নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রনিতা মল্লিক






বেজন্মা শিশু
************





          কি দোষ করেছিল সে?
        যাকে তুমি পাঠিয়ে দিলে, 
         ওই অন্ধ কারের দেশে। 
    ওই টুকু শিশু একটা,তাকে তুমি এত ভয় পেলে?
       ভয় পেয়ে তাইতো তুমি ওকে,
শেষ করে দিলে। 
   ওতো বলেনী আমার জন্ম দাও। 
      দাও আমায় গড়ে, নষ্ট করে। 
    নিজের লালসা মেটানোর জন্য,
কেন ওর জন্ম দিলে? 
      ওর কথা না ছেড়েই দিলাম, 
 নিজের শরীর টাকেও ছাড়লে না?
        কষ্টযুক্ত অশান্তি পাবে, 
      সুখে তুমি বাঁচতে পারবে না।
       নিজের পবিত্রতা নষ্ট করে,
সতীত্ব কে বিলিয়ে দিলে?
  এই তুমি ভালোবাসো নিজেকে?
          ওতো বলোনী,
     আমায় পৃথিবী তে জন্ম দিয়ে,
    গলাটিপে মেরে ভাসিয়ে দাও,
    ওই নদীর জলে। 
পাবেনা, পাবেনা কোনো ক্ষমা তুমি, 
  তোমার পাপ তোমায়,  কুড়ে কুড়ে খাবে। 
   কতদিন আর মুখ আড়াল করে থাকবে তুমি?
      একদিন না একদিন, 
  তোমার ওই নোংরা,কুৎসিত মুখ বের করতেই হবে।
   তোমার মধ্যে,তুমি স্থান দিয়েছো,
  এক  নির্লজ্জ,মনুষ্যত্বহীন,বিবেকহীন এক নারীকে।
    আর তোমার মধ্যে থাকা ওই      
আগের তুমি সত্তা কে,
 তুমি গলাটিপে মেরে দিয়ে গেছ চলে। 
  এবার থেকে যখন নিজের শরীর কে বিলিয়ে দেবে.... 
   ওই ছন্নছাড়া মানুষদের কাছে, 
      তখন আগে থেকে ভাববে,
   ওই নিস্পাপ শিশু জন্ম নেবে, 
         তোমাদের-ই কাছে।
          কেন মারলে ওকে?
    নিজেকে লুকিয়ে রাখবে বলে?
      কিন্তু সেটাতো আর হবেনা। 
      তোমার মধ্যে থাকা তুমি,
     তোমায় একদিন বের করবে। 
    ওই শিশুর গলাফাটা আর্তনাদ,
রক্তঝড়া দেহ......
         সবের জন্য তুমি দায়ী,
      তোমায় একটা মানুষ বলে,
         মানবেনা আর কেহ।
    ওর -ও তো একটা জীবন ছিল বলো?
       ছিল মনে অনেক ইচ্ছা, 
       গায়ে মাখতে চেয়েছিল, 
        এই পৃথিবীর আলো।
  ওর মতো শিশুদের সাথে খেলা করতে,
 পাখিদের সাথে উড়ে বেড়াতে, 
খোলা আকাশের নিচে থাকতে ইচ্ছা ছিল ওর।
আর তোর মতো এক জঘন্য নারী
জন্ম দিয়ে মৃত্যু  দিলি ওর..... 

তপময় চক্রবর্তী




কাঁশ নন্দিনী
************

হিমালয় নন্দিনী তুমি শিবের ঘরণী
মনের মাঝে ডুগডুগে ঢোল বাঁজছে কেবল...
আমাদের কাছে মাগো তুমি বিপদতারিনী।
চিনচিনে সুখ রাত্রী নিশীর ঘুম কেড়েছে
আনন্দে মাতল জগৎ তোমার আগমনে,
বিষাদের সুরে ভাসল ভুবন দশমীর সায়াহ্নে,
ঊদ্ধ-অধো জুড়ে তুলোর মেঘ ছেয়ে আছে পাহাড়ে
সাদা কাশে ঘেরা প্রকৃতি, কলোরব পাখিদের,
মেঘ হটিয়ে ফোঁটাতে আলো পবনও দিচ্ছে
দিনে দিনে,
কেমন করে জানিনা সেই পুরোন প্রেমে...
ফুরালো ষষ্ঠী গিয়ে দশমী এলো,
মেঘান্বেষী তবু আড়ালে লাপাত্তাই রয়ে গেল !
নতুন করে আবারো এই মন মজেছে,
ফেলে আসা অতীত ঘেটে বড় হচ্ছে উত্তেজনা,
ঠান্ডা সাদা অনুভূতি জমেছে শিশিরের কোণে,
চাওয়া পাওয়া সেরে জমজমাট প্যানডেলে বিকেলে,
বাতাসের মতো তাহার বুকের গান শুনে...
লুকালো মুখ মেঘের আড়ালে অজানা কোন এক অভিমানে!

সন্দীপ ভট্টাচার্য







ছাতা 
*****


       

একবার জানালা খুলে দেখো তথাগত আকাশে মেঘ জমেছে।তুমি ঠিক করো সোশ্যাল মিডিয়া ভরাবে মেঘমল্লারে না কি উঠোনে মেলা কাপড় তুলবে।জামার ভেজা গন্ধ কি তোমার সহ্য হয় না কি?ওই গুমোট আঁশটে বমি তোলা গন্ধ।জানি হয়না তোমার ,আমারও হয়না। তবে আমি তো মেঘ আটকাতে পারিনা, বোতাম টিপে দূষিত ধূলো মিশিয়েছি আকাশ বাতাসে। এখন তারা দাপুটে ঝড়ের সাথে পীড়িত করছে। ঝরবেই জানি লাল রঙা অট্টহাসিতে।তবে তুমি চাইলে ছাতা খানা দিতে পারো ভালোবেসে,আমি তোমার শুকনো কাপড় তুলে এনে দেবো। আমি তো বলবো ছাতা খানা নিয়ে তুমি একবার নিজেই বেরিয়ে এসো, দেখো কেমন উলঙ্গ পন্ডিতেরা দেউলিয়া গল্প চাষ করছে, মেঘলা বাষ্পে কলম খুচে।তুমি ওদের দিকে ছাতা খানা বাড়িয়ে দাও বন্ধু, ওদের মগজে একটু উষ্ণতা দাও।ধূসর পর্দা জুড়ে ফাঙ্গাস জমেছে।যাইহোক তুমি ছাতা ধরে থেকো তথাগত।বৃষ্টি ফুরোলেই ,মেঘেরা ধ্বংস হবে।তারপর যে টুকু সময় পাবো আমরা স্বস্তিতে ঘুরে বেড়াবো,মেঘের চোখ রাঙানী উপেক্ষা করে।

প্রতিভা দে




বিদ্যাসাগর সন্মানে
******************



নাম টি তোমার সাগর 
আছে যেথায় বিদ্যা
বিদ্যাসাগর,
সত্য দ্রষ্টা  দেখেছ 
বিদ্যাই দিতে পারে মুক্তিএক মাত্র শক্তি 
নারী পুরুষ সবার আছে অধিকার ,
মানুষের মত বাঁচার,
জ্ঞান যাহা দেয়
চলার স্বচ্ছলতা 
না হলে পদে পদে
বিপদের কথা,
নারীদের কি কষ্ট হয় না
যখন চিতায় জ্বালায়
স্বামীর সাথে সহমরনে
মানুষ হইয়া করে অমানুষিক কাজ
যত সব ভন্ড পন্ডিতের কাজ।
এক দিন ছিল এমন
পন্ডিত নামে তারা
সমাজের মাথা
যত নীতি করত পালন
তাহাদের হস্তক্ষেপের করত যতন।
এই ভাবে ধর্মের নামে হতো
জ্বালাতন।
সমাজে তাদের জন্য জাতি ভেদে নিষ্ঠুরতা,আরো কত
কঠোরতা,মানুষের জীবন
ছিল যথা এক নরক সম।
সেই সব থেকে মুক্তি দিতে
তোমার চিন্তা করেছে সমাজে
নূতন চেতনার উদ্ভব।
সেই থেকে মেয়েরা 
পেয়েছে কিছু স্বাধীনতা
না হলে আজ মেয়েরা থাকতো কোথা?
এখন শিক্ষিত হয়ে
মেয়েদের কিছু দূর্গতি
ঘুচেছে বটে ,কিন্তু তবুও মেয়েদের
হয়নি এখন তেমন মুক্ত জীবন।
সমাজ এখনো কলুষিত
এমন কি দেখা যায় 
যাদের থেকে শিক্ষা নেবে
তাদের মধ্যে ও আছে গলদ
সমাজ যেন একটা স্হান আস্ত বলদ।
কখন কোথায় কি ভাবে
কে নির্যাতিত হবে
ওৎ পেতে আছে দানবেরা
সমাজ শিক্ষিত বটে
আজও বিভ্রাট ঘটে
চরিত্র স্খলনে
সমাজের শিক্ষা এখনো পূর্ণ নয়।
ভালো যদি বেশী ,খারাপ জায়গা নিতে করে,ভয়
যখানে খারাপ বেশী
সেখানে ভালো এগোতে পারেনা
সেখানে সমাজের ধ্বংসের সম্ভাবনা।
আসুক অন্য বিদ্যাসাগর
সমাজের কারণে
সমাজ এখন আছে পতনের মুখে।

সোনাই





নীল রঙা বৃষ্টি
*************




হঠাৎ করেই ভিজতে চাই নীল রঙা বৃষ্টিতে
উপমাহীন জীবনের নিত্য হাহাকারের সৃষ্টিতে,
ভোরের রাতের নোনা স্বপ্ন সঙ্গী করে নিয়ে
নির্বিকারে সঙ্গ দেবো হতবাকের অন্ধকারে l

সঙ্গী ছিলাম স্বপ্নে কেবল একাকীত্বের সাথে
আজব ভয়ের প্লাবনে মনখারাপের রাতে,
ভাসিয়েছি দেখ ঝকঝকে আকাশে মনখারাপের মেঘগুলো
স্মৃতির ক্যানভাস মরচে পড়া,আর জমানো হাজার ধূলো l

সবুজ কিছু ভালোবাসা মিশিয়েছি অনভ্যস্তের তুলিতে
শ্রাবণকে করেছি প্রতিস্থাপন হৃদয়ের ষড়রিপুর ঝুলিতে l

অগুন্তি বসন্তকে আজ করেছি নির্বাসিত নির্ভেজাল শ্রাবণের বুকে
কিছুটা দুঃখের সাতকাহন দিয়ে স্বপ্ন রচেছি পরম সুখে, হাজার বছর ধরে হয়নি দেখা পূব আকাশের নীল সূর্যোদয়
এখনো অজান্তে কবিতারা গুমড়ে মরে আমার কাব্যের পাতায় পাতায় ll

সঙ্কর্ষণ



অসুরোৎসব
***********




বিষাক্ত... ভারী বাতাস।
শরতের আকাশে দেখা নেই পেঁজা তুলোর।
মেডিকেটেড তুলোর ভাঁজে
টিপটিপ করে ঝরে অ্যান্টিসেপ্টিক, 
বহু দূরে মরীচিকা হয়ে চোখে নামে বৃষ্টি... 
নোংরা, কালচে, দুর্গন্ধ... ফোঁটা ফোঁটা।

রক্তের গন্ধে দরজাতে কড়া নাড়ে তীব্র বিবমিষা
ঢাকে গমগম করে ওঠে অশুভের আবাহনী, 
আকাশের রঙে লাগে আরো নীল... 
ঠিক যেন রুদ্রের বিষপান।

শহর থেকে দূরে কোথাও তীব্র দীর্ঘশ্বাসে
আরেক আগমনী বেজে ওঠে।
এখানে ত্রিশুলের ডগায় কুঁকড়ে থাকা মাতৃত্বকে
ক্ষতবিক্ষত করে চলে যায় মহিষাসুর... 
আহত পশুরাজের গর্জন ঢাকা পড়ে যায়
নতুন জামা জুতোর ভীড়ে।
কাঠামোর পেছনে চলে হিংস্রতার মহোৎসব।

দশমীতে, চোখের জলে বিদায় নেন এক মা
রেখে যান অসংখ্য ছোটো বড়ো দুর্গাকে।
কবিতার নামে প্যারোডি লেখা হয় রোজ, 
বিচারের নামে ঘটে চলা প্রহসন
প্রতিমূহুর্তে মিথ্যে করে চলে ঐ চারটে দিন... 
আট থেকে আশিতে।

দিবাস্বপ্ন লেগে থাকে চোখের তারায়।

শব্দ ওঠে, 
"দোলপূর্ণিমা নিশি নির্মল আকাশ মৃদুমন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস।"