নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

প্রভাত মণ্ডল










বিধি সম্মত পরকীয়া
**************




জয়ন্ত বাবুর ফেসবুকের টাইম লাইনে  বুদ্ধদেব বাবুর পরকীয়া সম্বন্ধে লেখা দেখিয়ে অফিস ফেরত ঘোষবাবু গিন্নীকে হেঁকে বলল ওগো শুনছো দেখো দেখো প্রখ‌্যাত সাহিত‌্যিক বুদ্ধদেব গুহ পরকীয়া সম্বন্ধে খুব সুন্দর একটি কথা লিখেছেন। "ভালোবাসা উদ্বৃত্ত হলে তা অন্য কাউকে দেওয়াই যায়।
তিনি আরো বলেছিলেন পরকীয়া অনেকটা খোলা বারান্দার মত। ঘর হচ্ছে বিবাহ। বারন্দা হচ্ছে পরকীয়া। ঘরে থাকতে থাকতে একঘেয়ে লাগলে তুমি একটু বারন্দায় বেরোবে। একটু মিষ্টি হাওয়া গায়ে মাখবে , চাঁদ তারা দেখবে। তারপর রাত বাড়লে আবার ঘরে ঢুকে পড়বে।"
গিন্নী তা দেখে খেঁচিয়ে বললেন, তা আমি কি করব শুনি, ঘোষবাবু আমতা আমতা করে বললেন মানে তুমি প্রতিদিন যা চিৎকার চেঁচামেচি কর অফিসের নন্দিনীকে নিয়ে, আমি তো ঘরে এনে ফস্টিনস্টি করছি না, তুমি যখন জেনেই ফেলেছো, একটা কম্পোমাইজ করে নাও, নয়তো ডিভোর্স যদি চাও তাও নিতে পারো।
আর এই দেখ মহামান‌্য আদালতের রায় দিয়েছেন অতৃপ্ত বিবাহিত নারী পুরুষ পরকীয়ায় লিপ্ত হতে পারে তা কোন দন্ডনীয় অপরাধ নয়। তুমি আর আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না এটা করবো ওটা করবো। তবু খোকার ভবিষ‌্যৎ ভেবে তোমাই বলছি একটা কম্পোমাইজ করে নাও।
আদালতের রায়ের কথা শুনে ঘোষ গিন্নী আহ্লাদি সুরে বলল ও তাই বুঝি, আমিও তোমাই একটা কথা বলবো।
গিন্নীর এই আহ্লাদিপনায় মনে মনে প্রমাদগুনে বলল কি বলবে বল,
আর কিছুই না তেমন, আদালত যখন রায় দিয়েছেন বলে দিই তাহলে, তোমার ওই বন্ধু রজতে শরীরের গঠন দেখলেই আমার শরীরে কেমন কাঁপন দেয়, তোমার নাদুস নুদুস চেহারা আমাকে তৃপ্তি দেয় না, তাই তোমার অবর্তমানে আমার আর ওর মধ‌্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আর আমার  দের খোকাও ওরই ঔরস জাত।
জানোতো জানু তোমার সম্মানের খ‌্যাতিরে আমরা চুপ আছি। নাহলে ও তো ওর বউকে ডিভোর্স দিয়ে আমাকেই বিয়ে করবে বলেছিল।
আমি কিন্তু জোর আপত্তি করেছি, আমার আবার একা ওকে দিয়ে হবে না,  অতৃপ্তই রয়ে যাবো।
যাকগে আদালতের রায়ে ভালোই হল বলো, যে যেমন যখন তখন পাটর্নার চেঞ্জ করতে পারবে।
যেমন চারপেয়েরা করে।
জয় মহামান‌্য আদালতের জয় হোক।

মোনালিসা পাহাড়ী



শ্রাবণ
******



দৃষ্টির দেওয়ালে বৃষ্টি যখন আবছা
বিবর্ণতার চোরাবালি রং ঢেলে দ‍্যায়
মন সীমানার আকাশ গাঙে গাঙচিল
ডানা ঝাপটায়...
হাতড়ে মরে খড়কুটোর জাগতিক বাসা
হলদে বিকেলগুলো জটপাকিয়ে যায়
ভাঙাচোরা কথকতার ভিড়ে
শেষ রাতে ঝাঁঝালো নিকোটিন
ভারি হয়ে যায় বুক,চোখের পাতা জুড়ে
উদ্দাম নৃত্য শুরু করে শ্রাবণের উৎসব।

সুপ্রভাত দত্ত




দেওয়াল
 *******

              
 
দীর্ঘশ্বাসের  স্পর্শ- 
কেমন সুদূর  বিষন্নতা!
শব্দটি আজ উদ্যোগ, 
ফিকে হওয়া গানের খাতা ।

দেওয়াল যে কী চাই? 
মনখারাপের  আড়াল থেকে-
ঘাসগুলি জন্মায়, 
শিশির চমক সূর্যালোকে ।

মাটির উপর ধুলো- 
কেমন যেন অর্থবিহীন! 
শরীরটা চমকানো, 
ছায়ায়  ছায়ায়  উদাস দিন!

আমিই অন্ধকার- 
তোমার দেওয়াল ধরা স্বভাব ।
তুমি তো চিৎকার-
তোমার কীসের আবার অভাব!

রুদ্র সাহাদাৎ





যাযাবর
*******



হাঁটছি হতাশার বালুচরে উত্তর দক্ষিণ
হাঁটছি গন্তব্যহীন কোনো ঠিকানা জানা নেই
আমি আমার মতো চলছি ফিরছি
তুমি হয়তো তোমার মতো কাটাছো রাত্রিদিন
কিচ্ছু বলার নেই আজ একাকি যায় দিন
সহস্র সহস্র মানুষ অথচ কথা বলার মানুষ নেই
স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে শঙ্কচুর তাই স্বপ্নরাও স্বপ্নহীন
স্বপ্ন দেখা ভুলে গেছিদু'চোখে ঘুম আসেনা আর
আমি এখন অনেকটা যাযাবর

পিয়ালী সাহা





নিষিদ্ধ রঙ
*********




একটু আড়াল আর চারপাশের অন্ধকার না থাকলে আমি কাঁদতে পারি না

উঠোন জুড়ে জ্যোৎস্না এলে সময়মতো ঠিক গা ভিজিয়ে  নি

আবার এক থেকে পক্ষ গুণে তুলে রাখি ভিজে শরীর

পরের একুশে  
জানলায় জোনাকি এলে সিঁড়ি ছুঁয়েছিল কনেদেখা হলুদ

চৌকাঠ পেরোয়নি সেসব রঙ

আলো আলো রঙে হাঁপিয়ে ওঠে আমার ভিজে উঠোন


চৈত্রী ঘোষ হাজরা






ভগবান
*******


ছোট থেকেই প্রশ্ন ছিল ভগবান কোথায় থাকে? 
এই প্রশ্ন করে করেই জ্বালিয়ে খেতাম মাকে। 
মা বলতেন, ভগবান? তাঁর তো হিমালয়ে বাসা।
নেমে আসেন ধরাধামে, পূরণ করতে আশা।। 
সত্যি করে, ভক্তিভরে, ডাকিস যদি, তবে।
দেখবি ঠিক তোর জন্যও নেমে আসবেন ভবে।।

সেই থেকে যখনই বিপদে কাঁপত আমার মন।
দুরুদুরু বক্ষে করতাম ঈস্বর স্মরণ। 
কিন্তু আমায় অবাক করে উনি আসতেন না।
সব বিপদে, সবসময়ে, পাশে থাকতেন - মা।।

পেনের ঢাকনা হারিয়ে গেছে? জামাকাপড় পাচ্ছিনা? 
মন ভেঙেছে? আরকি আমি আঘাত পেতে চাচ্ছিনা? 
সব বিপদে মুখ লোকাতাম গিয়ে মায়ের কোলে। 
আমার বিপদ হারিয়ে যেত কোন এক মন্ত্রবলে।।

কিন্তু আমার মা তো মানুষ, ভগবান তো নন।
কেমন করে বল উনি অজেয়, অমর হন!!? 
ওনারও তো ভাঙছে শরীর, চোখের কোলে ভাঁজ।
এখন আর আগের মত পারেননা তো কাজ।।

বয়স বেড়ে আমার মাকে ধরল জরা যেই।
দেখি হঠাৎ চক্ষু মেলে, মা যে আমার নেই।।
কাঁদছি দেখে সবাই এসে দেয় যে স্বান্তনা।
মা তো তোমার নশ্বর জীব, ভগবান তো না।।

পাশ কাটিয়ে যাই যে চলে পূজার উপাচার। 
মা তো নেই, এসবের আর কিই বা দরকার!!
এই যে শরীর, এই যে জীবন সবই তোমার দান। 
যে যাই বলুক মাগো, তুমিই আমার ভগবান।।