নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

আফরোজা সুলতানা






অবক্ষয়ের মানচিত্র
*****************



আমার শহর জুড়ে মোমবাতি মিছিল 
তবু ভরা গ্যালো  না মা এর শূন্য কোল 
বন্ধের ডাক ডেকে প্রতিবাদী চিৎকার, 
তবু দুর্নীতির রেশ চলে অকুণ্ঠোচিত্তে 
কড়া আইন অনুমোদনে অনীহা 
তাই তো খূকী থেকে বৃদ্ধা সকলেই ধর্ষিতা ।
সমকামীরা পেয়ে গ্যালো ছাড়পত্র 
দেখিয়ে বাকি ভিন্ন প্রেমিকদের বৃদ্ধাঙুল 
তাই আজও কোনো জুটি গলায় ফাঁস দেয় 
আজও কোনো রিজওয়ানুর 
রেলে কাটা পড়ে থাকে ।



রণধীর রায়






একটি ঘুড়ির গল্প
****************



(...যদিও এ বাংলায় শখ করে কেউ শোভাবাজারের শোভা বাড়াতে আসে না। দূর্গা প্রতিমাই পূজ্য।)


লাল ঘুড়িটা টলতে টলতে চৌমাথার মোড়ে
 আছড়ে পড়ল দারূণ অনিহায়,
লাটাই বিচ্ছিন্ন বহুদিন, তবুও-
 আকাশ ছাড়েনি এতকাল
নিজের অজান্তেই ভেসে বেড়িয়েছে বহুরূপী ঘুড়ি
কখনও  নৌকা কখনও মুখপোড়া।

আকাশের বুকে ঘুড়ি না কী
 ঘুড়ির বুকে অসীম আকাশ?
বড় রাস্তার দু'চোখ দেখেছে ঘুড়ির আস্ফলন
দেখেছে হাওয়া বদলে ঘুড়ির নোনাজল
বুড়ো তাল গাছটা দেখেছে ওর প্রণয়
কী ভিষণ জেদ!

তবুও আজ আছড়ে পড়ল ঘুড়িটা।
শিশুর নরম পায়ের মত টলমল করছে ওর শরীর
ভেজাপাতা অমসৃণ ত্বক এখনও লাল
কপালের লাল দাগ যদিও অস্পষ্ট
কিছুটা অভিমানী স্কুল পড়ুয়ার মত অসংযমি চাউনি
অবাধ্য নদীর মতন কুল ভাঙা গতি আজ ক্লান্ত
শুধুই হাতেহাতে হাত বদল যে!

লাল ঘুড়িটা আজ ভো-কাট্টা।

জারা সোমা






(১)



মৃত্যুর ঠোঁটে চুম্বন আঁকতেই
জ্বলে উঠল স্ফুলিঙ্গ
ছাঁইচাপা ইতিহাসে বস্তাপচা সেন্টিমেন্ট
বস্তুবাদের কাছে জমা রাখি বোধ
অনুভূতিহীন স্পর্শ কেবল 
বাড়িয়ে তোলে যৌনচাহিদা

আধখাওয়া চাঁদের মতো অভুক্ত
সম্পর্কের দূরত্ব, বহমান সময়ে
তবুও সাবলীল হয়না লগ্নজিতা
প্রেমজ সংলাপ......



(২)


তোমাকে ধুমকেতু বলেই জানি
কতবছরের ব্যবধান যেন
নীলআকাশে পেঁজামেঘ দেখলে
বুঝি শরৎ এসেছে
আসলে তুমি এলেই
আনমনে বাজতে থাকে ঢাক
আমার শারদীয়া ঘটে
  মহাপঞ্চমী থেকে মহাদশমী 

আমি কেবল সময় চেয়েছিলাম
তুমি মাত্র ভরিয়েছ গন্ডূষ।।।

সুষ্মিতা কর

   


ব্যর্থ প্রেমিকা
**************



নজর রাখি রোজই যখনই আসো তুমি
জানালার সামনে বসানো গ্যালিলিওর দূরবীনে,
চাইতাম তোমার জগৎকে প্রদক্ষিণ করতে
কোপারনিকাসের সূত্রে চাঁদ রূপে।
অনভিজ্ঞ হাতে সাদা কাগজের উপর
মন্থর গতিতে চলত ফাউনটেইন কলমের আঁচড়-
অসমাপ্তই থেকে যেত প্রতিটি চিঠি
আর, মনে চলত অবিরাম ঘূর্ণিঝড়।
সময়ের সমুদ্রে জাহাজ ফেললাম কম্পাস হাতে
যোগ্যতার দেশ আবিষ্কারের তাড়নায়;
সামাজিক দুর্যোগ, পরনিন্দার বৃষ্টি,
চর্চার স্রোতে ভেসে জাহাজ এগোয়।
সাফল্যের স্পর্শ পেয়েছি জানাতে
ছুটে যাই প্রাপ্তির থলি নিয়ে;
বসে আছো, পাশে সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী
নতুন আবিষ্কার তুমি ছাদনাতলায়!
নই শরৎচন্দ্রের 'দেবদাস'; ব্যর্থ প্রেমিকা আমি-
নই কোনো উপন্যাসের নায়িকা,
সহ্য করতেই হল কষ্টটা
হতে পারিনি যে রবীঠাকুরের 'বলাকা'!
ফেলে দিলাম ডাস্টবিনে অবাঞ্ছিত চিঠিগুলি
অনুভব করলাম অন্য বাতাস জানালা খুলতেই
মুছে যাচ্ছে সব গুমোট গন্ধ, বদ্ধতা,
পাচ্ছি এক স্নিগ্ধতা নিঃশ্বাস নিতেই।

প্রশান্ত সেন






জতুগৃহে

*******



ঝলসে গেছে কলজেটা তোর
রাজনীতি-বোম বিস্ফোরণে
খবর তো নয়, খাবার তো সব
মশলা একটু দিস্ ফোড়নে।

আমরা-ওরা দামড়া বুড়ো,
চাল চেলে  যায় দাবার ঘুঁটি
আকাশপানে নিথর চেয়ে
বছর সাতের ও-চোখ দুটি...


ছুঁড়ছি কাদা এর মুখে ও
মাতছি সবাই তরজা গানেই
ঘুম ভাঙলে দেখব যেদিন
সাবধানতার দরজাটা নেই


সেদিনও কি খুলবে রে চোখ?
বিবেক সেদিন জাগবে কি হে?
আমরা কিন্তু করছি যাপন
জীবনটা এই জতুগৃহে।

কিশলয় গুপ্ত



সহজিয়া
*********



ভাঙনের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে নদীর শীৎকার শুনি
রোজনামচার  ভুল বানানগুলো সংশোধন হেতু
আরও একবার ব্যাকরণে চোখ রাখি স্বেচ্ছায়
তখন হাজার ঢেউ পরিচয় বয়ে আনে ঠিকানায়
ছায়াহীন সংসার পেতে বসে আছি বিশ্বাসে তবু।
তারাখসার গল্পে রাত বেড়ে ওঠে মতবাদ প্রথায়
রোদ্দুর গলে গলে পড়ে গরীব,জীর্ন শীর্ন বুকে
অগোছালো ঘরে অনাদর পড়ে থাকে খাটে
নগ্ন গণিকার ছেড়ে যাওয়া ওড়নার মতো...
রুমাল ভেবে হাতে নিই- কপালের ঘাম মুছিয়ে
ভাঙনের কাছে শ্বাস বেঁধে রেখে একদিন-
সহজিয়া দিনের কাছে আহুতি দিও নিজেকে।