নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

শুভম চক্রবর্তী





অপেক্ষা




চায়ের বাসন টা উলটাতেই দেখি শয়ে শয়ে হাজার হাজার পিপড়ে,
আমাকে ওদের মারতেই হবে,অপেক্ষার কৌতুহল আমার নেই।ভাবছি জলে ডুবিয়ে মারবো না আগুনে পুড়িয়ে,যন্ত্রনার তুল‍্য মূল্য হিসেব করছি,
ওমনি একটা বিড়াল আধময়লা বেসিন থেকে আমার দৃষ্টি টেনে নিয়ে গেলো ব‍্যালকনি তে,ব‍্যালকনি থেকে এক ঝাপ(নিসঙ্গ দুপুরে দু বার কাকের ডাক) -বিপরীত দোতালায় প্রেমিকা সুলভ কোনো লক্ষণ না দেখিয়ে রীনা বারান্দায় পায়চারি করছে,কানে মোবাইল ফোন(এই বাড়িটাই আমার বাড়ি,এই বাড়িটাই আমার মামাবাড়ি,এই পাড়া,এই পঞ্চাশ একর আকাশ আমার পূর্বপুরুষের,তোকে গিলে খাবো ধরণের প্রবৃত্তি সূচক মনস্তত্ত্বের ব‍্যাকগ্ৰাউন্ড)কোনোদিন কোনো অপেক্ষা ছিল না টাইপ মুখভঙ্গি,
আমি চোখ উচিয়ে ওর মাথার উপর দিয়ে আকাশ টা দেখে নি,
ও দেখে নেয় আড়চোখে আমাকে,
না নিশ্চিতভাবে এখনো নীল ওর চোখদুটো আর আকাশ।
আসতে করে নামিয়ে রাখি চায়ের বাটি,তখনো গিজগিজ করছে পিপড়ে,(কোনো জীবন তুচ্ছ নয়-কোনো জীবন তুচ্ছ নয়-কোনো জীবন তুচ্ছ নয়! ধরণের বিদ্রুপ মূলক নেকা মনস্তত্ত্বের ব‍্যাকগ্ৰাউন্ড)
না আমার কোনো তাড়া নেই,
বাইরে তাকাই,রীনা তখনো দাড়িয়ে।
আমি 'রীনা ও আকাশের' মাঝে কোথাও একটা তাকিয়ে,
সবটাই কি আশ্চর্যরকম নীল-
দুপুর, দুপুর থেকে রীনার চোখ,চোখ থেকে আকাশ,আকাশ থেকে এক ঝাপ-বিড়াল টা আবার ফিরে এসেছে,(আমি বিড়ালের মতো ঝাপ দিতে পারিনা কেনো?)
রীনা তখনো দাড়িয়ে,পিপড়ে গুলো তখনো গিজগিজ করছে(আমরা বেচে আছি-আমরা বেচে আছি-আমরা বেচে আছি-আমরা বেচে আছি! ধরণের জটিল মনস্তত্ত্বের কমপ্লেক্স ব‍্যাকগ্ৰাউন্ড)।



কাজী জুবেরী মোস্তাক






চলছে সব রুটিন মাফিক 

 

এ শহরে রোজই রুটিন মাফিকই সূর্য ওঠে
ভগবানের খোঁজে সবাই মন্দির কিম্বা মঠে
রুটিন মাফিক ব্যাস্ত সবাই খোদার খোঁজে 
গীর্জাতেও জমেছে মানুষ ঈশ্বরের খোঁজে ৷

এ শহরে রোজই রুটিন মাফিক সকাল হয়
পোড়া কপাল বেকার ঘুরে অফিস পাড়ায় 
ক্ষুধার্ত তবুও খায়না মানিব্যাগ ফাঁকা বলে 
কর্পোরেট লোকগুলো ব্যাস্ত নিজ কর্মস্থলে ৷

এ শহরে রোজ রুটিন করে স্কুলবাস আসে 
বখাটে ছেলেগুলো রোজই স্বপ্ন দেখে বাঁচে
সময়ের মতোই আজকে চলে যাচ্ছে সময়
তবু বুকে আছে ঘুরে দাড়ানোর দৃঢ় প্রত্যয় ৷

এ শহরে রোজ রুটিন মাফিক মৃত্যু আসে
আমার দরজায় যমদূত কখন যেন আসে
চিতা জ্বলে,গোড় খুড়ে কফিন প্রস্তুত সদা
আমার মৃত্যুতে চাইনা কারোই শোকগাথা ৷

এ শহরে রোজ রুটিন মাফিক ট্রেন আসে
চেনা অচেনা কতো মুখ স্বপ্ন দেখতে আসে
কোনঠাসা হয়েও পড়ে থাকে কতশত স্বপ্ন
তবুও সে লড়াই চলছে জীবন করে বিপন্ন ৷

মৌমিতা মিত্র







ছড়ানো আলোর কথকথা
---------------------------




মাথার অনেকটা ওপরে আলো ছড়িয়ে।
আল ধরে ধরে কাছে যেতেই, আলো
টুকরো টুকরো হয়ে ভাঙতে থাকে।

টুকরোগুলো আগলে ধরে এক একটা মানুষ

আমিও হাত বাড়াই
একটা লোক --- তার হাত পা পাতার মত ছড়িয়ে---
ছায়া হয়ে উঠে আসে শুধু।
লোকটার শরীরের ভাঁজে ভাঁজে সময়ের দাগ।
কথা জমে জমে আজ ওর জিভ নড়ে না আর।
লোকটার দুটো চোখ আবছা।
ও স্মৃতি হারাতে চেয়েছে রোজ
একটু একটু করে।

সৌরভ ঘোষ




রুট চেঞ্জ




সন্ধ্যার পায়ের কাছে বিকেল নত জানু 
ছড়িয়ে ছিটিয়ে দূর...
জোনাকি আলোগুলো পাড়া ভাগ করে দেয়।

এখানে,
স্টিফ ড্রিঙ্ক,ভালো এসকর্ট 
হাফ কাপল অফ নাইস হার্ড ফাক,
দেন স্লিপ টিল নুন...
চলবে না।
কারণ এটা লাস্ট ভেগাস নয়। 
এখানে, 
পাখিরা সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে...

লাস্ট ভেগাস না হওয়ার দুঃখে
দাঁত ঠোঁট কামড়ায়,
জিভ কেঁপে কেঁপে মিমাংসা খোঁজে। 
কেন যে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু হল না?
উষ্ণ মন্ডল বড় বেহায়া...
কষিয়ে পাঞ্চ লাইন ছাড়তে ইচ্ছে করে...

রঙিন সংসার সামাজিক যাত্রাপালা,
নাগরিকের চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করতে করতে
জীবন ব্ল্যাকহোল ছেড়ে বেরোতেই পারে না।
সখগুলো যেন মরা অস্ট্রিচের গলায় বাঁধা হাঙ্গা

সুদীপ্ত বিশ্বাস






জংলী রাত


ব্যাঙ চললো ব্যাংককে আর
চিল চললো চাইনাতে
রাত দুপুরে গান ধরল
হাসনাবাদের হায়নাতে।

মৎস্য বলে, ‘বৎস শোনো,
চিংড়ি কোনও মাছই না।’
নেংটি বলে, ‘মাউস রে তোর
রঙ্গ দেখে বাঁচি না!’

হাঁড়ি নিয়ে হাঁড়িচাচা
যেই না গেল বাজারে
হোগলডুরির হুক্কা শেয়াল
উঠল ডেকে হাজারে।

ঘোঁত-ঘোঁতিয়ে বলল ঘোঁতু,
'আমায় কিন্তু ঘাঁটাস না
রাত দুপুরে ঘুমের সময়
চেঁচিয়ে গলা ফাটাস না।'

কঙ্গো থেকে কুমীর এল,
সোঁদরবনে সাঁতরে!
বাঘ বাবাজী উঠল হেঁকে,
'আমরা রাজার জাত রে।'

চাঁদনী রাতে চালতা গাছে
পেত্নি বাজায় করতাল
হেঁড়ে গলায় হাকিম হাঁকে,
'কালকে হবে হরতাল।'

এমন সময় তেঁতুল গাছে
ভূতের রাজা মামদো
রাত দুপুরে বায়না ধরে,
‘পেত্নি, মুঝে হাম দো!’

পেত্নি বলে, ‘মামদো রে তুই
ঘুমটা দিলি চটকে,
মটাশ করে এইবারে তোর
ঘাড়টা দেব মটকে।’

সুনন্দ মন্ডল





এক চক্ষু হরিণ


                  

    নীল দিগন্ত ছুঁয়েছে সমুদ্রের কোমর
      পাখিটার গান ভেসে আসে তীরে
    বট গাছের ফাঁকে সূর্যের ক্ষীন আভা
    মলিন বুক পেতেছে সবুজ চাদরে।

   রাজা ছিল এক সেদিনের আসন আঁকড়ে
   ‎পদ তলে হাজার অনুগত আর সহযোদ্ধা
   ‎রক্তের মদে মেতেছিল বনানীর কোলে
   ‎শিকারী হাতে মেপেছিল জ্ঞানের বোদ্ধা।

   খুন করেছিল পাপ হয়েছিল পাপী 
   ‎ভাগ নেয়নি কেউই তপের ফলযোগ
   ‎নিশ্চুপে থেমে গিয়েছিল রথের চাকা
   ‎ঘিরেছিল এক অনাগত মারন রোগ।

   চোখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সব গিলে নিত যে
   হারাল বনের মাঝেই বাণ ভুলে শাপে
   এক চক্ষু হরিণ এর মতোই জীবন এখন
   কত সুখ হারিয়ে শুধু দুঃখটাকেই মাপে।