাকায়, পল্লীগায়ে
সেনাকুঞ্জে, আপনালয়ে
শহর কিংবা মফস্বলে ;
চলন্ত যানবাহনে, বনে জংগলে
পুকুর-ডোবার ধারে - সর্বব্যাপী
প্রত্যহ ই ধর্ষিত
রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে
আমার মানচিত্র

কতিপয় শিক্ষিত অ-শিক্ষিত
বিকৃত মস্তিষ্কধারী দু'পায়ের
দাতাল শুয়োরের
বিকৃত লালসার হিংস্র তান্ডবে
প্রতিনিয়ত দংশিত হচ্ছে
আমার মানচিত্র

রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত
শোকার্ত মানচিত্র আমার
কখনো নিভৃতে
ফেলছে চোখের জল
কখনো আপনার জীবনটাকে
করছে উৎসর্গ
অনন্ত - অসীমের কাছে।।

নৈঃশব্দের ব্যকরণ : নয়ন হাফিজ


সঙ্গম শেষে ক্লান্ত দেহে নেমে এলো অমাবস্যা, দু চার ফোঁটা বাক্য বিনিময় শেষ করে স্বপ্নের রেশ ক্রমাগত যাত্রা শুরু করলো নামহীন কোনো জনপদে, যেখানে অপ্সরীরা নগ্ন সুঠাম শাদা স্তনে প্রস্তর খচিত মানচিত্র ও উন্মুক্ত জংঘায় ঈশ্বরের নিস্তব্ধতা আঁকে।

নৈঃশব্দের ব্যকরণ ঘেসা ভুখণ্ডে সাপের খোলস জুড়ে থাকা ক'ফোঁটা শিশির, যেন সমুদ্রের আদিমতায় নুড়ি, পাথর কিংবা পোড়ামাটির ফলকে ছাপ রাখা প্রাচীনতম ভাষা।

শিশ্ন ক্রমশ সময়ের ছোঁয়া পেয়ে সমাজতন্ত্রের দিকে ধাবিত হয়ে পুঁজিবাদের বেশ্যালয়ে গনোরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে লাশকাটা ঘরে ব্যবচ্ছেদে উদাম করে রেখেছে অণ্ডকোষ।

হলদিয়া ধূমকেতু বাংলা ব্যান্ড। : শিশিরবিন্দু দত্ত



একটা  বেগুনীরঙের স্করপিও থামে,
একজন  বেসুরো  সিরিয়াল তারা
আর তার সাথে দু'জন সুডৌল নর্তকী  নামে।
প্রচুর ভিড় সেই খুল্লম  রাতে
খোলামেলা পোশাক ছাদনাতে,
উত্তাল পারাবার পার  হয়  জনতা  শব্দ রথে।
আর আমরা চারজন
করে যাই রোপন
সুরের বাঁশি বৃক্ষ  আমাদের  চেনা  গাঁয়ের  পথে।

আমাদের  জল নেই,
ছায়াটাও  বড়ো বিব্রত।
দু'একজন  দাঁড়িয়ে থাকে দূরে
সান্ত্বনার প্রলেপের  মতো।
আমাদের আকাশও নেই,
না কোনো পরিচিত  তারা,
মিথ্যে বলা কোনো  পুতুল ও নেই,
কাপড় সরিয়ে যে দিতে পারে  হরমোনাল  সাড়া।

আমরা  দিগন্ত খুলি,
স্বপ্ন জুড়ে কল্পনার সাগরে বুদবুদ,
ওভাবে  রাখিনা আমরা 
আতসকাচের নীচে  হঠাৎ  বারুদ।
আমরা সবাই মিলে  আমাদের  পরমায়ু,
নৈঃশব্দের  সুরে গাই 
বিদ্যুৎ -ধোঁয়া -জলবায়ু
রবীন্দ্রনাথ-লালন...
সদ্য প্রেমে পড়া  পাপড়ির প্রিয়  আলিঙ্গন।
কেউ নেই তার,  তাই ইচ্ছে -কোদালগুলো
মিথ্যে  থেকে  যায়,
হয়না কোনো কিছু,  সব  হওয়া বাকী  রেখে যায়
সম্ভাব্য  হাওয়ায়....
অকালবৃদ্ধ হয়ে ওঠে  ঘাসের  সুঘ্রাণ,
আমরা তবুও  গাই  সুতো বাঁধার  গান,
আমরা  তবুও গাই  প্রতিবাদের গান,
আমরা সবাই মিলে বাজাই ঐকতান...

নুনের কৌটো : অসীম মালিক


             
                     ( ১)
নুন ,
তুইতো ঝালেও আছিস
ঝোলেও আছিস
অম্বলেও আছিস ।

তুই তো সমুদ্রকে ভালোবাসিস !

নুন ,আমি যে বস্তির দগ্ধ চাঁদ ,
তোকে উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাই ---
একমুঠো গরম ভাতের সঙ্গে
তুই একটিবার আমার ঘরে আসিস ।

                            (২)
নুন
    নুন
         নুন ....

তোর গুনে বিস্বাদ লাগেনি ,
                         কচিপাঁঠার খুন !

                              (৩)

নুন ,
তুই কি খবর রাখিস ?
        একটা আস্ত নদী খেয়েও
                  কেন সমুদ্রের হয়না অবগুন !

                                  (৪)
নুন ,
   নুন ,
       নুন ....

তোকে দেখেছি ঘামে ।
শূন্য থালায় হারিয়ে গেছিস ,
                  ধর্মতলার জ্যামে ....

                                      (৫)
নুন ,
তুই কি জানিস ?
অন্ধকারেও বস্তির ছেলেটা
করে
      গুন
            গুন ....

                                    (৬)
নুন ,
   নুন ,
       নুন .....

ভাতের থালা দোলপূর্ণিমার চাঁদ হলে
            তুই আমার ফাগুন ...

কি আশায় বাঁধি খেলাঘর : রোমা মন্ডল ব্যানার্জি



জীবন হতে স্বেচ্ছামৃত্যূ আমিও তো চেয়েছিলাম ..
তবু একদিনও  মৃত্যূর  জন্ম দিতে  পারিনি...

মনের  চিতায়  কাঠ  তুলেছি  বহুবার ,
এই  ধর  যতোবার জেনে বুঝে 'তুমিরা' হত্যা করতে চেয়েছ আমায়, ততোধিক..
কিন্তু  মুখাগ্নি করার প্রেম প্রতিশ্রুতি  কেও তো কোনদিন করলে না আমার  সাথে....!

মৃত্যূকে তো আমি ভয় পাইনি,
মৃত্যূকে কিছু ভালোবাসতে শিখেছিলাম,
যেমন প্রেম ছিল কিছু "তুমিতে'..
কিন্তু ছেঁড়া রক্তের গন্ধ আমার কোনদিন ভালো লাগেনি, সেই কৈশোরে যখন  প্রথম ঋতুমতি  হয়েছিলাম,সেদিন থেকে রক্ত আমাকে স্পর্শিত করে রেখেছে,যেমন প্রতিদিন স্পর্শ করে রাখে কিছু 'তুমির' অবারিত  প্রেম ....

যেমন  করে 'তুমিরা' ভালোবাসাহীন শরীর  দিতে  চাও রোজ , তেমন করেই  আমি রক্তশূন্য মৃত্যূ ভালোবাসতে  শিখেছি, 'তুমিদের' দেওয়া  আঘাতে যন্ত্রণা আসে, ব্যথারা মাথা  তোলে,যেমন আমার প্রথম কৈশোরে মুখ তুলেছিলে 'তুমিরা'....

মনেরও  রক্তক্ষরন  হয়,
তবে তা তোমাদের মৌনতার মতই  নীরব,
মনের  রক্তক্ষরন  কেও দেখেনা,
দেখনি তো কোন 'তুমিরাও'...
কিন্তু  তাতে তো 'তুমিদের' স্পর্শ ছিল..
তবে  ...?

যে 'তুমি' টা আমাকে চেয়েছিলে আশৈশব,
সে  'তুমি'ও তো পারতে খানিক জীবন শেখাতে  কিন্তু যতোবার প্রেমের  কথা  বলেছ ততোবারই স্পর্শের মোহে মৃত্যূর কথা শুনিয়েছ বার বার...
একটুও "জীবন"  শোনাওনি কেন  ?..

আর যে 'তুমিকে',
আমি  চেয়েছিলাম  কৈশোরী রোদে,
সে 'তুমিটা' নিখোঁজ নও,তবে আলোকবর্ষ  দূরত্বে সে  'তুমি' কবেই  নিরুদ্দেশ.......
মানুষ  হারালে,খুঁজে  পাওয়া  যায় ,
কিন্তু স্বেচ্ছায় চলে গেলে তাকে তো খুঁজে পাওয়া যায় না...
চলে  যেতে  যেতেও নিভৃত্যে  মৃত্যূ  শিখিয়ে  গেছ, ...

আর  যে  'তুমিদের' কাছে আমি রোজ থাকি সেই  'তুমিদের' কাছ থেকে কি চেয়েছিলাম আমি ?
মনে নেই তা, তবে যতদূর  মনে পড়ে তাদের সাথে ছিলতো আমার বহু বাস,সহবাস.....
তবু জীবন শেখায়নি তারা,
শেখায়নি  বাঁচতে...
তাই ঘৃণাটুকু প্রাপ্তিতে  রেখে
একদিন স্বেচ্ছামৃত্যূ চেয়েছিলাম আমিও...
কিন্তু  পারিনি...

বুজেছি , জীবনের থেকে  মৃত্যূ বড়  নয়..

হয়তো আমি 'তুমি' কেন্দ্রিক, কিছু  'তুমির' কাছে  হেরে  যাওয়া  মানুষ, এক জীবনে  কত  'তুমি' আসে  আবার  কত  'তুমিরা' চলেও  যায়, তবু আমি কেবল 'তুমিরে' তিমিরাচ্ছান্ন.....

একদিন কোন 'তুমি'ই তো আমাকে প্রথম দেহজ প্রেম শিখিয়েছিলে,কেও বা শিখিয়েছ ঘৃণা ,
কিন্তু এজীবনে কেও অথবা কোন 'তুমি' আমাকে জীবন শেখালে না কেন ??

তবু,
জীবন ভালোবাসি,
তাইতো, জীবন মৃত্যূ যন্ত্রণার মূলমধ্য রেখাতে কোনদিন মৃত্যূর জন্ম দিতে পারিনি,
বার বার জন্ম দিই জীবনের.....

তোমরা আমাকে  পতিতা  বলে  চেন  ,
আর,আমি বলি  নিজেকে গর্ভধারিনী  মা ..

বেরঙ: মৌসুমী রায়



আমার ধূসর শহর ধূসরই থাকুক..
যেমন করে কাটছে দিন কাটুক
সেই শূন্য থেকে শূন্যেই যাব ফিরে
এই বুকের আগুন অন্য বুকে নাইবা জ্বলুক।
আমি মেঘকে দাবড়ে রাখি বুকের মাঝে..
সময়ের সাথে সিঁথির রঙ ফিকে হচ্ছে
গোধূলীর রঙ চড়া দামে বিকোচ্ছে,
আর কেউ নিক আমি থাকি বেরঙ সাজে।
আমার ধার করা দিন বাঁচার যে ঋণ...
বাড়ছে হিসাব খাতে
তোমার ঠোঁট দিয়ে আমার কপাল ছুঁয়ে দেখো
ঋণ বেড়েছে তোমার কাছেও
আমার ভুলের হিসাব তোমার কাছেই রেখো।
যেদিন আমি শূন্যে ফিরে যাব..
সেদিন শুধু আমার হয়েই থেকো।